বৃষ্টি_থামার_পরে পর্ব ২:

0
4150

গল্পের নাম: বৃষ্টি_থামার_পরে
পর্ব ২: #I_accept_your_feelings

“তোমাকে চাই।” মৃদুহেসে বলেই ছেলেটা নিজের বুকের কাছে দুই হাত গুজলো।
মিহি চমকে গেল।
“ফাজলামো করছেন?”
“তুমি কি আমার বউ লাগো যে ফাজলামো করব!” তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল ছেলেটা।
মিহির মুখ শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেল। এ কেমন বিপদ রে বাবা! এই সাদা একটা ফালতু টি-শার্ট এর ক্ষতিপূরণে নাকি ‘তোমাকে চাই’।
মিহি কড়া কথা বলতেই পারে না। নাহলে এই ছেলেকে কিছু শুনিয়ে দিত।
মিহি কিছু একটা বলতে চেয়েও বলতে পারল না।
ছেলেটা এখনো একই ভঙ্গিতে তাকিয়ে আছে।
মন বলছে এই ছেলে সুবিধার না। অনেক অসুবিধার। তাই পালানোই উত্তম।
যেই ভাবা সেই কাজ! মিহি এদিক ওদিক তাকিয়ে আশেপাশের রাস্তা ক্লিয়ার দেখে উল্টো ঘুরে ভো দৌড় দিল। এখন তার পিছনে তাকানোর মোটেই সময় নেই।
এই ঘটনার পর ওই স্টেডিয়ামের ত্রিসীমানায় যায়নি মিহি। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহার! সাত দিনের মাথায় আবার সেই ছেলের সামনেই পরতে হলো। তাও আবার অন্যের লেখা ফালতু লাভ লেটার নিয়ে!

বিছানায় শুয়ে এপাশ ওপাশ করতে লাগল মিহি। ছেলেটা এই ভার্সিটি থেকেই নাকি পাস করেছে। তাও প্রায়ই আসে। যদি পিছে লাগে? তার উপর মিহি আজই জানলো যে ওই ছেলে পলিটিক্সের সাথে জড়িত। তার বাবা আবার কোন না কোন নেতা।
এটাই ত ভয়ের বিষয়। কারণ ছেলে ত সুবিধাজনক না। প্রথম দেখায় বলে ‘তোমাকে চাই’। দ্বিতীয় দেখায় বলে ‘তোমাকেই বিয়ে করব’!
তৃতীয় দেখায় কি করবে বা বলবে কে জানে!
আর এসব ছেলেরা আকাম করবে আর এদের বাবারা বসে বসে আকাম ঢাকবে। এটাই ত হয়।
কিন্তু আর যাই হোক, নিজের দিদির মত ভুগতে চায় না মিহি। কারণ ওই ঘটনার পর মিহি আর মিহির পরিবারের কাছে রাজনীতি করা ছেলে মানেই প্রচুর খারাপ। আর সেই রাজনীতি করা ছেলেই কিনা পিছনে পড়লো।

অনেক চিন্তায় চিন্তায় রাত পার করল মিহি।
পরের দিন কলেজেও এলো ভয়ে ভয়ে। মনে করেছিল ওই ছেলের সাথে দেখা হবে না। কিন্তু না! সেই ছেলেটার সাথেই আবার দেখা। একদম মুখোমুখি।
ছেলেটা জিন্সের পকেটে হাত গুজে মৃদু হাসির সাথে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।
মিহি হালকা ভয় পেয়ে ঢোক গিলল।
এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে কি করবে সেটাই চিন্তা করতে লাগল মিহি।
ওদিকে ক্লাসও শুরু হয়ে গেছে।
ছেলেটা এক পা এক পা করে ওর দিকে এগিয়ে আসতে লাগল।
এটা টের পেয়েই মিহির মুখ শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেল। তবুও মিহি মেঝের দিকে দৃষ্টি আবদ্ধ রাখলো।
ছেলেটা খুব কাছাকাছি এসে দাঁড়াতেই মিহির অবস্থা করুন হয়ে গেল। ভয়ে হার্টবিটও বেড়ে যেতে লাগলো।
ছেলেটা মিষ্টি হাসি দিয়ে হঠাৎ মিহির দিকে ঝুকতেই মিহি হকচকিয়ে মাথাটা একটু পিছিয়ে নিয়ে ছেলেটার দিকে তাকালো।
“You look beautiful, Cupcake.” ক্ষীণ স্বরে বলল ছেলেটা।
এটা শুনে মিহি আরোই চমকে গেল।
তবে এটুকু বলেই সে পাশ কাটিয়ে চলে গেল।
মিহি স্তম্ভের মত ঠায় দাঁড়িয়ে রইল।
.
“কি?!” মহা অবাক হয়ে গেল তমা।
মিহি কিছু না বলে বালিশ কোলে নিয়ে এদিক ওদিক দুলতে লাগলো। তার মুখে স্পষ্ট চিন্তার ছাপ।
“তুই ত তাইলে শেষ!” বাংলার পাঁচের মত মুখ করে বলল তমা।
শুনেই আঁতকে উঠল মিহি, “কেন?”
“বুঝছিস না! গাধা একটা! তোকে পছন্দ করে ফেলেছে৷ এখন রিজেক্ট করলে বুঝবি মজা কাকে বলে!” কপাল চাপড়ে বলল তমা।
“এখন কি করবো আমি!” জড়সড় হয়ে বলল মিহি।
“আমি কি জানি!” ঠোঁট উলটে বলল তমা।
“প্রেম করবি। আর কি করবি?” ফোন টিপতে টিপতে বলল সেবা।
শুনে তমা আর মিহি দুইজনেই চমকে গেল।
সেবা ওদের দুইজনের থেকে একটু আলাদা। তার এসব বিষয় খুব আগ্রহ।
“এত হ্যান্ডসাম ছেলে তার উপর রাজনীতি করে। উফ ভেবেই ত ভালোলাগে। আর কি লাগে?! আমি হলে ত নির্ঘাত ওই ছেলেকে জড়িয়ে ধরে সাথে সাথে বলে দিতাম যে আমিও তোমাকে বিয়ে করবো।” বলতে বলতে আল্লাদে গদগদ হয়ে গেল সেবা।
মিহি আর তমা সরু চোখে বিরাট অসস্তি নিয়ে তাকিয়ে রইল সেবার দিকে।
“কি?” ওদের এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে বলল সেবা।
“তুই-ই কর প্রেম।” বলল তমা।
“আমাকে প্রপোজ করলে ত আমি এক পায়ে রাজি।”
তমা সেবার দিকে ভ্রুকুচকে তাকালো। তারপর সেবার কথা মাথা থেকে ঝেড়ে মিহিকে বলল, “যাইহোক তুই শোন, তালে তাল মিলিয়ে যা। তবে এদের সাথে লাগতে যাস না। আমি দেখি কি করা যায়।”
মিহি ম্লান মুখে তাকিয়ে মাথা নাড়লো।

মিহির এখন ভার্সিটিতে যেতেও ভয় হয়।
কিন্তু প্রশান্তির বিষয় হলো সেদিনের পর থেকে কয়েকদিন অব্দি ভার্সিটিতে ছেলেটাকে আর দেখল না মিহি। এতেই মিহি মনে মনে ধরে নিলো যে হয়তো আর ওই ছেলে জ্বালাবে না ওকে।
কিন্তু তার ধারনা শীঘ্রই ভুল প্রমান হয়ে গেল। ভার্সিটির পুরানো ছাত্রছাত্রীদের সম্মেলনের অনুষ্ঠানের দিনই সেই ছেলের সাথে আবার দেখা হয়ে গেল মিহির।

ভার্সিটি থেকে আগের সব স্টুডেন্টদের সম্মেলনের জন্য একটা অনুষ্ঠানের কথা অনেক দিন ধরেই চলছিলো। আরকি পুরোনো সব স্টুডেন্টরা যেখানে হাজির হবে।
সেদিন সবাই অন্যদিনের চেয়ে একটু সাজগোছ বেশিই করলো।
বিশেষ করে সেবার সাজ ত দেখার মত। সে বরাবরই সুন্দর।
তমাও সেজেছে তবে অল্প। সাথে মিহিকেও সাজিয়েছে। যদিও মিহি অনুষ্ঠানে যেতেই চাচ্ছিলো না। কিন্তু তমা ওকে একপ্রকার জোর করেই নিয়ে গেল।
মিহির পরনে হালকা মিষ্টি রঙের শাড়ি। হালকা সাজে চোখ ধাঁধাঁনোর মত সুন্দর লাগছে মিহিকে। যদিও মিহি শাড়ি পড়তে চাচ্ছিলো না। তমাই বাঁধ সেধে বসেছিল। কার‍ন তমা নিজেও শাড়ি পড়েছে। একসাথে ছবি তুলবে বলেই এত কিছু।
তাই শেষ অব্দি মিহিকেও পড়তে হলো।

অনুষ্ঠান আনন্দের সাথেই কাটলো। পুরোটা সময় জুড়ে মিহি হাসতেই ব্যস্ত ছিলো।
অনুষ্ঠানের শেষের দিকে মিহি বাসার থেকে আসা ফোন রিসিভ করতে ভিরের মধ্যে থেকে সরে এলো। কারণ সবাই হৈ চৈ করতেই ব্যস্ত।
কথা বলা শেষ করে এক চিলতে হাসিসমেত আবার ফিরেই যাচ্ছিলো। কিন্তু আচমকা কেউ পিছন থেকে ওর হাত ধরে টেনে কোথাও নিয়ে যেতে লাগল।
মিহি অনেক বেশিই ঘাবড়ে গেল। আর হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করে বলল, “কে আপনি! কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?”
মিহির কথা শেষ হতে না হতেই ছেলেটা ওকে একটা ফাঁকা ক্লাস রুমে নিয়ে এসে থামলো। এতটুকু সময়ে মিহির মুখে আতংক ছেপে উঠেছে। বলতে গেলে ভয়ে গলাও শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে ওর।
“প্লিজ হাত ছাড়ুন আমার।” কাদো কাদো গলায় বলতে বলতে ছেলেটার মুখের দিকে তাকিয়ে থ মেরে গেল মিহি।
“আ…আপনি!”
“হু আমি।” মৃদু হেসে বলল সে।
মিহি একটা ঢোক গিলে নিজের হাতের দিকে তাকালো। এখনো ধরে আছে ছেলেটা।
মিহি এবার প্রায় কেদেই ফেলল।
“ভাইয়া, প্লিজ হাত ছাড়ুন আমার। আমি…প্লিজ ছাড়ুন…৷”
“মানে?” হালকা কপাল কুচকে বলল সে।
“আ…আমার হাতটা প্লিজ…।” একটু বলতেই মিহি হাত ছাড়া পেয়ে গেল।
মিহি হাত দুটো নিজের বুকের কাছে গুটিয়ে নিয়ে একটু পিছিয়ে গেল।
ছেলেটা বেশ খানিকটা অবাক হলো। কারণ যে ছেলেকে পছন্দ করে কিনা লাভ লেটার দিয়েছে সে হাত ধরায় কিনা এভাবে কেঁদে দিল! নাকি মেয়েটা একটু বেশিই লাজুক! লাজুক হলে কাঁদবে! এ কেমন!
তবে আজ যেন ওকে শাড়িতে অন্যরকম অপূর্ব সুন্দর লাগছে। ঘন্টার পর ঘন্টা দেখলেও মন ভরবে না এমন মনে হচ্ছে।
ছেলেটা চুপ করে আছে দেখে মিহি মেঝের দিকে তাকিয়ে থেকে হাত কচলাতে লাগল।
“নাম কি?” নিরাবতা ভেঙে বলল ছেলেটা।
মিহি এবার তার চোখের দিকে একপলক তাকালো। তবে পরক্ষণেই আবার চোখ সরিয়ে নিল। হালকা ভয় ভয় করছে মিহির। সে কাঠকাঠ গলায় ছোট করে উওর দিল, “মিহি।”
ছেলেটা মুচকি হাসি দিল।
“আমি এরোন। সো তোমার এই ভাইয়া ভাইয়া করা বন্ধ করে দেও।”
মিহি কি বলবে বুঝতে না পেরে চোখ নামিয়েই রাখলো। বুক ধুকধুক করছে।
এরোন ঠোঁটের কোনের মৃদু হাসির সাথে মিহির দিকে তাকিয়ে রইল। মিহির চোখের কোনে এখনো জল রয়ে গেছে। একটু আগে ভয়ে কেঁদে দিয়েছিল যে, তাই। তবে এই জলটুকু এরোনের নিজ হাতে মুছে দিতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু ইচ্ছাকে ইচ্ছাই রেখে দিল এরোন। কারণ যদি ছুঁয়ে দিলে আবার কেঁদে দেয়!

এদিকে মিহি ত ওর সামনে থেকে পালাতে পারলে বাঁচে কিন্তু তা ত সম্ভব বলে মনে হচ্ছে না। কারণ ভয়ে পা নড়ছে না। তার উপর এই ছেলের পাশ কাটিয়ে তবে দরজা দিয়ে বেরুতে হবে।
কিন্তু এই ছেলে ত দেয়ালে হেলান দিয়ে ওর দিকে মুচকি হাসিসমেত তাকিয়ে আছে। যদিও মিহি ওর চোখের দিকে তাকাতে সাহস পাচ্ছেনা। অনেক দ্বিধা কাজ করে।
তবে ছেলেটার দৃষ্টিতে খারাপ চাওয়া নেই, কোনো বাজে ইঙ্গিতও নেই। আছে একরাশ ভালো লাগা। কোনো পছন্দের জিনিস যেমন মন ভরে দেখি আমরা ঠিক সেভাবে দেখছে মিহিকে এরোন।
“বিয়ের পর আমি তোমাকে শাড়িই পড়াবো।” বলতে বলতে এরোনের মুখে জুড়ে এক সিন্ধ হাসি চলে এলো।
মিহি চমকে ওর দিকে একপলক তাকিয়ে পিছিয়ে গেল।
এরোনের বুঝতে বাকি রইলো না যে এই মেয়ে ভুল বুঝেছে।
“শাড়ি পড়াবো বলতে নিজের হাতে পড়াবে এটা বুঝাই নি। বুঝাতে চেয়েছি থ্রিপিস না পড়ে শাড়ি পড়বা।”
মিহি হতবুদ্ধি হয়ে গেল।
“ডার্টি মাইন্ডেড কাপকেক।” বলেই হেসে দিলো এরোন।
মিহি ভ্র কুচকে ফেলল। শেষ কথাটা শুনে মনে মনে রাগ হলো মিহির। কিন্তু মুখ দিয়ে টু শব্দও বের করতে পারলো না।
এরোন ওর দিকে হাত বাড়ালো। মিহি হালকা চমকে প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে এরোনের দিকে তাকালো।
“ফোনটা দেও তোমার।”
“ক…কেনো?” কোনো মতে বলল মিহি।
এরোন কিছু না বলে নিজের হাত নাড়ালো। অর্থাৎ ফোনটা দেও।
মিহি আর কথা না বাড়িয়ে ফোনটা অতি সমর্পণে বাড়িয়ে দিলো। এরোনের সাথে যেন কোনোরকম সংস্পর্শে আসতে না হয় সেভাবেই দিল।
এরোন মুচকি হাসলো। এটুকু সময়ে আর যাই হোক এরোন এটা বুঝে গেল যে মেয়েটা ছেলেদের সংস্পর্শে আসতে পছন্দ করেনা। আর এজন্যই কেঁদে দিয়েছে।
তাই এরোন দূরত্ব রাখাটাই ঠিক মনে করলো। কিন্তু এমন টাইপ মেয়ে আবার প্রেম করার জন্য প্রপোজ করতে পারে ভেবেই অবাক হচ্ছে ও।
মিহি নিজের মত হাত গুটিয়ে নিলো।
এরোন মিহির ফোন দিয়ে নিজের ফোনে ফোন দিলো।
বিষয়টা বুঝে মিহির নিজের কপাল নিজের ফাটাতে ইচ্ছা হলো। এখন কি সত্যি সত্যিই প্রেম প্রেম খেলতে হবে নাকি!
“নেও।” ফোনটা মিহির দিকে বাড়িয়ে দিলো এরোন।
মিহি ফোনটা নিলো।
এরোন কাপকেক লিখে নাম্বারটা সেভ করতে লাগলো।
মিহি একটা ঢোক গিলল।
“আ…আমি আসলে…।” মিহি আমতা আমতা করতে লাগল।
এরোন ওর দিকে একপলক তাকিয়ে আবার ফোনের দিকে তাকালো, “হুম বলো।”
“আমার আপনাকে ওভাবে ওই ফালতু চিঠি দেওয়াটা উচিত হয়নি। আপনাকে সরাসরিই বলা উচিত। তাছাড়া আমি আসলে চাইনি ওভাবে…”
“It’s ok. আমি কিছু মনে করিনি। তাছাড়া তোমার যেভাবে ভালো মনে হয়েছে তুমি সেভাবেই করেছ, I appreciate it, and most importantly I accept your feelings.” সহজভাবে হালকা হাসির সাথে কথাগুলো বলল এরোন।
কিন্তু মিহির মাথায় যেন বাজ পরলো। এই ছেলে ত অর্ধেক শুনে হাবিজাবি বকে দিল। ফিলিংস গুলো মেনে নিয়েছে মানে! কোনো ফিলিংসই ত নেই মিহির মনে।
মিহি নিজেকে সামলে কিছু বলার জন্য মুখ খোলার আগেই একটা ছেলে এসে রুমে ঢুকলো। আর এরোনের দিকে তাকিয়ে বলল,”তুই এখানে! দুনিয়া খুঁজে বেড়াচ্ছি তোকে।”
বলতে বলতে মিহির দিকে তাকিয়ে চোখ আটকে গেল ছেলেটার। তাতে ছেলেটা হালকা সংকুচিত চোখে তাকালো ওদের দুইজনের দিকেই।
“এটা ত সেই লাভ লেটার ওয়ালী! তোরা একসাথে কি করছিস!” সন্দেহের চোখে তাকিয়ে ঘাড় বাঁকা করে বলল ছেলেটা।
“প্রেম।” সহজ ভাবে বাঁকা হাসির সাথে বলল এরোন।
মিহি চমকে গেল। সাথে সেই ছেলেটাও।
“তুই যা আমি আসছি।” ছেলেটার দিকে তাকিয়ে বলল এরোন।
ছেলেটা মিহির দিকে দুই হাত তাক করে আনন্দ আর বিস্ময়ে বলে উঠল,”জোস হবে। চালিয়ে যা।”
ছেলেটা এরোনের দিকে তাকিয়ে চোখ টিপ মেরে চলে গেল।
মিহি মেঝের এমাথা থেকে ওমাথা চোখ বুলিয়ে যাচ্ছে। ওর বুকে যেন কেউ হাতুরি পিটছে।
মিহি শুধু এটাই ভাবছে যে, কথার কথা ত কিছুই বলা হলো না, কিন্তু জল গড়িয়ে সমুদ্রে চলে গেল।
“শোনো।”
মিহি এরোনের গলা শুনে জড়সড় হয়ে মাথা তুলল।
“কাল সকালে সবার আগে আমি তোমার ফোন চাই। মনে থাকে যেন।” কথাটা হাসিমুখেই বলল৷ কিন্তু মিহির মনে হলো হালকা করে হুমকি দিল।
“মনে থাকবে?” হালকা নুড়ে মিহির দিকে তাকিয়ে বলল এরোন।
মিহি ভয়ে দ্রুত হ্যাসূচক মাথা নাড়ল।
“গুড গার্ল।” এরোন ওর দিকে তাকিয়ে নিঃশব্দে একটা হাসি দিয়ে কয়েক পা পিছনে পিছিয়ে তারপর ঘুরে চলে গেল।
এরোন বের হবার সাথে সাথে মিহি বুকে হাত দিয়ে শ্বাস নিতে নিতে দেয়ালে পিঠ ঠেকালো। কারণ এত সময় মেপে মেপে শ্বাস নিচ্ছিলো।
শ্বাস নিতে নিতেই বিড়বিড় করে বলে উঠল, ‘তুই শেষ মিহি। তুই শেষ।’

(চলবে…)

লেখিকা: #Lucky_Nova

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here