সন্ধ্যায় সন্ধি পর্ব ৭

0
958

#সন্ধ্যায়_সন্ধি
#মম_সাহা

পর্বঃ ৭

ছেলেপক্ষ চলে গেছে একটু আগে।মেয়ে পছন্দ হয়েছে বিধায় আংটিও পড়িয়ে গেছে।রাতের খাবার খেয়েই চলে গেছেন তারা।

ছেলেপক্ষ যাওয়ার সাথে সাথে চাঁদ তাদের বাসায় চলে যায় না খেয়ে সবার উপর রাগ
করে কারণ আজ তুহা আপুকে দেখতে আসবে কেউ তাকে আগে জানালো না একটু।এমন কি তেজ ভাইয়াও না।এতটা পর সে।

অন্যদিকে সবাই বুঝতে পেরেছে চাঁদ অভিমান করেছে আগে থেকে তাকে কিছু না জানানোর কারণে।সবাই ঘর গুছিয়ে ফ্রেশ হয়ে খেতে বসেছে আর তেজকে পাঠিয়েছে চাঁদকে ডাকার জন্য।

_____________________________
-এই চাঁদ ওঠ সেই সকালে একটা পরোটা খেয়েছিস, আর কিছু খাস নি সারাদিন ওঠ।কিরে তুই রাতে শাওয়ার নিয়েছিস কেনো?

-না ভাইয়া খাবো না আপনি যান,আমার শরীর টা ভালো না।যান আপনি বিরক্ত করবেন না। পেটে হাত দিয়ে কুকিয়ে উঠে বলল চাঁদ।

তেজ ভ্রু কুঁচকে বলল
– কিরে চাঁদ কি হয়েছে, দেখি উঠ,শরীর অসুস্থ কেনো?কী হয়েছে?

-ভাইয়া আপনি বুঝবেন না, আপনি যান আর আপুর খাওয়া শেষ হলে তাড়াতাড়ি পাঠাই দিয়েন।

– কি সমস্যা? ওহ বুজেছি। এই সময়টাতে একটু বেশি করে খেতে হয় আর তুই কিনা খাবি না বলছিস।আচ্ছা আমি খাবার পাঠিয়ে দিবো প্রহেলিকাকে দিয়ে খেয়ে ঔষুধ খেয়ে নিবি।আর আমার সাথে ডাক্তারের কাছে যাবি।এই বিষয় নিয়ে হেলাফেলা করা ঠিক না।বলেই উঠে চলে গেলো তেজ।

___________________________

একটু পর খাবার নিয়ে হাজির হলো প্রহেলিকা। খাবার খাওয়ানোর পর ঔষুধ খাইয়ে দিলো।যখন চাঁদ ঘুমানোর জন্য উদ্যত হলো তখন প্রহেলিকা বলল

-চাঁদ তুহার বিয়ে তো এক সপ্তাহ পর। এখন থেকে শপিং শুরু করে দিবো।

– হ্যাঁ ঠিকই বলেছো আপু।কালই যাবো শপিং এ।

– আচ্ছা তুই এখন ঘুমিয়ে পর।

__________________________

পরের দিন বিকালে______

সবাই বসে আছে ড্রয়িং রুমে আর গম্ভীর হয়ে আছে সবার মুখ কারণ একটু আগে তুহার হবু শ্বশুর বাড়ি থেকে ফোন দেওয়া হয়েছিলো।তাদের চাঁদকেও ভীষণ পছন্দ হয়েছে তাই তাদের বাড়ির ছোট ছেলের জন্য চাঁদের বিয়ের সম্বন্ধ এনেছে।আর তেজ সেটা শুনেই রেগে গেছে তারপর নিজেকে সংযত করে তুহার শ্বশুর বাড়ির লোককে জানালো যে চাঁদ তার হবু বউ এতে তুহার শ্বশুর বাড়ির লোক লজ্জিত হয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছে। সে ঘটনার পরই তেজ একটা সিদ্ধান্ত পেশ করে সবার সামনে

– বাবা তুহার বিয়ের পর আমার আর চাঁদের এংগেইজমেন্ট আর কাবিন হোক আমি চাই। (তেজ)

– না বাবা কী বলছো আমার আরও একটা মেয়ে আছে প্রহেলিকা ও চাঁদের বড় ওরে বিয়ে না দিয়ে তোমাদের বিয়ে দিলে কেমন দেখা যাবে।। এটা বলে দ্বিরুক্তি প্রকাশ করলেন চাঁদের বাবা।

– আঙ্কেল আপনি আমাকে বিশ্বাস করে চাঁদের হাতটা আমার হাতে তুলে দেন।আর বর্তমানে বড় মেয়ে ছোট মেয়ে মেনে বিয়ে সাদি হয় না।আর আমরা এখনই চাঁদকে তুলে আনছি না।খালি আকদ টা করবো।মাথা উঁচু করে টানটান করে বলর চাঁদ।

এমন অনেক ক্ষন আলাপ আলোচনার পর ঠিক হলো চাঁদ আর তেজের বিয়ে তুহার বৌভাতের পরের দিন হবে।এখানে নিরব দর্শক হিসেবে ভূমিকা রেখেছে চাঁদ।
সবাই খুশি।মিষ্টিমুখ করছে।সবাই হাসাহাসি করছে।তেজের ফুফাতে বোন রাহাও ছিলো ও একটু মন খারাপ করেছিলো কারণ ও তেজকে পছন্দ করতো।রাহার মন খারাপ টা মোটামোটি সবার চোখেই লেগেছে কিন্তু কেউ পাত্তা দেয় নি।তবে রাহা না আরেকজনও আছে যে এই জিনিসটাকে সহজ ভাবে নেয় নি তবে সে তার মন খারাপটাকে সবার সামনে প্রকাশ করে নি। চাঁদের মনেও আজ খুশি কারণ সে তার ভালোবাসার মানুষটিকে পেতে চলছে।সইবে তো এত সুখ,,,,

বিয়ের কেনাকাটা চলছে। আজ থেকেই শুরু।বিকেল বেলায় সবাই বের হবে কেনাকাটা করতে।রাহার পরিবারও বাসায় যায় নি এ কয়দিনের জন্য। চাঁদের মনে তো খুশির লাড্ডু ফুটছে।একসাথে দুটো বিয়ে দেখে কাজের চাঁপও অনেক।

বিকেলে সবাই মিলে শপিং মলে গেছে।আজ তুহার বিয়ের শপিং করা হবে যেহেতু তুহার বিয়ে টা আগে।পরে চাঁদের বিয়ের শপিং।

বাসার মহিলা সব গেছে শপিং করতে।তেজের মা বাদে কারণ আজ তেজের দাদী ও আসবেন। মহিলাটা বড্ড খুঁতখুঁতে টাইপ। এজন্য তেজের মা থেকে গেছে।

সবাই শপিং করতে ব্যস্ত। তেজ আসতে পারে নি অফিস ছিলো বলে।শপিং শেষে তুহা,হৃদি,প্রহেলিকা আর চাঁদ মিলে পার্লার গেছে আর সবাই বাড়ি ফিরে এসেছে।

চাঁদদের পার্লারের কাজ শেষ হতে হতে প্রায় এগারোটা বাজলো।তাই আহান আর তেজ গেছে তাদের আনতে।

_______________________
পার্লারের বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে তেজ আর আহান।তারা দুজন বুজছে না বিয়ে আরো ছয়দিন বাকি আজই পার্লারে কী কাজ।এর মাঝেই পার্লার থেকে বের হলো চার জন।তুহা,প্রহেলিকা আর হৃদি আহানের গাড়িতে আর চাঁদ তেজের গাড়িতে উঠলো।

তেজ খেয়াল করেছে চাঁদ মুখ ঢেকে রেখেছে উরনা দিয়ে।কিন্তু কারণ কি।তাই সে গাড়িতে উঠেই জোড় করে উরনা সরিয়ে অবাকে হা হয়ে রইল কারণ,,,,,

চলবে,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here