ভালোবাসা এমনও হয় পর্ব-১২

0
726

#ভালোবাসা_এমনও_হয়
#writer_Nusrat_Jahan
#Part_12

৬ বছর পর।
আজ নেশা ফিরছে।।হ্যা বাড়িতে ফিরছে।।৬ বছর পর।।এই ৬ বছর মা বাবার সাথে কথা বলেছে ঠিকই। কিন্তু ৫ মিনিটের বেশি নাহ।।কারন হয়তো ইমোশনাল হয়ে পড়বে।।ইশানের খবর নেয় নি কখনো।।নেশার মা অনেকবার তুলেছিলো কিন্তু নেশা বিজি বলে কাটিয়ে দিতো।।আসলে লোকটাকে কেন যেন দেখতে মন চায় নাহ তার।।পুরোনো ক্ষত টা মাথা নাড়া দিয়ে উঠে।।একসময় তো ভালোবেসেছিলো।।তার অবহেলা, তার ঘৃণা গুলোকে ভালোবেসে ছিলো।কিন্তু তার মুল্য তো দিরে থাক তার মনে একটা মনে একটা মানুষের জায়গাই করতে পারে নি।আর ভালোবাসা তো অনেক দুরের কথা।।তবুও মনটা কেন যেন মানতে চায় নাহ।।পুরানো কথাগুলো ঠিকই মনে থেকে যায়।এতো সার্থপর কেন মনটা।।অবশ্য নিজের ভালোটাও বুঝে নাহ।।যা নিজের ভাগ্যে নেই সে জিনিসটাই চায়।নেশা কি আজও ইশানকে চায়।।তা নেশার অজানা।যতোই হোক ভালো বেসেছে ইশানকে।।মনের মধ্যে অনুভূতি গুলো দমিয়ে অন্যের থেকে আড়াল করার চেষ্টা করলেও নিজের থেকে তো লুকাতে পারবে নাহ।।নাহ ইশানের প্রতি তার রাগ নেই।।হয়তো আবার আছে।।কিন্তু তাতে কি বা এসে যায়।।সে যে এখন অন্যকারো।।যদি অন্যকারো না হতো তাহলে কি নেশা তাকে ক্ষমা করে দিতো।।নাহ করতো নাহ।।কিভাবে করবে।।এই ধোকার পর তো কিছুতেই নাহ।।তবুও ইশানের কাছে সে কৃতজ্ঞ। হয়তো ইশানের ওই আঘাত না পেলে নেশা এতো দুর আসতে পারতো নাহ।।কিন্তু তবুও নেশা কিছুতেই করবে নাহ ক্ষমা তাকে।।পরিবার থেকে ৬ বছর কেরে নিয়েছে সে।কি করে মাফ করবে।

কথাগুলো ভেবেই দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লো নেশা।প্লেন ল্যান্ড হলো বাংলাদেশ এয়ারপোর্টে। নেশা এয়ারপোর্টের বাইরে থেকে একটা গাড়ি নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দিলো।কেউই জানে নাহ আজ নেশা ফিরবে।।ভাবলো সবাইকে সারপ্রাইজ দিবে।


বাড়িতে গিয়ে দরজার সামনে দাড়িয়ে বেল বাজালো।।কেউ খুলছে নাহ।।কয়েকবার বাজানোর পরেই খুলে গেল।সামনে মিনা দাড়িয়ে আছে।
নেশাকে দেখেই জড়িয়ে ধরে কেদে দিলো।
নেশাঃ কেমন আছো খালামনি
মিনাঃ এতোদিন পর আমাদের মনে পরলো।
নেশাঃ তোমাদের সব সময়ই মনে পরতো।।তাই তো দেখ পার্মানেন্টলি চলে এসেছি তোমাদের কাছে
মিনাঃ সত্যি
নেশাঃ হুম?এখন ভিতরে তো ঢুকতে দাও
মিনাঃ ওহহ ভুলেই গেছি দেখেছিস। চল চল ভিতরে চল।রিনা দেখে যা কে এসেছে(ভিতরে ঢুকতে ঢুকতে)


অনেক ইমোশনাল ড্রামাটামা হলো।

রাতে-
সবাই একসাথে খেতে বসলো। নেশা এখনো ইশানের দেখা পায়নি।।অবশ্য খোজ ও করেনি।
নিলয়ঃ তা নেশা তোমার কোর্স তো কমপ্লিট। তা এখন কি করবে ভাবছো
নেশাঃ আব্বু একটা জবের অফার এসেছে।।ওইটা তেই জয়েন করবো
নিলয়ঃ তা কেন দরকার। এর থেকে আমাদের অফিসেই জয়েন করো।।ইশান ও আছে।।তোমাদের দুইজন কে সব কাজ বুঝিয়ে আমি এবার রেস্ট নিবো
নেশাঃ বাট আব্বু
নিলয়ঃ তোমার কি এতে কোন সমস্যা আছে
নেশাঃ আসলে আমি ঐ অফিসেই জয়েন করতে চাই আব্বু।।তুমি বরং ইশান ভাইয়া কেই সব দায়িত্ব বুঝিয়ে দাও
নিলয়ঃ কিন্তু আমি তো চেয়েছিলাম.
নেশাঃ প্লিজ আব্বু।আমি নজের আলাদা পরিচয় চাই।।ফেমিলি বিজন্যাস এ জিয়েন করতে চাই নাহ
রিনাঃ থাক নাহ।।নেশা যা চাইছে তাই করুক নাহ।
নিলয়ঃ ওকে তোমরা যা ভালো বুঝো তাই হবে।


হঠাৎ এন্ট্রি মারলো ইশান।।অফিস থেকে ফিরেছে মাত্র।কারো দিকে না তাকিয়ে রুমে যাওয়ার জন্য সিড়ির দিকে পা বাড়ালো তখনই
মিনাঃ এই ইশান দেখ কে এসেছে

ইশান মুখ তুলে তাকালো সেদিকে।নেশাকে দেখে অবাক হয়ে গেল।নেশাও তাকালো ইশানের দিকে।।
ব্লাক ডেনিম পেন্ট,ধুসর কালারে শার্ট আর তার উপর ব্লাক কালারে কোর্ট।চোখে চশমা।। মুলত চোখের নিচের কালি গুলো আড়াল করতেই চশমা পরা।কিন্তু তা নেশার চোখের আড়াল হয়নি।সে ঠিকই খেয়াল করলো তা।।ইশানে চেহারাটাও আগের থেকে অনেক পরিবর্তন হয়েছে।।নেশার বুকটা মোচড় দিয়ে উঠলো।। তাহলে কি ইশান ভালো নেই।।আর নিহাই বা কোথায়।।এতোক্ষণ তো দেখতে পেল নাহ তাকে।
ইশানঃ নেশা তুমি?
নেশা অবাক। কারন ইশান তাকে তুমি করে বলছে
ইশানঃ কখন এসেছো?
নেশাঃ এই তো সকালে
ইশানঃ ওহহ।।আচ্ছা।
ইশান আর কিছু বললো নাহ রুমে চলে গেল।নেশা ইশানের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।এই ইশানকে তো নেশা চিনে নাহ।।খুব ঠান্ডা মাথায় কথা বলছে ইশান।।নেশার পাশাপাশি কি তাহলে ইশানও চ্যাঞ্জ হয়ে গেল।
সময়ের স্রোতে সবাই পরিবর্তন হয়ে যায় নাকি পরিবর্তন হয়ে গেছে অন্য কোন কারনে।
রিনাঃ কিরে নেশা খাচ্ছিস না কেন
নেশাঃ নিহা কোথায় আম্মু
রিনাঃ কে?
নেশাঃ না মানে নিহা ভাবি কোথায়
রিনাঃ ওকে ভাবি বলার দরকার নেই
নেশাঃ মানে
মিনাঃ নিহা আর এখন তোর ভাবি নাহ
নেশাঃ বুঝলাম নাহ
মিনাঃ ইশান ওকে ছেড়ে দিয়েছে
নেশাঃ হোয়াট (অবাক হয়ে)
মিনাঃ হুম
নেশাঃ কিন্তু কেন?
মিনাঃ সে সব পরে শুনিস। পরে অনেক টাইম পাবি।।এখন আগে খেয়ে নে।।
নেশা চুপচাপ খেতে লাগলো।।কিন্তু মনে মনে খুতখুত টা ঠিকই রয়ে গেল। তারমানে কি নিহা চলে যাওয়ায় ইশান এতোটা পাল্টে গেছে।না নেশার মাথা কাজ করছে নাহ।।এই জন্যই দেশে ফিরতে চায়নি নেশা।চাইলেও ইশানকে এভয়েড করতে পারবে নাহ সে।।ভালোবেসেছিলো তো।খুব পরিমানে।কিন্তু নিজের বাবা মাকেই বা কিভাবে কষ্ট দিবে সে।।তাই তো মনের সাথে লড়াই করে দেশে ফিরেছে।।কিন্তু এখন


পোস্ট টাইম-রাত-৮.১৬
৬ জুলাই, ২০২০

চলবে

(আপনারা সবাই বলতে পারেন যে এতোকিছুর পরও নেশা কিভাবে ইশানকে ভালোবাসতে পারে।।কেন পারে নাহ ওইটা বলুন।।যতো কিছুই হোক ভালোবাসা কি কখনো মরে যায়।।হয়তো ইশান ভালোবাসেনি কিন্তু নেশা তো ভালোবেসেছিলো।। কিন্তু এখনো ভালোবাসে কিনা তা নেশার অজানা।হয়তো বাসে।।আবার হয়তো বাসে নাহ।।এতো অবহেলার পরও তার জন্য ফিল করে।তার কষ্টে কষ্ট পায়।।হয়তো কিছু #ভালোবাসা_এমনও_হয়?।আর নেশা আর ইশান পাল্টে গেছে কিনা তা না হয় ধীরে ধীরেই জানতে পারবেন)
অসুস্থ ছিলাম তাই কাল গল্প দিতে পারি নি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here