শত_ঘৃণার_পরেও_ভালোবাসি (এক ভালোবাসার গল্প) Part.31 (শেষ পর্ব)

0
2811

শত_ঘৃণার_পরেও_ভালোবাসি (এক ভালোবাসার গল্প)

Part.31 (শেষ পর্ব)
#Maishara_Jahan

,,আল্লাহ,, তুই আর তোর কথা। আমি খাবার অর্ডার করছি।
,হুমম সাওয়ার নিয়ে আসছি আমি।
,আমিও।

দুজনে গোসল করে খেয়ে দেয়ে সোজা ঘুমাতে যায়।

ঘুমাতে ঘুমাতে কখন যে সকাল হয়ে গেলো সেটা কেও বুঝতেও পারেনি। আহান আর রিমান খুব সকাল সকাল উঠে বিয়ের সব আয়োজন করে। সবাই অনেক হেপি। কাজের ব্যস্থার মাঝে আহান আর রিমান রুহি আর দিয়ার সাথে কথা বলার ও সুযোগ পায়নি।

বিয়েটা বিকেলের মধ্যে পড়ানো হবে। তাই বিকেলে আহান আর রিমান খয়েরী আর গল্ডেন কালারের শেরওয়ানি পড়ে। দুজনে গাড়িতে উঠে।

আহান,,,,,,, গাড়িটা একটু বেশি সাজানো হয়ে গেছে না, সব ফুল লাগিয়ে দিয়েছে নাকি।

রিমান,,,,,,, আমি বলেছি বেশি ফুল দিয়ে সাজাতে।

আহান,,,,, কেনো।

রিমান,, আরে একটা জামাই গেলে হালকা ভাবে সাজানো হতো।এখানে তো দুটো জামাই তাই ডাবল ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে, আর কিছু বান্দর পিচ্ছি আছে যারা বিয়ের গাড়ি দেখলে ফুল টান দিয়ে রেখে দেয়। এখন অনেক গুলো ছিড়ে ফেললেও বুঝা যাবে না।

আহান,,,,,, বাচ্চারা ভালো হয় তারা এমন ভাবে ফুল ছিড়বে না।

রিমান,,,,,,বাচ্চা যে কতো ভালো হয় তা আমার জানা আছে। এক কালে তো আমিও বাচ্চা ছিলাম।

আহান,,, তুই এমন করতি নাকি।

রিমান,,,,,,, কতো করেছি, সবচেয়ে বেশি ফুল ছিড়ে নিয়ে আসতাম আমি।

আহান,,,, ওহহ তাহলে তুই ও বান্দর ছিলি।

রিমান,,,,,, নাহ আমি এখনো আছি,, আমার তো নিজের বিয়ের ফুল নিজের ছিড়তে মন চাইছে।

আহান,,,,, তুই আর তোর কথা।

রিমান মন খারাপ করে বলে,, ইশশশ আজ সারা দিন কথা বলতে পারিনি বউটার সাথে।

আহান ও মন খারাপ করে বলপ,,,, আমি ও তো,, আচ্ছা কোনো ব্যাপার না বিয়ের পড়ে করিস।

রিমান,,,,,,, ঐটা তোর বলা লাগবো না,, কিন্তু আমার শরম করতাছে।

,,,,, মানেহহ।

,,,,মানে আজ আমার বিয়ে না তাই, আজ আমার বিয়ে ভাবতেই লজ্জা লজ্জা লাগছে ইশশ,,, কতো স্বপ্ন ছিলো বিয়ে হবে, বাসর হবে, বাচ্চা হবে।

আহান,,,,,, চুপ চুপ,, তোর ইমোশন রুহিকে দেখাস আমাকে না।

,,,,ইশশশ আমার না কেমন কেমন লাগতাছে।

,,,, এতো বেশি এক্সসাইটেট হওয়ার দরকার নেয়।

বলতে বলতে আহান বাসায় চলে আসে। দুজনে এক সাথে নামতেই সবাই দৌড়িয়ে আসে, আর রিমান ভয়ে আহানকে ঝাপটে ধরে ছিলো।

রিমান,,,,, এ ওরা যেমনে আসছে যেনো মনে হয়চ্ছে আমরা ওদের কি চুরি করে নিয়ে গেছি। ঐ গুলো আবার ফিরত দিতে আসছি।

আহান,,,,,চুপচাপ দাঁড়া না ভাই।

রিমান,,,,,, ঠিক আছে, কোনো ব্যাপার না।

আহানের মা বরণ করে। সব শালীরা টাকা চাইছে।

রিমান,,,,,, তা কতো লাগবে আপনাদের।

,,,,,,, দুজনে মিলে মাত্র এক লক্ষ দিলেই হবে।

রিমান,,,,,,, মাত্র,,,এক লক্ষ তোমাদের মাত্র মনে হয়। এতো পারবো না৷ কমাও কিছু।

আহান,,,,,, আরে বাদ দে না,,চাইছে যখন দিয়ে দে না।

রিমান,,,,,,, আরেক দিন কেও তোর বউকে চাইলে তুই কি দিয়ে দিবি।

আহান,,,,,, কিসের সাথে কি তুলনা করছিস।

রিমান,,,,, আরে দূরর বিয়েতে এটা নিয়ে ঝগড়া না করলে মজা আছে।,,, আচ্ছা ভালো করে বলো কতো লাগবে।

কাজিনরা,,,,,,,, এক লক্ষ লাগবে।

রিমান,,,,,, না না এতো তো আমরা সাথে করে নিয়েও আসি নি,, কমাও।।

আস্তে আস্তে করে রিমান টাকা কমাচ্ছে।

,,,,,, হয়েছে এবার চল্লিশ হাজার ছাড়া আমরা ঢুকতে দিবো না, এটাই ফাইনাল।

রিমান,,,,,,, কতো লাগবে, শুনি নাই।

,,,,, চল্লিশ,,, হাজার।

রিমান,,, ওকে চল্লিশ আর সাথে হাজার ও,, মানে চল্লিশ হাজার লাগবে, তাই তো।

,,,,,, হুমম হুমম তাই।

রিমান,,,,, ঠিক আছে। আমি দিচ্ছি তোমার চল্লিশ আর হাজার। কেও একজন হাত বাড়াও।

একজন হাত বাড়ায়,রিমান তার হাতে টাকা গুজে দিয়ে, ভিতরে চলে যায় সাথে আহানকেও টান দিয়ে ভিতরে নিয়ে আসে। কাজিনরা সবাই চিল্লানি দিয়ে বলে,, এটা কি।

রিমান,,,,, কি,, তোমাদের টাকা।

,,,,,, কিসের টাকা,, এটা তো মাত্র এক হাজার চল্লিশ টাকা।

আহান,,,,, তুই এতো কম দিছস কেন।

রিমান,,, চুপ কর তুই,,, আমি তো তোমাদের কথা মতোই দিয়েছি,, তোমরা কি চেয়েছো,, চল্লিশ আর হাজার টাকা। তো আমি সেটাই দিয়েছি,,চল্লিশ আর হাজার টাকা।

,,,,,,এটা কিন্তু ঠিক নাআআ।

রিমান,,,,,,,, কেনো কেনো, তোমরা আমাদের জুতো চুরি করতে পারো আর আমরা একটু চালাকি করলেই দোষ।

সবাই মন খারাপ করে থাকে।

রিমান,,,,হয়ছে হয়ছে এখন আর মন খারাপ করার দরকার নেয়,, আহান টাকা গুলো দিয়ে দে।

সবাই টাকা পেয়ে খুশি হয়ে যায়। আহান আর রিমান এক সাথে বসে , তাদের সামনে পাতলা সাদা কাপড় টাঙানো। দিয়া আর রুহিকে নিয়ে আসা হয়। দুজনেই লাল গয়েরী লেহেঙ্গা পড়ে কনে সেজে আসে। আহান আর রিমানের চোখ যেনো সরছে না।

রুহি এসে সবার আড়ালে রিমানকে একটা চোক টিপ মারে। রিমান ও একটা চোখ টিপ দেয় যেটা সবাই দেখে ফেলে। সবাই তার দিকেই তাকিয়ে আছে।

রিমান,,,, আমার টাই কেনো সবার চোখে পড়লো,আমার চোখ বেশি সুন্দর তো মনে হয় এজন্য।

দিয়া ইশারা করে জিজ্ঞেস করছে তাকে কেমন লাগছে, আহান ও ইশারা করে বলে সেই লাগছে। রুহি তো সরাসরি জিজ্ঞেস করে,,,,,ভাইয়া আমাকে কেমন লাগছে বললা না যে।

আহান,,,,,,, মনে হচ্ছে কোনো পরী বউ সেজে নিচে নেমে এসেছে।

রুহি,,,,,,, রিমান, আমাকে কেমন লাগছে।

রিমান,,,,,, জোস, সেই,, একদম কি যে বলবো খুঁজে পাচ্ছি না। দুষ্টু হাসি দিয়ে বলে,,ইশশ আমার বউ বউ লাগছে তোকে।

রুহি,,,,, আর তোমাকে আমার জামাই জামাই লাগছে।

আগে আহানের বিয়ে হয়, পড়ে রুহি আর রিমানের। সবাই খুব খুশি।

মানিক,,,,, আসবে আসবে এমন আমারো একদিন আসবে, সেদিন আমিও তোমাদের মতো হাসবো।

রিমান,,,,, কেনো তুই কি এখন কান্না করছিস নাকি।

মানিক,,,,, কান্না না করলাম,, তোমাদের মতো যুদ্ধ জয় করার মতো হাসি তো নেয়।

রিমান,,,, শোন,, বিয়ের দিন যে যতো হাসে, বিয়ের কয়েক বছর পড়ে সে ততো কাঁধে।

রুহি,,,,,, মানেহহহ।

রিমান,,,,,,,, মানে আই লাভ ইউ জান।

সবাই বসে অনেক আনন্দ করে। রাত ১০ টা বেঝে গেছে।

রিমান,,,,,,, এখন তোর বোনকে বিদায় দে,, আমাদের যেতে হবে। রুহি কান্না শুরু করে দাও।

রুহি,,,,, কান্না তো আসতাছেনা।

রিমান,,,,,, কি বেশরম বউ আমার,, কান্না করো।

রুহি,,,,আরে অদ্ভুত, আসতাছেনা কান্না।

আহান,,,,, এ তুই আমার বোনকে কাধাতে চাস কেনো।

রিমান,,,,, সারা জীবন তো আমার কান্না করতে হবে তাই শেষ বারের মতো কান্নাটা দেখতে চাইছিলাম আরকি।

আহান দিয়ার দিকে তাকায়,, দিয়া ব্রু কুচকে বলে,,,,, আমি কান্না করতে পারবো না, আগেই বলে দিলাম,,আর আমার তো বিদায় ও হচ্ছে না।

রিমান আহানের সাথে হাত মিলিয়ে বলে,,,আচ্চা দোস্ত আসি,, অনেক ইচ্ছে ছিলো তোর বাসর রাতে তোকে বার বার ফোন করে জালানোর কিন্তু সেটা আর হবে না। তাই এটা তোর সৌভাগ্য মনে কর। আর আজকের রাতের জন্য অল দ্যা বেস্ট।

আহান,,,,, তোকেও।

রিমান আর রুহিকে সবাই গাড়িতে উঠিয়ে দেয়। রুহি কান্না না করলেও তার মা বাবার জন্য মন খারাপ করে থাকে,কিন্তু রিমানের কথায় সে না হেঁসে পারে না।

রিমানের বাসায় পৌঁছে যায়, রিমান দাঁড়িয়ে আছে রুহিকে নিয়ে দরজার সামনে।

রুহি,,,, কি হলো রিমান।

,,, আমার তো আর কেও নেয় তাই তোমাকে বরণ করার মতোও কেও নেয়।

,,,তুমি যে বললা তোমার কেও নেয়, এটা আহান ভইয়া শুনলে কিন্তু অনেক রাগ করবে।

,,,না ওকে বলো না, তাহলে আমার আর রক্ষা নেয়।

,,আর আমি তো এখন থেকে তোমার সব কিছু।

,,হুমমম চলো আমি তোমাকে কোলে করে নিয়ে যাবো ভিতরে।

বলেই রিমান রুহিকে কোলে করে ভিতরে নিয়ে যায়। সিরি দিয়ে উপরে উঠে নিজের রুমে গিয়ে দেখে পুরো রুম ফুল দিয়ে সাজানো, মোম বাতি জ্বালানো।

রুহি,,,,,ওয়াও খুব সুন্দর হয়েছে।

,,এটা নিশ্চয়ই আহান সাজিয়েছে।

,,,হুমম এখন আমাকে নিচে নামান,,আমি ফ্রেশ হতে যাবো।

,,হুমম তুমি ফ্রেশ হয়ে আসো, আমিও অন্য রুম থেকে ফ্রেশ হয়ে আসছি।

কিছু ক্ষন পরে রিমান রুমে ডুকে দেখে লাইট নিভানো শুধু মোমবাতির আলো চারদিকে। রোমান্টিক পরিবেশ, রিমান সামনে তাকিয়ে দেখে রুহি ছোট একটা কালো কালার নাইট ড্রেস পড়ে দাঁড়িয়ে আছে। রুহি সামনের দিকে ফিরে আছে,রিমান তার পিছনে দাঁড়িয়ে আছে।

রিমান কয়েকটা ডোক এক সাথে গিলে।

রিমান,,,,,,, আজকে কি আমাকে জানে মেরে ফেলার প্লেন আছে নাকি।

রুহি সামনের দিকে ফিরে মুশকি হাসি দিয়ে বলে,,, আজকে তোমার সাথে আমারো মরার ইচ্ছা আছে।

রিমান আরো কয়েকটা ডোক গিলে বলে,,,তোর কন্ঠ পাল্টে গেলো কিভাবে। এমন করে বলিস না পিল্জ কেমন কেমন জানি বুকের মধ্যে করে।

রুহি,,,,, কেমন করে।

,,,,,, তোকে আমি ফিল করাচ্ছি কেমন লাগে।

রিমান সোজা গিয়ে রুহির ঘার দুহাত দিয়ে ধরে রুহির ঠোঁটে উদ্মাদের মতো কিস করতে থাকে। রুহিকে কোলে করে উঠিয়ে বিছানায় শুয়িয়ে কিস করতে থাকে।
,,,,,,,,,,

দিয়া গোমটা দিয়ে বসে আছে, আহান এসে দিয়ার পাশে বসে, গোমটা উঠায়,,দুজনেই অনেক ক্ষন ধরে চুপ করে আছে। নিরাবতা ভেঙে আহান বলে,,আমার বউ হয়ে তোর কেমন লাগছে।

,,,, মনে হচ্ছে জীবনের সব সুখ পেয়ে গেছি, আমার আর কিছুর দরকার নেয়।

,,,আজ এখানে আমার রুমে বসে তোর কি ফিল হচ্ছে।

,,ফিলটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না,, একটা অন্য রকম অজানা অনুভব হচ্ছে,, এই অনুভবের কোনো নাম নেয়। আপনি কাছে আসলে এই ফিলটা কোনো ভাবে বেশ তীব্র হয়ে যায়।

,,,আজকে আমার তোর খুব কাছে যেতে ইচ্ছে করছে, যাওয়ার অনুমতি কি দিবি।

দিয়া লজ্জায় আহানের বুকে মুখ লুকায়।আহান দিয়ার মুখ উঠিয়ে বলে,,, এটাকে আমি কি মনে করবো হ্যাঁ,,নাকি।

,,,,হ্যাঁ।

আহান মুশকি হাসে দিয়ার দিকে তাকায়, দিয়া চোখ বন্ধ করে নিচের দিকে মুখ করে আছে।

আহান,,,, এই লজ্জায় লাল হওয়া মুখ আমাকে তোর আরো কাছে টানছে। (দিয়ার কাছে যেতে যেতে)

আহান যতো দিয়ার কাছে যাচ্ছে, ততো দিয়ার নিশ্বাস ভাড়ি হয়ে যাচ্ছে। আহান দিয়ার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়। তারপর গলায় কিস করতে থাকে, আহান বুক থেকে আঁচল সরাতে নিলে দিয়া হাত ধরে ফেলে।

আহান দিয়ার হাতে কিস করে সরিয়ে দিয়ে বলে,,,আজ কোনো মানা মানতে আমার মন চাইছে না, বলে দিয়াকে কিস করতে থাকে।
,,,,,,,
তিন বছর পর,, সবাই হসপিটালের বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে, রিমান পাগলের মতো হেঁটে যাচ্ছে আবার আসছে,আহান রিমানকে সাহস দিচ্ছে। কারন রুহির বেবি হবে।

একটু পর দিয়া হাসতে হাসতে একটা মেয়ে বেবিকে কোলে করে নিয়ে আসে।

দিয়া,,,,, রিমান, এই দেখো তোমার পরী।

রিমান,,,, রুহি কেমন আছে।

দিয়া,,,,, সুস্থ আছে।

রিমান কোলে নিতে নেয় আর আহান নিয়ে যায়।

আহান,,,আরে আমার ভাগ্নিটা কতো সুন্দর হয়েছে মাশাল্লাহ।

সবাই বেবিকে গিরে ধরেছে।

রিমান,,,,, আরে আমাকে তো দেখতে দাও।

আহান,,,যখন আমার ছেলে আয়ান হয়েছিলো তখন তো কোলে নিয়ে গুরেছো সারাদিন আমাকে নিতে দিছিলি।

রিমান,,, দেহহ শয়তান ছেড়া,,, তোর ছেলের তো এক বছর হয়ে গেছে আমারটা তো এখনি আসলো।

আহান,,,,,সো হোয়াট।

এভাবেই হাসতে হাসতে তাদের জীবন চলতে থাকে এই দোয়ায় সবাই করবেন।

[সরি সবাইকে সময় মতো এই গল্পটা দিতে পারিনি,, তবে চেষ্টা করবো পরো বর্তী গল্পে মন লেইট যেনো না হয়,গল্পটা কেমন লাগলো জানাবেন দয়া করে। কেও আবার রাগ করে থেকেন না]

thanks for reading……

সমাপ্ত,,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here