#হলদে_প্রজাপতি
(প্রাপ্তমনস্কদের জন্য )
— অমৃতা শঙ্কর ব্যানার্জী ©®
ছেচল্লিশ
( আগের অধ্যায়গুলোর লিংক অধ্যায়ের শেষে দেওয়া হল)
ধীরে ধীরে অন্ধকার স্নেহের আলিঙ্গনে আঁকড়ে ধরল জঙ্গলকে । কিন্তু তা মাত্র কিছুক্ষণের জন্য । তারপরেই চন্দ্রিমার নরম ছোঁয়ায় হেসে উঠলো রহস্যময়ী অরণ্য । হ্যাঁ আমরা পূর্ণিমা দেখেই এসেছি । শুনেছিলাম পূর্ণিমায় এখানে নাকি একখণ্ড স্বর্গ নেমে আসে। তা যে মিথ্যা নয় , তা কিছুটা অনুভব করতে পারলাম । এইখানে এই ফরেস্ট বাংলোর চাতালে চেয়ার নিয়ে বসে সেই চাঁদের আলো ধোয়া মানস নদী আর ওপারের রয়াল ভুটান ন্যাশনাল পার্কের ছায়াঘন রহস্য ! শুধু যদি ট্যুরিস্টদের অবাঞ্ছিত গোলযোগটুকু আর সন্ধ্যাবেলার ব্যাটারীতে চলা কৃত্রিম আলোটুকু গেস্টহাউস থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া যেত – । কিন্তু নাহ্ ! এটুকুর জন্যেই প্রকৃতির সমস্ত আয়োজন বৃথা গেল ।
কোথা থেকে যেন হু হু করে হাওয়া ছুটে আসছে । যত সময় গড়াচ্ছে, হাওয়ার বেগ বাড়ছে। ঝোড়ো হাওয়া । কি তার কারণ জানি না । অরন্যের বাকি সব কিছুর মতন বাতাসও যেন রহস্যময় । ভালো করে চাদর মুড়ি দিয়ে বসলাম । কোন কথাই বলতে ইচ্ছা করছে না । মা আর বান্টি গুনগুন করে কথা বলছে । পাশ থেকে আমি চুপচাপ তাকিয়ে রয়েছি সন্ধ্যার অরন্যের দিকে। তবে মা বেশিক্ষণ সেই হাওয়া নিতে পারল না । ঘরের ভেতরে চলে গেল । আমি আর বান্টি বসে আছি। তবে বিশেষ কোনো কথা বলছি না । বান্টি মাঝেমধ্যে দু-একটা কথা বলার চেষ্টা করছে । আমার দিক থেকে তেমন সাড়া শব্দ না পেয়ে গল্প জমে উঠতে পারছে না । আশেপাশে সমস্ত পর্যটকদের হই-হুল্লোর , হট্টগোল গায়ে এসে যেন সূচের মত বিঁধছিল । এরা এই প্রকৃতির সামনে দাঁড়িয়ে তাকে উপভোগ করতে পারে না কেন ? এভাবে প্রকৃতির সৌন্দর্যকে অবহেলা করে কৃত্রিমতায় মধ্যে ডুবে থাকার জন্য কি এখানে আসা ? এতো সৌন্দর্যের হত্যা ! এভাবেও এই অপার্থিব সৌন্দর্যকে উপেক্ষা করা যায় ? গভীর বিস্ময় , রহস্যের ডালি উপচে দাঁড়িয়ে রয়েছে প্রকৃতি । হয়তো খুব কাছেই কোথাও চাঁদের আলো পিঠে মেখে সদর্পে এগিয়ে চলেছে কোনো ডোরাকাটা । মানস বিশাল অঞ্চল অধিকার করে থাকা এক টাইগার রিজার্ভ । এখানে এসেও মূর্খ মানুষ নিজেদের মধ্যে কৃত্রিম উপভোগের অরণ্যে এসে যে তার সঙ্গে মিশে যেতে হয়, তার ভাষায় কথা বলতে হয়, তার ছন্দেই সুর মেলাতে হয় – এসব এরা কবে বুঝবে ?
গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে বলতে ইচ্ছা করলো – ‘ ঈশ্বর তুমি আমাকে আজ রাত্রের জন্য বধির করে দাও । আমি সহ্য করতে পারছিনা এত কোলাহল । আমি এই অসীম সৌন্দর্যের মাঝে বসে তারই কম্পনে কম্পিত হতে চাই ।’
খাবার জন্য ডাক পড়ল। উঠে পড়লাম । রাতের খাওয়া সেরে তিনজনে যখন ফিরে এলাম , তখন প্রায় সাড়ে ন’টা । রাত বাড়ার সাথে সাথে দুটো জিনিস সমান হারে বেড়ে চলেছে । এক হলো হাওয়ার বেগ । দুই, কোলাহলের বেগ । পাগল পাগল লাগছে আমার । এই অমূল্য অরণ্যবাস এভাবে বয়ে চলেছে ? ধৈর্য ধরে ঠায় বসে রইলাম । কখন কোলাহল শান্ত হয় –
একসময় কৃত্রিম আলোগুলো সব নিভে গেল । একটা করে লন্ঠন গেস্ট হাউসের রুমে রুমে দরজার পাশে দিয়ে দেওয়া হল। আর তখনই ম্যাজিকের মত ভিড়টা ভ্যানিশ হয়ে গেল । সেই নিঝুম অরণ্যে একফালি চাতালে নরম জোছনা মেখে বসে রইলাম শুধু আমি আর বান্টি। সময় এখানে যেন চাঁদের আলোর মত গলে গিয়ে ভেসে চলে যায় । কোথা থেকে আসে, কোথায় চলে যায়, বোঝা যায় না। হাওয়ার বেগ আরো বেড়েছে । তবে এখন আমার শুধুমাত্র চোখ দুটো ছাড়া আর কোন ইন্দ্রিয়ই কাজ করছে না । এই নিশুতি রাতে গভীর অরণ্যের বুকে রাত্রি যাপন করছে কত ধরনের বন্য পশু । তাদের সাথে একইভাবে পিছলে যাওয়া জোৎস্না মেখে যাপন করছি আমিও। অগুন্তি রূপোর রেখা নদীর জলে ফুটে উঠছে, আবার মিলিয়ে যাচ্ছে । আমরা দুজনে বসে আছি, অথচ কোন কথা বলছি না । এই পরিবেশ যে কথা বলার নয় । কথা বলতে দেয় না । অবশ্য বান্টি প্রথমটায় বলতে আরম্ভ করেছিল । তারপর আমার ভাবগতিক দেখে চুপ করে গেছে । বেশ কিছুক্ষণ এভাবে কেটে যাওয়ার পর ও আমাকে তাড়া দিতে লাগল ।
বলল , তরুদি কেউ কোথাও বাইরে নেই। এখানে এভাবে বসে থাকাটা সেফ নয় ।
আমার মোটেই ওঠার ইচ্ছা ছিল না । ও খানিক টানাটানি করেই আমায় নিয়ে গেল রিসোর্টের ভেতরে । শুলাম । তবে ঘুম আসেনা । জীবনে অনেক বিনিদ্র রজনী কাটিয়েছি, সুখে-দুঃখে বিভিন্ন কারণে । তবে আজকের মত এমন কারণ কখনো দেখা দেয়নি । বাইরে আমার জন্য অপেক্ষা করছে আস্ত একটা স্বর্গ । আর আমি এখানে এই ঘরের ভেতর অন্ধকার হাতড়াচ্ছি । বাইরে চুঁইয়ে চুঁইয়ে পড়ছে জোছনা । ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে । রাত্রি গভীর থেকে গভীরতর হয়ে একসময় পূব গগন লাল হয়ে আসবে। আমি সেসব কিছুই দেখবো না । এ কিভাবে সম্ভব ? বুঝতে পারছি, বাইরে হাওয়ার বেগ আরো বেড়েছে। মনে হচ্ছে যেন ঝড় বইছে । তবুও আমি পারছি না । কিছুতেই পারছি না । অনেকক্ষণ অন্ধকারে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে মটকা মেরে পড়ে রইলাম বিছানার ওপরে । তারপরে আস্তে আস্তে বিড়াল পা’য় নামলাম। সাবধানে খুললাম দরজাটা । অল্প একটু আওয়াজ হলো । যাকগে যাক, মায়ের বা বান্টির ঘুম ভাঙেনি । আলতো করে বাইরে থেকে দরজাটা ভেজিয়ে দিয়ে সেই অপার সৌন্দর্যের দিকে চোখ মেলে চাইলাম ।
যা কিছু রয়েছে চোখের সামনে, সবখান থেকে গলে গলে পড়ছে রুপো। রুপোর সূক্ষ্ম চাদরে ঢেকে গেছে দুনিয়াটা। ঝোড়ো হাওয়ায় আশেপাশের গাছগাছালি ঝিরঝিরিয়ে বাদ্যযন্ত্রে সুর তুলেছে। আর তার সাথে সাথেই হাজার হাজার রুপোর ফোঁটা গলে গলে পড়ছে। এত ভয়ঙ্কর সুন্দর যে গায়ে কাঁটা দেয় ! বেশিক্ষন তাকিয়ে থাকলে মনে হয় যেন আমি এমন এক দুনিয়ায় পৌঁছে গেছি যেখান থেকে আর কোনভাবেই ইঁট-কাঠ-পাথরের সেই বাস্তব দুনিয়ায় ফিরে যাওয়া সম্ভব নয় । এই নতুন পৃথিবী আমাকে তার কাছে বন্দি করে রাখবে । আমি যে বন্দী হতে চাই । হে প্রকৃতি , হে অনিন্দ্য সুন্দর প্রকৃতি ! তোমার এই ভয়ঙ্কর সৌন্দর্যে আমায় তুমি কোনো এমন মায়াজালে বেঁধে ফেলো , যেখান থেকে আমাকে আর সেই নিষ্ঠুর বাস্তব জগতে যেন কোনদিন ফিরে না যেতে হয় । শুনেছি তুমি যে মায়ের মতোই । তুমি কেন তোমার এই অভাগী সন্তানকে চিরজীবনের মতো কোলে তুলে নাও না ? আমি তোমার মাঝে থাকতে চাই । তোমার কোলে এমনভাবে মুখ লুকিয়ে বসে থাকতে চাই , এই নিষ্ঠুর বাস্তব জগৎ যেন আমায় কোনদিন আর খুঁজে না পায় । কংক্রিটের জঙ্গল থেকে সম্পূর্ণভাবে হারিয়ে গিয়ে তোমার এই স্নেহের আশ্রয়ে আমি জীবনের বাকি বছরগুলো বাঁচতে চাই । বাঁচার মত বাঁচতে চাই ।
মানস নদীর উপর রূপোর স্রোতে সে যেন কোনো রূপকথার নদী সৃষ্টি হয়েছে । নদীর ওপারে নরম আলো ধোয়া অনিন্দ্য সুন্দর নদীর চর .. অরণ্য .. ধোঁয়াটে অন্ধকারে রুপোলী মুকুট পরে সারে সারে দাঁড়ানো সুন্দরী পাহাড়ের ঢাল । ওরা নাকি আমাদের প্রতিবেশী দেশের । মানুষ নিজের মতো করে দেশের সীমারেখা টেনে দিল, আর অমনি তা হয়ে গেল আমাদের প্রতিবেশী দেশ । কোথায় সীমানা ? কিসের সীমানা ? এপার-ওপারের বন্য বাসিন্দারা কি তা জানে ? তবে না জেনেও তা মানে । ভৌগলিক সীমারেখা আছে যে একটা , প্রবহমান মানস নদী । এই অসীম প্রকৃতির মাঝে কোথাও কি আজ আর এতটুকুও বাবার অস্তিত্ব বাকি নেই ? বিপুলা এ পৃথিবীর কত বৈচিত্র । তার মাঝে একটুখানি মাত্র , এত্তটুকুনি জায়গাতেও কি সে আর বাবাকে লুকিয়ে রাখতে পারেনি ? সবটুকু বিলিয়ে দিতে হল কোনো এক মহাশূন্যের বুকে ?
খেয়াল হলো দুচোখ বেয়ে অবিরল ধারায় ঝরে পড়েছে জল । বুঝলাম তার অনেকটা বাবার স্মৃতিচারণে আর বাকিটা অসীম অরণ্যছর গা শিরশিরে সৌন্দর্যের ঠেলায় । আমি নতজানু হয়ে বসে পড়লাম । দশ আঙ্গুলের ফাঁক গলে অজস্র ধারায় ঝরে পড়তে লাগলো মনের ক্লেশ । হু হু করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে আমার। ডুকরে উঠে গড়াগড়ি দিতে ইচ্ছে করছে প্রকৃতির শীতলতায় । খোলা চুলের গোছাগুলো এসে চাবুকের মতো ঝাপটা মারছে চোখে, নাকি মনে কে জানে !
রবি ঠাকুর বলেছিলেন , ‘মানুষ একদিকে মৃত্যুর অধিকারে, আর একদিকে অমৃতে, একদিকে সে ব্যক্তিগত সীমায় , আর একদিকে বিশ্বগত বিরাটে । এই দুইয়ের কোনোটিকে উপেক্ষা করা চলে না ।’
আমি জানিনা কখন থেকে কিভাবে যেন এই ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে আমি বরাবর বাবাকেই খুঁজে চলেছি । প্রতিটি কোণায় , প্রতিটি রুপোলি খাঁজে, প্রতিটি অন্ধকারে, প্রতিটি আলোর শিহরণে ! বাবা আজ নেই কোথাও ! নেই , কোনোখানে নেই !
হঠাৎ করে কাঁধের কাছে হাতের স্পর্শ পেয়ে চোখ তুলে তাকালাম । দেখি বান্টি কখন উঠে এসেছে । ও আমার পাশে বসে পড়ল ।
ফিসফিসিয়ে বললো, কিরে তরুদি ! এই রিসোর্টে কোথাও কোনো বাউন্ডারি ওয়াল রয়েছে কি ? এখানে এইভাবে ওপেনলি চাতালে বসে থাকার মানে কি হয় জানিস ? এটা একটা টাইগার রিজার্ভ রে ! তুই এভাবে একা একা এত রাতে বাইরে বসে রয়েছিস ? একটা জনপ্রাণী রয়েছে বাইরে ?
অসহায় ভাবে তাকালাম ওর দিকে । বলতে চাইলাম , জনপ্রাণী নেই বলেই তো এখন এসেছি বাইরে । কিন্তু, বলা হলো না কিছুই । কিকরে হবে ? বুকের কষ্টটা উঠে এসেছে গলার কাছে, তারপর দলা পাকিয়ে গেছে । তবে, আর একজন মানুষের আবেগের সান্নিধ্যেই হলো কিনা জানিনা, ভেতরে জমে থাকা সমস্ত বাষ্প গলে গলে জল হয়ে বেরিয়ে আসতে লাগলো হু হু করে কেঁদে চলেছি আমি বান্টির কাঁধে মাথা রেখে । ও আমাকে আলতো হাতে জড়িয়ে ধরেছে । মাথার চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে । এখন মনে হচ্ছে যেন ও আমার দিদি হয় । কাঁদছি আমি । কেঁদেই চলেছি । কেঁদে খুব শান্তি পাচ্ছি । মেয়েটার সান্নিধ্যে কোথায় যেন আবেগ আছে । স্নেহ আছে , মমতা আছে । ওর বুক ভেসে যাচ্ছে আমার চোখের জলে । ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছি । ফুলে ফুলে উঠছি ।
বেশ অনেকক্ষণ পর , তখনকার মতো চোখের জল ফুরিয়ে গেল । আস্তে আস্তে ওর বুকের ভেতর থেকে মাথা তুলে নিয়ে আবার সেই অসীম সৌন্দর্যের দিকে চোখ ফিরিয়ে নির্বাক হয়ে বসে রইলাম ।
কিছুক্ষণ পরে বান্টি বলল , ঘরে যাবি না তুই ?
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে খুব আস্তে আস্তে উত্তর দিলাম , ঘরেই তো আজ এতগুলো বছরের প্রতিটা রাত কাটালাম । কিন্তু আজকের রাত আর কতক্ষণ ?
বেশ কিছুক্ষন দুজনেই চুপ । তারপর বান্টি আমার দিকে চোখ ফিরিয়ে আমার কাঁধের ওপর আলতো করে ওর ডানহাতটা রাখল ।
বলল , একটা প্রশ্ন করব তোকে ?
নদীর রূপোলী রেখাচিত্রের দিকে তাকিয়ে থেকেই বললাম, বল্ ।
ও একটু যেন ইতস্তত করলো । কিছু একটা ভেবে বললো , তুই আবার কিছু মনে করবি না তো ?
ঠোঁট দুটো নিজের অজান্তেই যেন কিছুটা হাসিমাখা হয়ে উঠলো । কিছু কিছু হাসি থাকে, শুধুই কষ্ট দিয়ে আঁকা । ও বোধহয় বুঝলো সেই হাসির অর্থ । মন বলে কি আর অবশিষ্ট আছে আমার কিছু, যে মনে করবো ? আছে কি নেই, তাও বা কি ঠিক করে জানি ? কোথায় যে কখন কি ফুরিয়ে যায় , আর কিভাবে কোথায় কতটুকু বাকি রয়ে যায় – সে হিসাব কি মানুষ করতে পারে ?
অল্পক্ষণ চুপ করে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলো ও । তারপর বললো, কই, আমার দিকে ফিরে তাকা ।
— তুই বল্ না, আমি শুনছি ।
— না, এভাবে হবে না । তুই তাকা আমার দিকে ।
দীর্ঘশ্বাস চেপে ওর দিকে তাকালাম ।
ও আমার দুটো চোখের দিকে দৃষ্টি স্থির রেখে বললো , তুই ইন্দ্রদা’কে বিয়ে করতে চাস্ না , তরুদি ?
চমকে উঠলাম ওর কথা শুনে। ও যে এমন একটা অভাবনীয় প্রশ্ন করে বসবে, ভাবতেও পারিনি। বিস্ময়ের রেশ লাগলো গলায় ।
বললাম , তুই .. মানে তুই ইন্দ্রাশিষ বাবুকে .. মানে কি তুই ওনার কথাই বলছিস ?
— হ্যাঁ আমি ইন্দ্রদা’র কথাই বলছি । ডক্টর ইন্দ্রাশিষ গাঙ্গুলী । তুই কি তাকে বিয়ে করতে চাস না ?
— তুই ওনাকে চিনিস ?
— হ্যাঁ চিনি ।
মুখ নামিয়ে বললাম , তুই হঠাৎ আমাকে এখন এসব প্রশ্ন করছিস কেন ?
— প্রয়োজন মনে হল , তাই করলাম । এই প্রশ্ন এখনো যদি না করি , আরো অনেকটা সময় পেরিয়ে গেলে, করে কি আর কোনো লাভ হবে ?
— তুই কি করে চিনলি ?
— সেটা আমি তোকে নাহয় পরে বলব ইন ডিটেইলস । এখন যে প্রশ্নটা করেছি, তার উত্তর দে তো –
আমি চুপ করে রইলাম । এ প্রশ্নের উত্তর দিয়ে কি হবে ? সব প্রশ্নের কি উত্তর হয় ? উত্তর হলেও কি সবসময় তা জানানো যায় ? ও কিছুক্ষণ আমার উত্তরের জন্য অপেক্ষা করলো ।
তারপর আমার গালের ওপর আস্তে করে হাত ছুঁইয়ে বললো, বল্ তরুদি । আমার জানাটা খুব প্রয়োজন ।
চাপা দীর্ঘশ্বাসটা বেরিয়ে এলো এতক্ষণে ।
— বলবি না, তাই তো ?
কি বলবো জানি না । কেন বলবো, তাও জানি না ।
— ইন্দ্রদা খুব খুব ভালো মানুষ, এটুকু আমি তোকে বলতে পারি ।
— ওঁরা এখন আছেন কোথায় ?
নিজের অজান্তেই প্রশ্নটা বেরিয়ে এলো ।
— তুই আমার প্রশ্নের উত্তর দে আগে । তারপর সব বলবো ।
কিছু বলছি না আমি । বলার কিছু নেই, তাই । বান্টিও চুপ করে বসে আছে । কটা বাজে এখন ? রাত কি শেষ হয়ে আসছে ? পুব আকাশে কি রং লাগছে ? কে জানে !
একসময় বান্টি উঠে দাঁড়িয়ে আমার হাত ধরে টানলো । বলল , আর না । ঘরে চল্ ।
আমিও ডানহাতের ওপর ভর দিয়ে ক্লান্ত শরীরটাকে নিয়ে উঠে দাঁড়ালাম । ঘরেই ফিরে যাওয়া যাক । ফিরে এসে বিছানায় পাশাপাশি দুজনে শুলাম । নিশ্ছিদ্র অন্ধকার । মুখ দেখা যায় না , দেখাতেও হয় না ।
সেই অন্ধকারে মুখ লুকিয়ে প্রায় ফিসফিস করে ওকে প্রশ্ন করলাম, পাতা কেমন আছে জানিস তুই ?
ক্রমশ..
©®copyright protected
এক-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/978775899579141/
দুই-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/980083989448332/
তিন-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/981378992652165/
চার-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/983543179102413/
পাঁচ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/986002805523117/
ছয়-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/987404668716264/
সাত-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/989485091841555/
আট-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/991102821679782/
নয়-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/993099491480115/
দশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/994279738028757/
এগারো-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/995634347893296/
বারো-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/998832147573516/
তেরো-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1000733104050087/
চোদ্দো-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1002718000518264/
পনেরো-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1004549847001746/
ষোল-
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1007202950069769&id=248680819255323
সতেরো-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1009015169888547/
আঠারো-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1011129543010443/
উনিশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1013312572792140/
কুড়ি-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1015118655944865/
একুশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1017814589008605/
বাইশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1019125995544131/
তেইশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1021798458610218/
চব্বিশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1024967944959936/
পঁচিশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1031476470975750/
ছাব্বিশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1034632350660162/
সাতাশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1038754843581246/
আঠাশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1046967802759950/
উনত্রিশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1048831039240293/
ত্রিশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1051696202287110/
একত্রিশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1053606998762697/
বত্রিশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1060747584715305/
তেত্রিশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1064517157671681/
চৌত্রিশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1073169890139741/
পঁয়ত্রিশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1075303099926420/
ছত্রিশ-
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1077175089739221&id=248680819255323
সাঁইত্রিশ-
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=426810745740602&id=100052350402509
আটত্রিশ-
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=431076141980729&id=100052350402509
উনচল্লিশ-
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=435617384859938&id=100052350402509
চল্লিশ-
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=440158787739131&id=100052350402509
একচল্লিশ-
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=444880253933651&id=100052350402509
বিয়াল্লিশ-
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=448896420198701&id=100052350402509
তেতাল্লিশ-
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=457879069300436&id=100052350402509
চুয়াল্লিশ-
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=461688418919501&id=100052350402509
পঁয়তাল্লিশ-
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=466038405151169&id=100052350402509
ছবি : সংগৃহীত