#ইফ্রিতে_মুসনাত
#পর্বঃ০৮
#লেখিকাঃ আস্থা রাহমান শান্ত্বনা
আয়ানা ফ্রেশ হয়ে একটা আকাশি রঙ্গের সুতি শাড়ি পড়ে নিল। এতক্ষণ ভারী শাড়ি পড়ে থাকায় ও হাফিয়ে উঠেছিল। সুটকেস থেকে সব জিনিসপত্র নামিয়ে বিছানার উপর রাখল। আলমিরা খুলে ওগুলো রাখতে গিয়ে দেখে আলমিরা-ড্রায়ার লক করা। নিজের রুমেও কেউ এত প্রাইভেসি রাখে! আয়ানা জিনিসপত্র গুলো বিছানার উপর রেখে রুমটার দিকে চোখ বুলাল। সব আসবাবপত্র-সাজসজ্জা আলাদা আভিজাত্য বহন করছে। পুরো রুমের দেয়ালে নীল হালকা রঙ করা। এটাচ ওয়াশরুম, দেয়ালের সাথে লাগোয়া বড় আয়না, ছোট সাউন্ডবক্স সিস্টেম, আলাদা নামাযঘর সব মিলিয়ে খুব সুন্দর একটা রুম। আয়ানা রুম থেকে বেরিয়ে ব্যালকুনির দিকে গেল। এখানে টবে বিভিন্ন ইনডোর প্ল্যান্ট লাগানো হয়েছে। দেয়ালে ছোট ছোট বাল্ববাতি বসানো। মেঝেতে সবুজ ঘাসের কার্পেট বিছানো, এক কোণে ছোট একটা বক্স তাতে বিভিন্ন ধরণের বই সাজানো তার নিচের মেঝেতে কয়েকটা ছোট্ট ফোমের বালিশ। সাদের রুচিবোধ আয়ানা মুগ্ধ করল। কিন্তু সাদ কোথায়? বাসায় ঢুকার পর তাকে আর দেখতে পেলনা আয়ানা। এমনসময় রুমের দরজায় টোকা পড়ল। আয়ানা শাড়ীর আচল মাথা টেনে একটু এগিয়ে বলল, ভেতরে আসুন।
তখনি সাদ দরজা খুলে রুমে ঢুকল। বিছানার উপর আয়ানার জিনিসপত্র ছিটানো দেখে আয়ানার দিকে তাকাল। আয়ানা দমে গিয়ে বলল,
” আপনার সব ই তো লক করা। তাই কোথায় রাখব বুঝতে পারছিলামনা।”
সাদ পকেট থেকে চাবি বের করে আলমিরাসহ ড্রায়ারের লক খুলে দিল। ড্রায়ার থেকে তোয়ালে, টি-শার্ট আর টাউজার বের করল। বের করার পর হঠাৎ আয়ানার দিকে সুক্ষ্মদৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল। আয়ানার একটু অদ্ভুত লাগল, সাদ তাকে এভাবে দেখছে কেন? ধীরে ধীরে সাদ তার দিকে এগিয়ে আসতে লাগল। কেন জানি সাদকে এভাবে এগিয়ে আসতে দেখে আয়ানার হাত-পা ঠান্ডা হয়ে গেল। সে মূর্তির মত ঠায় দাঁড়িয়ে আছে, ইচ্ছে করেও যেন নড়তে পারছেনা।
সাদ তার মুখোমুখি দাড়াল, একদম কাছাকাছি। এই প্রথম আয়ানা সাদের চোখগুলো এত কাছ থেকে দেখতে পেল। তার মনে হল চোখগুলোর ভিতরে অনেক অনুভূতি লুকিয়ে আছে, যা এখনো প্রকাশিত হয়নি। আয়ানার হাত-পা কাপছে, সাদ তার সামনে হাটু গেড়ে বসে পড়ল। আয়ানা অবাকতার উচ্চ পর্যায়ে চলে গেল। সাদ হাটু গেড়ে বসে আয়ানার শাড়ির কুচিগুলো ভাজে ভাজে ঠিক করে দিল। কুচিগুলো আরেকটু নিচে নামানোর জন্য আয়ানার কোমড়ের কুচিগুলো আরেকটু আলগা করে দিল। সাদের স্পর্শ আয়ানার তলপেটে লাগায় আয়ানার শরীর কেপে উঠল। অদ্ভুত এক আবেশে সে চোখগুলো বুজে নিল। টের পেল তার ঠোটগুলো কাপসে, সাদ আয়ানার এই অবস্থা দেখে আয়ানার কোমড়ে আলতো করে হাত রাখল। আয়ানার শরীরে এক অদ্ভুত শিহরণ খেলে গেল। তার নিঃশ্বাস গুলো গাঢ় হতে লাগল। সাদ তার ঠোট আয়ানার ঠোটের খুব কাছাকাছি নিয়ে এল। আয়ানা টের পাচ্ছে, কিন্তু তার চোখ খুলতে ভীষণ লজ্জা লাগছে। সাদের উষ্ণ নিঃশ্বাস তার মুখের উপর পড়ছে, এতে তার শরীরের পশম সব খাড়া হয়ে গেছে। ঠিক সেই মূহুর্তে সাদ নিজেকে সরিয়ে নিল। আয়ানা বুঝতে পেরে চোখ খুলল। সাদ আর সেখানে না দাঁড়িয়ে তোয়ালে নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়ল। সাদের এমন আচরণে আয়ানা অবাক হল। কেন সাদ এভাবে নিজেকে সরিয়ে নিল? এই ঘটনায় তার খুব খারাপ লাগছে।
.
আয়ানা আসার পর সাদের বাসায় খুব তোড়জোড় আয়োজন চলছে। সবাই খুব আনন্দ সহকারে রিসিপশনের কাজগুলো গুছিয়ে নিচ্ছে। আজ সন্ধ্যায় আয়ানার রিসিপশন। কিন্তু আয়ানার তাতে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই, তার হাসিমুখের আড়ালে এক চাপা কষ্ট লুকিয়ে রেখেছে সে। সাদের ভাবী আর আম্মু বেশ কিছু জিনিসপত্র নিয়ে সাদের রুমে এলেন। আয়ানা উদাসমনে বসে ছিল, উনাদের দেখে মাথায় ঘোমটা টেনে উঠে দাড়াল। সাদের আম্মু এগিয়ে এসে তার পাশে আয়ানাকে বসিয়ে বলল, ” মুখটা এমন শুকনো দেখাচ্ছে কেন?”
” কই না তো মা।”
” বুঝেছি বাসার জন্য মন খারাপ করছে। মন খারাপ করোনা, তারা সবাই একটু বাদেই চলে আসবে। আর আমরা তো আছি। তোমার মা-বাবা আর ভাই-ভাবী।
আয়ানা শুকনোমুখে মুচকি হাসি দিলেন। সাদের বাড়ীর সবার আচরণ তাকে অভিভূত করছে। তাদের ছেলে তাদের না জানিয়ে তাদের অপরিচিত এক মেয়ে করল তাতে তারা একটুও অখুশি নয়। বরং তাকে অনেক ভালোবাসা দিচ্ছে নিজের মেয়ের মত। শুধু সাদ ই তাকে ভালোবাসতে পারলনা।
সাদের ভাবী জেসমিন নিজ হাতে আয়ানাকে সাজিয়ে দিল। আয়ানা বেশী জাকজমকভাবে সাজতে চাইলনা। শুধু হলুদ কালারের জামদানি শাড়ী, হাতে কয়েকজোড়া চুড়ি আর কানে একজোড়া ঝুমকো পড়ল। চুলগুলো খোপা করে তাতে বেলীফুল জড়িয়ে দিল। চোখে টানা করে কাজল আর ঠোটে হালকা রঙ্গের লিপস্টিক জেসমিন আয়ানাকে বলল,
” মাশা আল্লাহ, তোমাকে যা সুন্দর লাগছে আজ নিশ্চিত আমার দেবর ঢ্যাপঢ্যাপ করে তাকিয়ে থাকবে। চোখ ই সরাতে পারবেনা।”
আয়ানা মনে মনে উপহাসের হাসি হাসল। সাদ কস্মিনকালেও এসব করবেনা, সে বুঝে গেছে সাদ তাকে ভালোবাসে না। তা সত্ত্বেও বিয়েটা কেন করল সেটা আয়ানার অজানা।
সন্ধ্যাবেলা আয়মান শাফি সবাইকে নিয়ে সাদের বাড়ীতে আসলেন। সাদের বাড়ী-জীবনধারা দেখে উনি অবাক হলেন। উনি কল্পনা করেননি, সাদের পরিবার এতটা আভিজাত্যপূর্ণ। সবচেয়ে বড় কথা, মেয়ের শ্বশুড়বাড়ীর আচার-ব্যবহার তার হৃদয়স্পর্শ করেছে। উনারা এভাবে আয়ানাকে আপন করে নিবেন সেটা ভাবতেই পারেননি আয়মান সাহেব। মেয়েকে দেখে উনি চোখের পানি আর আটকে রাখতে পারলেননা। বাচ্চার মত কেদেই দিলেন।
বাবার কান্না দেখে আয়ানার চোখও টলমল করছে। আয়মান শাফি সাদের হাত দুটো ধরে বললেন, “আমি ভাবতেও পারিনি তুমি আমার মেয়েকে এত সুখ রাখবে। যোগ্য স্থান দিবে। তুমি আমার সত্যিকার অর্থে যোগ্য জামাই।”
” দোয়া করবেন আব্বু, আপনার অমূল্য সম্পদ যেন আমি আজীবন যত্নে রাখতে পারি। ওর যেন এটা মনে হতে না দেই, ও আপনাদের দেওয়া ভালোবাসা থেকে এখানে কোনো অংশে কম পাচ্ছে।”
সাদের কথা শুনে আয়ানা চমকে উঠল। তবে এই কথাগুলো শুনে ওর খুব ভালো লাগল, মনের বিষাদ কিছুটা হালকা হল। আয়মান শাফি রুমালে চোখ মুছতে মুছতে সালমা আরার দিকে তাকিয়ে বললেন,
” তুমি ঠিক ই বলেছো সালমা। আমার মেয়েটা এখানে খুব সুখী হবে।”
” ইনশাআল্লাহ। আয়ানা খুব ভাগ্য করে এমন একটা পরিবার পেয়েছে।”
সায়মা আয়ানার কাছে এসে বলল, “তুই কেমন ভাবে ব্যাপার নিবি সে ভেবে আমি বলিনি তোর সাদের সাথেই বিয়ে হয়েছে। তবে ছেলেটা খুব ভালো। আর ওর পরিবারের মত পরিবার বোধহয় আর একটাও খুজে পাওয়া যাবেনা।”
আয়ানা সায়মাকে জড়িয়ে ধরে বলল, ” আপু আল্লাহ আমার মনের আশা কবুল করেছেন। যাকে ভালোবেসে চেয়েছিলাম তাকেই আমার জীবনসঙ্গী করে দিয়েছেন। এখন শুধু দোয়া করিস, আমি যেন ওকে পরিপূর্ণ সুখী করতে পারি।”
রিসিপশন শেষে আয়মান শাফিরা বিদায় নেওয়ার তাগাদা দিলেন। সাদের আম্মু রেশমা সুলতানা গাড়ীতে টিফিনভর্তি খাবার দিয়ে দিলেন তাদের জন্য। বারবার করে আয়মান শাফিকে বললেন, “আমাদের আতিথেয়তায় কোনো ক্রুটি থাকলে ক্ষমা করে দিবেন। এত অল্প সময়ে সবকিছুর ব্যবস্থা করেছি যে সবদিকে খেয়াল রাখতে পারিনি। আর আপনারা কিন্তু যখন মেয়েকে দেখতে ইচ্ছে হবে চলে আসবেন। আপনার মেয়ে আমার কাছে নিজের মেয়ের মতই থাকবে।”
আয়মান শাফি পুলকিত অনুভব করলেন। কত বড় মন উনাদের। এত সুন্দর সাবলীল ভাবে অ্যাপায়ন করেও ক্ষমা প্রার্থনা করছেন। উনি নিজে বিয়ে ঠিক করেও এমন পরিবারে মেয়ে দিতে পারতেন কিনা সন্দেহ। উনার মেয়ে এখানে খুব সুখে থাকবে তা বুঝতে বাকি রইলনা।
.
আয়ানা একা একা বাসর সাজানো বিছানার উপর বসে আছে। চারিদিকে তাজা ফুলের গন্ধ মৌ মৌ করছে, হালকা সাদা আলোর বাতি জ্বলছে। দেয়ালে ঝুলানো রোশনি আলোগুলো জ্বলছে আর নিভছে। অনেকক্ষণ আগেই জেসমিন আয়ানাকে রুমে বসিয়ে দিয়ে গেলেন। সাথে এক প্লেট মিষ্টি আর এক গ্লাস পানি রেখে গেলেন। বার বার করে বলে গেছেন, আয়ানা যেন এক মিষ্টি আর এক গ্লাসের পানি সাদকে খাইয়ে বাকিটা সে খায়। আয়ানার ক্লান্তিতে চোখ লেগে আসছে। অনেকটা সময় পার হওয়ার পরও সাদ আসছেনা। আয়ানা ঘুম কাটানোর উদ্দেশ্যে ওয়াশরুমে গিয়ে চোখেমুখে পানি ছিটিয়ে আসল।
এসে দেখে সাদ বিছানার উপর বসে আছে। আয়ানা সাদের সামনে গিয়ে সাদের পায়ে হাত দিয়ে সালাম দিল। সাদ তাকে উঠিয়ে পাশে বসাল। প্লেটের একটা মিষ্টি কাটাচামচ দিয়ে তুলে আয়ানার মুখের সামনে ধরল।
” একি করছেন? আগে আপনার খাওয়ার নিয়ম।”
” স্বামীর খাওয়া অবশিষ্ট খাবার খেলে যদি মহব্বত বাড়ে, তাহলে স্ত্রীর খাওয়া অবশিষ্ট খাবার খেলেও বাড়বে। ভালোবাসা বৃদ্ধি পাওয়াটাই তো মূল বিষয়। সেটা যেই আগে খেয়ে নিক।”
সাদের কথায় আয়ানা এক কামড় মিষ্টি খেল। বাকিটা সাদ খেল, পানির গ্লাসে আয়ানা যে জায়গায় চুমুক দিয়ে খেয়েছে সাদও একি জায়গায় মুখ লাগিয়ে পানি খেয়েছে। সাদের এই ভিন্নতা ই আয়ানার এত ভালোলাগে। সাদ পকেট থেকে একটা আংটি বের করে আয়ানার বাম হাতের মাঝ আঙ্গুলে পরিয়ে দিল।
” আমি তোমাকে ভালোবাসাপূর্ণ একটা উপহার দিলাম, আর তুমি এর বিনিময়ে আমাকে সুন্দর গোছানো সংসারটা ভালবাসায় ভরিয়ে দিও। আমার পরিবারের সবাইকে আগলে রেখো, নিজের দায়িত্বের প্রতি কখনোই বিমুখ হয়োনা।”
” ইনশা আল্লাহ।” সাদের কথাগুলো আয়ানাকে ভীষণ মুগ্ধ করছে। গম্ভীর ছেলেটা এত সুন্দরভাবে কথা বলতে জানে সে কখনো ভাবতেও পারেনি।
” আজ আমাদের বিবাহের প্রথম রাত। প্রত্যেক স্বামী তার স্ত্রীর নিকট, স্ত্রী স্বামীর নিকট ভালোবাসা চায়। নতুনজীবন শুরু করার আগে স্বামী এবং স্ত্রী আল্লাহর নিকট শুকরিয়া জ্ঞাপন করে দুই রাকাআত নফল নামায পড়ে এবং স্ত্রীর প্রাপ্য দেনমোহর পরিশোধ করে। আমিও তাই করতে চাই।
তবে আমি তোমার কাছে আজ একটা জিনিস চাই।”
” কি চান?”
” একটু সময়।”
” মানে?”
” আমাদের দাম্পত্য জীবন পরিপূর্ণভাবে শুরু করার জন্য আমার একটু সময় চাই। আমি এক্ষুনি তোমাকে স্ত্রী হিসেবে সবটুকু অধিকার দিতে পারবনা। এর জন্য আমার কিছু সমঝোতা প্রয়োজন। সেই কারণেই আমার একটু সময় দরকার।তোমার প্রতি স্বামী হিসেবে আর যত দায়িত্ব-কর্তব্য আছে সবই পালন করব কিন্তু পরিপঊর্ণ স্বামীর মত আচরণ এখন করতে পারবনা।” আয়ানা এটা শুনে একটু চুপ করে রইল। তার মনে পড়ে গেল সাদের বাসায় সে মেয়েদের ওড়না আর কানের দুল দেখেছিল। এই ঘটনা ভেবে আয়ানা ভেবে নিল, সাদের অন্য কারো সাথে সম্পর্ক রয়েছে। তাই সে আয়ানাকে স্ত্রীর অধিকার দিতে পারবেনা, স্বামীর মত পরিপূর্ণ আচরণ সে করতে পারবেনা। ভেবেই আয়ানা ভীষণ ইমোশোনাল হয়ে গেল। মনের কষ্ট থেকে বলে ফেলল,
” আমাকে করুনা করে বিয়েটা করেছেন তাইনা? আপনি আমাকে কি ভাবেন বলুন তো! বার বার এভাবেই আপনি আমাকে বুঝাবেন আপনি আমার প্রতি বিরক্ত, আমার জন্য আপনার মনে কোনো জায়গা নেই। এতই যখন আমাকে অপছন্দ তবে কেন নিজের অনিচ্ছায় বিয়েটা করলেন? আমি তো আপনার কাছে করুণা চাইনি, ভালোবাসা চেয়েছিলাম। সেটা দিতে আপনি অক্ষম হলে এসবের তো কোনো দরকার ছিলনা।”
” আয়ানা…”
” আমাকে আর কোনোরকম বুঝ দিতে হবেনা। আমি আপনার কাছে কিছুই চাইনা। না স্ত্রীর অধিকার, না স্বামীর মত আচরণ। দয়া করে আমাকে একটু একা থাকতে দিন।” সাদ আর কিছু না বলে রুম থেকে নিশ্চুপে বেরিয়ে গেল।
আয়ানা খুব কান্না করতে লাগল। ভাবতে লাগল এভাবে ভালোবাসার মানুষকে পাওয়ার চেয়ে না পাওয়াটাই ভাল ছিল। অন্তত নিজেকে বুঝ দিতে পারত, সামলে নিতে পারত। কিন্তু এভাবে একঘরে থেকে আলাদা হয়ে তাকে পাওয়ার কোনো প্রয়োজন ছিলনা।
হঠাৎ এমনসময় রুমের সব আলো নিভে গেল। রুমের দরজাটা নিজে নিজে লক হয়ে গেল। আয়ানা টের পেল তার বিপরীত পাশে কেউ বসে আছে। আয়ানা ভয়ে চিৎকার দিয়ে উঠে যেতে নিলে বিপরীত পাশে থাকা কেউ সর্বশক্তি দিয়ে তার গালে সজোড়ে একটা চড় মারল। চড় খেয়ে আয়ানা টাল সামলাতে না পেরে বিছানা থেকে মেঝেতে পড়ে গেল। সেই প্রতিবিম্ব মূহুর্তেই তার গায়ের উপর ঝাপিয়ে পড়ে তার গলা খুব জোরে চেপে ধরে তাকে নগ্ন করতে ব্যস্ত হয়ে গেল।
এত জোরে গলা চেপে ধরায় আয়ানার দম বন্ধ হয়ে আসছে। প্রতিবিম্বটা তার শরীরের উপর নির্যাতন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এখন আয়ানা কি করবে! না চিৎকার করতে পারছে না বাধা দিতে সক্ষম হচ্ছে। আয়ানা বহুকষ্টে আয়াতুল কুরসী তিলাওয়াত করতে শুরু করল। শয়তানরুপী প্রতিবিম্ব টা রেগে গিয়ে সবকিছু ছেড়ে দুই হাত দিয়েই আয়ানার গলা চেপে ধরল। কিন্তু এক আয়াত পড়তে পারার সাথে শয়তান টা তাকে ছেড়ে দিল। কিন্তু আয়ানাকে খুব জোরে একটা ধাক্কা দিয়ে গেল। ধাক্কায় আয়ানা ড্রায়ারের পায়ার সাথে সজোড়ে বাড়ি খেয়ে অজ্ঞান হয়ে গেল।
(চলবে…..)