ভালোবাসা এমনও হয় পর্ব-৮

0
799

#ভালোবাসা_এমনও_হয়
#Writer_Nusrat_jahan
#part_08

নেশাঃ কিহহহহহ??

রোজাঃ কি হলো তুমি অবাক হচ্ছো কেন?

নেশা আর কিছু বলতে পারলো নাহ।।
জি অজ্ঞান হউএ গেছে??।এতো বড় শক থেকে আর কি হতে পারে তার জন্য?।

রোজা গিয়ে ধরতে যাবে তার আগেই নীরব গিয়ে ধরে ফেললো।

রোজাঃ স্যার আপনি??

নিরবঃ আমি এইদিকে দিয়ে যাচ্ছিলাম।।।তখন দেখলাম নেশা পরে যাচ্ছে।। আচ্ছা এইসব কথা বাদ দাও।। পানি নিয়ে আসো।।

রোজা গিয়ে পানি নিয়ে আসলো।।নিরব নেশার মুখে পানির ছিটা দিলো।।কিন্তু জ্ঞান ফিরছে নাহ।।

নিরব নেশাকে কোলে তুলে ক্লাস থেকে বেরিয়ে গেল।।তারপর নিজের কেবিনে নিয়ে গেল।।রোজা ও পিছে পিছে গেল।।আসলে ক্লাসে অনেক গরম তো তাই নিরব ভাবলো কেবনে নিলে হয়তো জ্ঞান ফিরতে পারে?।।

এইদিকে ইশানের কানে খবর গেল নেশা অজ্ঞান হয়ে গেছে।।দৌড়ে যেতে নিলো তার আগেই নেশাকে নিরবের কোলে দেখে মাথায় আগুন ধরে গেল।।সেইখানে নাহ গিয়ে উল্টো হাটা ধরলো।।।আবার কিছুক্ষণ পর নিরবের কেবিনে ঢুকে পড়লো।।

নেশার জ্ঞান ফিরে নি এখনো।।ইশান গিয়ে নিরবকে সরিয়ে নেশার কাছে দাড়ায়ে তার জ্ঞান ফিরানোর চেষ্টা করলো।

নিরবঃ আমি দেখিছি তো?

ইশানঃ এতোক্ষণ অনেক দেখেছেন।।আমার জিনিস আপনাকে এতো দেখতে কে বলেছে(দাঁত চেপে)

নিরবঃ মানে!কোন দেখার কথা বলছো তুমি?

ইশানঃ কিছু নাহ।।আচ্ছা ও অজ্ঞান হলো কিভাবে

রোজাঃ আসলে ভাইয়া আমি আর নেশা মিলে কথা বলছিলাম।।কথার মধ্যে আপনার কথা বলতে ও খুব অবাক হয়ে যায়।।আর অজ্ঞান হয়ে যায়।

ইশানঃ আমার কথা মানে!?

রোজাঃ তাতো জানি নাহ কেন।।।বাট আমি যখন আপনার নাম বলি যে আপনি আমাদের ভিপি স্যার তখনই ও জ্ঞান হারায়।।

ইশান বুঝতে পারলো এইটা শুনে নেশা ভয়ে অজ্ঞান হয়ে গেছে।।
ইশানের ইচ্ছা করছে বোম ফাটানো হাসি দিতে।।কিন্তু আপাদত হাসিটা আসছে নাহ।।কারন নিরব নেশাকে কোলে নিয়েছে।।যার জন্য ইশানের মাথা গরম।।

একটুপর

নেশার জ্ঞান ফিরলো।

রোজাঃ ওইতো নেশার জ্ঞান ফিরেছে।।

নেশা ইশানকে দেখে কোনাচোখে তার দিকে তাকালো।।ইশান তার দিকেই তাকিয়ে আছে।।রাগি চোখে।।
নেশা ঢুক গিললো

নেশাঃ আল্লাহ ভাইয়া যদি ভিপি হয় তাহলে আমাকে তো আজ ও শেষই করে দিবে।।আমি কি না একটা গাধা। ওর সামনেই ওকে মারার কথা বলছিলাম?‍♀?‍♀?।যেই ভাবে তাকিয়ে আছে মনে তো হচ্ছে চোখ দিয়েই জ্বালিয়ে দিবে ?

রোজাঃ কিরে নেশা এখন ঠিক আছিস?

নেশাঃ হহ্যা?

নিরবঃ আমরা তো টেনশনেই পড়ে গেছিলাম।।হঠাৎ করে জ্ঞান হারালে কেন?

নেশাঃ জজানি ননহা?

নেশা আবার ইশানের দিকে কোনাচোখে তাকায়।।ইশান এখনো বাঘের মতো তাকিয়ে আছে।।

নেশাঃ উফ এই লুক দিচ্ছে কেন।।আমি নাহ ভয়ে হার্টএটাক করি।।ইশ আমি যদি মারা যাই আমার বাচ্চা গুলার কি হবে?।।ধুর কিসব ভাবছি।।আমার তো বেবিই নেই?‍♀?‍♀

নেশা বিরবির করে কথা গুলো বলছে।।

নেশাঃ আল্লাহ এই ছেলে কিছু বলে নাহ কেন।।

আবার কোনাচোখে তাকালো।।

ইশানঃ নিরব স্যার আজ আর নেশা কলেজে ক্লাস করতে পারবে নাহ।।আমি ওকে নিয়ে যাচ্ছি

নিরবঃ কিন্তু ওতো এখন ঠিক আছে?

ইশানঃ আপনাকে যাস্ট বললাম আপনার আনুমতি চাইনি।।

বলেই নেশার হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে নিলো-

নিরবঃ নেশা তোমার মোবাইল নাম্বার টা দিয়ে যাও

ইশানঃ ?

নেশাঃ কেন স্যার

নিরবঃ নাহ এমনি ফোন করে খবর নিতাম আরকি

নেশাঃ ওহহ।।০১……..

ইশানঃ নেশা মোবাইল চালায় নাহ(নেশাকে থামিয়ে)

নেশাঃ আল্লাহ কি মিথ্যা বলে(বিরবির করে)

ইশানঃ কি বিরবির করছিস

নেশাঃ নাহ কিছু নাহ

নিরবঃ মোবাইল চালায় নাহ?।।এইটা কি সত্যি

ইশানঃ হ্যাঁ সত্যি তো।।তাই নাহ নেশা।।(দাঁতে দাঁত চেপে)

নেশা ইশান কে দেখে ঢুক গিললো

নেশাঃ হহহ্যা।।ইশান ভভাইয়া ঠিক ববলছে?

নিরবঃ আরে বাহ।।এই যুগের মেয়ে হয়ে মোবাইল চালাও নাহ।।ইম্প্রেসিভ।।

ইশানঃ বাই।

নিরবকে আর কিছু বলতে নাহ দিয়ে ইশান নেশার হাত ধরে বেরিয়ে গেল।।।নেশাও কিছু বলছে নাহ।।কারন এখন কিছু বলতে গেলে মাইরও খেতে হতে পারে






ক্যাম্পাস দিয়ে বের হওয়ার সময় সায়ান সামনে এসে দাড়ায়।।

ইশানঃ হোয়াট।।রাস্তা আটকালি কেন?

সায়ান ভাবলো ইশান তার উপর কালকের ঘটনার জন্য রেগে আছে।।

সায়ানঃ আসলে ইশান কালকের জন্য সরি।।আমি জানতাম নাহ যে ও তোর বোন হয়

ইশানঃ ওকে বলা শেষ।। এখন যাই

সায়ানঃ আরে বাবা রাগছিস কেন

ইশানঃ আমি রাগ করছি নাহ।।আর তোর সাথে এই ব্যাপারে পরে কথা বলবো।এখন আমাকে যেতে দে

সায়ানঃ আরে সরি বললাম তো।।আচ্ছা নেশাকে ও বলছি।।নেশা আই এম সো সরি।।তুমি যদি আগেই বলে দিতে তুমি ইশানের বোন তাহলে এমনটা হতো নাহ

নেশাঃ সসসসসমমসস্যা নননেইইই ভভভাইইয়া

সায়ানঃ তুমি তোতলাচ্ছো কেন

নেশাঃ ককই?

সায়ানঃ তু….

ইশানঃ সায়ান পথ ছাড়। এই ব্যাপারে আমরা পরে কথা বলবো

বলেই ইশান সায়ানকে সাইডে ফেলে চলে গেল।।সায়ানের মাথায় কিছুই ঢুকলো নাহ।

প্রায় আধাঘন্টা ধরে গাড়িতে বসে আছে ইশান।।না ড্রাইভ করছে আর না কথা বলছে।।নেশা একটু পর পর তাকাচ্ছে।।তাতে ইশানের কোন হেলদোল নেই।।

উপায় নাহ পেয়ে নেশা কথা বললো।

নেশাঃ ভাইয়া আর কতোক্ষন থাকবা।।বাড়ি যাবো নাহ আজ?

ইশানঃ হুম

নেশাঃ তাহলে গাড়ি চালাচ্ছো নাহ কেন।।গাড়ি না চালালে যাবো কিভাবে

ইশানঃ হুম

নেশাঃ কিছু বলছি তোমায়

ইশানঃ হুম

নেশাঃ আরে আজব তো কি হুম হুম করছো।।কিছু বলছি কানে ঢুকছে তোমার??(চিৎকার করে)

ইশানঃ ?চিল্লাস কেন।।আমি কি কালা নাকি হ্যাঁ

নেশাঃ না তুমি কালা হয়ে যাবে কেন।।আচ্ছা কি হয়েছে বলবে।।যাওয়ার সময় তো মুড ভালোই ছিলো।।এখন কেন অপ করে আছো

ইশানঃ তুই আর কাল থেকে কলেজে যাবি নাহ

নেশাঃ মানে(শকড)

ইশানঃ মানে তুই আর কলেজে যেতে পারবি নাহ।।তোর আর এই কলেজে পড়া হবে নাহ।।ইনফেক্ট কোন কলেজেই তুই পড়বি নাহ

নেশাঃ আরে বাট কেন।।আমি কি করেছি

ইশানঃ কিছু করিসনি।। আমি বলেছি তাই যাবি নাহ ব্যস

নেশাঃ বললেই হলো। আমি কলেজে যাবো।।

ইশানঃ ?আমার মুখে মুখে কথা বলছিস তুই।।তোর তো দেখছি খুব সাহস বেরে গেছে

নেশাঃ এখানে সাহসের কি হলো।।যা সত্যি তাই বলছি।।আমি কলেজে কেন যাবো নাহ ওইটা তো বলো।আমার কি দোষ

ইশানঃ বললাম কোন দোষ নেই।।কিন্তু তুই কলেজে পড়তে পারবি নাহ।।এইটাই কথা।

নেশাঃ আমি পড়বো মানে পড়বো আর এই কলেজেই পড়বো।

ইশানঃ নেশা আমি নাহ বলেছি?

নেশাঃ তোমার নাহ আমি শুনবো নাহ।।আমি পড়বো পড়বো। ব্যাস।

ইশান রেগে নেশার গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিলো।
নেশা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।।না নেশার কাছে এটা নতুন নয়।।ইশান আগেও তাকে এইভাবে মেরেছে।।।তাহলে কি আগের ইশান ফিরে আসলো।।

নেশা চুপচাপ গাড়ির দরজা খুলে বেরিয়ে গেল।।ইশান ও আটকালো নাহ।।কারন এখন নেশার পিছন গেলে উল্টে আরো রাগ বেরে যাবে।।আপাদত ইশান নেশাকে রাগ দেখাতে চাইছে নাহ।।

বিকালে ইশান বাড়ি ফিরে এলো।।

মিনাঃ কিরে তুই কোথায় ছিলি।।আর নেশার কি হয়েছে।

ইশানঃ নেশা?কেন কি হয়েছে

মিনাঃ দুপুরে কিছু খায়নি।।দরজা বন্ধ করে৷ বসে আছে।।।কেউ কি কলেজে কিছু বলেছিলো?

ইশানঃ আমি দেখছি তুমি যাও।

 

নেশার রুমের সামনে গিয়ে ইশান দরজায় লক করলো।

ইশানঃ নেশা দরজা খুল।।আমার কথা আছে।।

নেশাঃ আমি এখন কোন কথা বলবো নাহ ভাইয়া। তুমি পরে এসো।

ইশানঃ নেশা দরজা খুল।।আমি চাইছি নাহ দরজাটা ভাঙতে।।

নেশা গিয়ে দরজা খুলে দিলো।।ইশান ঘরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিলো।

ইশানঃ নেশা তুই এতো রিয়েক্ট করছিস কেন মনে হচ্ছে জীবনে আমার মার এই প্রথম খেলি।

নেশা ঘুরে ইশানের দিকে তাকালো।।ইশান দেখেই অবাক হয়ে গেল।।ফর্সা গালে পাচ আঙুলের দাগ বসে গেছে।।নিশ্চয়ই ইশানের চড়ের কারনে হয়েছে।।আজ একটু বেশিই রেগে ছিলো।তাই হয়তো জোরেই মেরে দিয়েছে।

ইশানঃ আই এম সরি নেশা।।আমি আসলে রেগে

নেশাঃ সমস্যা নেই।।অভ্যাস আছে।

ইশান বুঝলো নেশা রেগে কথাটা বলেছে।।

ইশানঃ সরি তো

নেশাঃ আমি আর কলেজে যাবো নাহ ভাইয়া।।তুমি যা বলেছো তাই হবে

ইশানঃ আরে আমি তো ওইসময় রাগে বলেছিলাম?।।তুই ওই কলেজেই যাবি।।এখনতো একটু হাসি দে

নেশাঃ ???

ইশানঃ আচ্ছা কাল কলেজ থেকে আসার সময় ওইখানে আইসক্রিম খাবো।।২ জন মিলে

নেশাঃ ?

ইশানঃ আচ্ছা ফুচকা খাবো একসাথে ?

নেশাঃ ?

ইশানঃ আচ্ছা তাহলে চকলেট দিবো অনেক গুলা।।এখনতো একটু হাসি দে

নেশাঃ ?

ইশানঃ এখনো রাগ কমেনি

নেশাঃ নাহ

ইশানঃ ওহহ তো রাগ কি কিছু দিলেই কমবে নাহ

নেশাঃ নাহ

ইশানঃ এতো রাগ দেখাছিস কেন বলত

নেশাঃ তো কি করবো।।যদি সব গুলো একসাথে অফার করতে তাহলে রাগ কমতো

ইশানঃ মানে?

নেশাঃ আমার আইসক্রিম, ফুচকা,চকলেট সব একসাথে চাই।।তাহলে রাগ কমবে?

ইশান ফিক করে হেসে দিলো।

ইশানঃ তুই কিন্তু দিন দিন রাক্ষসী হয়ে যাচ্ছিস

নেশাঃ হুহ তাতে তোনার বাপের কি??

পরেরদিন কলেজে

রোজাঃ জানো নেশা কি হয়েছে

নেশাঃ কি

রোজাঃ নিরব স্যার কে ইশান ভাইয়া প্রিন্সিপাল কে বলে এই কলেজ থেকে টান্সফার করে দিয়েছে

 

চলবে

(আজ আমি কিছু বলবো নাহ।?।আমি কিছু বললেই তা ভাইরাল হয়ে যায়।??।আজ শুধু দেখমু। আর যারা মাস্ক না পরে গল্প পড়য়ে আসছে তাদের জেলে দিমু??

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here