ইফ্রিতে মুসনাত পর্ব ৯

0
369

#ইফ্রিতে_মুসনাত
#পর্বঃ০৯
#লেখিকাঃ আস্থা রাহমান শান্ত্বনা

আয়ানার জ্ঞান ফিরতেই সে উঠে বসার চেষ্টা করল। উঠে বসতেই মাথাটা চিনচিন করে উঠল। সাদ তার পাশে চিন্তামগ্ন হয়ে বসে ছিল, তাকে উঠতে দেখে বাধা দিয়ে বলল,
” উঠোনা। রেস্ট নাও।”
আয়ানা আবার শুয়ে পড়ল। খেয়াল করল তার মাথায় ব্যান্ডেজ করা। শরীরটা ভীষণ ব্যথা করছে, সেই সাথে হালকা কাপুনি হচ্ছে। ব্যান্ডেজে উপর হাত দিতে দেখে সাদ বলল, ” কপালের খানিকটা কেটে গেছে। ঠিক হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ”
আয়ানার কিছু বলতে পারছেনা। কালকের ভয়াবহ ঘটনাটা মনে পড়তেই ভয়ে তার বুকের ভিতরটা ধকধক করে উঠল। চড়টার কথা মনে পড়তেই গালটা ব্যথা করে উঠল। এতজোরে চড়টা মেরেছিল যে এখনো গালটা ব্যথা করছে। এদিকে তার প্রচন্ড শীত শীত লাগছে, গা কাপছে। বোধহয় জ্বর আসবে।
খানিকক্ষণ পর জেসমিন আর রেশমা সুলতানা আয়ানার রুমে এলেন। তাদের দেখে সাদ বসা থেকে উঠে এককোণে দাঁড়িয়ে রইল। সাদের আম্মু এসে আয়ানার মাথার পাশে বসে আয়ানার চুলে বিলি কেটে বললেন,
“এখন শরীর কেমন মা? আমরাতো তোমার এই অবস্থা দেখে খুব ই ভয় পেয়ে গেছিলাম। কপাল কেটে মেঝে রক্তে ভেসে গিয়েছিল। এমন হল কি করে?”
আয়ানা কথা বলার শক্তিটুকুও পাচ্ছে। আস্তে আস্তে কোকাতে আর কাপতে লাগল। সাদের আম্মু ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে বললেন, “সাদ, মেয়েটা এমন কাপছে কেন? ওর শরীর আবার বেশী খারাপ হয়ে গেল নাকি?”
সাদ দ্রুত ছুটে এসে আয়ানার কপালে হাত রাখল। যা ভেবেছিল তাই আয়ানার শরীর কেপে জ্বর এসেছে। সাদ জেসমিনের দিকে তাকিয়ে বলল,
” ভাবী, একটু জলপট্টির বাবস্থা করে দাও।” জেসমিন জলপট্টির ব্যবস্থা করতে দ্রুত রুম থেকে বেরিয়ে গেল।
” আম্মু, ওর শরীর কেপে জ্বর এসেছে।” রেশমা সুলতানা উদ্বিগ্ন হয়ে আয়ানার মাথায় ঘন ঘন হাত বুলাতে লাগল। জলপট্টি দেওয়ার পরও আয়ানার জ্বর কমলনা, সাদ জ্বর মেপে দেখল ১০৪° জ্বর। সাদের বাবা সায়েদ জামিল দেরী না করে ডাক্তার কে ডাকলেন। ডাক্তার এসে কিছু ওষুধ দিয়ে গেলেন আর বললেন,
“জ্বর সারতে কিছুটা সময় লাগবে। প্রচন্ড ব্যথা আর ভয়ের কারণে জ্বর এসেছে।”
সবাই রুম থেকে চলে যাওয়ার পর সাদ আয়ানার মাথার নিকট বসল। আয়ানা গভীর ঘুমে মগ্ন। আস্তে আস্তে আয়ানার মাথায় হাত বুলাতে লাগল, খুব হালকা করে আয়ানার কপালে সাদ নিজের ঠোটের স্পর্শ দিল।
সন্ধ্যার দিকে আয়ানার জ্বর কিছুটা কমল। আয়ানা উঠে নামতে গেলে সাদ এসে বলল, “নামছো কেন? তোমার শরীর এখনো দূর্বল, জ্বরও পুরোপুরি কমেনি।”
“না..মায পড়ব তাই নামছিলাম।”
” অসুস্থ যেহেতু বিছানার উপর বসে নামায আদায় করো।”
” ওযু করতে তো উঠতে হবে।” সাদ কিছু বলার আগে আয়ানা উঠে দাড়াতেই ওর মাথা চক্কর দিয়ে পড়ে যাওয়ার অবস্থা হল। টাল সামলাতে না পেরে আবার বিছানায় বসে পড়ল সে।”
” তোমাকে উঠতে হবেনা। আমি তোমার অযু করিয়ে দিচ্ছি। একটু অপেক্ষা করো।” বলে সাদ ওয়াশরুমে চলে গেল। আয়ানা সেদিকে তাকিয়ে চুপ করে বসে রইল। কিছুক্ষণ পর সাদ মস্ত বড় গামলাভর্তি পানি এনে আয়ানার পায়ের কাছে রাখলাম। আয়ানার ব্লাউজের হাতা গুটিয়ে মাথায় ঘোমটা টেনে দিল। তারপর আয়ানার হাতের গিরা পর্যন্ত ৩বার ধুইয়ে দিয়ে নিজের হাতের কোষে পানি নইয়ে আয়ানাকে কুলি করতে বলল। মাথা ম্যাসাহ করে পা দুটো গামলায় ডুবিয়ে ভালো করে পা ধুয়ে দিয়ে বলল, ” এবার তুমি যেভাবে সুবিধা হয় নামায আদায় করো। আমিও নামায পড়ে আসছি।” তারপর সাদ বেরিয়ে গেল।
আয়ানা কালকের ঘটনাটা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারছেনা। ওর কেন জানি মনে হচ্ছে সেই বাজে প্রতিবিম্বটা এতে দমে যাবেনা, সে আবার আসবে। আবার আয়ানাকে শারীরিক নির্যাতন করার অপচেষ্টা চালাবে। কিন্তু সে কিছুতেই বুঝতে পারছেনা, জ্বীনটা কেন তার পিছনে পড়ে আছে। মাঝখানে সে তার কর্মকান্ড স্থগিত করলেও এখন আবার শুরু করেছে। সবচেয়ে বাজে ব্যাপার, ওই জ্বীনটা আয়ানার কারণে দুটো নির্দোষ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। এতদিন না বুঝলেও আয়ানা আজ বুঝতে পারছে, নিয়ন আর ফারিবের মৃত্যু কোনো দুর্ঘটনা বা আত্মহত্যা নয়। এটা সে খারাপ জ্বীনটা ই করছে, নাহলে যে ওকে বিয়ে করতে আসছে তাদের মৃত্যু কেন হবে! আচ্ছা সাদের তো কিছু হলনা! সাদ তো তাকে বিয়েই করে নিয়েছে। জ্বীন যদি এসব করত তাহলে তো সাদের ক্ষতির আশঙ্কা থাকত নাকি আয়ানা শুধুমাত্র মনের ভুলে এসব ভাবছে। কোনো হিসেব ই আয়ানা মিলাতে পারছেনা। এসব ভাবতেই মাথাটা আরো ব্যথা করে উঠছে।
.
মাঝরাতে আয়ানা ঘুমের ঘোরে আবোলতাবোল বকতে থাকে। সাদ আয়ানার পাশে আধশোয়া হয়ে আয়ানাকে জড়িয়ে ধরল। তাও আয়ানা বার বার বলছে,
” জ্বীনটা আবার আসবে, ওই আমার পিছু ছাড়বেনা।
আমার খুব বড় ক্ষতি করবে।” এসব শুনে সাদের মুখ লালবর্ণ ধারণ করল। তার চোখ থেকে টপটপ করে কয়েক ফোটা পানি ঝরে পড়ল। ফোটা ফোটা পানি তার গয়াল গড়িয়ে আয়ানার কপাল স্পর্শ করতেই আয়ানা জেগে গেল। একটু নড়তে গিয়ে দেখে সে সাদের বুকে উপর মাথা রেখে শুয়ে আছে। সাদ তাকে জড়িয়ে ধরে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। এসব দেখে আয়ানার ভীষণ ভালোলাগছে। সে এখন নড়লে সাদ সে জেগে গেছে টের পেয়ে হয়ত তার থেকে নিজেকে সরিয়ে নিবে। এই আশঙ্কায় আয়ানা ঘুমের ভান ধরে সাদের বুকে শুয়ে রইল। সাদের বুকের হালকা সোনালী লোম গুলো ওর গাল স্পর্শ করছে, অন্যরকম এক অনুভূতি হচ্ছে ওর। আজ খুব কাছ থেকে সাদের খোলা বুকটা দেখতে পাচ্ছে। সেদিন ও ঠিক ই দেখেছিল সাদের বুকের রঙ্গটা লালচে সাদা বর্ণের। সাদের সবকিছু একটা সাধারণ ছেলের থেকে ভিন্ন। সাদ হঠাৎ আয়ানার কপালে একটা ছোট্ট চুম্বন একে চাপাস্বরে কাদতে শুরু করল। আয়ানা হালকা চোখ মেলে ল্যাম্পের আলোতে সাদকে কাদতে দেখে অবাক হল। এই চাপা স্বভাবের গম্ভীর ছেলেটা বাচ্চাদের মত ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদছে কেন! কিসের এত কষ্ট ওর!
আয়ানার জিজ্ঞেস করার সাহস হলনা। সে নিশ্চুপে সাদের চেহারার দিকে তাকিয়ে রইল। কাদতে কাদতে ছেলেটার নাকটা লাল হয়ে গেছে, জ্বলজ্বল করা চোখগুলো ফ্যাকাশে লাল হয়ে আছে। এই রুপটা আয়ানাকে বিমোহিত করল। সাদের হয়ত মন খুলে কাদতে ইচ্ছে করছে, এই চাপাকান্নায় সে হালকা হতে পারছেনা। তাই সে আলতো করে আয়ানার মাথাটা সরিয়ে বালিশে রেখে ব্যালকুনিতে গিয়ে ব্যালকুনির দরজা লক করে দেয়। সাদের ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্নার শব্দটা আয়ানার কানে আসছে। কতটা কষ্ট পেলে কেউ এভাবে কাদতে পারে তা আয়ানার জানা নেই! তবে এইটুকু জানতে পেরেছে সাদের গম্ভীরতার আড়ালে কোনো চাপা কষ্ট আছে। যা সে কখনোই প্রকাশ করতে পারেনি।
সাদের কান্নার শব্দ শুনে আয়ানারও কান্না পেয়ে গেল। কান্নার শব্দটায় এতটা আর্তনাদ বিদ্যমান যে সেটা যে কারো হৃদয়ে টনক দিবে।
হঠাৎ সাদের কান্নার শব্দ থেমে গেল। হালকা ফিসফিস স্বরে কিছু কথার আওয়াজ আসছিল। আয়ানা কান খাড়া করে বুঝার চেষ্টা করল, কিন্তু কথাগুলো এমন দ্রুত আর ফিসফিস স্বরে বলা হচ্ছিল যে সে কিছুই বুঝলনা। সাদ এত রাতে ব্যালকুনিতে কার সাথে কথা বলছে? সাদ ছাড়াও ওখানে আর কে আছে!
আরেকটু অপেক্ষা করে আয়ানা কথাগুলো বুঝার চেষ্টা করল, কোনো লাভ হলনা। উঠে ব্যালকুনির কাছে যাবে এমনসময় দরজা খোলার আওয়াজ পেয়ে আবার ঘুমের ভান ধরে শুয়ে রইল। আয়ানার মনে হচ্ছে, সাদ যদি টের পায় আয়ানা তার এসব শুনেছে আয়ানাকে তো এসবের উত্তর দিবেই না উলটো আয়ানার কাছ থেকে নিজেকে আরো গুটিয়ে নিবে।
সাদ ব্যালকুনি থেকে এসে সোজা আয়ানার মুখের সামনে এসে মেঝেতে হাটু গেড়ে বসল। তারপর আয়ানার ডানহাত তার দুহাত দিয়ে জড়িয়ে গালের সাথে ধরে রেখে অপলকে আয়ানার দিকে চেয়ে রইল কিছুক্ষণ। আস্তে আস্তে আয়ানার মুখের খুব কাছাকাছি এসে একটা কান্ড করে বসল। আলতো করে আয়ানার ঠোট বরাবর নিজের ঠোট দিয়ে একটু স্পর্শ করল। তারপর আর এক মূহুর্ত না থেকে দ্রুত রুম থেকে বেরিয়ে চলে গেল। আয়ানা শোয়া থেকে সোজা উঠে বসল, তার ঠোট এখনো উত্তেজনায় কাপসে। সাদকে এখনো সে ঠিক বুঝে উঠতে পারেনা। সাদ কখন কি করে এবং কেন করে সেটার কারণ আজো আয়ানার নিকট অস্পষ্ট।
কিন্তু সাদ এইসময় কোথায় গেল! গাড়ির শব্দ পেয়ে আয়ানা উঠে ব্যালকুনিতে গিয়ে নিচের দিকে তাকাল। সাদ পার্কিং থেকে গাড়ি ড্রাইভ করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। আয়ানা হতাশ হয়ে ওখানেই বসে পড়ল।
কেন জানি তার মনে হতে লাগল, সাদ তার গোপন প্রেমিকার কাছে গেছে। এতরাতে ব্যালকুনিতে বসে তার সাথেই কথা বলছিল, তার জন্য ই কাদছিল। বোকা আয়ানা একবারের জন্য হলেও তার মনে হয়েছিল সাদ বুঝি তার জন্য কাদছিল। তার অসুস্থতা নিয়ে কষ্ট পাচ্ছিল। এইজন্য ই হয়ত এক্সপেক্টেশন কম রাখতে হয়। তাই যদি হয় সাদ তাকে এভাবে চুম্বন করল কেন?
এত “কেন”র উত্তর না পেয়ে আয়ানার মস্তিষলে প্রচন্ড জট পাকিয়ে গেছে। আয়ানা ঠিক করল, সে এসব নিয়ে আর ভাববেনা। নিজেকে সাদ থেকে দূরে রাখবে, তাহলেই আর কোনো প্রশ্নের তার মনে ঘুরপাক খাবেনা। সুযোগ বুঝে সাদকে সে সব প্রশ্ন একসাথে করবে, সেদিন যদি সাদ উত্তর না দেয় আয়ানা ওকে ডিভোর্স দিয়ে এখান থেকে চলে যাবে। এমন রহস্যের মাঝে আর আর থাকা সম্ভব হবেনা। এমনিতেও এখনো সে ভিতরে ভিতরে তিলে তিলে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে।
.
আয়ানার শরীর আগের থেকে কিছুটা ভাল। সে সবার সাথে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে। সকাল থেকে জেসমিনের সাথে রান্নাঘরে টুকটাক কাজ করছে। ভাবী আয়ানার সাথে গল্প গল্প করতে আয়ানার আঙ্গুলে থাকা আংটি দেখে দুষ্টুমির হাসি হেসে বলল, ” আমার দেবরের পছন্দ কিন্তু খুব সুন্দর। কি বলো?”
আয়ানা বুঝতে পেরে মুচকি হেসে মাথা নাড়াল।
” আমার দেবরটা কই? আজ তো উনার চাদবদনটা দেখছিনা!”
সাদের কথা জিজ্ঞেস করতেই আয়ানা একটু চিন্তিত হয়ে পড়ল। কাল রাতে যে সাদ বেরিয়ে ছিল এখনো পর্যন্ত ফিরেনি। কোথায় আছে সাদ?
” ভাবী উনি তো এখনো ফি…..
কথা শেষ করার আগেই সাদ রান্নাঘরের সামনে এসে ভাবী বলে ডাক দিল।
” কই ছিলেন দেবরসাহেব?”
” ঘুমাচ্ছিলাম একটু।” আয়ানা চোখ বড় বড় সাদের দিকে তাকাল। কি মিথ্যুক ছেলেটা!! কত সহজে মিথ্যা বলে দিল। সাদ আয়ানাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে চোখ টিপ দিল। আয়ানা ঢক গিলে দৃষ্টি সরিয়ে নিল।
” ভাবী চা বানিয়েছো? এক কাপ দাও তো। মাথাটা বেশ ধরেছে।”
” হ্যা আয়ানা বানাচ্ছে। একটু অপেক্ষা করো হয়ে এসেছে।”
” ও চা বানাচ্ছে? আমার আর চা খেতে হবেনা, আমি চললাম।”
” এভাবে বলছো কেন? আয়ানা আমাকে বলেছে ও ভাল চা বানাতে পারে।”
এই কথা শোনামাত্র আয়ানা দাত দিয়ে জিভ কাটল। ভাবী তাকে অসুস্থের দোহাই দিয়ে কোনো কাজ করতে দিচ্ছিলনা, তাই আয়ানা এইটা বলে কাজে হাত দেওয়ার অনুমতি পেয়েছে। এখন সাদ তাকে ভাবীর সামনে ঘোল না খাওয়ায়। সাদ হাসি চেপে রাখা মুখ করে রান্নাঘরের সামনে থেকে চলে গেল।
নাস্তার টেবিলেও রেশমা সুলতানা বারবার বলার পর ও সাদের পাশে বসে নাস্তা করলনা আয়ানা। পরে ভাবীর সাথে খাব বলে এড়িয়ে গেল।
সাদের মুখোমুখি হলেই কোনো না কোনো অযুহাতে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে। সাদের সাথে সরাসরি কোনো কথাও বলছেনা। রাতে শ্বাশুড়িমার ঘরে গিয়ে উনার পা টিপতে টিপতে গল্প করে। অনেক দেরী করে এসে দেখে সাদ গভীর ঘুমে মগ্ন।
আয়ানা আস্তে করে ব্যালকুনি থেকে ছোট বালিশগুলো এনে সাদ আর তার মাঝখানে রেখে শুয়ে পড়লাম। তখন ই সাদ আয়ানার উপর ঝুকে তার হাত দুটো চেপে ধরল।
আয়ানা ভয় পেয়ে জিজ্ঞেস করল,
” এভাবে ধরেছেন কেন? কি হয়েছে আপনার?”
” সেটা আমার তোমাকে জিজ্ঞেস করা উচিত।”
” আমার কিছু হয়নি।”
” সারাদিন আমাকে এড়িয়ে চলেছো লক্ষ করলাম।”
” আমার ইচ্ছে আমি এড়িয়ে চলছি, তাতে আপনার কি!”
সাদ আয়ানার হাত আরো শক্ত করে জড়িয়ে বলল,
” কেন চলবা? সেটার উত্তর দাও।”
” দিবনা। আমি কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য নই।”
” বাধ্য নও?”
” জ্বি না।” সাদ আলতো করে আয়ানার নাকে কামড় বসাল।
” আউচ্চচ্চচ্চ!! এটা কি হল?”
” আমিও উত্তর দিতে বাধ্য নই।” সাদ আবার আয়ানার দিকে এগিয়ে আসছে। আয়ানা ভয়ে চোখ বুজে ফেলল, ও নিশ্চিত এবার সাদ ঠোট বরাবর ই কামড় বসাবে। কি বিচ্চু ছেলে! আয়ানা ঠিক করেছে জোরে চিৎকার দিবে যাতে সাদ ভয় পেয়ে তাকে ছেড়ে দেয়। চিৎকার দেওয়ার আগেই সাদ নিজ থেকে সরে উঠে বসল।
একটু চুপ করে বসে কয়েকবার হাত মুঠ করল আবার খুলল।
তারপর কিছু না বলে দ্রুত বেরিয়ে চলে গেল। আয়ানা অবুঝের মত ঢ্যাপঢ্যাপ করে সেদিকে তাকিয়ে রইল। তারপর দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবার শুয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করল। সাদকে সে কখনোই বুঝবেনা, আর না বুঝতে পারার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অনেক কষ্টে নিজেকে সাদ থেকে দূরে রেখেছে। তাও ঘুরেফিরে সেই একই যন্ত্রণার মুখোমুখি হল। অনেক হয়েছে আর নয়।
সাদ ফিরলেই আজ সে সাদের কাছে সব প্রশ্নের উত্তর চাইবে। সাদ যদি তাকে উত্তর না দেয় সে যে সিদ্ধান্ত ঠিক করেছে সেটায় অটল থাকবে। রোজ রোজ এই অসহ্য যন্ত্রণা আয়ানা আর সহ্য করতে পারছেনা। এবার যা হবার তা ই হবে। সেটা তার জন্য ভালো হোক কিংবা খারাপ!
(চলবে…..)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here