হৃদয়ের_কোণে (পর্ব ২৭)

0
1795

#হৃদয়ের_কোণে (পর্ব ২৭)
#নাহার
·
·
·
রুম অদলবদল করে এখন কিছুটা টেনশন মুক্ত হয়েছে রাফিন। নিরাকে সে নিজের রুমে বসিয়ে দিয়েছে। মিসেস শায়েলা বাড়িতে এসেই আগে নিরার খোজ করতে শুরু করলেন। হাতের শপিং ব্যাগগুলো সোফায় রেখে দৌড়ে উপরের দিকে ছুটে গেলেন। নিরাকে তার নিজের রুমে না পেয়ে কিছুটা ঘাবড়ে গেলেন। রাফিনের রুমে উঁকি দিতেই দেখলো নিরা সেখানে শুয়ে আছে। দৌড়ে গিয়ে নিরার পাশে বসতেই নিরা উঠে বসে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে মায়ের দিকে। মিসেস শায়েলা নিরাকে জড়য়ে ধরে বললো,
— শপিংমলে গেছি পর্যন্ত তোর কথা ভেবে মনের মধ্যে তুফান গেছে। তুই ঠিক আছিস তো মা? তোকে এভাবে একা রেখে যাওয়া একদম ঠিক হয়নি। মায়ের সাথে রাগ করিস না। আর কখনো এভাবে একা রেখে যাবো না মা।

নিরা তার মায়ের দিকে মায়াভরা চোখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে। মিসেস শায়েলা আবার এগিয়ে এসে মেয়ের কপালে চুমু দিয়ে বলেন,
— তুই এই রুমে কেনো শুয়ে আছিস? কি হয়েছে বলনা আমাকে মা। এভাবে চুপ করে থাকিস না।

পেছন থেকে রাফিন বললো,
— আন্টি নিরার শরীর খুব দুর্বল ছিলো বিধায় মাথা ঘুরে পড়ে গেছিলো তাই এখানে নিয়ে এসেছি।

মিসেস শায়েলা ছলছল চোখ মেয়ের দিকে তাকান। রাফিন আবার বললো,
— চিন্তার কিছু নেই। আমি আর কৌশিক সঠিক সময়ে এসেই উপস্থিত হয়েছিলাম বাসায় তাই তেমন ক্ষতি হয়নি নিরার।

মিসেস শায়েলা অবাক হয়ে রাফিনের দিকে তাকায়। তাঁর চোখে প্রশ্ন “তারা শপিংমলে না গিয়ে দুইজন বাসায় কেনো এসেছিলো?” রাফিন বুঝতে পেরে বললো,
— আমরা বেরিয়ে যাওয়ার কিচ্ছুক্ষণ পর মনে পড়লো কৌশিক মোবাইল বাসায়ই রেখে গেছে তাই মোবাইল নিতে আবার বাসায় এসেই দেখি নিরার ফ্লোরে পড়ে আছে। আপনাদের জানাইনি কারণ আপনারা টেনশন করবেন তাই।

মিসেস শায়েলা আর কিছু বললো না। মেয়েকে বুকের মাঝে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রেখেছে।

————————————————–
একটা নদীর সামনে বসে আছে কাশফি। অনবরত কান্না করছে। থামার নাম নেই। তবে তা নিরবে। পাশে কেউ দাঁড়িয়ে থাকলেও বুঝবে না যে কাশফি কাঁদছে যতক্ষণ না পর্যন্ত কেউ তার চেহারা দেখবে। কাঁদতে কাঁদতে হেচকি উঠে গেছে। এমন সময় পেছনে কারো উপস্থিতি টের পায়। সাথে সাথে পেছন ফিরে ঝাপিয়ে পড়ে তার বুকে। হেচকি উঠতে থাকায় নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়ে যাচ্ছে কাশফির তাই তাকে কান্না থামানোর চেষ্টা করে সামনের মানুষটা। কাশফি তার কলার খামছে ধরে বললো,
— কেন এমন হলো বলো? এভাবে আমরা হেরে যেতে পারি না তূর্য। তুহিনের জন্য আমাদের কেনো আলাদা হতে হবে বলো?

তূর্য অন্যদিকে ফিরে বলল,
— এটা ছাড়া আমাদের আর কোনো পথ নেই। এটাই একটা সমাধান। তোমার পরিবার এবং আমার পরিবার কখনোই মানবে না আমাদের সম্পর্ক। তাই বলছি আমাকে ভুলে যাও তুমি।

তূর্যের বুকে একটা কিল মেরে আবার ঝাপিয়ে পড়ে তার বুকে। এতটা শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছে যেনো ছেড়ে দিলে ঘাসফড়িং -এর মতো ফুড়ুৎ করে উড়ে চলে যাবে। তূর্যও বেশ শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললো,
— আমাদের নিয়তিতে আলাদা হওয়া লিখা ছিলো কাশফি। সব গল্পে কাছা আসা হয়না। কিছু গল্পে দূর থেকেই ভালোবেসে যায় একে অপরকে। আমরা দুইজনই অন্যকারো জন্য তৈরি হয়েছি।

— না আমি মানি না। তোমার কথা আমি মানি না। প্লিজ এভাবে বলো না। তুহিনের কাজের শাস্তি আমরা কেনো পাবো বলো?

তূর্য কাশফির মাথা নিজের বুক থেকে তুলে চোখের পানি মুছে দিয়ে বললো,
— প্লিজ বুঝার চেষ্টা করো আমার শালিক পাখি। আমাদের আলাদা হয়ে যাওয়াই শ্রেয়।

কাশফি বাকরুদ্ধ হয়ে গেলো। চোখের পানি শুকিয়ে গেছে। গাল বেয়ে গড়িয়ে আসা পানি শুকিয়ে আঠার মতো হয়ে গেছে। তূর্য মাথা নিচু করে আছে। পরক্ষণেই হাটু ভেঙে বসে পরে তূর্য। কাশফিও তূর্যের সামনে বসে তূর্যকে আবার জড়িয়ে ধরে। তূর্য এবার কাশফিকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে মিনমিনে গলায় বললো,
— কেনো আমার সাথেই এমন হয় শালিক পাখি বলো। হারানোর অধ্যায়টা শুধু আমার ভাগ্যেই কেনো লিখা? প্রথমে বাবা মা, তারপর মায়ের মতো ফুফি সবশেষে তোমাকে ঘিরে বাঁচতে চেয়েছি আর এখন তুমি। কেনো কাশফি কেনো? আমি আর পারছি না। হারানোর বেদনা এতো কেনো তীব্র হয় বলো?

কাশফি চুপ করে আছে। তূর্য নাক টেনে কাঁদছে। কাশফি একটু ভেবে বললো,
— চলো আমরা পালিয়ে যাই। এখান থেকে অনেক দূরে। যেখানে শুধু আমরা দুইজন থাকবো।

তূর্য এবার কাশফিকে ছেড়ে দেয়। নিজেকে সামলে নেয়। কঠিন রুপ এনে বললো,
— তা হয়না কাশফি। তোমার বাবা মায়ের সম্মানহানি হবে। তাছাড়া তুহিনের মিথ্যে অভিনয়ের কারণে এর আগেও একবার তোমাদের সম্মানহানি হয়েছে। তাই আমি চাইনা সেটা আবার হোক।

তূর্য উঠে দাঁড়ায়। কাশফির দিকে পিঠ করে দাঁড়ায়। কাশফির মনে বারবার তূর্যকে হারানোর ঘন্টা বাজচ্ছে। আবার ভাবছে হয়তো তূর্য তাকে আবার নিজের করে নিবে। কাশফির দ্বিতীয় ভাবনা ভুল করে দিয়ে তূর্য বললো,
— আজকে থেকে আর যোগাযোগ করার চেষ্টা করো না শালিক পাখি। তুমি নিজেকে গুছিয়ে নাও। আমাদের আলাদা হয়ে যাওয়াই ভালো।

কাশফির চোখ থেকে আবারো পানি গড়িয়ে পড়লো। তুর্য চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালেই কাশফি ঝট করে তূর্যের পা ধরে বসে যায়। তূর্যের পা শক্ত করে ধরে বললো,
— প্লিজ এভাবে ফিরিয়ে দিও না। আমি তোমাকে ছাড়া কিভাবে নিজেকে ঘুছিয়ে নেবো বলো? প্লিজ আমাকে ছড়ে যেও না তূর্য প্লিজ।

— কাশফি ভুলে যেও না আমি এতিম ছেলে। আমি তুহিনদের বাসায় আশ্র‍য় নিয়েছি। এখন আমি তোমায় নিয়ে পালিয়ে গেলে তোমাকে কোথায় রাখবো আমি?

— আমি কিছু শুনতে চাই না। প্লিজ।

কাশফি তূর্যের পায়ে মাথা ঠেকিয়ে কাঁদছে। তূর্য দাঁড়িয়ে চোখ বন্ধ করে কেদেই যাচ্ছে। কাশফির আবার হিচকি উঠে। তূর্য নিজেকে আবার শক্ত করে নেয়। কাশফিকে দাড় করিয়ে বললো,
— যদি আত্মসম্মান থাকে তোমার তাহলে আর কখনো আমার কাছে নিজেকে ছোট করতে আসবে না।

কথাটা বলে আর একমুহূর্তও দাঁড়ালো না তূর্য। কাশফি এখনো অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে তূর্যের চলে যাওয়া দেখছে। তূর্য তাকে এতো বড় একটা কথা বলবে এটা আশাও করেনি। তূর্যকে আর দেখা যাচ্ছে না। ভাবতেও কষ্ট হচ্ছে যে তূর্য তাকে ছেড়ে চলে গেছে। সেখানেই হাটু গেড়ে বসে পড়ে কাশফি। দুইহাতে মুখ ঢেকে চিৎকার করে কাঁদছে।

তূর্য দুইহাত শক্ত করে মুঠ করে রেখে হাটছে। মনের ভেতরে তুফান চলছে। যা থামার নাম নেই। সবসময় বলতো সে কখনো কাশফির কাঁদার কারণ হবে না। অথচ সারাজীবনের কাঁদার কারণ হয়ে গেলো সে। ভাবতেই নিজের প্রতি ঘৃণা হলো। খুব পোড়া ভাগ্য নিয়ে সে জন্মেছে। তার জীবনে শুধু হারানোর চাপ্টার বেশি।

————————————————–

রাফিন নিরার সামনে বসে নিরার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। নিরা কাচুমাচু করছে। রাফিন গম্ভীর মুখে জিজ্ঞেস করলো,
— কখন থেকে এসব ঘটনা শুরু হয়েছে?

— মমানে?

রাফিন এবার বেশ কর্কশ গলায় বললো,
— একটা মিথ্যে বললে দুইটা থাপ্পড় পড়বে গালে৷ হুট করেই তো তুহিন এমটা করেনি। নিশ্চয়ই এর আগেও কিছু একটা করেছে। সোজাসাপটা বলবে নাকি মেরে কথা বের করতে হবে?

নিরা ভয়ার্ত চোখে রাফিনের দিকে তাকালো। রাফিন বেশ রেগে আছে। একটা মিথ্যে বললে চিবিয়ে খাবে তাকে। কয়েকটা শুকনো ঢোক গিলে সবকিছু বলে দেয়। রাফিন আরো রেগে গেছে। তাও নিজের রাগ সামলে দাতে দাত চেপে জিজ্ঞেস করলো,
— আগে বলোনি কেনো? এভাবে হেরেস হচ্চিলে আমাকে জানানোর প্রয়োজন মনে হয়নি তোমার?

এবার বেশ চিল্লিয়ে বললো কথাটা। কৌশিক এলো রাফিনের রুমে। জিজ্ঞেস করলো কি হয়েছে। রাফিন সব বলতেই কৌশিকও রেগে গেলো। কৌশিক রেগে বললো,
— আগে তো যেকোনো বিষয়ে শেয়ার করতি আমার সাথে। বলতে না পারলে অস্থির হয়ে যেতি। আর আমি শুনতে না চাইলে কান টেনে ধরে চিৎকার করতি। আর এখন এতোকিছু হয়ে গেলো আমাকেও জানালি না। রাফিন বাসায় ছিলো না। আমাকে তো বলতে পারতি নাকি? খুব বেশি বড় গেছিস তুই? নিজের সবকিছুর সিদ্ধান্ত নিজেই নিচ্ছিস। কিরে কথা বল।

কৌশিকও খুব রেগে বললো কথা গুলো। নিরা মাথা নিচু করে বসে আছে। কৌশিক আবার বললো,
— তুহিনকে না মেরে তোকে মেরে হাসপাতে ভর্তি করিয়ে রাখলে ভালো হতো। তুহিনকে তো তুই সুযোগ করে দিয়েছিস। তাইতো সুযোগের সৎ ব্যবহার করলো সে। আমাদের আসতে আর দশমিনিট দেরি হলে কি হতো বুঝতে পারছিস?

রাফিনকে উদ্দেশ্য করে বললো,
— তোর হাতে ছেড়ে দিলাম। মারবি নাকি কি করবি তোর ব্যাপার। আজকে বাসায় জানলে কি একটা এলাহি কান্ড ঘটতো আল্লাহ জানে। পুরো এলাকায় আরেকবার বদনামি হতে হতো।

কথাগুলো বলেই কৌশিক রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো। রাফিন রাগে ফুসছে। কটমট করে জিজ্ঞেস করলো,
— কেনো কোনোকিছু জানাও নি আমাদের? জবাব দাও।

নিরা ভয়ে ভয়ে বললো,
— ভয় পেয়ে গেছিলাম। আর ওয়াশরুমের ঘটনার পর সব স্বাভাবিক ছিলো তাই ভেবেছি আর কিছু হবে না তাই বলিনি।

রাফিন রেগে আগুন। দরজায় স্বজোরে লাথি মেরে বেরিয়ে গেলো রুম থেকে। নিরা ভয়ে কেঁপে উঠে। এবার সে বুঝতে পারছে কতবড় ভুল করেছে কাউকে কিছু না জানিয়ে। এখন বসে বসে আপসোস করছে।

————————————————————
সকাল থেকে রাফিন বাহিরের দিকে দৌড়াদৌড়ি করছে। রাফিনের বাবা মা আসবে আজ অস্ট্রেলিয়া থেকে। তাছাড়া বাড়িতেও অনেক কাজ তাদের। বিয়ে উপলক্ষে বাড়িতে মেহমান গিজগিজ করছে। নিরা ফ্রেস হয়ে নাস্তা খেয়ে নিলো। আজকে চারদিন তাই পেট ব্যাথা নেই। তাই আনন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছে সবদিকে। ছোট চার ভাইবোনের সাথে লাফালাফি, দাপাদাপি, হৈহুল্লোরে মেতে আছে। সবার মনে খুশি বিরাজ করছে। শুধু খুশি নেই একজনের মনে।

আমাদের জীবনটাও বড় অদ্ভুদ। কারো জীবনে সুখের বন্যা হয় তো কারো জীবনে দুঃখের বন্যা। তেমনটাই হচ্ছে আজ। সারাবাড়িতে সবার মনে সুখের বন্যা বইছে শুধু কাশফির মনে দুঃখের বন্যা। সকাল থেকে একবারো বের হয়নি রুম থেকে। সবাই কাজের চাপে এতোটাই ব্যস্ত যে কাশফির দিকে কারো খেয়াল নেই।

দুপুরের দিকে সবার আগে নিরা খেয়ে দেয়ে উপরে উঠে গেছে। সেদিনের ঘটনার রেশ কেটে গেছে শুধুমাত্র রাফিনের কারণেই। রাফিন তাকে যেভাবে ট্রিট করেছে তাতে সবকিছু স্বাভাবিক হওয়ারই কথা। তেমনটাই হলো। নিরা লাফিয়ে লাফিয়ে উপরে উঠে থমকে গেলো। কাশফির ঘরের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললো,
— কাশফি আপুকে আজকে একবারো নিচে দেখলাম না। কিছু কি হয়েছে? অসুস্থ না তো?

বুকটা ধ্বক করে উঠে নিরার। তাড়াতাড়ি করে কাশফির রুমের সামনে যায়। দরজা খোলাই ছিলো। নক করার আগেই শুনতে পেলো,
— প্লিজ তূর্য ফরে এসো।

কাশফি কথাটা বলে মাথাটা বালিশে রেখে কাঁদতে শুরু করে। নিরা এটা শুনে দরজার আড়াল হয়ে লুকিয়ে পড়ে। কাশফি আনমনে আবার বললো,
— তুহিনের ভুলের শাস্তি আমরা কেন পাবো? কেনো বুঝো না কষ্ট হয় আমার।

নিরা আর একমুহূর্ত দাঁড়ালো না। নিজের রুমে এসে ধপ করে বিছানায় বসে পড়ে। নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না। নিরা মনে মনে বললো,
— কাশফি আপু তূর্য ভাইয়াকে ভালোবাসে। এটা কিভাবে সম্ভব? কখনো তো এমন কিছুই দেখলাম না। তাহলে।

নিরা ছুট লাগায় রাফিনের কাছে। কিন্তু সারা বাড়ি খুজেও রাফিনের দেখা মিললো না। অপেক্ষা ছাড়া এখন কোনো উপায় নেই। ভাবলো কৌশিকের সাথে শেয়ার করবে। কিন্তু কি এক জ্বালা। দুই প্রাণীই আজ একসাথে বাড়ি থেকে উধাও হলো।

——————————
সন্ধ্যায় ডোরবেল বাজতেই নিরা উড়ে এসে খুলে দিলো। আসলে উড়ে তো আসা যায়না। তবে বাতাসের বেগে দৌড়ে এসেছে। দরজা খুলে দেখলো একজন মহিলা এবং একজন পুরুষ দাঁড়িয়ে। নিরার মনে হচ্ছে কোথায় যেনো তাদের দেখেছে। কিন্তু চিনতে পারছে না। পেছন থেকে মিসেস তানজুম বললেন,
— আরে ভাইয়া ভাবি তোমরা বাহিরে দাঁড়িয়ে আছো কেনো ভেতরে আসো তো। এই নিরা ওদের ভেতরে নিয়ে আয়।

নিরা মাথা নাড়িয়ে ওদের ভেতরে নিয়ে আসে। নিরা মনে মনে ভাবতে লাগলো,
— এরা রাফিনের বাবা মা নয়তো?

তখনই ব্যাপারটা ক্লিয়ার হয়ে গেলো যেখন মিসেস তানজুম বললেন এরা রাফিনের বাবা মা। নিরা খুশিতে গদগদ হয়ে মনে মনে বললো,
— আমার শ্বশুর শ্বাশুড়ি। হিহি।

সবাই কথা বলছে কিন্তু নিরার নজর এখনো দরজার দিকে। সে রাফিনের জন্য অপেক্ষা করছে। অপেক্ষার পর্ব শেষ হলো যখন রাফিন ঘরে ঢুকলো। নিরা খুশি হয়ে সামনে যাওয়ার আগেই রাফিনের পেছন থেকে একটা মেয়ে বেরিয়ে এলো। সে রাফিনের হাত ধরে রেখেছে। এটা দেখে নিরা আর এগুলো না। চুপ করে নিজের জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। রাফিনের দিকে তাকিয়ে আছে একনজরে অথচ রাফিন আজ তারদিকে ফিরে তাকায়নি। খুব কষ্ট পেলো। মেয়েটাও কেমন হেসে গড়াগড়ি খেয়ে রাফিনের গায়ে ঢলে পড়ছে। যা দেখে নিরার খুব রাগ হলো। তাই তাড়াতাড়ি করে নিজের রুমে চলে এলো।
·
·
·
চলবে…………………………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here