শত_ঘৃণার_পরেও_ভালোবাসি (এক ভালোবাসার গল্প)
Part.27
#Maishara_Jahan
,,,,,,,,আহান আপনাকে ছাড়বে না।
,,,,,,,,, ইশশশ এই নামটা নিয়ো না, রাগ হয়, কবে তুমি আমার বউ হতে কিন্তু ওর জন্য এতো লেইট হয়েছে। আর ও কিছু বুঝলে তো আমার কিছু করবে।
,,,,,,,,,, সৌরভ মনে করো না যে, তুমি আমাকে কিটনাপ করে বেঁচে যাবে, আহান তোমাকে শাস্তি অবশ্যই দিবে, আর খুব তাড়াতাড়ি আমাকে খুঁজে বের করবে। আর আমাকে বিয়ে করার কথা তো ভুলেই যান। হয়তো আপনাকে মেরে ফেলবো না হয় নিজেকে তাও আমি আপনার কোনো দিন হবো না। (উচ্চস্বরে বললো কথাটা)
,,,,,,,,, তোমার এই রাগী রাগী ভাবটা আমার ভালো লাগে। সব সময় ছটফট করা ভাবটাও অনেক ভালো লাগে। কতো বার তোমাকে মারার চেষ্টা করেছি কিন্তু তোতো বারি আমার মন আমাকে আটকে দিয়েছে। প্রথম কোনো মেয়েকে দেখে আমার এক দিনের জন্য না সারা জীবনের জন্য পেতে ইচ্ছে করেছে। (অন্য ভাবে তাকিয়ে)
,,,,,,আমি আপনার চোখে ভালোবাসা না, নেশা দেখতে পারছি, এটা কোনো ভালোবাসার নেশা না ক্ষোভের নেশা।
,,,,,,,,তুই যাই ধরো আমার জন্য এটাই ভালোবাসা।
,,,,,,,,কিন্তু আপনি তো রুহিকে ভালোবাসেন।
,,,,,,,,, না,,আহান আমাকে নিয়ে সন্দেহ করছিলো তাই সে আমার বিষয়ে খোঁজ লাগায়, যেটা আমার জন্য ঠিক একটা ভালো ছিলো না, তাই তোমাকে বলেছি যে আমি রুহিকে ভালোবাসি, যাতে আহান আমার বিষয়ে এতো খোঁজ খবর না রাখে।
দিয়া তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে বলল,,,,,,, আপনি আহানকে কথাটা ভয় পান সেটা আপনার কথায় বুঝা যাচ্ছে। আহান কে এতো ভয় পান অথচ আহানের জানকেই কিডন্যাপ করে নিলেন। তাহলে তো আরো ভয় পাওয়ার কথা।
সৌরভের রাগের মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে, সে দিয়ার মুখ চেপে ধরে বলে,,,,,,, অনেক বলেছিস আর না,, এই সৌরভের ইনোসেন্ট চেহেরা অনেক দেখেছিস, কিন্তু এই ইনোসেন্ট পেছনে যে ভয়াবহ রূপ টা আছে সেটা এখনো দেখিস নি। সোজা হাতে ঘী না উঠলে ঘী কিভাবে উঠাতে হয় সেটা আমি ভালো করে জানি। সো আমাকে বাধ্য করো না তোমার সামনে আমার আসল রুপটা দেখাতে।
,,,,,,,,, ও আচ্ছা, এর থেকেও ঘৃণ্য রূপ আছে আপনার? আমিতো জানতামই না আর কি কি রূপ আছে আপনার এটাও দেখিয়ে দেন। কিন্তু ভুলে যাবেন না আমি যতটা কষ্ট পাবো তার থেকে বেশি কষ্ট আহান আপনাকে দিবে।
,,,,,,,,, দিয়া আমাকে এমন কিছু করতে বাধ্য করো না যেটা আমি করতে চাই না সেটা কিন্তু তোমার জন্য খুব একটা ভালো হবে না।
,,,,,,,,,,,, এর থেকে খারাপ আর কি হতে পারে, আজ আমার বিয়ে আর আজি আমি কিডন্যাপ হয়ে এখানে বসে আছি।
,,,,,,,,,,জান পাখি বিয়ে হবে তো তোমার কিন্তু আহানের সাথে না আমার সাথে সো বি রেডি ফর দেট।
বলে দিয়ার হাতের বাঁধন খুলে দেয়। খুলা পেতেই দিয়া দৌড়ে বাহিরে চলে যায়,সৌরভ চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। একটু পরেই দিয়া আবার চুপচাপ রুমের ভিতরে চলে আসে।
,,কি হলো ফিরে এলে যে।
দিয়া ঠোঁট উল্টিয়ে বললো,, বাহিরে অনেক গার্ড আছে যারা বন্ধুক হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
,,,,,, ইশশশ এভাবে বলো না, নিজেকে কন্ট্রোল করা কঠিন হয়ে যাবে। তোমার এই আচরণ গুলোই আমার কাছে অনেক বেশি আকর্ষণীয় লাগে।
,,,,,,,, খবরদার আমার কাছে আসার চেষ্টা করবে না।
সৌরভ মুশকি হেঁসে বলে,,,,,, ঠিক আছে আসবো না। চুপচাপ বসে থাকবে, খাবার পাঠিয়ে দিচ্ছি খাবে। না খেলে আমি আবার অন্য ভাবে খাওয়াতে পারি। ওকে আমি এখন আসি, একটু কাজ আছে।
বলে দরজা বন্ধ করে চলে যায়। দিয়া বিছানায় শুয়ে কান্না করতে থাকে আর বলতে থাকে,,,,, আহান পিল্জ তাড়াতাড়ি আসো৷ আমার সত্যি খুব ভয় করছে।
,,,,,,,,,,,,
রিমান,,,,,,,,,, হাম তুম এক কামড়ে মে বান্ধ হে ওর চাবি খো যায়ে,,,,(গান গেয়ে বলছে)
রুহি রিমানের দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে আছে, আর রিমান নিচে দেওয়ালের সাথে হেলান দিয়ে, রুহির দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে হেঁসে হেঁসে গান গাচ্ছে যেনো কিছুই হয়নি। রুহি নিজেকে আর কনট্রোল করতে না পেরে উঠে গিয়ে নিচে বসে রিমানকে মারা শুরু করে।
,,,,,,,, আরে আরে থাম থাম, জঙ্গলী বিললি,,
রুহি উরা ধুরা কিল ঘুষি দিচ্ছে রিমান রুহির হাত ধরে জরিয়ে ধরে। রুহি কিছু ক্ষন ছটফট করে শান্ত হয়ে যায়। রুহি রিমানের বুকে মাথা রেখে শান্ত হয়ে যায়। রিমানের হার্ট বিড বেড়ে গেছে। রুহি আস্তে করে বলে।
,তোমার হার্ট এতো দ্রুত চলছে কেনো, শরীর খারাপ লাগছে নাকি হুমম।
,রিমান মৃদু হেঁসে বললো, আরে পাগলি এতো দিন ধরে আমাকে ভালোবাসো আর এটা জানো না যে, ভালোবাসার মানুষ কাছে আসলে হার্ট বিড এমনি বেড়ে যায়। দেখ তোর হার্ট বিড ও বেড়ে গেছে আমি অনুভব করতে পারছি।
,,,,,,,,,, তুমি কি আমাকে ভালোবাসো নাকি।
,,,,,, হুমম অনেক ভাসি, তোকে আর কিভাবে বুঝাবো।
,,,,,, কিন্তু আগে তো বাসতে না,, সত্যিটা জানতে পেরে ভেসেছো।
,,,,,,,,, তুই তো সব সময় আমাকে বলতি, আমার চোখে নাকি তোর জন্য গভীর ভালোবাসা দেখতে পাস। আর এখন তুই জিজ্ঞেস করছিস। শত ঘৃণার পরেও আমি তোকেই ভালোবাসতাম। মনের এক গভীর কোনে তুই ছিলি।
,,,,,,, সে ভালোবাসার কোনো দাম নেয় যে নিজের ভালোবাসার মানুষকে অন্য কারো হতে দেয়। আমি সত্যিটা না বললে তো হয়তো তুমি বিয়ে করে নিতে।
,,,, জ্বি না, ঐদিন রেস্টুরেন্টে আমি মেরিনকে না করতে গিয়েছিলাম বিয়ের জন্য,, ভেবেছিলাম তোকে জোর করে বিয়ে করে রেখে দিবো, কাছে আসবো না।
,,,,,,, আর এখন।
,,,,,,,তখন দূরে থাকা এতো কঠিন হয়ে গেছিলো এখন তো অসম্ভব। (শক্ত করে জরিয়ে ধরে)
তখনি একজন গার্ড এসে দরজা খুলে। লোকটিকে দেখে রুহি রিমান দুজনকে ছেড়ে দিয়ে আলাদা হয়ে যায়।
,,,,,,, আরে সাব্বাশ, এখানে দেখি রাজলিলা চলছে। তো ভালোই মজা নিচ্ছো।
রিমান,,,,,,,, উল্টা পাল্টা কথা না বলে চুপচাপ বলো কেনো এখানে আমাদের ধরে এনেছো,কে আনতে বলেছে।
,,,,,,,,,, মেয়ের স্পর্শ পেয়ে দেখা যায়, গলায় জোর বেড়েছে। এমন পাওয়ার আমারো লাগবে। (রুহির দিকে কি নজরে তাকিয়ে)
রিমান রুহির সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলে,,,,,, ওর দিকে নজর দিলে চোখ উঠিয়ে ফেলবো। চুপচাপ বল এখানে কেনো নিয়ে এসেছিস,কার কাথায় নিয়ে এসেছিস।
,,,,,,,,,,, ঐ সামনে থেকে সর,, মালটাকে দেখতে হেব্বি, দেখলেই মুখে পানি এসে যায়।
রিমানের রাগ অতি মাত্রায় চড়ে যায়, সে একটা লাথি দিয়ে তার বন্ধুক ফেলে দিয়ে, লোকটিকে ইচ্ছা মতো পিটাতে থাকে। একটু পর আরো লোক আসে, রিমান সবার সাথে লড়াই করতে থাকে। রুহি সুযোগ খুঁজতে থাকে মারার জন্য।
একটা ফুলের টপ নিয়ে ডিলা মারে রিমানের পিঠে গিয়ে লেগে ভেঙে যায়। রিমান রুহির দিকে তাকিয়ে কিছু বলার সুযোগ পায় না। রুহি সরি সরি বলতে থাকে। একটু পর আবার একটা ফুলের টপ ডিলা দেয় ঐটাও রিমানের পিঠে লাগে।
এবার রিমান রাগে মারছে আর বলছে,,,,, কি করছিস হুম।
রুহি,,,,, সরি সরি।
,,,, তোর সরির কাঁথায় আগুন,, চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাক, তোকে মারতে হবে না।
রিমান কোনো মতো লোকদের সামলিয়ে রুহির হাত ধরে দৌড় দেয়। কোনো মতে লুকোচুরি করে সিরি দিয়ে নিচে নেমেছে, মনে হচ্ছে কে কাকে ধরতে পারে খেলছে। রিমান কোনো রকমে বের হয়ে দরজা লাগিয়ে রুহিকে নিয়ে দৌড় দেয়।
রুহি,,,,,,,কোন জায়গা এটা, জঙ্গল জঙ্গল মনে হচ্ছে। (দৌড়াতে দৌড়াতে)
রিমান,,,,,,,, এটা জঙ্গলি গাধা।
,,,,, তুমি বাড়ির উল্টো পাশে দৌড়াচ্ছো কেনো।
,,,,,,, আরে সবাই মনে করবে আমরা সামনে পালিয়েছি, তাই সামনের দিকে খুঁজবে, তাই আমরা পিছনের দিকে দৌড়াচ্ছি।
,,,,,,,,, আরে তোমার কাছে তো অনেক বুদ্ধি আছে, দেখা যায়।
,,,,,,,,,,,,
মানিক,,,,,,,, ভাইয়া কিছু জানতে পারলে।
আহান,,,,,,, ভেবেছিলাম পেটি করেছে, কিন্তু ও করেনি, খোঁজ নিয়ে দেখেছি ইয়াস এর এসব করার মতো অবস্থা নেয়। তাহলে কে করতে পারে।
মানিক,,,,,,,, করলে আপন কেও করেছে, কারন আমাদের বাড়ির ভিতরে অন্য গার্ড আসবে কি করবে।
আহান,,,,,, আচ্ছা এতো ক্ষন হয়ে গেলো রুহি কিড্যানাপ হয়েছে শুনেও সৌরভ কেনো এলো না।
,,,,,আমার কেমন জেনো ওকে ভিলেন ভিলেন লাগে।
,,,,,,,, একটু খোঁজ নিয়ে দেখ তো।
,,,,,,, আমি এখনি লোক পাঠিয়ে দিচ্ছি।
একটু পরে আহানের কাছে ফোন আসে সৌরভের আহান ফোন রিসিভ করে,,, হ্যালো।
সৌরভ কান্না মাখা কন্ঠে বলে,,,,, রুহির নাকি কিডন্যাপ হয়েছে সাথে দিয়া আর রিমান এর ও৷ আপনি কোথয় আমিও আসছি এক সাথে খুঁজবো। আমি এটা শুনার পর আর থাকতে পারছি না।
আহান সৌরভকে বলে,,,,,, আমরা এখন উত্তর জেলায় যাচ্ছি তুমিও সেখানে আসো, ঐদিকে খুজে দেখি।
,,,,ঠিক আছে, আমি এখনি আসছি।
চলবে,,,,,,,
ভালো লাগলে like, comment করতে ভুলবেন না ধন্যবাদ।