#Devil_Cousin_Lover♥
#Imtihan_Imran
28.
“ওই ডেভিলের বাচ্চা,এতো ধমকের উপরে রাখস কেন আমারে।একটু সুন্দর করে,মিষ্টি করে কথা বললে কী হয়? মুখে কী ফসকা পড়ে যায়।
সিনহার কান্ডে এবং কথা বলার ধরন দেখে ইমরানের চোখ বড় বড় হয়ে যায়।
” চোখ বড় বড় করে কোনো লাভ নাই। অনেক সহ্য করেছি তোর ডেভিলগিরি আর না।এবার আমার পালা,এই সিনহার পালা।এতোদিন বড় ভাই ছিলি তাই কিছু বলতে পারি না।এখন তুই আমার জামাই,তুই আমার সম্পদ।এখন তোরে মারবো,কাটবো, আদর করবো,সব আমিই করবো। কিছুই বলতে পারবি না।বললে তোর জন্য আমি স্পেশাল তরকারির রেসিপি বানিয়ে সেটা তোকে খাওয়াবো।
ইমরান কিছু বলতে গেলে,সিনহা ইমরানকে থামিয়ে দেয়।
“ওই রাখ,আমার কথা এখনো শেষ হয় নাই।এবার বল আমারে এতোদিন কেনো কান্না করাই ছিলি।আমি যে এতো করে তোকে বললাম,তোর সামনে কান্না করলাম,তুই বলতে পারলি না,আমার বিয়ে তোর সাথেই হবে অন্য কারো না।তাহলে তো আমাকে এতো কান্না করা লাগতো না, এতো কষ্ট পেতে হতো না।কেনো আমাকে কষ্ট দিলি বল,ডেভিল একটা।
“তোর কথা শেষ হইছে?
” না আমার কথা শেষ হয় নাই।আমার মনে হয় আজকে রাতেও শেষ হবে না।
“মানে কী?তাহলে বাসর করবো না?
” তো এখন আমরা কী করতেছি। আমরা তো বাসর’ই করতেছি।
“জামাইয়ের কলার চেপে ধরে,তাকে উল্টাপাল্টা কথা শুনানো,এটাকে বাসর বলে??
“তাহলে বাসর কাকে বলে?
“বাচ্চা মেয়েকে বিয়ে করলাম নাকী?
বান্ধুবীদের কাছ থেকে বাসর নিয়ে কোনো গল্প শুনিস নি।বাসর ঘরে যে বিড়াল মারে,জানিস না।
” আমার কোনো বান্ধুবী বিয়ে করলে তো জানতাম’ই।আর এখন বিড়াল কোথায় পাবি,মারার জন্য।
“গাধী মাইয়া একটা।তোকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না।এখন কলারটা ছাড়,ঘুমাতে যাবো।আজকে অনেক কিছু বলে ফেলছিস আমাকে।আজকে কিছু বললাম না।তোর সাত খুন মাফ আজকে।এমনিতেও অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলেছি,সারপ্রাইজ দিবো বলে।এখন সিনহা রানীর এই একটু কথা শুনা’ই যায়।
“হু ঢং।নাহলে কচু করতি আমারে।
“এবার তো কলার টা ছাড়।
” আচ্ছা ছেড়ে দিলাম।শত হলেও আমার একমাত্র ডেভিল জামাই।
সিনহা,ইমরানের কলার ছেড়ে দেয়।
“আমার ঘুম পাচ্ছে।কোথায় ঘুমাবো আমি?
” এতো বড় বিছানা চোখে পড়ে না তোর?
“এটা তো তোর বিছানা।তোর সাথে এক বিছানায় আমি ঘুমাবো না।যদি উল্টাপাল্টা কিছু করিস?
“আরে বইন উল্টাপাল্টা কিছু করব না।বিশ্বাস রাখ।যদি বিশ্বাস করতে না পারিস নিচে ঘুমা।
ইমরান বিছানায় শুয়ে পড়ল।সিনহা কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে,ফ্রেশ হয়ে এসে বিছানার অন্য পাশে গিয়ে শুয়ে পড়ল।
” ভাইয়া একটা কথা জিজ্ঞাস করি?
“আগে ভাইয়া বলাটা বন্ধ কর।নাহলে কয়েকদিন পর তোর ছেলেমেয়ে আমাকে মামা ডাকবে।
“ডাকলে কী হয়েছে?
” ডাকলে কী হয়েছে,তাই না।এক থাপ্পড় দিয়ে বিছানা থেকে ফেলে দিবো।গাধা মেয়ে একটা।
“আচ্ছা আগে কথাটা শুন না?
” বল,শুনছি।
“রাফসান আমাকে বিয়ে করতে আসলো না কেনো?
” কেনো রাফসান আসে নাই।এজন্য দুঃখ পাইছেন?
“হ অনেক দুঃখ পাইছি।মনে প্রানে তারে নিয়ে কতো স্বপ্ন দেখছিলাম।আর শালা আমারে বিয়ে না করে পালিয়ে গেলো।
সিনহার কথা শুনে ইমরান রেগে যায়। সে বিছানা থেকে উঠে সিনহার উপর ভর দিয়ে,সিনহার দুই হাত বিছানার সাথে চেপে ধরে।
” কী বললি তুই?রাফসানরে নিয়া মনে প্রানে স্বপ্ন দেখস?এতো সাহস তোর, আমারে বাদ দিয়া অন্য কারো নিয়া স্বপ্ন দেখস।
“ভাইয়া সর আমার উপর থেকে।আমি তো মজা করে বলছিলাম।তুই রেগে যাচ্ছিস কেনো?
” আমাকে রাগাতে খুব ভালো লাগে তোর?
“আমি কখন বললাম এই কথা?
” তোর কথায় তো এটাই বুঝাই যাচ্ছে।
“কচু বুঝা যাচ্ছে।
ইমরান,নিজের মুখটা সিনহার একদম মুখের কাছে নিয়ে আসে।দুজনের নিশ্বাস দুজনের মুখে আছড়ে পড়ছে। সিনহার হার্টবিট বেড়ে যাচ্ছে।বুক ধুকপুক ধুকপুক করছে।
” ভা ভাই..য়া..
“হিস..
ইমরান নিজের হাতের আঙুল দিয়ে সিনহার ঠোঁটের উপর রাখে।
ভাইয়া না জামাই বল.
সিনহা কাঁপছে।মুখ দিয়ে কথা বের হতে চাচ্ছে না।ডেভিলটা তার এতো কাছে সবকিছু যেনো কেমন গুলিয়ে যাচ্ছে।
”
“দিন এবার টাকা দিন।
” কীসের টাকা?
“কীসের টাকা মানে?১০,০০০ টাকা তাড়াতাড়ি বের করুন।নাহলে খবর আছে আপনার।
” কয়টার খবর আছে?এখন তো অনেক রাত,মনে হয়না কোনো খবর থাকতে পারে।
“দেখুন একদম ফাজলামি করবেন না,আমার সাথে।আপনাকে তো সহজ সরল,সাদাসিধা একটা লোক ভেবেছিলাম।কিন্তু না আপনি তো আস্ত একটা শয়তানীর হাড্ডি।
দিয়ার কথা শুনে,দিহান হেসে দেয়।
” কী করবো?তুমিই তো আমাকে শয়তান বানিয়েছ?
“মিথ্যা কথা কীভাবে বলেন?আমি আপনাকে কেনো শয়তান বানাতে যাবো?
” তুমি আমাকে শয়তান বানাও নি?
দিহান এই কথা বলে,দিয়ার দিকে এগিয়ে আসে।
“কী হলো,আপনি এভাবে এগিয়ে আসছেন কেনো?
” তোমাকে কিছু করবো?
“কিছু করবেন মানে, ক.কী.. করবেন? (পিছাতে পিছাতে)
“ওইযে প্রেমিক-প্রেমিকারা যে ইয়ে করে।(হাসি দিয়ে)
দিয়া,দিহানের কথা শুনে সামনে ঘুরে এক দৌড়ে পালাল।দিহান জোরে হেসে উঠে।
” পাগলী একটা।
“লেখকঃইমতিহান ইমরান।
” ভা..ভা..ভাই..য়া আ আমার উ উপর থেকে সর,আ আমার হার্টবিট বে বে বেড়ে যাচ্ছে।বুক ধুকপুক ধুকপুক করছে।এ এ এভাবে চললে হার্টঅ্যাটাক হয়ে যাবে আ আআমার।(তোতলিয়ে)
“ফিলিং গুড..☺
ইমরান টুপ করে সিনহার ঠোঁটে একটা চুমু দিয়ে সরে,নিজের বালিশে এসে শুয়ে পড়ে।সিনহা চোখ বড় বড় করে হা হয়ে আছে।সে পাশে ডেভিলের দিকে তাকায়, ইমরান সিনহাকে এক চোখ টিপ মেরে দেয়।
” অসভ্য লুচু ডেভিল।
“তোর জামাই,হুশ রাইখা অপমান করিস।
”
”
সকালবেলা জানালার পর্দা ভেদ করে সূর্যের আলো সিনহার মুখে পড়তেই সিনহার ঘুম ভেঙে যায়।চোখ মেলেই সে তার সামনে ডেভিলের দৃশ্যমান মুখটা দেখতে পায়।সিনহার নিজেকে কেমন ভারী ভারী লাগছে।সিনহা ভালো করে তাকিয়ে দেখে ডেভিলটা তাকে জড়িয়ে ধরে,তার শরীরের উপর এক পা দিয়ে তাকে কোলবালিশের মতো ব্যবহার করছে।সিনহা নিজের শরীরের উপর থেকে ইমরানের পা টা সরিয়ে দিতেই ইমরানের ঘুম ভেঙে যায়।
“কী সমস্যা?সকাল সকাল ঘুমের ডিস্টার্ব করছিস কেনো?(ঘুম কন্ঠে)
” আমি কী কোলবালিশ?এভাবে আমার শরীরের উপর পা তুলে দিয়ে জড়িয়ে ধরেছিস কেনো?
“হুম তুই’ই আমার নরম তুলতুলে কোলবালিশ।
ইমরান আবার সিনহার শরীরের উপর পা তুলে,সিনহার আরো কাছে গিয়ে সিনহাকে জড়িয়ে ধরে।
সিনহা তো ইমরানের কাছ থেকে ছোটার জন্য জোরাজুরি শুরু করে দিয়েছে।
“ওই ডেভিল ছাড় আমাকে।ছাড় বলছি।
” উহু…কোলবালিশ ডিস্টার্ব করিস না তো। ঘুমাতে দে।
“আমার নাম কোলবালিশ না?।আমার নাম সিনহা।
” আপাতত সিনহারে আমি ছিনি না।আমি এই জড়িয়ে ধরা কোলবালিশ টাকে ছিনি।…
চলবে…
~ইমতিহান ইমরান।