বোনু Part_19

0
456

বোনু
Part_19
#Writer_NOVA

এর মধ্যে ১ দিন কেটে গেছে। কিন্তু উষার কোন খবর পাওয়া যায় নি।সব ভাইয়ের দম বের হয়ে যাওয়ার উপক্রম। চার জনের দিকে তাকানো যায় না। চোখ মুখ ফোলা ফোলা। কান্না করতে করতে নাক ডোগা, চোখ লাল হয়ে আছে। সোফায় এলোমেলো হয়ে বসে আছে অর্ণব,দুই হাত গুঁজে দাঁড়িয়ে আছে ইশাত।ঈশান ফ্লোরে দুই পা ছড়িয়ে মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে। আদিল থাই গ্লাসে এক হাত রেখে আরেক হাতে চুল টেনে কিছু একটা গভীরভাবে চিন্তা করছে।

অর্ণবঃ এভাবে বসে থাকলে কখনি আমরা বোনুকে খুঁজে পাবো না।
ঈশানঃ কোথাও কি খুঁজতে আমরা বাকি রেখেছি?
ইশাতঃ আমার মাথায় ঢুকছে না কে করেছে এই কাজটা।তাকে হাতে পেলে চৌদ্দ শিকের ভাত খাওয়াবো।নয়লে আমার নামও ইশাত মির্জা নয়।
আদিলঃ কয়েক দিন ধরে মনটা কু ডাকছিলো।মনটা বলছিল কোন বিপদ ঘটবে।তখন ততটা পাত্তা দেই নি।কিন্তু মনের কথাটাই সত্যি হলো।
ঈশানঃ একবার জানতে পারি কে করছে কাজটা? তাকে যে আমি কি করবো নিজেও জানি না।ইচ্ছে করছে নিজের মাথার চুল নিজে ছিঁড়ে ফেলি।আজ যা হয়েছে সব আমার জন্য হলো।আমি যদি তখন বোনুর পিছু না নিতাম তাহলে ওরা বোনুকে তুলে নিতে পারতো না।

কথাটা বলে ঈশান সামনে থাকা টি-টেবিলে জোরে একটা ঘুষি মারলো। টেবিলের কিছু হলো বলে মনে হলো না।কিন্তু ঈশানের হাত কেটে গিয়ে ফিনকি দিয়ে রক্ত পরতে লাগলো।নুহা অনেকক্ষণ ধরে আশপাশ করছে ওদেরকে কিছু বলতে।তাই কয়েকবার ওদের সামনে দিয়ে চক্কর মেরে গেছে। এবারও চক্কর মারার সময় ঈশানের হাতের দিকে চোখ গেলো।সবার সামনে দৌড়ে গিয়ে ঈশানের হাত ধরে ব্যস্ত হয়ে পরলো।

নুহাঃ এ মা, আপনার হাত তো অনেকটা কেটে গেছে।
ঈশানঃ কিছু হয় নি।
নুহাঃ অনেক খানি কেটে গেছে। আর উনি বলে কি না কিছু হয় নি।আপনি একটু বসুন আমি ফার্স্ট এইড বক্সটা নিয়ে আসি।
ঈশানঃ আমার কিছু হয় নি।তোমার এতো ব্যস্ত হতে হবে না।
নুহাঃ একদম কথা বলবেন না।ব্যান্ডেজ না করলে ইনফেকশন হয়ে যাবে।

নুহা উঠে বক্স আনতে চলে গেল।আর ঈশান অবাক হয়ে ওর যাওয়ার পানে তাকিয়ে আছে। ইশাতের দিকে তাকাতেই ঈশান দেখতে পেলো ইশাত ওর দিকে চোখ দুটো ছোট ছোট করে তাকিয়ে আছে। ঈশান চোখের ইশারায় জিজ্ঞেস করলো, “কি দেখছিস?”ইশাতও ইশারায় হাত দিয়ে বুঝালো “তোদের লাভ স্টোরি।” ঈশান চোখ পাকিয়ে তাকালে ইশাত মুখ ভেংচে অন্য দিকে তাকিয়ে রইলো।নুহা ফার্স্ট এইড বক্স নিয়ে এলো।তুলা দিয়ে রক্ত মুছে দিচ্ছে।

নুহাঃ সবসময় রাগ কি নিজের ওপর দিয়ে উঠাতে হবে আপনার?নিজের প্রতি এতো কেয়ার লেস কেন আপনি?আপনার যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে আমার…
ঈশানঃ কি তোমার?
নুহাঃ কি কি কি ছু না তো।(আমতা আমতা করে)
ঈশানঃ তুমি কি বলতে চেয়েছিলে?
নুহাঃ হাতটা নাড়িয়েন না তো।আমায় কাজ করতে দিন।(কথা পাল্টে)
ঈশানঃ তুমি কথা ঘুরালে কেন?কিছু বলতে নিয়ে থেমে গেলে কেন?
নুহাঃ আমি কোন কথা পাল্টাই নি।চুপ করে বসুন।এতো নড়াচড়া করেন কেন আপনি?

নুহা হাতে ব্যান্ডেজ করে দিচ্ছে। আর ঈশান দুই হাঁটু মুড়ে বসে এক গালে হাত দিয়ে মনোযোগ সহকারে নুহাকে দেখছে।নুহার কপালের বেবি চুলগুলো বড্ড জ্বালাচ্ছে। নুহা মাথা নিচু করে ব্যান্ডেজ করছে।ওর বেবি চুলগুলো সামনে এসে পরায় ঈশান নুহার মুখ দেখতে পারছে না। তাই সে গালের থেকে হাত সরিয়ে নুহার বেবি চুলগুলো কানের নিচে গুঁজে দিলো।আলতো আঙ্গুলের স্পর্শ পেয়ে নুহা কিছুটা কেঁপে উঠলো। অন্য দিকে ইশাত ওদের কাহিনী দেখে মিট মিট করে হাসছে।

ইশাতঃ আমার তারু পাগলীটা কি করছে কে জানে?পার্টির পর ওর সাথে কোন কথা হয়নি।এতো অবহেলা করি তারপরও ওর আমাকেই চাই। আমারও কি হয়? আমি নিজেও বলতে পারি না।তারিন সামনে থাকলে দূর দূর করে তারিয়ে দেই। কিন্তু দূরে থাকলে খুব মিস করি।মনে হয় কত যুগ ধরে ওর সাথে দেখা হয় না।তবে এটা সত্যি রে তারু, খুব ভালোবাসি তোকে।আমাকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ভুলেও ভাবিস না।জানে মেরে ফেলবো। (মনে মনে)

নুহা ব্যান্ডেজ শেষ করে ভয়ে ভয়ে অর্ণবের সামনে গেলো।কি করে বলবে কথাটা তাই ভাবছে।সবাই যে পরিস্থিতিতে আছে এখন বললে না ওর সাথে রাগারাগি করে। অর্ণব ব্যাপারটা খেয়াল করলো।
অর্ণবঃ কিছু বলবে?
নুহাঃ হ্যাঁ,না মানে না।না, হ্যাঁ বলব।
অর্ণবঃ তুমি ভয় পাচ্ছো কেন?যা বলার নির্ভয়ে বলো।
নুহাঃ ভাইয়ু গতকাল থেকে কেউ একটা দানাপানিও মুখে দেন নি।দয়া করে একটু কিছু মুখে দেন।নয়তো শরীর খারাপ করবে।আর শরীর খারাপ করে অসুস্থ হয়ে থাকলে বোনুকে খুঁজেতে গিয়ে সমস্যা হবে।

অর্ণব শান্ত চাহনি তে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। মেয়েটা ওদের সবদিকে খেয়াল রাখে।না,ঈশান নিজের জন্য পারফেক্ট জীবন সঙ্গী খুঁজে নিয়েছে।যদিও ঈশান ওকে কিছু বলে নি।তবে ছোট ভাইয়ের যে নুহাকে পছন্দ সেটা অর্ণব জানে।তাছাড়া একটু আগে ওদের দুজনের ব্যাপারটাও অর্ণবের চোখ এড়ায়নি।
অর্ণবঃ তোমার ভাবতে হবে না বোন।আমরা আমাদের বোনুকে খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত কিছু মুখে দিবো না। তুমি খেয়ে নেও।
নুহাঃ আপনারা না খেলে আমরাও খাবো না।কিন্তু আপনারা..
অর্ণবঃ এখন আমি খাবার নিয়ে কোন কথা বলতে চাইছি না।(কঠিন গলায়)
নুহাঃ ঠিক আছে। আমি আর কিছু বলবো না।

???

জিবরান গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে মির্জা বাড়িতে ঢুকলো। এখন সবার আগে ওর উষার খবর জানা প্রয়োজন। যখন থেকে উষা নিখোঁজ তখন থেকে এখন পর্যন্ত বেচারা জিবরান চিন্তায় শেষ।

জিবরানঃ ভাইয়া উষার কোন খোঁজ পাওয়া গেছে?
আদিলঃ না জিবরান।
জিবরানঃ জলজ্যান্ত মানুষ উধাও হয়ে গেলো আর আমরা ওকে খুঁজে পাচ্ছি না।কে করতে পারে ওকে কিডন্যাপ? আপনাদের কোন পারিবারিক শত্রু। যে আপনাদের ক্ষতি করতে চায়।
অর্ণবঃ ঈশান বললো আরানের বন্ধু রুমান উষা কিডন্যাপ হওয়ার পর কল করেছিলো।তখন রুমান জানিয়েছে এর আগে পরপর দুই বার মাসফি শিকদার আমাদের বোনের ক্ষতি করতে চেয়েছে। কিন্তু এই বার মাসফি কিছু করে নি।আমাদের নিয়ে গেম খেলছে অন্য কেউ।
জিবরানঃ আপনারা কি জানেন সে কে?
ইশাতঃ জানলে হয়তো এখানে চুপ করে বসে থাকতাম না।এতখনে তার লাশ আমাদের পাশে থাকতাম।
ঈশানঃ একবার জানতে পারি কে করছে?তার লাশ আমি টুকরো টুকরো করে ড্রেনে ফেলে দিবো। (রেগে)
জিবরানঃ এখন আমারা কি করবো?
অর্ণবঃ আল্লাহর ওপর ভরসা করা ছারা আমাদের কিছু করার নেই। তিনি নিশ্চয়ই আমাদের রাস্তা দেখাবেন।আমার বিশ্বাস আল্লাহ আমাদের বোনুর কোন ক্ষতি করবে না।

তারিনঃ ভাইয়ু উষানির কোন খোঁজ পাওয়া গেছে?

পেছন থেকে তারিনের গলার স্বর পেয়ে সবাই পেছনে তাকালো।তারিনের চোখ দুটো টলমল করছে। সারা রাত উষার চিন্তায় ঘুমাতে পারে নি।ওর বেস্টু বলে কথা। উষার চিন্তায় তারিনের অবস্থা খারাপ। তাই ওর খবর নিতে না আসে পারলো না।
ঈশানঃ তুই এখানে?
তারিনঃ বলো না ভাইয়ু।উষানি বেবির কোন খবর পাওয়া গেছে। কোথায় আছে?কেমন আছে? ওর কিছু হয় নি তো।তোমরা কথা বলছো না কেন?
অর্ণবঃ বোনুর কোন খোঁজ-খবর পাওয়া যায় নি।
তারিনঃ তোমরা এতগুলো মানুষ থাকতে উষানির কোন খবর জোগাড় করতে পারলে না।

তারিন ধপ করে সোফায় বসে পরলো। চোখ দুটো থেকে দুই ফোঁটা পানি ঝরে পরলো।স্থির দৃষ্টিতে সামনে তাকিয়ে আছে। এই মুহূর্তে ওর নিজেকে খুব একা মনে হচ্ছে। ইশাত কেন জানি তারিনের এই রূপটা মেনে নিতে পারছে না।হাসি,খুশি, চঞ্চল মেয়েটা যে কি না সবসময় বাড়ি মাতিয়ে রাখে সেও আজ উষার জন্য চোখের পানি ফেলছে।

???

সবাই মন খারাপ করে একসাথে সোফায় বসে আছে। নিজেদের কাজ ফেলে রেখে তারা এখন সবাই উষাকে খুঁজতে ব্যস্ত হয়ে পরেছে। তবে সব জায়গায় খুঁজে তারা এখন হয়রান। হঠাৎ অর্ণবের ফোনে আননোন নাম্বার থেকে কল এলো।
অর্ণবঃ আমাকে কেউ আননোন নাম্বার থেকে কল করছে।
আদিলঃ ওয়েট ভাইয়া।তুমি রিসিভ করে ফুল সাউন্ড দিয়ে রাখো।এমনও তো হতে পারে কিডন্যাপাররা কল করেছে।
ঈশানঃ কল ধরো।
সবাই যার যার সিট থেকে উঠে অর্ণবকে ঘিরে বসে পরলো।অর্ণব কল রিসিভ করলো।
অর্ণবঃ আসালামু আলাইকুম। কে বলছেন?
—অলাইকুম আস সালাম।আমাকে না চিনলেও চলবে।আমি আপনাদের অনেক পরিচিত আবার অনেক অপরিচিত ।
অর্ণবঃ আপনি যেই হোন।কল কেন করেছেন?
—-শুধু শুধু তো মোবাইলের টাকা খরচ করে খুচরা পেচাল পারতে কল করি নি।কারণ ছাড়া আমি কাউকে কল করি না।এসব কথা বাদ দেই। এবার মেইন পয়েন্টে আসি।
অর্ণবঃ কি বলবেন জলদী বলুন? আমরা এভাবেই অনেক টেনশনে আছি।
—বোনের জন্য অনেক টেনশন হচ্ছে মনে হয়।হওয়ারি কথা। শত হোক চার ভাইয়ের আদরের বোন বলে কথা।আপনাদের বোন আমাদের কাছে।
অর্ণবঃ হোয়াট!!! কি বলছেন? আমার বোনু কোথায় আছে? কেমন আছে?ওর কোন ক্ষতি করবেন না প্লিজ। আপনারা যা চাইবেন তাই দিয়ে দিবো।আমাদের সব প্রপার্টি আপনাকে দিয়ে দিবো।কিন্তু আমার বোনকে সুস্থ সালামতভাবে আমাদের কাছে পৌঁছে দিন।
—আপনাদের বোন ভালো আছে।তবে কতখন ভালো থাকবে তার কোন গ্যারান্টি দিতে পারছি না।
অর্ণবঃ আমাদের কি করতে হবে বলুন?
—-আপনাদের প্রপার্টির সব কাগজ-পত্র নিয়ে আমি যে ঠিকানা দেবো সেখানে আপনারা চলে আসবেন।
আদিলঃ ভাইয়া জিজ্ঞেস করো কোথায়?(নিচু স্বরে)
অর্ণবঃ কোথায় আসতে হবে?
—যে কনসার্টে পার্টি রেখেছিলেন তার উত্তর দিকে হাইওয়ে রোড ধরে আসলে আমাদের ছেলেদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখবেন।সেখান থেকে ওরাই আপনাদের নিয়ে আসবে।খবরদার বলে দিচ্ছি কোন চালাকি করা যাবে না। পুলিশ যদি কোনভাবে ব্যাপারটা জেনে যায় তাহলে আপনাদের বোনের লাশ বাড়িতে প্যাকেট করে পাঠিয়ে দিবো।
অর্ণবঃ আমরা কোন চালাকি করবো না।কিন্তু প্লিজ আমাদের বোনুকে কিছু করবেন না।
—আপনাদের সাথে কোন অস্ত্র আনবেন না।যদি বাই চান্স চেক করে কারো সাথে কোন রকম অস্ত্র পাওয়া যায় তাহলে ব্যাপারটা খারাপ হয়ে যাবে বলে দিলাম।আপনাদের হাতে মাত্র ১ ঘন্টা সময়।সো কাম ফাস্ট।ইউর টাইম ইজ স্টার্ট নাও।
অর্ণবঃ হ্যালো হ্যালো আপনি কি শুনতে পাচ্ছেন।যাক বাবা কল টা কেটে দিলো।আদি,ইশাত,শান আমাদের হাতে বেশি সময় নেই। এখনি বের হতে হবে।দেরী করলে বোনুর বিপদ হতে পারে।
জিবরানঃ ভাইয়া আমিও যাবো।
আদিলঃ না জিবরান। তুমি পুলিশের কাছে যাও।সবাই সেখানে গেলে যদি আমরা আটকে যাই তাহলে কি হবে?বাইরে থেকে কাউকে পুরো ব্যাপারটা সামাল দিতে হবে। তুমি এই দিকটা সামলাও।আমরা ঐ খানে যাচ্ছি।
তারিনঃ আমি যাবো ইশাত।
ইশাতঃ তুই কি পাগল হয়ে গেছিস?
তারিনঃ না আমি যাবো।তোমাদের যদি কোন ক্ষতি হয়ে যাই।বাঁচতে একসাথে না পারি ইশাত মরতে তো পারবো।(ছলছল চোখে)
ইশাতঃ কি যা তা বলছিস? তোর কোথাও যেতে হবে না।তুই বাসায় যা তারু।
অর্ণবঃ শান তুই গিয়ে আমার লোক আাপের থেকে সব প্রপার্টির কাগজ নিয়ে আয়।
ঈশানঃ আমি যাচ্ছি ভাইয়া।

শেষ পর্যন্ত তারিনের জিদে সবাই ওকে নিতে রাজি হলো।সবাই গন্তব্যের উদ্দেশে বের হয়ে গেলো।জিবরান গাড়ি নিয়ে ছুটলো পুলিশ স্টেশনে।সি.সি টিভি ফুটেজে ওদের কে দেখে কল করা ব্যাক্তিটা অট্টহাসিতে ফেটে পরলো।
???

চার ভাই ও তারিনকে চোখ বেঁধে গোডাউনে নিয়ে এলো কতগুলো কালো পোশাক পরিহিত বডিগার্ড। গোডাউনের ভেতরে এসে চোখ খুলে দিলো।
আদিলঃ আমাদের বোনু কোথায়?
অর্ণবঃ তোমরা কথা বলছো না কেন?
ইশাতঃ পুরো গোডাউন অন্ধকার কেন?
তারিনঃ ইশাত আমার না খুব ভয় করছে।ওরা উষানির সাথে কোন খারাপ কিছু করে নি তো।
ইশাতঃ আল্লাহর ওপর বিশ্বাস রাখ।দেখবি সব ঠিক হয়ে যাবে।

তখনি অন্ধকার থেকে কেউ বলে উঠলো–
—ওয়েলকাম আউয়ার এরিয়া।
ঈশানঃ কে আপনি?অন্ধকারে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছেন কেন?সাহস থাকলে সামনে আসুন।

ঈশান কথা বলার সাথে সাথে পুরো গোডাউনে আলো জ্বলে উঠলো। সৃজান ও সিয়ান চার ভাইয়ের সামনে এলো।ওদের দুজনকে দেখে চার ভাইয়ের চোখ দুটো ছানাবড়া হয়ে গেলো।
আদিলঃ সৃজান তুই? (অবাক হয়ে)
সৃজানঃ ইয়েস আই এম।
অর্ণবঃ তোমরা এই কাজ করেছো।ছিঃ তোমাদের আমরা কতটা ভালো জানতাম?
আদিলঃ এতোটা নিচে নেমে গিয়েছিস তোরা?তোকে আমার নিজের বন্ধু ভাবতেও ঘৃণা করছে।
সিয়ানঃ ওয়েট করো আরেকজন কে দেখে নাও।কোথায় অরূপ চলে এসো।

অরূপ একটা কফির মগ হাতে নিয়ে চুমুক দিতে দিতে সামনে এলো।মুখে তার টেডি স্মাইল। হাত নারিয়ে সবাই কে বললো।
অরূপঃ হায় ভাইয়ারা।
ইশাতঃ অরূপ তুই?
ঈশানঃ ওরা আমাদের বৈঈমানী করেছে সেটা মেনে নিলাম কিন্তু তুই কি করলি?আমাদের খেয়ে আমাদের পড়ে আমাদের সাথেই বেঈমানী করলি।কিসের অভাব ছিলো তোর? যার জন্য এরকম করলি।
অরূপঃ আমার অনেক টাকার দরকার। অনেক সম্পত্তির।আর তোদের সম্পত্তির লোভ তো আমার কবের থেকেই। আমি শুধু সুযোগের অপেক্ষা করছিলাম।কোথায় তোদের সব প্রপার্টির কাগজপত্র?জলদী আমায় দে আমার যে আর তর সইছে না। আজ থেকে আমি হবো মির্জাদের সব প্রপার্টির মালিক।আমার যে কি খুশি লাগছে?
ইশাতঃ দেখো ভাইয়া এই ছেলেটাকে তুমি আমাদের থেকে বেশি বিশ্বাস করেছে, বেশি ভালবেসেছো।তোমার ভালবাসার প্রতিদান কি করে দিচ্ছে?
অর্ণবঃ তুই ও পেছন থেকে ছুরি মারলি অরূপ।তোকে তো আমরা কখনও অন্য চোখে দেখি নি।
(অসহায় কন্ঠে)
অরূপঃ এসব কথা আমাকে শুনিয়ে লাভ নেই। আমি গলছি না।কাগজপত্র দেও।
আদিলঃ আমাদের বোনুকে না দেখালে আমরা কিছু দিবো না।
সৃজানঃ সিয়ান ভাই ওদের বোনকে নিয়ে আয় তো।
সিয়ান উষাকে নিয়ে এলো।চোখ, মুখ একদিনে শুকিয়ে কালো হয়ে আছে।হাত দুটো পেছনে দড়ি দিয়ে শক্ত করে বাঁধা।ঠোঁটের কোণা কেটে রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে।মুখটা বিষন্ন ও ক্লান্ত। চার ভাইয়ের চোখে পানি চলে আসলো।
উষাঃ ভাইয়ু। তোমরা আমাকে এখান থেকে নিয়ে চলো।আর ওদের কাউকে ছারবে না।সবাইকে এক এক করে শাস্তি দিবে।
ঈশানঃ বোনু…
সিয়ানঃ আ হা একটুও এগুতে পারবে না।যেখানে আছো সেখানে দাঁড়িয়ে থাকো।

কথাটা বলে ঈশানের মুখে একটা ঘুষি মারলো সিয়ান।ঈশান ছিটকে দূরে পরে গেলো।বাকি তিন ভাইকে বডিগার্ডরা ঘেরা দিয়ে ফেললো।
সৃজানঃ কাগজ সব ঠিক আছে অরূপ।
অরূপঃ একেবারে সব খাপে খাপ।
সৃজানঃ এবার গিয়ে সোজা অর্ণবের কপাল বরাবর শুট করতো।
অরূপঃ এটা আর কি ব্যাপার? দাঁড়াও করছি।

হাতে থাকা কফির মগটা রেখে একটা সিগারেট ধরালো অরূপ।দুই ঠোটের মাঝখানে কোণাকুণি করে রাখা জলন্ত সিগেরেট।রিভেলবারটা কাঁধে বেল্ট দিয়ে বাঁধা। কোর্টটা পরতে পরতে সামনের দিকে এগুতে লাগলো অরুপ।

অর্ণবঃ অরূপ ভূলেও এই কাজটা করো না।
অরূপঃ সরি ভাইয়া আমি টাকার গোলাম।যে খানে টাকা আছে সেখানে আমি আছি।তোমাদের এখন আর আমার প্রয়োজন নেই।
উষাঃ আমার বড় ভাইয়ুকে কিছু করিস না।
ইশাতঃ খবরদার অরূপ যেখানে আছিস সেখানেই দাঁড়িয়ে থাক।নয়তো খারাপ হয়ে যাবে।
আদিলঃ অরূপ স্টপ। থামতে বলছি।আর এক পাও এগিয়ে আসিস না।

অরূপের কানে কোন কথা ঢুকছে না। সে রিভেলবার নিয়ে এক পা এক পা করে অর্ণবের দিকে এগিয়ে আসছে।হঠাৎ একটা গুলির শব্দে ও একটা চিৎকারে পুরো গোডাউন স্তব্ধ হয়ে গেলো।

#চলবে

প্লিজ কেউ রাগ করবেন না। সরি, আজকে ধামাকাটা দিতে পারলাম না।আমি সিউর কালকে দিয়ে দিবো।আর গোডাউনের কাহিনীটা একটু বড় হবে।তাই কেউ বোর হয়েন না।☺️☺️

#Part_18
https://www.facebook.com/groups/2401232686772136/permalink/2954780738083992/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here