বৃষ্টিশেষে প্রেমছন্দ পর্ব ৩৬

0
477

#বৃষ্টিশেষে_প্রেমছন্দ
#মুমুর্ষিরা_শাহরীন

৩৬.
আট মিনিটের মাথায়ই ফোন দিয়েছিলো আদর। টিকলি ফোন কানে ধরেই রুদ্ধশ্বাসে বলল, ‘এতোটা ব্যস্ত আপনি!’

টিকলির কণ্ঠশুনে আদর ভয়ার্ত গলায় বলল, ‘কুল ডাউন। কি হয়েছে? আপনি তো জানতেন আমি ব্যস্ত থাকবো।’

টিকলি ঠোঁট ভেঙে কেদে দিলো। আদর দিশেহারা হয়ে পরলো। হতাশ কন্ঠে বলল, ‘এতোটা পাগলামি করলে কি করে চলবে? আমি ব্যস্ত ছিলাম।’

টিকলি তৎক্ষণাৎ জ্বলে উঠলো, ‘সবসময় বেশি বুঝেন কেনো? আমি একবারো বলেছি আপনার জন্য কাদছি? আমি তো জানি আপনার ব্যস্ততম জীবনে আমার কোনো ভূমিকা নেই।’

আদর বিস্মিত হয়ে পরলো। কিছুক্ষণ অবাক থেকে বলল, ‘আপনার ঘুম দরকার টিকলি। ঘুমান। বেশি উল্টাপাল্টা বকছেন।’

টিকলি বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে চিতকার করে বলল, ‘আপনি কি আমার কথাটা শুনবেন? তা নাহলে আমি বিয়ে করে ফেললাম।’

আদর যেনো বিস্ময়ে স্তম্ভিত হয়ে রইল। শতগুণ অবাকতার স্বরে বলে উঠলো, ‘রাত ভিড়েতে কি শুরু করলেন? এখানে বিয়ের প্রসঙ্গ আসছে কোথা থেকে?’

‘ডাক্তার..’

‘ওকে ওকে…আপনি বলুন। আমি শুনছি। তবুও এতো হাইপার হবেন না। ওহ মাই গড! পুরাই হট।’

‘আপনি কি আমার সাথে মজা করছেন?’

‘মজা করবো? তাও আবার আমি? তাও এই সময়ে? আপনার সাথে? এখন মজা করলে আপনি এক চিৎকারে আপনাদের দু’তলা বাসাটা ভেঙে ফেলবেন। প্রেমের পর নতুন নতুন চিৎকার শিখেছেন বলে কথা!’

টিকলি চোখ বন্ধ করে শান্ত হলো। নিজেকে যথাযথ গাম্ভীর্য করার চেষ্টা চালালেও পারা গেলো না। অন্যথাকারী মনটা আবার কেদে উঠে আদরকে বলল,

‘আমি বাবাকে সব বলে দিয়েছি।’

এতোক্ষণ টিকলির রাগ কমানোর প্রচেষ্টায় ঠাট্টার ছলে কথা বললেও এ মুহুর্তে ভ্রু জোড়া বেঁকে গেলো আদরের। অসম্ভব কৌতূহল নিয়ে ভ্রু কুটি করে বলল, ‘কি বলেছেন?’

‘আপনার কথা। আপনার মেসেজ কাল বাবা দেখে ফেলেছে। আমি আজকে সব স্বীকার করেছি। কিন্তু বাবা মানছে না। আপনাকে ভুলে যেতে বলেছে।’ কথা বলতেই টিকলি কেদে দিলো। জীবনের এতোগুলো বছরে যা কাদেনি। প্রেম করার পর তার চেয়ে বেশি কাদছে। প্রেম করলে বোধ হয় মানুষের সাহস বাড়ে, মিথ্যে কথা বলাও শিখে, কথা গোপন করতে জানে, নিজেকে আড়াল করতে শিখে, সাথে খুব করে কাদতে পারে।

আদর অবিশ্বাস্য চোখে কিছুক্ষণ শূন্যে তাকিয়ে থাকলো। কিছুক্ষণ পর খুবই হতাশ নিঃশ্বাস ফেলে দীর্ঘ কন্ঠে বলল,

‘কিচ্ছু বলার নেই।’

টিকলি ঠোঁট চেপে কান্না আটকিয়ে প্রশ্ন করলো, ‘কিচ্ছু বলার নেই?’

‘নাহ। শুধু এটুকুই বলবো এতোটা বাড়াবাড়ি আপনি না করলেও পারতেন। আমাকে না জানিয়েই এতো বড় ডিসিশন না নিলেও পারতেন। আপনার বাবাকে জানানোর এখনি কোনো দরকার ছিলো না। কথাটা কাটিয়ে দিতেন। আমি চেয়েছিলাম আগে আমি আমার পরিবারকে বুঝাবো। এরপর আমার পরিবার ভুল স্বীকার করে আপনার পরিবারের সাথে কথা বললেই ব্যাপারটা মিটমাট হয়ে যেতো। কিন্তু আপনি কি করে ফেললেন! নাথিং টু ছে।’

কথাগুলো বলেই ফোন কাটা হলো। টিকলি দাড়ানো থেকে ধপ করে বসে পড়লো। চোখের সামনে ফোনটা ধরে বিরবির করে বারবার বলল, ‘কেটে দিলো? কেটে দিলো সে ফোনটা? আমার দিকটা একটুও বুঝার চেষ্টা করলো না?’

________________________________

এর মাঝে কেটে গেলো দুদিন,,,

“কি দরকার, মিছে আবদার
ভুলের পাল্লা ভারী
জানি নয়ছয়, সবই অভিনয়
তাই তো দুজনের আড়ি”

শুভ্র প্রভাতটা মেঘে ভরপুর। জারুল গাছ থেকে চুইয়ে টুপটাপ করে পড়ছে বৃষ্টির পানি। হিজল গাছে ফুটেছে লাল ফুল। টিকলি ঊষর বেলায় বসে গেছে গিটার হাতে। সারারাত নির্ঘুম টিকলির চোখ ভারী, ক্লান্ত। তবুও ঘুমের ছিটাফোঁটা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আদরের কাছ থেকে সেদিন একটু আকটু গিটার বাজানো শিখে নেওয়া হয়েছিলো। সেই শেখা গিটার বাজানো বাজিয়েই অশ্রু জড়িয়ে দু লাইন গাওয়া হলো।

নির্ঘুম কালো রাত্রি কেটে যেতেই ভোরবেলায় কফি হাতে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আছে আদর। দেয়াল ঘেঁষে জেগে উঠা বাগানবিলাস। চারিপাশের বাতাসে সাদা শিমুল তুলোর উড়াউড়ি। গম্ভীর মনের মন খারাপ সাথে হালকা তেজ তবুও ভালোবাসার কাছে একবার পরোয়ানাবিহীন তো আরেকবার পরাজিত। পাতার ন্যায় বেগুনি রঙের ফুলগুলো মুঠো ভরে ছিড়ে নিয়ে বৃষ্টিপ্রহর প্রত্যুষে অনেকদিন বাদে বহু বছর বাদে গেয়ে উঠা হলো,

“তোমার হাসির জন্য আমি সব করে যাই
ভালোবেসে দিয়েছি তোমায় আমার পুরোটাই।”

টায়রা উঠে এসে টিকলির কাধে হাত রাখলো। বন্ধ চোখে টিকলি গেয়ে উঠলো,

“চাইনি আমি হারাও তুমি
বাড়াও মনের দূরত্ব…..”

সকাল সকাল উঠা আর্দ্রের অভ্যাস নয়। তবুও আজ কীভাবে যেনো সকালে উঠে পড়েছে। ভাইয়ের ঘর থেকে গানের আওয়াজ এলে চমকে উঠাও হয়েছে। ব্যস্ত পায়ে হেটে ভাইয়ের ঘরের বাইরে দাড়াতেই শুনতে পেলো,

“তবুও দুজন দূরে হারাই
জিতেও দুজন হেরে যাই।”

ধীর আঙ্গুল গুলো গিটারের তারে চালিয়ে টিকলিরও গাওয়া হলো,

“তবুও দুজন দূরে হারাই
জিতেও দুজন হেরে যাই।”

আর্দ্র গিয়ে ভাইয়ের পেছনে দাড়ালো। আদর ভোরের উঁকি দেওয়া সূর্যটার দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে ধীর কণ্ঠে গাইলো,

‘তবুও দুজন দূরে হারাই…’

শূন্যে দৃষ্টি স্থির রেখে টিকলি গান সমাপ্ত করলো,

‘জিতেও দুজন হেরে যাই….।’

অভিমানের পাল্লা ভীষণ ভারী। তবুও দু’প্রান্ত থেকে নিজেদের খুব অজানায় গোপনে গাওয়া হয়ে গেলো একই গান। কেউ জানলো না। আড়ালেই হয়ে গেলো অভিমানের গান। এই অভিমানের কবলে পরে দেওয়া হচ্ছে না ফোন। করা হচ্ছে না কোনো যোগাযোগ দুদিন ধরে। টায়রা টিকলির পাশের কালো বিনব্যাগে বসলো। টিকলির হাত থেকে গিটারটা নিয়ে টুংটাং সুর তুলে বলল,

‘বাব্বাহ! আদর ভাইয়া তো তোকে গিটার বাজানোও শিখিয়ে দিয়েছে। আই এম ইমপ্রেসড।’

টিকলির কোনো হেলদোল দেখা গেলো না। সে যেমন একদিকে তাকিয়ে বসেছিলো তেমনই বসে আছে। টায়রা এবার গলা খাকারি দিয়ে গিটারের পানে চোখ রেখে বলল,

‘তোর কি মনে হয়না তোর ইগো বেশি?’

টিকলি ঘুরে তাকালো। ভ্রু কুচকে প্রশ্নবিদ্ধ চোখে তাকাতেই টায়রা আবারো সুর তুলল। কিছুক্ষণ পর আবার বলল,

‘দোষটা কি তোর নয়?’

টিকলি আবার তাকালো। ভ্রু কুচকে চোখ দুটো ছোট করে বলল, ‘মানে? সব আমার দোষ?’

টায়রা হাত থেকে গিটার নামিয়ে পাশে রাখলো। টিকলির মুখোমুখি বসে বোঝানোর চেষ্টা করে বলল,

‘তুই পুরো বিষয়টা অবজারভেশন কর একবার।’

‘যেমন?’

‘যেমন তুই দেখ, সবকিছু কিন্তু তোর জন্যই হয়েছে। ঘটনা ঘাটতে গেলে কিন্তু দেখা যাবে ভুলগুলো তোরই। তুই বিয়ে করতে চাসনি প্রথমে। হ্যাঁ, আমারও দোষ আছে। আমিও চাই নি তুই বিয়ে কর। কিন্তু যাই হোক আদর ভাইয়ার তো দোষ নেই। তুই বলেছিলি, তুই নিজে পনেরো দিনের প্রেগন্যান্ট। ব্যস, বাড়িতে গিয়ে নিজের বাবা মাকে আদর ভাইয়াও সেটাই বলেছে। তাই কি স্বাভাবিক নয়? অপরিচিত কারোর জন্য সে নিজে কেনো বাবা মার কাছে মিথ্যে বলবে? আফটার অল সেও ওই টাইমে বিয়ে করতে চাইনি। এখন, সেদিন রাতে বিষয়টা আমি কাটিয়ে দিতে চাইলাম কিন্তু তুই বলে দিলি আব্বুকে সবটা। এটা তো আগে থেকেই জানা ছিলো যে বাবা মা মানবে না। তাই আদর ভাইয়ের পারমিশন না নিয়ে এতো বড় কথাটা আগেই বলে দেওয়া তোর উচিত হয়নি। তাই আদর ভাইয়া রেগে আছে। তার উপর তুই ফোন দিচ্ছিস না দু’দিন ধরে। সে আরো রেগে আছে। আল্টিমেটলি সব ঘটনার পেছনের মূল কারণ কিন্তু তুই।’

টায়রা চোখ মুখ কুচকে কথাগুলো বলে এক চোখ খুলে বোনের রিয়েকশন দেখার চেষ্টা করলো। কিন্তু টিকলির মুখে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া খুঁজে পাওয়া গেলো না। কপালে কিছু সূক্ষ্ম ভাঁজ ফেলে সে বাইরে তাকিয়ে ছিলো। কিছুক্ষণ পর উঠে নিজের ঘরে চলে গেলো। টায়রা দীর্ঘশ্বাস ফেলে প্রভাতের অপার্থিব মেঘের গর্জন শুনতে শুনতে গিটার হাতে নিয়ে পুনরায় টুংটাং শব্দ তুলল।

,

স্নিগ্ধ বিকেল। টিকলি সাদা জামা পড়লো। গায়ে জড়ালো নীল রঙের উড়না আর পায়জামা। নীল আকাশের মাঝে এক টুকরো সাদা মেঘের ন্যায় ফুটে উঠলো মোমের পুতুলের মতো মুখখানা। কানে নীল রঙা ঝুমকা। হাতে নীল-সাদা চুড়ি। আজ চশমা পড়লো না। কিন্তু টিকলির ক্ষেত্রে চশমা না পরে চলাফেরা করা বিশাল বড় এক যুদ্ধ। তাই চোখে পাওয়ার লেন্স লাগানোটা আবশ্যক। টিকলিকে রেডি হতে দেখে টায়রা ভ্রু কুটি করে বলল,

‘এই বৃষ্টি-বাদলের দিনে একলা যাস কই তুই?’

কোমড় ছাড়ানো ঘন কালো রেশমি চুলগুলোকে ঠিক করতে করতে মুচকি হেসে টিকলি জবাব দিলো,

‘জামাইয়ের কাছে।’

টায়রা চোখ বড় বড় করে তাকালো। টায়রা কিছু বলতে চাইলো টিকলি না শুনেই সাদা পার্স নিয়ে বেরিয়ে গেলো ঘর থেকে। পেছন থেকে টায়রা চেঁচিয়ে বলল,

‘যাচ্ছো যাও। কিন্তু সাবধান নিচে ভাল্লুক মামা নাহ… মামী এসে বসেছে।’

নিচে যেতেই টিকলি আশ্চর্য হয়ে পড়লো। বসার ঘরে বসে আছে বাবা-মা। আর তার সামনের সোফায় বসে আছে রুহুল হক আকিদা হক আর ছোট্ট রুমকি। জামিলুর রেজা ভ্রু কুচকে টিকলির দিকে তাকালেন। টিকলি স্বাভাবিক হয়ে মামা মামীকে সালাম জানালো। রুমকিকে কোলে নিয়ে কিছুক্ষণ আদর করে বেরিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে এক পা বাড়াতেই আকিদা হক কেমন যেনো উপহাসের গলায় বললেন,

‘কোথাও যাচ্ছো নাকি টিকলি?’

টিকলি আস্তে করে উত্তর দিলো, ‘ওই তো মামী একটু কাজ ছিলো।’

জামিলুর রেজা গম্ভীর গলায় বললেন, ‘কি কাজ পরলো?’

শায়লা আক্তারও বললেন, ‘এই বৃষ্টি কাদার দিনে কি কাজ পরলো শুনি?’

টিকলি কারোর কথার উত্তর খুঁজে পেলো না। বসার ঘরের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে টায়রা। আস্তে আস্তে পা টিপে টিপে টিকলির পাশে এসে দাঁড়ালো। আকিদা হক ভ্রু কুটি করে ন্যাকা গলায় বললেন,

‘ইশশ…আজই কাজ পরে গেলো? আমরা এসেছি কোথায় একটু গল্প গুজব করবে তা না..’

টায়রা ফট করে বলে ফেলল, ‘গল্প তো সমানে সমানে আই মিন বয়সে বয়সে হয়। আপনার সাথে তো আমাদের বয়স যায় না। যেই বয়সের মেয়ে সেই বয়সের মেয়ের সাথেই তো গল্প করবো মামীজান।’

টায়রা দাঁত কেলিয়ে টেনে টেনে বলল। টিকলি টায়রাকে কনুই দিয়ে গুতা দিলো। শায়লা আক্তার চোখ পাঁকিয়ে তাকিয়ে ছিলেন মেয়ের দিকে। আকিদা হক একটু চুপসে গেলেন তবুও দমলেন না। জামিলুর রেজার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,

‘তা ভাই মেয়ের বিয়ে দিবেন না? দু মেয়েই আপনার বড় হয়েছে। একজনের অন্তত বিয়ে এবার দেওয়া উচিত।’

টায়রা দাঁত দিয়ে ঠোঁট কামড়ে আকিদা হকের দিকে তাকিয়ে থাকলো। জামিলুর রেজা চিন্তিত ভঙ্গিতে বললেন,

‘ছেলে খুঁজছি।’

চায়ে চুমুক দিয়ে ডাইনির মতো হেসে আকিদা হক কুটনির গলায় বলেন, ‘আহা! ওতো খুঁজা খুঁজির কি দরকার? আপনাদের ঘরেই তো পাত্র আছে?’

টায়রা বিরবির করে বলল, ‘এখানে আসছেই কুটনিগিরি করতে বেয়াদ্দব মহিলা।’

শায়লা আক্তার ভ্রু কুচকে বললেন, ‘মানে?’

‘মানে বুঝেন না আপা? আপনার নিজের ভাতিজা থাকতে ওতো দূরে কেনো যেতে হবে?’

আকিদা হক কথাটা বলতেই টিকলি বিস্ফোরণ চোখে তাকালো। শায়লা আক্তারের যেনো কথাটা মনে ধরেছে। টিকলি শক্ত গলায় ব্যস্ত কণ্ঠে বলল,

‘বাবা আমাকে বেরুতে হবে এন্ড ইটস আর্জেন্ট।’

‘বৃষ্টির দিনে বের হতে হবে না। ঘরে যাও।’

আকিদা হক কেমন যেনো চোখে তাকিয়ে ছিলো। মনটা ভরপুর তার কুটনৈতিক চালে। টায়রা বিরবির করে বলল, ‘এই আকিদা, ওইদিকে তাকা। তাকা। তাকা বলতাছি। দাড়া….।’

টায়রা টিকলিকে ফিসফিস করে বলল, ‘এক দৌড়ে গেটের বাইরে চলে যাবি।’

‘হু?’

টিকলি কিছু বুঝে উঠার আগেই টায়রা গগনবিহারী চিৎকার দিয়ে হাত দিয়ে সামনের এক জায়গায় ইশারা করে বলল, ‘আল্লাহ গো! ভাল্লুক….. মামী!’

সবাই ভ্যাবাচেকা খেয়ে আকস্মিক এই চিৎকারে ভয় পেয়ে টায়রার হাত যেদিকে তাক করা সেদিকে তাকিয়ে ভয়ার্ত কণ্ঠে বলল, ‘কই কই? কি? কি?’

আকিদা হক ভয় পেয়ে চমকে দাঁড়িয়েছেন। টায়রার দেখাদেখি সেও চিৎকার করে সেইদিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু কিছু দেখতে না পেয়ে ভ্রু কুচকে বিরবির করে বললেন, ‘এক মিনিট। কি বলল? ভাল্লুক মামী?’

এই সুযোগে টিকলি দৌড়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেছে। আকিদা হক টায়রার দিকে গরম চোখে তাকাতেই দেখলেন টায়রার পাশে টিকলি নেই। তিনি ভাল্লুক মামী কথাটা ভুলে গিয়ে অবাক কন্ঠে বললেন,

‘টিকলি কই গেলো?’

রুহুল হক ধমকে বললেন, ‘তাতে তোমার কি? এতো বেশি কথা বলছো কেনো? তোমাকে কি এখানে ঘটকালি করতে এনেছি?’

সবার সামনে স্বামীর মুখ থেকে এহেন ধারার কথা শুনে আকিদা হক অপমানিত বোধ করলেন। সোফায় বসে পুনরায় চা খেতে লাগলেন। টায়রা দাঁত বের করে হাসছিলো। বাবা-মার দিকে চোখ পড়তেই দেখলো তারা চোখ পাঁকিয়ে তাকিয়ে আছে। টায়রা আলগোছে সেখান থেকে এক পা এক পা করে সরে নিজের ঘরে চলে এলো।

চলবে❤️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here