রঙ তুলির প্রেয়সী ২১+২২

0
1522

রঙ তুলির প্রেয়সী
২১+২২

‘মামণি… মামণি…’ জোরে জোরে ডাকতে ডাকতে নিচে নেমে এলো তিথি। মুনতাহা তখন পা বাড়িয়েছিলেন রুমে যাওয়ার জন্য। তিথিকে এভাবে চেঁচিয়ে আসতে দেখে তিনি উদ্ধিগ্ন হয়ে বললেন, ‘কী হয়েছে? ক-কী হলো?’

তিথি কিছু বলতে যাবে আর তখনই ধমকের স্বরে নুহা বললো, ‘কী ব্যাপার? এভাবে চেচামেচি করছো কেন রাত-বিরেতে? এটা ভদ্রলোকের বাড়ি।’

নুহার ধমকে তিথির কী যে হলো, হুট করে সে মিয়িয়ে গেল। আস্তে আস্তে বললো, ‘আ-আস-আসলে…’

‘নুহা… এভাবে ধমক দিস কেন? ও ছোট মানুষ… এই তিথি কী হয়েছে আমাকে বল।’ মুনতাহা তিথির পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে বললেন।

‘ছোট মানুষ?’ তাচ্ছিল্যের স্বরে বললো নুহা।

তিথি ঢোঁক গিলে বললো, ‘ম-মামণি… আমার ঘরে আমার কোনো জিনিসপত্র নেই।’

‘ওগুলো আমি টুনিকে দিয়ে পাশের রুমটায় রেখে দিয়েছি। তোমার কাপড়চোপড় সব টুনি গুছিয়ে রেখেছে। বারান্দা ওয়ালা ঘরে আমি থাকবো।’ অকপটে বললো নুহা।

তিথি আর কিছু বলতে পারলোনা। কান্না পাচ্ছে তার ভীষণ। সে উল্টো ঘুরে উপরে চলে যেতে লাগলো। ঐ ঘর থেকে জাওয়াদকে যেকোনো সময় ডাকা যেতো। যেকোনো সময় জাওয়াদের কাছেও যাওয়া যেতো, কেউ টের পেতো না। আর এখন… ঐ ঘরে তো বারান্দাও নেই। তিথির গাল বেয়ে এক ফোটা জল গড়ালো। গলায় কান্নারা দলা পাকাচ্ছে। অজানা ভয় কু ডাকছে বারংবার।

‘নুহা… মেয়েটা ঐ ঘরে থাকছে আসার পর থেকে। অভ্যাস বলেও তো একটা ব্যাপার আছে রে মা। তুই অন্য ঘরে থাকতে পারতি…’ তিথি যাওয়ার পর মুনতাহা বললেন।

‘মানে? তো তুমি আমাকে বলছো যে ঐ মেয়েটার জন্য আমি আমার ইচ্ছের জলাঞ্জলী দেবো? সিরিয়াসলি খালামণি?’ অবাক কণ্ঠে বললো নুহা।

মুনতাহা আদুরে গলায় বললেন, ‘আরে আমি এমনটা বলি নি তো। বলেছি মেয়েটার ঐ ঘরে হুট করে ঘুম নাও হতে পারে। আচ্ছা থাক, তুই-ই থাক। সমস্যা নেই।’ বলে নুহার মাথায় হাত বুলালেন মুনতাহা। তারপর আবার বললেন, ‘তোর মায়ের শরীর কেমন?’

‘ভালো। রিয়াদ আর খালুকে দেখছিনা। উনারা কই?’

‘সিলেটের বাইরে গেছেন। একটা কাজে। যা ঘুমা এবার। রাত হয়েছে।’

‘জাওয়াদ এখনও আসলোনা যে?’

‘কী একটা দরকারি জিনিস অফিসে ফেলে এসেছে। আমাদের সাথেই ছিলো। নামিয়ে দিয়ে আবার অফিসে গেছে। চলে আসবে।’

‘আচ্ছা। যাও ঘুমাও।’ বলে হাসলো নুহা। মুনতাহাও হেসে নিজের ঘরে চলে গেলেন। নুহা সিঁড়ি বেয়ে উপরে গিয়ে দেখলো তিথি নিজের ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে আছে অন্যমনস্ক হয়ে। নুহা পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময় শীতল কণ্ঠে বললো, ‘জাওয়াদের সংস্পর্শে আমি কাউকে থাকতে দেইনি, দেবোওনা।’ বলেই এক মুহূর্তও না দাঁড়িয়ে নিজের ঘরে চলে গেল। চমকে উঠলো তিথি। দাঁড়িয়ে রইলো ওভাবেই। বুকটা কেমন খালি খালি লাগছে। সে আর থাকতে পারলোনা। রুমে গিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো।
__________

জাওয়াদের ফিরতে ফিরতে রাত প্রায় বারোটা বেজে গেল। ঘরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে তারপর কিচেনে গেল। নিজে নিজে ব্লাক কফি করে খেলো। তারপর রোজকার মতো তিথির কাছে যাওয়ার জন্য তিথির রুমের সামনে গিয়ে অবাক হলো। দরজার নিচে ফাঁক গলে লাইটের আলো আসছে। লাইট জ্বালানো এখনও? তিথি তো এভাবে লাইট জ্বালিয়ে রাখে না। দরজা খুলতে গিয়ে জাওয়াদ আরো একবার অবাক হলো। দরজা লক! তিথি দরজা খোলা রাখে ওর জন্য প্রতিদিন। জাওয়াদ দরজায় দুটো টোকা দিলো আস্তে আস্তে। কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই নুহা দরজা খুললো হাসি মুখে। নুহাকে দেখে জাওয়াদ যারপরনাই অবাক। মুহূর্তেই তার চোয়াল শক্ত হয়ে এলো। সে পিছু ফিরলো ফিরে যাওয়ার জন্য। নুহা আকুতির স্বরে বললো, ‘জাওয়াদ, প্লিজ শোন।’

জাওয়াদ ফিরে তাকিয়ে গমগমে গলায় জিজ্ঞেস করলো, ‘তিথি কোথায়?’

নুহার মুখটা নিমিষেই মলিন হয়ে গেল। সে ভেবেছিলো জাওয়াদ তার সাথে দেখা করার জন্য এসেছে। নুহার বুকটা চিনচিন করে উঠলো। সে কাঁপা কাঁপা গলায় বললো, ‘এতো রাতে ওকে খুঁজছিস কেন?’

‘সেটা তোর দেখার বিষয় না। তুই তিথির ঘরে কেন?’ দাঁতে দাঁত চেপে নিচু স্বরে বললো জাওয়াদ। প্রচুর রাগ হচ্ছে তার।

‘তিথির ঘর মানে? ওর নামে রেজিস্ট্রি করা নাকি?’ ব্যাঙ্গাত্মক স্বরে বললো নুহা।

ধক করে জ্বলে উঠলো জাওয়াদের দু’চোখ। সে কিছু বলতে যাবে আর তখনই খুট করে একটা আওয়াজ হলো। জাওয়াদ মাথা ঘুরিয়ে দেখলো পাশের রুমের দরজা খুলে তিথি উঁকি দিচ্ছে। জাওয়াদ আর এক মুহূর্তও দেরি না করে হনহন করে সেই রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দিলো। নুহা হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। যেনো অনেক বড় ধাক্কা খেলো সে। দু’চোখ বাঁধ মানছেনা। দরজার লাগিয়ে বিছানায় গিয়ে বসলো নুহা। নিশ্বাস নিলো বারকয়েক। নাহ, হবেনা৷ মরেই যাবে নুহা। এতো বছর থেকে সে ভালোবাসে জাওয়াদকে। ওকে পাওয়ার জন্য এতোকিছু করলো। এভাবে উড়ে এসে একজন ছিনিয়ে নেবে? এতো সোজা? নুহা হাসলো। বাঁকা হাসি। মনস্থির করলো। জিততেই হবে তাকে। সে হারতে শেখেনি। ছোটবেলা থেকে যা চেয়েছে, পেয়েছে। ভালো বা মন্দ, যেটাই চেয়েছে তার বাবা সেটা হাতে এনে দিয়েছে। আর এবার সে পাবেনা? এবারও সে পাবে। যেকোন মূল্যে আদায় করে নেবে। এতে যদি তাকে মরতেও হয়, সে মরবে। দরকার পড়লে মারতেও হাত কাঁপবে না।
_________

জাওয়াদকে দু’হাতে আঁকড়ে ধরে জাওয়াদের বুকে মুখ গুঁজে একনাগাড়ে ফুঁপিয়েই যাচ্ছে তিথি। জাওয়াদ সময় দিলো তিথিকে স্বাভাবিক হওয়ার। প্রায় পাঁচ মিনিট কান্নাকাটির পর কিছুটা স্বাভাবিক হলো তিথি। তিথিকে বুকে নিয়েই হেঁটে হেঁটে বিছানায় গিয়ে বসলো জাওয়াদ, তিথিকে বসালো তার কোলে। তিথি উঠে সরতে চাইলে জাওয়াদ চাপা ধমক দিলো, ‘শসসস! চুপ করে বসে থাকো।’

তিথি মুখ তুলে জাওয়াদের দিকে তাকালো। তিথির চোখদুটো ফুলে আছে। নাকমুখ লাল হয়ে আছে। সে ঢোঁক গিলে জাওয়াদের গলা আঁকড়ে ধরলো দু’হাতে। তারপর ভাঙ্গা ভাঙ্গা গলায় বললো, ‘আপনি আমার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দেবেন? ছেড়ে চলে যাবেন?’

জাওয়াদ এক হাতে তিথির গাল ধরে বললো, ‘শসসস তিথি! এসব কে বলেছে তোমাকে?’

তিথি একবার নাক টানলো। তারপর বললো, ‘উফ, বলুন না! আমাকে ছেড়ে চলে যাবেন? অন্য মেয়ের কাছে?’

‘একদম না, তিথি। এসব উল্টাপাল্টা কথা ভাবছো কেন তুমি?’

‘আমার খুব ভয় হচ্ছে। বুকের ভেতর কু ডাকছে। আপনাকে অন্য কারো সাথে আমি সহ্য করতে পারবোনা। মরেই যাবো।’

‘একটা থাপ্পড় দেবো বললাম। কিসব পাগলামি কথাবার্তা বলছো তুমি?’ ধমকে উঠলো জাওয়াদ। তিথি কেঁদে দিলো আবার ফুঁপিয়ে। জাওয়াদ এক হাতে তিথির কোমর শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। আরেক হাত তিথির কানের নিজে চুলের মধ্যে রাখলো। তারপর তিথির চোখে চোখ রেখে হালকা কণ্ঠে ফিসফিস করে বললো,

‘আমার হৃদয় অনুনাদের একটাই কারণ-
তুমি, তুমি, তুমি।
আমার অশ্রু বিসর্জনের একটাই কারণ-
তুমি, তুমি, তুমি।
আমার অম্বর থমকে যাওয়ার একটাই কারণ-
তুমি, তুমি, তুমি।
ভীড়ের মাঝেও নিঃসঙ্গ লাগার একটাই কারণ-
তুমি, তুমি, তুমি।’

তারপর তিথির কপালে নিজের কপাল ঠেকালো জাওয়াদ। নাকে নাক ঘষে বললো, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি, তিথি। তুমি আমার নেশা, তুমি আমার মাদক। আমি হচ্ছি তুমি নামক মাদকাসক্ত। এই আসক্ততা কাটবেনা। রয়ে যাবে আমৃত্যু। আর আমি এই মাদকতাই চাই, আমার শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত।’

তিথি দু’হাতে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো জাওয়াদকে। জাওয়াদ তিথিকে কোলে নিয়ে দাঁড়ালো। তারপর হেঁটে দরজার কাছে যেতেই তিথি নড়াচড়া শুরু করলো। জাওয়াদ বিরক্তির স্বরে বললো, ‘কী?’

‘আপনি কোথায় যাচ্ছেন আমাকে এভাবে কোলে নিয়ে?’

‘বাইরে।’

‘এই না… কেউ দেখে ফেলবে। নামান, এক্ষুণি নামান।’ বলে নড়তে লাগলো তিথি।

‘একটা সারপ্রাইজ দেবো। দরজাটা খোলো। আমি তোমাকে কোলে নেয়া অবস্থায় খুলতে পারবোনা।’

‘আগে আমাকে নামান।’

‘শোনো, রাত দুটো বাজতে চললো। এখন আমাদেরকে দেখার জন্য কেউ জেগে থাকবেনা।’

তিথি আর কিছু না বলে দরজা খুললো। জাওয়াদ তিথিকে কোলে করে নিয়ে গেল তার রুমে। তারপর তিথিকে নামিয়ে দরজা লাগিয়ে দিলো। তিথি কৌতূহল নিয়ে জিজ্ঞেস করলো, ‘সারপ্রাইজ কই?’

জাওয়াদ হাসলো। তারপর বললো, ‘তুমি বারান্দায় যাও। আমি আসছি। আজকে চাঁদ খুব সুন্দর আলো দিচ্ছে।’

তিথি একগাল হেসে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালো। জাওয়াদ আলমারি থেকে সেই ছবি দুটো বের করলো। যে ছবিতে সে রঙ তুলির সাথে নিজের ঢের আবেগ আর ভালোবাসা মিশিয়ে এঁকেছিলো তিথিকে। সেগুলো নিয়ে বারান্দায় গিয়ে সে তিথির পেছনে দাঁড়ালো। তিথি পেছন ফিরে জাওয়াদকে দেখে ভারি মিষ্টি করে হাসলো। হাসলো জাওয়াদও। তারপর দু’হাত পেছন থেকে সামনে এনে দু’হাতের ছবিগুলো মেলে ধরলো তিথির সামনে। হতভম্ব, বিস্ময়, অবাক তিথি যেন কথা বলতে ভুলে গেল। নিজের এতো নিখুঁত তৈলচিত্র দেখে বুকের ভেতর কাঁপন শুরু হলো। সে বারান্দার রেলিং পেছনথেকে দু’হাতে শক্ত করে ধরলো। তিথির এই অবাক করা চাহনি জাওয়াদের খুব ভালো লাগলো। সে ছবি দুটো হাতে নিয়ে হাঁটুগেড়ে বসলো। তারপর তিথির দিকে তাকালো। তিথি এক দৃষ্টিতে জাওয়াদের দিকে তাকিয়ে আছে। জাওয়াদ আস্তে আস্তে বলতে লাগলো,

‘জোৎস্না রাতে গ্রহণ লাগাও
হৃদপিণ্ডে কাঁপন জাগাও
তোমার অবাক চাহনি-
মারছে আমায় এখনই।
চিত্ত আমার ক্ষণে ক্ষণে-
থেকে থেকে বলছে তোমায়-
ভালোবাসি ভালোবাসি
রঙ তুলির প্রেয়সী।’

ঝিরঝির হাওয়ার দাপটে মৃদুভাবে উড়ছে তিথির কপালের উপরে পড়ে থাকা চুলগুলো। সেগুলো একহাতে সরালো তিথি। তারপর হাঁটুগেড়ে বসে ছবি দুটো নিজের হাতে নিলো। কয়েক মুহূর্ত ছবিদুটো দেখলো মন দিয়ে। তারপর একপাশে সরিয়ে রাখলো। তাকালো জাওয়াদের দিকে, হাসছে জাওয়াদ। কী মায়াময় সে হাসি! তিথি খানিক এগিয়ে গেল জাওয়াদের দিকে। তারপর দু’হাত আলতো করে রাখলো জাওয়াদের কাঁধের ওপর। জাওয়াদও এগিয়ে এসে তিথির কোমর জড়িয়ে ধরলো দু’হাতে। তখনও জাওয়াদ হাসছে। তিথি ফিসফিস করে বললো,

‘ওমন করে হেসো না,
মুগ্ধ প্রেমিক বেশে।
প্রমত্ততায় ডুবে গেলে-
ফাঁসবে তুমি শেষে।’

শব্দ করে হেসে দিলো জাওয়াদ। তারপর তিথির চোখের দিকে তাকিয়ে বললো, ‘ফাঁসিয়ে দাও, আমি ফাঁসতে চাই। এমনভাবে ডুবিয়ে দাও যেনো আমার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। মাদক হয়ে আমাকে মাদকতায় ডুবিয়ে দাও। ওষ্ঠযুগলের শুষ্কতা কাটিয়ে দাও।’

তিথি চোখ বন্ধ করলো। শিহরণ ছুঁয়ে যাচ্ছে তার মন, শরীর জুড়ে। জাওয়াদ এগিয়ে এসে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো তিথিকে। তারপর… দুজনে মেতে ওঠে একে ওপরের উত্তপ্ত নিশ্বাসে। উন্মাদনায় কেটে যেতে থাকে অনেকগুলো মুহূর্ত।
_______

চলবে……
#ফারজানা_আহমেদ

রঙ তুলির প্রেয়সী
২২.

হেলাল আহমেদের ইচ্ছেতে উনার বাড়িতেই বিয়ের আয়োজন করা হলো। বিয়ের আর আছে মাত্র একদিন। আজকে গায়েহলুদ। সকাল থেকেই মেহমানদের আনাগোনা বেড়েই চলেছে। মুনতাহা, আদিয়া এদিক ওদিক ছুটাছুটি করে কাজ করছেন। একটু পর ফাহি দের বাড়ির সবাই চলে আসবে। মুনতাহার বোন মনিরাও উনার স্বামীসহ ইতোমধ্যে এসে পৌঁছেছেন। মনিরা এসেই বোনের হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করছেন। নাজিম হোসেন দাঁড়িয়ে আছেন হেলাল আহমেদের সাথে। এটা সেটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তাদের মাঝে। এমন সময় রিয়াদ এসে বললো, ‘বাবা, জাওয়াদ কোথায়? দরকার ছিলো ওকে।’

‘একটা কাজে পাঠিয়েছি। চলে আসবে।’ বলে হাসলেন হেলাল আহমেদ।

‘আচ্ছা তাহলে শোনো, আমি গাড়ি নিয়ে একটু বেরোচ্ছি।’

‘কোথায় যাবি তুই?’

‘নাহিদের বাইকটা মাঝপথে আটকে আছে। ওকে নিয়ে আসি। সাথে রাকিবকেও পিক করে নেবো। তুমি মা-কে বলোনা আমি গেছি। যাবো আর আসবো।’

‘তাড়াতাড়ি ফিরে আসিস।’

রিয়াদ বেরিয়ে যাওয়ার পর নাজিম হোসেন হেসে বললেন, ‘এক ছেলের জীবন তো গুছিয়ে দিলেন। এবার আরেকজনের জন্য কী প্লান?’

আবছা হাসলেন হেলাল আহমেদ। বললেন, ‘সেই প্লান ছেলের ওপরেই ছেড়ে দিলাম।’

‘যদি কিছু মনে না করেন… ইয়ে… মানে…’ আমতাআমতা করতে লাগলেন নাজিম হোসেন।

‘জ্বি, ভাই, বলুন।’ কৌতূহল নিয়ে জিজ্ঞেস করলেন হেলাল আহমেদ। নাজিম হোসেন কিছু একটা বলতে গিয়েও অস্বস্তিতে বলতে পারছেন না। এমন সময় পেছন থেকে মনিরা বেগম বলে উঠলেন, ‘আপনার সাথে বেয়াই পাতাবো এবার, দুলাভাই।’

হেলাল আহমেদ আর নাজিম হোসেন একসাথে পেছন ফিরে দেখলেন, মুনতাহা ও মনিরা দাঁড়িয়ে আছেন। মনিরা হেসে এগিয়ে এসে নাজিম হোসেন এর পাশে দাঁড়ালেন। নাজিম হোসেন যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলেন। হেলাল আহমেদ জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললেন, ‘বুঝলাম না।’

মনিরা বেগম বললেন, ‘ছেলেমেয়েরা কী কাণ্ড করছে সেটা কী খবর রাখেন?’

হেলাল আহমেদ মুনতাহার দিকে তাকালেন। মুনতাহা বললেন, ‘নুহা আর জাওয়াদ একে অপরকে ভালোবাসে।’

অবাক হলেন হেলাল আহমেদ। বললেন, ‘কী বলো! কবে থেকে? ওদেরতো কখনও কথা বলতেই দেখিনা।’

নাজিম হোসেন বললেন, ‘লজ্জায় সবার সামনে কথা বলে না। বুঝেনই তো।’

হেলাল আহমেদ চমকালেন খুব। তার ছেলেকে তিনি চেনেন। জাওয়াদের ব্যবহারের সাথে খুব পরিচিত তিনি। নুহার সাথে জাওয়াদের এরকম কিছু কল্পনাও তিনি করেন না। কখনও বোঝাও যায়নি এসব। মুনতাহা স্বামীর মন বুঝলেন হয়তো। তিনি নিজেও অবাক হয়েছেন এটা শোনার পর। তিনি কথা অন্যদিকে নেয়ার জন্য হেলাল আহমেদকে বললেন, ‘আচ্ছা আচ্ছা, সবাই চলে আসবে এক্ষুণি। তুমি একটু এদিকটায় থেকো। আমি যাই কিছু কাজ আছে।’ বলে তিনি চলে গেলেন। হেলাল আহমেদ মনিরা আর নাজিম হোসেন এর সাথে এটা সেটা নিয়ে গল্প করতে লাগলেন।
__________

নুহা দোতলায় ঘুরছিলো। খুব সুন্দর ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে বাড়িটা। সে ভাবছে, তার আর জাওয়াদের বিয়েতে এরথেকেও সুন্দর করে বাড়িটা সাজাবে। সবাই তাক লেগে যাবে বিস্ময়ে। এসব ভাবছিলো আর হাঁটছিলো নুহা। হঠাৎ চোখ পড়লো তিথির ঘরের দিকে। দরজা খোলা দেখে একবার ভেতরে উঁকি দিলো৷ কেউ নেই। বিছানার ওপর একটা মগ আর কাগজের মতো কিছু একটা রাখা। নুহা এগিয়ে গেল। আর্ট পেপার টা হাতে নিলো। দাঁতে দাঁত চেপে কিছুক্ষণ দেখলো। তিথির বৃষ্টি বিলাস এর ছবি, জাওয়াদের আঁকা। জাওয়াদের আঁকার সাথে নুহা পরিচিত। চোয়াল শক্ত করে এদিক ওদিক তাকালো নুহা। তারপর বিছানার ওপর রাখা মগটায় দেখলো, কফি রাখা। হাসলো নুহা। হাতের আর্ট পেপার টা খুব যত্ন করে বিছানার ওপর রাখলো। তারপর কফির মগটা হাতে নিয়ে আর্ট পেপারের ওপর মগের সব কফি ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলে দিলো। একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে ছবিটা। হেসে বেরিয়ে গেল নুহা, তিথির ঘর থেকে।
_________

ফাহির ফ্যামিলির সবাই চলে এসেছে। গায়েহলুদ শুরু হওয়ার আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি। আসার পরই আদিয়া, নুহাসহ সবাই ফাহিকে নিয়ে পার্লারে চলে গেল। আদিয়া চেয়েছিলো তিথিকে সাথে নিতে, কিন্তু তিথি যায়নি। সে আজ জাওয়াদের মনমতো সাজবে। ছাঁদে দাঁড়িয়ে দেখছে তিথি, মেয়েদের নিয়ে একটা গাড়ি রওয়ানা হলো পার্লারের দিকে। আর জাওয়াদের গাড়ি এসে আটকালো গেটের সামনে। মুখে হাসি ফুটে উঠলো তার। কাপড়গুলো হাতে নিয়ে নিচে নেমে যেতে লাগলো। একটু পর ছাঁদে গায়ে হলুদের স্টেজ সাজানো হবে। তাই, যে কাপড়গুলো শুকোতে দিয়েছিলো সেগুলো নিতে এসেছিলো সে। নিচে নামতে নামতে তিথির মনে পড়লো, ফাহির সাথে দেখা হলোনা। থাক, পরে দেখা করে নেবে ক্ষণ। নিজের ঘরের দিকে যেতেই পেছন থেকে টুনির ডাক শুনতে পেলো তিথি। ঘুরে তাকালো সে। টুনি বললো, ‘খালাম্মা আপনেরে ডাকে। উনার ঘরে।’

তিথি হাতের কাপড়গুলো টুনির দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো, ‘তুমি একটু এগুলো আমার ঘরে রেখে এসো।’

টুনি বিনাবাক্যব্যয়ে কাপড়গুলো নিয়ে চলে গেল। তিথি এগোলো মুনতাহার ঘরের দিকে।
_________

‘আমার কাছে বিষয়টা ভালো ঠেকছেনা। আমি আমার ছেলেকে চিনি।’ চিন্তিত মুখে বললেন হেলাল আহমেদ।

আলমারি থেকে একটা বক্স বের করে বিছানায় এসে বসলেন মুনতাহা। তারপর স্বামীর দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘এখানে এতো চিন্তার কিছু নেই। নুহা ভালো মেয়ে।’

‘ভালো খারাপের কথা আমি বলছিনা। আমি জাওয়াদের কথা ভাবছি। তুমি ভালোকরেই তোমার ছেলেকে চেনো। সে নিজের ইচ্ছা ব্যাতিত অন্যের ইচ্ছায় চলেনা।’

‘আচ্ছা। বিয়েটা ভালোয় ভালোয় মিটতে দাও। পরে জাওয়াদের সাথে কথা বলা যাবে ক্ষণ।’

‘মুনতাহা। আমার মনটা কেন যেনো বড় কু ডাক ডাকছে।’ দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বললেন হেলাল আহমেদ।

মুনতাহা চাপা ধমকের স্বরে বললেন, ‘তুমি এখন এসব নিয়ে টেনশন করে শরীর খারাপ করো না তো। জাওয়াদ পছন্দ করলে ভালো, না করলে আমরা এগোবোনা। ব্যস।’

কথাটা বলে বক্সের ভেতরের জিনিসগুলো দেখতে লাগলেন মুনতাহা। স্বামীকে ধমকে চুপ করালেও, নিজের মনকে শান্ত করছে পারছেন না তিনি। ‘আমরা এগোবোনা’ কথাটা যতো সহজে বলেছেন, বাস্তবায়ন করাটা ততোটাই কঠিন।

‘মামণি, আমায় ডেকেছিলে?’

তিথির ডাকে ঘোর কাটে মুনতাহার। তিনি তিথির দিকে তাকালেন। হেলাল আহমেদ বললেন, ‘হ্যাঁ মা, ডেকেছেন। ঠিক আছে তোমরা থাকো। আমি যাই বাইরে।’ বলে বেরিয়ে গেলেন তিনি।

‘আয়। বস।’ বললেন মুনতাহা। তিথি এসে বসলো তাঁর পাশে। তিথি বক্স থেকে এক জোড়া স্বর্ণের ঝুমকো বের করলেন। ঝুমকো জোড়া বেশ বড় আর খুব সুন্দর। সেটা তিথির দিকে এগিয়ে দিয়ে বললেন, ‘তোর শাড়ির পাড় তো এই রঙের, তাইনা? এইটা পরবি আজকে।’

তিথি একবার তাকালো ঝুমকোর দিকে। তারপর বললো, ‘আমার এসবের দরকার ছিলোনা তো, মামণি। সেদিনই তো একগাদা গয়নাগাটি কিনে দিলে।’

‘ওগুলো তো এমনিই। আজ এইটা পরবি তুই।’

তিথি কিছু বলতে যাবে তখনই শুনলো কেউ একজন বলছে, ‘তিথিও আছো এখানে। ভালোই হলো।’

তিথি আর মুনতাহা একসাথে দরজার দিকে ফিরে তাকালেন। দেখলেন, জাওয়াদের বড় মামী মেহেরুন হাতে একটা ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। মুনতাহা বললেন, ‘ভাবি। এসো ভেতরে এসো।’

মেহেরুন হেসে ভেতরে এলেন। তিথি দাঁড়িয়ে গেল বসা থেকে। তারপর দেখলো জাওয়াদের ছোট মামীও এসে ঢুকলেন ঘরে। তিথি সালাম দিলো দুজনকেই। তারপর মুনতাহাকে বললো, ‘আমি এখন যাই মামণি।

‘না না, তুমি থাকো, তিথি।’ বললেন মেহেরুন।

তিথি চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। জাওয়াদের ছোট মামী আঞ্জুমান বললেন, ‘দাঁড়িয়ে আছো কেন, তিথি? বসো তুমি। আমি বসতে আসি নি। চলে যাবো।’

তারপর মুনতাহার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘আপা, কলিজার তরকারি আছে? সাহিল বায়না ধরেছে কলিজার তরকারি দিয়ে ভাত খাবে। এখনও তো রান্না হয়নি দেখলাম। আগের রান্না করা আছে?’

‘হ্যাঁ ফ্রিজে আছে দেখো। একটা সাদা বাটিতে। গরম করে দিয়ে দিও।’

‘আচ্ছা।’ বলে বেরিয়ে গেলেন আঞ্জুমান।

তিথি চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। মেহেরুন মুনতাহার দিকে তাকালেন। তারপর ব্যাগ থেকে একটা আকাশী রঙের কাতান শাড়ি বের করলেন। সেটার দিকে তাকিয়ে থেকে বলতে লাগলেন, ‘এই শাড়িটা মাহির। জাওয়াদ উপহার দিয়েছিলো। খুব পছন্দের ছিলো এটা মাহির। যখনই পরতো, সদ্য ফুটে ওঠা ফুলের মতো লাগতো আমার মেয়েটাকে। শাড়িটা যখন সে পরতো, চুল ছাড়া রাখতো সে। আমি আমার মেয়ের চুলের মতো লম্বা চুল আর একজনের দেখেছি।’ এতটুকু বলে তিথির দিকে তাকালেন তিনি। তারপর উঠে দাঁড়িয়ে তিথির সামনে গেলেন। তিথি একটু অবাক হলো। মেহেরুন বললেন, ‘শুধু চুলের দিক থেকে নয়। তোমাকে দেখলেই আমার মাহির কথা মনে হয়। মনেহয়… আমার মেয়েটা আমার সামনে দিয়ে ঘুরছে। এ-এই… তুমি এই এই শাড়িটা কালকে পরবে, তিথি? পরবে, মা? আমার খুব ভালো লাগবে।’

কথাগুলো বলা শেষ করতেই টুপ করে এক ফোটা জল গড়িয়ে পড়ে মেহেরুনের গাল বেয়ে। তিথির বুকটা মুচড়ে ওঠে। একজন মা এভাবে এসে তাকে বলছে… কান্না পেয়ে গেল তিথিরও। সে আস্তে আস্তে শাড়িটা মেহেরুনের হাত থেকে নিজের হাতে নিলো। তারপর বললো, ‘পরবো। অবশ্যই পরবো।’

মেহেরুন এগিয়ে গিয়ে তিথির কপালে একটা চুমু দিলেন। তারপর মুনতাহার দিকে তাকালেন। মুচকি হাসলেন মুনতাহা। বেরিয়ে গেলেন মেহেরুন। তিথিও শাড়িটা হাতে নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই মুনতাহা ডাকলেন, ‘শাড়িটা আমার কাছে দিয়ে যা। কাল তোকে পরিয়ে দেবো আমি। আমার কাছে আসবি। পার্লারে যেতে হবে না তোকে কাল। আমি সাজিয়ে দেবো।’

তিথি কিছু না বলে শাড়িটি মুনতাহার হাতে দিলো। তারপর ঝুমকো জোড়া নিয়ে বেরিয়ে গেল। মুনতাহা কিছুক্ষণ শুন্যে তাকিয়ে রইলেন। তারপর হুট করে একটা কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে বসলেন
____________

তিথি নিজের ঘরে গিয়ে দেখলো জাওয়াদ বসে আছে। হাতে ভাজ করে রাখা একটা কাগজ৷ দেখে মনে হচ্ছে আর্ট পেপার। তারপর মনে পড়লো তিথির, বিছানার ওপর জাওয়াদের আঁকা ছবিটা রেখেছিলো সে। জাওয়াদ দিতে চায়নি, জোর করে নিয়ে এসেছিলো। বিছানার দিকে তাকিয়ে দেখলো কফির মগ। কফির কথা ভুলেই গিয়েছিলো সে। তারপর খেয়াল করলো, বিছানার চাদরটা পাল্টানো। সে এগিয়ে এসে বললো, ‘আরে, সকালেই আমি চাদর বদলিয়েছি। আবার বদলালো কে?’

জাওয়াদ নিচের দিকে তাকিয়ে ছিলো। তিথির কথা শুনে মাথা তুলে তাকালো তার দিকে। তারপর হেসে বললো, ‘আমি বদলিয়েছি।’

‘কিন্তু কেন?’

‘হিসু করে দিয়েছিলাম তোমার বিছানায়।’ বলে হেসে দিলো জাওয়াদ।

‘ইশ, আপনি না…’ লজ্জা পেলো তিথি।

জাওয়াদ বললো, ‘প্রশ্নেরও ধরন থাকতে হয় পিচ্চি। ওটা ভালো লাগেনি তাই চেঞ্জ করিয়েছি।’

‘ও।’ বললো তিথি। তারপর একটু চুপ করে আবার বললো, ‘ছবিটা নিলেন কেন? দিন।’ বলে নিতে চাইলো ছবিটা তিথি। জাওয়াদ হাত পেছনে নিয়ে নিলো। তারপর বললো, ‘অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি। সেটা ঠিক করবো। ছবিটা তোমাকে এখন দেয়া যাবেনা।’

‘কেন?’ গাল ফুলিয়ে বললো তিথি।

জাওয়াদ বললো, ‘তুমি বুঝবেনা।’ বলে নিজের পকেট থেকে একটা চকলেট বের করে তিথির দিকে এগিয়ে দিয়ে আবার বললো, ‘এটা দিতে এসেছি। নাও। খাও। কাজ আছে আমার, যাচ্ছি। আর তোমার কফিটা আমি খেয়ে ফেলেছি।’ বলে তিথির হাতে চকলেট দিয়ে হেসে বেরিয়ে গেল জাওয়াদ। তিথিও হেসে চকলেট খেতে লাগলো।
____________

নিজের রুমের দিকে যেতে যেতে ভাবছিলো জাওয়াদ, তিথি ছবিটার এই হাল দেখলে অনেক কষ্ট পেতো। বিছানার চাদরেও কিছুটা কফি পড়ে দাগ লেগে গিয়েছিলো। কোনোভাবেই যাতে কিছু না বুঝে তাই বিছানার চাদরটাও টুনিকে দিয়ে বদলিয়েছে সে। জাওয়াদ ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছে। কাজটা কার করা। দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো ভেতর থেকে। রাগ করতে করতেও ক্লান্ত সে। নিজের রুমে যেতেই কেউ একজনের চিৎকার শুনলো, ‘জাওয়াদ, এতোকিছু হয়ে গেল কিছুই বললিনা।’

জাওয়াদ তাকিয়ে দেখলো তার রুমে রিয়াদ, রাকিব, নাহিদ তিনজন বসে আছে। কথাটা রাকিব জিজ্ঞেস করেছে চিৎকার করে। জাওয়াদ বললো, ‘কী বলবো?’

‘ভাবি বানিয়ে ফেললি বেটা, বলিওনা না ট্রিটও দিলিনা।’

‘বিয়ে খাচ্ছিস, হচ্ছেনা?’ বলে বিছানায় এসে বসলো জাওয়াদ। নাহিদ বললো, ‘রিয়াদের বিয়ে। এমনভাবে বলছিস যেনো বিয়েটা তোর। আমার ছাত্রীর সাথে হিল্লে করলি অথচ আমিই জানলাম না।’

জাওয়াদ ওদের কথাকে পাত্তা না দিয়ে রিয়াদের পিঠে একটা থাপ্পড় দিয়ে বললো, ‘সময় বেশি নেই। আস্তে আস্তে তৈরি হ।’

রাকিব বললো, ‘ভাবিকে দেখবো কবে?’

জাওয়াদ হাসলো ঠোঁট কামড়ে। তারপর নিজের চুলে হাত চালাতে চালাতে বললো, ‘দেখবি। আজই দেখবি।’
_________

চলবে……..
#ফারজানা_আহমেদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here