#বিন্দু_থেকে_বৃত্ত
#পার্ট_৪
জাওয়াদ জামী
ড্রেসিং টেবিলের আয়না ঝাপসা দেখাচ্ছে কেন! একটু আগেও তো সব ঠিক ছিল! কিন্তু হঠাৎই আয়না ঝাপসা হওয়ার কারন খুঁজতে যেয়ে লক্ষ্য করল ও কাঁদছে। চোখে পানি থাকায় আয়না ঝাপসা লাগছে। কিছুক্ষণ নিরবে কাঁদে কুহু। চোখের পানিদের ঝরতে দেয় তাদের ইচ্ছেমত। একপর্যায়ে যখন নিজেকে হালকা লাগে তখন চোখ মুছে আলমারি ভেতরের ড্রয়ার থেকে এ্যালবাম বের করে। উল্টাতে থাকে একের পর এক পাতা। এ্যালবামের অধিকাংশ পাতাজুড়ে মায়ের ছবি। বিয়ের দিন থেকে শুরু করে কুহুর জন্মের পরেরও ছবি ঠাঁই পেয়েছে সেখানে। এমনকি মা’র বিয়ের আগের ছবিও আছে। কুহু ওর মায়ের ছবিতে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে৷
” কই আমার মা কালো! আমার মা’তো পরমাসুন্দরী। পৃথিবীর যে কারও মায়ের থেকে আমার মা সুন্দরী ছিলেন। ” ছবিগুলো সামনে নিয়ে কান্নায় ভেঙে পরে কুহু।
ছোটবেলা থেকেই ঘাত-প্রতিঘাতে বড় হওয়া কুহুর মাথায় এটা আসেনি মায়েদের আলাদা কোন রূপ হয়না। আলাদা কোন জাত হয়না। মায়েদের রূপ মমতাময়ীতেই বেশি প্রকাশ পায়। পৃথিবীর সকল সন্তানদের কাছেই তাদের মা সুন্দরী, অতুলনীয়। এমনকি শিউলি আক্তারও তার ছেলেমেয়ের কাছে মমতাময়ী হিসেবেই পরিচিতি পেয়েছে। স্থান-কাল, পাত্রভেদে পার্থক্য হয় শুধু ভালোবাসার। সে তার সন্তানদের মনে নিজের প্রতি বীজ বুনেছে ভালোবাসা দিয়ে। যেখানে স্থান,কাল,পাত্রের কোন বিভেদ নেই কভু।
শুধু বিভেদ কুহুর ক্ষেত্রে। সেখানে স্থান, কাল, পাত্রের কোন স্থানই নেই যেখানে স্থান পেয়েছে শুধু ঘৃণা।
” এই যে নবাবজাদী, আর কতক্ষণ ঘরের কোনায় মুখ গুঁইজা থাকবি। ঘরের কাম কি তর বাপে করব? তা ফুপুর রাজমহলে থাইকা আসলি, ফুপু জামাকাপড় কিন্না দেয়নি? ফুপুরা এক্কেরে ভালোবাসার ঝুড়ি নিয়া বসে তাগোর ভাইঝির জন্য। দেখলেই শরিল আ’গু’নে জ্ব’ই’লা যায়। ” শিউলি আক্তারের গলার ঝাঁঝ শুনে কুহু চুপসে যায়।
” দিছেতো ছোটমা। ফুপু চারটা ড্রেস দিছে, দিদুন তিনটা আর আন্টি তিনটা দিছে। ”
” বাব্বাহ্ তর তো দেখতাছি ঈদ লাইগা গেছে। হেই বুড়িও তরে জামা দিছে! তর কপাল। কারও মা মরলে যে কপাল খুলে তরেই দেখলাম। এদিকে তর ফুপু খালি মুখেই আমার পোলা মাইয়ারে ভালোবাসা দেখায়। কই কিছুতো পাঠাইলনা তাগোর জন্য? না কি তুই মানা করছস? আমার পোলা মাইয়ারে এত হিং’সা করস তুই? দুধকলা দিয়া কা’ল’না’গি’নী পুষতাছি আমি। ” কপাল চাপড়াতে চাপড়াতে আর্তনাদ করছে শিউলি আক্তার।
” ছোটমা ফুপু শিহাব, দৃষ্টি সবার জন্যই কাপড় পাঠাইছে। কাল শিহাবকে বলেছি ওরগুলো নিতে। কিন্তু ও পরে নিবে বলল। তারপর আমি ভুলে গেছি। আর ছোটমা দিদুন খুব ভালো মানুষ তাকে ঐভাবে বলোনা। ” ভয়ে ভয়ে কুহু শিহাব, দৃষ্টির পোশাক শিউলি আক্তারের হাতে দিতে দিতে।
” তর কাছ থাইকা আমার আদব শিখন লাগব রে হা’রা’ম’জা’দি? তরে দিছে দশটা জামা আর আমার পোলা মাইয়ার জন্য একটা কইরা পাঠাইছে! কত ভালোবাসে আমার শিহাব, দৃষ্টিকে তা বুঝা শেষ আমার। খালি আমার পোলা মাইয়ারে ভালোবাসি ভালোবাসি কইরা মুখে ফেনা তুলে। তাগোর সব ভালোবাসা এখন দেখতাছি এই কালীর জন্য। ” মনের যত রা’গ উগরে দেয়ার চেষ্টায় আছে শিউলি আক্তার।
ছোটমার মুখে ‘ কালী ‘সম্মোধন শুনে আবারো কান্না এসে ধাক্কা দিচ্ছে বুকের দরজায়। এভাবে যে আরও কতদিন কাটবে তা কুহুর জানা নেই। জানা নেই কবে ছোটমার মনে ওর জন্য একটু ভালোবাসার জন্ম নিবে। ওকে অনেকটা ভালোবাসার দরকার নেই শুধু এক চিলতে ভালোবাসা পেলেই চলবে।
নিজের ছেলে-মেয়ের পোশাক নিয়ে কুহুর ঘর থেকে বেরিয়ে যায় শিউলি আক্তার। সে বেরিয়ে যেতেই কুহু ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠে। ছোটমার মুখে কালী ডাক শুনলেই ওর ভিষণ কষ্ট হয়। এভাবেও কেউ কাউকে বলতে পারে! কালো’রা কি মানুষ নয়! দুই দিনের দুনিয়ায় এত রুপের বড়াই কেন করে মানুষ! ভেতরের রক্ত, মাংস, অস্থিমজ্জা সবই এক তবুও কেন উপরের রং নিয়ে এত অহংকার!
বাহিরে শিউলি আক্তার চিৎকার চেঁচামেচি করছে। কুহু ঝটপট পোশাকগুলো আলমারিতে তুলে রেখে বাহিরে আসে। ফুপু তার ছেলে-মেয়েকে একটা করে পোশাক দিয়েছে এই রা’গে সে জিনিসপত্র আছড়াচ্ছে। কুহু বেশ বুঝতে পারছে আজ সারাদিন ওর ওপর দিয়ে ঝড় বইবে।
লাইব্রেরিতে বসে মনযোগ দিয়ে এ্যানাটমির একটা বই পড়ছে তাহমিদ। পড়ার মাঝেই বুঝতে পারে ওর পাশের চেয়ারে কেউ বসেছে। এতে একটু বিরক্ত বোধ করে তাহমিদ। লাইব্রেরিতে আরও চেয়ার থাকতে ওর পাশের চেয়ারে এসেউ বসতে হল! তাহমিদ মুখ গুঁজে রেখেছে বইয়ের মধ্যে।
” হেই, তাহমিদ হোয়াটস আপ? ”
তাহমিদ মুখ তুলে পাশে সিলভি কে বসে থাকতে দেখল। যাকে সে মোটেও পছন্দ করেনা। এরকম গায়ে পরা মানুষকে অপছন্দের তালিকায় রেখেছে সে। বিশেষ করে মেয়েদের। তবুও বিরক্তি নিয়েই মুখ খোলে।
” আমি পড়ছি, আর পড়ার সময় নিজেও কথা বলিনা এবং অন্যরা কথা বলুক এটাও পছন্দ করিনা। ”
সিলভি এমনটা আশা করেনি। অপমানে ওর মুখ কালো হয়ে গেছে। তবুও মুখে হাসি ফুটিয়ে ন্যাকা স্বরে বলে, ” ওহ্ তাহমিদ বেবি, তুমি এভাবে বলছ কেন! আমরা একসাথেই পড়ি সে হিসেবে ফ্রেন্ডই বলা চলে। সেই সুবাদে একটুআধটু আড্ডা মারতেই পারি। কিংবা আউটিংয়ে যেতে অথবা তুমি চাইলে কোন রেস্টুরেন্টে বসতে পারি৷ ”
” এই তুমি আমাকে বেবি বলছ কেন! আমি কি কোলের বাচ্চা নাকি ফিডার খাই? নেক্সটে এমন অদ্ভুতভাবে ডাকতে যেন না শুনি। আর একসাথে পড়লেই তাকে ফ্রেন্ড বলেনা, বলে ক্লাসমেট। সে হিসেবে তুমি আমার ক্লাসমেট। আর কোন ক্লাসমেটের সাথে আমি কখনোই আউটিং কিংবা রেস্টুরেন্টে যাইনা, আন্ডারস্ট্যান্ড? সো, তুমি এখন আসতে পার আমি ইমপরটেন্ট একটা বিষয়ে পড়ছি। এখন বিরক্ত না করলেই খুশি হব৷ ” স্পষ্ট ভাষায় সিলভিকে মানা করে দেয় তাহমিদ।
সিলভি এমন অপমানিত কোনদিনই হয়নি। সে তাহমিদকে বেশ পছন্দ করে তাই বারবার ওর কাছে আসে নানান বাহানায়। কিন্তু প্রতিবারই তাহমিদ ওকে এভয়েড করে। তবে আজ একটু রুক্ষভাবেই বলেছে। অবশ্য এতে তাহমিদের আফসোস অথবা অনুশোচনা কোনটাই নেই।
সিলভি ধুপধাপ পা ফেলে লাইব্রেরির বাইরে চলে যায়। তাহমিদ সেদিকে ফিরেও তাকায়না।
বাড়ির পেছনের পুকুরের পাড়ে একটা মাঝারি হিজল গাছ আছে। এই হিজল গাছের তলে কুহু পাশের বাড়ির মজিদ চাচাকে বলে একটা মাচা করে নিয়েছে। তার আগে অবশ্য বাবার কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছে। এই মাচা কুহুর মন খারাপের সঙ্গী। ওর মন যখনই খারাপ হয় তখনই এখানে এসে বসে থাকে। পুকুরে সারাবছর কমবেশি পানি থাকে। সেখানে মাছেরা কেলে বেড়ায়। কুহু একমনে দেখতে থাকে পুকুরের পানিতে মাছেদের জলকেলি।
আজও তেমনি কুহুর মন খারাপ। ছোটমা সকাল থেকেই যাচ্ছেতাই বলে গালাগাল করছে। বাবা সেই সকালে নাস্তা করে দোকানে বেরিয়ে যায় আসে এশার নামাজের পর। তাই শিউলি আক্তার ওকে মারলে বা বকলেও দেখার কেউ নেই। সারাটা বিকেল পুকুর পাড়ে বসে কাটিয়ে দেয় কুহু। সন্ধ্যার দিকে হাঁস-মুরগিগুলো খোঁয়াড়ে তুলে বাড়িতে ঢুকে। একটু পর শিহাব দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে কুহুকে।
” আপা তোমার নাকি ফুপুর বাড়িতে বিয়ে হবেনা! রাতে আব্বু আর আম্মু আলোচনা করল। জানো আপা আমি কত আশা করে ছিলাম তোমার ঢাকায় বিয়ে হলে আমি সেখানে গিয়ে থাকব। ” শিহাবের মুখটা ছোট হয়ে গেছে।
কুহুর মন খারাপ হয়ে যায় সেদিনের কথা মনে হতেই। ওর জন্য ফুপুকে কত অপমান হতে হল।
না চাইতেও কুহুর চোখ থেকে কয়েক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পরে৷
” আপা ও আপা তুমি কাঁদছ কেন? ” শিহাব উদগ্রীব হয়ে জানতে চায়।
কুহু কিছু না বলে মুচকি হেসে শিহাবকে জড়িয়ে ধরে। কি সুন্দর করে কথা বলে তার ভাইটা। ওর বয়স সবে পাঁচ বছর। অথচ কথা বলে কত স্পষ্ট ও সাবলীলভাবে। অবশ্য দৃষ্টি আর শিহাবকে এভাবে কথা বলতে কুহুই শিখিয়েছে। ওর ছোটমা নিজে শুদ্ধ ভাষায় কথা বলতে জানেনা তাই কুহু যখন ওদের শুদ্ধ ভাষায় কথা শিখিয়েছে তখন ছোটমা বারন করেনি।
আজ কুহুর রেজাল্ট দিবে। তাই সকাল থেকেই মনটা বড্ড উচাটন করছে। কিন্তু ছোটমা সেটা বুঝলে তো। কুহুর প্রতিদিনের ন্যায় আজও ঘুম ভেঙেছে ফুপুদের ফোনে। তাদের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলার পরেই বিছানা ছেড়েছে তারপর নামাজ আদায় করে লেগে পরেছে সাংসারিক কাজকর্মে। ওর রোল নম্বর, রেজিষ্ট্রেশন নম্বর ফুপুদের কাছে আছে। তারা জানিয়েছেন রেজাল্ট পাওয়া মাত্রই কুহুকে জানিয়ে দিবেন। কায়েসও মেয়ের রোল নম্বর, রেজিষ্ট্রেশন নম্বর নিয়ে দোকানে গেছে। তিনিও রেজাল্ট জেনে নিবেন।
সব কাজকর্ম সেড়ে কুহু নিজের ঘরে বসে আছে। আজ ওর খুব করে মাকে মনে পরছে। মা বেঁচে থাকলে আজকের দিনে অন্তত মেয়েকে এত কাজ করতে দিতনা। নিজ হাতে খাইয়ে দিত। অথচ সকাল থেকে এখন পর্যন্ত না খেয়ে আছে তা ছোটমা দেখেও দেখেনি। এদিকে প্রচন্ড ক্ষুধাও লেগেছে। কিন্তু টেনশনে খেতে ইচ্ছে করছেনা।
টেনশনে ঘর আর বাহির করছে কুহু। বারবার ফুপুদের কাছে ফোন দিয়ে জানতে চাচ্ছে রেজাল্ট দিয়েছে কিনা। ছোট ফুপুতো একদফা হেসেছে ওর এতবার ফোন করা দেখে।
ওর সকল অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে একসময় মেজো ফুপুর ফোন আসে। ধুকপুক বুকে আর কাঁপা কাঁপা হাতে ফোন রিসিভ করে কুহু।
” কিরে কুহুতান এত দেরি করে রিসিভ করলি কেন? ”
” ও ফুপু তুমি আমার রেজাল্ট জেনেছ? রেজাল্ট খুব খারাপ হয়েছে ফুপু? ও ফুপু বলোনা। ”
নাজমা পারভিন বুঝতে পারছে তার ভাতিজী খুব টেনশন করছে।
” এই মেয়ে তুই এত উতলা হচ্ছিস কেন! তোর রেজাল্ট খুব একটা খারাপ হয়নি। ৪.৭৫ এসেছে৷ মাহিন, মাইশা দুজনেই দেখে আমাকে জানিয়েছে। এবার আমাকে মিষ্টি খাওয়া। ”
রেজাল্ট শুনে কুহু হাঁফ ছাড়ে।
” ও ফুপু তুমি না আসলে মিষ্টি খাওয়াব কেমন করে! আচ্ছা ফুপু এই রেজাল্ট কি খুব খারাপ? আমি ভালো কলেজে ভর্তি হতে পারবনা? ” কুহুর মন খারাপ বুঝতে পারে নাজমা পারভিন।
” কুহুতান, কি বলছিস এসব! তুই সংসারের সব কাজ সামলে যতটুকু পড়ার সময় পেয়েছিস তার তুলনায় অনেক ভালো করেছিস। ভালো কলেজে পড়ার সুযোগ তুই অবশ্যই পাবি দেখিস। ”
” ফুপু তোমার সাথে পরে কথা বলছি। বড় ফুপু, ছোট ফুপু ফোন দিচ্ছে। তাদের সাথে কথা বলি। ”
নাজমা পারভিন সায় জানিয়ে ফোন কেটে দেয়।
” আসসালামু আলাইকুম ফুপু। আমার রেজাল্ট শুনেছ তুমি? ”
” ওয়ালাইকুমুসসালাম সোনা মা। অনেক ভালো রেজাল্ট করেছিস তুই। আমরা অনেক খুশি হয়েছি। এবার বাড়ি ছাড়ার প্রস্তুতি নে। তোকে এখানে ভর্তি করিয়ে দিব। হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করবি। আমি কায়েসের সাথে এখনই কথা বলে ওকে রাজি করিয়েছি। ” আফরোজা নাজনীনের উচ্ছ্বসিত গলা শুনে কুহু আর কিছুই বলেনা।
শেষে ফোন আসে ওর ছোট ফুপু শাহনাজ সুলতানার। কুহু ছোট ফুপুর সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে বাইরে আসে।
এদিকে কায়েস রেজাল্ট দেখার সাথে সাথেই শিউলি আক্তারকে ফোন দিয়ে জানায়। কিন্তু শিউলি আক্তারের এতে কোন হেলদোল নেই। কুহু পাস করল কি ফেইল করল তাতে তার কিছুই যায় আসেনা।
কুহু ছোটমার আশেপাশে ঘুরঘুর করছে একটু ভালো কথা, প্রশংসা পাবার আশায়। কিন্তু ওর আশায় জল ঢেলে শিউলি আক্তার খেঁকিয়ে উঠে।
” এই যে নবাবজাদী, কলপাড়ে কাপড় ভিজায় রাখছি সেগুলান কি তর ম’রা মা’য় ধুইব? নাকি মেট্টিক পাশ দিয়াই নিজেকে জজ – ব্যারিষ্টার ভাবতাছস? বেশি উড়িসনা কইলাম। তাইলে কইলাম ডানা কা’ই’টা লু’লা বানায় রাখমু। ”
শিউলি আক্তারের কোন কথায় তেমন কষ্ট হয়নি কিন্তু ওর মৃ’ত মাকে নিয়ে বলা কথা কুহুর সহ্য হয়না।
” ছোটমা তুমি আমাকে যা ইচ্ছে তাই বল। কিন্তু তোমার দুইটা পায়ে ধরি আমার মা’কে নিয়ে কিছু বলোনা। ” কুহু ডুকরে কেঁদে উঠে।
” হা’রা’ম’জা’দি, অ’ল’ক্ষ্মী-অ’প’য়া তুই আমারে জ্ঞান দেস! ছোটবেলায় মায়েরে খাইছস আর এখন আমার সংসারে আ’গু’ন জ্বা’লা’ই’তা’ছ’স। আবার আমার মুখে মুখে কথা কস! ” কথার সাথে সাথে কুহুর দুই গালে কয়েকটা থা’প্প’ড় দিয়েছে শিউলি আক্তার। চুলের মু’টি ধরে টানতে টানতে কলপাড়ে নিয়ে যায় । ছুঁড়ে ফেলে কাপড় ভিজিয়ে রাখা বালতির উপর। ছুঁড়ে ফেলে দেয়ায় কনুইয়ে ব্যথা পায় কুহু। হাঁচড়েপাঁচড়ে উঠেই কাপড় ধুতে শুরু করে। এখন যদি একটুও দেরি হয় তাহলে শিউলি আক্তার ওকে আবারও মা’র’তে দুইবার ভাববেনা।
চলবে…