তোকে আমার চাই ৭

0
989

#তোকে আমার চাই
#লেখিনীতে : ইসরাত জাহান তন্নি
#পর্ব. ৭
|

|

|

|

‘জলমলে রৌদ্রময় সকাল আকাশে পাখি গুলো কেমন ছুটাছুটি করছে,কখনো কখনো সুরে বিহীনে গান’গাইছে তারা বেলকুনিতে থাকা গোলাফ,গাঁধা,শিউলি কাঠগোলাপ, নানান রকমের ফুল থেকে স্নিগ্ধা ছড়িয়ে আছে, পুরো রুমকে যেনো স্নিগ্ধকর ঘায়েল করছে জানালার, পর্দা দিয়ে আসা একটুকরো রোদ এসে পড়েছে,আমাদের বিছানায়’, একটুকরো রোদ এসে পড়েছে উনার সাদা দকদকে মুখে’,উনার মুখের ভিতরে থাকা গজগজে দাড়ি গুলো লেপটে আছে, বিদ্যুৎ টাও কিছুখন আগে চলে গেছে’,আরমের ঘুমটাও হারাম হয়ে গেলো ধ্যাত ভাল্লাগছে না খুবই গরম পড়ছে’, খুব ইচ্ছে উনার মুখে থাকা তিলটা কে একটিখানি ছুঁয়ে দিতে কিন্তু পারছি না, ছুঁতে গিয়ে যদি উনি উঠে যায় তাহলে আবারও লজ্জা দিবে যে’,!!

‘শুভ্রব : কারো কি আমাকে কিছু করতে ইচ্ছে হয় বুঝি’, তা মুখে বললেই তো হয়,এভাবে তাকিয়ে থেকে শুধু শুধু আমার সুন্দর চেহারা নষ্ট করার মানে কি। বলি,ওগো ছকিনার আম্মা এভাবে তাকিয়ে থেকো না তো আমার শরম করে যে ‘, ( চোখ টিপে )

‘তনু : আপনি তো বড় বজ্জাত মানুষ অসভ্য’ মুখ দিয়ে যা আসে তাই বলবেন হ্যাঁ কি পেয়েছেন টা কি আমায়, হ্যাঁ জাস্ট তাকিয়ে ছিলাম, আ,আর কিছু না।। ( মুখ ভেঙছে )

‘উনি বাকা হেসে আনমনে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে উনার হাসিমাখা মুখ খানি দেখেই বুঝা যাচ্ছে, আমার কথায় বিন্দু মাত্র রাগ- অভিমান কিছুই নেই’, আমাকে আবারো তাকিয়ে থাকতে দেখে, হেসে উঠলেন উনি!!

‘শুভ্রব : ডাগর ডাগর চোখ দিয়ে কেউ আমায়,গিলে না খেয়ে বললেই হয়, এই যে হেনসোম বয় তোমার উপর আমি মারাক্তক ভাবে ক্রাশ খেয়েছি’,তুমি কি আমায়,ভালোবাসবে।। তখন না হয় আমি ভেবে টেভে দেখতাম কি বলো আমার গোলাবউ,( দাঁত কেলিয়ে )

তনু :ইয়ে,উহু ঢং ঢঙ্গের আর শেষ নাই’, বলি আপনি কোন গ্রহনের হিমসুম ( মুখ ভেঙছে )


শুভ্রব : হিমসুম না গো বউ হেন,


তনু : থাক বলতে হবে না। ( বলেই এক দৌড়ে ওয়াশ রুমে ডুকে গেলাম ভাববা বাচলাম )

শুভ্রব : যাও যাও আবার হাতের কাছে পেলে বুঝাবো এই শুভ্রব কি জিনিস ( বাঁকা হেসে )

সকালে ব্রেকফাস্ট করে সবাইকে বিদায়,জানিয়ে রওনা দিলাম কলেজ এর উদ্দেশ্য, ‘ক্যান্টিনের সামনে বসে আছি আমি আর সাথী,ইভা,আজ আমাদের বন্ধুমহল টা কেমন যেনো স্তব্ধ হয়ে আছে, চার,’চারটা জোড় বান্ধুবী থেকে আমরা কি তবে এখন বেজোড় হয়ে যাবো সকালে মিথিলা ফোন দিয়েছিল,আজ সে কলেজে আসতে পারবে না। পাত্র পক্ষ দেখতে আসবে হয় তো বিয়ে হয়েও যেতে পারে,আবার নাও হতে পারে হলেও হটাৎ করে এখন আর কোনো আয়োজন হবে না,মিথু মেয়ে টা ভীষণ কান্না কাটি করছে আমাদের যেতেও বলেছিল কিন্তু আমাদের তিনজনের একই কথা আমরা কেউ যাবো না মানে যাবোই না,’এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে করার কি দরকার তোর বিয়ের দরকার হয়েছে তো যা বিয়ে কর,’যদিও আমি পরিস্থিতি চাপে বিয়ে টা করেছি বাবাকে হাজার বার বুঝিয়ে কোনো লাভ হয়নি,’কিন্তু মিথুর বাবা খুবই ভালো,’ভদ্র একজন মানুষ শুনেছি কয় একটা দিনে উনাকে যতটুকু চিনেছি সবটা মিলে,আলহামদুলিল্লাহ, ‘মিথুর বাবা আমাদের পাড়ার একটা স্কুলের টিচার,’প্রথমে আমি উনাকে টিচার হিসেবেই চিন্তাম এখন মিথিলার বাবা হিসেবে চিনি। মিথির বাবা যেখান কার টিচার চিলেন সেখান কার স্কুলে আমারই আপুর মেয়ে পড়তো, মিথি চাইলে বিয়ে টা আটকাতে পারে কিন্তু সে করেনি।

‘সাথী : এই তনু শোন না ( শান্ত )

‘তনু : চোখ কান সবই খোলা আছে বলতে পারিস? ( ভাব।)

‘সাথী : ওই দেখ ওইটা কে মিথু না। ( হাতের ইশারায়। )

‘তনু : হুম তাই তো ও না বলেছিল আসবে না! ( অবাক।)

‘ইভা সাথীকে দেখা মাত্র দৌড়ে ছুটে গেলো গ্রেট এর সামনে মেয়ে টা বড্ড পাগল মিথির জন্য ওরা ছোটে থেকে একই স্কল কলেজ পড়ছে দুজন দুজন কে বড্ড ভালোবাসে ইভা মিথুকে!!

‘তনু : এই তোরা থামবি কি শুরু করলি তোরা হ্যাঁ এমন গরুর মতো ভ্যা ভ্যা করছি কেন তোদের দেখে মনে হচ্ছে যেনো বফ হফ কি ব্যাপার থামবি তোরা,এই মিথুর বাচ্চা মিথু তুই না বলেছিলি আর কলেজে আসবি না তোরা না বিয়ে হয়ে যাচ্ছে।

‘মিথু : আমার বিয়ে না হওয়াতে তোরা নাচবি গাইবি তা না উলটো প্রশ্ন করে যাচ্ছিস,,।

‘সাথী : খুশি না চাই। ( মুখ ভেঙছে )

‘ইভা : জানু,আমি অনেক খুশি হয়েছি তোর বিয়ে না হওয়াতে!

‘তনু : রাখ তো তুই তো ড্রামা এমন ভাবে ড্রামা করছি না যেনো মনে হচ্ছে তোর বফ বিয়ে করে ফেলছে,ড্রাফার।

‘ইভা : উহু বফের থেকে কম কিসের ১৬-১৭ বছর ধরে সিঙ্গেল হয়ে আছি এই মিথুর জন্য! প্রেম ট্রেম করলে যদি আমাদের বন্ধুত্বে যদি বিচ্ছেদ ঘটে, তাই!

‘সাথী : সবই বুঝলাম মিথু আমাদের জিজু দেখতে কেমন রে পুরোই হিরো আলমের মতো নয় তো,( দুষ্টু হেসে )

‘তনু : কী হিরো আলমের মতো। সত্যি নাকি রে মিথু!

‘মিথু : এই ফাজলামো হচ্ছে! আমি ঐ ব্যাটার মুখ ভালো করে দেখিনি! ( লাজুক )

‘তনু : ওমা সে কি জিজু নির্গাত কষ্ট পেয়েছে বেচারি হবু বউ তার দিকে তাকায় না, কথা বলেছিস,! আমার কথায় মিথু দু পাশে মাথা নাড়িছে যার অর্থাথ, না।

‘সাথী : সে কি রে দোস্ত কাজটা কিন্তু তুই মোটেও ঠিক করিস-নি। ( আফসোস।)

‘তনু : তা মিথু তুই কি জিজুর কিছুই দেখিসনি আই মিন মুখটা কি একটুও দেখিসনি

‘মিথু : না,,আরে বাবা বললাম তো ন,,,,( একটু থেমে ) না মানে দেখেছি, ( মন খারাপ।)

‘তনু : কি দেখিছিস

‘মিথু : নাক দেখেছি, জানিস উনার নাক টা এতো সুন্দর না যে আমি প্রায় ক্রাশ খেয়ে ফেলেছি!

‘তনু : নাক দেখেও কারো উপর ক্রাশ খাওয়া যায়,শুনেছি ঠোট, চুল, চোখ,ইত্যাদি ইত্যাদি দেখে ক্রাশ খেতে শুনেছি,তোর নাকের ব্যাপার টা প্রথম শুনলাম!

‘ইভা : এসব এখন বাদ দেয়,পরে এসব নিয়ে আলোচনা করা যাবে, ক্লাসে চল!!

‘তারপর আমরা সবাই ক্লাস রুমে চলে গেলাম,
‘দুপুরে ক্লাস শেষ ইচ্ছে মতো ঝাল মুড়ি ফুসকা খেয়ে বাড়ি আসলাম উনার ওপর আজ আমি ভীষণ রেগে আছি,’ রাগ করার কারন টা হলো উনি আজ আমি আনতে যায়-নি কেন যায়নি জানি না! উনি আসলেই বলবে হয় তো! ‘দরজা খোলার শব্দ শুনে নড়েচনে বসি। ‘অবশেষে উনি আসলে সকালে পড়ে যাওয়ার কালো শার্ট টা পুরো শরীরে লেপটে আছে চুল গুলো উদাসী হয়ে আছে মুখের আনাচেকানাচে ঘাম লেগে আছ,’ঠোটে পাশে থাকা তিল টায় ভীষন ঘাম জমে আছে, ঠোটের কণে এক চিলতে হাসি, সারাদিন নিশ্চয় প্রচুর কাজ করেছে বিজি ছিল অনেক, উনার মুখের মুচকি হাসি টুকুতে আমার সব জমানো রাগ-অভিমান মুহূর্ত উড়িয়ে গেলো আচ্ছা উনি কি জাদু টাদু জানেন নাকি উনার দিকে আমি যতই তাকাই তত আরে তাকাতে ইচ্ছে হয় খুব মায়া হয়,উনি যতখন আমার কাছে থাকেন ততখোন যেনো আমি সর্গের সুখ অনুভব করি দূরে চলে গেলেই মনে হয় আমি খুব দামি একটা জিনিস হারিয়ে পেলেছি উনার শূন্যতা অনুভব করি আচ্ছা উনারও কি এমন টা হয়, তবে কি এটাকে ভালোবাসা বলে

উনি অফিস থেকে এসে সামনে এসে এক চিলতে হাসি দিয়ে ওয়াশ রুমে চলে গেলেন।আমাকে বসে থাকতে দেখে, কিছু না বলে হাত দুটু ধরে টেনে বেলকুনিতে নিয়ে গেলেন আজো না,তবে আজকের আকাশ টা কালকের মতো ওতোটাও জলমল নয়,আজকের আকাশ টা কিছুটা মেঘলাময় চাঁদ টা ডুবে যায় যায়,অবস্থা উনি আমাকে দাড় করে দিয়ে রান্না করে কপি বানাতে গেলেন,মিনিট পাঁচ কের মধ্যে ফিরেও এলেন দুহাতে দুকাপ কপি হাত বারিয়ে কপির মগটি সামনে দিতে নিয়ে নিলাম, কপির কাফে চুমু দিতে এক অন্য রকম ভালো লাগা কাচ করছে,

‘ তনু : আপনি কি কপি বানিয়েছেন! ( আগ্রহ )

‘শুভ্রব : হ্যাঁ কেন ভালো হয়নি তাই না! ( মন খারাপ।)

‘তনু : না খুব ভালো হয়েছে, ( দাঁত কেলিয়ে )

‘শুভ্রব : পাম দিচ্ছো, ( ভ্রু কুঁচকে )

‘তনু : না,সত্যি বলছি.

‘শুভ্রব : হুম,,,,,এখন বলোলো তুমি নিশ্চয় আমার ওপর রেগে টেগে আছো,

‘তনু : না তো রেগে ছিলাম এখন নেই! এই যে এতো সুন্দর একটা কপি করে দিলেন, এখন কি আর রেগে থাকলে মানায়,!

‘শুভ্রব : স্যরি, আজ খুব বেশি কাজের চাপ ছিলো এক কাপ চা খাওয়ার সময় পর্যন্ত পায়নি, নেক্সট আর এমন হবে না শত ব্যস্ততার মাঝে তোমার জন্য চলে আসবো প্লিজ রাগ করো না!

|

|

‘দেখতে দেখতে কেটে গেলো প্রায় দুই মাস এই দুই মাসে উনার আর আমার ভালোবাসার আর শেষ নেই দিন দিন আমাদের ভালোবাসা যেনো বেড়েই চলেছে, তার মধ্যে সিফাত, ভাইয়া শুভ্রবকে পাগল করে ফেলছেন আমাকে তার সাথে প্রেম করিয়ে দেওয়ার জন্য তারপর এক প্রকার বাধ্য হয়ে উনি বলেই দিয়েছেন,’তনু আমার একমাত্র বউ দোস্ত তোর কসম লাগে আমার বউ এর পিচু ছাড়, আমাকে বিধবা বানিয়ে দিছ না প্লিজ…
আমার বড় অন্যায় হয়েছে তনুকে তোর সামনে বোন হিসেবে পরিচয় দেওয়া, তুই আমাকে যা শাস্তি দিবি আমি তাই মেনে নিবো, সিফাত তো বেচারি প্রেম না করেই ছ্যাকা খেলো! তারপর একদিন চিঠি লিখে কোথায় যে উদাহ হয়ে গেলো কে জানে!!

প্রিয়তম,
তোমাকে কিভাবে চিঠিতে সম্বন্ধ করবো জানি না, বুঝেতেও পারছি না আমি যে কখনো কারো জন্য চিঠি লিখি নাই! লেখার আগ্রহ হয়নি কখনো কিন্তু আজ যে চিঠি লিখতেই হবে আমার, উপায় যে নেই আর। ‘তুমি কি জানো তুমি যে বড্ড মায়াবী সাথে চোর ও বটে কি অবাক হচ্ছো নিশ্চয় তোমাকে চোর বলেছি কেন তাই! হাহা…পৃথিবীতে এতো কিছু থাকতে তুমি কেন আমার মন চুরি করতে গেলে মন চুরি করাটা কিন্তু বড্ড অন্যায়,এর জন্য কিন্তু কঠিন শাস্তি প্রদান করা থাকে কিন্তু আমি যে তোমাকে শাস্তি দিতে পারি না। শুনেছি ভালোবাসার মানুষকে নাকি কাঁদাতে নেই ভালো রাখতে হয়, তোমার শ্যামলা গায়ের রঙ ঘন কালো কাজলে ডাগর ডাগর, চোখ ‘কালো লম্বা মাথার কেশ, আমি যেনো বার বার প্রেমে পড়ে যাই বার বার ভালোবাসতে ইচ্ছে করে, তুমি কি জানো তুমি হাসলে তোমার ঠোটের পাশের তিল টাও হাসে, কি মিষ্টি মেয়ে তুমি গুনবতীও বটে, তোমাকে পাবো না।যেনো ও অনেক বেশি ভালোবাসি জানি শুভ্রব হয় তো আমার থেকেও তোমাকে বেশি ভালোবাসে, তুমিও হয় তো তাকে ভালোবাসো,আমিই তোমাদের মধ্যে তৃতীয় ব্যক্তি ডুকে পড়েছি ভুলে! চিন্তা করো না তোমাদের পথের কাটা হবো না! বিদায় নিচ্ছি কোনো এক অচিনা শহরে,চলে যাচ্ছি আর হ্যাঁ খুব তাড়াতাড়ি ফিরবো একে বারে বউ বাচ্চা নিয়ে,আমার বউটা হবে একদম তোমার মতো দেখতে শ্যামলতা মায়বতী!!!
“ভালোবাসা ভালো থেকো”

আরো কিছু লেখতে ইচ্ছে করছে কিন্তু কলমটা যে চলছেই না
…….. সিফাত…….

#চলবে

( আমি অনেক অসুস্থ ছিলাম তাই গল্প দিতে পারি না এখনো অসুস্থ আছি,আমার জন্য দোয়া করবে, ভুল ক্রটি গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন, বানান অনেক ভুল হয়, হয় তো একটু বুঝে পড়বেন প্লিজ। )

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here