Senior।life partner পর্ব ১৮

0
1612

#Senior_life_partner
পর্ব—-18
Afrin Ayoni

শাহেদ নিশুয়ার দিকে তাকিয়ে,”এই মেয়ে তুমি এইখানে?”
নিশুয়া— আপনি ???
শাহেদ– তোমার ভার্সিটিতে কি কাজ?
নিশুয়া– ইয়ে মানে আপুর সাথে এসেছি।
শাহেদ– বাহ্ good…পড়াশোনা বাদ দিয়ে ভার্সিটির occasion এ আসা হচ্ছে??

নিশুয়া আমতা আমতা করে, “তা স্যার আমি না হয় পড়াশোনা বাদ দিয়ে এখানে এসেছি,আপনার কি কাজ এইখানে?”

শাহেদ– আমি অহেতুক এখানে আসিনি।

নিশুয়া– তা কেন এসেছেন??

শাহেদ– এই মেয়ে তুমি কি আমাকে জেরা করছো??

নিশুয়া– না মানে …. sir

শাহেদ নিশুয়ার কথায় কান দিয়ে অন্য দিকে চলে গেল।
শাহেদ চলে যাওয়ার পর নিশুয়া জোরে নিঃশ্বাস নিলো।
মনে মনে বলতে লাগলো,”রাক্ষস একটা,সব সময় খালি বকাবকির উপর থাকে।”

নিশুয়া ইসুয়া কে খোঁজতে লাইব্রেরির দিকে যায়।এইদিকে ইসুয়া লাইব্রেরি তে এসে কিছু বই খুঁজছিলো।
হঠাৎ লাইব্রেরির একটা কোণে কিছু বেলুন আর ভীষণ বড় একটা টেডি দেখে তার দিকে এগিয়ে গেল,,সাদা লাল রঙের টেডিটার গলায় ঝুলছে একটা চিরকুট।
ইসুয়া এগিয়ে গিয়ে চিরকুট টা হাতে নিল।

চিরকুটে লেখা —- Miss অধ্যাপিকা,খোঁপার ফুলে হাত দিয়েছি বলে মান হয়েছে?আপনাকে যেদিন নিজের করে নিব সেদিন এই একটা কাঠগোলাপের হিসাব না হয় হাজার টা দিয়ে চুকিয়ে নিব।

ইসুয়া মনে মনে, “এই ছেলেটা পাগল?না পেট খারাপ আল্লাহ্ ই জানে।”

পিছন থেকে কেউ ইসুয়ার কানে ঠোঁট এগিয়ে বললো, “Miss অধ্যাপিকা পেট খারাপ না,মাথা খারাপ পাগল বলতে পারেন।আপনার জন্য আমার মাথাটা বুঝি এবার সত্যিই গেল।”

ইসুয়া খানিকটা দূরে সরে গিয়ে,”আচ্ছা, সমস্যা কি আপনার বলুন তো?”

রবিন– আমার?আমার কোনো সমস্যা নেই তো।

ইসুয়া– নয়তো আগে পিছে এভাবে ঘুর ঘুর করার মানে কী??

রবিন– ভালবাসি অধ্যাপিকা।

ইসুয়া– মাথা ঠিক আছে?কি বলছেন?

রবিন– আমার মাথা ঠিক ই আছে ।

রবিন হাঁটু গেড়ে বসে ইসুয়ার সামনে,হাত বাড়িয়ে দেয় ইসুয়ার দিকে …. “আপনি কি আমার Senior life partner হবেন miss ইসুয়া তালুকদার?”

ইসুয়া রবিনের দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে।

ইসুয়া– এসব কেমন …………

রবিন– অসভ্যতা????? এই একটা কথা ছাড়া কি আমার জন্য আপনার মুখ থেকে আর কোনো কথা বের হয় না miss অধ্যাপিকা??

ইসুয়া– এইবার কিন্তু বাড়াবাড়ি হচ্ছে।

হঠাৎ ই রবিনের পিছনে এসে দাঁড়ায় নিশুয়া, শুভ আর নয়ন। নিশুয়া লাফিয়ে উঠে,”plz say yes..”

ইসুয়া নিশুয়ার দিকে চোখ রাঙ্গিয়ে বলে উঠে, “নিশুয়া চুপ কর।”

শুভ — আরে ভাবী ম্যাডাম প্লিজ রাজি হয়ে যান।

ইসুয়া হন হন করে লাইব্রেরি থেকে বেরিয়ে পড়ে। ইসুয়ার মুখ টা টকটকে লাল হয়ে উঠে। নিশুয়া বেচারি রবিনের পাশে এসে দাঁড়ায়।

নিশুয়া– এবার কি হবে??

রবিন– ইভটিজিং।

নিশুয়া– মানে?

রবিন– এবার হতে তোমার বোন সকালের breakfast, দুপুরের লাঞ্চ আর রাতের ডিনারের মত তিন বেলা আমার কাছে ইভটিজিং খাবে।

নয়ন জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে ,”ইভটিজিং ও খাওয়া যায় দোস্ত?”

রবিন– সে তো কাল থেকে দেখতেই পাবি।

রবিন মনে মনে, “আমাকে রিজেক্ট করার ফল পাবেন আপনি Miss অধ্যাপিকা।রেডি থাকুন….”

————————————————-

এই নাও আন্টি,তোমার সবজি খিচুড়ি।

রেহানা বেগম রিদীমার কথায় নড়েচড়ে বসে। রিদীমা খিচুড়ির প্লেট টা তার সামনে রাখে।রেহানা বেগম হাসিমুখে খিচুড়ি মুখে দেয়।

রেহানা বেগম রিদীমার দিকে তাকিয়ে, “ইস ! আজ যদি একটা ছেলের বউ থাকতো,তবে এই বৃদ্ধ শ্বাশুরীর কত সেবা ই না করতো।”

স্বাদ– কেন?তোমার ছেলে তোমার take care করে না?

রেহানা বেগম– ছাই করে।

রিদীমা– এভাবে বলো না আন্টি, জানো স্বাদের অবস্থা যদি তুমি একবার দেখতে।

স্বাদ– রিদ চুপ কর meri ma….

রেহানা বেগম– তুই বল মামণি।

রিদীমা– তোমার এত বড় দামড়া ডাক্তার ছেলে হসপিটালে বসে সে কি বাচ্চা দের মত কান্না।

রেহানা বেগম আড়চোখে স্বাদের দিকে তাকিয়ে, “কি বলিস ? হতচ্ছাড়া টা ওখানে ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কেঁদেছে?”

স্বাদ– আমি মোটেও ঐভাবে কাঁদিনি মা।

রেহানা বেগম– তুই যে কিভাবে কাঁদতে পারিস,সে তো আমার জানা আছে।

স্বাদ সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে উঠতে বলে,”just অসহ্য মা …. তুমি always আমাকে পচাও।আর রিদ… সাথে তুই ও যোগ দিলি ? Disgusting…..”

রেহানা বেগম আর রিদীমা অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে। স্বাদ নিজের রুমের দিকে পা বাড়ায়।

হঠাৎ রিদীমার ফোনে কল আসে,কলটা রিসিভ করতে রিদীমা বারান্দার দিকে এগোয়।

Hlw mr. John বলুন।

রিদীমার business clients এর কল।কিছুক্ষণ জরুরী আলাপ করে ফোন টা রাখে রিদীমা। হঠাৎ স্বাদের বাসার রাস্তার ঠিক অপর পাশের বাসাটার দিকে চোখ যায় রিদীমার।

সাদা ধবধবে গায়ের রঙের একটা বিদেশী মেয়ে স্বাদের রুমের জানালার দিকে একটা দূরবীক্ষণ যন্ত্র তাক করে কিছু দেখছে।রিদীমা কিছুক্ষণ ঘটনা টা ভালো করে পর্যবেক্ষণ করলো।তারপর Sure হল যে মেয়ে টা আসলেই স্বাদের রুমেই কিছু দেখছে।

রিদীমা ফোনটা নিজের জিন্সের পকেটে ঢুকিয়ে স্বাদের দিকে এগোয়। স্বাদ হসপিটাল থেকে কিছু দিনের জন্য ছুটি নিয়েছে মায়ের দেখাশোনার জন্য। কিছু কাগজপত্র দেখছিলো হসপিটালের। রিদীমা এসে স্বাদের দরজায় নক করে।

ভিতরে আয় রিদ।

রিদীমা– তুই কি করে জানলি আমি এসেছি?

স্বাদ– এমনিতেই বস।

রিদীমা– একটা কথা।

স্বাদ– বল।

রিদীমা– মেয়ে টা কে রে??

স্বাদ ভ্রু কুঁচকে, “কোন মেয়ে?”

রিদীমা– ঐ যে…..

স্বাদ– ও ও তুই পাশের বিল্ডিংয়ের মেয়ে টার কথা বলছিস?

রিদীমা– হ্যাঁ।

স্বাদ– পাগল মেয়ে টা কি করছিলো দেখলি?

রিদীমা– দূরবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে এদিকে কিছু দেখছে।

স্বাদ– এর খেয়ে দেয়ে আর কাজ নেই। এক সপ্তাহ আগে আমার পুরো বডির এক্সরে রিপোর্ট পাঠালাম তাও ঐ যন্ত্র টা কে এত কষ্ট দিচ্ছে।

রিদীমা– What ? কাহিনী কি বলতো?

স্বাদ– আর বলিস না, আমাকে follow করছে… proposal reject করার পর ও পিছু ছাড়ছে না।

রিদীমা– Really!!

স্বাদ– আরে হ্যাঁ!তো আর বলছি কি?

রিদীমা কিছু একটা ভেবে হাসতে লাগলো আর স্বাদ তার মুগ্ধ চাহনি তে চেয়ে রইলো তার দিকে।

__________________(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here