#Devil_Cousin_Lover♥
#Imtihan_Imran
27.
বিয়ে বাড়িতে সবাই যখন বরের আসার জন্য অপেক্ষা করছিল।এমনসময় মাহবুব সাহেবের নাম্বারে,তার বোনের কল আসে।
এইসময় তার বোনের নাম্বার থেকে কল আসায় মাহবুব সাহেব কিছুটা অবাক’ই হন। এতোক্ষনে তো তাদের বরযাত্রী হয়ে এই বাড়িতে আসার কথা।কিন্তু এখন কল দেওয়ার মানে কী?মাহবুব সাহেব মাথায় নানারকম ভাবনা চিন্তা নিয়েই কলটা রিসিভ করে।
“হ্যালো।
” ভাইজান খুব বড় ঝামেলা হয়ে গেছে।(উত্তেজিত কন্ঠে)
“কীসের ঝামেলা।আর তোদের তো এতোক্ষণে এই বাড়িতে চলে আসার কথা। না এসে কীসের ঝামেলার কথা বলছিস?
” ভাইজান সকাল থেকে রাফসান উধাও। ওকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
“হোয়াট..খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না মানে কী?ও কী বাচ্চা যে উধাও হয়ে যাবে?
“কালকে রাতে তো ছিলো।সকাল থেকে ওকে খুঁজে পাচ্ছিলাম না।মনে করছিলাম, হয়তো কোথাও দরকারি কাজে গেছে,চলে আসবে।কিন্তু এখনো আসছে না,দেখে আপনেরে কল দিলাম।
” আমি এখন সবাইকে কী বলবো?আর মেয়েটারও কী অবস্থা হবে ভেবে দেখেছিস?সকাল থেকে ও নাই।আর তুই এখন আমারে ফোন করছিস।
রাখ ফোন।আমার মাথা কাজ করছে না।
স্বামীকে চিন্তিত দেখে মিসেস জাহান এগিয়ে আসলেন।
“কী হয়েছে?তোমাকে খুব চিন্তিত দেখাচ্ছে।
” রাফসানকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
“মানে?
মাহবুব সাহেব তার স্ত্রীকে সবকিছু খুলে বললেন।
” এখন কী হবে?সিনহা মেয়েটারও কতো বড় সর্বনাশ হয়ে গেলো?
ইমরান তার মায়ের কথা শুনে কাছে এসে বলল,
“আম্মা কী বলছো,সিনহার সর্বনাশ হলো মানে,বুঝলাম না?
মিসেস জাহান ইমরানকে রাফসানের কথাটা বলল।ইমরান কিছুক্ষণ ভেবে তার বাবা মা’কে বলল,
“আমি সিনহা কে বিয়ে করতে চাই।
দুজনে ইমরানের কথা শুনে চরম অবাক হয়।
” তুই বিয়ে করবি মানে?
“হ্যাঁ,এমনিতেও আমাকে না জানিয়ে ওই রাফসানের সাথে সিনহার বিয়ে ঠিক করলে।আর এখন সেই রাফসান সিনহাকে রেখে উধাও হয়ে গেলো।এখন যদি বিয়েটা না হয়,সবাই সিনহার নামে উল্টপাল্টা কথা বলবে।এইসব আমি সহ্য করতে পারব না।আমি জানি তোমরাও পারবে না।তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি সিনহাকে এই মুহুর্তে এই বিয়ের আসরেই সিনহাকে বিয়ে করবো।তোমাদের ছেলের সাথে, তোমাদের সিনহার বিয়ে দিতে তোমাদের কোনো আপত্তি থাকবে না বলে আমি বিশ্বাস করি।
ইমরানের কথা শুনে মাহবুব সাহেব আর আপত্তি করলেন না,তিনি রাজি হয়ে গেলেন।ইমরান তার বন্ধুদের দিকে তাকিয়ে হাসি দিলো।তার বন্ধুরা,ইমরানের হাসি দেখে বুঝতে পারলো ঘটনা ঘইটা গেছে।তারাও সাথে সাথে হেসে দেয়।
”
দিয়া এবার দুজনের কানের কাছে এসে বলল,
“খাইছে,দুজনে এভাবে প্রতিশোধের ডিব্বা নিয়ে বইসা থাকলে,বাসর করবো কেডা?
দিহানও এবার এসে দিয়ার পাশে দাঁড়ায়।দিয়া কথাটা বলতে দেখে,সে এবার দিয়ার কানে ফিসফিস করে বলল,
” তোমার আপত্তি না থাকলে,আমি আর তুমি বাসর টা সেড়ে ফেলবো।
দিয়া চোখ বড় বড় করে দিহানের দিকে তাকায়।সে বিশ্বাস করতে পারছে না, এই ভদ্র দিহান সাহেবও এই কথা বলতে পারে।
”
কাজী সাহেব ইমরানকে কবুল বলতে বললে,ইমরান এক দমে তিনবার কবুল বলে দেয়।ইমরানের এহেন কান্ডে উপস্থিত সবাই হেসে দেয়।দিহান তো বলেই দেয়,
“বাহ!যেনো তর সইছে না উনার। যেনো উনার বউকে অন্য কেউ কবুল বলে নিয়ে যাবে।আরে ভাই নিবে না,এতো চাপ নিস নাহ।
” নিজের বিয়ে হলে নিজেও এমন করতেন।এখন আসছে আমার ভাইকে পিঞ্চ করতে।
“একদম আমার সাথে লাগতে আসবে না।নাহলে বাসরটা সেড়ে ফেলবো। (ফিসফিস করে)
কাজী এবার সিনহাকে কবুল বলতে বলল,
” কবুল কবুল কবুল।
দিয়া এবার চিৎকার করে বলল,
“ইয়াহু বিয়া সম্পুর্ণ। কংগ্রাচুলেশন ভাইয়া এন্ড কংগ্রাচুলেশন সিনহা ভাবী। (সিনহাকে জড়িয়ে ধরে)
“লেখকঃইমতিহান ইমরান।।
ইমরান বাসর ঘরের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।দিয়ার কারনে রুমের ভিতরে ঢুকতে পারছে না।সে তার ভাইয়ের কাছে ১০,০০০ টাকা দাবি করেছে।না দিলে কোনো ভাবেই ভিতরে ঢুকতে দিবে নাহ।
” আরে বইন এতো টাকা কোথায় পাবো?
“বইনের সাথে কিপ্টামি করস।টাকা না দিলে আজকে রাত বাইরে থাক।বাসর করা লাগতো না তোর।
” দিহান,আয়ান তোদের কাছে টাকা আছে।থাকলে,এরে দিয়া বিদায় কর।
“আসেন বইন,এদিকে আসেন।টাকা হিসেব করে নিয়ে যান।
ইমরান ব্রো আমি তোমার বইনের হাত টা ধরে নিয়ে যাই।তোমার কোনো আপত্তি আছে?
” আরে ভাই শুদ্ধ কথা রাইখা,এখন আপাতত নিয়ে যা। হাত আস্তে ধরিস,আবার ব্যাথা যেনো না পাই।
“খবরদার টাকা না দিয়া হাত ধরবেন না।
কে শুনে কার কথা দিহান এগিয়ে এসে দিয়ার হাত ধরে টেনে নিয়ে যায়।
”
ইমরান দরজা ঠেলে রুমের ভিতরে প্রবেশ করে।কেউ একজন তার বিছানার মাঝ বরাবর ঘোমটা দিয়ে বসে আছে। ইমরানের উপস্থিতি টের পেয়ে,সিনহা বিছানা থেকে নেমে ইমরানের সামনে এসে দাঁড়ায়।ইমরান চুপটি করে দাঁড়িয়ে সিনহার গতিবিধি লক্ষ্য করছে।
“ভাইয়া তোরে পায়ে কী হাত দিয়া সালাম করতে হবে?
সিনহার কথা শুনে ইমরান হা হয়ে যায়।
এই মেয়েটা তাকে জিজ্ঞাস করছে সালাম করবে কীনা?তার চেয়ে বড় কথা হচ্ছে,এই মেয়েটা এখনো তাকে ভাইয়া ডাকছে।নিজের বিয়ে করা আপন স্বামীকে বাসর ঘরে ডেকে এনে ভাইয়া বলে অপমান করছে।এই টা তো কোনো ভাবে মেনে নেওয়া যায় না।
ইমরান রেগে যায়।সে বলে উঠে,
“না আমাকে কোলে নিয়ে তোকে নাচতে হবে।গাধা মাইয়া একটা।তোর সাথে এক ঘরে থাকবোই না,আমি।বিয়ে করে,এখন ভাইয়া ডেকে অপমান করা হচ্ছে। (রেগে)
ইমরান দরজার কাছে এসে,আবার ফিরে আসে।
” আমার রুম আমি কেনো যাবো?আমি ঘুমাতে গেলাম।তুই তাড়াতাড়ি কাপড় চেঞ্জ করে বিছানার একপাশে শুয়ে পড়।দাঁড়িয়ে না থেকে,যা(ধমক দিয়ে)
সিনহাও এবার রেগে যায়।সে ভদ্র ভাবে চুপটি করে থাকে বলে,ডেভিলটা সবসময় তার উপর রাগ দেখায়। সিনহা তেড়ে এসে নিজের দুই হাত দিয়ে ইমরানের পাঞ্জাবীর কলার শক্ত করে চেপে ধরে….
চলবে..
ইমরানঃবিয়ে করে ভাইয়া ডেকে অপমান করা হচ্ছে।?
সিনহাঃতুই তো আমার ভাইয়া’ই।তোকে ভাইয়া’ই ডাকবো,আমি।?
শুরু শুরু শুরু…কী শুরু পাঠক-পাঠিকারা আমার থেকে বেশি ভালো জানে?☺
~ইমতিহান ইমরান।