শেষের পাতায় তুমি, পর্ব:১২

0
880

#শেষের_পাতায়_তুমি?
#অন্তিম_পর্ব
#writer_Shanta_islam

-মনে হচ্ছে দুই নৌকায় পা রেখে চলছি। এক নৌকায় রিয়া আরেক নৌকায় সুচরিতা।
রিয়া আমাকে জড়িয়ে ধরে কিছুক্ষণ পর বেহুস হয়ে যায় তাই রিয়াকে হসপিটালে নিয়ে এসেছি। এখানে ওর বাবা মাও এসেছে। উনাদের থেকে জানতে পারলাম রিয়া এতোদিন লুকিয়ে ছিলো। উনারাই রিয়াকে লুকিয়ে রেখেছিলো। রিয়ার বাবা সাংবাদিক,
কিছু গ্যাংস্টারদের বিরুদ্ধে রিয়ার বাবা প্রমান যোগার করে,,সেটা ওরা জানতে পারলে রিয়াকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। তাই ওর বাবা রিয়ার মৃত্যুর একটা নাটক সাজায় যাতে গ্যাংস্টাররা মনে করে রিয়া মারা গেছে আর ওর পিছু ছেরে দেয়। রিয়ার বাবা আমাকে আরো অনেক কিছু বলেছে কেনো রিয়া যোগাযোগ করে নি কেনো আমাকে সত্যিটা বলে নি। কিন্তু এসবের মধ্যে এখন আমার কোনো আগ্রহ নেই। জানতে চাই না কিছু,,
জেনেই বা কি হবে? এখন তো আমি রিয়াকে চাই না। এখন আমার সবটুকু জুরে আছে আমার স্ত্রী সুচরিতা। এতোদিনে রিয়ার নামটাও ভুলে গিয়েছিলাম,,,নিয়তি বড়ই অদ্ভুত। যখন রিয়ার জন্য মরতে বসেছিলাম তখন ও আসেনি আর এখন সুচরিতার জন্য বাচতে শিখেছি নিয়তি রিয়াকে এনে দাড় করিয়ে দিয়েছে।
কিছুক্ষণ পর ডাক্তার এসে বললো রিয়া ঠিক আছে। শরীর দূর্বল ছিলো তাই বেহুশ হয়েছে। আমি চলে যেতে চাইলে রিয়ার বাবা মা আমাকে আর কিছুক্ষণ থাকার জন্য অনুরোধ করে। রাত হয়ে যাচ্ছে রিয়া বেহুস হওয়ার পর সুচরিতাকে কিছু না বলেই তারাতারি রিয়াকে হসপিটালে নিয়ে আসি। না জানি মেয়েটা কি করছে। কয়েকবার ফোন করলাম ধরছে না। রিয়ার বাবা মা ওর সাথে দেখা করতে গেলো কিছুক্ষণ পর তারা বের হয়ে এসে বললো রিয়া নাকি আমার সাথে দেখা করতে চায়। আমি রিয়ার কেবিনে ডুকতেই রিয়া সোয়া থেকে উঠে বসে।
– সাদিক তুমি এসেছো।
রিয়ার কাছে আসতেই ও আমাকে জড়িয়ে ধরে।
-আমাকে মাফ করে দেও সাদিক। তোমাকে অনেক কস্ট দিয়েছি। কিন্তু আমার কাছে কোনো উপায় ছিলো না,,যদি গুন্ডারা তোমার কোনো ক্ষতি করে ফেলতো এই ভয়ে আমি তোমার সাথে ব্রেকাপ করতে চেয়েছিলাম। তুমি তো জানো তোমার রিয়া তোমাকে কতো ভালোবাসে। আমি তোমাকে আর কখনো একা রেখে যাবো না প্রমিস।
রিয়া একদমে কথাগুলো বলে দিলো। ও ভাবছে আমি এখনো ওকে ভালোবাসি। ওর ভুল ধারণা ভাংতে হবে। আমি রিয়াকে ছাড়িয়ে নিলাম,,,
-দেখো রিয়া আমি বুঝতে পারছি তোমার কোনো ভুল ছিলো না। তুমি পরিস্থিতির শিকার,,,কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সব বদলায়। আগে তোমার প্রতি আমার যেই ফিলিংস ছিলো এখন তা নেই। এখন আমি অন্য একজনকে ভালোবাসি। সে হলো আমার স্ত্রী। তাই তুমি যা ভাবছো তা এখন আর সম্ভব না।
রিয়া কাদতে কাদতে আমার গালে হাত রেখে বললো,,তুমি এখনো আমার উপর রেগে আছো। তাই এসব বলছো। সরি বললাম তো আর কখনো না বলে কোথাও যাবো না।
আমি আমার গাল থেকে রিয়ার হাত নামিয়ে বললাম,,,আমি তোমার উপর রেগে নেই রিয়া। একটা সময় ছিলো যখন তোমার জন্য মরতে চেয়েছিলাম কিন্তু এখন আমি বাচতে চাই সুচরিতার জন্য। তখনকার সাদিক আর এখনকার সাদিকের মধ্যে অনেক পার্থক্য। প্লিজ রিয়া সত্যিটাকে মেনে নেও এতে তোমারো ভালো আমারো ভালো।
– না না না,,এটা হতে পারে না। সাদিক তুমি শুধু আমাকে ভালোবাসো শুধু আমাকে ওই মেয়েকে নয়। তুমি রেগে আছো তাই মিথ্যা বলছো। বলো আমাকে ভালোবাসো বলো সাদিক প্লিজ বলো তুমি আমাকে ভালোবাসো,,,
– আমি মিথ্যা বলছি না,,,আমি তোমাকে নয় আমি আমার স্ত্রী সুচরিতাকে ভালোবাসি আর এটাই সত্যি। সরি রিয়া! বাস্তবতাকে মেনে নেওয়াই ভালো। কথাটা বলে আমি কেবিন থেকে বের হয়ে এলাম। অনেক দেরি হয়ে গেছে,,,তারাহুরোর মধ্যে সুচরিতাকে বলেও আসিনি। মেয়েটা হয়তো না খেয়ে এখনো আমার জন্য অপেক্ষা করছে।
বাসায় পৌছে কলিং বেল দিতেই মা দরজা খুলে দেয়। সুচরিতা কোথায়? অন্যান্য দিন একটা বেল দিতেই ও দৌড়ে এসে দরজা খুলে দিতো। রুমে আছে হয়তো তাই মাকে কিছু জিজ্ঞেস না করে রুমে চলে গেলাম,,একি এখানেও সুচরিতা নেই। ওয়াসরুমে গেছে নাকি। নাহ ও এখানেও নেই। মেয়েটা গেলো কোথায়?
-সুচরিতা,,সুচরিতা,,,সুচরিতা,,সুচরিতা,,এতো আওয়াজ করে ডাকছি তাও মেয়েটা সারা দিচ্ছে না। বাধ্য হয়ে মাকে যেয়ে জিজ্ঞেস করলাম সুচরিতা কোথায়? আমার প্রশ্ন শুনে মা হু হু করে কেদে দিলো।
– কি হলো? তুমি এভাবে কাদছো কেনো? সুচরিতা কোথা?
– ও চলে গেছে,,
-চলে গেছে মানে? কোথায় গেছে? সুচরিতা,,,সুচরিতা চেচিয়ে ওকে ডাকছি নাহ এখনো আসছে না। বুকটা মোচড় দিয়ে উঠলো মা এভাবে কাদছে সুচরিতাও ডাকে সারা দিচ্ছে না। আরে বাবারে কান্না থামিয়ে বলবে তো কোথায় গেছে?
– সুচরিতা আমাদের সবাইকে ছেরে চলে গেছে,,,রাফি ওকে খুজতে বের হয়েছে,,,
মায়ের কথা শুনে একটু নড়ে দাড়ালাম ছেরে চলে গেছে বলতে মা কি বুঝাচ্ছে। দৌড়ে আবার রুমে আসি টেবিল থেকে ফোনটা নিয়ে বার বার ফোন করে যাচ্ছি সুইচড অফ বলছে। এখন ভয় লাগছে এতো রাতে মেয়েটা গেলো কোথায়? রাফিকে ফোন দিতেই ও রিসিভ করে বলছে,,,সুচরিতা ওর বাবার বাসায়ও যায়নি। কথা বলতে বলতে হঠাৎ চোখ গেলো আয়নায়। আয়নার সামনে একটা খাম রাখা আছে। ফোনটা কেটে খামটা খুললাম। এটা সুচরিতার হাতের লিখা,,ও আমার জন্য চিঠি লিখেছে।
সাদিক তুমি যেই দিনটার জন্য অপেক্ষা করছিলে আজ সেই দিনটা এসে গেছে। তোমার অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়েছে,,তোমার ভালোবাসার মানুষ তোমার কাছে আবার ফিরে এসেছে। আমরা দুজনি জানতাম রিয়া একদিন না একদিন ফিরবে। জানো আমি চাইতাম না কখনো এ দিনটা আসুক। লোভী হয়ে গিয়েছিলাম তোমাকে পাওয়ার জন্য। কিন্তু কথায় আছে না আল্লাহ যাকে যার ভাগ্য লিখে রাখে তাদেরকে এক হতে কেও ঠেকাতে পারে না।
রিয়া খুব মিষ্টি একটা মেয়ে,,,ওকে একবার কাছ থেকে দেখার খুব ইচ্ছে ছিলো। আজ সে আশা পূরন হলো। বলতে হবে তোমার চয়েজ আছে। যখন রিয়া তোমাকে জরিয়ে ধরলো তখন তোমাদের দুজনকে খুব মানিয়ে ছিলো,,,নিজের অজানতেই চোখ থেকে টপ টপ করে পানি বের হয়ে গেলো। নিজেকে অনেক বুঝিয়েছিলাম তুমি আসলে কাদবো না নিজেকে সামলে নিব। সামলাতে পারলাম কই কেদেই ফেললাম। আমি তোমার মার কাছে ওয়াদা করেছিলাম তোমাকে আবার স্বাভাবিক করে তুলবো। যার জন্য তুমি পাগল ছিলে এখন সে ফিরে এসেছে। তোমাদের দুজনের মধ্যে আমি কাটা হতে চাই না। ভেবেছিলাম তোমাকে বলে চলে আসবো কিন্তু পারিনি সাহস ছিলো না। বললাম না লোভী হয়ে গিয়েছিলাম ভয় ছিলো কখন না আবার তোমাকেই দাবি করে বসি। রিয়া বেহুস হওয়ায় ওকে নিয়ে ব্যস্ত ছিলে একবারো আমার দিকে তাকাওনি। তখন বুঝলাম তোমার আর রিয়ার ভালোবাসাটা কতো গভীর। তোমার জীবনের শুরুর পাতায় যে ছিলো শেষের পাতায়ও সে থাকবে। আমাকে নাহয় তোমার সৃতির পাতায় রেখো। দোয়া করি তোমার আর রিয়ার নতুন জীবন সুখের হোক।
ইতি
তোমার জীবনের ছোট একটা সৃতি,,
আমি কাগজটা পড়ছি,,, বার বার পড়ছি,,এগুলো কি লিখেছে সুচরিতা? ও কি সত্যিই সত্যিই আমাকে ছেরে চলে গেলো। না এটা হতে পারে না। এখনো তো আমার মনের কথা বলা হয়নি। এতোদিনে ও কি একবারো বুঝতে পারলো না আমিও যে ওকে ভালোবেসে ফেলেছি। ইয়া আল্লাহ আমি ওকে ছাড়া বাচবো কীভাবে। ঘুম থেকে উঠে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত যাকে ছাড়া চলে না সে না থাকলে আমি বাচবো কীভাবে? এই বোকা মেয়ে কী থেকে কী বুঝে চলে গেলো। আমি যে রিয়াকে নয় ওকে ভালোবাসি। এখন আমি কোথায় খুজবো ওকে?
বাসা থেকে বের হয়ে সুচরিতাকে খুজে যাচ্ছি। মাথা কাজ করছে না কি করবো,,,আজ নিজেকে বড় অসহায় লাগছে। হে আমার সৃষ্টিকর্তা তোমার কাছে আমার সুধু একটাই চাওয়া সুচরিতাকে ফিরিয়ে দেও। আমি পাগল হয়ে যাবো,,আমি এবার সত্যিই বাচবো না ওকে ছাড়া মরেই যাবো। রাত একটা বাজে এখনো আমি ওকে পাগলের মতো খুজে বেরাচ্ছি। হঠাৎ আমার ফোনটা বেজে উঠলো রাফি কল করেছে। রিসিভ করতেই রাফি বললো সুচরিতার লাস্ট লোকেশন আমাদের বাসা ছিলো। কিন্তু বাসায় সব জায়গায় যে ওকে খুজা হয়েছে। তাহলে কোথায়? হ্যাঁ একটা জায়গা এখনো খালি আছে,,আমি আমার সব শক্তি দিয়ে তারাতাড়ি বাসায় পৌছানোর চেস্টা করি।
আজ কেনো জানি মনে হচ্ছে এ পথ শেষ হচ্ছে না। যত তারাতাড়ি পৌছানোর চেস্টা করছি মনে হচ্ছে ততো পিছিয়ে যাচ্ছি। বাসায় পৌছে ছাদে উঠতেই দেখি আমার গাধিটা আকাশের দিকে তাকিয়ে দাড়িয়ে আছে। ওকে দেখে আমার মধ্যে আবার প্রান ফিরলো।
হৃদপিন্ডোটা এখনো ধুক ধুক করেই যাচ্ছে,,হারিয়ে ফেলার ভয়টা এখনো যায়নি। আমি আমার চোখ দুটো মুছে ওকে পিছন থেকে ডাকলাম,,,সুচরিতা,,,,
ও আমার দিকে তাকালো না। আকাশের পানে তাকিয়েই বললো,,,মনে আছে তুমি একবার বলেছিলে আমাকে চাঁদ দেখাতে চাও,,সেদিন ভেবেছিলাম তুমি বলবে আমাকে ভালোবাসো। কেনো এ দিনটা এলো সাদিক? কেনো? আমি যে সার্থপর হয়ে যাচ্ছি। মা,,রাফি,,,এই ছাদ,,, এ বাড়ির প্রতিটি দেয়াল এদেরকে ছাড়া থাকবো কীভাবে? আচ্ছা আমাকে কী তোমার ঘরের এক কোনায় ঠাই দিবে? কথা দিচ্ছি রিয়া আর তোমার মাঝে বাধা হবো না। সুচরিতার কথাগুলো বুকের মধ্যে তীরের মতো আঘাত হানছিলো।
আমি আর নিজেকে সামলাতে পারলাম না ওর কাছে যেয়ে ওকে আমার দিকে ফিরিয়ে এক টানে জড়িয়ে ধরলাম।
আজ আমার চোখের কোনো বাধ নেই,,,অশ্রু ঝরেই যাচ্ছে। ওকে জড়িয়ে ধরে মনে হচ্ছে আমি আমার হারানো দামী জিনিসটা আবার ফিরে পেয়েছি।
-সাদিক বললে না যে,,আমাকে কী একটু ঠাই দিবে?
– চুপ একদম চুপ অনেক বলেছো,,তুমি নিজেকে ভাবো হ্যাঁ? যখন ইচ্ছা আমার জীবনে আসবে আবার যখন ইচ্ছা আমাকে ছেরে চলে যাবে। আরে আমিও তো একটা মানুষ! আমারো তো অনুভূতি আছে,,,একবারো জানতে চেয়েছো আমি কি চাই? কিছু না বলে হুট করে একটা চিটি লিখে উধাও হয়ে গেলে,,এভাবে ছেরে যাওয়ার আগে আমার কথাটা একবারো ভেবেছো? সবাইকেই ভালোবাসো মা,,রাফি,,এই বাড়ির প্রতিটি দেয়াল সবার জন্য থাকতে চাও শুধু আমার জন্যই না। সবাইকেই ভালোবাসো শুধু আমাকেই ভালোবাসো না।
আচ্ছা আমি কি এতোটাই অযোগ্য স্বামী যে আমাকে একটু ভালোবাসা যায় না? আমাকে একটু ভালোবাসো না সুচরিতা,,,আমি তোমার ভালোবাসা চাই। আমি যে তোমাকে ভালোবাসি। তোমাকে ছাড়া আমার আর কিছু চাই না। প্লিজ আর কখনো এভাবে ছেরে যাওয়ার হুমকি দিও না।
– তুমি আমার জীবনের শুরু থেকে শেষ অবধি রচিতা,,
তুমি আমার সুচরিতা,,,,
তোমাকে ছাড়া আমি যে মরে যাবো। সুচরিতা আমার মুখে হাত দিয়ে বললো,,, সাদিক এভাবে বলো না। তোমার কিছু হলে আমি বাচবো কীভাবে? আমি সুচরিতার দুগালে হাত রেখে বললাম,,আমার জীবনের প্রথম পাতায় অন্য কেও থাকলেও জীবনের শেষের পাতা অবধি তোমাকে চাই। তুমি আমার জীবনের সৃতির পাতায় নয়,,পুরো জীবনের #শেষের_পাতায়_তুমি শুধু তুমি থাকবে।
-কিন্তু রিয়া,,,,সুচরিতাকে আর একটা কথাও বলতে দিলাম না সাথে সাথে ওর ঠোঁটে আমার ঠোঁট জোরা ডুবিয়ে দিলাম। আজ আর ছারছি না,,অনেক অপেক্ষা করেছি এ দিনটার জন্য। আজ আমি সুচরিতাকে আমার করে নিব। রাফি আর সাওনের কথা মনে পরে গেলো আসলেই আমাকে একটা ওসকার দেওয়া উচিত। যে বিয়ের পরেও নিজের বউয়ের থেকে দূরে ছিলাম। হয়তো আগে বলে দিলে এমন সিচুয়েশনে তৈরি হতো না। যাই আজ হানিমুনটাও সেরে নেই। অনেক দেরি করেছি আর না।
,
,
,
,
,
আপনারা এখনো আছেন? আরো কিছু জানার বাকি আছে নাকি? রাফি আর তানিয়ার বিয়েটা অনেক কস্টে মেনেজ করেছি। আমার পাচ বছরের একটা মেয়ে আছে। মেয়েটা হয়েছে ওর খালাদের মতো। এক একটা ভয়ানক কান্ড করবে আর দৌড়ে এসে আমার পিছু লুকাবে। এই তো সেদিনের কথা অফ ডে ছিলো তাই সুয়ে সুয়ে ফোন টিপছিলাম,,হঠাৎ মেয়েটা দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো,,,বাবা বাচাও বাবা বাচাও,,,
-কি হলো কি বাবা? এভাবে দৌড়াচ্ছো কেনো?
মেয়েটা কাদো কাদো গলায় বললো মা মারবে,,
-মারবে কেনো কি করেছো?
এমন সময় আমার বউ লাঠি নিয়ে রুমে আসে।
-কই দেখি এদিকে আয় আজ মারতে মারতে তোর হাড্ডি ভেঙে দিব।
– বাবা,,,বাচাও মেয়েটা আমাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।
– এই তোমার সাহস তো কম না তুমি আমার মেয়েকে মারতে এসেছো?
-মারবো না তো কি করবো? তোমার মেয়ে কি করেছে সেটা জানো?
– কি করেছে?
-বাসায় পনেরোটা বিড়াল এনে রান্না ঘরে ছেরে দিয়েছে। আমার রান্নাঘরের বিছরি অবস্থা করে রেখেছে,,,তুমি ছাড়ো ওকে ছাড়ো বলছি,,ওকে না মারলে শিখা হবে না।
-খবরদার আমার মেয়ের গায়ে হাত দিবে না। মা তুমি বিড়ালকে রান্না ঘরে কেনো ডুকিয়েছো?
-ওরা তো ভালো করে খেতে পারে না তাই ওদের রান্না ঘরে ডুকিয়ে বলেছি যা ইচ্ছে সব খা৷ ভালো করেছি না বাবা,,,
– হ্যাঁ বাবা অনেক ভালো করেছো,,,
– কি ভালো করেছে? তোমার আর তোমার মেয়ের অশান্তি আমার আর ভালো লাগে না। আমি যাচ্ছি আমার বাপের বাড়ি কথাটা বলে সুচরিতা লাঠি রেখে আলমারি খুলে ব্যাগ গুছাতে নিলো। এই সুযোগে মেয়েটা দৌড় লাগায় ওর দাদির কাছে। আমি পিছন থেকে সুচরিতাকে জড়িয়ে ধরে বললাম,,বাপের বাড়ি যাওয়ার কথা বললে ঠ্যাং ভেঙে রেখে দিবো।
-ছারো আমাকে ছারো তোমাদের বাবা মেয়ের অত্যাচার আর সহ্য হয় না। মেয়েটাকে নিজেও শাসন করো না আমাকেও শাসন করতে দেও না।
– আচ্ছা হয়েছে তো! এখনি একজনকে সামলাতে পারছো না আরেকজন আসলে কী করবে?
-আরেকজন মানে?
আমি সুচরিতাকে চোখ মেরে বললাম,,,মা বলছিলো নেহার একটা ভাই থাকলে ভালো হতো,,,তাই ভাবছি যত তারাতাড়ি সম্ভব নেহার জন্য একটা ভাই নিয়ে আসি। কি বলো?
– আজ আমি শেষ,,সাদিক না না না,,বলছি না,,সাদিক,,
কে শুনে কার কথা। আজ আমি পরিপূর্ণ। যতটুকু চেয়েছিলাম তার থেকেও অনেক বেশি পেয়েছি। আমার ছোট পরিবারটাকে নিয়ে আমি সুখে আছি। আল্লাহর কাছে দোয়া করি এভাবে জেনো সারাটা জীবন কাটিয়ে দিতে পারি।

সমাপ্ত,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here