#অবহেলায়_ভালোবাসা
#লেখকঃRabi_Al_Islam
#পর্বঃ১০
রিয়ান কলেজে সবার সামনে মেঘাকে প্রপোজ করলো।
সবার সামনে রিয়ান মেঘাকে প্রপোজ করবে মেঘা তা ভাবতে পারেনি। মেঘা এটার জন্য প্রস্তুত ছিলো না
সেই সাথে মেঘার ভয়ও হলো। রবি কোন ঝামেলা না করলে হয়। মেঘাকে চুপ থাকতে দেখে রিয়ান বলল, কি হলো চুপ করে আছো কেনো? তুমি ভালোবাসো না আমাকে?
মেঘা ভালোবাসি বলতে যাবে তার আগেই রবি এসে বলল, ও তোকে কোনদিনও ভালোবাসবে না। তোর সাহস কি করে হয় মেঘাকে প্রপোজ করার? তোকে বলেছিলাম মেঘার আশে পাশে না আসতে আর তুই মেঘাকে প্রপোজ করছিস।
ওইদিনের মারের কথা ভুলে গেলি। আজকে তোকে এমন মার মারবো যে ১বছরে হাসপাতাল থেকে আসতে পারবি না।
আজকের পর আর মেঘার সাথে কথা বলা তো দূরে থাক ওর ছায়া দেখলেই তুই ভয়ে কেঁপে উঠবি।
রিয়ান রবিকে বলল, এসব কথা অন্য কাউকে বলিস। তুই কি মনে করেছিস তোর এসব কখায় আমি ভয় পেয়ে যাবো। তাহলে এটা তুই ভুল ভাবছিস। আমি মেঘাকে ভালোবাসি আর আমি জানি মেঘাও আমাকে ভালোবাসে
এটা বলেই রিয়ান মেঘার হাত ধরে নিয়ে যেতে লাগলো। এটা দেখে রবির মাথা গরম হয়ে গেলো। রবি লাঠি দিয়ে রিয়ানকে মারতে লাগলো। রিয়ানের বন্ধুরা কিছু বলতে যাবে তখনই রবির বন্ধুরা ওদের মারতে লাগলো
মেঘা চিৎকার করে রবিকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতেছে কিন্তু রবি মেঘার কোন কথা শুনছেনা। রবি ইচ্ছামত রিয়ানকে মারতে লাগলো।
কেও আয়ানকে বলল, ভাই আপনার ছোট ভাইকে রবি মারতেছে। কথাটা শুনামাত্রই আয়ান বলল, কোথায় রবি?
আয়ান ওর লোকদের নিয়ে রবিকে মারতে আসলো। রবি আর ওর বন্ধুদের সাথে ওদের মারামারি লেগে গেলো।এর ভিতরে পুলিশ চলে আসলো। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসলো
মেঘা পুলিশদের রবিকে দেখিয়ে বলল, এই গুন্ডাকে থানায় নিয়ে যান। ও কোন কারন ছাড়াই ওদেরকে মেরেছে। ও এর আগেও ওকে মেরেছে। ও আমাকেও অনেক বিরক্ত করে। খুবই খারাপ ও। সবসময় কলেজে মারামারি করে। ওর জন্য কলেজের মেয়েরা সবসময় ভয়ে থাকে
পুলিশ রবি আর ওর বন্ধুদের গ্রেফটার করলো। আয়ান রিয়ানকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে লাগলো। মেঘা ওদের সাথে যেতে চাইলে আয়ান বলল, তোমার আসার কোন দরকার নেই। তোমার জন্য আমার ভাই মার খেলো। তুমি আর কখনও আমার ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করবে না
আমার ভাইকে শান্তিতে থাকতে দাও। আমি চাইনা আমার ভাইয়ের তোমার জন্য কোন সমস্যা হোক
নিজের চোখেই তো দেখলে রবি আমার ভাইকে কিভাবে মেরছে। রবি এতটাই খারাপ যে ও আমার ভাইকে মেরে ফেলতেও পারে শুধু তোমার জন্য
দয়া করে তুমি আমার ভাইয়ের জিবন থেকে দূরে চলে যাও। আর কখনও আমার ভাইয়ের সামনে আসবে না। আর আমি তোমাকে এসব কথা বলেছি তা আমার ভাইকে বলবে না
মেঘা চোখের পানি মুছে বলল, আপনি চিন্তা করবেন না ভাইয়া আমি রিয়ানের জিবন থেকে দূরে চলে যাবো। আর কখনও রিয়ানের সামনে আসবো না। আমার জন্য আর কখনও রবি আপনার ভাইকে আর মারবে না
মেঘা দিশাকে বলল, তুই সবসময় আমার সাথে ঝগড়া করতি রবিকে নিয়ে। তুই বলতি, রবি অনেক ভালো আর রিয়ান খারাপ। এখন সত্তিটা দেখলি তো
রবি কতটা ভয়ংকর। ও মানুষকে খুন পর্যন্ত করতে পারে। কতটা নির্মমভাবে রিয়ানকে মেরেছে। আমি চিৎকার করে ও কাছে অনুরোধ করেছি কিন্তু ও শুনেনি। ও একটা সাইকো
এখনও কি তুই বলবি ও ভালো। দিশা কিছু বলছে না। আজকে যা হলো তারপর আর ওর কিছু বলার নেই। আজকে রবি আর ওর বন্ধুরা খুবই খারাপ করেছে
মেঘা বলল, ওই গুন্ডাটা আমায় সবসময় বলতো আমি শুধু শেষ অংশটাই দেখি কিন্তু প্রথম অংশটা দেখিনা। আজকে তো আমি প্রথম অংশটাই দেখলাম আর রবি কতটা নির্মম তা জানতে পারলাম
আমি ওকে যা ভাবতাম ও সেটাই। তোরা সবসময় আমায় বলতি আমি ভুল এখন দেখলি তো কে ভুল আর কে সঠিক
রবি আর ওর বন্ধুদের থানায় নিয়ে আসলো পুলিশ। ওদেরকে বলল, স্টুডেন্ট হয়ে কেনো মারামারি করো? কলেজে সবাই লেখাপড়া করা আসে কিন্তু তোমরা আসো গুন্ডামি করতে
মেহেদী খবরটা পেয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওদের জামিনের ব্যবস্থা করতে লাগলো। থানায় গিয়ে ওদের ছাড়িয়ে আনলো
রেগে সবাইকে বলল, আমি বারবার বলেছি কোন ঝামেলা না করতে কিন্তু তোরা আমার কোন কথা শুনলি না এখন দেখলি তো কি হলো। রবিকে তোরা বুঝাতে পারলি না হুট করেই ঝামেলার সিদ্ধান্ত
এই দুইবার তোরা আয়ানের ভাইকে মেরেছিস। এবার তো পুলিশ কেচও হয়েছে। এখন কি হবে বুঝতে পারছিস। পুলিশ সবসময় তোদের উপরে নজর রাখবে।
তোকে বলেছিলাম ওই মেয়েটা তোর বিপদ ডেকে আনবে। আমার কথাই সত্তি হলো। এখন কিছুদিন কলেজে যাওয়ার দরকার নেই। অন্য সবকিছু বাদ এখন।
৩দিন পর আজকে রবি আর ওর বন্ধুরা কলেজে আসলো। সাকিব দিশার সাথে দেখা করতে গেলো। দিশা সাকিবকে বলল, এতদিন আমি তোমাদের ভালো জেনে এসেছিলাম। মেঘার সাথে ঝগড়া করতাম রবি ভাইয়ের জন্য।
কিন্তু ওইদিন রবি ভাইয়া যা করলো তাতে আমার ধারনা পাল্টে গেলো। তোমার কাছ থেকে আমি এটা আশা করিনি। তোমরা শুধু শুধু রিয়ানকে মেরেছো
রবি ভাইয়া কি ভেবেছে এসব করলে মেঘা তাকে ভালোবাসবে। মেঘা এখন রবি ভাইকে আরও ঘৃনা করবে। আমিই ভুল ছিলাম
– মানে? কি বলতে চাইছো তুমি?
– যা বলার সরাসরিই বলবো। হয় তুমি এসব ছেড়ে দিবে না হয় আমাকে ভুলে যাবে।
– কি বলছো তুমি? তোমার মাথা ঠিক আছেতো?
– আমি যা বলছি ভেবেই বলছি। মেঘাই ঠিক ছিল রবি ভাইয়ের সম্পর্কে। সে যা করেছে খারাপ করেছে। তার সাথে থাকলে তুমিও তার মত হয়ে যাবে
– মুখ সামলে কথা বলবে। আমি জানি রবি কেমন
– সে কেমন তা সবাই জেনে গেছে। তুমি এখন বেছে নাও কি করবে। রবির সাথে থাকলে আমাকে ভুলে যাও
চলবে—