সুখের অ-সুখ পর্ব-৮

0
1291

#সুখের_অ-সুখ
#মম_সাহা

পর্বঃ আট

~”প্রতিদিন তো মরছে কত মানুষ
আমিও নাহয় গেলাম সেই মিছিলেই,,
জীবন সমীকরণে কূল না পেলে
হারাতে হয় এমন অচিরেই।”

সুখ অবাক হয়ে বেশ শৌখিন অক্ষর গুলোর দিকে তাকিয়ে রইল, কী সুন্দর লিখা!নিজের মৃত্যুর কথা এত সুন্দর ভাবে কেউ ছন্দ বসিয়ে লিখে যেতে পারে এ চিঠি না দেখলে জানতোই না সুখ।চিঠিটা মোট দুই পৃষ্ঠা জুড়ে কিন্তু কোনোরূপ নাম না বলেই বেশ গুছিয়ে নিজের ভিতরের ভয়ঙ্কর আর্তনাদের কথা বলেছে কলম কালির মাধ্যমে পুঁথি করে।সুখ হাত বুলিয়ে নিচে তাকাতেই দেখলো আরও দুই লাইনে গুছিয়ে লেখা

~”বহু নারীতে আসক্ত হওয়া,কিছু পুরুষের রোগ,,
এই রোগে মরে কন্যার সুখ, মেয়েরা হয় ভোগ।
পুরুষ মানুষ শশ্মানে গেলো,প্রাণহীন তার দেহ,,
নারীর প্রতি রয়ে যায় লোভ,দেখতে পায় না কেহ,
অসৎ পুরুষের বেঁচে থাকার চেয়ে,মৃত্যু’ই শ্রেয়।”

সুখ বিষ্মিত হয়,তার শরীরের প্রতিটি লোমকূপ দাঁড়িয়ে যায় জেনো।পুরুষ মানুষের প্রতি এতটা ক্ষোভ, এতটা ধীক্কার কে জানিয়েছে? এত শৌখিন হাতের লেখায় কার এত আর্তনাদ লুকানো!

এখন প্রায় মধ্যরাত বললেও পারা যায়।হুটহাট দূর থেকে কুকুরের ডাক ভেসে আসছে।সুখ যখন চিঠির ভাষাতে গভীর মগ্ন তখন হঠাৎ তার ঘাড়ে কারো উষ্ণ স্পর্শে ছিটকে উঠে সে।পিছে ঘুরে অবাক কন্ঠে বলে
-‘লীলা তুই? তুই এখনও ঘুমাস নি? এত রাত অব্দি জেগে আছিস কেনো? ভয়ই তো পাইয়ে দিয়েছিলি।’

-‘তুমিও তো এত রাতে জেগে আছো আপাই,কী দেখছিলে যে আমি আসাতে ভয় পেয়ে গেলে? গোপন কিছু কী?’

সুখ মাথা নাড়িয়ে হাতে থাকা চিঠিটা লীলার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল
-‘না রে লীলা,অনেকদিন হলো বাবার লাইব্রেরীটা তে আসি না।আজ বাবাকে বড্ড মনে পড়ছিলো বিধায় এখানে এসেছিলাম কিন্তু এসে দেখি লাইব্রেরীর অবস্থা ভীষণ করুণ তাই পরিষ্কার করা শুরু করে দেই।তখনই কোনায় শোকেসের ভিতর থেকে একটা ধূলোমাখা বইয়ে এই চিঠিটা পাই।ঠিক চিঠি বললে ভুল হবে।কেবল দুই তিন লাইনে জীবনের সব অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ বলা চলে।বেশ পুরোনো চিঠি।তাই দেখছিলাম।’

লীলা আপাই এর হাত থেকে চিঠিটা নিলো।বেশ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে প্রতিটা অক্ষর পড়লো।একটা লাইনে গিয়ে তার চোখ আটকে গেলো। “অসৎ পুরুষের বেঁচে থাকার চেয়ে মৃত্যুই শ্রেয়”। লীলা অবাক কন্ঠে বলল
-‘এটা কার লেখা আপাই? আমাদের বাড়ির সবার হাতের লেখা তো পরিচিত কিন্তু এটা তো বেশ ভিন্ন লেখা।’

সুখ ঠোঁট উল্টালো।যার অর্থ সে জানেনা কার হাতের লেখা এটা।লীলাবতী কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে তারপর কিছু একটা ভেবে হুশিয়ারী কন্ঠে বলে
-‘আপাই যেহেতু এই চিঠিটা এত কোণায় ছিলো তাও পুরোনো একটা বইয়ের ভিতরে তারমানে কেউ এটা গোপনই রাখতে চেয়েছে।তাই আমার মনে হয় কাউকে এটার ব্যাপারে জানতে না দেওয়াই উচিৎ। আমরা বরং লুকিয়ে লুকিয়ে এ চিঠির ব্যাক্তিটাকে খোঁজার চেষ্টা করি।আমাদের বাড়িতে কার হাতের লেখা এমন সেটা খুঁজে বের করলেই তো বাকিটা জানা যাবে।তুমি কী বলো?’

লীলার যুক্তিটা অর্থবহ মনে হলো সুখের।ও মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো।

তারপর চিঠিটা আলগোছে রেখে দুই বোন বের হয়ে গেলো লাইব্রেরী থেকে। তারপর লীলাকে ঘুম পাড়িয়ে সুখ নিজের রুমে চলে যায়। দাদীজানকে না ধরে ঘুমালে তার যে ঘুম হয় না,দাদীটা যে তার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।আজ রাতটা জেগেই কাটাতে হবে।তার উপর চিঠির ভাবনা।

______
সকালে ঘুম থেকে উঠেই ঘরের যাবতীয় কাজ শেষ করলো সুখ।তারপর চা তৈরী করে সবার রুমে রুমে দিয়ে আসলো।গতকাল সন্ধ্যা বেলা লীলাবতীর মামা এসেছিলো কয়েকদিন থাকবে বলে।যথারীতি সুখ তার জন্যও চা তৈরী করেছে।নিজেকে বেশ সুন্দর করে ঢেকে চা নিয়ে হাজির হয় লীলাবতীর মামা মনির হোশেনের রুমে।

মনির হোশেন সুখকে দেখে বেশ হাসি দিয়ে মিষ্টি স্বরে বলল
-‘আরে সুখ যে? তা কেমন আছিস? বেশ সুন্দর হয়েছিস দেখি। এ রূপের রহস্য কী পেটের নাজায়েজ বাচ্চা টা নাকি? ইশ্ রে কত সুন্দর মেয়েটার কী ক্ষতি টাই না করলো অমানুষটা।’

মামার এহেন ধরনের কথায় সুখ একটু মূর্ছা যায়।কোনোমতে চা টা টেবিলের উপর রেখে চলে আসতে নিলে মনির হোশেন সুখের হাতটা চেপে ধরলো।সুখ আৎকে উঠে হাতটা ছাড়ানোর চেষ্টা করে চোখ মুখ কুঁচকে বলল
-‘মামা হাত ছাড়েন এ কী অসভ্যতা করছেন। ছাড়েন হাতটা।’

মানুষ রূপী পশুটা জেনো জেগে উঠেছে মনির হোশেনের।সে আরও জোড়ে হাতটা শক্ত করে ধরে বলল
-‘হাতটা কাউকে ধরতে দে নাহয় তো ভেসে যাবি নর্দমায়। মসৃনের থেকে আমরাও কিছু কম জানিনা।’

মনির হোশেনকে আর কিছু বলতে না দিয়ে ভীষণ জোড়ে চড় লাগায় তার গালে।বয়সের পার্থক্য হয়তো দশ বছরেরও বেশি কিন্তু জানোয়ারদের বয়স মানার প্রয়োজন নেই।সব কিছুর উর্ধ্বে সে একজন জানোয়ার।

ধস্তাধস্তির শব্দে রীতিমতো সবাই সেই ঘরে হাজির হয়।সুখের শরীর ভীষণ কাঁপছে।সানজিদা বেগম নিজের ভাইকে গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে এগিয়ে যায় ভাইয়ের দিকে।ভাইয়ের গালে হাত দিয়ে গদোগদো কন্ঠে বলে
-‘কী হয়েছে ভাই? কী হয়েছে তোর?’

মনির হোশেনও চাপা রাগ থেকে ন্যাকা স্বরে নিজের বোনকে অভিযোগের স্বরে বলল
-‘দেখ না দিদি তোর এই সৎ মেয়েকে দেখে আমি আফসোসের স্বরে বললাম মসৃন নামের ছেলেটা কাজটা ঠিক করে নি। তখন সে আমায় বললো আমি জেনো তার সঙ্গী হই।মসৃন যাওয়ার পর তার দিন খুবই খারাপ যাচ্ছে তাই আমাকে সে চাচ্ছে।আমি প্রতিবাদ করে না করাতে আমায় চড় বসিয়ে দিলো।’

সুখ ছিঃ করে উঠলো।সানজিদা বেগম তেড়ে গিয়ে ঠাস করে ভীষণ ভারী একটা চড় বসিয়ে দিলে সুখের গালে।মহিলার হাতে থাকা আংটির পাথর ঠোঁটের কোণে লেগে ঠোঁটাও ফেটে যায়।সুখের জেনো মনে হচ্ছে গালটা ফেটে গেছে।আগুন লাগলেও বোধহয় এতটা জ্বলতো না যতটা এখন জ্বলে যাচ্ছে।

সুখ অবাক হয় তার সৎমায়েরা আচরণে।অন্তত এই বিষয়ে এমন আচরণ আশা করেনি সে।বিষ্ময়মাখা কন্ঠে বলে
-‘আম্মা আপনি আমায় ভুল বুঝলেন? একটা মেয়ে হয়ে অন্তত আরেকটা মেয়ের পাশে দাঁড়াতেন। সৎমা বা বোন সম্পর্ক নাহয় পরে হিসেব করতেন।’

মহিলা আরেকটা চড় উঠানোর আগে লীলাবতী তার মায়ের হাত ধরে ফেলে।সানজিদা বেগম এতে দ্বিগুণ রেগে গিয়ে বলে
-‘তুই আমার হাত ছাড় লীলু।এই মেয়েকে আমি মেরে ফেলবো।আমার ভাইকে কুপ্রস্তাব দেয় আবার চড় দেয়।ওর শরীরের এত জ্বালা হলে পতিতালয়ে চলে যাক।’

-‘এই সেইম কথা টা তুমি তোমার ভাইকেও বলো আম্মা।উনার শরীরে এত জ্বালা থাকলে পতিতালয় চলে যাক।ভদ্র মেয়েদের শরীরে কলঙ্ক লেপে জানোয়ার না হয়ে সেখানে গেলেই পারে।’

নিজের মেয়ের এমন কথায় চমকে যায় সানজিদা বেগম। অবাক কন্ঠে বলে
-‘ও তোর মামা হয় লীলু।কী বলছিস তুই?’

লীলা আর কোনো কথা না বলে সুখকে টেনে নিয়ে সেখান থেকে চলে যায়। সানজিদা বেগম কেবল হা হয়ে তাকিয়ে রয় নিজের মেয়ের এহেন আচরণে।এটা কী তার সেই লীলাবতী যে সুখকে কটু কথা বলতে পেরে সুখী হতো? এতটা বদল কীভাবে সম্ভব?

___________
আজ অনু আর হিমা দুজনের একজনও আসে নি ভার্সিটিতে। হিমা কার বিয়েতে জেনো গিয়েছে আর অনুর মা অসুস্থ। সেই সুবাদে একাই ভার্সিটিতে আসতে হয়েছে সুখের।ক্লাশ শেষ করে টিউশন পড়িয়ে বাড়ির পধে রওনা হলো।আজ সকালে খাবারও জুটে নি তার ভাগ্যে। কোনোরকম লীলাবতীর জন্য ভার্সিটিতে আসতে পেরেছে।দাদী বাড়ি নেই বলেই এসব হয়েছে নাহয় এত কিছু ঘটতো না।দাদী ফুপিদের বাড়ি গিয়েছে।আজ চলে আসার কথা এসেছে কিনা জানা নেই সুখের।

সারাটা দিন ওড়না দিয়ে মুখ ঢেকে ছিলো সে।ডান গালটা ভীষণ বিশ্রী ভাবে ফুলে গিয়েছে, এতটা ফুলে গিয়েছে যে ডান চোখটা অব্দি লাল হয়ে ডেবে গেছে।ফর্সা মানুষ হওয়ায় চড়ের প্রভাব দারুণ ভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।

‘আরে অপরিচিতা না? এই ভর সন্ধ্যা বেলাতে এ রাস্তায়?’

পরিচিত কন্ঠে পরিচিত নামটা শুনে থেমে গেলো সুখ।ঘাঁড় ঘুড়িয়ে পিছে তাকাতেই দেখলো কাঙ্খিত মানুটা দাঁড়িয়ে আছে।সকালের ঘটনার পর থেকে এ অব্দি সুখ একটু হাসে নি কিন্তু মেঘকে দেখে না চাইতেও ভদ্রতার হাসি হেসে বলল
-‘আরে মেঘ সাহেব যে? আজ তো অপরিচিতা বিপদে পড়ে নি তবুও মেঘ সাহেবের দেখা?’

মেঘ সুখের কথা শুনে হেসে উঠলো।দু’কদম সামনে এগিয়ে এসে বলল
-‘আসলেই বুঝি আজ অপরিচিতা বিপদে পড়ে নি? তাহলে দেখা হয়ে কী ভুল হয়ে গেলো?’

সুখ ব্যতিব্যস্ত স্বরে বলল
-‘আরে না আমি মোটেও সেটা বুঝাতে চাই নি।’

মেঘ হা হা করে হেসে উঠলো।তখনই ইউসুফ হাজির হয়ে ব্যস্ত কন্ঠে বলল
-‘স্যার ডিল ফাইনাল চলুন।’

সুখ এবার ইউসুফের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করলো। হাসিমুখে বলল
-‘কেমন আছেন ইউসুফ ভাই?’

নিজের নাম শুনে ইউসুফ তড়িৎগতিতে তাকালো।সামনে যে সুখ দাড়িয়ে ছিলো সে খেয়ালই করে নি।এতে ভীষণ লজ্জিত হয়ে লজ্জা মিশ্রিত কন্ঠে বলল
-‘আরে মেম আপনাকে আমি খেয়ালই করি নি, সরি।আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।আপনি কেমন আছেন?’

-‘এই তো ভাইয়া ভালো আছি।আপনারা এখানে কাজে এসেছিলেন বুঝি?’

-‘জ্বি মেম।অফিসের ডিলের জন্য এসেছিলাম একটা মিটিং এ।’

সুখের আর ইউসুফের কথাবার্তায় নিরব শ্রোতা হয়ে দাঁড়িয়ে রইল মেঘ।শ্রোতা বললেও ভুল হবে কারণ সে শুনছে কম দেখছে বেশি। হঠাৎ কিছু একটা খেয়াল হতেই সে ভ্রু কুঁচকে বলল
-‘অপরিচিতা, আপনার মুখ এমন ফুলে আছে কেনো? আর উড়না দিয়ে ডান সাইট ঢেকে রেখেছেন কেনো?’

মেঘের আকষ্মিক এমন প্রশ্নে ভড়কে যায় সুখ।আমতাআমতা করে বলে
-‘ও তেমন কিছু না।এমনেই।’

ইউসুফও এবার খেয়াল করলো।আৎকে উঠে বলল
-‘মেম আপনি উড়না টা সড়ান তো।আপনার ডান চোখটাও তো লাল হয়ে আছে।স্যার দেখুন।’

মেঘ এবার ভীষণ চোখ রাঙাতেই সুখ ঘোমটাটা সড়ালো।ইউসুফ আর মেঘ রীতিমতো অবাক হয়ে গেলো।মেঘ আৎকে উঠে বলল
-‘এভাবে কে মেরেছে আপনাকে? পুরো গাল লাল হয়ে গেছে।ঠোঁটের কিনারায় কালো হয়ে গেছে,চোখটাও তো লাল হয়ে গেছে।কে মেরেছে?’

সুখের জেনো লজ্জায় মাটির সাথে মিশে যাওয়ার উপক্রম।কোনো রকম একটা রিক্সা থামিয়ে উঠে গেলো।আর নিচু স্বরে বলল
-‘পাপে কামড়িয়েছে। সেড়ে যাবে।ভালো থাকেন।’

সুখের এমন কান্ড তাজ্জব বনে গেলো ইউসুফ আর মেঘ।ইউসুফ মেঘের দিকে তাকিয়ে অদ্ভুত স্বরে বলল
-‘স্যার মেম কার কাছে থাকে? এমন অদ্ভুত জীবনের গতিধারা?’

মেঘ চলন্ত রিক্সার পানে তাকিয়ে রইল কেবল।সে কী বলবে বুঝে পারছে না।এমন রাগ তার মাথায় চড়েছে মনে হচ্ছে ধ্বংস করে দিবে সব।তার অপরিচিতার শরীরে এমন ভয়ানক আঘাত করার সাহস কীভাবে হলো কারো!

______

বাসায় এসে সুখ শুনে দাদী ফুপির বাসা থেকে চলে এসেছে।রেদোয়ান ভাই নিয়ে এসেছে।সে দ্রতই হাত মুখ ধুঁতে চলে গেলো।আহ্,দাদী ছাড়া দিন খুবই খারাপ যায়।হাত মুখ ধুঁয়ে বের হতেই সুখের রুমের পাশ থেকে বীভৎস চিৎকার ভেসে আসলো।সুখ দ্রতই পাশের রুমে যেতেই দেখল মনির হোশেন বিছানায় গড়াগড়ি খাচ্ছে আর চিৎকার করছে।সুখ আরেকটু এগিয়ে যেতেই দেখলো মনির হোসেন ডান হাতটা কেমন ঝলসে গেছে।কেমন রক্তাক্ত হয়ে আছে।

সানজিদা বেগম ভাইয়ের পাশে বসে ব্যতিব্যস্ত স্বরে বলছে
-‘কী হলো ভাই? কী হলো তোর? এমন কী করে হলো?’

মনির হোশেন কেবল আর্তনাদ করে যাচ্ছে।ঘরের এক কোণায় দাড়িয়ে কেউ একজন বলছে “এমন পুরুষের বেঁচে থাকা অপেক্ষায় মৃত্যু শ্রেয়।”

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here