পুরো বিয়ে বাড়ি যেনো নিস্তব্ধ হয়ে আছে যে বাড়িতে কিছুখন আগেও হৈ চৈ মেতে ছিল গান বাজনা নাচা নাচি চিল্লা পাল্লা আন্দনে মেতে উঠে ছিল খান ভিলা মাত্রা কিছুখনই যেনো হারিয়ে গেলো সব অনুভূতি কি থেকে কি হয়ে গেলো আমরা কেউ বুঝতেই পারিনি!! আমি ইসতার জাহাত তন্নি আজই আমি এসএসি পরিক্ষা শেষ করে বাড়ি এসে জানতে পারলাম আজ সন্ধ্যে বেলা আমার বিয়ে অথচ আমাকে এসবে কিছুই জানানো প্রয়োজন পর্যন্ত বোধ করেনি! ছোট বেলা থেকে বাবা মায়ের বাধ্য মেয়ে তাদের সব কথা শুনে চলি উনারা যা বলে তাই করি তারপরও তারা এমন টা করলো কেন আমার সাথে উনারা হয়তো ভেবে ছিলে যেহেতু আমি বাধ্য শান্ত সুষ্ঠু ভদ্র মেয়ে সেহেতু মেনেই নিবো কিন্তু আমার মন যে মানছে না। কিছু কীভাবে বিয়ে করবো আমি অচেনা একটা ছেলেকে তার সাথে থাকবো বা কিভাবে যাকে চিনি না জানি না দেখি না তাকে বিয়ে করা তার সাথে থাকা!! জাস্ট ইম্পসিবল…. মনে মনে এইসব ভাবছি আর গুমরে কেদেঁ দিচ্ছি..আমি এতো টাই জ্বালাই সবাই কে যার জন্য আমাকে বাড়ি বিদায় করে দিতে এতো উঠে পড়ে লেগেছে’,সবাই তো বলে আমি নাকি তাদের কতো আদরের আমায় কতো ভালোবাসে এখন বুঝলাম সব মিথ্যে কেউ আমাকে ভালেবাসে না সবাই স্বার্থপর’আই হেইড ইউ অল!
আমার ভাবনার মাঝেই বৃষ্টি এসে আমায় জড়িয়ে ধরে বলতে শুরু করলো ( বৃষ্টি আমার বেস্ট ফ্রেন্ড )
—“আহারে বেচারি বিয়ের টেনশনে একদম শেষ হয়ে গেছে জানিস হবু জিজুর নাকি একটা ভাই আছে আই মিন তোর দেবর আছে যাক বাবা এতো দিনে তাহলে আমি কাউকে পেলাম!!! দোস্ত তাড়াতাড়ি বিয়েটা করে নেনা ( লাজুক সুরে )
–!!যাহ, হারামি তুই কী বান্ধুবী নাকি শত্রু তোরা কখনোই আমার ভালো চাস না!! ( কাদোঁ কাদোঁ সুরে )
—“আরে তুই কাদঁছিস কেন আমি তো মজা করেছিলাম
—“মজা কিসের মজা রে তুই মজা করলেও বিয়ে তো আর আটকাতে পারবি না’উগান্ডার গরু তো আসবেই বিয়ে করতে ( দুঃখী দুঃখী ভাবে )
—” কে বলেছে তোকে’, তুই কি জানিস বিয়েটা যে হচ্ছে না? ( ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে )
—“কি বলছিস কি তুই আমি বিশ্বাস করি না!!
—”আমি ঠিকই বলছি”!! এই মাত্র শুনে এলাম তোর আব্বু আম্মু পরিবারের সবাই বলা বলি করছে রাত এখন প্রায় এগারো টা বাজে এখনো আসছে না! দেখে তোর বাবা ফোন দিলো ওপাস থেকে বলেছিল তাদের ছেলে নাকি বিয়ে করবে না! ‘, এটা শোনার পর তো সবাই খুবই টেনশনে আছে চল তুই নিচে চল তাহলেই সব জানতে পারবি!
বিয়া করবে না! মানেটা কি হ্যাঁ এটা কি খেলা রঙের ডুলা নাকি শালা বজ্জাত প্রয়োজনে তারে কিডন্যাপ কইরা নিয়া আইবো বিয়া তারে করতোই হইবো ( আমার বন্ধু নিশাদ বললো )
আমি এখন কি করে আমার মেয়েকে এই মুখ দেখাবো মেয়েটা তো বিয়েতে রাজি ছিলো না আমিই জোড় করে বিয়ে দিতে চাইছি! কেন যে ছেলের ব্যাপরে ভালো মতো খোজ খবর নিয়ে দেখিনি’, ( অসহায় কন্ঠে বাবা বললেন )
‘কেঁদো না ভাইজান এই বিয়েটা হবে আজই হবে আমি কিছুতে আমার মেয়ে টাকে কষ্ট পেতে দিতে পারি না! তনুকে সমাজের চোখে ছোট করতে পারি না! তাই আমি ভেবে নিয়েছি শুভ্রবের সাথে তনুর বিয়ে দিবো আজ এখনই?? ফুফির কথা শুনে উপস্থিতে সবাই অবাক হয়ে ফুফির দিকে তাকিয়ে আছে কি বলছে টা কি ওনি শুভ্রব ভাইয়া তো আমাকে পছন্দই করেন না! আমাকে সহ্য করতে পারে না? ওনি কি করে বিয়ে করবেন আমায়,,,আমিও যে তাকে স্বামী হিসেবে মেনে নিতে পারবো না!
আমি কাদঁছিস আর কেঁদেই চলেছি,, কাদঁবো না বাহ,,,কেন অনুষ্ঠান এর উপস্থিতের সবাই যা না তাই বলছে আমায়,,,মহিলারা একজন আরেক জনকে বলছে,’কি অলক্ষী-নি মেয়ে রে বাবা,,,,বর যাত্রী না আসতেই বারণ করে দিয়েছে তারা তাদের ছেলের জন্য এই মেয়েকে বউ করে নিতে পারবে না! দেখো গিয়ে কোথায় কোন ছেলের সাথে লটল পটল করেছে নিশ্চয় প্রেমে ট্রেমে করেছে বর যাত্রী সব কিছু যেনে গিয়েছে হয়তো” সত্যি ওর মতো মেয়ের বেচেঁ না থেকে মরে যাওয়া অনেক ভালো? মহিলাদের কথা শোনে মেঝাজ আমার বির্গে গেলো’আজ পর্যন্ত একটা প্রেমই করলাম না আর তারা কিসব আজে বাজে কথা বলছে রাগ লজ্জায় অপ্রমানে আমার কান্না পাচ্ছে ভীষণ কান্না পাচ্ছে’,
—আম্মু তুমি এসব কি বলছো টা কি আমি পারবো না তনুকে বিয়ে করতে ‘আই ইম্পসিবল’, ( রাগী ভাবে বললেন শুভ্রব ভাইয়া )
—“অবশ্যই পসিবল’ তুমি যদি এ বিয়েটা না করো তাহলে আমি ভুলে যাবো শুভ্রুব নামে আমার কোনো সন্তান নিয়ে ইভেন্ট আমি আর কখনো চৌধুরী বাড়ির চৌকাঠে পা রাখবো না’!! কথাটি বলে ফুফি আর এক মুহূর্ত দাড়ালেন না!! ~এদিকে শুভ্রুব ভাইয়া রাগী ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছে’, আজ নিজেকে সব চেয়ে বড় অসহায় লাগছে নিজের উপর রাগ হচ্ছে নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে’, আমার জন্য তাদের মা ছেলের মধ্যে তমুল ঝগড়া হচ্ছে’ না আমি আর মেনে নিতে পারছি না কিছু একটা করতে হবে আমাকে,’
?
?
?
আমি ভেবেই নিয়ে ছিলাম শুভ্রব ভাইয়া আমাকে বিয়েই করবে না! তাই সুইসাইড করতে চেয়ে ছিলাম এই জীবন না রেখে মরে যাওয়া টাই ভালো কিন্তু পরেক্ষনে মনে হলো সুইসাইড কোনো মৃত্যুর সমাধান নয়” আমি পড়াশোনা শুরু করবো নিজের স্বপ্নের পিছু নিবো নিজেকে এমন ভাবে তৈরি করবো যাতে অন্যেরা আমায় দেখলে জ্বলে লুচির মতো পুলে!
শুভ্রব ভাইয়া তার আম্মুর কথা ভেবেই আমায় বিয়ে করেছেন উনার ভাই আখিল ভাইয়া,নীরা ভাবি,উনার বাবা দাদী অনেক বুঝানোর পর উনি রাজি হলেন বিয়ে টা করতে’, বিয়ের পর এলো বিদায় এর ঘন্টার আমি তো কাদঁছি প্রচুর কাদঁছি কেঁদেই চলেছি! আমার কান্না দেখে শুভ্রব ভাইয়া বিরক্ত ভঙ্গীতে বলে উঠলেন’, আম্মু তোমরা যাবে নাকি আমি চলে যাবো এসব নেকামো আমি জাস্ট আর নিতে পারছি না’,কথাটি বলে উনি আর এক মুহূর্ত দাড়ালেন না!
—“চল মা এবার যাওয়া যাক আর তুই তো পর কোথায় যাচ্ছি না,,,এতো কাদাঁর মানেই হয় না আর এখন কার দিনে কি মেয়েরা কাঁদে নাকি পাগলি মেয়ে এবলে ফুপি আমায় জড়িয়ে নিলেন ফুপির কথা শুনে একটু ভালো লাগলো বাবা মা ভাই আপু কে বিদায় দিয়ে পা বাড়ালাম গাড়ির দিকে সামনের গাড়িটাতে ফুপি ফুপাজি আখিল ভাইয়া নীরা ভাবি উনারা উঠেছেন`! পিছুনের গাড়িতে আমি আর শুভ্রব ভাইয়া উঠেছি,, উনি এমন কেন আমার দিকে একটু তাকায় না আনমনে ডাইভ করেই চলেছেন! আজ উনাকে দারুন লাগছে’, নীল রঙের পাঞ্জাবী টা শরীরের সাথে মিশে আছে যেনো তাকে গিলে খাচ্ছে, চুল গুলো এলোমেলো হয়ে চোখের কণে পড়ে আছে,আমি মুগ্ধতা হয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছি আর একটা বিষয় খেয়াল করলাম উনার ডান পাশের গাল টায় ঘোন কালো তিল রয়েছে তিল টা কেমন লাল হয়ে আছে যত তাকে দেখছি তত তার ওপর ক্রাশ খাচ্ছি’,এখন কেরাস খাচ্ছি কিছুখন পর বেরাস খাবো “আই সি্উর,, আমি তার ওপর থেকে চোখ সরাতেই পারছি না! দেখতে দেখতে চলে এলো শুভ্রব ভাইয়াদের বাড়ি এখানে এসে গঠে গেলো এক নতুন কাহিনী আমার ভীষন কষ্ট হচ্ছে কেন বার বার আমার সাথে এমন হয় কি দোষ করেছি আমি!!
(গল্পটি কেমন হয়েছে অবশ্য বলবেন কিছুই হয় তো ফুটিয়ে তুলতে পারি-নি ভুল ক্রটি ক্ষমা করবেন? পর্ব ছোট হওয়ার জন্য দুঃখীতো নেক্স পর্ব বড় করে দিবো )
#লেখিনীতে:ইসরাত জাহান তন্নি ( মাহি )
#তোকে আমার চাই
সূচনা পর্ব❤