#Devil_Cousin_Lover♥
#Imtihan_Imran
25.
“হোয়াট…
তোমরা হ্যাঁ বলে দিয়েছো মানে কী?
“কেনো কী সমস্যা?তোর ফুফির পছন্দ হয়েছে।আর রাফসান ছেলেটাও তো ভালো।সিনহা ওদের কাছে ভালোই থাকবে।
” সিনহা মাত্র কিছুদিন হলো কলেজে ভর্তি হয়েছে।আর ওর বয়সও বা কতো হয়েছে,যে তোমরা ওর বিয়ে দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছো।এখনো তো ওর বয়স ১৮ও হয়নি।
“কলেজে ভর্তি হয়েছে।পড়াশোনা করবে সমস্যা নেই তো।ওরা বলছে সিনহাকে পড়ালেখা করাবে।আর বয়স এখন ডাজ নট ম্যাটার।
“বাবা তুমি একজন শিক্ষিত মানুষ হয়ে এই কথা বলছো।তুমি হ্যাঁ বলে দেওয়ার আগে একটি বারও আমার অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন মনে করলে না।এই সিনহাকে সেই ছোট্ট কাল থেকে আমি মানুষ করে আসছি।আর তার বিয়ের ব্যাপারে তুমি ডিশিসন নেও, আমাকে না জানিয়ে।
” ইমরান তুমি অযথা হাইপার হচ্ছো। আমি যা করছি,সিনহার ভালোর জন্যই করছি।আর আমার বোন সিনহাকে নিতে চায়,আমি তো মানা করতে পারিনা।তাই আমি চাই,তুমি এই ব্যাপার নিয়ে আর একটি কথাও যেনো না বলো।
মাহবুব সাহেব সোফা ছেড়ে উঠে চলে যেতে লাগলেন।পিছন পিছন মিসেস জাহানও যেতে লাগলেন।ইমরান দুই হাত মুষ্টিবদ্ধ করে রাগ দমন করার চেষ্টা করছে।এই রাফসানকে এই মুহূর্তে সামনে পেলে একদম মেরেই ফেলতো।
ইমরান পিছনে ফিরে সিড়ি দিয়ে উপরে উঠতে সিনহাকে দেখতে পায়। সিনহা অসহায় চোখে ইমরানের দিকে তাকিয়ে আছে।এই চোখের দিকে ইমরান তাকাতে পারছে না।ইমরান চোখ নামিয়ে সিনহার পাশ কেটে নিজের রুমের দিকে চলে যায়। সিনহা ধপ করে সিড়ির কাছেই বসে পড়ে।দুই চোখ দিয়ে জলের স্রোত বইছে। সিনহার চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে।সে ভাবতে পারছে না কী থেকে কী হতে যাচ্ছে।
সন্ধ্যার পরে সিনহা ইমরানের রুমের কাছে এসে উঁকি দিয়ে যায়।কিন্তু দরজা ভিতর থেকে বন্ধ।সিনহা আজকে ডাকার আর সাহস পেলো না।সে নিজের রুম্ব ফিরে যায়।
ডিনারের সময় মাহবুব সাহেব সিনহা সহ সবাইকে সিনহার বিয়ের খবর টা জানায়।
ইমরান স্বাভাবিক ভাবেই বসে আছে,যেনো এটা নিয়ে ওর কোনো মাথা ব্যাথা নেই। বিয়ে হলে হবে,এখানে মাথা ঘামানোর কী আছে,এমন একটা ভাব নিয়ে খাওয়ায় মনোযোগ দিচ্ছে। সিনহা মাহবুব সাহেবের মুখের উপর কিছু বলার সাহস পাচ্ছে না। কী বা বলার আছে ওর।তার বাবা মা মারা যাবার পর তো এরাই তাকে আশ্রয় দিয়েছে। এই পর্যন্ত তাকে নিয়ে এসেছে। ওরা যা ভালো বুঝবে,তাই তো ওর মেনে নেওয়া উচিত।সিনহা ইমরানের দিকে তাকায়,ইমরান কেনো উনাকে বলছে না,যে সে সিনহাকে ভালোবাসে।
সিনহা খাওয়া ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়।ওর এখন গলা দিয়ে কিছু নামছে না।সিনহাকে উঠে যেতে দেখে,মিসেস জাহান বলল,
“কীরে সিনহা না খেয়ে উঠে যাচ্ছিস যে।
” ফুফি ভালো লাগছে না এখন।পরে খেয়ে নিব।
সিনহা এই কথা বলে আর এক মুহুর্ত দাড়াল না।ইমরান মাথা উঠিয়ে সিনহার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।
“লেখকঃইমতিহান ইমরান।
সবাই যখন গভীর ঘুমে,এই সময় ইমরান সিনহার দরজার সামনে দাঁড়িয়ে।অন্যসময় হলে এতোক্ষনে রুমের ভিতর ঢুকে যেতো।কিন্তু এতো রাতে একটা মেয়ের রুমে,তার অনুমতি নেওয়া ছাড়া ঢুকতে কেমন যেনো খারাপ দেখাচ্ছে ইমরানের কাছে। যদিও সে তার মামাতো বোন,তার প্রেমিকা।
ইমরান সিনহাকে ডাক দেয়।সিনহা মন খারাপ করে চেয়ারে বসে ছিল। এতো রাতে ইমরানের কন্ঠ শুনে সিনহা হকচকিয়ে উঠে।সে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ায়।দরজার সামনে গিয়ে দেখে, ইমরান একটা প্লেট নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
“ভাইয়া,তুই এইসময়?
” ঘুমাস নি কেনো?
“ঘুমিয়ে ছিলাম তো।তুই ডাকলি তাই উঠে এলাম।
” মিথ্যা কথাও ঠিক মতো বলতে পারিস না।সামনে থেকে সর।
“কেনো?
ইমরান সিনহার কেনো’র জবাব না দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে।
” এই নে তোর জন্য খাবার এনেছি।খেয়ে নে তাড়াতাড়ি।
“আমি খাবো না।ইচ্ছা করছে না।
” আমার হাতে থাপ্পড় খেতে না চাইলে,তাড়াতাড়ি খেয়ে নে।(রাগী সুরে)
“তুই খাইয়ে দিবি?
” আয় বস।
সিনহা এসে ইমরানের পাশে বিছানায় বসে।ইমরান খাবারের লোকমা নিয়ে সিনহাকে খাওয়ায় দিচ্ছে।সিনহা খাচ্ছে আর ইমরানের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।খাওয়ার মাঝেই সিনহা বলে উঠল,
“ভাইয়া আমার কী সত্যি সত্যি রাফসানের সাথে বিয়ে হয়ে যাবে।
” বাবা বলছে,শুনলি তো।
“আমার কষ্ট হচ্ছে ভাইয়া।আমি পারবো না বিয়ে করতে।তুই ফুফাকে বুঝিয়ে বল।
” শুনবে না আমার কথা।উনি তোর ভালোই চাই।খারাপ না।
“তুই এমন ভাবে কথা বলছিস,যেনো আমার রাফসানের সাথে বিয়ে হলে, তোর কোনো সমস্যা নেই।তুই না আমাকে ভালোবাসিস।এতো সহজ ভাবে কথাগুলো কীভাবে বলছিস?তোর কী আমার মতো কষ্ট হচ্ছে না?
ইমরান প্লেট টা টেবিলের উপর রেখে যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়ায়।দরজার কাছে আসতেই সিনহার করুন কন্ঠে শুনতে পাই,
” তুই কী বিয়ে টা আটকাতে পারবি না। আমি কী তোকে পাবো না। নাকী আমার কেউ নাই,এতিম বলে,তুইও আমাকে চাস না।
সিনহার কথা শুনে ইমরানের মাথায় রক্ত উঠে যায়।ইমরান তেড়ে এসে সিনহার গাল চেপে ধরে,
“তুই এতিম,এটা আমি কখনো বলেছি তোকে।নাকি এই নিয়ে তোকে কখনো কিছু বলেছি।এই কথা কেনো বলছিস তুই?(রেগে)
সিনহা গালে ব্যাথা পেলেও অনেক কষ্টে বলল,
” তাহলে তুই ফুফাকে বলছিস না কেনো?তুই আমাকে ভালোবাসিস। কেনো বলছিস না তুই আমাকে বিয়ে করতে চাস।কেনো বলছিস না,ওই রাফসানের হাতে যেনো আমাকে তুলে না দেয়?
ইমরান কিছু না বলে সিনহার গাল ছেড়ে দ্রুত হেটে রুম ত্যাগ করে।সিনহা ইমরানের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে চোখের জল ফেলছে।তার ডেভিল টা হঠাৎ এতো গা ছাড়া ভাব করছে কেনো?যেনো সবকিছু স্বাভাবিকভাবেই হচ্ছে।যেনো এটাই হওয়ার ছিল।
চলবে…
~ইমতিহান ইমরান।