স্পন্দনের শুভ্রতা,পর্ব:৫

0
2801

কিছুক্ষণ আগে ঘটে যাওয়া কাহিনী নিয়ে ভীষণ অবাক শুভ্রতা। এই গরমে এখনও সে থরথর করে কাঁপছে। ঠোঁটজোড়া ভিজিয়ে কিছুক্ষণ আগে ঘটে যাওয়া মুহূর্তটা ভুলে যাওয়ার বৃথা চেষ্টা করছে কিন্তু কিছুতেই পারছে না। কি হয়ে গেলো তার সাথে? মনে হলেই বুকটা বারবার কেঁপে উঠছে তার। শ্বাস বন্ধ হবার উপক্রম। এখনও নিজের ডান হাতের দিকে শান্ত চোখে তাকিয়ে থাকলেও বিস্ময়ের অভাব নেই। তার ইচ্ছা করছে কান্না করতে। যে সে ধরনের কান্না নয়, আকাশ মাটি কাঁপিয়ে তোলার মত কান্না। যাকে বলে ভয়ানক কান্না। ধীরে ধীরে ধীর গতিতে বৃদ্ধ পেতে লাগলো কান্না। অবশেষে কান্নার ক্রোশ দূর থেকে দূরে পৌঁছানোর জন্য চিৎকার করে উঠলো সে।

শুভ্রতার রুম থেকে চিৎকারের শব্দ শোনে দৌঁড়ে রুমে আসলেন শুভ্রতার মা এবং বড়মা অর্থাৎ স্পন্দনের মা। বাড়ির বড় মেয়েকে ফ্লোরে হাত পা ছড়িয়ে রাখতে দেখে কিঞ্চিৎ অবাক হলেন। কিন্তু যখন রুমের চারপাশে চোখ বুলালেন তারা, তখনই তাদের চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল। পুরো রুম জোরে তোলার বসবাস। ফ্যানের বাতাসে তুলোগুলো উড়াউড়ি শুরু করে দিয়েছে। টেডির উপরের অংশ কেটে কুচিকুচি করে ফ্লোরে ছড়িয়ে রেখেছে। শুভ্রতার বড়মা চোখ দুটো বড় বড় করে ফেললেন রুমের অবস্থা দেখে। অস্বাভাবিক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন শুভ্রতার দিকে। এই মেয়ের পক্ষে যে এই অঘটন করা কিছুতেই সম্ভব নয় ভালো করেই জানেন উনি তাহলে কে করেছে এই কাজ? ভাবতে ভাবতেই প্রশ্ন ছুঁড়ে মারলেন উনি,

–” শুভ্রু মা? এইসব কিভাবে হলো? কে করেছে?”

বড় মায়ের আহ্লাদী কণ্ঠে শুভ্রতার কান্না এইবার আকাশ ছুঁয়ে দিলো। চিল্লিয়ে কাটকাট গলায় বলতে লাগলো,

–” স্পন্দন ভাইয়া আমার পুচুকে খুন করেছে বড়মা। তোমার ছেলেকে আমি এক্ষুনি খুনের অভিযোগে থানায় পাঠাবো। দেখো আমার পুচুর নিথর তুলো এবং উপরের অংশটা ছিন্ন ভিন্ন হয়ে আছে। আমি এইভাবে ওকে আর দেখতে পাচ্ছি না বড়মা।”

শুভ্রতার এমন ভয়ানক কথাবার্তা শোনে ভীষণ বিরক্ত হলেন শুভ্রতার মা। উনার মতে, স্পন্দন একদম ঠিক করেছে। এই টেডি পাওয়ার পর থেকেই শুভ্রতা চেঞ্জ হয়ে গেছে। সকালে খাবার খাবে পুচুকে খুলে নিয়ে, পুচুর মুখে খাবার তুলে দিবে, ওয়াসরুমে গেলেও এইটাকে নিয়ে যাবে, ঘুমাতে গেলেও সাথে নিবে, টিভি দেখতে বসলেও জিজ্ঞাসা করবে, পুচু এইটা দেখবি? অর্থাৎ চব্বিশ ঘণ্টা সে পুচু নামক টেডি নিয়ে পরে থাকে। অন্য কারো প্রতি তার কোনো হুস নেই। মানুষ যদি তার সামনে মরেও যায় সে বলতে পারবে না। পুচুকে নিয়ে বাসার সবাই ভীষণ বিরক্ত। খেলবে ভালো কথা কিন্তু ওভার টেক করার কি আছে? অতঃপর মেয়ের পাগলমো কমবে বলে শুভ্রতার মা বেশ খুশি। স্পন্দনকে নিজের হাতে আজ সিঙ্গারা বানিয়ে খাওয়াবেন বলে ঠিক করেছেন উনি।

শুভ্রতা বড়মা এবং মায়ের মুখের দিকে তাকালো। তাদের মনে কি চলছে বুঝতে না পেরে এইবার জোরে চিৎকার করে বলতে লাগলো,

–” ওরে আমার পুচু রে, তোর কি হয়ে গেল রে, তোর এই মা তোকে ছাড়া কিভাবে থাকবে রে, ওরে আমার সাত রাজার মানিক রে, তুই কেন আমাকে রেখে চলে গেলি রে, তোর দেহের সতেজ তুলোগুলো আমার চোখের সামনে উড়াউড়ি করছে রে, তোর সুন্দর মুখের আদলটা এখনো আমার সামনে পরে আছে রে, তোকে যে খুন করছে তাকে আমি পুলিশে দিবো, আমার পুচুরে। আমি এক্ষুনি থানায় গিয়ে মার্ডারের জিডি করবো রে, আমার এত বড় ক্ষতি যে করছে তাকে আমি শান্তিতে থাকতে দিবো না রে পুচুউউউউউউউ।”

শুভ্রতার মা এইবার রেগে গিয়ে থাপ্পড় বসালেন মেয়ের গালে, রক্তিম চোখে এবং কঠিন কণ্ঠে বলে উঠলেন,

–” স্পন্দন ঠিক করেছে। পুতুল কি আর কোনো মানুষের নেই? পৃথিবীতে কি তোর একাই আছে পুতুল? আদিখ্যেতা করার একটা লিমিট আছে আর তুই সেই লিমিট ক্রস করে ফেলেছিস। আমি তো ভেবে ভেবে পাগল হয়ে যাচ্ছিলাম তুই এই পুতুল নিয়ে থাকতে থাকতে কোনদিন না কোনদিন পাগল হয়ে যাস ভাগ্যিস স্পন্দন বাঁচিয়েছে আমাদের। আর কান্না করবি ভালো কথা, কিসব ‘রে’ ‘রে’ করছিস। এখন কী কান্না কীভাবে করতে শিখাতে হবে নাকি? গুগোল সার্চ দিয়ে দেখ কীভাবে কান্না করতে হয়।”

রাগে, দুঃখে, কষ্টে, মর্মাহত শুভ্রতা। একদিকে স্পন্দন তার পুচুকে হত্যা করেছে অন্যদিকে তার মা তাকে অপমান করতেছে। রাগের বশে এখন নিজের মাথার চুল নিজেই ছিঁড়তে লাগলো সে। স্পন্দনের মা মুচকি হেসে শুভ্রতার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,

–” চিন্তা করিস না আজ ওই ছেলের বিচার আমি করবো। আমাদের চোখের মণিকে কাঁদিয়েছে না দেখিস আজ ওর কি অবস্থা করি।”

বড় মায়ের কথা শোনে কলিজা ঠান্ডা হলো তার। বড় মাকে জড়িয়ে ধরে নাক টেনে বলতে লাগলো,

–” তুমিই আমার আসল মা। এই কারণেই আমাকে বুঝো আর উনি হচ্ছেন আমার চাচী। এখন থেকে উনাকে চাচী ডাকবো হুহহ।”

গরম চোখের কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলেন মেয়ের দিকে। কিছু বলতে যাবে তখনই স্পন্দনের মা থামিয়ে দিয়ে ইশারা করে বুঝালো। শুভ্রতার মা রুম থেকে বের হয়ে গেলেন তার সাথে স্পন্দনের মা-ও ।

দরজা জানালা বন্ধ করে রুমের এক কোণে বসে আছে শুভ্রতা। এই পুচুকে স্পন্দন কিনে এনেছিল। দিনটি ছিল সোমবার। শুভ্রতার এক বান্ধবী অনেক বড় টেডি কিনে ভিডিও কলে শুভ্রতাকে দেখায়। সেই থেকে শুভ্রতার মন খারাপ। বহু কষ্টে শুভ্রতার মন খারাপের কারণ জেনে নীল রঙের টেডি কিনে আনে স্পন্দন। সেই থেকে শুরু হয় শুভ্রতার বাচ্চামো। সারাদিন অবহেলা নামক শব্দ দ্বারা স্পন্দনকে দেখেও না দেখার ভান করে। স্পন্দন ডাকলেও হুম হুম করে। কথা বলতে চাইলে শুধু পুচুর কথাই বলে সে। অবহেলা নামক শব্দটি স্পন্দনের সহ্য হয় না আর সেটা যদি শুভ্রতা হয় তাহলে তো আরো না। তাই বাধ্য হয়েই সকালে শুভ্রতার রুমে আসে ভালো করে বুঝাতে। একটা জিনিষ নিয়ে মাতামাতি করার এত দরকার নেই কিন্তু কে শোনে কার কথা। শুভ্রতা সেই একই কাজটি করে যার ফলে বাধ্য হয়েই পুচুর দেহ ছিন্ন ভিন্ন করে শুভ্রতার গালে চড় বসিয়ে রাগে রুম থেকে বের হয়ে যায়।

এগারোটা বাজে, বন্ধুদের সাথে আড্ডায় মত্ত স্পন্দন। মিরাজ হাতে সিগারেট নিয়ে আয়েশ করে বসে স্পন্দন, সিয়াম এবং নিবিড়কে মজার ছলে বলতে লাগলো,

–” আমি, সাগর, আবির, মাহমুদ চারজন বিয়ে শাদী করে বাচ্চার বাপ হয়ে গেছি দুইজন, আর সাগর আবিরের প্ল্যান চলছে কিন্তু তোরা তিনজন এই জীবনে কি করলি? নিবিড় তো তাও দশ বারোটা প্রেম করে সিয়াম তো রূপার প্রেমে মগ্ন বিয়ে করবে করবে বলে করা হচ্ছে না কিন্তু স্পন্দন তুই কী আজীবন জাতির চাচা মামা হয়ে থাকতে চাস? এই জীবনে প্রেমের ‘প’ শব্দটা তোর মাঝে খোঁজে পেলাম না।”

মিরাজের কথায় সবাই হেসে উঠলো। স্পন্দন তখন পা সোজা করে মিরাজের কাঁধে হাত রেখে শার্টের কলার ঠিক করে ভাব নিয়ে বলতে লাগলো,

–” তোদের এই একটাই সমস্যা। প্রেম করবি বিয়ে করবি তাও কিনা জাতির মানুষকে জানিয়ে। জানিস আড়ালে আবডালে প্রিয়তার সাথে প্রেম করার মজা কীরকম? তাছাড়া এত তাড়া কিসের? বাচ্চা বউটাকে বড় করে তোলার দায়িত্ব নিয়েছি যেদিনই বড় হবে সোজা কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ে করে, দুই মাসের মাথায় তোদের চাচা বানিয়ে এক বছর হলে তোদের কোলে তোলে দিবো তোদের ভাতিজাকে। জোস না আইডিয়াটা?”

স্পন্দনের কথা শোনে আবারো সবাই মেতে উঠলো হাসিতে। ভ্রু জোড়া কুঁচকে সন্দিহান নজরে আবির বলে উঠলো,

–” তো, তোর বাচ্চা বউটা কে? সেই কলেজ লাইফ থেকে শুনে আসছি কিন্তু তাহার নাম কিংবা পরিচয় আজও বললি না। বাচ্চা বউটা কি আবার একেবারে বাচ্চা নাকি রে? নাকি এখনও তোর শাশুড়ি আম্মার পেটে হামাগুড়ি দিচ্ছে।”

রাগী চোখে তাকালো স্পন্দন। আবির ভয়ে ঢোক গিলে হাসির রেখা টেনে বলল,

–” মজা করছি প্লিজ রাগ করিস না।”

স্পন্দন মুখে দুষ্টু হাসি দিয়ে নিজের শার্টের হাতা উপরে তোলে চুলগুলো উড়িয়ে নিরুপায় কণ্ঠে বলল,

–” আর বলিস না। বাচ্চা বউ আমার উনিশ বছর আগেই পৃথিবীতে চলে এসেছে কিন্তু এখনও বড় হচ্ছে না। হাতে ধরে বড় করতে হচ্ছে আমাকে। যেদিন দেখবো সত্যিই বড় হয়ে গেছে তখন যা করবো আগেই বলে দিয়েছি গাইস।”

মাহমুদ উৎসাহ নিয়ে বলল,

–” তো বাচ্চা ভাবীর নাম কি রে?”

–” আমার বাচ্চা বউ। বিয়ের পর যেদিন তোদের আমার বাচ্চার মুখ দেখাবো সেদিনই বাচ্চা বউয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দিব। এর আগে কিন্তু নয়। সারপ্রাইজ বুঝেছিস গর্দভ?”

স্পন্দনের কথা শোনে বাকিরা হতাশ হলো। হতাশ হওয়ার মাঝেই সাগর উঠে দাঁড়ালো। বাকি সবার দৃষ্টি সাগরের উপর। সাগর মুখে হাসি নিয়ে বলতে লাগলো,

–” তোরা তো জানিস তোয়া তিন মাসের প্রেগনেট। ভাবতেছি আজকে ওকে সারপ্রাইজ দিবো। সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য তো কোনো কারণ হয় না। কারণে অকারণে সারপ্রাইজ দেওয়া যায়। তোরা বরং কথা বল আমি আসছি।”

সাগরের সাথে মিরাজও উঠে দাঁড়ালো। সিয়াম তখন মজা করে বলল,

–” সাগরের সাথে সাথে তুইও কী সারপ্রাইজ দিবি নাকি মিরাজ? ”

মিরাজ তখন ভয় মাখা কন্ঠে বলল,

–” আসার আগে বউ বাজারের লিস্ট আর বাচ্চার খাবারের লিস্ট ধরিয়ে দিয়েছিল। একদম মনে ছিল না। আজ বাসায় ফিরলে আল্লাহ জানে বাসার ভিতরে জায়গা হয় কিনা।”

মিরাজের কথা শোনে নিবিড় ভয়ানক সুরে তাল মিলিয়ে বলল,

–” তাহলে বিয়ে করার চেয়ে সারাজীবন প্রেমই করবো মামারা। বিয়ে করে বউয়ের ভয়ে আঁতকে থাকতে পারবো না। ”

আবির তখন নিজের মাথার চুল টেনে টেনে বাকিদের উদ্দেশ্য চোখ টিপ দিয়ে বলল,

— বিয়ে অর্থাৎ দিল্লিকা লাড্ডু যো খায়া সো পস্তায়া, যো ন-খায়া সো ভি পস্তায়া । তাই খেয়ে পস্তানো বেটার। হাজার হোক মিষ্টি মিষ্টি ভাব আছে।”

মিরাজ এবং সাগর চলে গেলো। বাকিরা ঘণ্টা খানেক আড্ডা দিয়ে যার যার নীড়ে ফেরার পথে পা বাড়ালো।

দুপুরের রোদে চারপাশ যেন খাঁ খাঁ করছে প্রচণ্ড রোদের উত্তাপে , একরাশ রাগ নিয়ে তাকালো আকাশের দিকে স্পন্দন। সূর্যের তেজ যেন আজ স্পন্দনকে শেষ করে দিবে বলেই ঠিক করেছে। সূর্যের তেজকে শুভ্রতার রাগ হিসেবে ধরলো স্পন্দন। মেয়েটা তার উপর এমনভাবেই রেগে আছে। শুভ্রতার রাগী চোখজোড়া নিমিষেই ধ্বংস করে দিবে স্পন্দনকে। আচমকাই হেসে উঠলো স্পন্দন।

ঘামে ভেজা শার্ট ড্রয়িং রুমে ঢুকেই খোলে ফেলল স্পন্দন। এক গ্লাস ঠান্ডা পানি এক নিমিষেই শেষ করে এদিক ওদিক তাকালো সে। বাসা আজকে পুরাই নিস্তেজ। কেউ কী বাসায় নেই। শুভ্রতার রুমের দিকে উঁকি দিতেই শুভ্রা এসে চোখ পাকিয়ে রাগী গলায় বলল,

–” ভাইয়া তুমি পঁচা। জানো আমি আপু আজ সারাদিন কিছু খায়নি। আপুর টেডিকে খুন করে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ভুল করেছো তুমি। তোমাকে থানায় পাঠানো উচিৎ। ভাবছি বড় হয়ে উকিল হবো। তাহলে তোমার শাস্তি হবে চোদ্দ বছরের। ”

স্পন্দন হাসলো। শুভ্রার কান ধরে টেনে ধমক দিয়ে বলল,

–” এইখান থেকে যা। তোর বোনের ব্যাবস্থা আমি করছি।”

শুভ্রা চলে গেলো। দরজায় দাঁড়িয়ে কয়েকবার ডাকলো। ওপাশ থেকে টু শব্দ না আসায় ছোট্ট করে নিঃশ্বাস ছেড়ে মৃদু স্বরে বলল,

–” শুভ্রু, এই শুভ্রু। আমার শরীরটা খুব খারাপ লাগছে মনে হয় বেশিদিন বাঁচবো না।”

কথাটা বলার পর পরই শুভ্রতা দরজা খোলে উল্টো দিকে ঘুরে তাকালো। স্পন্দন দরজা বন্ধ করে শুভ্রতার কাঁধে হাত রাখতেই দূরে চলে গেলো শুভ্রতা।

–” রেগে আছিস?”

–” নাহ খুশিতে বিমান চালাচ্ছি।”

–” তুই পাইলট কবে হয়ে গেলি? অবশ্যই তিতলি সিরিয়াল দেখে তাই না?”

–” একদম বাজে বকবে না।”

–” মন খারাপ?”

–” নাহ মনে আজ খুশির বর্ষণ।”

হঠাৎ স্পন্দন শুভ্রতার কোমড়ে হাত রাখলো। চোখ বন্ধ করে রাখলো শুভ্রতা। শুভ্রতা খেয়াল করলো তার কোমড়ে কিছু একটা পড়াচ্ছে স্পন্দন। চোখ মেলে তাকিয়ে রূপালী রঙের বিছা দেখে চমকে উঠলো। শুভ্রতাকে সামনে ঘুরিয়ে লাল,সাদা মিক্সড করা চুড়ি পরিয়ে দিয়ে সুন্দর এক পুতুল সামনে ধরে নেশালো কণ্ঠে বলল,

–” তুই কেন বুঝিস না তোর অবহেলা আমার সহ্য হয় না। পুচুকে এত কেয়ার রাখতে রাখতে আমাকে যে দূরে সরিয়ে রেখেছিস ভেবেছিস একবার? কত কথা জমে রেখেছিলাম কিন্তু তোর তো সময় নেই। আমি গিফট করেছি ভালো কথা, সীমিতর ব্যাপারে সবকিছুই থাকা ভালো। এখন তোর হাতে মিনিকে তোলে দিচ্ছি খবরদার অতিরিক্ত করবি না। পরে এইটাকেও খুন করব।”

শুভ্রতা খুশি হয়ে পুতুলটা কেড়ে নিলো। স্পন্দন শুভ্রতার হাসি মুখটা দেখে শুভ্রতার কপালে চুমু খেয়ে আলতো হাতে জড়িয়ে ধরে বলল,

–” সরি শুভ্রু। খুব ভালোবাসি তো তাই সহ্য হয় না স্পন্দনের শুভ্রতা অন্য কাউকে বেশি গুরত্ব দেওয়া দেখে। আমি চাই সব সময় তুই আমাকে গুরত্ব দিবি।”

শুভ্রতা লজ্জায় মাথা নিচু করে স্পন্দনের বুকে লুটিয়ে পড়লো।

–” ইস ঘামের দুর্গন্ধ পাচ্ছিস না তুই? ওয়াক সরে দাঁড়া।”

–” উহু। তোমার গায়ে সুন্দর একটা পারফিউমের ঘ্রাণ আছে। আচ্ছা এই ঘ্রাণটা কি শুধু আমার নাকেই আসে। একবার শুভ্রাকে জিজ্ঞাসা করছিলাম সেদিন শুভ্রা বলল সে পায় না। তাহলে আমি কেন পাই?”

–” তুই যে স্পন্দন নামক মানুষটির অর্ধাঙ্গিনী সেই কারণেই। ‘হুমায়ূন আহমেদ ‘ স্যার ঠিকই বলেছেন, ভালোবাসা-বাসির জন্যে অনন্তকালের প্রয়োজন নেই, একটি মুহূর্তই যথেষ্ট।”

সমাপ্ত

#স্পন্দনের_শুভ্রতা_৫
#ফারজানা_আফরোজ
#অনুগল্প

বানান ভুল ক্রুটি ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের গল্পটা খাপছাড়া লাগছে তবুও দিলাম।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here