হলদে_প্রজাপতি পর্ব-৩৫

0
212

#হলদে_প্রজাপতি
(প্রাপ্তমনস্কদের জন্য )
— অমৃতা শংকর ব্যানার্জি ©®

পঁয়ত্রিশ

( আগের অধ্যায়গুলোর লিংক অধ্যায়ের শেষে দেওয়া হল)

বাবা আমার সাথে য’বে ইন্দ্রাশিষ বাবুর সঙ্গে বিয়ের সম্বন্ধ করার ব্যাপারে কথা বলল, তারপরে একটা সপ্তাহ কেটে গেছে। এর মধ্যে বাবা মায়ের সঙ্গে কথা বলে নিয়েছে, আমি জানি । ইন্দ্রাশিষ বাবুকে নিজেই ফোন করে আমাদের বাড়িতে আসতে বলেছে গতকাল । আজকে বিকেলে উনি আসবেন বলেছেন । আমি যেহেতু সম্পূর্ণটাই জানি, আজকে আমাদের বিয়ের একটা প্রস্তাব উঠতে চলেছে, বাবা নিজে মুখে ইন্দ্রাশিষ বাবুকে তা বলবে, তাই সকাল থেকেই মনে মনে একটু টেন্স রয়েছি। সত্যি বলতে কি, গতকাল বাবা ওনাকে ফোন করার পর থেকেই সেই টেনশনটা মনের মধ্যে খচখচ করছে। কিসের টেনশন জানিনা । কোনো কারণে উনি যদি প্রপোজাল রিফিউজ করে দেন, তাতেই বা কি আমার? ওনাকে কি আমি ভালোবাসি? জীবনে কি আমার সোনুদার পরে আর কাউকে ভালোবাসা আদৌ সম্ভব ? জানিনা । তবে কিছু একটা অনুভূতি রয়েছে ওনার প্রতি । কোথাও যেন উনি স্পেশাল, সেটা আমি বুঝি । না হলে এই মানসিক চাপ হতো না। তবে কি পাতা’র কারণে হচ্ছে? পাতাকে কি আমি ভালোবেসে ফেলেছি ? সেটা সম্ভব। ওই মিষ্টি, খামখেয়ালি, দুরন্ত, মেয়েটা আজকে প্রায় দেড় বছর ধরে আমার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। ও এই মাঝের ক’দিনও এসেছে আমার বাড়িতে । প্রায় রেগুলার। যেমন আসে । আমার চা বাগান থেকে বেশকিছু শুকিয়ে ঝরে পড়া চা গাছের বীজ সংগ্রহ করে রেখেছিল । সেগুলো দিয়ে ও আর টগর দুজনে মিলে কিভাবে যেন সুতোর মালা তৈরি করেছে । ঘুঙুরের ঝুমঝুমগুলো যেমন দড়িতে বাঁধা ঝোলে, তেমনই একটু মোটা সুতো দিয়ে ঝোলানো রয়েছে বীজগুলোকে। মালার মতো । আমাকে একটা বানিয়ে দিয়েছে । মাকেও একটা দিয়েছে । এও ওদের খেলনা বাটির সংসার । ক্রিয়েটিভিটি আছে । কেন জানিনা পাতার সঙ্গে আমার সম্পর্কে কোথায় যেন একটা অদৃশ্য পর্দা পড়েছে । সেই পর্দা সরিয়ে আমি ঠিক ওকে আগের চোখে দেখতে পারিনা। কিসের যেন একটা বাধা । হয়তো বাবা যে প্রপোজালটা ইন্দ্রাশিষ বাবুকে দিতে চলেছে , তার ওপর আমার আর পাতার সম্পর্কটা নির্ভর করছে, তাই হয়ে থাকবে । এই কটা দিন যতবার পাতার মুখের দিকে তাকিয়েছি , একটাই প্রশ্ন উঠে এসেছে – ও আমার কে হয় ?

আজকে শনিবার । বাবার ফোনটা পেয়ে উনি কালকে জানিয়েছিলেন, আজকে আসতে পারবেন কিনা ঠিক নেই । তবে চেষ্টা করবেন। সারাটা দিন বেশ অস্বস্তির মধ্যে কাটানোর পর, এখন সন্ধ্যে সাতটা বেজে গেছে । আজকে তাহলে নিশ্চয়ই তিনি আর সময় করতে পারলেন না । আসবেন বলে মনে হয় না । এমনটাই ভাবছিলাম । ছাদে অস্থিরভাবে পায়চারি করছিলাম। তবুও মাঝে মাঝে চোখ দুটো রাস্তার বাঁকে চলে যাচ্ছিল, যতদূর পর্যন্ত আলোয় দেখা যায়। হঠাৎ করেই দেখলাম, পরিচিত সেই ভটভট শব্দ তুলে তাঁর স্কুটার রাস্তার বাঁক গলে বেরিয়ে এলো । মনের মধ্যে কেমন যেন হুড়মুড়িয়ে ঝড় আরম্ভ হলো । স্কুটারটাকে দাঁড় করালেন তিনি গেটের সামনে । তারপর সোজা হেঁটে গেলেন দরজার দিকে । কলিংবেলের শব্দ শুনতে পেলাম । ছাদের ওপাশটায় সরে এসে কার্নিশের উপর হেলান দিয়ে ভূতের মত দাঁড়িয়ে রইলাম । হাতের তালু দুটো চিনচিনে একটা সূক্ষ্ম ভয়ের অনুভূতিতে ঘেমে উঠছে । কতক্ষণ সময় এভাবে কেটেছে জানিনা । বেশ কিছুক্ষণ পর সিঁড়িতে পায়ের আওয়াজ পেলাম । বাবা ছাদে উঠে আসছে । এ আমার আজন্ম পরিচিত পায়ের শব্দ । ভুল হওয়ার নয় । ছাদে উঠে এসে চারিদিকে তাকিয়ে আমাকে দেখতে পেয়ে আমার দিকে এগিয়ে এলো বাবা । মুখ সেভাবে দেখতে পেলাম না , তবে বাবার গলার স্বর শান্ত।
আমাকে বলল, একবার নিচে আয় মা। ইন্দ্রাশিষ তোর সঙ্গে একটু কথা বলতে চায় ।
দুরুদুরু বুকে বাবার মুখের দিকে তাকালাম । আলো ছিল না । বিশেষ কিছু এক্সপ্রেশন বুঝতে পারলাম না ।
আমি কোনো কথা না বলে চুপচাপ নিচে নেমে যাচ্ছিলাম ।
বাবা বলল, পোশাকটা চেঞ্জ করে যাস মা। অন্য একটা সালোয়ার, কি শাড়ি ।
একটা সালোয়ারই পরেছিলাম বটে , তবে সেটা নিতান্তই আটপৌরে। হামেশাই গায়ে গলিয়ে বসে থাকি।রঙ চটে গেছে। বুঝলাম এখানে একটা কনে দেখার মতোই হচ্ছে। হঠাৎ করে নিজের অজান্তেই ঠোঁটের কোণে একটা তীর্যক হাসি ফুটে উঠল । এই বুড়ো বয়সে এসে আবার নতুন করে কনে দেখার জন্য সেজেগুজে বসতে হবে নাকি ? কিন্তু আমার মধ্যে নতুন করে আর কি দেখবেন উনি? প্রায় দেড় বছর হয়ে গেল তো এই মুখটা দেখে আসছেন। সিঁড়ি দিয়ে নেমে এসে নিজের ঘরে ঢুকলাম । ওয়ারড্রব খুলে একটা লেমন ইয়েলো সফট হ্যান্ডলুম বার করলাম । মাঝেমাঝেই শাড়ি পরি । শাড়ি পরে অফিসেও যাই। শাড়ির স্টক খুব মন্দ নেই আমার। তবে , একটা মানুষ, যে আমাকে প্রায় দেড় বছর ধরে দেখছে, আজ হঠাৎ করে তার সাথে একটা বিয়ের প্রপোজাল উঠেছে, তিনি কি বলেছেন বা কি ভাবছেন আমি জানিনা, এই অকেশানে কি শাড়ি পরা যায় সেটা একটা চিন্তার ব্যাপার। ঠিক কী রকমটা মানানসই হতে পারে এক্ষেত্রে। তবে, এই শাড়িটা আমার ভারী পছন্দের। শরীর জুড়ে পড়ে থাকে মাত্র, উপস্থিতি জানান দেওয়ার কোনো ব্যস্ততা নেই । শর্ট স্লীভ একটা নেবি ব্লু কালারের ব্লাউজের সাথে পরে ফেললাম শাড়িটা । অগোছালো চুলগুলোকে অগোছালোভাবেই ব্রাশ করে নিলাম । টিপ পরবো একটা? নাহ্ , থাক। দরকার নেই । একটা ছোট্ট লকেট ঝোলা সরু সোনার চেন পরলাম গলায় । দু কানে দুটো ছোট ছোট সোনার ট্যাপ থাকে । সেগুলোকে খুলে ছোট্ট ঝুমকো বসানো দুটো সোনার ফুল পরে নিলাম । আমার জীবনে এই অভিজ্ঞতা বেশ কিছু বার হয়েছে । পাত্রপক্ষ এসে বসে আছে , আমি সেজেগুজে গিয়ে বসেছি । কখনো তারা রিজেক্ট করে দিয়েছে, কখনো আবার তা না করলে শেষমেষ আমি করেছি । আজকে ঠিক কনে দেখা নয়, আবার কোথায় যেন সিমিলারিটি রয়েছে। জানিনা । সব এলোমেলো । জীবনটাই কি খুব কিছু গোছানো ছিল আমার কোনদিনই ? তা নয় । একবার আয়নার দিকে তাকিয়ে নিয়ে হালকা একটা লিপস্টিক অল্প ছোঁয়ালাম ঠোঁটে ।
ঠোঁটদুটো ঘষে নিয়ে নিজের প্রতিবিম্বের দিকে তাকিয়ে বললাম , মন্দ লাগছে না তরু তোকে । তুই যেমন, তোকে তেমনই লাগছে। তার চেয়ে খারাপ লাগেনি।

বারান্দার লাগোয়া সামনের দিকের ঘরটায় বসেছিলেন তিনি । ঘরে ঢোকার সময় অল্প দুলুনি অনুভব করলাম বৈকি। একঝলক লক্ষ্য করলাম , হালকা লেমন ইয়েলো কালারেরই চেককাটা একটি শার্ট পরেছেন তিনি। অদ্ভুত কান্ড ! আজকে আমাদের দুজনের ড্রেসের কালার কিভাবে ম্যাচিং হয়ে গেল ! এক ঝলক তাকিয়ে নিয়ে চোখ সরিয়ে আমি সামনের চেয়ারে গিয়ে বসলাম । ঘরে আর কেউ নেই । বুঝলাম , তিনি আলতো চোখে আমাকে দেখছেন। ময়ূরের পালকের মতো রংবেরঙের দৃষ্টি। সেই দৃষ্টির সামনে ছাতিম ফুলের গন্ধ মাখা লজ্জা ঘিরে ধরে । এ সেই দৃষ্টি , যা দেখে বোঝা যায় , যেকোন নারী বুঝতে পারে, সামনের পুরুষটি তাকে পছন্দ করছে । এপ্রিশিয়েট করছে । বুঝলাম , অন্যদিনের থেকে আজকে আমার এই সাজ-পোশাকের পারিপাট্য তাঁর নজর এড়ায়নি। কয়েক সেকেন্ড আমরা দুজনেই চুপ করে রইলাম ।
তারপরে তিনি অল্প একটু গলা খাঁকারি দিয়ে বললেন ,
— বেশ লাগছে আপনাকে । বেশ অন্যরকম ।
আমি কি বলবো বুঝতে না পেরে তাঁর দিকে তাকিয়ে শুধু অল্প হাসলাম।
তিনি বললেন, কিছু কথা ছিল আপনার সাথে । এখানেই বলবেন, নাকি অন্য কোথাও ? আপনি চাইলে ছাদে যাওয়া যেতে পারে ।
আমি তাঁর দিকে সরাসরি না তাকিয়েই বললাম , বেশ তো ! ছাদে চলুন ।
— আসুন তবে ।
উঠে দাঁড়ালেন তিনি ।
আমিও নিঃশব্দে উঠে দাঁড়ালাম।

ছাদে এলাম দুজনে । বাংলোর সামনের দিকে যেখানে আলো রয়েছে , সেই দিকটায় কার্নিশে ঠেস দিয়ে দুজনে দাঁড়ালাম । এই ধরনের কথাবার্তার ক্ষেত্রে কথার থেকে মুখ দেখা বেশি প্রয়োজন । ফেসিয়াল এক্সপ্রেশনস মিস করলে চলে না। তিনি প্যান্টের পকেটে হাত চালান করে আমার দিকে ফিরে দাঁড়ালেন ।
কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে মুখ তুলে সরাসরি আমার মুখের দিকে তাকিয়ে একবার গলা ঝাড়া দিয়ে বললেন আজকে,
— আপনার বাবা আমাকে একটি বিশেষ প্রস্তাব করেছেন । আপনি জানেন সে ব্যাপারে কিছু ?
অস্বীকার করতে পারলেই ভালো হতো । কিন্তু মিথ্যে কথা বলা আমার ধাতে সয় না ।
খুব আস্তে বললাম , হ্যাঁ জানি ।
— আমিও তেমনটাই অনুমান করেছিলাম । ওনার মতো মানুষ মেয়ের মত ভাল করে জেনে তবেই আমায় প্রপোজাল দেবেন । সেটা আমার আগেই মনে হয়েছে।
আরো কিছু বলতে গিয়ে উনি চুপ করে গেলেন।
তারপর বললেন, দেখুন আমরা দুজন যাতে এখন স্বচ্ছন্দভাবে এই ব্যাপারে খোলামেলা কথা বলতে পারি সেজন্য আমার মনে হয় কথাটা প্রথম থেকেই হলে ভালো হয় । আপনি যদিও জানেন, তবুও বলি , আপনার বাবা আজকে আমাকে, আপনার সঙ্গে একটা ম্যারেজ প্রপোজাল এনেছেন । আপনি বললেন আপনি জানতেন সেটা । অর্থাৎ আমি কি এটা ধরে নিতে পারি যে, আপনার কাছে গ্রিন সিগন্যাল পাওয়ার পরেই উনি আমাকে জানিয়েছেন ?
কি বলবো ঠিক বুঝতে পারলাম না ।
অল্পক্ষণ চুপ করে থেকে বললাম , আমার যদি অমত থাকতো, তাহলে বাবা এই প্রপোজাল আনতো না ।
তিনি চুপ করে শুনলেন । আমি বুঝতে পারলাম ওনার মুখটা আমার কথা শুনে উজ্জ্বল হয়ে উঠল। তিনি অল্প একটু কাছে সরে এলেন আমার । বাঁ হাতটা ছাদের কার্নিশের ওপর রেখে মুখটা অল্প ঝুঁকিয়ে আমার মুখের দিকে আগ্রহভরে তাকিয়ে বললেন ,
— তরুশী, আপনার .. মানে আমি বলতে চাইছি, অমত না থাকা, আর ইচ্ছা বা আগ্রহ থাকা এক জিনিস নয় । আপনার কি এব্যাপারে আগ্রহ রয়েছে? মানে আপনি কি আগ্রহী ?
প্রশ্নটা শুনে কেমন যেন গুরু গুরু করে উঠলো ভেতরটা । উত্তর দেওয়া সহজ নয় ।
কোনরকমে অন্য দিকে তাকিয়ে বললাম, আগ্রহ থাকাটা কি খুব প্রয়োজন ?
— অবশ্যই । ভীষণভাবে প্রয়োজন ।
অল্পক্ষণ চুপ করে থেকে তিনি বললেন , খুব প্রয়োজন তরুশী। ভীষণ প্রয়োজন । দু’ তরফের সমপরিমাণ আগ্রহ না থাকলে কখনো একটা কনজুগাল রিলেশনশিপে ঢোকা উচিত নয়।
নিজের অজান্তেই চোখ চলে গেল তাঁর মুখের দিকে । কি ভীষণ সত্যি যে কথাটা , আমার চেয়ে বেশি ভালো আর কেউ জানেনা। একটা ব্যাপার লক্ষ্য করছিলাম আজকে তাঁর কথার মধ্যে । তিনি আজ পর্যন্ত কখনো আমার নাম ধরে ডাকেন নি। আজকেই হয়তো প্রথম ডাকলেন । তাঁর মুখে নিজের নাম শুনতে বেশ লাগছে। মনের ছোট ছোট অনুভূতিগুলো কি এভাবেই তার অস্তিত্ব জানান দেয় ?
চোখ সরিয়ে নিয়ে বললাম , আপনি বলুন তো আপনার কি যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে?
অল্প হাসলেন তিনি।
বললেন , বুঝলাম প্রশ্নটার উত্তর দেওয়া বেশ কঠিন । তাই ঘুরিয়ে আমায় করলেন ।
— কিন্তু আপনি তো উত্তর দিলেন না।
উত্তরে তিনি কিছু বললেন না । বাঁ হাতটা অল্প বাড়িয়ে কার্নিশের ওপর পড়ে থাকা আমার ডানহাতটার ওপর রাখলেন। কয়েক মুহূর্ত চুপ করে রইলেন।
তারপর বললেন , সব প্রশ্নের উত্তর কথায় দেওয়া যায় না । আরো অনেক সহজ উপায় আছে ।

ভালো লাগছে। আমার কি ভীষণ ভালো লাগছে । কতদিন পর, কত বছর পর –

একজনের অস্তিত্ব টের পাচ্ছি । ভীষণ কাছ থেকে। সেই অস্তিত্বের মধ্যে কোন তীব্রতা নেই । আশ্বাস রয়েছে। বন্ধুত্ব রয়েছে। নিজের হাতের আঙ্গুলগুলো দিয়ে তাঁর হাতের উষ্ণতাটুকু শুষে নিলাম। কয়েক সেকেন্ড হবে, তিনি হাত সরিয়ে নিয়ে একটু সরে দাঁড়ালেন ।
বললেন, একটা দুটো ব্যাপারে একটু গুছিয়ে নিতে হবে । তারপরে আমি আপনার বাবাকে জানাবো।
ঘাড় নেড়ে বললাম, আচ্ছা ।
তিনি বললেন , আমার দু’ তিনটে দিন সময় লাগবে।

কিছুটা অবাক হলাম তাঁর কথা শুনে। দু তিনটে দিন সময় লাগবে কেন ? তবে কি সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা রয়েছে ? কি জানি ! কেমন যেন খচখচ করতে লাগলো কথাটা মনের ভেতরে । কিছু বললাম না , শুধু অল্প হেলালাম ঘাড়টা ,
— বেশ !
কিছুক্ষণ দুজনেই চুপ করে রইলাম । বুঝলাম তিনি একদৃষ্টে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন । যেন কিছু খুঁজছেন।
কিছুক্ষণ পর বললাম , তাহলে তো কথা হল । এবার নিচে আসুন তাহলে । বাবাকে যা বলার বলে দিন।
— হ্যাঁ আমি তাঁকে জানাব , আমার দুটো দিন সময় লাগবে ।
— বেশ ।
দু’পা এগিয়ে গেলেন তিনি সিঁড়ির দিকে। তারপরে কি মনে হতে থমকে দাঁড়িয়ে আমার দিকে ফিরে বললেন ,
— আমার সাথে বিয়ে হলে তুমি সুখে থাকতে পারবে তো , তরুশী? আমি একটু খামখেয়ালী। ঠিক সংসারী নই । দেখেছো তো । কয়েক বছর পর হাঁপিয়ে উঠবে না তো ? তখন মনে হবে না তো, আমায় বিয়ে করার ডিসিশনটা ভুল ছিলো?
আগ্রহভরে তাকিয়ে রইলেন তিনি আমার মুখের দিকে উত্তরের আশায় ।
আমি বললাম, জীবন আমিও কম দেখিনি। হয়তো আপনার থেকে মাত্র দু তিন বছরের কম সময় ধরে দেখছি এই পৃথিবীটাকে । আজকে আর এতদিন পরে আলটিমেটলি যদি বিয়ে করি, তবে তখন আর সুখের আশায় নয় , একটু শান্তির আশায় করবো। অল্প একটু ভরসা চাই মাত্র । একজন মানুষ থাকবে আমার পাশে বন্ধুর মতো আজীবন । ব্যাস এটুকুই । আমার সুখ চাইনা , শান্তি চাই ।

আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে চোখ দুটো তাঁর উজ্জ্বল হয়ে উঠল । ধীরে ধীরে সিঁড়ি বেয়ে নেমে গেলেন তিনি। আমি দাঁড়িয়ে রইলাম ছাদের কার্নিশ ধরে । ভালো লাগছে । খুব ভালো লাগছে । এতো ভালো শেষ কবে লেগেছিল মনে নেই –
শুধু সেই খচখচানিটা , দু’ তিনটে দিন সময় লাগবে-
কিন্তু, কেন –

ক্রমশ..

©®copyright protected

এক-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/978775899579141/

দুই-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/980083989448332/

তিন-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/981378992652165/

চার-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/983543179102413/

পাঁচ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/986002805523117/

ছয়-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/987404668716264/

সাত-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/989485091841555/

আট-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/991102821679782/

নয়-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/993099491480115/

দশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/994279738028757/

এগারো-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/995634347893296/

বারো-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/998832147573516/

তেরো-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1000733104050087/

চোদ্দো-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1002718000518264/

পনেরো-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1004549847001746/

ষোল-

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1007202950069769&id=248680819255323
সতেরো-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1009015169888547/

আঠারো-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1011129543010443/

উনিশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1013312572792140/

কুড়ি-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1015118655944865/

একুশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1017814589008605/

বাইশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1019125995544131/

তেইশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1021798458610218/

চব্বিশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1024967944959936/

পঁচিশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1031476470975750/

ছাব্বিশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1034632350660162/

সাতাশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1038754843581246/

আঠাশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1046967802759950/

উনত্রিশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1048831039240293/

ত্রিশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1051696202287110/

একত্রিশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1053606998762697/

বত্রিশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1060747584715305/

তেত্রিশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1064517157671681/

চৌত্রিশ-
https://www.facebook.com/248680819255323/posts/1073169890139741/

ছবি : সংগৃহীত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here