#বিন্দু_থেকে_বৃত্ত
#পার্ট_৩১
জাওয়াদ জামী
আফরোজা নাজনীন খাবার টেবিলে সানাউল রাশেদিনকে জানান, কুহুর বিয়ের বিষয়ে। মেডিকেলে থাকতে শাহনাজ যা যা বলেছিল তার সবটাই বলেন। সানাউল রাশেদিন ছেলের ডিটেইলস জানতে চান। তখন আফরোজা নাজনীন জানান, ছেলে একটা প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকচারার হিসেবে জয়েন করেছে কিছুদিন হল। পাশাপাশি বিসিএস দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ছেলেরা এক ভাই, এক বোন। বোন বড় এবং সে ব্যাংকার। ছেলের বাবাও ব্যাংকার। এবং এও জানায় তারা অতি দ্রুতই কনেপক্ষের সিদ্ধান্ত জানতে চায়।
সানাউল রাশেদিন সব শুনে বললেন, ” আগে কুহুর থেকে তার মতামত জানতে চাও। এরপর কায়েসের সাথে কথা বল। তারপর আমরা সব খোঁজ খবর নিয়ে সামনে এগোব। ”
তাহমিনা আক্তার কুহুর বিয়ের কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে গেছেন। তিনি একনজর তাহমিদের দিকে তাকান। তাহমিদ একমনে খেয়ে চলেছে। তবে তার চোখের কোনে জমে থাকা পানি, তাহমিনার দৃষ্টি এড়ায়নি।
আজ তিনি বুঝতে পারলেন কিছুদিন যাবৎ তাহমিদের মনমরা হয়ে থাকার কারন।
রাতে সবাই যখন যার যার রুমে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন তাহমিনা বড় জায়ের দরজার সামনে এসে দাঁড়ায়।
” বড় ভাবি, ঘুমিয়ে পরেছেন? ”
” কে? তাহমিনা, আয় ভেতরে আয়। এখনো ঘুমাইনি তবে ঘুমের প্রস্তুতি চলছে। ”
তাহমিনা ধীর পায়ে রুমে প্রবেশ করে।
” আপনাদের সাথে কিছু কথা বলতে এসেছিলাম। ” তাহমিনা ইতস্ততভাবে বলে উঠেন।
” এত সংকোচ করছিস কেন! কথা থাকলে বলবি। তার আগে বস। ”
” কি ব্যাপার তাহমিনা, কোন সমস্যা হয়েছে? তোমাকে এমন লাগছে কেন? ” সানাউল রাশেদিন জহুরির চোখে দেখছেন ছোট ভাইয়ের বউকে। তিনি তাহমিনাকে দেখেই বুঝতে পেরেছেন, কিছু একটা হয়েছে।
” বড় ভাই, একটু সমস্যাই দেখা দিয়েছে। কিন্তু কিভাবে আপনাদের বলব, সেটা বুঝতে পারছিনা। ”
” আমাদের কাছে অন্তত কোন ভনিতা করোনা। তোমার যা বলার নিঃসংকোচে বল। ” পুনরায় বললেন সানাউল রাশেদিন।
” বড় ভাই, আপনাদের কাছে আমি কিছু চাই। দয়া করে আমাকে ফিরিয়ে দিবেননা। ভাবি আপনার কাছে অনুরোধ, আপনি আপনার ছেলের দিকটা একটু ভাববেন। ”
” কি হয়েছে তাহমিনা! তুই এভাবে কথা বলছিস কেন? এত না ঘুরিয়ে যা বলার সোজাসোজি বল। আর আমার ছেলের বিষয়ে যে-কোন সিদ্ধান্ত নিতে, কখনোই কোন দ্বিধা কাজ করেনা নিজের মাঝে। তার ভালোর জন্য যা করা প্রয়োজন, আমার জীবন দিয়ে হলেও সেটাই করব। ”
আফরোজা নাজনীনের কথায় একটু ভরসা পান তাহমিনা।
” বড় ভাই, ভাবি, আপনারা জানেন কুহুকে নিয়ে সেই ঘটনার পর থেকে তাহমিদ বেশ আপসেট ছিল। দিনের পর দিন ও মনোকষ্টে ভুগেছে। ও একটা সময় নিজের ভুল বুঝতে পারে। এরপর একটা সময় অনুধাবন করে, সেইদিনের সিদ্ধান্ত তার ভুল ছিল। কুহুকে ওর জীবনে প্রয়োজন। নিজের সাথে অনেক বোঝাপড়া করে বুঝতে পেরেছে, ও কুহুকে ভালোবাসে। কুহুকে ছাড়া ওর চলবেনা। কিন্তু ও বড়মাকে ভয় পাচ্ছে। বড়মা সব শোনার পর যদি রাজি না হয়। ” তাকমিনার কথাগুলো শোনার পর আফরোজা নাজনীনের মত সানাউল রাশেদিনও যেন আকাশ থেকে পরলেন।
সানাউল রাশেদিন ভাবছেন, ভালোই যদি বাসবে তবে সেদিন কেন এত ভাব নিয়েছিল! ছেলেটা যে আস্ত তার ছেঁ’ড়া তা তিনি মনে মনে ভেবে নেন। তবে স্ত্রীর সামনে আপাতত তার প্রানপ্রিয় ছেলের সম্পর্কে কিছু বলার সাহস নেই।
” কি বলছিস এসব, তাহমিনা! এটাও কি সত্যি! তাহমিদ কুহুকে পছন্দ করে! আমার বিশ্বাস হচ্ছেনা কিছুতেই। ”
” একশো ভাগ সত্যি, ভাবি। আপনারা যেদিন মেডিকেলে বিয়ের বিষয়ে কথা বলেন, সেদিন আপনাদের আশেপাশে কি ও ছিল? ”
আফরোজা নাজনীন হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়ান।
” আমি হিসেব করে দেখলাম সেদিনের পর থেকেই আমার ছেলেটা কেমন মনমরা হয়ে গেছে। দিনের পর দিন অনিয়ম করছে। ঠিকমত খাচ্ছেনা। অকারণে রাত জাগছে। আমি অনেক জিজ্ঞেস করেছি, কিন্তু ও কোন উত্তর দেয়নি। ”
” আমিও বেশ কিছুদিন থেকেই লক্ষ্য করেছি, ছেলেটা কেমন শুকিয়ে যাচ্ছে। আমিও জিজ্ঞেস করেছি কিন্তু কিছু না বলে পাশ কাটিয়ে চলে গেছে। তার আগে তুই এটা বল, কেমন করে জানলি তাহমিদ কুহুকে পছন্দ করে? ”
” ও আমার কাছে নিজের মুখে স্বীকার করেছে। এ-ও বলেছে, ও কুহুকে বিয়ে করতে চায়। ওর একটাই চাওয়া ছিল, সব যেন আগের মত হয়ে যায়। কুহু আবার এই বাসায় আসুক। কুহুকে আমারও ছেলের বউ হিসেবে পছন্দ, তাই আমিও ওকে ভরসা দিয়েছি। ”
” ঐ আহাম্মকটাকে এক্ষুনি এখানো ডাকো তাহমিনা। আজ ওর পিঠের ছা’ল তুলব আমি। কোথায় সে বড় মাপের ডক্টর হবে, তা না করে প্রেম প্রেম খেলছে! যখন বিয়ের কথা বলেছিলাম, তখন নবাবজাদার কি তে’জ! ” সানাউল রাশেদিন রা’গে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়েছেন।
তাহমিনা নীরবে উঠে আসেন। ছেলের রুমে এসে, ওকে বড়মার ঘরে যেতে বলেন।
” শোন, তুমি আমার ছেলেকে অন্যায় কিছু বলতে পারবেনা। ভালো কোন কথা থাকলে বলবে, না থাকলে চুপ করে বসে থাকবে। ” আফরোজা নাজনীন স্বামীর ওপর ফুঁ’সে ওঠেন।
স্ত্রীর এহেন আচরণে তিনি চুপসে যান।
তাহমিদ নিচে বড়মার রুমে আসছে আর ভাবছে, হঠাৎ তাকে ডাকছে কেন! ওর পিছুপিছু যে তাহমিনাও আসছে তা একদমই খেয়াল করেনা৷
” বড়মা, আসব? ”
” এসো নবাবজাদা, এসো। তোমাকে সুস্বাগত। এসে বড়ই উদ্ধার করলে আমাকে। ” খোঁচা মারার সুযোগ হাতছাড়া করেননা সানাউল রাশেদিন।
” বড়মা, সিনিয়র ভদ্রলোককে দয়া করে চুপ থাকতে বল। আমার এখন তার কোন কথা শোনার মুড নেই। ”
” তোমার সব মুডতো অন্য জায়গায় আটকে গেছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই আমার কথা শুনতে ভালো লাগবেনা। ”
” বড়মা, তুমি কি কিছু বলবে? না আমি চলে যাব? ”
” তুই বস, বাপ। তোর সাথে কিছু কথা আছে। ”
তাহমিদ বড়মার কাছে বসে। তাহমিনা দরজার পাশে দাঁড়ানো।
” তাহমিনা, তুই দাঁড়িয়ে থাকলি কেন? তুই ও বস। ”
তাহমিনা আক্তার ডিভানে বসে।
” বাপ, তুই আমার কতখানি জুড়ে আছিস, তা আমার থেকে বেশি কেউ জানেনা। তোর সুখে যেমন আমি সুখী হই, তেমনি তোর দুঃখে, কষ্টে আমিও কাঁদি। তুই আমার কাছে কিছু চাইবি, কিন্তু আমি তা কখনো তোকে দিবনা এটা হতেই পারেনা। প্রয়োজনে আমার কলিজা কে’টে তোকে আমি দিতে পারি৷ তোর কি আমার কাছে কিছু চাওয়ার আছে? থাকলে এখনই সময়, তুই নিঃসংকোচে চেয়ে নে। সেটা হোক যেকোনো কিছু৷ ” আফরোজা নাজনীন তাহমিদের মুখে শুনতে চাচ্ছেন। তিনি চাইছেন যদি তাহমিদ কুহুকে ভালোবাসে, তবে সে নিজ মুখে বলুক।
তাহমিদ বড়মার কথা শুনে দ্বিধাদ্বন্দে পরে গেছে। ও কি চাইবে বড়মার কাছে! ওর চাওয়া তো একটাই। সেটা শুধুই কুহু। তাই সে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। কি করবে এখন। আবার এটাই প্রকৃত সময় তার মনের কথা বলার। ওর আজকের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে কুহুকে পাওয়া না পাওয়া। বেশ কিছুক্ষণ মাথা নিচু করে অনেককিছুই ভাবে তাহমিদ।
এদিকে ছয়জোড়া চোখ তার দিকে তাকিয়ে আছে, এটা ভালোভাবেই অনুভব করতে পারছে।
মাথা নিচু করে রেখেই কথা বলে তাহমিদ,
” বড়মা, সারাজীবন তুমি আমাকে যা দিয়েছ, এরপর আর কিছুই চাইবার থাকেনা। কিন্তু সব সময় পরিস্থিতি আমাদের হাতে থাকেনা৷ যার ফলে কিছু না চাওয়ার থাকলেও, কোথাও না কোথাও কিছু না পাওয়া থেকেই যায়। আর আমার এই পাওয়া কিছু হলো কুহু। তোমার কাছে আমি শুধু ওকেই চাই। ওকে পেলেই আমার সকল পাওয়ার পথ পূর্ণ হবে। ”
আফরোজা নাজনীন মৃদু হেসে বলেন,
” তুই ভেবেচিন্তে এসব বলছিস, বাপ? পরে তো আবার আফসোস করবিনা ? ”
” না বড়মা, আমার আফসোস থাকবে কুহুকে না পেলে। আমার সকল স্বপ্ন, চাওয়া-পাওয়া শুধুই তাকে ঘিরে। ”
” তাহমিনা, তুই আজকের ঘটনার স্বাক্ষী থাকলি কিন্তু। এই যে সিনিয়র রাশেদিন, তুমিও স্বাক্ষী থেকো। এখন রুমে যা, বাপ। পড়তে বস গিয়ে৷ ”
” বাহ্, চমৎকার! এখানে যে যার মতামত প্রদান করল, তখন আমাকে লাগলনা! কিন্তু স্বাক্ষীর বেলায় এই রাশেদিনকেই দরকার! সব স্বা’র্থ’প’রে’র দল৷ সানাউল রাশেদিন কিছুক্ষণ গজগজ করে বারান্দায় চলে যান।
তাহমিদ বড়মার কথামত রুমে চলে আসে। তবে ও বড়মার কথা শুনে যা বোঝার বুঝে নেয়।
” তাহমিনা, আমি কালকেই কুহুর সাথে কথা বলব। ও রাজি থাকলে আমি দেরি করবনা। সব ব্যবস্থা তারাতারি করতে বলব তাহমিদে বাবা-চাচাকে। ”
তাহমিনাও বড় জায়ের সিদ্ধান্তে খুব খুশি হন।
পরদিন সকালেই আফরোজা নাজনীন কুহুকে ফোন করেন। কোচিং শেষ করেই তিনি কুহুকে এই বাসায় আসতে বলেন। তিনি জানান তাহমিদ মেডিকেল থেকে ফেরার পথে ওকে নিয়ে আসবে। কুহু ফুপুর কথায় রাজি হয়।
আফরোজা নাজনীন তাহমিদকে বলে দেন কুহুকে আনার জন্য।
তাহমিদ ক্লাস শেষ করে কুহুর হোস্টেলের সামনে এসে দাঁড়ায়। আজ সে সিএনজি করে এসেছে।
হোস্টেলের সামনে এসে তাহমিদ ফোন করে কুহুকে। তাহমিদের ফোন পেয়েই হোস্টেল থেকে বেরিয়ে আসে কুহু। ও বুঝতে পারে তাহমিদ বাইরে অপেক্ষা করছে, তাই ফোন রিসিভ না করেই বের হয়। এদিকে তাহমিদ পরপর দুইবার ফোন দিয়েছে। কিন্তু কুহু রিসিভ করেনি। বিরক্ত হয়ে তৃতীয়বার ফোন দিতেই, কুহুকে দেখল গেইট পার হতে। তাহমিদ ফোন কেটে সিএনজির খোঁজে চারপাশে তাকায়। সামনে একটা সিএনজি দেখে সেদিকে এগিয়ে যায়। কুহুও তাহমিদকে দেখতে পেয়ে সেদিকে যায়।
তাহমিদ সিএনজি ভাড়া করে কুহুর দিকে তাকালে, কুহু একটু জোরে হেঁটে যায়। কুহুকে পেছনে বসতে বলে, নিজে সামনে বসে। তাহমিদের এহেন আচরণে কুহু অবাক হয়ে যায়। সেদিনের পর থেকে মানুষটা আর ওর সাথে কথা বলেনা। সব সময়ই এড়িয়ে চলে। কুহু বুকের ভিতর চিনচিনে ব্যথার অস্তিত্ব টের পায়। সে-ও বুঝলনা কুহুর কষ্ট! তবে কিসের ভালোবাসা তার!
বাসার গেইটের সামনে এসে সিএনজি দাঁড়ালে তাহমিদ ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে সোজা ভেতরে ঢুকে যায়। একটাবারও কুহুর দিকে তাকায়না। কুহু ধীরেসুস্থে ভেতরে প্রবেশ করে। ততক্ষণে তাহমিদ বাসার ভেতরে ঢুকে গেছে। কুহুও ড্রয়িংরুমে প্রবেশ করলে আশেপাশে তাহমিদের অস্তিত্ব দেখলনা।
কুহুকে দেখে তাহমিনা আক্তার হাসিমুখে এগিয়ে আসেন। জড়িয়ে ধরেন বুকে৷ কুহুও তাকে সালাম জানায়। তিনি হাসিমুখে উত্তর দেন।
আফরোজা নাজনীন ভাইয়ের মেয়েকে দেখে হাত বাড়িয়ে কাছে ডাকেন।
কুহু ফুপুর কাছে গিয়ে সালাম দেয়। তিনি উত্তর নেন।
রাতে খাবার পর আফরোজা নাজনীন কুহুকে নিজের রুমে ডাকেন। কুহু ফুপুর রুমে এসে দেখল, ফুপা অফিসের কাজ করছে। আর ফুপু তার পাশে বসে আছে।
কুহু ভেতরে আসলে ওকে নিজের কাছে বসান আফরোজা নাজনীন।
” তোকে কয়েকটা কথা বলব, সোনা মা। তুই নির্দ্বিধায় তোর মতামত জানাবি। আমি তোকে কোনরকম জোর করবনা। ”
” কি কথা ফুপু! ”
” আমরা চাই তুই ভালো থাক। আমাদের বয়স হয়েছে, কখন কি হয়ে যায় তা বলতে পারিনা। তাই চাইছি তোর একটা স্থায়ী ঠিকানা দিতে। তাই আমরা সুস্থ থাকতে থাকেই তোর বিয়ের কথা চিন্তা করছি। বিয়ের পর তোর পড়ার সুযোগ থাকবে। নিজের পায়ে দাঁড়ানোর মত যোগ্য হবি। সে ব্যবস্থা আমরা করব। এতে কি তোর মত আছে? ”
” তোমরা যা বলবে তাই হবে। ” কুহুর বুক ফে’টে যাচ্ছে। সময় এসেছে তাহমিদের থেকে দূরে যাওয়ার।
” আমি তোর মতামত জানতে চেয়েছি। তুই কি চাইছিস? ”
” আমি আগে পড়াশোনা শেষ করতে চাই, ফুপু। ” কুহু সকল দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছেড়ে জবাব দেয়।
” তোর ইচ্ছার সাথে আমিও একমত। কিন্তু যদি এখন বিয়ে ঠিক করে রাখতে চাই? তোর পড়াশোনা শেষ হলে বিয়ে হবে, এক্ষেত্রে তুই কি বলিস? ”
কুহু বুঝতে পারছে ফুপু বিয়ের বিষয় নিয়ে সিরিয়াস। সে নিজেও চিন্তা করে দেখল, যদি বিয়ে ঠিক হয়ে থাকে এতে অসুবিধা নেই। পড়াশোনা শেষ করেই নাহয় বিয়েটা করল।
কুহু মাথা নেড়ে হ্যাঁ সূচক উত্তর দেয়।
” তাহমিদকে পাত্র হিসেবে তোর কাছে কেমন মনে হয়? ” ফুপুর প্রশ্ন শুনে কুহুর দম বন্ধ হয়ে আসে। মুহুর্তের মাঝেই মনে হচ্ছে কলিজা মুখের ভেতর চলে এসেছে। মাথা ঝিমঝিম করছে। কোন কথা আসছেনা তার ঠোঁটের আগায়।
” সোনা মা, কথা বলছিসনা কেন! তোর কি তাহমিদকে পছন্দ নয়? তুই না চাইলে, আমি ওকে না করে দিব। ”
কুহু বুঝে নেয় তাহমিদ বাসায় সব জানিয়েছে। কিন্তু ও কিভাবে ফুপুকে হ্যাঁ বলবে!
” মাগো, আমরা সব সময়ই চেয়েছি তুমি এই বাড়িতে বউ হয়ে এস। সেই মত প্রথমবার এগিয়েছিলাম। দূর্ভাগ্যবশত সেদিন ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়নি। কিন্তু এবার সেই দূর্ভাগ্যই নিজে তোমাকে চেয়েছে। তাই আমরাও আর না করতে পারিনি। এবার শুধু তোমার মতামত নেয়া বাকি। ” কুহুকে চুপ করে থাকতে দেখে মুখ খোলেন সানাউল রাশেদিন।
ফুপার কথা শুনে কুহুর ভিষণ হাসি পায়। তাহমিদকে ফুপা দূর্ভাগ্য বলছে!
” সোনা মা, তোকে আমরা জোর করবনা। তুই শুধু হ্যাঁ অথবা না বল। ”
অনেকক্ষণ চুপচাপ থেকে কুহু ছোট্ট করে উত্তর দেয়, ” হুম। ”
ব্যাস আফরোজা নাজনীন বুঝে যান। তিনি কুহুকে জড়িয়ে ধরে কপালে পরম মমতায় চুম্বন করেন।
চলবে..