অবহেলায় ভালোবাসা? পর্ব-৫

0
587

#অবহেলায়_ভালোবাসা
#লেখকঃRabi_Al_Islam
#পর্বঃ৫
রিয়ান রবিকে বলল, আমি জানতাম মেঘার সাথে কথা বললে তুই চলে আসবি। তাইতো এই প্লানটা করি। অবশ্য প্লানটার কথা মেঘাই আমাকে বলেছিলো

এখন ওইদিনের প্রতিশোধ নিবো। তোকে এমন মার মারবো যে সারাজিবন মনে রাখবি।

ওদের কথা শুনে রবি হাসতেছে। ওদেরকে বলল, আমাকে এখানে নিয়ে আসার জন্য প্লানের কি দরকার ছিল জানপাখি? তুমি বললেই তো আমি চলে আসতাম

তুমি যেখানে বলবে আমি সেখানেই আসবো জানপাখি। কাউকে ভয় পেয়ে তোমার কথা রাখবো না এমনটা তুমি কি করে ভাবলে

আর রিয়ান তোকে ওইদিন মারার পরও কি তোর শিক্ষা হয় নাই। আজকে আবার মার খেতে চাস।আচ্ছা যা তোর ইচ্ছাই পূরন করবো

– ভুলে যাসনা তুই এখানে একা আছিস। তোকে মারলে বাঁচাতে কেও আসবেনা

– আমি একাই তোদের জন্য যথেষ্ট

রবিকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই প্রিন্সিপ্যাল চলে আসলো। সে সবাইকে চলে যেতে বলল। মেঘা বুঝতে পারলো না রবি মার খাওয়ার সময় বার বার এই প্রিন্সিপ্যাল কোথা থেকে চলে আসে। ওইদিনও প্রিন্সিপ্যাল এসে রবিকে বাঁচিয়েছিলো আবার আজকে

মেঘা রিয়ানকে বলল, প্রিন্সিপ্যাল কিভাবে আসলো? তার তো জানার কথা ছিলো না

– কেও হয়তো বলে দিয়েছে। রবির ভাগ্যটা হয়তো ভালো যাচ্ছে তাই বার বার বেঁচে যাচ্ছে। যেদিন একটা সুযোগ পাবো সেদিন আর ও বাঁচবেনা

মেঘাকে ওর বান্ধুবিরা বলল, তুই রবির সাথে এমন করলি কেন? প্লান করে নিয়ে গিয়ে তাকে মার খাওয়াতে চেয়েছিস। তুই এতটা নিচে নেমে গেছিস

ওই রিয়ানের জন্য এতসব করছিস জানিস ও কতটা খারাপ। যেদিন তোর সাথে কিছু হবে সেদিন বুঝবি

– রিয়ানের সম্পর্কে আর একটাও বাজে কথা বলবিনা। তোকে এসব কে বলেছে?

– সাকিব বলেছে

– সাকিব কে?

– রবির বন্ধু

– ওর সাথে তোর কিসের সম্পর্ক?

– আমরা রিলেশনে আছি

– তাইতো বলি তুই রবির পক্ষ নিয়ে এত কথা কেন বলিস। সাকিব তোকে উল্টা- পাল্টা বলেছে রিয়ানের সম্পর্কে। আর তুইও তা বিশ্বাস করেছিস

এখন পর্যন্ত কি রিয়ানকে রবির মত কলেজে মারামারি করতে দেখেছিস?

– কেনো মারামারি করেছে তা না জেনে কিভাবে তাকে খারাপ ছেলে বলিস? এমন তে হতে পারে রবি সবার ভালোর জন্যই মারামারি করেছে কিন্তু তুই সেটা বুঝতে পারছিস না

– তোর মাথা খারাপ হয়ে গেছে এটা ঠিকই বুঝতে পারছি। ওই সাকিবের প্রেমে তুই অন্ধ হয়ে গেছিস তাই ওর সব কথা বিশ্বাস করছিস। সাকিবও রবির মতই খারাপ

– তোর বন্ধু বলে তুই সাকিবের সম্পর্কে যা তা বলবি না। আমি ওকে ভালো করেই চিনি। ও কখনও খারাপ কাজ করতে পারেনা

– তাহলে রবির সাথে মিশে মারামারি কেনো করে? সবসময় রবির সাথে থাকে কেনো?

– ওরা ভালো বন্ধু তাই একসাথে থাকে। আর রিয়ান কি মারামারি করেনা?

– ও রবির থেকে ভালো আছে। রবির মত কোন মেয়েকে বিরক্ত করেনা। রবি তো সবমময় কারও সাথে না কারও সাথে ঝামেলা করবেই। যেদিন মার খেয়ে রাস্তায় পরে থাকবে ওইদিন বুঝবে

তুই কেনো প্রিন্সিপ্যালকে বললি? তোর জন্য রবিকে শাস্তি দিতে পারলাম না। তুই কেন রবির জন্য এসব করছিস?

– এছাড়া আর কি করবো। তুই রবি ভাইয়ার সাথে এমন কেনো করছিস?

– যা করছি ঠিকই করছি। রবি এটারই প্রাপ্য

৩দিন পর

সাকিবকে দিশা বলল, তোমাকে একটা কথা বলবো রাগ করবে না তো?

– বলো, রাগ করবো কেনো?

– আগে বলো রাগ করবে না

– আচ্ছা করবো না। বলো

– রবি ভাইয়া সবমময় এরকম থাকে কেনো? সবসময় ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ে। দেখে মনে হয় কোন গুন্ডা। সেই সাথে তোমাদেরকেও। এরপরও আমি তোমাকে ভালোবাসি। তোমরা এরকমভাবে থাকো কেনো?

– আমার সম্পর্কে যা বলার বলো কিন্তু রবির সম্পর্কে কিছু বলবেনা। ও আমার নিজের ভাইয়ের মত। আমরা খারাপ কিছু করিনা। কেও অন্যায় করলে তার প্রতিবাদ করি

– তাই বলে সবসময় গুন্ডাদের মত থাকতে হবে? রবি ভাইয়া জানে মেঘা কিরকম তারপরও ওর পিছু কেনো পড়ে আছে? রবি ভাইয়াকে তো মেঘা একদমই সহ্য করতে পারেনা।

– রবির প্রথম কোন মেয়েকে ভালো লাগলো আর তা হলো মেঘা। রবি মেঘাকে অনেক ভালোবাসে। রবির ভালোবাসাকে মেঘার কাছে অত্যাচার মনে হয়। যেদিন মেঘা রবির ভালোবাসা বুঝতে পারবে সেদিন মেঘা আফসস করবে

– মেঘা কখনই রবি ভাইয়াকে ভালোবাসবে না। আমরা ওকে অনেক বুঝিয়েছি। মেঘা রিয়ানের সাথে মিলে রবি ভাইয়াকে মার খাওয়াতে চায়

অনেকদিন তো প্রিন্সিপ্যালকে বলে আমরা বাঁচিয়ে দিয়েছি। রবি ভাইয়াকে বলবা মেঘার থেকে দূরে থাকতে

– বলেও লাভ নেই। ও কখনই মেঘার থেকে দূ্রে থাকবে না

আয়ান আবিরকে বলল, মেহেদীকে নিয়ে কিছু ভেবেছিস? ওকে এখন থামাতে না পারলে সামনে আমাদের জন্য আরও ভয়ংকর হতে পারে

– কি করবো কিছু ভেবে পাচ্ছিনা। মেহেদীর কিছু করা এত সহজ না। ওর সাথে সবসময় অনেকে থাকে। ও একাও কোথাও যায়না। ওর সবচেয়ে বড় শক্তি হলো রবি। মেহেদীর কিছু করতে হলে আগে রবিকে শেষ করতে হবে

রবি যতদিন মেহেদীর সাথে থাকবে ততদিন ওর কিছু করা সম্ভব না। আর রবিকে সহজে কিছু করা যাবেনা। ওর নেটওয়ার্ক অনেক দূর পর্যন্ত।

আমাদের ভয়ংকর কোন পরিকল্পনা করতর হবে। তা না হলে রবির কিছু করতে পারবেনা

রিয়ানকে ওর বন্ধুরা বলল,দোস্ত মেঘাকে এখন ভালোবাসার কথা বলে ফেল। আমার মনে হয় ও তোকে ভালোবাসে। তারপর যা করার তাড়াতাড়ি কর

এটা বলেই সবাই হাসতে লাগলো

– হু। কিছুদিন পর ওকে ভালোবাসার কথা বলবো। ও রাজি হলে ভালো তা না হলে জোর করেই করবো যা করার

রুমডেটের জন্য ওকে বলবো রাজি না হলে তোরা ওকে কিডন্যাপ করে নিয়ে আসবি।

রিয়ান ওর বন্ধুদের সাথে এসব বলতেছে আর হাসতেছে

চলবে—

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here