#সোহাগী
#পর্ব:২
Lutful mehijabin (লেখা)
— এই আদরীনি দাঁড়া তো।
কন্ঠস্বর শুনে লোকটাকে চিনতে এক মুহুর্ত ও অতিবাহিত হলো না সোহাগীর। বার দুয়েক নিঃশ্বাস গ্রহণ করে পিছন ফিরে ঘুরলো। সামনে থাকা ব্যক্তির দিকে ভীতি ভঙ্গিতে তাকিয়ে কাঁপা গলায় বলে উঠলো,
— জাফর ভাই আমার হাত ছেড়ে দেন। আমি বাড়ি যাবো।
সোহাগীর কথার প্রেক্ষিতে অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো জাফর। হাতের বাঁধন ছেড়ে ঠোঁটের কোণে তীর্যক হাসির রেখা টেনে বললো,
— এই ভর সন্ধ্যায় এইখানে কি করতেছিস? কোন পোলার সাথে এইহানে আইছিস?
— জাফর ভাই আমি বাড়ি যাই।
— দাঁড়া কইতেছি। বড় হইছাস এখন। এই বয়সে এমনে ঘুইরা বেড়াইতে নাই আদরীনি। পরে কোনো ছেমরা তোরে বিয়া করতে চাইবো না। বুঝছাস? আর এইখানে আইবি না। আমি তোর ভালো চাই তাই কইতেছি।
জাফরের কথাগুলো শ্রবণ করার মতো বোকামি করে নি সোহাগী। ছাড়া পেয়ে এক মুহুর্তের জন্যও অপেক্ষা করলো না। ভোউ দৌড় দিয়ে ছুটতে লাগলো বাড়ির উদ্দেশ্যে। তাদের গ্রামের উত্তর দিকে জাফরের মুদির দোকান। এই জাফর লোকটা কে মোটেও পছন্দ হয় না তার। দেখা হলেই অদ্ভুত ভাবে কথা বলে তার সঙ্গে। পয়সার গরম দেখিয়ে ইতোমধ্যে তার মায়ের সাথে বেশ ভাব জমিয়ে ফেলেছে এই লোক।
__________
বাড়ির সামনে এসে ঠাই দাঁড়িয়ে পড়লো সোহাগী। ভেতরে ঢোকার সাহস পেলো না। মাগরিবের আযানের ধ্বনি কানে যেতেই বুকের ভেতর ধ্বক করে উঠলো। টিনের গেইটের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে, জিহ্বা দ্বারা ঠোঁট জোড়া ভিজিয়ে ধীরে পা বাড়িয়ে টিনের গেইটের উপর হাত রাখলো। স্বল্প ভর দিয়ে ধাক্কা দিতে মৃদু স্বরে আওয়াজ বের হলো। বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে গেইট খোলা রেখে পা টিপে টিপে কলপাড়ের উদ্দেশ্য পা চালালো সে। কলপাড়ে এসে ব্যাগ কাঁধে ঝুলিয়ে রাখা অবস্থায়, কল চেপে হাত মুখ ধুয়ে নিলো। অতঃপর কলপাড় থেকে বেরিয়ে জল সিক্ত হাত মুখ মুছতে ওড়নার আঁচল উঁচু করতে তার দৃশ্যমান হলো কোন এক ছায়ামানবী কে! মুহুর্তেই সোহাগীর ডান গালে কেউ ঠা’স করে থা’প্পড় বসিয়ে দিলো। গালে হাত দিয়ে মাথা উঁচু করতেই তার দৃশ্যমান হলো অগ্নিমূর্তি ধারণকৃত মানবী কে। ঝাঁপসা, অস্ফুট আলোতে মাকে চিনতে মোটেও তার অসুবিধা হলো না। সোহানা গরম চাহনি নিক্ষেপ করে কাঁপছে! অতিরিক্ত রাগলে সোহানা কাঁপতে আরম্ভ করে।
— এই মাইয়া! এতোক্ষণ কার লগে কেলেংকারি করতে ছিলি?
আকস্মিক সোহানার চিৎকার শুনে কেঁপে উঠলো সোহাগী। তার মুখ দিয়ে টু শব্দ ও নির্গত হলো না। মাথা নিচু করে গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো।
সোহাগীর উত্তর না পেয়ে দ্বিগুণ ক্ষেপে গেলেন সোহানা। রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে আচমকা সোহাগীর চুলের মুঠি শক্ত করে চেপে ধরলেন। দাঁতে দাঁত চেপে আহ শব্দ করে উঠলো সোহাগী। ছোট মেয়েটার যন্ত্রনা সোহানার পাষাণ হৃদয় কোমল করতে ব্যর্থ! সে শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে চুল ঝাঁকিয়ে ফির কর্কশ গলায় বলেন,
— বল কোথায় গেছিলি? সেই বিয়ান বেলা বাইর হয়ছিস স্কুলে যাওয়ার জন্যে! আর বাড়ি ফিরলি এই ভর সন্ধ্যায়। বিশ্বাস কর শেরি তোরে বিশ্বাস হয়না। ম’ইরা আমারে শান্তি দে।
সোহানার চিৎকার শুনে দ্রুত বের হয়ে এলো আমেনা। মেয়ের হিংস্রতা দেখে খানিকক্ষণ চুপ করে রইলেন।
— এই মাইয়া আমার অন্ন ফুরাইয়া তোর হয় না? এখন আমার মানসম্মান ধুলাই মিশাইতে চাইছিস? বল কোথায় গেছিলি? তোর জন্য তোর বাপ কতো কষ্ট করে দেখছিস? লোকটা তোর জন্যে অসুখ নিয়া গঞ্জে গেছে।
সোহাগী নিরবে চোখের জল ফেলতে লাগলো। আমেনা দ্রুত এসে সোহানা কে ছাড়িয়ে সোহাগী কে আগলে ধরলো বুকের সাথে। নানীর ছোঁয়া পেয়ে হাউমাউ করে কেঁদে ফেললো সোহাগী। আমেনা সোহাগীর মাথায় হাত রেখে বলে উঠেন,
— কাদিস না সোনা। চল ঘরে চল। তোর আব্বা আইসা তোরে কানতে দেখলে কষ্ট পাইবো।
সোহানা আমেনার মুখশ্রীতে গরম চাহনি নিক্ষেপ করে কটমট করে বললেন,
— আজ এই মাইয়ার পা গজাইছে তোমাগো উস্কানি পাইয়া। সত্যি বলতেছি মা, ভালোই ভালোই ওরে আমার ঘার থেকে নামাও। আমার আর এই মাইয়ারে সহ্য হয় না। আজ থাইকা ওর খাবার আমি আর রাঁধবের পারুম না। ওরে বলো যেন বাপরে বুঝাই। আর পড়ালেখা করতে হইবো না। পড়ালেখার নামে পোলা গো লগে ডলাডলি!
হুদাই আমার পয়সা নষ্ট হইতেছে।
কথাগুলো বলেই দ্রুত ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়েন সোহানা। শব্দ করে দোর দিয়ে দেন। আমেনা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সোহাগী কে ঘরে নিয়ে এলেন। মেয়েটার মুখশ্রীতে জল চিকচিক করছে! আলনা থেকে গামছা এনে যত্ন সহকারে সোহাগীর মুখ মুছিয়ে দিলেন। সোহাগীর হাত ধরে টেনে নিয়ে চৌকি তে বসালেন। মেয়েটা নির্বাক হয়ে অশ্রু বিসর্জন দিচ্ছে! সেই সকাল থেকে সে মুখে ভাত তুলে নি! যার দরুন তার মুখশ্রী মলিন হয়ে উঠেছে।
আমেনা সোহাগী কে ঘরে রেখে রান্নাঘরে এলেন। রান্না ঘরের ছনের চালের সঙ্গে ঝুলন্ত হ্যারিকেনটা জ্বলিয়ে নিলেন। অতঃপর কাঠের তাক থেকে ধোঁয়া টিনের থালা বের করে মাটিতে রাখলেন। ভাতের হাঁড়ি থেকে ভাত বেড়ে নিলেন। তরকারির কড়াই থেকে ঢাকনা উঁচু করতেই আশাহত হলেন! সামান্য পরিমাণ আলুর ঝোল অবশিষ্ট রয়েছে। যা সোহানা রাশেদের জন্য রেখে দিয়েছে। আমেনা কে পইপই করে বলে দিয়েছে সে যেন তরকারি তে হাত না দেয়। আমেনা কড়াইয়ে ঢাকনা চেপে উঠে দাঁড়ালেন। কৌটা থেকে স্বল্প লবণ বের করে থালার এক কোণে রেখে রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে এলেন। ইতিমধ্যে চারপাশ অন্ধকারে ছেয়ে গেছে। দূর দূরান্তের বাড়ির ঘর থেকে কিঞ্চিৎ আলোকরশ্মি তাদের উঠান আলোকিত করে তুলেছে! যার ফলে অন্ধকারে কোন মতে হাঁটতে পারছেন তিনি। আমেনা ঘরে ঢোকার পূর্বে ঘরের সঙ্গে গা ঘেঁষে লাগানো মরিচ গাছ থেকে একটা মরিচ ছিঁড়ে নিলেন। এই গাছটা বছর তিনেক পূর্বে সোহাগী নিজের হাতে বপন করছে।
আমেনা ভাতের প্লেট নিয়ে সোহাগীর সামনে রাখেন। মেয়েটা এক ধ্যানে জানালার দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে চোখের জল ফেলছে।
— এ ধর সোহা ভাত খাইয়া নে। সারাদিন তো কিছু খাস নাই ।
সোহাগী সোজা হয়ে বসে ভাতের প্লেট দূরে ঠেলে দিয়ে আমেনার উদ্দেশ্যে বলে উঠলো,
— নানী আব্বা আসে নি?
সোহাগীর কথার প্রত্যুত্তরে আমেনা মলিন স্বরে বললেন,
— না আসে নাই। তুই খা। তোর বাপ মনে হয় গঞ্জে গেছে।
— না, নানী আমি খাব না। তুমি ভাত নিয়ে যাও। ভালো লাগছে না। খিদে নেই।
আমেনা সোহাগীর উত্তর পেয়ে হঠাৎ ক্রোধে ফুঁসতে লাগলেন। সোহাগীর সামনে থেকে থালা সরিয়ে নিয়ে তীক্ষ্ম স্বরে বললেন,
— তোরে দরদ দেখানো ভুল হইছে আমার। তুই সত্যিই মানুষ হবি না। বেটা ছাওয়ালদের লগে থাইকা তোর দেমাক বাইরা গেছে। সোহানা ঠিক ই কয়। তুই আমাগো মানসম্মানের শেষ রাখবি না। আমাগো কথা না হয় বাদ দে বাপের কথা চিন্তা কইরা বেটা গো সাথে মিশা বাদ দে। রফিকরা ছাওয়াল আর তুই মাইয়া মানুষ। এখন ওদের সাথে থাকবি না বুঝছিস?
সোহাগী মাথা উঁচু করে আমেনার মুখশ্রীতে ফ্যালফ্যাল করে দৃষ্টিপাত ফেললো। প্রতিবাদ স্বরে বলে উঠলো,
— কেনো নানী? কয়েক দিন আগেও তো কিছু বলতে না। এখন কি এমন হয়েছে যে ওদের সাথে মিশতে পারবো না। আঁখিও তো আমাদের দলের। কই ওকে তো কেউ কিছু বলে না।
প্রত্যুত্তরে আমেনা বেগম তীক্ষ্ম কন্ঠে বললেন,
— কয়েক দিন আগে তুই ছোট ছিলিস। আর এহন যে বড় হয়ছিস তা কী তুই বুঝোস না? আর আঁখি তোগে চেয়ে কতো ছোট দেখছিস! ও পাঁচ ক্লাসে আর তোরা আট ক্লাসে। কয় দিন পড় দেখবি ও আর ঘর থাইকা বাইর হইবো না।
সোহাগী আহত দৃষ্টিতে আমেনার মুখশ্রীতে স্থির দৃষ্টিতে চেয়ে রইলো।
— কেন নানী। ওদের সাথে মিশলে কি হবে?
আমেনা মুখ ভেংচি কেটে দোর খুলে সোহানার ঘরের উদ্দেশ্যে পা বাড়ালেন। যাওয়ার পূর্বে বললেন,
— তুই এখন গাই গতরে বড় হয়ছিস। মাইনষে তোরে গ্রেরাম ঘুরতে দেখলে কাহিনী রটাইবো। মাস খানিক ধইরা সবাই গুজব ছড়াইনা শুরু করছে। তোর নাদুসনুদুস দেহখান দেয়খা কোন মানুষের মাথা ঠিক থাকবো! আর ছেরি এইডা গ্রেরাম। গ্রেরামের আকাশ বাতাস মোটেও ভালা না কিশোরী মাইয়া গো জন্যে। তাছাড়া এই বয়সের মাইয়া গো দিয়া বিশ্বাস করা ঠিক না। তুই যে নিজেরে ঠিক রাখবি এর কোন ঠিক নাই! এই বয়সে মাইয়ারা বসন্তের ডাকে নিজের মানসম্মান খুয়াই ফেলায়।
_______________________
ঘড়ির কাঁটা সাতে গিয়ে ঠেকেছে। সূর্য পুরোপুরি অস্ত গিয়েছে। চারপাশে ঘোলাটে আঁধার। ঝি ঝি পোকার চিৎকারে ভেসে আসছে ঝোপ ঝার থেকে। চৌদ্দি ডাংগি গ্রাম শুনশান নীরবতা পালন করতে ব্যস্ত! কয়েক টা মুদির দোকান ব্যতীত বাকি সব সামগ্রীর দোকান বন্ধ। এই নির্জন রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে গ্রামের সবচেয়ে মেধাবী ছেলে জুবায়ের মাস্টার। বছর পাঁচেক পূর্বে রোড এক্সিডেন্টে ছেলেটা ডান পায়ের অর্ধেক অংশ হারিয়ে ফেলেছে। সুঠাম দেহের অধিকারী ছেলেটার গায়ের বড্ড কালো। বুয়েট থেকে পড়ালেখা করে গ্রামের বিদ্যালয়ের চাকরি নিয়েছে সে। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। বেশ দরিদ্র পরিবার থেকে এ পর্যন্ত এসেছে জুবায়ের। বিদ্যালয় ব্যাতীত ভুঁইয়া বাড়ির দু’টো মেয়ে কে বাধ্য হয়ে পড়াতে হয় তাকে। বর্তমানে ভুঁইয়া বাড়ির উদ্দেশ্যে হেঁটে যাচ্ছে সে। বার বার হাত ঘড়ির দিকে দৃষ্টি ফেলছে। আজ বেশ দেরি হয়ে গেলো যে! এই পথ দিয়ে রাতে যাওয়া আসা মোটেও সুখকর নয় তার জন্য। কিছুদিন যাবত গ্রামে এক নাম না জানা হিংস্র প্রাণী আক্রমন শুরু হয়েছে। যার দরুন স্বল্প ভয় হচ্ছে জুবায়েরের। বিশেষ করে এই পা নিয়ে ভয়ঙ্কর প্রাণীর আক্রমণ থেকে বাঁচতে পারবে না তা নিশ্চিত।
ভুঁইয়া বাড়ির অন্দরমহলে প্রবেশ করতেই হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো জুবায়ের মাস্টার। নিত্যদিনের মতো গেইটের বাইরে থাকা দারোয়ানরা তাকে সালামের সঙ্গে মুচকি হাসি উপহার দিলো। জুবায়ের ড্রইং রুমে প্রবেশ করতেই একজন বলিষ্ঠ দেহের পুরুষ তাকে সঙ্গে করে চিলেকোঠার ঘরে নিয়ে এলো। জুবায়ের লাঠি ভর দিয়ে ভেতর প্রবেশ করলো। মাঝে মাঝে সে ভেবে পাই না এতো বড়ো অন্দরমহলের এতো গুলো কক্ষ থাকা সত্ত্বেও, কেনো বাড়ির দু’টো মেয়ে কে চিলেকোঠার ছোট ঘরে পড়াতে হয়!
জুবায়ের উপস্থিতি টের পেয়ে তার শিক্ষার্থী সালাম দিলো। জুবায়ের সালামের উত্তর নিয়ে টেবিলের সামনে পেতে রাখা চেয়ারে বসে পড়লো। একপলক শিক্ষার্থীর দিকে দৃষ্টিপাত ফেললো। মুহুর্তেই জুবায়ের বুকের ভেতর দুমড়ে মুচড়ে গেল। মেয়েটার চোখ মুখ ফ্যাকাসে বর্ণ ধারণ করেছে! আজ প্রথম জুবায়ের লক্ষ্য করলো তার শিক্ষার্থী প্রিয়া শাড়ি পড়েছে! মেয়েটার হাতে পায়ে নানান অলংকার দ্বারা ভরপুর। বয়স ছুঁই ছুঁই সতেরো হলেও প্রিয়া বেশ বুদ্ধিমতি। নিঃসন্দেহে মেয়েটা ভদ্র এবং অপরূপ সৌন্দর্যের অধিকারী! মনে মনে নিজেকে ধিক্কার জানিয়ে জুবায়ের নিজের দৃষ্টি সংযত রেখে স্বভাবিক ভাবে বললো,
— তা প্রিয়া, তোমার বোন কে যে দেখছি না। রিমা কী পড়বে না আজ?
জুবায়ের কথা শুনে শুকনো ঢোক গিললো প্রিয়া। নিজেকে ধাতস্থ রেখে ভাঙা কন্ঠে বলে উঠলো,
— না ,আফা পড়বে না। মাস্টার মশাই একটা কথা বলি? দয়া করে রাগ করবেন না।
শেষোক্ত বাক্যটা উত্তেজিত হয়ে বললো প্রিয়া। হঠাৎ মেয়েটার সংকোচ হীন আচরণ বেশ সন্দেহ জনক লাগলো জুবায়েরের নিকট! একে তো সেজেগুজে পড়তে বসছে আবার মেয়েটার চোখ জোড়া জল টলমল করছে! জুবায়ের নিজেকে নিয়ন্ত্রণ রেখে গম্ভীর কণ্ঠে বললো,
— কী হয়েছে? বলো।
প্রিয়ার চোখ থেকে দু ফোঁটা জল বিসর্জিত হলো। তৎক্ষণাৎ ঠোঁট কামড়ে ধরে বলে উঠলো,
— মাস্টার মশাই আমি কী দেখতে একটুও সুন্দর না? আমাকে কী আপনার সঙ্গে বেঁধে নেওয়া যাবে না?
প্রিয়ার কথাগুলো শুনে বিস্ফোরণ নয়নে উঠে দাঁড়ালো জুবায়ের। চেয়ার ধরে উঁচু স্বরে বলে উঠলো,
— ওয়াট ননসেন্স! দিন দিন বেয়াদব হচ্ছো? শিক্ষকদের সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হয় তা ভুলে গিয়েছো?
জুবায়ের কথার প্রেক্ষিতে হাউমাউ করে কেঁদে দিলো প্রিয়া। কান্নারত অবস্থা বলতে লাগলো,
— মাস্টারমশাই ওরা আমাকে জেন্ত মে’রে ফেলবে। আমাকে বাঁচান। আপনি তো জানেন না ওরা,,,
বাক্যটা আর শেষ করতে পারলো না প্রিয়া। কারো পায়ের বুট জুতোর খট খট আওয়াজ পেয়ে স্তব্ধ হয়ে পড়লো। আকস্মিক জুবায়েরের দিকে দৃষ্টিপাত ফেলে অদ্ভুত কান্ড করে বসলো।
(চলবে)
[আজকের পর্ব কেমন হয়েছে জানাবেন। বানান ভুল ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।]