#শিশির_বিন্দু❤️
লামিয়া সুলতানা সিলভী ( লেখনীতে)
পর্বঃ১০
ধোঁয়া ওঠা কফির মগ হাতে নিয়ে শিশির দাঁড়িয়ে আছে বেলকোনিতে! এক চুমুক খাচ্ছে আর নিচের দিকে তাকিয়ে ব্যাস্ত শহরের মানুষজনের ব্যাস্ততা দেখছে! বারো তলা থেকে জনমানব-গাড়ি সবকিছুই পিঁপড়ার মতো লাগছে! পিঁপিঁলিকা যেমন তার ছোট্ট শরীরটাকে নিয়ে ছোট্ট ছোট্ট হাত-পায়ে গড়িয়ে চলে,, শিশিরেরও ঠিক এই মুহুর্তে মানুষগুলোকে পিঁপিঁলিকা মতো লাগছে!
আর মাথার ওপর তারা ভরা নীলচে আকাশের মুগ্ধতা তো আছেই! যেখানে চন্দ্রীমা একমাত্র রানী তার বিশাল রাজত্বে,, রানীর যেমন অনেক প্রজা,প্রহরী,মন্ত্রী থাকে চন্দ্রীমারও ঠিক তেমন অনেকগুলো জ্বলজ্বল করা তারা আছে! কিন্তু এই বিশাল রাজত্বে চন্দ্রীমার একটাই আফসোস তার কোন সঙ্গী নেই,, সমস্ত রাজ্য একা হাতে সামলাতে হয় কিন্তু সেটা ক্ষণিকের জন্য! কারণ রাত শেষে আবার এই রাজ্য সূর্য মামাকে ছেড়ে দিয়ে নিজেকে লুকিয়ে পড়তে হয়,, সে কোথায় লুকোয় আজও তা ধোঁয়াশা সবার কাছে! আজ যদি তার একটা সঙ্গী থাকতো তাহলে কি সূর্যমামা পারতো তার তেজ দেখিয়ে চাঁদকে সরিয়ে দিতে? কখনোই পারতো না! তবে চন্দ্রীমার কাছে সূর্যমামা স্বার্থপর হলেও ধরণীর কাছে সে বিশাল আত্মত্যাগি! কারণ যতক্ষন সূর্যমামা ঘুমিয়ে থাকে ততক্ষণ কিন্ত ধরণীকে আধারে রাখে না তার যতটুকু সম্ভব দুনিয়াকে আলোকিত রাখার চেষ্ঠা করে,, আর সেটা চন্দ্রের মধ্যমে! নিজের আলোটুকু চন্দ্রকে ধার দেয় যেন তার প্রেয়সী ধরনী অন্ধকারে ভয় না পায়! তবে কি সূর্য ধরণীর প্রেমে পড়েছে? চন্দ্র কি এই জন্য ধরণীকে হিংসে করে না? হয়তো করে,, তাইতো মাঝে মাঝে নিজের ক্ষোপ প্রকাশ করতে পূর্ণ চন্দ্রীমা থেকে অর্ধ চন্দ্রীমাতে পরিণত হয় যেনো সবটুকু আলো ধরনীর বুকে না দিতে হয়! চন্দ্র-সূর্য- ধরনীর এই অদ্ভুত প্রণয় সারাজীবনই বিরাজ থাকবে,, আর তা শান্ত হয়ে দেখবে ধরনীর বুকে থাকা জনমানব!..
রাত ১১ টা বেজে ৪৭ মিনিট,, শিশির এতোক্ষণ তার রুমে বসে ল্যাপটপে অফিসের কাজ করছিলো! সারাদিন অফিস আর এখন সেই অফিসের কাজ করতে করতেই সে ক্লান্ত হয়ে যায়,, তাই বিন্দুকে বলে এক কাপ কফি বানিয়ে নেয়!..
কফি প্রায় শেষের দিকে,, নিচের তলানি টুকু অবশিষ্ট রেখে চুমুক দিতেই বিন্দু পাশে এসে হাজির! কিন্তু বিন্দু শিশিরের দিকে তাকাচ্ছে না সামনের দিকে ওর চোখ সীমাবদ্ধ! শিশির কফি শেষ করে বেলকোনিতে থাকা ট্রি-টেবিলে কাপটা রেখেই কিছুক্ষন বিন্দুর দিকে তাকিয়ে ছিলো!..
শিশির বিয়ের পর এই প্রথম বিন্দুর দিকে নযর দিলো! আগের চেয়ে খানিটা স্বাস্থ্য হয়েছে তবে তা আহামরি কিছু না, আগে তো অনেক শুখনো ছিলো! তবে এতে মেয়েটির সৌন্দর্য কমেনি বরং বৃদ্ধি পেয়েছে! সে যে যথেষ্ট সুন্দরী সেটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই! আগের চেয়েও বিন্দু বেশ রূপবতী হয়েছে– কাঁচা হলুদ বর্ণের ফর্সা মেয়েটি গায়ের রং,, তবে মেঘলার গায়ের রঙ ও ফর্সা ছিলো কিন্তু সে ফ্যাকাশে ফর্সা,, যাকে বলে অতিরিক্ত ফর্সা! মেঘলার বর্ণের চেয়ে বিন্দুর গায়ের রঙ আকর্ষনীয় বটে! আর বিন্দুর ঠোঁটের নিচে কালো তিল তার মুখে বেশ মানিয়েছে! নাকে ছোট্ট একটা ডায়মন্ডের নোসপিন,, কানে ছোট্ট সোনার ঝুমকো আর গলায় ডাবল পার্টের সোনার চেইন! হাতে সোনার চুরি আর দু হাতের আংগুলে তিনটে সোনার আংটি! বেশ বউ বউ লাগছে তাকে! শিশির এক পলক তাকিয়ে বিন্দুকে অনুসরন করে সামনের দিকে তাকালো কিন্তু ল্যাম্পপোস্ট আলো আর জনমানব ছাড়া বিশেষ কিছুই খুজে পেলো না! বিন্দুর দিকে তাকিয়ে,,,
শিশিরঃ ট্রি-পিচের চেয়ে শাড়িতে বেশি মানাতো! এটাটেও সুন্দর লাগছে তবে শাড়িতে বেটার লাগতো,, আই মিন নতুন বউরা তো শাড়িই পড়ে!..
বিন্দুর দৃষ্টি সরলো না,,সামনের দিকে চোখের দৃষ্টি সীমাবদ্ধ রেখেই,,,
বিন্দুঃ আপনে কখনো শুনেছেন কোকিলের বাসায় শুধু কোকিলই ডিম পাড়ে? সেখানে কিন্তু কাকও এসে বাচ্চা ফুটায়! তেমনি বাঙালি নারীর শাড়িটা মূল্যবান হলেও এর পাশাপাশি অনেক ড্রেস পড়ারই অনুমতি আছে,, সেটা অবশ্যই শালীনতা বজায় রেখে! আর নতুন বউকে যে শাড়ি পড়তেই হবে এটা একটা আযগুবি কথা,, সে যেটাটে কমফোর্টেবল সেটা পড়াই বেষ্ট!..
শিশিরঃ আগে তো শাড়ি তোমার ফেবরিট ছিলো! প্রায়ই পড়তে আমার সাথে ঘুরতে যাওয়ার সময়!..
বিন্দু এবার কপট রেগে শিশিরের দিকে তাকায়,,,
বিন্দুঃ আমি একদিনিই বলেছি, আগে কথাটা হচ্ছে অতীত আর আমি এখন বর্তমানে অবস্থান করছি তাই আগের কথা বলে বিভ্রান্ত করবেন না! তবে হ্যা এটা সত্যি,, রুদ্র আমার অতীত হলেও আমি তাকে কখনো ভুলতে পারবো না! সে আমার অতীতেও যেমন ছিলো বর্তমানেও আছে আর ভবিষ্যৎেও থাকবে!..
শিশিরঃ হুম,,, তাহলে তো আমাকে কখনো মেনে নিবে না তাইনা?
বিন্দুঃ আমার জীবনের প্রথম ভালোবাসা আপনে হলেও শেষ ভালোবাসা রুদ্র আর আমি শেষকেই বেশী প্রাধান্য দেই! তার জায়গা আমি কাওকেই দিবোনা! আচ্ছা আপনে যে মেনে নেওয়ার কথা বলছেন আপনে কি পারবেন মেঘলা কে ভুলে সেই জায়গায় আমাকে মেনে নিতে?
শিশিরঃ ( একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে সামনের দিকে তাকিয়ে) মেনে নিতে পারবো কিনা জানিনা তবে মানিয়ে নিতে পারবো! কারণ অতীত তো অতীতই সেটা আকড়ে ধরে থাকলে কখনোই সামনের দিকে আগানো যাবে না আর আমি সামনে আগাতে চাই! সময়ের সাথে সাথে সবকিছুই পালটে যার আর সেটা যত তাড়াতাড়ি সম্বব মেনে নেওয়া ভালো! যেমন তুমি কনফিডেন্সিয়ালি ভাবে বলছো রুদ্রের যায়গা কখনো কাওকে দিবে না কিন্তু এমনো তো সময় আসতে পারে তুমি দিতে বাধ্য তখন তোমার এই কথাগুলো নেহাৎই মিথ্যে হয়ে যাবে না?
বিন্দুঃ কি বলতে চাচ্ছেন আপনে? ( আড়চোখে তাকিয়ে)
শিশিরঃ তেমন কিছুই না,, (বিন্দুর দিকে তাকিয়ে) তুমি চলে যাবার পর মেঘলাকে মেনে নেওয়া কি আমার খুব ইজিলি হয়েছে? না হয়নি,, জেদের বশে মেঘলা কে বিয়ে করেছিলাম ঠিকই কিন্তু মেনে নিতে অনেকটা সময় লেগেছে!..
বিন্দুঃ ( অবাক হয়ে) মানে? আপনে মেঘলাকে ভালোবাসতেন না এটাই বুঝাতে চাচ্ছেন?
শিশিরঃ না বাসতাম না! যেটা ছিলো সেটা এর্টাকশন ছিলো ভালোবাসা না! কিন্তু তুমি আমাকে ভুল ভাঙানোর আগেই ছেড়ে চলে গিয়েছিলে!..
বিন্দুঃ ( তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে) ওহ রেলি? এসব সিম্পেথিক দেখানোর কোন মানেই হয়না অন্তত পক্ষে আমাকে! যা যা করেছিলেন কিচ্ছু ভুলিনি, সব মনে আছে! আপনার কথা আমি আমার ফ্যামিলির কাওকে বলিনি তাই আপনার থেকে চলে আসার পর আমি নিজে নিজে ভুগে মানষিক রোগী হয়েছিলাম,, তিনমাস হসপিটালেও ছিলাম! সে সময়টা সাফার করেছি আমি আর আমার ফ্যামিলি আর কেওনা!..
শিশিরঃ ওয়াট,, কি বলছো এসব? মানষিক রোগী, হসপিটাল মানে? তোমাকে আমি কোথায় কোথায় খুঁজেছিলাম জানো?
বিন্দুঃ আমি ঘুমোতে যাচ্ছি,,বাই!..
বিন্দু চলে যাওয়ার সময় শিশির হাত টেনে ধরে,,,
শিশিরঃ ওয়েট,, কোথথাও যাবে না তুমি এখন! আজকে সব প্রশ্নের উত্তর দিবে কেনো ছেড়ে গিয়েছিলে আমায়? সবটা আজকে ক্লিয়ার হবে!..
বিন্দুঃ ( হাত ঝেঁমটি দিয়ে সরিয়ে) ডোন্ট টার্চ,, আমি এই মেটারে আর কোন কথা বলতে চাচ্ছি না! রুদ্রা-মেঘ ঘুমুচ্ছে আমাকে রুমে যেতে দিন!..
শিশিরঃ না আমাকে বলবে,,তারপর যাবে! তার আগে যেতে দিবো না! সেদিন আমার বার্থ্রডে ছিলো আসোনি কেনো? তোমার জন্য কতক্ষণ ওয়েট করেছিলাম আইডিয়া আছে? সেদিনই আমি সবাইকে আমাদের রিলেশনের কথা এনাউন্স করতাম আর আব্বু- আম্মুকেও বিয়ের কথা বলতাম!..
বিন্দুঃ ওহ রেলি? একটা মেয়ের সর্বনাশ করে আবার আমার সর্বস্ব কেড়ে নিতেন? মেয়েরা কি এতোই সস্তা? কোন দাম নেই আপনাদের কাছে তাইনা? যখন ইচ্ছে হবে পাপেট বানিয়ে খেলবেন আবার ইচ্ছে ফুরিয়ে গেলে ফেলে দিবেন? আপনার ফাদে মেঘলা পা দিলেও আমি জেনেও পা বারানোর সাহস পায়নি মিস্টার শিশির!..
শিশিরঃ তুমি এতো কথা বলছো কিসের ভিত্তিতে? আমি মেঘলার কি সর্বনাশ করেছি? কি যা-তা বলছো এগুলো?
বিন্দু কিছু বলতে যাবে তখনই মেঘের কান্নার আওয়াজ শোনা যায়,, আর বিন্দু সেখান থেকে চলে আসে!..
শিশির এদিকে রাগ সামলাতে না পেরে জোরে ইট সিমেন্টের বানানো শক্ত দেওয়ালটাতে হাত দিয়ে ঘুষি দেয় দুই তিনবার,, এতে ওর হাত কেটে কিছুটা রক্ত বের হয়! নিজের রাগ কন্ট্রোল করে ঘরে ফাস্ট এইডের বক্স খুঁজতে থাকে কিন্তু কোথাও খুজে পায় না! আসলে ওর মাথায় তো ঘুরপাক খাচ্ছে অন্যকিছু,, মেঘলার কি সর্বনাশ করেছে ও? কোনদিন তো হাত ধরা ছাড়া কাছেও ঘেঁষেনি তাহলে বিন্দু কিসের ভিত্তিতে এতোগুলো কথা বললো? শিশির খুঁজতে খুঁজতে খুঁজে না পেয়ে বিন্দুর রুমের দিকে পা বাড়ায়!..
এই বাড়িতে তিনটা বেডরুম,, একটা শিশিরকে দিয়েছে আর একটা বিন্দু ওর ছেলে-মেয়ে নিয়ে থাকবে বলে জানিয়েছে আর একটা যে আছে সেটা গেস্টরুম বানিয়েছে! বাড়িটা বেশ বড়-শড়ো,, বিন্দুর খুব পছন্দ হয়েছে এই বড়িটা!..
শিশিরঃ বিন্দু ফাস্ট এইডের বক্সটা কোথায়?
বিন্দু মেঘকে কোল নিয়ে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করছিলো,, শিশিরের এমন প্রশ্নে তার দিকে না দেখেই মেঘের দিকে তাকিয়ে শিশিরকে উত্তর দিলো…
বিন্দুঃ কেনো?
শিশিরঃ কেনো মানে কি? আমি দিতে বলছি দাও!..
বিন্দুঃ ( শিশিরের দিকে ঘুরে) আল্লাহ আপনার হাত দিয়ে রক্ত ঝড়ছে কেনো এমন করে?
শিশিরঃ তাতে তোমার কি? আমি মরলেও তোমার কিছু যায় আসে না বাঁচলেও না!..
বিন্দুঃ তা অবশ্য ঠিক…
শিশিরঃ কিহ.. ( কপাল কুঁচকে)
বিন্দুঃ না মানে ওয়েট.. ( মেঘকে বিছানায় রুদ্রার পাশে শুয়িয়ে দিয়ে)
বিন্দু ফাস্ট এইডের বক্স বের করে,,,
বিন্দুঃ এখানে বসেন ব্যান্ডেজ করে দেই!..
শিশিরঃ কিভাবে এমন হয়েছে জিজ্ঞেস করলে না?( বিছানায় বসে)
বিন্দুঃ এ্যা,, ও হ্যা তাইতো কিভাবে এমন হয়েছে? ( স্যাবলন দিয়ে হাত মুছছে)
শিশির বিন্দুর এমন খাপছাড়া ভাব দেখে রাগ হয় তাই সে বিন্দুর কাছে থেকে বক্স কেড়ে নিয়ে ওর রুমে চলে যায়! বিন্দুও শিশিরের পিছন পিছন যায়!..
শিশিরঃ কি চাই এখানে? ( বিছানায় বসে ঔষুধ লাগাতে লাগাতে)
বিন্দুঃ আমি লাগিয়ে দেই!..
শিশিরঃ দরকার নেই,, আমি নিজের কাজ নিজেই করতে পারি! ছয় মাস যাবৎ করে আসছি! তোমাকে এতো সিম্পেথি দেখাতে হবে না,, বাচ্চাদের কাছে যাও!..
বিন্দু কিছু না বলে চলে যেতে নেয়,,,
শিশিরঃ এ আমি কাকে বিয়ে করেছি? কার জন্য বিয়ে করলাম আমি? স্বামী মরে গেলেও কোন খোঁজ নিবে না এই ব্যাক্তি!( আফসোস অনুসারে বলে)
বিন্দুঃ ( দাঁড়িয়ে) আপনার বাচ্চার জন্য বিয়ে করেছেন! কেনো বাসর রাতে বলেছিলেন না? আপনার কোন বউয়ের প্রয়োজন নেই,, জাস্ট মায়ের কথা রাখতে আর আপনার বাচ্চার জন্য বিয়েটা করেছেন! এতো তাড়াতাড়িই সব ভুলে গেলেন? বিয়ের তো দশদিনও হয়নি! এখনি,,, ( থামিয়ে শিশির বলে)
শিশিরঃ মাফ চাই বোইন,, আপনে এখন আসতে পারেন! আর জীবনেও কিছু বলবো না! যাও এখন…( কপট রেগে)
বিন্দু মুখ বাঁকিয়ে চলে গেলো,,
আর এদিকে শিশির নিজের হাতে ব্যান্ডেস করে ধুম ধরে কিছিক্ষণ বসে থেকে নিজের রুমেই লাইট বন্ধ করে শুয়ে পড়ে আর ভাবতে থাকে,,,
সেদিন ছিলো শিশিরের জন্মদিন,, ওদের ক্যাম্পাসের অডিটোরিয়ামে সব ব্যাবস্থা করা হয়! ওর সব বন্ধুরা অডিটোরিয়াম সাজাতে থাকে,, শিশিরও ওদের হেল্প করে! শিশির আজকে সবাইকে বলবে ওর আর বিন্দুর সম্পর্কের কথা,, ওরা খুব তাড়াতাড়ি বিয়েও করবে! কারণ ভার্সিটির অনেকেই ওদের তিনজনর এই ত্রিকোণ সম্পর্ক নিয়ে সমালোচনা করে! সবার ভাষ্যমতে,, শিশির-মেঘলার মাঝে নাকি বিন্দু চলে এসেছে! সবাই তো আর জানেনা বিন্দু-শিশিরের আগের থেকেই রিলেশন আছে! ভার্সিটি ভর্তি হবার পরে থেকেই দেখে আসছে শিশির-মেঘলা কে একসাথে থাকতে,, তাই তাদের ধারণা ওরা দুজন দুজন কে ভালোবাসে! শিশির-মেঘলার সংখ্যতাও বেশ ভালোই ছিলো,, যেখানে যাবে দুজন একসাথে যাবে,, যা করবে দুজন একসাথে করবে! তারও দুইবছর পর যখন বিন্দু ওদের ভার্সিটিতে ভর্তি হয় তারপর থেকে শিশিরের সাথে বিন্দুকে মাঝে মাঝে দেখেই বিন্দুর বিরুদ্ধে আড়ালে সমালোচনা করতো!
শিশিরের সবাইকে বলার আরো একটা উদ্দেশ্য হলো,, দিন দিন সবার কথামতো শিশিরও মেঘলার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে আর বিন্দুর প্রতি অবহেলা তাই শিশির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিন্দুর কথা সবাইকে বলবে তা নাহলে বিন্দুর সাথে বেইমানি হয়ে যাবে কারণ ওদের সম্পর্ক তখন চারবছর হয়েছে! এখন কোনভাবেই বিন্দুকে ঠকানো সম্ভব না! কিন্তু সেদিনের পর থেকে আর বিন্দুকে শিশির খুজে পায় না! হঠাৎ করে এই সাত বছর পর দেখা হয় তাও ওরই দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে!..
শিশিরঃ বিন্দু এসব কি বলে গেলো? আমি মেঘলার সর্বনাশ করে আবার ওর সর্বস্ব কেড়ে নিতে চেয়েছিলাম? এটা ও বললো কিভাবে? এটা মানছি আমি মেঘলার প্রতি কিছুটা উইক ছিলাম তবে ওকে ভালোবাসতাম না! হ্যা, এটাও ঠিক বিন্দুকে অনেক অবহেলাও করেছি তাই বলে এভাবে আমার চরিত্রে দাগ লাগিয়ে দিলো!..
এসব ভাবতে ভাবতে শিশিরও ঘুমিয়ে পড়লো নতুন দিনের অপেক্ষার জন্য!
#চলবে…
[পর্বটা একটু ছোট হয়ে গিয়েছে,, ভুল-ত্রুটি ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন]