#দৃষ্টিনন্দনে_তুমি
কলমে: লাবন্য ইয়াসমিন
পর্ব:১৫
আরাফাত চুপচাপ মাথায় হাত রেখে বসে আছে।। মন মেজাজ খুব একটা ভালো নেই। কাজীদের বাড়িতে থাকতে ওর রুচিতে বাঁধছে। কিন্তু কিছু করার নেই। অরিন বাথরুমে গেছে ফ্রেস হতে। রুমে আপাতত কেউ নেই। আরাফতের মাথায় যন্ত্রণা করছে। একটু চা হলে বড্ড ভালো হতো ভেবে বেরিয়ে আসলো। বাইরের বাগানে রান্না হচ্ছে ভেতরে লোকজন খুব কম। আরাফাত সোজা রান্নাঘরে গিয়ে চায়ের পানি বসিয়ে দিয়ে চিনি আর চায়ের গুড়া খুঁজতে থাকলো। হঠাৎ কারণ আওয়াজ শুনে ও চমকে উঠে পেছন ফিরতেই জুলেখা কাজির মুখোমুখি পড়ে গেলো। ভদ্রমহিলা ভ্রু কুচকে মুখটা কালো করে বললেন,
> কাজীদে বাড়িতে পুরুষ মানুষ রান্নাঘরে আসেনা। এটা সস্তা মির্জাদের রান্নাঘর না যে হ্যাঙলার মতো চলে আসছো। কতদিন পেটে দানা পানি পড়েনি কে জানে।
আরাফাত মনোযোগ দিয়ে চা তৈরী করতে করতে ভদ্রমহিলার বকবক গুলো শুনলো। ওর মনে হচ্ছে এই মহিলা একটু বেশি অপ্রয়োজনীয় কথা বলে। বিষয়টা ভেবে ও চা নিয়ে আসার সময় এক কাপ চা ভদ্রমহিলার হাতে ধরিয়ে দিয়ে ফিসফিস করে বলে আসলো,
> বেশি বেশি মিষ্টি খাবেন তাহলে কথাগুলো অন্তত মিষ্টি হবে। আর আপনারা হচ্ছেন কুখ্যাত রঘু ডাকাতের বংশধর। ভরসা পাচ্ছি না যদি চায়ের মধ্যে বিষ মিশিয়ে দেন তাই নিজের চা নিজেই করে নিলাম। ফুপি আম্মা যেখানে দজ্জাল মহিলা সেখানে তো জামাইকে এইটুকু কষ্ট করতেই হয়। তবে একটা কথা, আপনার চেহারার সঙ্গে কিন্তু আপনার আচরণের একটা দারুণ মিল পাওয়া যায় । এক্কেবারে ঘসেটি বেগম।
আরাফাত কথটা শেষ করে অপেক্ষা করলো না। টানপায়ে বেরিয়ে আসলো। জুলেখা কাজী রাগে হিশহিশ করছেন। এই ছেলেটা যে চরম বেয়াদব এটা উনার অজানা নেই। উনি শব্দ করে বললেন, ফাজিল।
আরাফাত চলে যেতে গিয়েও ফিরে এসে ফাজিল শব্দটা শুনে বলে গেল, সেম টু ইউ। এতে যেনো কাঁটা ঘায়ে নুনের ছিটা পড়লো। উনি রেগে ধপধপ করে পা ফেলে মায়ের কাছে গিয়ে নালিশ দিয়ে বললেন,
> আম্মা আপনি আমাকে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দিন। আপনার ছেলের বাড়িতে আমি থাকতে চাইনা। আপনার ছেলের জামাই আমাকে অপমান করেছে। আমাদের যাচ্ছে তাই বলে কথা শুনিয়েছে।
গোলনাহার বানু বিরক্ত হলেন মেয়ের উপরে। এখনকার যুগের ছেলেমেয়েরা কি আর আগের মতো । ওরা শিক্ষিত আর আধুনিক চিন্তাধারার মানুষ। ওদের পেছনে লাগতে গেল মিনিমাম জ্ঞানটুকু তো থাকতে হবে। উনি ধমক দিয়ে বললেন,
> জুলি এসব ঝগড়া ঝামেলা বাদ দিয়ে কাজের কথা বলো। তুমি ঝগড়া করতে গিয়েছো কেনো? বলেছিলাম না একটু চুপচাপ থাকো। প্লানমাফিক এগোতে হলে বুদ্ধি করে চলতে হবে। মায়ের উপরে ভরসা রাখো। গিয়ে দেখে আসো আবিরের বউয়ের জ্ঞান ফিরেছে কিনা।
গোলনাহার বিবি পানের বাটা থেকে পান নিয়ে মুখে নিতে নিতে আদেশ করলেন। মহিত ভাঙা হাত নিয়ে ঘরে শুয়ে আছে। বেচারার প্রচুর জ্বর। রাসেল ঘর বন্ধ করে বসে আছে। হৈমন্তী কিছুটা সুস্থ জ্বর নেই তবে মাথা ঘুরছে।আসমা বেগম মেয়েটার যত্নের ত্রুটি করছেন না। উনার মেয়ে নেই মেয়ের মর্ম উনি বুঝেন। খুব করে চেয়েছিলেন একটা মেয়ে হোক কিন্তু হলো না। হৈমন্তীকে উনি নিজের মেয়ের থেকে কম ভালো বাসেন না। আবির হৈমন্তীর পায়ের কাছে বসে আছে। হৈমন্তী বালিশে হেলান দিয়ে আর্ধশোয়া হয়ে বসে আছে। ও বুঝতে পারছে না আবির এমন অস্থির হচ্ছে কেনো। কৌতূহল দমিয়ে রাখতে না পেরে বলল,
> আপনি কি কোনো বিষয় নিয়ে চিন্তিত?
আবির দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে বলল,
> আর চিন্তা,তোমার ভাই আমাদের সবার ঘুম উড়িয়ে দিয়েছে। ছেলে একটা বাপবা।
হৈমন্তী ভ্রু কুচকে বলল,
> কি করেছে ভাইয়া বললেন? চলুন না দেখা করে আসি। খুব দেখতে ইচ্ছে করছে ভাইয়াকে। ঠিকঠাক আসে কিনা চোখে না দেখলে শান্তি পাচ্ছি না।
> তাকে দেখতে হলে আর বাইরে যেতে হবে না। অপেক্ষা করো কিছুক্ষণের মধ্যেই আসবেন।
আবিরের কথা শেষ হলো না আরাফাত এসে হাজির হলো। হৈমন্তী নামতে চাইলো কিন্তু পারলো না। আরাফাত দ্রুত বোনকে জড়িয়ে নিলো। হৈমন্তী কেঁদে ফেলল এতদিন পরে ভাইকে দেখে। আরাফাত ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে চোখের পানি মুছে ফিসফিস করে বলল,
> এমন কেনো করলি বোন? যদি কিছু হয়ে যেতো আমাদের কি হতো বল? জানিস আম্মা, ভাই,ভাবি সবাই তোর জন্য ঢাকায় চলে আসছে। কথা বলবি?
হৈমন্তী ভাইয়াকে ছেড়ে দিয়ে ওষ্ঠে হাসি ফুটিয়ে বলল,
> একটা ফোন করোনা ভাইয়া। কতদিন কথা হয়নি।
আরাফাত একবার আবিরের দিকে তাকিয়ে গম্ভীর কন্ঠে বলল,
> আপনি একটু বাইরে যাবেন? হ্যাঙলার মতো তাঁকিয়ে আছেন লজ্জা টজ্জা পাচ্ছি। সকাল থেকে দেখছি আপনি কিভাবে জানি আমাকে দেখছেন। পুরুষ মানুষ পছন্দ নাকি আপনার?
আরাফাত সন্দেহভাজন দৃষ্টিতে তাকাতেই আবির জ্বলে উঠলো। এই ছেলিটার কথাবার্তা হয়না। কখন কিভাবে কথা বলতে হয় কিচ্ছু শিখেনি। শাশুড়ি সব গুলো ছেলেমেয়েকে মানুষ করতে পারলেও এটাকে উনি এলিয়ন তৈরী করেছেন তাঁতে সন্দেহ নেই। আবির ভ্রু কুচকে বলল,
> কথাবার্তা ঠিক করে বলবে। দুমদাম সবাইকে ঘোল খাওয়ানো বন্ধ করো।
কথাটা বলে আবির আর অপেক্ষা করলো না দ্রুত বের হলো। বাইরে অরিন দাঁড়িয়ে আছে। পাহারা দিচ্ছে। ওকে বাইরে রেখেই আরাফাত ভেতরে এসেছে। বাড়ির বড়রা ছাদে গোল মিটিং করছে। ঝগড়া ঝামেলা যা বেধেঁছে তার সমাধান করছে। এতো বছরে যে ঐক্য ছিল কাজীদের মধ্যে সেটা ভাঙতে বসেছে। সেটা ঠিকঠাক করতেই চেষ্টা চলছে। আবির বাইরে বের হতেই অরিনের সামনে পড়লো। ভাইকে দেখে অরিন ঢোক গিলে জোর করে ঠোঁটে হাসি আনলো। মূলত ও ভয় পাচ্ছে। আবির ওকে ভয় পেতে দেখে বলল,
> বেকুব,কিছু করার আগে ভয় না পেয়ে এখন ভয় পাচ্ছিস ক্যান? দেশে কি ছেলের অভাব ছিল বোন? নরমাল কাউকে পছন্দ করতে পারতি।তানা করে ঘূর্ণিঝড়কে তোর পছন্দ হলো? একদিনে কাজীদের অবস্থা বেহাল। সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে এখন হিমশিম অবস্থা।
আবির একদমে কথাগুলো বলে থামলো। অরিন লাজুক হেসে ওড়নার প্রান্তে কামড় বসিয়ে উত্তর দিল,
> এই জন্যই ওকে এতো পছন্দ। দারুণ ছেলে তাই না ভাইয়া?
আবির হতাশ হয়ে বলল,
> খুবই।
অরিন ভাইয়ের কথা শুনে আরও কিছুটা লজ্জা পেলো। ওর খুশী যেনো উপচে পড়ছে। আবির বোনের খুশীতে খুশী হয়েছে তবে চিন্তা হচ্ছে। মেয়েটার ভবিষ্যতের কথা ভেবে। পাগল মেয়েটা দুমকরে একটা কাজ করে বসেছে। আরাফাত কি ওকে ভালোবাসে নাকি প্রতিশোধ নিতে এসব করছে? যদি প্রতিশোধ নিতে এসব করে তবে বোনের কি হবে ভেবেই ওর এলোমেলো লাগছে। ও কথা বলবে আরাফাতের সঙ্গে। দরকার হয় অনুরোধ করবে। এসবের মধ্যে অরিনকে যেনো কষ্ট পেতে না হয়। একটা বোনকে হারিয়েছে আর হারাতে পারবে না। অরিন এই বাড়ির একমাত্র মেয়ে। সকলের আদরের। কথাগুলো ভাবতে ভাবতে ও বেরিয়ে আসলো।
☆☆☆☆☆
ভিডিও কল চলছে ওপাশে রাজীব চয়নিকা আর মাসুদ হৈমন্তীকে দেখতে ব্যস্ত। হৈমন্তী ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছে। আমেনা বেগম রুমে ছিলেন উনিও ছুটে এসে ফোন নিয়ে বসে পড়লেন। হৈমন্তীকে দেখে উনি কেঁদে ফেললেন। কতদিন পরে দেখা হচ্ছে। উনি চোখের পানি মুছে বললেন,
> একদম কাঁদবে না। এবার আসলে ওই বাড়িতে তোমাকে আর পাঠাবো না। খুব ভুল হয়েছে মা। আমি তো ভেবেছিলাম আমার মা ভালো থাকবে। ওরা যে এভাবে তোমাকে কষ্ট দিবে ভাবিনি।
হৈমন্তী মায়ের কথা শুনে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারলো না। সব সময় মাকে কেমন কঠোর ভাবে কথা বলতে শুনেছে হঠাৎ আজকে এমন করে বলতে শুনে ভালো লাগছে।তবে সত্যি কথা বলতে এখানে তো ওর কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। বরং আসমা বেগম ওকে মায়ের মতোই দেখাশোনা করছেন। হৈমন্তী চুপচাপ থাকলো না উত্তর দিল,
> আম্মা তুমি একটুও চিন্তা করো না আমি ঠিক আছি। তাছাড়া এরা এতটা খারাপ না। আমাকে কষ্ট দিচ্ছে না। আমার শাশুড়ি উনি খুব ভালো মানুষ। আমাকে আগলে রাখেন।
আমেনা বেগম মনে শান্তি পেলেন। মাসুদ রাজীব আর চয়নিকা পালাক্রমে কথা বলে নিলো হৈমন্তীর সঙ্গে। এর মধ্যেই আসমা বেগম চলে আসলেন ভেতরে। আরাফাত ভয় পেলো তবে উনি মিষ্টি হেসে ওর ভয় সরিয়ে দিলেন। মোটামুটি কথা শেষ করে ফোন রাখতেই হৈমন্তী ভাইকে প্রশ্ন করলো,
> আচ্ছা ভাইয়া তুমি এখানে এসেছো কেউ কিছু বলছে না?
আরাফাত উত্তর দিলো না। ওর কাশি হচ্ছে। আসমা বেগম হৈমন্তীর মাথা হাত রেখে বললেন,
> তোমার ভাইয়া তোমার জন্য এই বাড়িতে নতুন সম্পর্ক তৈরি করেছে। ভাইবোনের এমন ভালোবাসাতে যেনত কারো নজর না লাগে।
হৈমন্তী শাশুড়ির কথার মানে বুঝতে পারলো না। ভ্রু কুচকে বলল,
> নতুন সম্পর্ক?
আসমা বেগম অরিনকে ডেকে নিয়ে আরাফাতের পাশে বসিয়ে দিয়ে বললেন,
> অরিনকে এবার থেকে ভাবি ডাকো বুঝলে? সে এখন মির্জা বাড়ির ছোট বউ।
হৈমন্তী চোখ বড়বড় করে ফেলল। আরাফাত মাথা নিচু করে বসে আছে। উত্তেজনার বসে কি করে ফেলেছে নিজেই জানেনা। তবে ও কখনও অরিনকে অবহেলা করতে পারবে না। ওকে অবহেলা করা মানে তাঁকে অবহেলা করা। যার জন্য ওর হৃদয়ে সীমাহীন ভালোবাসা পাহাড় রয়েছে। ওর দিকে থাকালে তাকে অনূভব হয়। সেম চেহারা সেম কন্ঠ কোনো আমিল নেই আছে শুধু ভেতরের সত্তার। তাঁতে কি? মেয়েটাকে নতুন করে ভালবাসার চাদরে আবৃত করে নিবে। আরাফাত প্রেমিক মানুষ। ভালোবাসতে জানে। যে ভালোবাসতে জানে সে পরকে আপন করতেও জানে। একটু সময় লাগবে তবে ও সব ঠিক করে ফেলবে। হৈমন্তী বেশ খুশি অরিনের জন্য।
☆☆
ছাদে মিটিং চলছে।কাজীদের বাড়িতে দেলোয়ার কাজী আর উনার স্ত্রী এতদিন হৈমন্তীকে অপছন্দ করলেও এখন ওকে সাপোর্ট করছেন। তাছাড়া অরিনের মামারা তো আছেই। আনোয়ার কাজী এতদিন ভাইয়ের ভোটে ভোট দিয়ে আসছিলেন কিন্তু হঠাৎ ওদের সুর বদলে যাওয়ায় হতাশ হচ্ছেন। অন্যদিকে গোলনাহার বানু আর উনার কন্যা আনোয়ার কাজী মানে আবিরের বাবাকে সাপোর্ট দিচ্ছেন। নানাভাবে উত্তেজিত করার চেষ্টা করছে কিন্তু উনি তো ভাইয়ের কথার বাইরে কথায় বলেন না। মা বোনের উপরে উনার ভরসা নেই। দুম করে কেসে ফেসে গেলে তখন উনি একা হয়ে যাবেন তাই কিছুতেই রাজী হচ্ছেন না। ভাই যা বলবে উনিও তাই করবেন। এদিকে দেলোয়ার কাজীর হয়েছে জ্বালা। মেয়েটা শত্রুদের ঘরে বউ হয়ে যাবে ওদের মেয়ের যদি ক্ষতি হয় তখন নিজের মেয়ের উপরেও অশান্তি হবে। উনি ভেবেছেন রাজীবের কাছে ক্ষাম চাইবেন। সব ঝামেলা মিটিয়ে নতুন করে অরিনের বিয়ের অনুষ্ঠান করবেন।
☆
জুলেখা কাজী রান্নাঘরে সকলের জন্য সন্ধ্যার নাস্তা তৈরী করতে সাহায্য করছেন। আসমা বেগম আর অরিনের মা মারিয়াম আরা উনাকে মানা করেছেন তবুও উনি শুনছেন না। তাই কেউ আর উনাকে জোরাজুরি করলেন না। হৈমন্তীর ওষুধের সময় হয়েছে দেখে আসমা বেগম পানি নিয়ে রুমে যেতে নিলে জুলেখা উনাকে থামিয়ে দিয়ে বললেন,
> ভাবি আপনি এক কাজ করুন আমি সকলের জন্য শরবত তৈরি করেছি আপনি হৈমন্তীর জন্য এক গ্লাস নিয়ে যান। বেচারির শরীর এতো খারাপ শরবত খেলে ভালো লাগবে।
কথাটা বলে উনি শরবতের গ্লাস টা উনার হাতে ধরিয়ে দিলেন। আসমা বেগম ভ্রু কুচকে ফেললেন। এই মহিলা সকালবেলায় কতকিছু বললেন হৈমন্তীকে মানতে কষ্ট হচ্ছে এর মধ্যেই ভালো হয়ে গেলো। কিভাবে বুঝতে পারছেন না তবুও কিছু আর না ভেবে পা চালালেন। বাইরে আসতেই অরিন ছুটে এসে উনার হাত থেকে শরবতটা নিয়ে ঢকঢক করে খেয়ে নিয়ে বলল,
> সরি ছোট আম্মা,খুব পিপাসা পেয়েছিল তুমি আরেক গ্লাস নিয়ে আসো হৈমন্তীর জন্য। আমি রুমে যাচ্ছি।
অরিন কথাটা বলে আর অপেক্ষা করলো না দ্রুত নিজের রুমে গিয়ে ঢুকলো। আসমা বেগম মলিন হেসে ভাবলেন এখন শরবত খেয়ে কাজ নেই। মেয়েটার আগে ওষুধ খাওয়ানো দরকার ভেবে উনি চলে গেলেন।
☆☆☆
অরিন দৌড়ে রুমে এসে ধপ করে বিছানায় বসে পড়লো। আরাফাত ফোন ঘাটাঘাটি করছিল। হঠাৎ ওকে এভাবে দৌড়ে আসতে দেখে ভ্রু কুচকে বলল,
> অরিন রাসেলকে তোমার কেমন লাগে?
অরিন হেসে বলল,
> খারাপ না মোটামুটি ভালো তবে একটু ক্যাবলা টাইপ।
> তোমার দিকে কিভাবে তাকিয়ে থাকে দেখেছো?
অরিন কথা বলতে গেলো কিন্তু পারলো না। গলা কেনো জানি আটকে আসছে। ও কাশি দিয়ে গলা পরিস্কার করতে চাইলো কিন্তু হলো না। ক্রমশ মাথাটা ঝিমঝিম করছে। আরাফাত ওর মুখের দিকে এতক্ষণ তাঁকিয়ে ছিল। হঠাৎ কি একটা দেখে দ্রুত উঠে এসে অরিনকে দাঁড় করিয়ে ওর মুখটা নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে বলল,
> তোমার মুখে রক্ত কেনো? কি খেয়েছো তুমি? অরিন তুমি ঠিক আছো?
আরাফাত অস্থির হয়ে পড়লো। অরিন ফিসফিস করে বলল,
> শরবত খেয়েছি। গলা আটকে আসছে।
অরিন বাকীটা বলতে পারলো না। অরিন বমি করে দিলো। আরাফাত আর সময় নষ্ট করলো না। ওকে তুলে নিয়ে দ্রুত বেরিয়ে পড়লো। বাইরে লোকজন আছে অরিনকে এভাবে দেখে সবাই ঘাবড়ে গেলো। আরাফাত কাউকে পাত্তা দিলো না। ওকে নিয়ে সোজা গাড়িতে গিয়ে বসলো।। আবির রুমে ছিল হঠাৎ বাইরে শোলগোল শুনে দৌড়ে গিয়ে গাড়িতে উঠলো।
(চলবে)
ভুলত্রুটি মার্জনা করবেন।