তোকে আমার চাই ৩

0
1260

#তোকে আমার চাই❤
#লেখিনীতে : ইসরাত জাহান তন্নি ( মাহি )❤
পর্ব . ৩

জীবন থেকে যদি কোনো স্মৃতি মুছা যেতো তাহলে ২ জানুয়ারি নামক দিনটা মুছে ফেলতাম,পরিবারের সব থেকে ছোট সদস্য হওয়ার কারনে আদর স্নেহ ভালোবাসাটা খুব বেশিই ছিলো আমার প্রতি ২ জানুয়ারি দিন টিতে ছিল আমারই বড় আব্বুর মেয়ে ইতির অর্থাৎ আমার জেঠা তো বোন সে আমার থেকে বয়সে এই কি দুই বছরের বড় হবে বড় আব্বু অসুস্থ হয়ে পড়ার কারনে ইতি আপুকে এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে দেওয়া, হলুদ সন্ধ্যার দিন এ আগমন গঠলো আমার একমাত্র ফুপির দীর্ঘ ২৭ বছর পর এসেছিলে ফুপি এর মধ্যে এমন একটি দিন নেই যে বড় আব্বু আর আমার আব্বু কাঁদে-নি শুনেছিলাম দাদির কাছে ফুপির নাকি লাভ ম্যারিজ হয়েছিল যেটা আমার দাদু মেনে নেয়-নি কখনো এমন কি বড় আব্বু ও কখনো মেনে নেয়-নি কিন্তু প্রতিটা মুহূর্তে মিস করতেন একমাত্র বোন বলে কথা, সেদিন ফুপি একা আসেন -নি সাথে ছিল দুই ছেলে শুভ্রব ভাইয়া আখিল ভাইয়া এবং ছেলের বউ নীরা ভাবি, কথা ছিল এতো বছর পর যেহেতু এসেছেন কটা দিন থেকে যেতে, ওহে,ফুপাজি ও এসেছিলে ফুপিকে বড্ড বেশি ভালোবাসেন,তিনি

সেদিন হৈ চৈ এ মেতেছি সবাই এর মধ্যে প্রচুন্ড মাথা ব্যাথা ছিল আমার এ মুহূর্তে আমার একটু বিশরাম নেওয়া দরকার নীভর শীতল জায়গা খুব প্রয়োজন যদি একটু মাথা ব্যাথা কমে আর কি,যে ভাবা সে কাজ সব রুমেই তো মানুষ ভর্তি লোকজন খুজঁতে খুজঁতে একটা রুমে চলে গেলাম

ধীরে ধীরে রুমে পা বাড়াতেই কেউ একজন ধমকে কন্ঠে বললেন!

‘এই পুঁচকে কি চাই। এখানে এসেছিস কেন?

পিছনে ফিরতে চুপসে গেলাম আমি এ তো ফুপির ছেলে শুভ্রব ভাইয়া ওনি এখানে কি করছেন উনার সাথে এটা কে মায়া আপু না, নিশির বড় বোন মায়া আপু কিন্তু উনি’, শুভ্রব ভাইয়ার সাথে এখানে কেন, শুভ্রব ভাইয়া মায়া আপুর কোমর জড়িয়ে আছেন আমাকে দেখা মাত্রে তারা দূরে সরে গেলেন!

—“”ক কই কিছু না, তো না, মায়া আপু তুমি এখানে

‘তনু তুই মায়াকে চিনিস ( সন্দেহ কন্ঠে )

—“হ্যাঁ চিনবো না কেন আমার বান্ধবীর নিশির বোন, ( মুখে হাসি রেখে বললাম)

মায়া আপু কিছু বললেন না শুধু মুচকি হাসলেন

‘তা বুঝলাম তুই এখানে কেন এসেছিস বল তো তোর জন্য ঠিক মতো রোমাঞ্চ ও করতে পারলাম না, ( রাগী লুক নিয়ে )

–” আমি আবার কি করলাম ( অবাক হয়ে বললাম )

‘এই যে আমি রোমাঞ্চ করছিলাম এর মধ্যে তোর আগমন গঠলো ছোট বাচ্চাদের সামনে কি আর রোমাঞ্চ করা যায় বল রোমাঞ্চ এ বির্গাদ ঘটানোর জন্য তোকে শাস্তি পেতে হবে, কি শাস্তি দেওয়া যায় বল তো দেখি?

শাস্তির কথা শুনে যেনো আমার ভয়ে গলা চুপসে গেলো একদিকে মাথা ব্যাথা অন্য দিকে উনি বলছেন শাস্তি দিবে ধ্যাত আগে জানলে বিশরাম নেওয়ার জন্য উঠে পরে লাগলাম না,

–“আরে শুভ্রব ছাড়ো না বাচ্চা মেয়ে একটা একটু ভুল না হয় করে পেলেছে, ছেড়ে দাও ( ক্লান্তা মাখা কন্ঠে বললেন )

‘আরে না ছাড়বো না, পেত্নী টাকে শাস্তি পেতেই হবে,তনু তুই বরং দরজার সামনে দাড়িয়ে থাক যাতে আর কেউ আমাদের ডিস্টার্ব করতে না পারে,বেঝেছিস যা।।

—” আমি পারবো না আমার মাথা ব্যাথা করছে ( করুন সুরে )

— মাথা ব্যাথা মাই ফুট ( রাগী কন্ঠে )

আর কোনো উপায় না দরজার সামনে পা বাড়াতে কোথা থেকে ফুপি এসে আমার দুহাত ধরে বললেন!
‘-কোথায় ছিলি রে তুই তোকে যে আমি খুজে চলেছি? ( হাসি মুখে )

—“এই তো এখানেই ছিলাম ( হাসির চেষ্টায় বললাম )

এদিকক ওদিল তাকিয়ে শুভ্রব ভাইয়া আর মায়া আপু কে দেখে জোড় গলায় বললেন….

‘-তোরা এখানে কি করছিস ওইদিকে গান বাজনা হচ্ছে দেখবি চল, এদিকে আয় তনু শোন ও হলো মায়া আমার দেবর এরের একমাত্র মেয়ে,, বলেই মুচকি হাসলেন, এভাবে কিছু খন কথা বলার পর সবাই মিলে স্টেজ এ চলে গেলাম,,,,

এই ভাবে কেটে গেলো কটা দিন তবে প্রতিদিনই শুভ্রব ভাইয়া আমাকে ছালিয়েছে এটা দেও ওটা দেও এটা খাবো না ওটা খাবো এই আর কি,,, ইতি আপুর বিয়ের কয়দিন পর ফুপিরা চলে গেলেন, শুভ্রব ভাইয়া আমাকে বলেছিলে উনি মায়া আপুকে কিছু দিলে তিনি নিতেন না তাই আমাকে দিয়ে কিছু না কিছু দিতেন, কখনো লাল শাড়ি কখনো নীল শাড়ি সাথে মেক্স করা চুড়ি কানের দোল চিরকুট তো আছেই, ইত্যাদি, ইত্যাদি, এভাবে কেটে যায় কিছুদিন, ধীরে ধীরে মায়া আপু আমায় ভীষন ভালোবেসে পেলেন, কিছুদিন পরই আমি কি না তার সাথে কি করে ফেললাম সে আমাকে ভালোবেসেছিল আর আমি তার ভালোবাসার মানুষটিকে নিজের করে নিলাম কতটা নিলর্জ আমি,ছিঃ নিজের প্রতি নিজের খুব ঘৃনা হয় এতোটা খারাপ আমি সব কিছু জানার পর ও কেন বিয়ে টা আটকালাম না আমার একটাই প্রবলেম বড়দের মুখে মুখে কথা বলতে পারি না,যার জন্য আর আমাকে এদিন টা দেখতে হলো!







ভোরবেলায় শোভাময়ী এলোকেশী মেঘলা এক সকাল ছাড়ো দিকে আফছা আফছা আলো কেমন যেনো মেঘলাময় আকাশ, মনে হচ্ছে বৃষ্টি নামবে নামুক বৃষ্টি মন খারাপ এর সময় তে বৃষ্টি ভালো লাগে,,,,,সারারাত ধরে দুচোখের পাতা এক করতে পারিনি ঘুম কিছুতেই হয়-নি ফজরের নামায আদায় করে কার আর ভালো লাগে রুমে বসে থাকতে তাই ছাদের এসে রেলিং ধরে দাড়িয়ে আছি,,,

কোথা থেকে নীরা ভাবি এসে, আত্নকা কন্ঠে বললেন’, তুমি এখানে আর আমি তোমাকে সারা বাড়ি খুঁজে বেড়াচ্ছি জানো মায়ার ভয়াংক এক্সিডেন্ট করেছে এখন ও হসপিটালে আছে, বাবা মা আখিল শুভ্রব সবাই গিয়েছে শুধু তুমি আর আমি বাদে,,,

‘জানো তো ভাবি নিজেকে বড্ড অপরাধী মনে হচ্ছে, খুব ভয় করছে অসহ্য লাগছে মনে হচ্ছে মায়া আপুর মৃত্যুর জন্য আমিই দাই, আমার কিচ্ছু ভালো লাগছে না আমি যাবো মায়া আপুর কাছে প্লিজ….আমাকে নিয়ে চল, ( কান্না করতে করতে বললাম।)

–” আরে যাহ, পাগলি মেয়ে তোমার কোনো দোষ নেই, আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন, মায়া কাল রাতে বাড়ি ফিরার সময় গাড়ি এক্সিডেন্ট করে কিভাবে জানো!

আমি দুপাশে মাথা নাড়াতে ভাবি অস্থি হয়ে বললেন!

‘মায়াদের গাড়ির সাথে বড় একটা টার্ক এর ধাক্কা লাগে মায়া ছিল সাইড দিয়ে বসাতে চাচা চাচামা ছিলেন মধ্যে খানে যার জন্য উনাদের তেমন কোনো ক্ষতি হয়-নি কিন্তু মায়ার অবস্থা খুব খারাপ, ডক্টর নাকি বলেছেন মায়া বাচঁতেও পারে আবার না ও বাচঁতে পারে কিছুই বলা যাচ্ছে না সম্ভবত বাচঁবে না! তোমার আখিল ভাইয়া ফোন করে বলেছেন শুভ্রব শুনে তো পাগলের মতো হয়ে গেছে,

মায়া আপুর মৃত্যুর কথা টা শুনে আমি চিৎকার করে বললাম, না মায়া আপু মরতে পারে না,মায়া আপু বাচঁবে তাকে বাচঁতে হবে, মায়া আপুর মতো ভালো মানুষ মরতে পারে না,শুভ্রব এর জন্য হলেও বাচঁতে হবে!
আমাকে প্লিজ,,,, ওখানে নিয়ে চলো
বলেই ভাবিকে জড়িয়ে ধরে কাদঁতে লাগলাম

#চলবে

( আমি জানি আমার অনেক বানান হয় তো ভুল হয় প্লিজ আপনারা একটু বুঝে পড়বেন, ভুল ক্রুটি মাফ করবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here