ভালোবাসি হয়নি বলা পর্ব ১৪ +১৫

0
709

#ভালোবাসি_হয়নি_বলা
#লেখকঃmahin_al_islam
#পর্বঃ১৪

এসব ভাবতে ছিলাম হঠাৎ করে কে জানি আমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরল এবং চোখে হাত দিয়ে রাখলো।

আমি অনেকটা ভয় পেয়ে গেলাম কারণ হসপিটালে এই সময় আমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরবে আর আমার চোখে কে বা হাত দিয়ে রাখবে

আমি অনেক চেষ্টা করতেছি চোখ থেকে হাত দুটোর জন্য কিন্তু পারতেছি না বুঝলাম না

আমার জানামতে কেউ এখানে আমার পরিচিত নেই কিন্তু এটা কে হতে পারে

তারপর অনেকটা শক্তি কাটিয়ে হাত দ্রুত সরিয়ে পিছনে ঘুরে আমি তো একদম অবাক এটা কিভাবে সম্ভব

আমিঃ আরে তুই এখানে তাও আবার আমি তো কিছুই বুঝতে পারতেছি না তুই কোথা থেকে আসলি আমাকে দেখলে কিভাবে যে আমি এখানে

রুহিঃ ডক্টরের কাছে এসেছিলাম কিন্তু হঠাৎ করে দেখলাম তুই এখানে দাঁড়িয়ে কাকে যেন খোঁজাখুঁজি করতেছিস তো ভাবলাম তোকে একটু সারপ্রাইজ দেয়

আমিঃ সত্যিই আমি অনেক সারপ্রাইজ হয়েছি তোকে এখানে দেখে কত দিন পর তোকে দেখলাম জানিস

রুহিঃ তুই জানিস আমি তোকে কত মিস করতাম প্রতিদিন ভাবতাম তোকে যদি আবার সেই আগের মতো কাছে পেতাম মনের কথা সব খুলে বলতাম কিন্তু আগের মত আর হয় না রে

আমিঃ হুম,, এখন মনের কষ্টগুলো মনেই রেখে দিতে হয় বলার মতো কাউকে পাই না জানিস মাঝে মাঝে যখন তোর কথা মনে হয় তখন চোখ দিয়ে আপনি আপনি পানি চলে আসে জানিস কত কথা বলতাম আমরা আর আজকে দেখা পর্যন্ত হয় না ভাগ্যো

রুহিঃ আচ্ছা আর কান্না করতে হবে না এখন বল তুই কানে কেন

আমিঃ আমার ছোট ভাইকে আছে না ওর অপারেশন করেছি আর ওকে নিয়ে অনেক টেনশনে আছি আমার জীবনে অনেক কিছু পরিবর্তন হয়ে গেছে রে

রুহিঃ বলিস কি কি হয়েছিল ভাইয়ের

আমিঃ লিভারের সমস্যা হয়েছিল রে ওর পিছনে সারাদিন থাকতে হয় এখন,,, আচ্ছা এসব বাদ দে তোর স্বামী এখানে এসেছে তোর সাথে নাকি তুই একা এসেছি আর বাচ্চা-কাচ্চা কি নিছিস নাকি এখনো

রুহিঃ তোর দুলাভাই একটা কাজের চাপে আমার সাথে আসতে পারেনি আমার একটা মেয়ে আছে

আমিঃ কই তোর মেয়ে এখানে আসে নি তোর সাথে

রুহিঃ নারে এত করে বললাম আয় কিন্তু আসলো না ওর দিদার সাথে খেলা খেলতেছে

আমিঃ অনেক কিউট তোর বাচ্চাটা তাইনা

রুহিঃ হ্যাঁ একদম তোর মতো

আমিঃ এখন কি বাসায় চলে যাচ্ছিস নাকি অন্য কোথাও যাবি

রুহি: এখন বাসায় চলে যাব অন্য কোথাও যাওয়া হচ্ছে না তখন সন্ধ্যা হয়ে গেছে আমাকে এখন বাসায় যেতে হবে রে তোকে সময় দিতে পারলাম না

আমিঃ ধুর পাগলী এটা কোন কথা হলো এটা তো প্রতিটা মেয়ের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে বিয়ের পর তার জীবনটা পুরাই পাল্টে যায় তার ইচ্ছামত কিছুই হয় না বুঝছিস

রুহিঃ আর থেকে তো তুই দেখি ভালো বুঝিস আচ্ছা আজকে আছি রে আর এই যে আমার বাড়ি ঠিকানা একদিন সময় করে চলে আসিস আড্ডা দিব

আমিঃ ওকে তাহলে আমিও আসি

তারপর আমার সেই প্রিয় বেস্ট বান্ধবী টা চলে গেল আর আমি ওর চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছি

কত আড্ডা দিতাম দুজন একসাথে কত কথা বলতাম

কিন্তু আজকে এতটা দূরত্ব বেড়ে গেছে যে তার সাথে বসে যে কিছু কথা বলব সেই সময়টাও নেই

আমার খুব কান্না পাচ্ছে অতীতের কথাগুলো ভেবে কত আড্ডা দিতাম কত কথা বলতাম আমরা কত হাসাহাসি করতাম কিন্তু সময়ের সাথে সব কিছু পাল্টে যাচ্ছে

জাপানি স্কুল লাইফের একটা করে বেস্ট বান্ধবী ছিলোনা তারাই বোঝে বেস্ট বান্ধবীর মর্ম

যখন সেই বান্ধবীর সাথে দেখা হয় কিন্তু কথা বলার সুযোগ হয় না,,, কথাগুলো ভাবতে ভাবতে চোখের লোনা জল গুলো গড়িয়ে পরলো গাল বেয়ে

ভালো থাকিস বন্ধু,, স্কুল লাইফ টা যদি আবার ফিরে পেতাম,, তাহলে সারাক্ষণ তোর সাথে আড্ডা দিতাম,, কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস আমি আপনার সাথে এরকম করাটা দিতে পারবোনা স্কুল রাতে চলে যাওয়ার পর এখন বুঝতে পারতেছি স্কুল লাভটা কী ছিল কিন্তু যখন স্কুলে ছিলাম তখন একটুও ভালো লাগছে না শুধু বলতাম কবে যে কলেজ যাব কিন্তু যখন কলেজ গেলাম রে পাগলি স্কুল লাইফ টা যেটি ছিল তার মর্ম বুঝতে পারলাম,, আচ্ছা মানুষের সাথে কেনো এরকম হয়,, আমার অনেক জোরে জোরে কান্না পাচ্ছে কিন্তু কান্না করতে পারতাছিনা এটাই হয়তো জীবন,, একসময় তাদের ছাড়া এক মুহূর্ত কাটতো না এখন তাদেরকে ছাড়া বছরের পর বছর কাটিয়ে দিতে হচ্ছে,

স্কুল লাইফের স্মৃতি গুলোর সবথেকে বেটার হয়

আমি কখনো পারব না আমার স্কুল লাইফের সেই স্মৃতিগুলো ভুলে যেতে,,, ভালবাসি বন্ধু ভালবাসি বন্ধু ভালবাসি??

হঠাৎ করে মনে পড়ে গেল উনি তো এখনো আসলেন না ব্যাপার কি তার মানে কি উনি আমাকে ফেলে চলে গেলেন

আমি আর কিছুই ভাবতে পারতেছিনা আমার মাথাব্যথা শুরু করে দিয়েছে,

আমি চুপচাপ ভাইয়ার কেবিনে চলে গেলাম গিয়ে দেখি আম্মু শুয়ে পড়ছে ভাইয়া শুয়ে আছে

আমাকে কেবিনে ঢুকতে দেখে

আম্মুঃ কিরে মামা কোথায় গিয়েছিলি এতক্ষন লাগলো যে

আমিঃ আম্মু রুহি এসেছিল ওর সাথে দেখা হলো তাই ওর সাথে একটু আড্ডা দিলাম

আম্মুঃ কি বলিস কেবিন একটু নিয়ে আসতে অনেকদিন থেকে মেয়েটার সাথে কথা হয় না একটু কথা বলতাম

আমিঃ আম্মু অনেক বিজি এমনিতেই সন্ধ্যা হয়ে গেছে তাই বাসায় চলে গেল

আম্মুঃ উহহহ

আমিঃ আজকেও কি আমাকে বাসায় চলে যেতে হবে

আম্মুঃ বাসা যে কোন কাজ নেই এখানেই থাক আজকে কিছু গল্প পড়ি মা মেয়ে মিলে

তারপর আম্মুর সাথে গল্প করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছি আম্মুর সাথে

খেয়ালই করিনি

সকাল বেলা,,,

যখন আমার ঘুম ভাঙলো দেখি আমি আম্মুকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছি,,

তারপর আমি বিছানা থেকে উঠে হসপিটালের ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম

ফ্রেশ হয়ে রুমে এসে দেখি আম্মু উঠে গেছে

আমিঃ আচ্ছা আম্মু তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও আমি কিছু নিয়ে আসি দোকান থেকে

আম্মুঃ ওকে

দোকান যাওয়ার পথে আমার খেয়াল হলো উনি কি তাহলে কালকে রাতে আসেনি

ওনার কথা মনে পড়তেই মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেল

যে মানুষটা আমাকে ছাড়তেই চাইছিল না সেই মানুষটা এখন বলতো আমাকে দেখতে এলো না

আনমনে রাস্তার একপাশ দিয়ে হেটেই চলছি দোকানের দিকে

এখনো সকাল তো তাই রাস্তায় তেমন কোনো গাড়ি নেই,, মানুষজন ও তেমন নেই একদম ফাঁকা হয়ে পথে রাস্তাটা

মাঝে মাঝে কয়েকটা দোকান খোলা আর দোকানের মধ্যে 2_1 জন আড্ডা দিচ্ছে সকালবেলা

পরিবেশটা একদম মনমুগ্ধকর অনেক ভালো লাগতেছে সূর্যমামা উঁকি দিচ্ছে,, সকালের মিষ্টি রোদ গায়ে লাগতেছে খুব ভালো লাগতেছে অনুভূতিটা অন্য রকম

গুটি গুটি পায়ে হেঁটে যাচ্ছি আমি উদ্দেশ্য দোকানে গিয়ে কিছু কিনে আনব

আনমনে হাঁটতে ছিলাম হঠাৎ করে ওষুধ খেয়ে পড়ে যেতে নিলেই কেউ আমাকে ধরে ফেলে কিন্তু লোকটাকে আমি দেখতে পেলাম না কারণ আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে নিয়েছি,,

চোখ দুটো মিটমিট করে খুলে লোকটার দিকে তাকিয়ে তো আমি অবাক এটা কিভাবে হতে পারে আমি স্বপ্নের জগতে আছি নাতো,,,

নাকি আমার চোখ থেকে এখনো ঘুমের রেশ টা কাটেনি যার ফলে এরকমটা দেখতেছি

আমার এটা বিশ্বাস হচ্ছে না তাই নিজের গায়ে নিজেই চিমটি কাটলাম না এটা তো সত্যি

চলবে……….

#ভালোবাসি_হয়নি_বলা
#লেখকঃmahin_al_islam
#পর্বঃ১৫

আমার এটা বিশ্বাস হচ্ছে না তাই নিজের গায়ে নিজেই চিমটি কাটলাম না এটা তো সত্যি

এত সকাল-সকাল উনি কোথা থেকে আসলেন আর ওনাকে এমন দেখাচ্ছে কেন

ওনার কিছু না কিছু হয়েছে না হলে উনাকে এমন দেখাতো না কিন্তু কি হয়েছে সেটা এখনও আমাকে জানতে হবে

আমিঃ আপনাকে এমন দেখাচ্ছে কেন সারারাত কি ঘুমা হয় নাই নাকি কোন কারনে আপনি টেনশন করতেছেন

উনি চুপচাপ আমাকে ধরেই আছে কোন প্রকার কথা বলতেছে না আমার কথা মনে হয় আপনার কান অব্দি পৌঁছাচ্ছে না যার ফলে আমার কথার কোন উত্তর দিলেন না

আমিঃ কি হলো আপনার কি হয়েছে আমাকে বলবেন না আপনাকে এরকম দেখাচ্ছে কেন

তাও নেই কোন প্রকার কথা বলতেছে না মাধ্যমে ওনাকে একটু জোরে ধাক্কা দিলাম

আমি ধাক্কা দাওয়াতে আমার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে বুঝলাম না কি হয়েছে উনার এরকম করতেছে কেন

আমিঃ প্লিজ বলুন আপনার কি হয়েছে এরকম ভাবে আপনাকে দেখতে পারতাছিনা আর প্লিজ বলুন কী হয়েছে আপনার আমাকে তো অন্তত বলুন

মাহিনঃ অনেক কিছু হয়েছে এখন আপনি বলেন যে এখানে কি করতে এসেছেন এত সকাল সকাল

আমিঃ আমি না আপনার বউ এখনো আপনি আমাকে আপনি আপনি করেন কিজন্য তুমি করে বলতে পারেননা,,,

মাহিনঃ দেখেন সেটা পরের বিষয় এখন বলেন আপনি এখানে কি জন্য এসেছেন এত সকাল সকাল

আমিঃ আগে আপনি আমাকে তুমি করে বলবেন তারপর আমি বলবো আমি কি জন্য এখানে এসেছি

মাহিনঃ ওকে ফাইন,,, তুমি এত সকাল-সকাল এখানে কি করতে এসেছো

আমিঃ আসলে ভাইযান খিদা লেগেছে তাই দোকান থেকে কিছু কিনতে আসলাম

মাহিনঃ আচ্ছা চলনা আমি কিনে দিচ্ছি আর তাড়াতাড়ি, বেরিয়ে আসবেন আপনার সাথে অনেক কথা আছে

আমিঃ কি এমন কথা এখন বলা যায় না

মাহিনঃ দেখো এরকম ভাবে প্রশ্ন করবোনা তোমাকে যেটা বললাম সেটা করো আমি খাবার কিনে দিচ্ছি তুমি রুমে দিয়ে আসো আমার সাথে তোমাকে এক জায়গায় যেতে হবে

আমি কিছুই বললাম না জানি এখন কিছু বললে উল্টা আরো রেগে যাবে এমনিতেই ওনার মুখ দেখে অনেক মায়া হচ্ছে নিশ্চয়ই রাতে কিছু না কিছু হয়েছে না হলে গতকাল সন্ধ্যায় উনি আমার কাছে আসতেন

চুপচাপ ওনার সাথে সাথে চলতে লাগলাম উনি কিছু খাবার কিনে দিলেন আমি কিছু বললাম না উনি টাকা দিলেন তারপর উনি আবার আমাকে হসপিটালের গেট পর্যন্ত এগিয়ে দিলেন দিয়ে উনি হাসপাতালে গেটে দাঁড়িয়ে রইলাম আবার ফিরে আসার জন্য

আমি খাবার গুলো নিয়ে কেবিনে প্রবেশ করলাম কেবিনে প্রবেশ করে দেখি আম্মু নামাজ থেকে উঠলো

আম্মুঃ এনেছিস রে মা খাওয়া

আমিঃ হ্যাঁ ভাই দেখাবো সবকিছু রেডি করে ভাইয়াকে খাইয়ে দাও

মিলনঃ আপু আমি কি আজকে বাসা যাব

আমিঃ না রে ভাইয়া কালকে তোকে রিলিজ দিবে আর কালকে থেকে তুই বাসায় থাকবি

মুখে হাসি রেখে রেখে কথাটা বললাম,, ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও হাসতে পারতেছি না কোন একটা কারণে

মিলনঃ কি মজা আপু আমি আবার ঠিক হয়ে যাব আবার তোমার সাথে দুষ্টুমি করবো আবার তোমার সাথে ঘুরতে যাব

আমিঃ হ্যাঁ ভাইয়া আগের মতো আবার সব ঠিক হয়ে যাবে তুমি এখন রেস্ট নাও আর আম্মু তোমাকে খাবার খাইয়ে দেবে সেগুলো খেয়ে নাও আমি এখন একটু বাসায় যাব

আম্মুঃ এত সকাল-সকাল বাসায় যাবি রাস্তায় কোন গাড়ি পাওয়া যাবে না আর তুই একটা মেয়ে এত সকাল-সকাল বাসায় গিয়ে কি করবি

আমিঃ আম্মু আমার কিছু কাজ আছে বাসার মধ্যে সেই কাজগুলো সেরে খুব তাড়াতাড়ি চলে আসতেছি আমি যে ডক্টরের সাথে কথা বলে নেব ভাইয়াকে রিলিজ দেওয়ার ব্যাপারে

আম্মুঃ আচ্ছা তো যা ভালো মনে হয় কর কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি চলে আসিস,,, আজ বিকেলে আমি একটু বাসা থেকে ঘুরে আসব কয়েকদিন থেকে বাঁচা যায় না তো মনটা আনচান আনচান করতেছে বারোটা থেকে ঘুরে আসবো আজকে একটু

আমিঃ ওকে আম্মু

কথাটা বলে রুম থেকে কোন মত বেরিয়ে দৌড়াতে লাগলাম

হসপিটাল গেটে গিয়ে দেখি উনি আগের মতো দাঁড়িয়ে আছে আনমনা হয়ে বুঝতেছিনা কি হলো এত চঞ্চল একটা মানুষের একরাতে কি এমন তার জীবনে ঘটে গেল যার জন্য সব সময় তার মুখটা ফ্যাকাসে দেখাচ্ছে

আমি না এটা নিতে পারতেছি না কারণ যে চঞ্চল মানুষটা সব সময় আমাকে জ্বালাতো সেই মানুষটা এখন চুপচাপ ফ্যাকাশে মুখে হয়ে দাঁড়িয়ে আছে আমার না এটা মেনে নিতে অনেক কষ্ট হচ্ছে

তারপর আমি ওনার কাছে গেলাম উনার কাছে গিয়েও না হাতটা শক্ত করে ধরে গাড়িতে নিয়ে গিয়ে বসলাম

আমিঃ আচ্ছা চলুন কোথাও নিয়ে যাও কথা আছিল আমাকে আমি সেখানে যাব কিন্তু তাও প্লিজ এরকম ঘুমরা মুখ করে থাকবেন না একটু হাসার চেষ্টা করুন

আমার কথায় কোন উত্তর না দিয়ে উনি গাড়ী চালাতে লাগলেন বুঝলাম না আমাকে এত ইগনোর করতেছে কেন

আমি অবাক দৃষ্টীতে শুধু আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছি কি এমন হয়েছে আজ রাতে যার ফলে উনি আমার মাথায় কিছু ঢুকতেছে না এরকম ভাবে চলতে থাকলে আমার মাথাব্যথা শুরু করে দিবে

সকাল বেলার সোনালী রোদ্দুর গাড়ির কাচ ভেদ করে মুখে এসে ঝলকানি দিচ্ছে পরিবেশটা বেশ রোমাঞ্চকর কিন্তু প্রিয় মানুষটার মুখ ফ্যাকাশে,, এটা একটা প্রিয় মানুষের কাছে কঠিন যন্ত্রণাদায়ক সময়

আমিঃ প্লিজ আপনার কি হয়েছে আপনার দুটো পায়ে পড়ি তাও আমাকে বলেন নয়তো আমি টেনশনে মারা যাবো

আমার কথাটা শুনে উনি গাড়িটা এত তাড়াতাড়ি ব্রেক করলেন যে আমি চোখের সামনে গিয়ে বারি খেলাম

মাহিনঃ তোমাকে একটা কথা বলি ভালো করে মনে রাখবা আমার সামনে তুমি আর কোনদিন মরার কথা বলবা না তাহলে সেদিন আমি যে তোমাকে কি করবো তুমি নিজেও ভেবে পাবা না

আমি উনার এরকম আচরণ দেখে অবাক এর উপর অবাক হচ্ছি কি হচ্ছে এখানে এখনই এরকম করতেছে কেন আজকে আমি এটা মেনে নিতে পারতেছি না।। আমার খুব কান্না পাইতেছে কিন্তু কান্না করতে পারতাছিনা যদি কান্না করি আবার উনি রিএক্ট করে সেই ভয়ে কান্না করতে পারতাছিনা কিন্তু চোখ দিয়ে আপনা আপনি পানি বেরিয়ে আসতে চাচ্ছে কোনোমতে ধরে রেখেছি

তারপর উনি আবার গাড়ি চালাতে লাগলেন কিন্তু আমি কোথায় যাচ্ছি সেটা জানিনা এই রাস্তা আমি কোনদিন চলাচল করেনি

আমি চুপচাপ জানালার দিকে মুখ করে কান্না করতেছি নিঃশব্দে কারো উনি দেখলে কিনা কি বলে। সকালের পরিবেশটা অনেক সুন্দর লাগতাছে কিন্তু আমার মনের পরিবেশ টা একদম মেঘাচ্ছন্ন

একটু পর একটা বাড়ীর সামনে গাড়িটা দাঁড়ালো বুঝলাম না আমাকে এত সকালে কার বাড়িতে নিয়ে আসলেন

উনি চুপচাপ গাড়ি থেকে নেমে আমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে হাত ধরে টেনে বাসার ভিতরে নিয়ে চলে গেলেন

উনি সামনে যাচ্ছে আর আমি পিছনে আমার দিকে তাকিয়ে হেঁটে যাচ্ছি উনার এরকম আচরন আমি সত্যিই অবাক কি বলব আমি বুঝতে পারতেছি না অনেকে করতেছে এটা আমার ভাবনার বাইরে

আমি আগে থেকে জানতাম আমি ওনার কখনোই মনের কথা বুঝতে পারবো না

উনি আমাকে নিয়ে বারোটার ভিতর প্রবেশ করলেন

বাসার ভেতর প্রবেশ করে আমার চোখ কপালে উঠলো এত সুন্দর বাসা আমি কখনো দেখিনি এর আগে

আমার অন্যদিকে কোন খেয়ালই নেই আমি শুধু চারদিকে ঘুরে ঘুরে বাসাটাই দেখতেছি এত সুন্দর গোছানো সাজানো একদম পরিপাটি একটা বাসা

হঠাৎ করে চোখ আটকে গেল একটা দেয়ালে কিছু ছবির উপর

যেখানে ফ্যামিলি ফটোর মধ্যে উনার ছবিও রয়েছে তার মানে এটা কি মনের ভাষা

মাহিনঃ এই ছুটকি,,, এই ছুটকি কোথায় তুই বাইরে এসে দেখ কাকে নিয়ে এসেছে

উনি কাকে যেন ডাকতে লাগলেন জোরে জোরে

উনার ডাক শুনে ফুটফুটে একটা মেয়ে উপর তলা থেকে নিচে নেমে আসতেছে অনেক কিউট একটা মেয়ে মনে হয় বয়স 15 থেকে 16 বছর হবে,,,,

ছুটকিঃ কিরে ভাইয়া তুই কালকে রাতে বেরিয়ে গেলি আর বাসায় ফিরি না কেন জানিস আম্মু তোকে নিয়ে কত টেনশন করতেছিল

তারমানে আমার ধারণাই ঠিক গতকাল রাতে ওনার সাথে কিছু না কিছু হয়েছিল যার ফলে উনি আমার সাথে এরকম ব্যবহার করতেছে সকাল থেকে

মাহিনঃ এই যে এই মেয়েটাকে দেখেছিস না এটাই তোর ভাবী আমি ওকে বিয়ে করছি 3 দিন আগে

ছুটকিঃ তোর কি মাথা ঠিক আছে তুই এসব কি আবোল তাবোল বকছিস ভাইয়া,, তুই তো জানিস আব্বু কি পরিমান রাগী মানুষ তার উপর এরকম একটা কাজ করেছিস শুনলে তোকে বাসা থেকে তাড়িয়ে দেবে,,,,

ওনাকে ভাষা থেকে তাড়িয়ে দিবে এই কথাটা শুনে আমার কলিজার ধুকধুকানি বেড়ে গেল

মাহিনঃ পিচ্চি পন্ডিত বেশি বুঝবি না তোর ভাবি এটা ভালোভাবে কথা বল তারপর তোর কাজ হইলো এখন আম্মুকে ডেকে নিয়ে আয় তার বৌমাকে নিচে এসেছি বরণ করে নিক

ছূটকিঃ ভাই আবেগ সকাল-সকাল তুই আমার সাথে এরকম ঝগড়া লেগে পরবি না,, তাহলে কিন্তু তোর ভালো হবে না আমি আম্মুকে সব বলে দিব আব্বুর কেও সব বলে দেবো

মাহিনঃ থাকার ভয় দেখাতে হবে না আমি ভালো করে জানি তুই আব্বুকে এসব কিছুই বলতে পারবি না এখন চুপচাপ যেটা বলতেছি সেটা শোন আম্মু কে ডাকে নিয়ে আয় তারপর আমাকে সব বুঝিয়ে বলতে হবে নয়তো

ছুটকিঃ আমি আম্মুকে ডেকে নিয়ে আসতে পারি একটা শর্তে আমাকে আজকে 10000 টাকা দিতে হবে সেটা ট্রিট তুই বিয়ে করছিস সেটা তো আমি জানিনা তার জরিমানা বাবদ মোট তুই আমাকে আজকে পঞ্চাশ হাজার টাকা দিবি

মাহিনঃ কিইইইইইইইই,,,,এত টাকা

ছুটকিঃ দেখ আজকে কোন কিপটামি চলবে না যেটা বলছি সেটাই করতে হবে আর সেটা ক্যাসে কোন চেক নিব না আমি

ওদের দুই ভাই বোনের এরকম কোন ছুটি ঝগড়া দেখে আমার মনটা ভাল হয়ে গেল নিমিষেই নিজের অজান্তেই মুচকি মুচকি হাসতে চাই আমি ওদের কান্ড দেখে

আমি জানিনা আমার এই বাসায় থাকা হবে কিনা হয়তো আমি গরিব মানুষ আমাকে মেনে নেবে না, এখন দেখা যাক আমাকে আর কত কষ্ট সহ্য করতে হয়

পরের পর্ব থেকে শুধু দুষ্টু মিষ্টি খুনসুটি আর প্রেমের গল্প লিখব নাকি কিছু দুঃখ এড করে দেবো ( আপনাদের মূল্যবান কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দেবেন)

(গল্পটা যদি দুজনার মিল না দেই তাহলে কি আপনারা খুব রাগ করবেন আমার উপর????)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here