রঙ বেরঙের জীবন পর্ব ৬

0
355

#রঙ_বেরঙের_জীবন
পর্ব (৬)
#নুশরাত_জাহান_মিষ্টি

“মনের মানুষের কথা বুঝবার না পারলে জীবনডা যে বৃথা হইয়া যাইবো”।
রাত্রীর মনের কথাটি বুঝতে পেরে রুপম উত্তরটা দিয়ে দিলো। রাত্রী কিছুটা শান্তভাবে বললো,” আমি তো রাত। রাত মানে আঁধার, অন্ধকার। আচ্ছা কোন মানুষ কি আঁধারকে আপন ভাবতে পারে”!
রুপমের মুখের হাঁসিটা নিভু নিভু হলো তবে উত্তরটা দিতে দেড়ি হলো না,
” হাতটা আমার হাতে রাখো, দেখো আঁধার কত রঙীন”।
বিষ্ময়ীত নয়নে রুপের মুখের দিকে দৃষ্টি দিলো রাত্রী। তারপর বললো,” তোমার হাতে হাত রাখলেই সব আঁধার রঙীন হয়ে উঠবে”?
রুপম পুনরায় ভুবন ভোলানো হাঁসি দিয়ে বললো,” সব হাত সবাইরে রঙীন করে না রাত। আমার হাত শুধু রাতরে রঙীন করার জন্য আছে”।
” যদি রাত রঙীন না হয়”?
রুপম মুখটা রাত্রীর দিকে ঝুঁকিয়ে বললো,” হাতটা ধরো তারপর দেখো রঙীন হয় নাকি বেরঙীন”।
রুপম ভেবেছিলো তাদের কথা এখানেই শেষ হবে, রাত্রী এখান থেকে চলে যেতে চাইবে। রুপমকে ভুল প্রমাণ করে রাত্রী তার হাতটি এগিয়ে দিলো। রাত্রীর বাড়ানো হাতের দিকে বিষ্ময়কর দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো রুপম। রাত্রী স্বাভাবিকভাবে বললো,” হাত বাড়িয়ে দিলাম, দেখি কত রঙীন হয় এ আঁধার”।
রুপম বিষ্ময় কাটিয়ে মুখে পুনরায় হাঁসি ফিরিয়ে আনলো। সাথে সাথে রাত্রীর বাড়িয়ে দেওয়া হাতের উপর নিজের হাত রাখলো। মুখে হাঁসি ধরে রেখেই বললো,” সব ভুইলা চলো যাই রঙীন হই”।
বাক্যটি বলে রুপম রাত্রীর হাত ধরে সামনে এগোলো। রাত্রী প্রশ্নময় দৃষ্টিতে বললো,” কোথায় যাচ্ছি”?
” উহু প্রশ্ন নয়। চলো রঙীন হই”।
রাত্রী দ্বিতীয়বার প্রশ্ন করলো না। মানুষ প্রেমে পড়লে নাকি অগাধ বিশ্বাসী হয়। সেই বিশ্বাসটা রেখেই রাত্রী এগিয়ে চললো রুপমের সাথে। কোথায় যাচ্ছে! কেন যাচ্ছে! তা জানা নেই।

তাদের গ্রাম পার করে দুটো গ্রাম পর দোলনচাঁপা নামক স্থানে আজ মেলা হচ্ছে। রুপম রাত্রীকে সেখানেই নিয়ে আসলো। রাত্রী জীবনে প্রথম মেলায় আসলো। তাই এত মানুষের ভির, দোকানপাট সবকিছুই তার কাছে নতুন। চারপাশে তাকিয়ে রাত্রীর পরিবেশটা বেশ ভালো লাগলো। রাত্রীর হাত ধরে রুপম তাকে নাগরদোলার কাছে নিয়ে এলো। রাত্রী নাগরদোলা আগে কখনো দেখেনি তবে নাম শুনেছে তাই চিনতে পেরেছে। রুপম দুটো টিকিট কেটে রাত্রীর হাত ধরে নাগরদোলায় উঠলো। নাগরদোলায় ওঠার সময় রাত্রী একবার বলে উঠলো,” এটা খুব উঁচুতে উঠবে, যদি পড়ে যাই”।
” বিশ্বাস নিয়া এতটা পথ যহন আইছো তহন আর একটু ভরসা করোই না”।
রাত্রী চুপ করে গেলো। চুপচাপ রুপমের হাত ধরে নাগরদোলা বসলো। নাগরদোলা চলতে শুরু করলো। উঁচুতে ওঠার পর রাত্রী কিছুটা ভয় পেলো। ভয় পেয়ে রুপমের হাত খামচে ধরলো, সাথে চোখগুলোও বন্ধ করে নিলো। রুপম রাত্রীর হাতটা দু হাতে ধরলো। সাথে সাথে রাত্রী চোখ মেলে তাকালো। দু’জনের দৃষ্টি বিনিময় হয়ে গেলো। কিছুক্ষন একে-অপরের চোখে চোখ রেখে তাকিয়ে রইলো। রুপম আশ্বাসের সাথে বললো,” সময়টারে ভয় নয় উপভোগ করো। উপভোগেই রাত রঙীন হবে”।
রাত্রী আশ্বাস পেয়ে রুপমের হাত ছেড়ে দিলো, চোখ মেলে আকাশটাকে দেখলো। এরপর বেশ উপভোগ করলো নাগরদোলার উঠা নামা। পাশে নাম না জানা অনুভূতি, সাথে নাগরদোলার চরার আনন্দ। সবকিছু মিলিয়ে জীবনটা রঙীন হয়ে উঠলো।

নাগরদোলা থেকে নেমে রুপম এবং রাত্রী কিছু খেয়ে নিলো। রাত্রী মনেমনে একটি বুদ্ধি করে আইসক্রিমের দোকানে গেলো। দুটো আইসক্রিম নিলো। রুপম আইসক্রিমের টাকা দিচ্ছিলো ঠিক সেসময় রাত্রী একটি আইসক্রিম থেকে কিছুটা রুপমের গালে মেখে দিলো। রুপম পাশ ফিরে হাঁসলো তারপর বললো,” আমার আইসক্রিমটা দেও”।
” তোমার আইসক্রিম নেয়নি তো”।
” তাহলে দুইডা লইলা ক্যান”?
” একটা খাবো। দ্বিতীয়টা তোমার গালে মাখবো”।
কথাটি বলে পুনরায় আইসক্রিম রুপমের গালে মেখে দিলো। রাত্রীকে আর পায় কে! রুপমের গালে মেখে দিয়ে সে ছুটে পালালো। রুপম ও দ্রুত একটি আইসক্রিম কিনে রাত্রীর পিছনে ছুটলো। ছুটতে ছুটতে রাত্রীকে ধরেও ফেললো এবং রাত্রীর গালে আইসক্রিম মাখিয়ে দিলো। দু’জনের খুনসুটিতে কিছুটা সময় কেটে গেলো। হঠাৎ রুপমের চোখ যায় একটি শাড়ীর দোকানে, যেখানে লাল পাইড় সবুজ শাড়ী দেখা যাচ্ছে। রুপমের দৃষ্টি লক্ষ্য করে রাত্রীও দোকানের দিকে দৃষ্টি দিলো। শাড়ী দেখে মুচকি হেঁসে বললো,” অনুমতি দেওয়া হলো”।
রুপম পাশ ফিরে রাত্রীর দিকে দৃষ্টি দিলো। রুপমও মুচকি হেঁসে বললো,” অনুমতি যহন পাইলাম তহন বাসনাও নিশ্চয়ই পূরণ হইবো”।
” সেটা এখন বলা যাচ্ছে না, সময় সাপেক্ষ”।
মজার ছলে বললো রাত্রী। রুপম পুনরায় ভুবন ভোলানো হাঁসি দিয়ে শাড়ী কিনে নিলো। সেই সাথে কানের দুল, টিপ কিনে নিলো।

প্রেমে পড়লে নাকি সাহস বেড়ে যায়। যেটা রাত্রীর জন্য এখন প্রযোজ্য। মেলায় ঘুরতে ঘুরতে রাত হয়ে গেছে। তবুও বাসায় যেতে ভয় করছে না রাত্রীর। ভয় না করার কারন কি! এটাই কি ভালোবাসা! যেখানে ভয়টা হাওয়ায় মেলিয়ে যায়।(লেখিকা ভালোবাসা সম্পর্কে কিছু জানে না তাই আর রোমান্টিক হতে পারলাম না)

বাসার কাছাকাছি রাত্রীকে দিয়ে গেলো রুপম। রাত্রী ঘরে ডুকতেই রহিমা বেগমের মুখোমুখি হলো। রহিমা বেগম বেশ শান্তভাবে বললো,” দিনদিন মেলা সাহস বাড়ছে তোমার”।
রাত্রী কিছু না বলে চলে গেলো। রহিমা বেগম রাত্রীর চলে যাওয়ার দিকে দৃষ্টি দিয়ে একটি দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন।
রাত্রী নিজ রুমে এসে মনেমনে হাঁসলো এবং বললো,” হুম সাহস বেড়েছে। মেলা সাহস। সাহস বেড়েছে বলেই বুঝলাম জীবন কতটা রঙীন হতে পারে! রাত আঁধারে মিলিয়ে না গিয়ে রঙীন হাওয়া ভাসতে পারে”।

আজও চলে যাওয়ার পূর্বে রুপম একটি চিরকুট ধরিয়ে দিয়েছে। রাত্রী চিরকুট খুলে পড়তে লাগলো,

” আকাশে বহিছে প্রেম, বাতাসে তার গুনগুন।
মনের মাঝে আঁকা প্রেয়সী সেই সবুজপরী রুপ”।

আজ চিঠিতে কি ছিলো! কেন এমন বুকের ভিতর ধুক করে উঠলো! চিঠিতে কিছু মিশিয়ে দিলো না তো! আচ্ছা চিঠিতে কিছু মেশানো না থাকলে বুকের মাঝে এমন অনুভূতি হচ্ছে কেন! ইচ্ছে করছে অনুভূতির ভেলায় ভেসে চলে যাই নাম না জানা কোথাও!
_______
জীবন বেশ ভালোই কাটছিলো। রুপমের সাথে প্রেমটাও ধীরে ধীরে গভীর হয়ে উঠলো। রহিমা বেগমের অবহেলা আজকাল রাত্রীর মনে কোন প্রভাব ফেলে না। আগে কত রাত অবহেলার কথা ভেবে ভেবে নির্ঘুম কাটিয়েছে তার হিসাব নেই। এখনো নির্ঘুম রাত কাটায় রাত্রী। তবে সেটা ভালোলাগার কিছু মূহুর্ত মনে করে কাটায়। জীবন ভালোই তো চলছিলো। হঠাৎ করে জ্বরটা সব নষ্ট করে দিলো। জ্বরের ঘোরে দু’দিন বাসা থেকে বের হতে পারেনি। সেজন্য রুপমের সাথেও দেখা হয়নি রাত্রীর। অন্যদিকে রুপম অস্থির হয়ে একের পর এক চিঠি পাঠাচ্ছে তমার হাত দিয়ে। ওহ হ্যাঁ বলতে ভুলে গিয়েছি আজকাল তমা পুনরায় আমাদের বাড়িতে আসা যাওয়া করছে। তমার আম্মা ওর আসা-যাওয়া কেন মেনে নিচ্ছে সেটা অজানা রাত্রীর! মাত্র তমা আর একটি চিঠি নিয়ে রাত্রীর কাছে এলো। জ্বরটা বেশি থাকায় পূর্বের চিঠিগুলোও পড়া হয়নি রাত্রীর। তমার থেকে চিঠিটা নিয়ে সবগুলো একসাথে পড়তে লাগলো রাত্রী। প্রথম চিঠিতে রুপম লিখেছে,
” তোমার দেখা সাক্ষাৎ পাই না ক্যান? কি হইলো তোমার? আমার উপর রাগ করেছো”?

দ্বিতীয় চিঠি,
” তোমার জ্বর হয়েছে আমারে কও নাই ক্যান? ঔষধ খেয়েছো? ঠিকঠাক মতো নিজের খেয়াল রাখছো তো”?

ঔষধ খেয়েছো, খাবার খেয়োছো, এখন কেমন লাগছে এরকম বেশ কিছু লেখা কয়েকটা চিঠিতে। মাত্র দু’দিনে তমা মোট বারোবার আমাদের বাড়িতে এসেছে। বারোবারে রুপমের পনেরোটা চিঠি নিয়ে এলো। এ ছেলে পাগল হলো নাকি! তো শেষ চিঠিটা অন্যরকম ছিলো সেখানে লেখা ছিলো,
” তমা কইলো তুমি কিছুটা ভালো আছো। জলদি সুস্থ হয়ে নদীর পাড়ে আসবা, আমি রোজ সকাল -বিকাল তোমার জন্য অপেক্ষা করি”।

এখন রাত্রী বেশ অনেকটা সুস্থবোধ করছে। শেষ চিঠিটা পড়ে রাত্রীর মনও উতলা হয়ে উঠলো। তমার সাথে বের হয়ে আসলো। তমা বাড়ি যাওয়ার পূর্বে রাত্রীকে বললো, “রুপ তোরে মেলা ভালোবাসো তারে কখনো ছাইড়া দিস না”।
রাত্রী কিছু বললো না শুধু মুচকি হাঁসি দিলো। রাত্রী লোকালয় থেকে কিছুটা আড়ালে গিয়ে জামার উপরে সেই সবুজ শাড়ীটি পড়লো। রুপমের বলা মতো হাতের লাল চুড়ি, কপালে টিপ, চোখে কাজল দিয়ে নদীর পাড়ে এগিয়ে চললো। রুপম বেশ অনেকক্ষন অপেক্ষা করলো। রাত্রী সুস্থ হয়নি ভেবে বাসার পথে এগেতে যাচ্ছিলো কিন্তু সামনে সবুজ পড়ি দেখে থমকে দাঁড়ালো। এক পা এক পা করে রাত্রীর খুব কাছাকাছি গিয়ে দাঁড়ালো রুপম। মুচকি হেঁসে বললো,” অসম্পূর্ণ”।
রাত্রী রুপমের দিকে কৌতুহলী দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো। রুপম কিছু না বলে তার হাতটি এগিয়ে নিয়ে রাত্রীর খোঁপা করা চুলগুলো খুলে দিলো। পলকহীনভাবে রাত্রী দিকে তাকিয়ে বললো,” এখন সম্পূর্ণ। আমার সামনে সবুজপরী দাঁড়াইয়া আছে”।
” সবুজপরী সত্যি লাগছে”?
” তোমার সন্দেহ আছে”।
” হ কারন আমি জানি জ্বরে মুখ পুরো শুকিয়ে গেছে। সুস্থ অবস্থায় থাকা জৌলশটা আর নাই”।
রুপম ভুবন ভোলানো মিষ্টি হাঁসি দিয়ে বললো,” প্রেয়সী যে রুপেই দাঁড়াক না কেন, আমার চোখে সে সর্বকালের সেরা রুপসী”।
একটু থেমে বললো,” মনের আঙীনায় প্রেয়সী আমার সবুজপরী”।
রাত্রী শুধু হাঁসলো কিছু বললো না।
রুপমের সাথে বেশ অনেকটা সময় কাটিয়ে রাত্রী বাড়ির পথে হাঁটা ধরলো। নিজে যেতে পারবে বলে রুপমকে তার বাসার পথে পাঠিয়ে দিলো রাত্রী। রুপমের সাথে শাড়ী পড়া অবস্থায় একসাথে কেউ দেখলে কি ভাববে সেটা কল্পনা করেই লজ্জা পাচ্ছিলো রাত্রী, তাই একা চলে এলো। সাথে শাড়ীটা পাল্টানোর জন্য পুনরায় আড়াল আবডাল খুঁজতে হবে। সাঁকোর কাছে এসে একজন লোককে গভীর মনোযোগ দিয়ে সাঁকো পর্যবেক্ষণ করতে দেখে রাত্রী বেশ চমকালো। লোকটির মুখ রাত্রী দেখতে পায়নি, পিছন দেখতে পাচ্ছিলো। লোকটি সাঁকোর সামনে যেভাবে দাঁড়িয়ে আছে তাতে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার উপায় নেই রাত্রীর কিছুক্ষন লোকটিকে দেখলো। লোকটি সরছে না দেখে রাত্রী বললো,” সাঁকো বিশেষজ্ঞ”।
লোকটি চমকে পিছনে ঘুরে তাকালো। পিছনে ঘুরতেই সেই মুগ্ধ হয়ে গেলো, তার সামনে সাক্ষাৎ পরী দাঁড়িয়ে আছে। শাড়ী পড়া পরীর মতো সুন্দর একটি মেয়েকে দেখে কিছুক্ষন থমকে দাঁড়ালো লোকটি। রাত্রী বিরক্ত হয়ে বললো,” আপনি সাঁকো বিশেষজ্ঞ থেকে মানুষ বিশেষজ্ঞ হলেন নাকি”?
লোকটি হচচকিয়ে উঠলো আমতা করতে করতে বললো,” আমি কোন বিশেষজ্ঞই নই”।
” তাহলে সাঁকোটাকে ওভাবে পর্যবেক্ষণ করছিলেন কেন? আপনার পর্যবেক্ষণ দেখে মনে হচ্ছিলো সাঁকো হয় আপনার ভিতরে ডুকবে নয়তো আপনি সাঁকোর ভিতরে”।
লোকটি মুখ কালো করে বললো,” আসলে আমি সাঁকো পার হতে পারি না৷ পাশের গ্রামে যাবো কিন্তু কিভাবে সাঁকো পার হবো বুঝতে পারছি না”!
একটু থেমে লোকটি করুনসুরে বললো,” আপনি আমাকে সাঁকো পার হতে সাহায্য করবেন”?
এবার রাত্রী লোকটির দিকে খুব ভালোভাবে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো। শার্ট প্যান্ট পড়া চব্বিশ, পঁচিশ বছরের ছেলে। মনে হচ্ছে শহর থেকে এসেছে। রাত্রী শান্তভাবে বললো,” নাম কি? কোথা থেকে এসেছেন? যাবেন কোথায়”?
লোকটি সন্দিহান চোখে রাত্রীর দিকে তাকালো। সাহায্য চেয়েছে বলে এত প্রশ্ন। কোন উপায় নেই ভেবে লোকটি বললো,” নাম শান্ত। শহর থেকে গ্রামে বন্ধুর বাড়ি বেড়াতে এসেছি। বন্ধুরা সবাই আমাকে মাঝ রাস্তায় একা রেখে চলে গেছে”।
” সাঁতার জানেন”?
রাত্রীর প্রশ্নে রাত্রীর মুখশ্রীতে তাকালো শান্ত। স্বাভাবিকভাবে বললো, ” হ্যাঁ পারি”।
” আপনার ব্যাগটি আমার হাতে দিন”।
শান্ত রাত্রীর কথামতো হাতে ব্যাগটি দিলো। রাত্রী ব্যাগ নিয়ে সাঁকো পার হতে লাগলো, কিছুটা গিয়ে পিছন ঘুরে বললো,” আপনি এখন সাঁতার কেটে ওপারে আসুন”।
” কি”?
বেশ হতভম্ব হয়ে পড়লো শান্ত। রাত্রী স্বাভাবিক ভাবে বললো,” এরচেয়ে বেশি সাহায্য করতে আমি পারবো না”।
” আমি আপনার হাত ধরে পার হই? আপনি নাহয় একটু সাবধানে এগিয়ে নিয়ে যাবেন আমায়”?
” হাত ধরার অধিকার থাকলে তো আগেই বলতাম, অধিকার নাই তাই সাঁতার কেটেই আসুন”।
রাত্রী সাঁকো পার হয়ে গেলো। শান্ত বেশ অবাক হলো। মেয়েটি তাকে হাত ধরে পার করালে কি এমন ক্ষতি হতো! অন্যদিকে রাত্রী মনেমনে বললো,” আমার হাত ধরার অধিকার শুধু রুপের, তাই সাহায্য করার নামেও কাউকে ধরতে দিবো না”।
শেষমেশ কাউকে না পেয়ে শান্ত সাঁতার কেটেই বিলটা পার হলো। সাঁতার কেটে ওপারে গিয়ে যখন রাত্রীকে নাম জিজ্ঞেস করতে নিবে তখনি রাত্রী শান্তর হাতে ব্যাগটি ধরিয়ে দিয়ে ছুটে পালালো। রাত্রীর চলে যাওয়ার পথে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে শান্ত বললো,” অদ্ভুত”।

চলবে,
[ভুলক্রুটি ক্ষমা করবেন৷ গল্পে নতুন চরিত্র চলে এসেছে। রাত্রীর বাবা-মায়ের জীবনের গল্প শোনার জন্য প্রস্তুত হন]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here