#শিশির_বিন্দু❤️
লামিয়া সুলতানা সিলভী ( লেখনীতে)
পর্বঃ৯
“মনের আকাশে যে মেঘগুলো জরো হয়ে আছে সেগুলোর নিরাময় আমার জানা নেই,, হয়তো কখনো জানাও হবে না! কে জানতো আমার জীবন এমন বিষাদে ভরে যাবে? যার স্মৃতি থেকে পালাবার জন্য আমি অন্য একজনকে আপন করে নিয়েছিলাম আজ ভাগ্য আমায় আবার তার কাছেই ফিরে দিলো! আমার ভাগ্যও আমার সাথে বেইমানী করে,, হায়রে জীবন!”
বিন্দু মাত্র ঘুম থেকে উঠে বিছানায় বসে জানালা দিয়ে তাকিয়ে বিকেলের ব্যাস্ত নগরী দেখছে আর কথাগুলো ভাবছে! ধানমন্ডি-১২ তে আবাসিক ভবনের পাশে বিন্দুদের ফ্লাট! পনেরো তলার এপার্টমেন্টের বিন্দুরা থাকে বারো তলায়! হ্যা, বিয়ের ভেজাল শেষ করে সাতদিন পর কালকেই বিন্দুরা চলে এসেছে ঢাকায়! বিন্দুর কোন কষ্ট করতে হয়নি,, ফ্লাট টা আগের থেকেই সাজানো গোছানো ছিলো! তবে, সবকিছুই মেঘলার মনের মতো করে সে সাজিয়েছিলো! মেয়েটার আর ভাগ্য হলোনা স্বামী-সন্তান নিয়ে এখানে ফেরার! মেঘ ভূমিষ্ঠ হবার ছয় মাস আগেই মেঘলাকে তার বাবা-মা সহ শ্বশুর-শ্বাশুড়ী এসে নিয়ে গিয়েছিলো! সেই যে যাওয়া হলো আর ফিরেই আসতে পারলো না! বিন্দু একবার মেঘের দিকে তাকালো,, বাচ্চাটা কি নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছে! সে হয়তো জানেও না সে তার জীবনের সবচেয়ে ইমপ্রটেন্ট মানুষটিকে হারিয়ে ফেলেছে! দুনিয়ার সবাই যতই আপন হোক একটা সন্তানের কাছে বাবা-মায়ের চেয়ে বেশি আপন কেও হতে পারে না! বাবার চেয়েও মায়ের গুরুত্ব টা বেশি বাচ্চাদের জন্য কারণ একজন বাবা সন্তানকে যত আপন করে নিতে না পারে তার চেয়ে দ্বিগুন বেশি মা আপন করে নেয়! আর বাচ্চারাও তাই সবচেয়ে প্রথম মায়ের স্পর্শটাই গভীরভাবে পায়,,মা যাকে যাকে চিনিয়ে দেবে বাচ্চাটাও তাকেই সেভাবে চিনবে! কিন্তু মেঘ? ওর জীবন হয়তো ভিন্ন ছিলো,, তাই তো মায়ের সান্নিধ্য পাওয়ার আগে দাদী, নানী,খালার সান্নিধ্য আগে পায়!..
বিন্দু একমুখ হাসি নিয়ে রুদ্রা আর মেঘের কাছে যায়! বাচ্চা দুটো কি শান্তভাবে ঘুমিয়ে আছে,, অবশ্য বিন্দুও ঘুমিয়েছিলো লাঞ্চ শেষে একটু আগেই উঠেছে! বিন্দু গিয়ে ঘুমন্ত মেঘকে আদর করে অনেক! বিন্দুর কেনো জানি মেঘের প্রতি প্রথম দিন থেকে এক অদ্ভুত মায়ায় পড়ে গেছে,, তাইতো মেঘের মা হতেও দ্বিধাবোধ করলো না! প্রথমে অনেক বুঝিয়ে না করে দিয়েছিলো পরে বাচ্চাটার কথা ভেবে আবার হ্যা বলে দেয়!..
একমুখ হাসি আর লম্বা একটা ঘুম যেকোন কিছুর সেরা নিরাময় হতে পারে! বিন্দুর এতোক্ষণ মন খারাপ থাকলেও এখন মেঘ আর রুদ্রাকে দেখে মন ভালো হয়ে যায়! বিন্দু গিয়ে মেঘের সারামুখে চুমুতে ভরিয়ে দেয়, তারপর রুদ্রাকে! ভেতরে এক অদ্ভুত শান্তি কাজ করছে ওর মনে! সে কখনো এই ছোট্ট বাচ্চাটাকে কষ্ট দিবে না,, এমনকি জানতেও দিবে না বিন্দু মেঘের সৎ মা! জোরে একটা নিশ্বাস নিয়ে তার সিল্কি চুলগুলো হাতখোপা করে নিলো,,সামনের কাটা ছোট চুলগুলো কানের পিছে গুজে ফ্রেশ হতে ওয়াশরুমে যায়! বেশ কিছুক্ষন পরে টাওয়েল হাতে মুখ মুছতে মুছতে বের হয় ওয়াশরুম থেকে! তখনই বিন্দুর ফোন বেজে ওঠে,, হাতে নিতেই দেখে দু’বার মিসডকল উঠেছে শিশিরের নাম্বার থেকে! বিন্দু কল ব্যাক করতে যাবে তখনই আবার কল আসে,,,
বিন্দুঃ হ্যালো,,,
শিশিরঃ কখন থেকে কল দিচ্ছি ধরছো না কেন? আমার সাথে কথা বলতে যদি এতো সমস্যা হয় তাহলে বলে দাও!..
বিন্দুঃ আপনে অতিরিক্ত বেশী বোঝেন যেটা আমার মোটেও পছন্দ না! আমি ওয়াশরুমে ছিলাম তাই রিসিভড করতে পারিনি!..
শিশিরঃ আমি বেশী বুঝি, নাকি তুমি বোঝো? তোমার বেশী বোঝার জন্যই আজ আমাদের এই অবস্থা!..
বিন্দুঃ ( ভ্রুঁ কুচকে) ওয়াট? আমার বেশী বোঝার জন্যই আজ আমাদের এই অবস্থা মানে? কি বোঝাতে চাচ্ছেন?
শিশিরঃ নাথিং,, মেঘ-রুদ্রা ঠিক আছে?
বিন্দুঃ হুম..
শিশিরঃ আর তুমি?
বিন্দুঃ আমিও..
শিশিরঃ কি করছে ওরা?
বিন্দুঃ ঘুমোচ্ছে..
শিশিরঃ ওকে,, মেইন ডোর ভালো করে লাগিয়ে রেখো,, আমি ৭ টার মধ্যেই আমি চলে আসবো! আর কিছু কি লাগবে?
বিন্দুঃ হুম,, বাবুর সেরেলাক ফুরিয়ে গেছে সেটা আনতে হবে!.
শিশিরঃ আচ্ছা আমাকে ওয়াটস অ্যাপে পিক তুলে দাও,, আমি তো জানিনা মেঘ কোনটা খায়,,এতোদিন তো মেবি আব্বুই নিয়ে আসতো!..
বিন্দুর একবার বলতে ইচ্ছে করলো কেমন বাবা আপনে নিজের সন্তান কি খায় না খায় জানেন না! কিন্তু ওর এই লোকটার সাথে বেশী কথা বলতেই ইচ্ছে করেনা! তাই আর কথা না বাড়িয়ে হ্যা সম্মতি জানালো,,,
বিন্দুঃ আচ্ছা দিচ্ছি..
শিশিরঃ আর রুদ্রা কিছু খাবে কি? কি নিয়ে আসবো ওর জন্য?
বিন্দুঃ রুদ্রা ঘুমোচ্ছে,, ও উঠলে কল দিয়ে জানাবো! রাখছি..
শিশিরঃ ওকে বাই…
বিন্দু কল কেটে মেঘের জন্য ফিডার বানাতে চলে যায় কিচেনে,, দুধ গরম করে, ঠান্ডা করে মেঘকে খায়িয়ে আবার কিচেনে যায় রুদ্রার জন্য কিছু বানাতে!..
আর এদিকে,,,
শিশির অফিসের কাজে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে,,,সামনেই ওদের কোম্পানি একটা বড় ডিল ফাইনাল করবে আর এর সব দায়িত্ব পড়েছে শিশিরের ওপর! কারন শিশির এই কোম্পানির ডিরেক্টর আর মালিকের সবচেয়ে বিশ্বস্ত ইমপ্লয়ে,, নিজের ছেলের মতোই শিশিরকে দেখে সে! এতে অবশ্য অনেকেই শিশিরকে দেখতে পারে না! অফিসে ওর শত্রুও আছে অনেক! শিশির কাজ করছিলো তখনি ওর এক মেয়ে কলিগ চলে আসে,,,
তানিয়াঃ কি খবর শিশির? শুনলাম তুমি নাকি বিয়ে করেছো? ( ভেতরে চলে এসে)
শিশিরঃ কারোর কেবিনে ঢুকতে পারমিশন লাগে,, আর কতবার বলবো?
তানিয়াঃ তোমার কাছে আসতেও আমার পারমিশন লাগবে? আমি তো তোমার কাছে এমনিই আসতে পারি! ( শিশিরের চেয়ারের কাছে গিয়ে)
শিশিরঃ স্টপ তানিয়া,,আর আগাবে না! নিজের লিমিটের মধ্যে থাকো,, লিমিট ক্রস করো না তোমার জন্য কিন্তু ভালো হবে না!..
তানিয়াঃ তাই,, তো কি খারাপ হবে শুনি? ( আরো এগিয়ে)
শিশির এবার লাফ দিয়ে উঠে দূরে সরে যায়,, এই মেয়েটা যথেষ্ট গায়ে পড়া টাইপের! অনেক ছেলেদের সাথেই সম্পর্ক আছে,,আর সেটা অবশ্যই ভালো কোন সম্পর্ক না! কিন্তু শিশির আর এই কোম্পানির মালিকের ধারের কাছেও ঘেষতে পারেনা! কোম্পানির মালিক যে,, তার যথেষ্ট বয়স আছে কিন্তু এই মেয়ে কি বয়সের কোন ডিফেরেন্ট বোঝে? পুরুষ হলেই হলো আর যেখানে এতো বড় কোম্পানির মালিক সে! আর শিশিরকেও তাই হাত করতে চায়! যেহেতু মালিকের সবচেয়ে প্রিয় ইমপ্লয়ে শিশির আর ওর ওপরই কোম্পানির সব দায়িত্ব তাই!..
শিশিরঃ কি করবো? তোমার হাসবেন্ডকে বলে দেবো,,,
আর বলতে দিলো না তানিয়া হেসে কুটি কুটি হয়ে পড়ে,,,
তানিয়াঃ তুমি কাকে বলবে? সিরিয়াসলি শিশির তুমি ওই ভেড়াকে বলবে,, ( আবারো অট্ট হাসি দিলো)
শিশিরঃ একটা মানুষ কতটা নিচু প্রকৃতির হলে নিজের হাসবেন্ডকে এসব বলতে পারে,, ইউ আর আ পোক্সি! আমি চাইলেই তোমাকে চাকরী থেকে বের করে দিতে পারি,, মালিক না হলেও এতোটুকু ক্ষমতা আমার আছে! অতএব,, সময় থাকতে শুধরে যাও, অনেক পাপ করেছো জীবনে! আল্লাহর কাছে কি জবাব দিবে?
তানিয়াঃ ( তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে) আমার কবরে আমি যাবো, আর তোমার কবরে তুমি যাবে! সো, নিজের চর্কায় তেল দাও!..
শিশিরঃ বেড়িয়ে যাও এখান থেকে,, আই সে গেট লস্ট মাই কেবিন! রুহান রুহান,,( শিশির তার এসিসটেন্ট কে চিল্লিয়ে ডাকে)
তানিয়াঃ যাচ্ছি,, কাওকে ডাকতে হবে না আমি এখানে থাকতে আসিনি! আর হ্যা কি যেনো বলছিলে,, আমি পাপ করেছি? ( বাঁকা হাসি দিয়ে) আমি তাও একটা বিয়ে করেছি আর তুমি কি করলে দু দুটো বিয়ে করলে! হা হা হা,,,পাপ তুমিও কম করোনি শিশির!..
রুহান এসেছে আর এসেই বুঝেছে শিশির কেনো এতো জোরে ডাকলো,,
রুহানঃ ম্যাম,,চলেন স্যারের মাথা এখন গরম আছে কিছু বলেন না! পরে কথা বলে নিয়েন!..
তানিয়া চলে যেতে নেয়,,,
শিশিরঃ ওয়েট আ মিনিট তানিয়া,, আমি দুটো বিয়ে করেছি তাইনা? হ্যা আমার বাচ্চার মায়ের দরকার ছিলো তাই বিয়ে করেছি,,নিজের জন্য করিনি! তুমি নিজের সাথে আমাকে তুলনা করছো কোন সাহসে! জেনে রাখা ভালো,, আমি বিয়ে করেছি তোমার মতো কোন অবৈধ সম্পর্কে জরায় নি,,নেক্স টাইম ভেবে চিনতে কথা বলবে! নাউ মুভ ফ্রম মাই ফ্রন্ট!..
তানিয়া অপমানবোধ করে রাগে ফুশতে ফুশতে বেরিয়ে গেলো আর মনে মনে ভাবলো কিভাবে শিশিরের ক্ষতি করা যায়!..
শিশির বিরক্ত হয়ে আবার কাজে মন দিলো,,,তখন ওর আবার ফোন বেজে উঠলো! তাকিয়ে দেখে “বিন্দুবালা” দিয়ে সেভ করা নাম্বার থেকে কল এসেছে…
শিশির ফোন ধরে,,,
শিশিরঃ হ্যা বিন্দু বলো,,( ফোন কান আর কাধের মাঝে নিয়ে হেলান দিয়ে)
রুদ্রাঃ বাবাই,, তুমি কি করো?
শিশিরঃ কে আমার রুদ্রাণী? কাজ করছি সোনা,, তুমি কি করছো?
রুদ্রাঃ আমি তো ঘুমুচ্ছিলাম,,একটু আগে উঠলাম! তুমি কখন আসবে?
শিশিরঃ তাড়াতাড়িই চলে আসবো,, ভাই কি করে?
রুদ্রাঃ ভাই এখনো ঘুমোচ্ছে,,,
শিশিরঃ ওকে বাবা,, তুমি কি কিছু খাবে? আমি আসার সময় নিয়ে আসবো!..
রুদ্রাঃ হুম,, চকলেট আনবে অনেকগুলো,, বার্থ্রেডে কেক আনবে আর কোকো-কোলা আনবে!..
শিশিরঃ আচ্ছা আনবো,, এখন রেখে দিচ্ছি,, বাবাই কাজ করবে কেমন? আর ভাইকে দেখে রেখো!..
রুদ্রাঃ আচ্ছা..
রুদ্রা ওর মায়ের দিক তাকিয়ে একটা ভুবন ভুলানো হাসি দিলো! এতোক্ষণ বিন্দু রুদ্রার পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলো,,,
বিন্দুঃ কেক আনতে বললে কেনো? গতবার কেক খেয়ে কি হয়েছিলো মনে নেই আবার হসপিটালে এডমিড হতে চাও?
রুদ্রাঃ মাম্মা আমার খেতে ইচ্ছে করছে,, বেশি খাবো না প্রমিস,, একটু একটু করে খাবো! সত্যিই বলছি…
বিন্দু কিছু না বলে কিচেনে চলে যায়,,,
রুদ্রাঃ ও মাম্মা তুমি কি রাগ করেছো? আছা ঠিক আছে খাবো না বাবাইকে না করে দিচ্ছি..( মন খারাপ করে)
বিন্দুঃ না থাক আমি রাগ করিনি,, এই নাও তোমার ফেবেরিট পিঁৎজা!..
রুদ্রার জন্য পিঁৎজা আর নিজের জন্য কফি বানিয়ে এনে,,,
রুদ্রাঃ ওয়াও তুমি পিঁৎজা করেছো,, থ্যাংক ইউ মাম্মা.. ( বিন্দুর গালে চুমু দিয়ে)
বিন্দুও ঠোঁট প্রসারিত করে তারপর জরিয়ে ধরে চুমু দেয়,,,
বিন্দুঃ অনেক আদর হয়েছে এবার ভাইকে ডেকে উঠাবো,, তুমি এখানে বসে খাও!..
রুদ্রা খেতে থাকে আর বিন্দু গিয়ে মেঘকে তুলে নেয়! তারপর ওকে কিছুক্ষন আদর করে ফ্রেশ করিয়ে দেয়!..
বিন্দুঃ ছাদে যাবে রুদ্রা?
রুদ্রাঃ হুম…( খেতে খেতে)
বিন্দুঃ আচ্ছা খেয়ে চলো…
বেশকিছুক্ষণ পর বিন্দু, মেঘ আর রুদ্রাকে নিয়ে ছাদে যায়,,,
ছাদে গিয়ে দেখে একদল ভাবী টাইপের মহিলাগুলো খোশ গল্পে মেতে আছে! বিন্দুর এগুলো কোন কালেই পছন্দ ছিলো না তাই এদের থেকে কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে রুদ্রা আর মেঘকে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে!..
কিছুক্ষন পর এক মহিলা বিন্দুকে ডাক দিলো,, বিন্দু একটা জোরে শ্বাস নিয়ে তাদের সামনে যায়!..
১ম মহিলাঃ তুমি কি এখানে নতুন? আগে তো কখনো দেখিনি,,আর আমাদের এপার্টমেন্টে কোন নতুন পেইন গেস্ট এসেছে বলে তো জানিনা! কবে এসেছো?
বিন্দুঃ জ্বি কালকে..
২য় মহিলাঃ কত তলায়?
বিন্দুঃ বারো,, 6A তে..
৩ য় মহিলাঃ এই রিতু ভাবী 6A তে মেঘলা ভাবী থাকতো না? ( ১ম মহিলাকে)
রিতুঃ হুম.. মেঘলা ভাবী চলে যাবার পর তো শিশির ভাই একাই থাকতো.. সে কি তাহলে বাসা ছেড়ে দিয়েছে নাকি!..
৪র্থ মহিলাঃ না শিশির ভাইয়া কে তো কালকেই দেখলাম.. ( শিশিরদের ফ্লোরেই থাকে)
বিন্দুঃ না.. আমি ওনার দ্বিতীয় স্ত্রী- মিসেস বিন্দু আহমেদ…
সবাই তো অনেক অবাক হয়ে যায়…
শাপলাঃ কি বলেন? শিশির ভাই বিয়ে করলো কবে?( ২য় মহিলা)
বিন্দুঃ সাতদিন আগে আমাদের বিয়ে হয়েছে..
রিহাঃ ওহ আচ্ছা.. তো এই দুইটা কি আপনার বাচ্চা? আপনার ছেলে-মেয়ে দুজনই অনেক কিউট..(৪র্থ মেয়ে) ( মেঘকে কোলে নিয়ে)
বিন্দুঃ হ্যা.. ও রুদ্রা আর ও মেঘ! শিশির আর মেঘলার সন্তান মেঘ! এখন আমারই ছেলে…
রায়নাঃ তো আপনার আগের হাসবেন্ড কি করতো? ছেড়ে দিয়েছে কেনো?
বিন্দুঃ রুদ্রা সোনা,, বাবা যাও তো ওই বাচ্চাগুলোর সাথে খেলো!..( রুদ্রা যাওয়ার পর)
আমার আগের হাসবেন্ড মারা গিয়েছে ছেড়ে দেয়নি,, কারোর সম্পর্কে না কিছু বলা টা অন্যায়!..
শাপলাঃ হুম,, সে কি করতো? ( ২য় মহিলা)
বিন্দুঃ ( বিরক্ত হয়ে) আমার হাসবেন্ড মিস্টার রৌদ্দুর মাহবুব রুদ্র জাহাঙ্গীর নগর ইউনিভার্সিটির ইংলিশ লেকচার ছিলো! দুই বছর আগে কার এক্সিডেন্টে মারা গিয়েছে,, আর কিছু?
রিতুঃ ২ বছর হলো বিধবা হয়েছেন আর এতো তাড়াতাড়িই বিয়ে করলেন? স্বামীর প্রতি ভালোবাসা ছিলো না নাকি?
বিন্দুর এবার মেজাজ খারাপ হয়ে যায়! উঠে দাঁড়িয়ে রিহার কাছে থেকে মেঘকে নিয়ে,,
বিন্দুঃ দেখেন ভাবী,, আমি আমার পারসোনাল মেটার নিয়ে কারোর সাথে ইন্টারফেয়ারে করতে মোটেও পছন্দ করি না! তাই আপনাদের এতো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবো না!..রুদ্রা মাম্মা চলে এসো আমরা নিচে যাবো!..
রুদ্রাঃ মাম্মা আরো একটু পরে যাইনা? মাত্র খেলা শুরু করেছি!
বিন্দুঃ আমি বলছি চলে এসো..
রিহাঃ বিন্দু ভাবী রাগ করবেন না! আসলে,,,
বিন্দুঃ আমি নিচে যাচ্ছি,, বাই! পরে আবার দেখা হবে,, সবার সাথে!..
#চলব…
[ আজকের পর্বটা খুব একটা ভালো হয়নি জানি,, আমি কোন আইডিয়া পাচ্ছি না কিভাবে সাজাবো,, আসলে কোন আইডিয়া ছাড়াই গল্পটা লেখা শুরু করেছিলাম! কারোর কাছে কোন আইডিয়া থাকলে বলতে পারেন যারটা ভালো লাগবে পরের পর্ব সেভাবে সাজাবো..হ্যাপি রিডিং]