Devil_Cousin_Lover 30

0
1241

#Devil_Cousin_Lover♥
#Imtihan_Imran
30.

দুইদিন পর সকালবেলা সবাই ডাইনিং টেবিলে বসে আছে ব্রেকফাস্ট করার জন্য।

“ইমরান তোমরা হানিমুনে কবে যাচ্ছো?

মাহবুব সাহেবের প্রশ্ন শুনে ইমরান খাওয়া ছেড়ে তিনার দিকে তাকায়,

” এখন কোনো হানিমুন,ঘোরাঘুরি কিছু হবে না বাবা।সিনহা পড়াশোনা শেষ করুক,তারপর দেখা যাবে।

“এ্যা ভাইয়া কী বলছিস?বিয়ে হয়ে গেছে,এখনো পড়াশোনা করতে হবে।

“হ্যাঁ অবশ্যই।

“এই ওয়েট..

“কী হয়েছে মা?

“সিনহা তোকে ভাইয়া ডাকছে কেনো?

” এইরে এখন কী জবাব দিবো?এই গাধা মেয়েটা এখানে সবার সামনে ভাইয়া ডাকলো।আক্কেল জ্ঞান কিচ্ছু নাই মেয়েটার।(মনে)

“আমি তো ওর ভাইয়াই ছিলাম এতোদিন।অনেকদিনের অভ্যাস তো, পাল্টাতে সময় লাগবে।

” হ্যাঁ ফুফি।

“ফুফি এই মেয়ে মারবো এক থাপ্পড়। আমার ছেলের বউ তুই,আম্মু ডাক।(ধমক দিয়ে)

” আচ্ছা ডাকবো।

“এক্ষুনি ডাকতে বলছি।

” ঠিকাছে আম্মু।

ইমরান হা করে সিনহার দিকে তাকিয়ে আছে।ইমরান ভেবেছিল, আম্মু ডাকতে সিনহার আরো তিনদিন লেগে যাবে।কিন্তু এই তো ইমরানকে অবাক করে দিয়ে সাথে সাথে মিসেস জাহানকে আম্মু ডাকছে।

“ওরে আমার রানী রে,এতোদিন ধরে তার মুখ থেকে ভাইয়া ডাকাটা বন্ধ করতে পারিনি।আর আম্মু এক ধমকে ফুফি থেকে আম্মু নিয়ে এসেছে।

” বুঝলি ভাতিজা তোর ধমকে ক্যালসিয়াম,মিনারেল,ভিটামিনের যথেষ্ট অভাব আছে।তুই এতোদিনেও পারলি না,ভাইয়া থেকে জামাই হতে। আর দেখ ভাবি এক ধমকে ফুফি থেকে আম্মু হয়ে গেছে।

“সেটাই তো দেখতেছি।(সিনহার দিকে তাকিয়ে)

” হায় হায় ডেভিলটা এভাবে তাকিয়ে আছে কেনো?আজকে মনে হয় কপালে দুঃখ আছে আমার(মনে)

ব্রেকফাস্ট শেষে সিনহা ইমরান দুজনে রুমে চলে আসে।ইমরান কলেজে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছে।সিনহা বিছানায় বসে আছে দেখে বলল,

“কী সমস্যা রেডি হচ্ছিস না কেনো? কলেজে যেতে হবে।

“আজকে না যাই।

ইমরান রেডি হয়ে রুমের বাইরে চলে যায়।সিনহা মনে মনে অনেক খুশি হয়েছে।যাক আজকে তার কলেজে যেতে হবে না।

” ওই দিয়া সিনহারে নিয়ে কলেজে যাবি।নাহলে তোদের দুইটার খবর করে ছাড়বো।

বাইরে থেকে আসা ইমরানের কথাগুলো শুনে সিনহার সব খুশি ফুস করে উড়ে যায়।তাকে যে কলেজে যেতে হবে।সিনহা মনে মনে কয়েকটা গালি দিয়ে দিয়েছে ডেভিলটাকে।

সিনহা কলেজে এসে সোজা ক্লাসরুমে চলে যায়।ক্লাসে এসে বসতেই সিনহা’র পাশে একটা ছেলে এসে বসে।সিনহা আরেক বেঞ্চে গিয়ে বসে।ছেলেটা উঠে এসে আবার সিনহার সাথে এসে বসে।সিনহা বিরক্তি নিয়ে ছেলেটার দিকে তাকায়,

“কী সমস্যা আপনার?

“তোমার কী সমস্যা?তোমার সাথে বসেছি, এইজন্য উঠে যেতে হবে।

“আমি উঠে যাই,নাকি বসে থাকি সেটা আমার ব্যাপার।আপনার সমস্যা কী?

” আমিও এখানে বসবো নাকি সেখানে বসবো,এটাও আমার ইচ্ছা।

“যত্তসব।

” লেখকঃইমতিহান ইমরান।

সিনহা আরেকটা বেঞ্চে গিয়ে বসে। ছেলেটাও সিনহার পিছন পিছনে সিনহার বেঞ্চে গিয়ে বসে।

এই ছেলেটাকে সিনহা আজকে প্রথম ক্লাসে দেখছে।এর আগে কখনো দেখেছে বলেও মনে হয়না।কিন্তু ছেলেটা এভাবে গায়ে এসে পড়ছে কেনো,সে বুঝতেছে না।

এক ক্লাস শেষে সিনহা ক্লাস থেকে বেরিয়ে আসে।ছেলেটাও পিছন পিছন ক্লাস থেকে বেরিয়ে আসে।ইমরান যেখানে প্রতিদিন আড্ডা দেয়,সিনহা সোজা সেখানে চলে আসে।সিনহা আড়চোখে খেয়াল করেছিল,ছেলেটাও তাকে ফলো করে পিছন পিছন আসছে।

সিনহাকে দেখে দিহান বলে উঠল,

“আরে সিনহা ভাবী যে,কেমন আছে?

“ভাইয়া আমাকে ভাবী বলবেন না। আমার লজ্জা লাগে।আমি আপনার ছোট আমাকে সিনহা বলেই ডাকবেন।

“আচ্ছা।এখন আমরা কী এখান থেকে যাবো নাকী তুমি তোমার ভাইয়া-জামাইকে নিয়ে কোথাও যাবে?(হেসে)

“ভাইয়া আগে দেখেন তো আমার পিছনে কোনো ছেলে দাঁড়িয়ে আছে কীনা?

দিহান সিনহার পিছনে তাকিয়ে দেখে একটা ছেলে কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে আছে।

” হুম কিছুটা দূরে একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে?কেনো কী হয়েছে?

“ভাইয়া ছেলেটা আমাকে ডিস্টার্ব করছে।ক্লাসেও বারবার আমার সাথে একই বেঞ্চে গা ঘেষে বসেছে।

“হোয়াট,এই ছেলে কিছু জানে না তোমার সম্পর্কে।আমি দেখছি ব্যাপার টা। আয়ান চল তো।

দিহান,আয়ানকে নিয়ে চলে গেলো। ইমরান ঠাঁই একজায়গায় দাঁড়িয়ে আছে।

” কীরে ভাইয়া তখন থেকে দেখছি শঠাং হয়ে দাঁড়িয়ে আছিস।না বলছিস কিছু। না করছিস ছেলেটালে কিছু।

“দিহান গেছে তো,সবটা সামলাবে।

“দিহান কেনো সামলাবে?ছেলেটা কি দিহানের বউকে ডিস্টার্ব করেছিল? ছেলেটা তোর বউকে ডিস্টার্ব করেছে, কিন্তু তুই তো কোনো রিয়েক্ট’ই করছিস না।হুজুর সেজে বসে আছিস।

“আমি গেলে ওকে সোজা হসপিটালে ভর্তি করিয়ে দিবো।তুই কী চাস ছেলেটা হসপিটালের কেবিনে পড়ে থাকুক।

” না সেটা চাই না।কিন্তু হালকা ধমক, ভয় তো দেখাতেই পারিস,তাই না।

“তার জন্য ওরা আছে।এখন তুই ক্লাসে যা।

” না এখন আর আমি ক্লাসে যাবোনা। চল ভাইয়া কোথাও ঘুরতে যাই।

“সম্ভব না।আমি একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি।যতদিন তুই ভাইয়া ডাকটা বন্ধ করতে না পারবি,ততদিন তোর সাথে আমি কথা বলব না।অবশ্য এখনো কথা বলতাম না,এই ছেলেটার কারনে এখন তোর সাথে কথা বলতে হলো।
এখন কথা না বাড়িয়ে ক্লাসে যা।দিয়ার সাথে একসাথে বাসায় চলে যাবি।আমাকে আর পাবি না।

ইমরান কথাটা বলেই হাটা শুরু করল।

” এইটা কী হলো?কী বলে গেলো?
ও ভাইয়া কোথায় যাচ্ছিস?ওই দাঁড়া। আমাকেও নিয়ে যা।ওও ভাইয়ায়া….

“উফ অসহ্য।এই মেয়ে এবার পুরো কলেজকে শুনিয়ে ভাইয়া ডাকছে।আমাকে মনে হচ্ছে আজীবন ভাইয়া হয়েই থাকতে হবে।আর বাচ্চাদের কাছ থেকে মামা ডাকটা’ই মনে হয় কপালে লেখা আছে।হায়রে কপাল আমার।।

ইমরান এবার কানে দুই হাত দিয়া তাড়াতাড়ি হাটা শুরু করল।কিন্তু পিছনে তাকাল না।

চলবে…

~ইমতিহান ইমরান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here