হৃদয়ের_কোণে (পর্ব ৩৪)

0
1702

#হৃদয়ের_কোণে (পর্ব ৩৪)
#নাহার
·
·
·
কাশফি ড্রয়িং রুমে পাথরের মূর্তির ন্যায় দাঁড়িয়ে আছে। নিরা কাশফির পেছনে অবাক আর বিষ্মিত হয়ে বাড়ির বড়দের কথা শুনছে। মনে মনে ভাবছে এমনটা কেন হয়ে গেলো। না হলেও তো পারতো। নিরার বড় ফুফুর ছেলে মেহরাবের সাথে কাশফির বিয়ে ঠিক হয়েছে৷ নিরা এবার বেশ বুঝতে পারছে মেহরাব এখানে গুটিবাজি করেছে। রাগে নিরার ইচ্ছে করছে মেহরাবকে খুন করতে। আর চিৎকার করে বলতে যে- “কাশফি আপু শুধুই তূর্য ভাইয়ার।” কিন্তু কিছুই করতে পারছে না। মিসেস তানজুম কাশফিকে বললেন,
— কাশফি মা মেহরাবকে নিয়ে একটু উপরে যা তোর সাথে কিছু কথা বলতে চায়।

নিরা কাশফির হাত ধরে বললো,
— আপু প্লিজ তুই এই ছেলের সাথে উপরে যাবি না। প্লিজ আপু।

মিসেস তানজুম আবার বললেন। কাশফি রোবটের ন্যায় মাথা হেলিয়ে উপরের দিকে উঠতে শুরু করে। নিরা কাশফির যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইলো। মেহরাব উপরে উঠার সময় নিরার দিকে তাকিয়ে জিহবা দিয়ে তার ঠোঁট ভিজিয়ে নেয়। যা দেখে নিরার ঘৃণা আরো বেড়ে গেলো। তারা উপরে যাওয়ার পনেরো মিনিট পরেই নিরা ছুট লাগায় রাফিনের রুমে। রাফিনকে যে করেই হোক জানাতে হবে। রাফিন এবং কৌশিক ভাইয়া ছাড়া এই বিয়ে কেউ আটকাতে পারবে না। এইসব ভাবতে ভাবতেই দৌড়ে উপরে উঠতে শুরু করে। তিনতলার সিড়ির দিকে উঠার সময় মেহবার আচমকায় নিরার হাত ধরে টেনে এনে পিলারের সাথে চেপে ধরে। নিরা খুব বেশি ভয় পেয়ে যায় এমন হওয়ায়। ভয়ে সারা শরীর কাপতে শুরু করে। বুকের ভেতর ঢিপঢিপ শুরু হয়। কপাল ঘামতে থাকে। মেহরাব আবারো নিরার দিকে তাকিয়ে জিহবা দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নেয়। কানের কাছে মুখ এনে বললো,
— আসলে কাশফিও খুব সুন্দর। তাই ভাবলাম এক ঢিলে না হয় দুই পাখি শিকার করি। কাশফিকে বিয়ে করলে তো কাশফিও থাকবে আর শালি হিসেবে তোমাকেও পাবো। বুঝলে?

নিরা ছুটার জন্য দস্তাদস্তি শুরু করে। তখন মনে পড়ে ঝুমুরের কথা। এখন ঝুমুর হলে কি করতো? ঠাটিয়ে চড় মারতো। কিন্তু আমার দুইহাতই চেপে ধরেছে তাহলে কি করবো? নিরার মাথায় কোনো ভাবনাই আসছে না। সবকিছু দলা পাকিয়ে যাচ্ছে। আবার ভাবলো ঝুমুর হলে হয়ত কোথাও আঘাত করতো যাতে সে ছিটকে দূরে সরে যায়। কিন্তু কিভাবে? এইসব ভাবতে ভাবতে নিরা হাটু দিয়ে মেহরাবের দুই পায়ের মাঝ বরাবর জোরে আঘাত করে। মেহরাব ছিটকে দূরে সরে যায়। নিরা দৌড়ে উপরে চলে যায়। এই যাত্রায় বেঁচে গেলো। রুমে এসে ঢকঢক করে পানি খেয়ে বিছানায় বসে। কাশফির কথা মনে পড়তেই কাশফির রুমের দিকে ছুটে যায়। কাশফি বিছানায় বসে আছে মূর্তির ন্যায়। দৌড়ে এসে কাশফিকে জড়িয়ে ধরে ঝাকাতে ঝাকাতে বললো,
— আপু এই মেহরাব তোর সাথে কোনো বাজে ব্যবহার করেনি তো? আপু বলনা।

— না।

— চিন্তা করিস না আপু। এই মেহরাবের সাথে তোর বিয়ে কিছুতেই হতে দেবো না।

— কি করবি তুই?

— দেখি কি করতে পারি।

দুইজনে নিচে নেমে আসে। সবাই মিলে এঙ্গেজমেন্ট এর তারিখ ঠিক করছে। সব ঠিকঠাক হলেই তারা চলে যায়। নিরা এবার চেঁচিয়ে বললো,
— ওই বদমাইসটার সাথে কাশফি আপুর বিয়ে হবে না কিছুতেই।

সবাই নিরার কথা শুনে নিরার দিকে তাকায়। অবাক ও হয়েছে অনেক। নিরার মা নিরাকে ধমকে বললেন,
— ওরে বদমাইস বলছিস কেন? কথা ঠিক করে বল।

— বদমাইসকে বদমাইস বলবো না তো কি বলবো? মা প্লিজ তোমরা ওর সাথে আপুর বিয়ে দিও না প্লিজ। ও ভালো না। ওর মতলভ ভালো না।

মিসেস তানজুম এগিয়ে এসে বললেন,
— এইসব কেনো বলছিস মা? মেহরাব তো খুব ভালো ছেলে। ভালো জব করে। কাশফি অনেক সুখে থাকবে।

— শুধু অঢেল টাকা থাকলেই তার সাথে তোমার মেয়ে সুখে থাকবে বড়মা?

— আচ্ছা মেহরাবে খারাপ কি বল?

— মেহরাবের পুরোটাই খারাপ। প্লিজ ওর সাথে বিয়ে দিয়ো না আপুর।

মিসেস শায়েলা মেয়েকে একটা থাপ্পড় দিয়ে বলেন,
— চুপ কর। কয়েকদিন পর এঙ্গেজমেন্ট এখন ওই ছেলেকে নিয়ে কেনো এতো কথা বলছিস? আর মেহরাব করেছেটা কি? শুন বিয়ে হলেই বুঝবি কত ভালো ছেলে সে।

নিরা রাগে চেঁচিয়ে বললো,
— ওই বদমাইসের সাথে আমার আপুর বিয়ে আমি কখনোই হতে দিবো না।

কথাটা বলেই নিরা উপরে উঠে আসে। নিরার সারা শরীর রাগে থরথর করে কাপছে নিরার। নিরা তিনতলায় এসে দেখে কৌশিক রুম থেকে বের হচ্ছে। রাগ যেনো আরো বেড়ে গেলো। দপদপ করে কৌশিকের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। কলার ধরে বলে,
— বেশ তো আমাকে কথা শুনাস আমি কেনো আগে আগে বলি না কে কি করছে আমার সাথে। তখন কই থাকোস যখন কেউ বেয়াদবি করে বোনদের সাথে? তখন কই থাকোস যখন কেউ বোনদেরকে একা পেয়ে হেরেজ করে?

কৌশিক অবাক হয়ে যায় নিরার কথায়। তখন রাফিন ছাদ থেকে নেমে আসে। নিরার এমন আচরণ দেখে রাফিন জিজ্ঞেস করলো,
— নিরা এসব কি হা? ও তোমার বড় ভাই। আর বড় ভাইয়ের সাথে কেউ এমন ব্যবহার করে?

ভয়ংকর এক চাহনি নিক্ষেপ করলো রাফিনের দিকে। উপস্থিত সবাই চুপ হয়ে গেছে। কাশফি এসেও দাঁড়ালো। চেঁচামেচির শব্দ শুনে আফিয়াও রুম থেকে বের হয়ে এলো। নিরা রাফিনের সামনে দাঁড়িয়ে বলল,
— তুহিন যখন নোংরামি করছিলো কোথায় ছিলেন আপনারা হ্যাঁ? আমি নাহয় বলিনি আপনারা নজর রাখতে পারেননি কে কেমন ব্যবহার করছে?

কাশফি বলল,
— নিরা থাম না। বিয়েটা হয়ে গেলো তো সমস্যা দেখছি না আমি।

— সমস্যা বিয়েতে না। সমস্যা মেহরাবে।

সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে নিরার দিকে। নিরা আবার বললো,
— কই ছিলেন আপনারা যখন মেহরাম আমার সাথে মিসবিহেব করছিলো? কিছু হলে তো দোষ আমাকেই দিতেন।

কৌশিক বললো,
— কিন্তু মেহরাব করেছে কি?

— কি করেছে জানিস? ওহ জানবি কিভাবে ওইদিকে তো খেয়াল ছিলো না। সেদিন যদি ঝুমুর না আসতো আমি আবার মলেস্ট হতাম ওই মেহরাবের কাছে। ওই বদ্ধ রুমে সেদিন ঝুমুর না এলে কি হতো বুঝতে পারছিস? কথা শুনানোর সময় তো এক ইঞ্চিও ছাড় দিস না। তাহলে নজরদারি করার সময় মন আর নজর কই থাকে তোদের।

চিৎকার দিয়েই বললো কথাটা। নিরা দেয়ালের সাথে লেগে কেঁদেই যাচ্ছে। কাশফি হা হয়ে গেলো। সে ভাবতেও পারেনি মেহরাব এমন। কাশফি ভেবেছিলো তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়ায় নিরা এতোটা রেগে আছে। কিন্তু এতোকিছু হলো কেউ জানেই না। কাশফির সাথে সাথে কৌশিক, রাফিন এবং আফিয়ার অবাক। একজন আরেকজনের দিকে বারবার তাকাচ্ছে। নিরা আবার বললো,
— জানিস মেহরাব কাশফি আপুকে কেনো বিয়ে করতে চায় কারণ ওর নজর কাশফি আপুর দিকেও আছে। তখন ওর দুই পায়ের মাঝ বরাবর আঘাত না করলে ও আজকেও আবার আমাকে আঘাত করতো। কই ছিলি তখন?

রাফিনের সামনে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
— কই ছিলেন তখন হ্যাঁ? এইসব তো দেখবেন না। কিন্তু যেই কোনো অঘটন ঘটবে তখন এসেই আমাকে কথা শুনাবেন।

কারো মুখে কোনো কথা নেই। কাশফি আরেক দফা শক হলো। এতোকিছু হচ্ছে আর তার কোনোদিকে খেয়াল নেই। নিরার দিকে তাকিয়ে দেখলো মেয়েটা কাঁদছে। মনে মনে বললো- “কতবার যে মলেস্ট হয়েছে মেয়েটা। আর এবার তো আমার কারণেও হতে যাচ্ছিলো। যদি বিয়েটা হয় তাহলে তো এই মেহরাব নিরাকেও টার্গেট বানাবে। না এই বিয়ে আমি করবো না।” কৌশিক নিরার হাত ধরে বললো,
— সরি বোন। এখন থেকে আর এসব হবে না। যতটুকু নজর দেয়া উচিত আমার বোনদের ততটুকু নজরে রাখবো তোদের। প্লিজ আর কাঁদিস না।

নিরা ভাঙা গলায় বললো,
— তাহলে বিয়েটা বন্ধ কর। কাশফি আপুর সাথে মেহরাবের বিয়ে ঠিক হয়েছে। প্লিজ ভাই ওর মতলভ ভালো না।

কৌশিক রাফিনের দিকে তাকায়। রাফিন চোখের ইশারা দেয়। কৌশিক মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,
— ঠিকাছে বিয়ে বন্ধ করার সব ব্যবস্থা করবো আমি, আমরা।

সবাই কাজে চলে যায়। রাফিন নিরার সামনে এসে কান ধরে বললো,
— সরি নিরুপাখি। আমি তোমাকে কড়া নজরে রাখিনা কারণ আমি ছাড়াও তোমার আরেকটা দুনিয়া আছে। সম্পূর্ণ নিজের। আর আমি চাই না তোমার নিজের দুনিয়াটা আমার কারণে উপভোগ করা থেকে নষ্ট হোক। তাই আমি তোমাকে ছাড় দিয়েছি। কিন্তু ঘরের মানুষ এমন করবে এটা তো ভাবনার বাহিরে ছিলো। তাও সরি বলছি আর হবে না।

নিরা চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে। রাফিন একটানে নিরাকে নিজের সাথে জড়িয়ে ধরে। নিরাও চোখ বন্ধ করে রেখেছে। রাফিনের টেনশন এবার বেড়ে গেলো। এতোদিন ঘরের বাহিরের মানুষ ক্ষতি করছিলো তাই ঘরের ভেতরে সুরক্ষিত রেখেছে কিন্তু এখন, এখন তো ঘরের মানুষই ক্ষতি করতে চাচ্ছে। এইজন্যই বলে, “ঘরে শত্রু থাকতে বাহিরের শত্রুর দরকার হয়না।”

—————————————-
মালিহা আবার এসেছে নিরাদের বাসায়। আজ তিনদিন হলো সে এখানে এসে উঠেছে। মালিহা একেবারেই সহ্য করতে পারছে না রাফিন এবং নিরাকে। তাই যত কুমন্ত্রণা দেয়ার সবই দিচ্ছে রাফিনের মায়ের কানে। কথায় কথায় কয়েকবার তো বুঝিয়েছে নিরা ভালো মেয়ে নয়। সে আপনার ছেলেকে নিজের বসে করে নিচ্ছে। এমন হলে আমরা রাফিনকে হারিয়ে ফেলবো।

আজ মালিহা বেশ ফুরফুরা মেজাজে রুমে আসে। রাফিনের মা শুয়ে ছিলেন। মালিহা এসে বেডে বসলে তিনি উঠে বসেন। বললেন,
— কিছু বলবি?

— কয়বার বলবো তোমাকে খালা এই মেয়ে তোমার ছেলেকে নিজের বসে করে নিচ্ছে। তুমি খুব শিঘ্রই রাফিনকে হারাতে যাচ্ছো।

রাফিনের মা একটু বিরক্ত হলেন কিন্তু প্রকাশ করলেন না। হেসে বললেন,
— তোর মনে হচ্ছে। এমন কিছুই না। আর তাছাড়া মেয়েটা বেশ ভদ্র। আমার কাছে ভালোই লাগে মেয়েটাকে। কাপড় চোপড়, চলাফেরাও বেশ মার্জিত। রাফিন যদি নিরাকে পছন্দ করেই থাকে তাহলে তো ভালোই। আমার আর কষ্ট করে মেয়ে খুজতে হবে না।

কথাগুলো বলেই একগাল হাসলেন তিনি। মালিহা রাফে ফুসছে। ভেতরে ভেতরে রাগে জ্বলে যাচ্ছে। তাও নিজেকে সামলে আবার বললো,
— শুনো খালা এই মেয়ের অতীত ভালো না। কোন ছেলের সাথে নাকি থেকেছে এইসব জানাজানির পর বিয়েও ভেঙে গেছে। এমন মেয়েকে রাফিনের বউ করবে তুমি?

— অতীত তো অতীত হয়। সে অতীতে কেমন ছিলো সেটা ব্যাপার না। বর্তমানে কেমন সেটাই বড় কথা।

— তুমি কিন্তু বুঝে শুনেই তোমার ছেলের গলায় এমন চরিত্রহীন ঝুলিয়ে দিতে চাচ্ছো।

— মালিহা__

বেশ ধমকের সাথে নাম ধরে ডাক দিলেন। আবার শান্ত হয়ে বললেন,
— কাউকে চরিতহীন বলার আগে নিজের চরিত্র একবার ঘেটে দেখবে। এখন যাও। আমি ঘুমাবো।

কথাটা বলেই অপরপাশ ফিরে শুয়ে পড়লেন। মালিহা রুম থেকে বের হয়ে নিজের রুমে আসে। রাগে ফোনটা ফ্লোরে ছুড়ে মারে। ফুসতে ফুসতে বলল,
— কি এমন পেয়েছে এই মেয়ের মধ্যে যার কারণে মা ছেলে একেবারে তার মাঝেই ডুবে গেছে। তবে যাই হোক তাদের দুইজনকে আলাদা আমি করবোই।

——————————
রাত সাড়ে এগারোটা বাজে। রাফিন এবং কৌশিক দুজন ছাদে বসে আছে। চিন্তা হচ্ছে কিভাবে বিয়েটা ভাঙবে। তবে বিয়েটা আটকে দিয়েছে রাফিন এবং কৌশিক মিলে। কিছুতেই কিছু মিলাতে পারছে না দুইজন। এমন সময় নিরা এবং আফিয়া এলো ছাদে। ওদের সামনে বসে পড়ে দুইজন। নিরা তাদের উদ্দেশ্য বলে,
— তোমাদের কয়েকদিন ধরেই একটা কথা বলতে চাচ্ছিলাম কিন্তু সুযোগ পাইনি।

কৌশিক সোজা হয়ে বসে বললো,
— কি কথা? কার ব্যাপারে?

— কাশফি আপু।

রাফিনও এবার একটু নড়েচড়ে বসলো। নিরাকে বললো,
— তাড়াতাড়ি বলো।

— কাশফি আপু তূর্য ভাইয়াকে ভালোবাসে। তুহিনের বড় ভাই তূর্য। উনাকে। ভাই তোর গায়ে হলুদের আগের দিন আপুর রুমে ঢুকার সময় এসব শুনেছি আমি আপুর মুখ থেকেই। কিন্তু বুঝতে পারছি না তূর্য ভাইয়া কেনো সরে যাচ্ছে।

রাফিন এবং কৌশিক দুইজনই একজন আরেকজনের দিকে চাওয়াচায়ি করলো। দুইজন কিছু একটা ভাবছে। রাফিন গম্ভির হয়ে বললো,
— আফিয়া কাশফিকে ডেকে আনো তো।

আফিয়া গেলো কাশফিকে ডাকতে। নিরা নরম স্বরে বললো,
— কাশফি আপু তূর্য ভাইয়াকে পাবে না?

রাফিন গম্ভীর হয়ে বললো,
— তূর্যের মনে কি আছে আগে সেটা জানিতে হবে।

এর মাঝেই কাশফি এবং আফিয়া এলো। কাশফিকে বসতে দিলো। রাফিন জিজ্ঞেস করলো,
— কাশফি তুই নাকি তূর্যকে ভালোবাসিস।

কাশফি চমকালো। কয়েকটা ঢোক গিলে তোতলাতে তোতলাতে বলল,
— তোতোরা ককিভ কিভাবে জাজানোস?

কৌশিক বিরক্ত হয়ে বলল,
— কিভাবে জানি সেটা ব্যাপার না। কথাটা সত্যি কিনা সেটা বল।

কাশফি মাথা নিচু করে ফেলে। সবার আড়ালে চোখের পানি ফেলে। রাফিন এবং কৌশিক বুঝে গেলো কথাটা সত্যি। কাশফি স্বাভাবিক হয়ে বলল,
— এখন এসব বলে লাভ নেই। যা হবার হয়ে গেছে। আমাদের কোনোদিন মেনে নিবে না বাসায়।

রাফিন ধমকের স্বরে বললো,
— বেশি বুঝিস না। যা যা জানতে চাইবো সোজা সোজা উত্তর দিবি নাইলে কানের নিচে দিবো। সম্পর্ক কয়দিনের, কিভাবে পরিচয় এসব জানতে চাইবো না। শুধু এতটুকু জানতে চাই তূর্য তোকে ভালোবাসে? যদি ভালোবাসে তাহলে ছেড়ে যাচ্ছে কেনো?

— হ্যাঁ ভালোবাসে। তূর্য আমাকে অনেক ভালোবাসে।

— তাহলে ছেড়ে যাচ্ছে কেন?

— নিরার জন্য।

সবাই অবাক। উপস্থিত তিনজন নিরার দিকে তাকিয়ে আছে।
·
·
·
চলবে………………………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here