মন পিঞ্জর পর্ব ৮

0
1017

#মন_পিঞ্জর
#লেখিকা_আরোহী_নুর
#পর্ব_০৮

আয়ান রেডি হচ্ছে হাসপাতাল যাবে বলে,সকাল পুরো ১০ টা বাজে, এদিকে মাহি এখনও চাদর মুড়ি দিয়ে ঘুমুচ্ছে,সারাঘরের জিনিসপত্র বিখড়ানো,কোনো জিনিসই তার ঠিক জায়গায় রাখা নেই,আয়ান এদিকে ওর ওয়ালেট খুঁজে পাচ্ছে না,তাই এবার মাহিকে ডাক দিলো।

এই যে মাহি শুনছো?উঠো আমার ওয়ালেটটা কোথায় রেখেছো বলো?(লেখিকাঃআরোহী নুর)

মাহি ঘুমঘুম মাতালীয় কন্ঠে বললো।

নতুন চাকরানিই তো তোমার ঘর গোছায় ওকেই ডেকে জিজ্ঞেস করো আমাকে কেনো ডিসটার্ব করছো?ঘুমুতে দাও তো।

আয়ান এবার ভ্রযোগল কুঁচকে বললো।

চাকরানি ঘর গোছায় মানে? তুমি গোছাও না?

আয়ানের কথায় এবার মাহি শোয়া থেকে উঠে বসে বলতে লাগলো।

আমি ঘর গোছাবো কেনো?আমি কি ঘরের চাকরানি না কি?আর নিজের জিনিস নিজে ঠিক করে রাখতে পারো না?যত্তসব, শুধু শুধু সকাল সকাল আমার এতো দামী ঘুম নষ্ট করলে।

কথাটা বলে মাহি বিরক্তিকর ভঙ্গিতে ওয়াসরুমে ঢুকে গেলো,আয়ান হতবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো ওর দিকে,আঁখি থাকতে যে এমনটা কখনোই হতো না,ঘরের সবকিছুই নিজেরদের অবস্থানেই বিরাজ করতো সবসময়,কোনো জিনিসই কখনো বিখড়ানো দেখতে পেতো না আয়ান,এমনকি নিজের কোনো জিনিস কখনো আয়ানকে খুঁজতেই হতো না,আঁখি যে আয়ানের সবকিছুরই খেয়াল আলাদা করে রাখতো।(লেখিকাঃআরোহী নুর)

__________________

আঁখি পৌঁছে গেলো ভার্সিটিতে, পিলুপিলু পায়ে হাঁটছে আর ভাবছে একটু আগে ঘটে যাওয়া মুহুর্তের কথা।

আদৃত স্যার হয়তো ক্ষেপে আছেন আমার উপর,আর ক্ষেপবেনই না কেনো আমি যে তখন উনাকে গনধোলাই খাওয়ানোর সব ব্যবস্থা করে নিয়েছিলাম,যদি ছেলেটা তখন সব না বলতো তবে আজকে আমার জন্য আদৃত স্যারের সাথে কি না কি………
ধুর এসব কি ভাবছি আমি,এসব কিছু হয় নি এটাই ভালো,যে করেই হোক আমার আদৃত স্যারের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
কথাটা ভাবতে ভাবতেই আঁখি হোঁচট খেয়ে পড়ে যায় নিচে,হাতের কনুইতে অনেক ব্যাথা পায় এতে ও,তখনি খেয়াল করে একটা বলিষ্ঠ হাত কেউ এগিয়ে দিয়েছে ওর দিকে,হয়তো ওর সাহায্য করার সুবিধার্তে,এদিকে লোকটার চেহারা দর্শন করার সুবিধার্তে চোখ তুলে তাকিয়ে আঁখি দেখতে পেলো লোকটা আর কেউ নয় সয়ং আদৃত।

এভাবে শুকনো মাটিতে হোঁচট খেলে তো চলবে না মিস আঁখি,নিজের পায়ে দাঁড়াতে গেলে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা যে কমাতে হবে আপনাকে,হাত ধরে উঠে আসুন,আর সামনে থেকে হাঁটতে গেলে পড়ার দিক টা খেয়াল রেখে হাঁটবেন আশা করছি।(লেখিকাঃআরোহী নুর)

পড়ে গেলেই তো আবার উঠে দাঁড়ানোর শক্তিটা আসে আদৃত স্যার,হয়তো সে শক্তিটা সবার মধ্যে থাকে না সবাই অন্যের হাত ধরেই উঠে যেতে চায় তবে আঁখি যে সে গোত্রের মেয়ে নয়,পড়ে গেলেও যে আঁখি নিজে থেকে উঠতে জানে আদৃত স্যার।কারে উপরই নির্ভর করার মেয়ে আঁখি নয়।

কথাটা বলে আঁখি নিজে থেকেই উঠে গেলো।এবার আদৃত ঠোঁটের কোনো একটা আলতো হাসি টেনে বললো।

আই লাইক ইওর এটিটিউড মিস আঁখি,ধরে রাখবেন এটাকে জীবনে কাজে দিবে।

কথাটা বলে আদৃত দৃঢ় কদমে স্থান ত্যাগ করলো,এদিকে আঁখি ঢুকতে পারলো না ওর কথার মারপ্যাচে।

স্যার এই কেমন এটিটিউড দেখিয়ে গেলো আমায়?কথার ধরন দ্বারা তো কিছুই বুঝলাম না লোকটা আসলে কি চায়, আমাকে ভালো জ্ঞান দিলো না ধিক্কার করলো,রাস্তায় যে কান্ড আমি ঘটিয়েছি তারপর আমাকে নিয়ে লোকটা ভালো কি করেই বা ভাবতে পারে,আর আমিও এমন, এখনও সরিটা বলি নি,উল্টো উনার সাথে কথার ম্যারপ্যাচে পড়ে গেছিলাম।

আয়ান বেডে বসে জুতো পড়ছিলো তখনি ওয়াসরুম থেকে বেড়িয়ে আসে মাহি।

মাহি তুমি বেড়িয়েছো প্লিজ এক কাপ কফি করে দেবে।

হোয়াট!আয়ান বেবি,এটা কি বলছো তুমি? আমি কেনো কফি খাওয়াবো তোমায়?চাকরানিকে বলো।

রোজ কাজের লোকের হাতে কফি খেতে ভালো লাগে না কি?তুমিও তো পারো দিনে একবার এককাপ কফি করে খাওয়াতে আমায়।

কি যে বলো আয়ান,আমি কফি কেনো বানাতে যাবো?আমি কখনো নিজের জন্যই বানাইনি আর তোমার জন্য বানাবো,হা হা হা,এসব সো কোন্ড পার্সোনালিটি কোথা থেকে বানিয়েছো তুমি? বউয়ের হাতে আলাদা করে কফি খাওয়ার আবদার করো,সত্যিই হাস্যকর,হা হা হা,তুমি বরং ওই নতুন চাকরানির হাতেই কফি খাও আমাকে ভার্সিটিতে যেতে হবে,বিয়ের চক্করে ভার্সিটিতে অনেক ক্লাস মিস করেছি আর করা যাবে না।(লেখিকাঃআরোহী নুর)

তারপর মাহি রেডি হয়ে আয়ানের দিকে এগিয়ে এসে ওর গালে নিজের অধর ছুঁইয়ে দিয়ে বললো।
আই লাভ ইউ বেবি ,বাই।

মাহি চলে গেলো,আয়ান নিরাশাময় দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো মাহির পানে।

ক্লাসে বসে আঁছে আঁখি,আদৃত ক্লাস করাচ্ছে এদিকে আঁখির মনে বার বার ঘুরপাক খাচ্ছে সকালের সেই ঘটনা,আদৃতকে সরি না বলা অব্দি যে শান্তি হবে না এই রমনির মন।এদিকে আঁখির খেয়াল বেধ করে আদৃতের গম্ভীর কন্ঠের বানী এসে আঁখির শ্রবন অঙ্গে নাড়া দিলো।

এই যে মিস আঁখি,প্লিজ কাম এন্ড সল্ভ দিস কুয়েশ্চন।

স্যারতো স্বাভাবিক আচরনই করছেন আমার সাথে,আর আমি উনার আচরনে শুধু খোঁট খুঁজে বার করছি,কিন্তু উনার মতো এতো গম্ভীর আর রাগি মানুষ এমন কিছু হয়ে যাওয়ার পর কি করে কাউকে সহজে ছেড়ে দিতে পারে।

মিস আঁখি আমি আপনাকে প্রথমেই বলেছিলাম খামখেয়ালিপণা ভালো স্টুডেন্টের কাছ থেকে শোভা পায় না,আপনার এই বদঅভ্যেস যতো তাড়াতাড়ি পারেন মায়নাস করবেন,এখন জলদি করে এসে এটা সল্ভ করে দিয়ে যান।

ওকে স্যার।

আঁখি এবার এগিয়ে আসলো,আদৃত আঁখিকে একটা কাজ দিলো যা ওকে সবাইকে সল্ভ করে দেখাতে হবে,আঁখি আদৃতের একদম পাশে দাঁড়িয়ে আছে,এবার আদৃত সামনে তাকানো অবস্থায়ই ধীর আর গম্ভীর কন্ঠে বললো।

হয়তো আপনি এটাই ভাবছেন সকালের কান্ডের পরও আমি আপনার সাথে নরমাল বিহেব কেনো করছি,তবে শুনেন মিস আঁখি,ড.আদৃত চৌধুরী কখনো নিজের প্রফেশনাল আর পার্সোনাল লাইফ একসাথে রাখে না,রাস্তার কান্ড তো সেই রাস্তায়ই শেষ হয়ে গেছে সেটা ক্লাসরুমে টেনে এনে নিজের ছাত্রীকে অপদস্ত করার লোক আদৃত নয়,তাই মনে মনে খামখেয়ালি চক্র বোনা ছেড়ে দিয়ে নিজের স্টাডিতে মন দিন,নাও সল্ভ দিস কুয়েশ্চন।

ধুর লোকটাকে নিয়ে আমি অলটাইম আবোলতাবোল ভাবি,তবে সঠিক ভাববোও কেমনে লোকটার ভাবভঙ্গি দেখে এর সঠিক ব্যাক্তিত্ব যে ধরাই যায় না,একে দেখলেই মনে হয় রহস্যের মায়াজাল,কথাবার্তাও ঠিক তেমন।(লেখিকাঃআরোহী নুর)

__________________

কাজ শেষে ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরেছে আয়ান,এসেই বেডে চিৎ হয়ে পড়েছে,আজকে অনেক এমারজেন্সি ছিলো হাসপাতালে, এদিকে আয়ান এসেছে দেখেও মাহির কোনো হেলদোল নেই,ফোন নিয়ে গুতাগুতি করছে,আয়ান এবার কন্ঠে অলসতা ভাব টাঙিয়ে বললো।

এক গ্লাস পানি দিবে মাহি?

হাতের কাছেই তো পানি রাখা আছে উঠে খেয়ে নাও,আমাকে কেনো বলছো?

ফোন টিপতে মগ্ন অবস্থায় জবাবটা দিলো মাহি,আয়ানের দিকে তাকালোই না,আয়ান নিরাশ হয়ে নিজেই পানি খেয়ে নিয়ে ফ্রেস হতে চলে গেলো,প্রায় অনেকক্ষন পর ফ্রেস হয়ে এসে দেখলো মাহি এখনও ফোন টিপছে,এবার অনেকটা রাগ কাজ করতে শুরু করলো আয়ানের মস্তিষ্কে,তাই খনিক তেঁজি কন্ঠে বললো।

এটা কেমন ব্যবহার মাহি,সারাদিনে এসেছি আর তুমি ভালো করে তাকাচ্ছোও না,সারাদিন ফোন নিয়ে পড়ে থাকলে হয় না কি?

তো কি করবো আয়ান,তোমার দিকে এখন আলাদা করে তাকানোর কি আছে,যেমন তোমাকে আর দেখি নি আমি,কাজ থেকে এসেছো আমিওতো দেখছি তাই বলে কি সব কিছু ছেঁড়ে তোমার কোলে গিয়ে বসে থাকবো,পৃথিবীতে আমার জন্য তুমি একা না আরও অনেক লোক আছে আমার জীবনে যারা আমার জন্য ইমপোর্টেন্ট, বুঝেছো।

কথাগুলো বলে আবারও ফোন নিয়েই ব্যাস্ত হয়ে পড়লো মাহি।
আয়ান আর কিছুই বললো না মাহিকে, বিনাবাক্যেই ঘর থেকে বেড়িয়ে গেলো,এদিকে আয়ানের এভাবে চলে যাওয়া কোনো প্রভাব ফেললো না মাহির মনে,নিজের ফোন গুতাগুতিতেই ব্যাস্ত রমনি।

_________________

সরু রাস্তায় পিলুপিলু পায়ে হাঁটছে আঁখি, মাথায় এক রাশ চিন্তা, কালকে যে বাড়ির মালিকের আরও তিন হাজারখানা টাকা দিতে হবে,তবে তার এখনও কোনো ব্যাবস্থা যে করতে সমর্থ্য হয় নি আঁখি,চারিদিকেই দখিনা হাওয়ার মুগ্ধতা ছড়িয়ে আছে,হাওয়াটা যে এই চাঁদনি রাতের শোভা আরও বাড়িয়ে তুলছে,প্রকৃতি যে সত্যিই মায়াজালে আবদ্ধ, প্রকৃতির মায়ায় ভুলে না যাওয়ার মতো কষ্ট যেনো এই পৃথিবীতেই নেই আঁখির জন্য,আঁখি জীবন সংগ্রামের শক্তি যেনো এই প্রকৃতি থেকেই পেয়ে থাকে,জীবনে সবার সঙ্গ ছুঁটে গেলেও প্রকৃতির সাথে সখ্যতা সেই ছোটবেলা থেকেই আঁখির, যা কখনো ছুঁটে নি আর ছুঁটবেও না,প্রকৃতির এই সৌন্দর্যই যে আঁখির হাজার কষ্টের পরেও আলতো ভালোথাকার কারন,ছোটবেলা থেকেই আঁখির দখিনা হাওয়ায় দোলরত সরু রাস্তা পছন্দ, যেখানে হাওয়াতে দুলবে চারপাশের সবকিছু আর আকাশের রহস্যময়ী ওই চাঁদটা নিজের চাঁদনিতে ভরিয়ে দেবে ধরনী,আজকের রাতটাও ঠিক তেমনই,তাই আপন মনে হাঁটছিলো আঁখি,তবে মন পিঞ্জরের এক কোনে একটা খালিলাগা হাত নাড়া দিয়ে উঠছে আর সেটা হলো আয়ানের অনুপস্থিতি,যদি আয়ানের হাত ধরে চাঁদনি রাতে হাঁটার দিনগুলো আবার ফিরে আসতো তবে কি খুব বড় ক্ষতি হয়ে যেতো,আঁখির ভাবনায় বার বার নাড়া দিয়ে উঠছে কথাটা,হঠাৎ আঁখির নজর গেলো একটা ছোট্ট ঝিলের পাশে বসে থাকা এক যুবকের দিকে,চাঁদনি ভরা রাতে যুবকের চেহারার দ্বিধার করতে মোটেও অসুবিধা হলো না আঁখির,যুবকটাকে যে আঁখি চেনে,এ যে আর কেউ নয় সয়ং ড.আদৃত,আঁখি উনাকে দেখে খনিক হতবাক হলো,তারপর কিছু একটা ভেবে উনার ঠিক পাশে গিয়ে বসলো।(লেখিকাঃআরোহী নুর)

ঝিলের জলে খুব সুন্দর একটা পদ্ম ফুঁটেছে,সদ্য ফোঁটা ওই ফুলটাকে যে নিজের প্রিয়তমার মতোই মনে হলো আদৃতের,আর নিজেকে আকাশের মতো,পানিতে তাকালে মনে হচ্ছে যেনো ওই পদ্মফুলটার স্থান ওই আকাশেরই বুকে,কিন্তু সেটা যে শুধুই একটা কল্পনা মাত্র,ওই পদ্ম যে আকাশের থেকে অনেক দূরে, আকাশ চাইলেও হাত বাড়িয়ে তাকে নিজের বুকে টেনে নিতে ব্যার্থ।
আনমনের এসব ব্যাথার্থ ভাবনার ছেদ ঘটিয়ে আদৃত অনুমান করতে পারলো পাশেই কারো উপস্থিতি, চোখ ঘুড়িয়ে দেখতে পেলো চেনা একটি চেহারা ,তারপর আদৃত আবারও স্বাভাবিকভাবে ঝিলের জলে তাকাতে ব্যাস্ত হয়ে গম্ভীর কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো।

তুমি এখানে?

আঁখিও জলের পানে তাকানো অবস্থায় উত্তর দিলো।

আমারও একই প্রশ্ন আপনি এখানে?একাকিত্ব সময় কাটাতে এসেছেন বুঝি?

যার জীবনে একাকিত্বটাই আসল তাকে একা সময় কাটানোর জন্য আলাদা করে কোথায় যেতে হয় না মিস আঁখি।

কথাটা বলার পর আদৃত আর কিছু বললো না,আঁখিও চুপ করে বসে ঝিলের জলের সৌন্দর্য দ্বিধার করছে,দুজনের মধ্যে কিছুক্ষণ পিন পিন নিরবতা কাজ করার পড় নিরবতা কাটিয়ে আঁখি বলে উঠলো।(লেখিকাঃআরোহী নুর)

আজকের সকালের জন্য আমি সত্যিই অনেক দুঃখীত স্যার,আসলে আমি তখন বুঝতে পারি নি যে ওটা শুধুই একটা এক্সিডেন্ট ছিলো,জানেনই তো আজকালকার লোকেরা কেমন, ইচ্ছে করেই গরীবকে আঘাত করতে চায়,তাই আমি ভেবেছিলাম আপনিও।

আপনি ভেবেছিলেন আমিও ওই দলের একজন তাই না?

আঁখির দিকে তাকিয়ে কথাটা বললো এবার আদৃত,আঁখি অনুশোচনায় চোখ মিলাতে ব্যার্থ হলো আদৃতের সাথে।

আদৃত এবার বলে উঠলো।

ইট’স ফাইন মিস আঁখি,চোখের ধোকাটা হওয়া স্বাভাবিক, চোখ তো অনেক কিছুই দেখে তাই বলে কিছু যাচাই না করে তাতে বিশ্বাস করা আদোও বুদ্ধিমানের কাজ হয় না,আজকে আপনার চোখ আপনাকে যা দেখিয়েছে আপনি সে অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া করেছেন,আপনার প্রতিবাদী ব্যাক্তিত্বটা ভালোই,আজকাল সবার মাঝে তা খোঁজে পাওয়া যায় না,তবে হ্যাঁ নিজের চোখের দেখা কথায় বিশ্বাস করার আগে তা যাচাই করে নিবেন প্লিজ।তা না হলে কোনোদিন কোনো ভালো মানুষ আপনার জন্য পাগলাগারদে ভর্তি থাকবে।

কথাটা শুনে আলতো একটা হাসি দেয় আঁখি,আদৃত নিজের গাম্ভীর্য ভাবে সমাপ্তি ঘটাতে নারায,একই ভঙ্গিতে জলের দিকে তাকাতে ব্যাস্ত হলো আবারও।আঁখিও জলে ধ্যান ব্যাক্ত করলো,হঠাৎ একটা কিছু জানার কৌতুহল ধরা দিলো আঁখি মনে,তাই জলের দিকে নয়ন ব্যাক্ত করে হঠাৎ আঁখি মনের অজান্তেই বলে উঠলো।

আপনাকেও একাকিত্ব কষ্ট দেয় তাই না স্যার?হয়তো জীবন আপনার কাছ থেকেও অনেক কিছু কেঁড়ে নিয়েছে?

কথাটা শুনে আদৃতের মন পিঞ্জর হঠাৎ খচ করে উঠলো সাথে সাথে উঠে দাঁড়ালো,আর বললো।

অনেক রাত হয়েছে মিস আঁখি আমাদের এবার যার যার বাড়ি যাওয়াই ভালো,চলে আসেন।

আঁখিও আর কিছু বললো না,উঠে যেতে নিবে তখনি ব্যালেন্স বিগড়ে যাওয়া থেকে আঁখি পড়ে যেতে নিলে আদৃত নিজের বাহুডোরে আবদ্ধ করে নেয় ওকে।

আয়ানের মনটা যে আজ বড্ড বাঁধনহাড়া হয়ে গেছে,না চাইতেও আঁখির স্মৃতি বার বার তাড়া করে বেড়াচ্ছে আজ ওকে,জীবনে সবকিছুই যে পেয়ে গেছে আয়ান তবে মনের কোনে কিছু হারানোর অনুভুতিটাও উকি দিতে শুরু করেছে,আয়ান বুঝে উঠতে পারছে না জিনিসটা আদোও কি,তবে যে এই আচম্কা অনুভুতি অনেক পিড়া দান করছে আয়ানের মনে,নিজের মন পিঞ্জরখানা খনিক শান্ত করার টানে প্রকৃতির মায়ায় পড়তে চাইলো আয়ান,তখন ঘর থেকে বেড়িয়ে আপন মনে ড্রাইব করতে শুরু করেছিলো আয়ান,হঠাৎই নজর গেলো সরু এই রাস্তাটার দিকে,আঁখির হাত ধরে এমন রাস্তায় যে অনেক হেঁটেছে আয়ান,হয়তো আঁখির স্মৃতিতেই সেই রাস্তায় আজ আবারও হাঁটতে মন চাইলে আয়ানের,কিন্তু মন শান্ত করার টানে মনের ঝড়ের বেগ আরও বেড়ে যেতে নিবে তা যে জানা ছিলো না ওর,চোখের সামনেই আঁখিকে বাহুডোরে আবদ্ধ করে আছে অন্য পুরুষ,দৃশ্যটা যেনো খনিকে আগুন ধরালো আয়ানের মনে,জানে না কেনো কিন্তু মনে যে আয়ানের ঝড় উটলো নিমিষেই,(লেখিকাঃআরোহী নুর)

চাঁদের আলোয় আঁখির মুখখানা দেখে খনিকের জন্য আঁখিতেই নিজের প্রিয়সীর ছবি অনুভব করে নিয়েছিলো আদৃত,তাই অপলকে কিছুসময় তাকিয়ে রইলো ওর পানে,এদিকে আঁখি এতে অনেক অস্বাভাবিক হয়ে পড়লো।নিজেকে ছাড়িয়ে নিলো আঁখি, তারপর দুজনই স্বাভাবিক হয়ে যেতে নিলে দুজনেরই চোখ পড়লো ঠিক সামনে দাঁড়িয়ে থাকা যুবকের উপর।

চলবে……….

লাগা লাগা আগ লাগা??সবাইকে আসসালামু আলাইকুম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here