শুভ্রনীড়,পর্ব:৭+৮

0
704

#শুভ্রনীড়
#পর্ব০৭
#Shamu_Choudhury
সাধারণত দেখতে গেলে বন-জঙ্গলে অনেক অধিবাসী থাকে,সুইসাইড ফরেস্টেও আছে তারাই মূলত আমানকে নীল বিষাক্ত তীর ছুড়ে মারে৷

আমানের জ্ঞান ফিরলে দেখে সে কাঠের বিছানায় শুয়ে আছে। তার সর্বাঙ্গ ব্যাথা। ব্যাথায় কুকড়িয়ে উঠে সামনে তাকিয়ে দেখে কিছু লোক তারা অদ্ভুত টাইপের। আমানের জ্ঞান ফিরেছে তা দেখে তারা নিহঙ্গ ভাষায় বলে উঠে উঠে সে এখানে কি করতে এসেছিল? নিহঙ্গ জাপানের প্রচলিত ভাষা। তারা আরোও বলে এই জায়গা ভয়ানক জায়গা সে কি জানেনা? আমান সেখানে অনেকদিন যাবত থাকার কারণে নিহঙ্গ ভাষা তার রপ্ত ছিল বিধায় সেও তাদের ভাষায় বলে উঠে,,

_আমি এখানে আমার দরকারে এসেছি, তার সাথে দেখা করেই চলে যেতাম।কিন্তু আপনারা আমাকে এখানে এনেছেন কেন?

_আমরা তোমার বিপদ চাইনা তাই এনেছি। তাছাড়া যার খোঁজে এসেছো সেও আমাদের কাছে বন্দি। তার সাথে কথা বলে তোমরা চলে যাও(লোকগুলো আমানকে বলল)

আমান লোকটির সাথে দেখা করে সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ে নেয়। যাওয়ার আগে সে অধিবাসীদের প্রধান কে বলে,,

_আপনারা ওখানে কত দিন হলে আছেন?? আপনাদের থেকে কিছু জানার ছিল।তারপর আমান তাকে ইউভীর সম্পর্কে জানায় সে আরোও জানতে চায় মানুষ কোন কোন কারণে সুইসাইড ফরেস্ট এ যায়??
(পরবর্তীতে আমান সবকিছু শুনে তার শুভ্রনীড়ের দিকে রওনা দেয়)

__এদিকে রাত হয়ে গেছে আমানের খোজ নেই। শ্রাবণের দুশ্চিন্তায় কপালে ভাজ পরে আছে। সে ভাবছে আমান কোথায় যেতে পারে এমন কোন জায়গা নেই সেখানে শ্রাবণ যায়নি সাথে শুভ্রাও গিয়েছিল। আমান যেখানকার কথা বলে ছিল সেখানে গিয়ে জানতে পারে সেখানে আমান যায়নি। সে ভাবে নিশ্চয়ই ইউভী তাকে কিডনাপড করেছে।

শুভ্রা বেল্কুনিতে দাঁড়িয়ে আছে, সব যেন স্তব্ধ, কাদঁতে কাদঁতে চোখ মুখ ফুলিয়ে তুলেছে, সে শ্রাবণ কে বার বার বলেছে প্রতিউত্তর একটাই তার খোঁজ মিলেনি।

শ্রাবণ ভাবে শুভ্রাকে তার সব খুলে বলা দরকার। সে শুভ্রার রুমে এসে দেখে শুভ্রা বেল্কুনিতে দাঁড়িয়ে এক প্রানে তাকিয়ে আছে হয়ত কাদঁতেছে। শুভ্রার কাধে হাত দিতেই শুভ্রা কেঁপে উঠে চট করে পিছন ফিরে,
শুভ্রার চোখে পানি দেখে শ্রাবণ এর বুক ছ্যাত করে উঠে। সেও তো আমানের খোঁজাতে কোন ক্রুটি রাখেনি। শুভ্রার চোখের পানি মুছে দিয়ে বলে,,

__তোকে অনেক কিছু বলার আছে বোন। যা তুই জানিস না। আজ তোকে সব বলল।।

শুভ্রা এখন শুধু তার মনের মানুষের খোজঁ চায়, আর কিছুনা শ্রাবণ এর এই রকম কথা শুনতে মন না চাইলেও সে মুখে বলল
_বলো ভাইয়া, কি বলবা?

শ্রাবণ শুভ্রাকে কিছু বলার আগেই কলিং বেল হঠাৎ করে বেজে উঠে। শুভ্রা মহাআনন্দে দৌড়ে দরজা খুলে দেয়। কিন্তু তার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পরে। এইতো সকালে মানুষ টাকে ভালো দেখলো আর এখন। সাথে সাথে চোখ থেকে পানির ফোয়ারা শুরু হয়ে যায়,,

অপর দিকে,,
____
পুরাতন এক বাড়ির সামনে সামিহা দাঁড়িয়ে যার নাম সুইসাইড হাউজ। এখানে মূলত এক স্বামী আর তার স্ত্রী সুইসাইড করেন। দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত ভূতুড়ে বাড়ি।এইখানে কেউ থাকতে পারেনা, যারাই থাকতে এসেছে তারাই স্বামী আর স্ত্রীর অস্তিত্ব বুঝতে পেরে ভয়ে পালিয়ে গেছে। প্যারানর্মাল অ্যাক্টিভিটিসরা এখানে সে রকম অস্তিত্ব লক্ষ্য করেছে বিধায় এখানে কারোও পদার্পণ করাও মানা।

সেখানে সামিহা রাত ৩টায় একা দাঁড়িয়ে আছে। ইতিমধ্যে কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে আগে এখানে আসলেও আজ যেন তার ভয় বেশি লাগছে ৷চারদিকে শুধুই অন্ধকার, হাতলে যেন নিজেকেও সে খুজে পাবেনা। শিশির পরতেছে তবুও সে ঘেমে একাকার। গায়ে জরানো শাল খুলে গাড়িতে রেখে দেয়। আসার সময় রাস্তার পাশে থেকে কিনেছিল সে,ঠান্ডা লাগবে বিধায় কিন্তু এখন তো সে ঘেমেই যাচ্ছে।
হঠাৎ সে কারো পায়ের শব্দ শুনতে পায়। সাথে পাতা ভাঙার মরমর শব্দ। এখন তার শিরা উপশিরায় ভয় বিরাজমান। তার হাত পা কাপঁতে থাকে না জানি কে আসতেছে অন্ধকারে দেখাও যাচ্ছেনা। হুট করেই তার গাড়িতে থাকা বিদ্যমান বাল্ব গুলি জ্বলে উঠে, সে দেখতে পায় সামনে থেকে কোন মানুষ তার দিকেই এগুচ্ছে। ভয়ে সে চিৎকার দিয়ে উঠলে সামনে থাকা মানুষ টি জোরে এসে তাকে জড়িয়ে ধরে বলে,,

___এত বড় কলিজা তোমার তাতে আবার ভয়ের জায়গাটাও আছে সামিহা??

(সামিহা লোকটির কন্ঠ শুনে বুঝতে পেরে স্বস্তি ফিরে পায়। কিন্তু তার কথা বুঝতে না পেরে বলে সে লোকটিকে জানায় তার কথা সামিহা বুঝতে পারেনি। লোকটি হঠাৎ করেই হিংস্র হয়ে উঠে সামিহার গলা চেপে ধরে আর হিংস্র কন্ঠে বলে উঠে)

_তোর এত বড় কলিজা যে আমার কথা অমান্য করিস? তোকে কি বলেছিলাম সামিহা? লোকে বলে আমার ছায়াটাও হিংস্র এই হিংস্রতা তো তুই ই এনেছিস আমার মাঝে।সেই হিংস্রতার মাঝে তুই শেষ হবিনা এইটা কি মানা যায়??কি দেইনি তোকে তুই সামান্য আমার কথা শুনিস না? তোর জায়গায় অন্য কেউ হলে মেরে দিতাম।

(সামিহা তার কথা শুনে ভীষণ ভয়ে পেয়ে যায় গলা শুকিয়ে উঠে, মুহুর্তে আবার কি যেন মনে পরায় সে রেগে গর্জে উঠে বলে)

_তুই আমাকে দয়া দেখাস? ভূলে যাস না তুই আমার গোলামের মত। আমি ছাড়া তুই কিছুই না। আমি যা বলবো তোকে তাই শুনতে হবে

এই কথাটা শুনে লোকটি ভয়ংকর ভাবে হেসে উঠে, যেন তার হাসি ভূতুড়ে প্রকৃতির সাথে খাপ খেয়ে নিল। সেই লোকটি তার পায়ের কাছে থেকে ধারালো ছুরি বের করে সামিহার কাটা জায়গাতেই আবার চালিয়ে দিয়ে বলল,,

আমার রাজ্যে আমিই একমাত্র হিংস্র রাজা। রাজারা আগে প্রজাই থাকে তাই বলে আমাকে তোর গোলাম ভেবে বড় ভুল করেছিস। সামিহা তার এক হাত দিয়ে আরেক হাত চেপে ধরে আর বলে তোকে আমি মেরে দিবো। আমার প্রধান কে আমি বলে দিবো বাচঁতে দিবেনা তোকে।
এই বলে সামিহা রাগে গজগজ করে যেতে লাগলে____

অপরদিকে
আমানের সারাদিন না খাওয়াতে শরীর দুর্বল হয়ে যায় তার উপর সারা শরিরের ব্যাথার প্রকোপে গাড়ি চালাতে গিয়ে আমানের হঠাৎ করে চোখের সামনে সব ঝাঁপসা হয়ে যায়। গাড়ির টাল সামলাতে না পেরে জোরে ব্রেক মারতেই গাড়ি বড় গাছের সাথে বারি খায় মুহুর্তে আমানের মাথায় আঘাত লাগে। ওখানে যারা ছিল পরে আমান কে হাসপাতালে নিয়ে যায় পরে আমানের কার্ড থেকে তার ঠিকানা পেয়ে তাকে বাসায় আনে।
বর্তমানে শুভ্রা আর শ্রাবণ আমান কে ধরে তার রুমে শুয়ে দেয়। আমানের জ্ঞান নেই বললেই চলে,,,,,

____রাত অনেক গভীর আমান ঘড়িতে দেখে ৪টা ছুই ছুই। আমান আশেপাশে তাকিয়ে দেখে শুভ্রা তার মাথায় হাত রেখে বসে বসে ঘুমাচ্ছে। মাথা প্রচুর ব্যাথা করছে কোনমতে আমান উঠে বসতেই শুভ্রার ঘুম ভেঙে যায়। শুভ্রা হচকচিয়ে উঠে বলে উঠে,,,

__আব আপনার কি কোন সমস্যা হচ্ছে? একা উঠতে গেলেন কেন?? আমাকে বলুন আমি আপনাকে সাহায্য করতেছি। আপনি তো কিছুই খান নি কিছু খেয়ে নিন আমি খাবার আনি (এই সব কথা গড়গড় করে বলে শুভ্রা কিচেনে চলে যায়,,, তার লজ্জার আভাস কাটেনি, এখনও তারা কথা বলেনি কি বলবে ভেবেও পাচ্ছনা তাই খাবারের অজুহাতে কিচেনে চলে আসে আর একটু পর ই সে খাবার নিয়ে দরজার সামনে এসে দারায়,,
কি করবে ভেবেও পাচ্ছেনা। লজ্জা যেন তাকে নুইয়ে দিচ্ছে। রুমে না গেলেও তো না। সে গুটি গুটি পায়ে রুমে ঢুকে প্লেট আমানের কাছে রেখে চলে যাতে চাইলে সে আবার ফিরে কাঁপা কাঁপা গলায় বলে,,
_ খেনে নিন।
আমান মুচকি হেসে বলে
_তুলে খাওয়াবে? একবার খাওয়াও না ছায়াবিনী।

(ছায়াবিনী ডাক শুনে শুভ্রা চোখ তুলে তাকায়। কি বলবে ভেবে পায়না। লজ্জায় বার বার কুকড়ে উঠতেছে। কাঁপা কাঁপা হাতে তার সামনে এক লোকমা তুলে ধরে। আমান কিছু না বলে খেয়ে নেই। এই প্রথম সে কাউকে খাওয়াচ্ছে। তার লজ্জাও লাগছে আবার ভালোও লাগছে।আরেক লোকমা তুলে খাওয়াতেই দুজনার চোখাচোখি হয়,, শুভ্রা লজ্জা পেয়ে নিচে তাকায়। কেন জানিনা খুব বেশি লজ্জা লাগছে।এর মাঝেই আমান খাবার মুখে নেওয়ার বদলে তার হাতে আদরের স্পর্শ একে দেয়। হঠাৎ আকস্মিক ঘটনায় শুভ্রা লজ্জায় চুপসে যায়,যেন সারা শরীরের শিরায় শিরায় যেন লজ্জার আভা দেখা দেয়। কি বলবে আমান বুঝতে পেরে হাত থেকে প্লেট নিয়ে বলে,,

_ তোমার নাম ছায়াবিনী না হলে লজ্জাবতী রাখা লাগতো।এত লজ্জা পাও কেন?
(শুভ্রা ভাবে এই মানুষটার কথায় কোন রসকস নাই। কি ভালভাবে বলবে তানা আরোও লজ্জা দিচ্ছে।শুভ্রা কিছু বলার আগে আমান আবার বলে)

_তুমি খেয়েছো?? তোমাকে ছাড়া তো খাওয়া যাবেনা ছায়াবিনী।

(এই বলে শুভ্রার মুখে এক লোকমা তুলে দেয়)

(চলবে____)

#শুভ্রনীড়
#পর্ব০৮
#Shamu_Choudhury
হাল্কা মৃদু বাতাসের সাথে শুভ্রার কেশগুলি দোল দোল দুলোনি খেলছে। শুভ্রা শ্রাবণের রুমের বারান্দার রেলিং ধরে বাহিরে তাকিয়ে আছে। বড্ড সামিহার কথা মনে হচ্ছে না জানি সে কোথায়? কেনই বা চলে গেল সে? চলে গেল কিন্তু ফিরে কেন আসলোনা?? তার কাছে সব থেকেও যেন সব নেই। এই সব ভাবতে ভাবতে সে নিচে ফুল বাগানে চলে গেল,,

_কয়েকটা ফুল তুলে দিবেন??
(শুভ্রা নিচে এসে দেখে আমান গাছগুলাতে পানি দিচ্ছে। ফুলের সৌন্দর্য দেখে সে নিজেকে আটকাতে পারেনা৷ তার পরেও সে জবাবের আশায় আমানের দিকে তাকিয়ে আছে।আমান ভাবেইনি তার ছায়াবিনী এখানে আসবে।সে তার থেকে চোখ ফিরিয়ে মুচকি হেসে বলল,,

__শুনেছি ফুল গাছে মানায়,ছায়াবিনী
হাতে মানায় না।
শুভ্রা কিছু বললো না, সে মুগ্ধ হয়ে আমানের হাসি দেখলো আজ তার হাসিটা যেন অন্য রকম ছিল। ডান গালে তার টোল৷ ইশশ ছেলেদের ও টোল পরে??? তার টোল পরলে কি হত? আমান তাকে বলত,,
ছায়াবিনী তোমার গালের টোল দুইটা আমাকে ভীষণ ভাবে টানে। আর তখন শুভ্রা লজ্জায় কুকরিয়ে উঠত।
এসব ভেবেই সে হেসে উঠে। আমান গাছের দিকে তাকিয়ে ছিল যার কারণে সে বুঝতে পারেনা। আর শুভ্রা এও ভাবলো আমান ভূল বলেনি আসলেই তো গাছ থেকে তুলে ফেললে অযাথা নষ্ট হবে তার থেকে গাছেই থাক।
শুভ্রা কিছু না বলেই রুমের দিকে রওনা দেয়। নিজে রুমে ঢোকার আগেই আমান তাকে জড়িয়ে তার বুকে আগলে নেয়। আর বলে,,,
__ছায়াবিনী, এ ফুলের সুগন্ধ উদ্যানটিকে কেবল আনন্দময় স্থান করে তোলে। আমার মন কে নয়। আমার মনস্থানের আনন্দের খোরাক শুধু আমার ছায়াবিনী মেটাতে পারে বৈকি আর কেউ না। সেজন্য এ ফুল শুধু তোমারি জন্যে। ফুলকে গ্রহণ করবেনা?

(এভাবে হঠাৎ জড়িয়ে ধরার শুভ্রা ভয় পেয়ে যায়।পরে আমানের কথা শুনে লজ্জায় লজ্জাবতী হয়ে যায়। আমানের কথা গুলো যেন তার মনে ধরে উঠে, কি বলবে বুঝতে পারেনা। সে শুধু ফুলটা নিয়ে নেয়। আমান তার লজ্জার আভা বুঝতে পেরে কিচেনে চলে যায় আর ভাবে, তার ছায়াবিনী এত লজ্জাবতী কেন? কোথায় সে নিজেথেকে তাকে রোমান্স শিখাবে তা না। নিজে তো রোমান্স পারেইনা বউটা তো নাই ই। পরে ভাবে সে শ্রাবণ এর থেকে শিখে নিবে এই ভাবতে ভাবতে কিচেনে যায়___

_____অপরদিকে,,,,
সামিহা লোকটিকে ভয় দেখিয়ে চলে আস্তে লাগলে লোকটি সামিহাকে ক্লোরোফর্মের রুমাল শুকিয়ে অজ্ঞান করে সুইসাইড হাউজের ভিতর নিয়ে যায়।
সামিহার জ্ঞান ফিরলে দেখে সে সুইসাইড রুম টার ভিতর পরে আছে। সে আগে এখানে অনেকবার এসেছে কিন্তু ভিতরে আসার সাহস সে করেনি৷ সামনে পরে থাকা মাথার খুলি দেখে তার হৃৎপিন্ড লাফিয়ে উঠে। সে এসব দেখায় দক্ষ হলেও এতদূর পর্যন্ত ভেবে দেখেনি সে শুধু লাশ গুম করতো। হাড়গুলো কে কাছে থেকে দেখেনি তাও একটা না হবে শ-খানেক।এত গুলো একসাথে দেখেই সে ভয় পেয়ে ঘাবড়ে যায়৷ তাকে ঘাবড়াতে দেখে পাশে টুলে বসে থাকা ইউভী ডেভিল স্মাইল দিয়ে বলে,,,
__হোয়াট হ্যাপেন্ড,বেইবি??

(হঠাৎ কারো কন্ঠে সে এমন ভয় পেয়ে চিৎকার করে উঠে, উচ্চস্বরে ইউভী আবার বলে উঠে)
_ভয় পেয়োনা জান এইগুলা সব লাশকে তো তুমি এখানে এনে তোমার প্রধান কে দিয়েছো।এখন সব এক জায়গায় দেখে ভয় কেন পাচ্ছো বলো??

__ আমার যা বলার আমি প্রধান কেই বলব তোমার এত সাহস যে তুমি কি আমানের বাসায় যাও???তোমার এত সাহস কিভাবে হলো? আর তুমি অই জায়গার খোঁজ কিভাবে পেলে?(সামিহা বলে উঠল)

__তোর সাহস দেখে অবাক হচ্ছি। তুই খোঁজা দিতে দিতে উধাঁও আর আমাকে বলতেছিস?? এই বলে ইউভী তার হাতে থাকা ছুরি সামিহার কাটা যায়গায় আবার চালিয়ে দেয়।

(পরপর তিনবার লাগায় সামিহা অনেক জোরে আর্তনাদ করে উঠে, পাশ থেকে রাগী কন্ঠে তাদের প্রধান বলে উঠে)
_ওকে ছেড়ে দে ভী(ইউভী),, তুই মনে হয় ভুলে যাচ্ছিস আমার কাছে তোর থেকে অই বেশি আপন আমার রক্ত তার শরীরে আছে।
আর বেটি তুই তাকে জানিয়ে দেসনি কেন? আমি বলেছিলাম তার জন্য অন্য গুপ্তচর খুজিঁ কিন্তু তুই বলেছিলি সে কাজ তুই নিজে করতে পারবি? তাহলে???

__আসলে প্রধান শ্রাবণ খুব চালাক। এই ইউভী ওখানে গিয়েছিল সে শুভ্রা কে বিয়ে করতে চায় তাই আমি চলে আসি এখানে আর তাছাড়া আমার কাছে কোন পথ ছিলোনা তাই খবর পাঠাতে পারিনি। মাফ করবেন।

প্রধান সামিহাকে জানায় ইউভী তার সাথেই ছিল সে কোথাও যায়নি।এইটা হয়ত শ্রাবণ দের কোন পরিকল্পনা।

(ইউভী সামিহাকে ঢাক্কা দিয়ে চলে যায়, আর ভাবে সামিহা আগে এসেছিল তাই সে আপন আর আমি এতকাজ করে দিচ্ছি এমন কি নিজের আপনজন দের মেরে ফেললাম আর এই ফল পেলাম৷ তোদের সবাই কে তুরী মেরে মেরে ফেলতে পারি কিন্তু মারবোনা কারণ তোদের মারলে আমার স্বার্থ হাসিল হবে না এই বলে ইউভী সুইসাইড হাউজ থেকে বেরিয়ে চলে যায়।

সে বেড়িয়ে গেলে তাদের প্রধান সামিহাকে বলে,,
_শোন বেটি,, ভী তোর পথের কাটা। তার থেকে আমাদের কার্য হাসিল হলেই তাকে মেরে ফেলবি। একদম বাচিঁয়ে রাখা যাবেনা তাকে
_আমি যে তাকে মারতে পারবোনা প্রধান,,
শত হলেও তাকে ভালোবাসি আমি।(সামিহা করুণ চোখে তার দিকে তাকিয়ে বলে)

_কি বলতে চাচ্ছিস তুই? এত দূর এসে নিজের স্বপ্ন কে বলি দিবি?? এইটা আমি তোর থেকে আশা করিনি(ক্রোধে প্রধান বলে)

_প্রধান,মার্জনা করবেন আমি বলেছি তাকে আমি মারতে পারবোনা,কিন্তু তাকে তো অন্যের সাহায্যে মারতে পারবো?? এইবার আমাকে অনুমতি দিন সেখানে আমাকে ফিরতে হবে জানতে হবে তারা কি পদক্ষেপ নিচ্ছে। এই বলে সামিহা রওনা দেয় শ্রাবণ দের উদ্দেশ্য,,,
____
অপরদিকে

___আমান এই নে ফুটেজ আগের টার প্রব্লেম হয়েছিল আমি ঠিক করে এনেছি। চালিয়ে দেখ কি দেখা যায়।

(সিসিটিভি ফুটেজ এ দেখায় খুনির শুধু পা উঠেছে খুনি এতদুর থেকে আলভী রাহমান কে ঝুলিয়েছিল যে সেখানে সাধারণ মানুষ দের উঠা অসম্ভম। সে আরো খুনের ফুটেজ দেখে সব গুলাতেই তাই। আলভী রাহমানের ফুটেজ আরেকবার দেখার সময় আমান খেয়াল করে খুনির পায়ের এক সাইড দেখা যাচ্ছে। আমান তা দেখে স্তব্ধ হয়ে যায়,, সে বার বার ফুটেজ টা দেখে সে ভূল দেখছেনা তো??? এক সময় আমান ডুকরে কেদেঁ উঠে। শ্রাবণ বুঝে উঠতে পারেনা আমান হঠাৎ এই রকম কেন করতেছে___

চলবে???

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here