Devil_Cousin_Lover 26

0
1242

#Devil_Cousin_Lover♥
#Imtihan_Imran
26.

একদিন দুইদিন করে আস্তে আস্তে বিয়ের দিন ঘনিয়ে আসছে।সিনহা খাওয়া দাওয়া একপ্রকারে বন্ধ করে দিয়েছে প্রায়।ও তার ডেভিলকে ছাড়া, তার ভালোবাসার মানুষকে ছাড়া কীভাবে বেঁচে থাকবে।সিনহা কান্না ছাড়া কিছুই ভাবতে পারছে না।কিন্তু সিনহা ইমরানকে দেখে অনেক অবাক হয়ে যায়।সিনহার বিয়ে হচ্ছে,এতে তার কোনো মাথা ব্যাথা নেই।সে দিব্যি হাসি খুশি মুখ নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।সিনহা বারবার ইমরানের মুখোমুখি হলে,ইমরান অন্য কথা বলে বিয়ের কথাটা এড়িয়ে যায়।

ইমরানের এমন ব্যবহার দেখে সিনহার অনেক কষ্ট হচ্ছে।ইমরান কী তার সাথে এতোদিন অভিনয় করেছে? কেউ কী ভালোবাসার অভিনয় এতো নিখুঁত ভাবে করতে পারে।

দুইদিন পর সিনহার বিয়ে।পুরোদমে বিয়ের তোড়জোড় চলছে।সিনহা মন খারাপ করে সোফায় বসে আছে।এমন সময় ইমরান এসে সিনহার পাশে বসে।সিনহা একবার ইমরানের দিকে তাকিয়ে মুখ ফিরিয়ে নেয়।

“সিনহা কান্না করতে করতে তো চোখ মুখের বারোটা বাজিয়ে ফেলছিস। রাফসান তো তোকে এভাবে দেখে বিয়েই করতে চাইবে না।

ইমরানের কথা শুনে সিনহার ইচ্ছে করছে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে,কয়েকটা কথা শুনিয়ে দিতে।কিন্তু তার এখন ইমরানের সাথে কথা বলতে একদম’ই ইচ্ছে করছে না।

সিনহা উঠে যেতে চাইলে,ইমরান হাত টান দিয়ে জোর করে সোফায় বসিয়ে দেয়।

“তোর সাথে কথা বলছি।আর তুই জবাব না দিয়ে চলে যাচ্ছিস।

” তোর সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করছে না আমার।

“ওমা কেনো?আমি কী তোর সাথে কিছু করেছি।যে আমার সাথে তোর কথা বলতে ইচ্ছে করে নাহ।

” তোর সাথে আমি কথা বলতে চাই না।ব্যস চাই না।আর আমার হাত ধরবি না,যত্তসব।(রেগে চেঁচিয়ে)

সিনহা সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়, যাওয়ার জন্য।ইমরান এবারও সিনহার হাত ধরে টান দিলে,ঠাস করে ইমরানের গালে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দেয়।

সবকিছু এতো দ্রুত হয়ে গেছে যে,সিনহাও বুঝতে পারেনি,থাপ্পড় টা এতোটা জোরে পড়ে যাবে।ইমরান গালে হাত দিয়ে অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে সিনহার দিকে তাকিয়ে আছে।তার কাছে সবকিছু স্বপ্নের মতো লাগছে। সিনহা তাকে থাপ্পড় মেরেছে।সিনহা ইমরানকে কিছু না বলেই সোফা ছেড়ে উঠে এক দৌড়ে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে যায়।

ইমরান গালে হাত দিয়ে বসে আছে, এমনসময় চাচা এসে ইমরানের পাশে বসে।চাচা ভ্রু কুঁচকে ইমরানের দিকে তাকায়।

“কীরে ভাতিজা তোর কী বউ মইরা গেছে,যে গালে হাত দিয়া বইসা ধ্যান করতেছিস।

চাচার কথা শুনে ইমরান নিজেকে স্বাভাবিক করে নেয়।

“আমি তো এখনো বিয়েই করিনাই। বউ মরবে কীভাবে?

“বউ না মরলে,গালে হাত দিছস কেন? নাকী কেউ উত্তম মধ্যম দিছে গালে।

ইমরান চোখ গরম করে চাচার দিকে তাকায়,তা দেখে চাচা বলে,

“ভাতিজা চোখ গরম দেখাস কারে। থাপ্পড় খাইয়া বইসা আছস।আর এখন আমি জিজ্ঞাস করিলাম,আর তুই আমারে চোখ গরম দেখাস।

” তোমারে বলছি আমি,যে আমারে কেউ থাপ্পড় দিছে।হুদাই বকো কেনো? যাও তো আমার সামনে থেইকা। না থাক,তুমি থাকো আমি যাই।

ইমরান চলে যায়।চাচা এবার গালে হাত দিয়ে বইসা আছে।চাচা দেখবার চায়,গালে হাত দিয়ে বইসা থাকলে কে কী কমেন্ট করে?

রাতে খাওয়ার সময় ইমরানকে ডাকলে, ইমরান জরিনা বানুকে বলে,তার খাবার টা রুমে আনার জন্য।সিনহা গালে যে থাপ্পড় টা দিয়েছে,তার দাগ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।এখন নিচে গেলেই সবাই কতো কিছু জিজ্ঞাস করবে।এইসব প্রশ্নের সে সম্মুখীন হতে চায়না।আর জিজ্ঞেস করলে বলবেই বা কী?সিনহা তাকে থাপ্পড় মেরেছে?এইটা তো তার মান ইজ্জতের ব্যাপার।

ইমরান আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে গালে হাত বুলিয়ে নিজে নিজেই বলছে,

“এই মেয়েটার হুঠ করে এতো শক্তি কোথায় থেকে উদয় হল।জীবনেও কেউ আমার গায়ে হাত দেয়নি।আর এই পিচ্চি মেয়েটা থাপ্পড় মেরে গালের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে।গাল থেকে দাগও যাচ্ছে না।কেউ দেখলে কী যে বলবো।উফ!জাস্ট ইম্পসিবল।

“লেখকঃইমতিহান ইমরান।।

আজ সিনহার বিয়ে।সিনহাকে সুন্দর করে বউ সাজানো হয়েছে।সিনহা এখন আর কান্না করছে না।পুরো রোবটের মতো শক্ত হয়ে আছে।

দিয়া এসে সিনহাকে দেখে বলল,

“উফ!অসাধারণ লাগছে তোকে।আজ তো আমার ভাইয়া তোকে দেখে মার্ডার হয়ে যাবে।

সিনহা,দিয়ার কথা শুনে অবাক হয়ে যায়।

“মানে..?

দিয়া এই কথা বলেই থতমত খেয়ে যায়। কী বলতে কী বলে ফেলল।দিয়া পরমুহূর্তে নিজেকে স্বাভাবিক করে নেয়।

” আরে তোরে দেখে রাফসান ভাই পাগল হয়ে যাবে,সেটা বললাম।

“ওওও..(মন খারাপ করে)

দিয়া,দিশা সিনহাকে নিচে স্টেজে এনে বসিয়ে দেয়।সিনহা নিঃশব্দে নিচের দিকে তাকিয়ে চোখের জল ফেলছে।তার পাশে যে কেউ একজন এসে বসেছে। সেদিকে তার কোনো খেয়াল নেই। সিনহার চোখের জলও কারো দৃষ্টিতে পড়ছে না,কারন সিনহার মাথায় ঘোমটা দেওয়া।

এমনসময় কাজী এসে সিনহার সামনে বসে।কাজীর নাম শুনে সিনহার বুক কেঁপে ওঠে,প্রিয়জনকে হারানো ব্যাথায় সিনহার চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে।

দিয়া সিনহার কানের কাছে ফিসফিস করে বলল,

” সিনহা কবুল বলার আগে,তোর বরটাকে একবার দেখে নে।তোর পাশে সে বসে আছে,আর তুই খেয়াল’ই করছিস না তারদিকে।

দিয়ার কথা শুনে সবার আড়ালে নিজের চোখের জল মুছে নেয়।সে ঠিক করেছে,আর কান্না করবে না।কার জন্য কান্না করবে সে,ডেভিলের জন্য।ডেভিলটাহ তো কোনোদিন তার ছিল’ই না।

সিনহা ঘোমটা টা হালকা টেনে পাশে তাকায়।বরের আসনে বসে থাকা ব্যাক্তিটাকে দেখে সিনহা ভূত দেখার মতো চমকে উঠে।সিনহা অবিশ্বাস্যের দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে।এটা কীভাবে সম্ভব?ডেভিলটা বরের আসনে বসে আছে।

ইমরান সিনহার দিকে তাকিয়ে একটা হাসি উপহার দেয়।সিনহার দিকে এগিয়ে এসে ফিসফিস করে বলে,

“তোর হবু জামাই রাফসান তোকে বিয়ে করতে আসে নাই।তাই বাধ্য হয়ে আমাকে বিয়ে করতে হচ্ছে তোকে। নাহলে তোকে বিয়ে করতাম নাকি আমি?যে থাপ্পড় টা মেরেছিস,উফ এখনো ব্যাথা আছে।

ইমরানের অভিমান মাখানো কথা শুনে সিনহা হেসে দেয়।সত্যি সত্যি তার ডেভিলের সাথে তার বিয়ে হচ্ছে। সবকিছু যেনো স্বপ্নের মতো লাগছে। সিনহার এখন খুশিতে নাচতে ইচ্ছে করছে।

” এতো খুশি হয়ে লাভ নাই।আমি কিন্তু থাপ্পড়ের প্রতিশোধ নিবো।।

“আমিও প্রতিশোধ নিবো।

” তুই আবার কীসের প্রতিশোধ নিবি??

“আমাকে এতোদিন কাঁদানোর জন্য।।সব উসুল করে নিবো তোর থেকে।

দিয়া এদের দুজনকে এভাবে কানে ফিসফিস করতে দেখে,এতোক্ষনে দুজনের কানের কাছে নিজের কান খাড়া করে দেয়।দিয়া এবার দুজনের কানের কাছে এসে বলল,

“খাইছে,দুজনে এভাবে প্রতিশোধের ডিব্বা নিয়া বইসা থাকলে বাসর করবো কেডা???

চলবে…

~ইমতিহান ইমরান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here