বামনের ঘরে চাঁদ পর্ব ৫

0
642

বামনের ঘরে চাঁদ

সাজিয়ানা মুনির

৫.

( কার্টেসি ছাড়া কপি নিষেধ )

ছুটির ঘণ্টা বাজছে। দল বেঁধে সবাই বের হচ্ছে। সারি সারি ছাত্রছাত্রীদের ভেতর চাঁদকে বের হতে দেখা গেল। বিষন্নতা ঘেরা তার চোখমুখ। কপাল কুঁচকে নিলো আষাঢ়। টংয়ের দোকান থেকে বেরিয়ে এলো। কলেজ গেটের সামনে এগিয়ে গেল। আষাঢ়কে এখানে দেখে খানিক চমকে উঠল চাঁদ। দশটায় ক্লাস শুরু হয়েছে তার, এখন বাজে দুপুর তিনটা। এতক্ষণ যাবত এখানেই বসে ছিল আষাঢ়। বিস্মিত চেহারায় বিমূঢ়তা এঁটে অবাক কন্ঠে জিজ্ঞেস করল চাঁদ,
‘ বাসায় যাননি? এই চার-পাঁচ ঘন্টা এখানে বসে ছিলেন?’
হাই টেনে শার্টের হাতা গোছাতে গোছাতে উত্তর দিলো আষাঢ়,
‘ আমাদের বাড়ি থেকে আজ কলেজের প্রথমদিন। সবসময় গাড়ি চড়ে চলাচল তোমার। রাস্তাঘাট ঠিকঠাক চেনা নেই। একা ছেড়ে যাই কি করে?’
চাঁদের স্বাভাবিক আওয়াজ,
‘ গরমে ঘেমে নেয়ে এতক্ষণ যাবৎ অপেক্ষা করার কোন প্রয়োজন ছিল না। ছুটির খানিকক্ষণ আগে আসলেই হতো।’
‘ কয়টায় ছুটি হয় আমার জানা ছিলনা।’
আষাঢ়ের মিন মিনিয়ে আওয়াজ। চাঁদ সন্দিহান দৃষ্টিতে তাকালো।দেড় বছর পড়িয়ে ছুটির সময়টা জানে না! কথাটা তার বিশ্বাস হলোনা। কেমন যেন মিথ্যা মিথ্যা গন্ধ পেল। গাঢ় দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। আষাঢ় দৃষ্টি লুকিয়ে অন্যদিকে তাকালো। মুখশ্রীতে অনমনা ভাব টেনে বলল,
‘ কি হয়েছে? তখন ক্লাস থেকে এমন মনম/রা হয়ে বের হলে কেন?’
আচমকা চাঁদের স্বাভাবিক মুখখানা কালো হয়ে এলো। কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ল। আমতা আমতা করে বলল,
‘ বিয়ের ব্যাপারটা বোধহয় ক্লাসে জানাজানি হয়েছে। কোন ক্ষ/তিকর ভাই/রাসের মত সবাই একপ্রকার এড়িয়ে চলছে আমায়। ‘
চাঁদের আঁধারে ঢাকা কালো মুখখানায় খানিক চেয়ে রইল আষাঢ়। ফোঁস করে শ্বাস ফেলল। গম্ভীরতা এঁটে বলল,
‘ এসব রোজ চলবে। পদেপদে অপমান হতে হবে। আমি সাবধান করেছিলাম। শুনলে না! এখনো সময় আছে, খুব একটা দেরি হয়নি। বাড়িতে ফিরে যাও।’
প্রচন্ডরকম বি/রক্ত হলো চাঁদ। ঝাঁ/জালো কন্ঠে উত্তর দিলো,
‘ সবসময় বাড়ি ফিরে যেতে বলেন কেন আপনি? আমি আপনার সাপোর্ট চাই। একটু মানসিক শান্তির প্রয়োজন আমার।’
‘ দারিদ্রতায় বড় হয়েছি, তাই এক্সপ্রেন্সিভ জিনিস একটু এড়িয়ে চলি।’
কথার পিঠে আষাঢ়ের এমন কাঠখোট্টা খোঁ/চানো সূচক উত্তর শুনে। আশাহত হলো চাঁদ। সেই সাথে প্রচন্ড রা/গ হলো। হনহন করে একা হাঁটতে শুরু করল। খানিক দূর এগিয়ে গেছে চাঁদ। আষাঢ় দ্রুত পা চালিয়ে সামনে যেয়ে দাঁড়াল। রিকশা থামিয়ে চাঁদকে উঠতে বলল। ক্রো/ধান্বিত চাঁদ কথা কানে তুলল না তার। পাশ কাটিয়ে যেতে চাইল। হাত চেপে থামিয়ে দিলো আষাঢ়। কাছে এসে ঝুঁকে পড়ল, নিমজ্জিত কন্ঠে বলল,
‘ আশেপাশে মানুষজন দেখছে। প্লিজ রিকশায় উঠো।’
অ/গ্নি ঝরা চাহনিতে আষাঢ়ের মুখপানে কয়েক পলক চেয়ে রিকশায় উঠে বসলো চাঁদ। মুখখানা তখনো গম্ভীর, ভার। খানিক দুরত্ব রেখে পাশে বসলো আষাঢ়। রিকশা ছাড়বে অমনি সামনে বড় প্রাইভেট কার থামল। গাড়ির কাঁচ নামিয়ে নেহাল মাথা বের করল। চাঁদের বড় ভাই রুবেলের বন্ধু নেহাল। সেই সুবাদে চাঁদ, আষাঢ় দুজনের পরিচিত। কলেজের সামনে চাঁদের সাথে আষাঢ়কে দেখে নেহাল বেশ তাচ্ছিল্য স্বরে বলল,
‘ শেষমেশ চাঁদের পাহারাদারের চাকরি নিলি নাকি? কত মাইনে দেয় রুবেল?’
ক্রো/ধে গাঁ রিরি করে উঠল আষাঢ়ের। বরাবরই কা/টাকা/টি সম্পর্ক তাদের। বড়লোক বাবার বি/গড়ে যাওয়া ছেলে নেহাল। রুবেলের সাথে বন্ধুত্বের পাশাপাশি পারিবারিক সম্পর্ক গড়তে ভীষণ কৌতূহলী। পুরো মফস্বলে নামকরা নামীদামী পরিবারের একটা রুবেলদের পরিবার। অর্থসম্পদ, ক্ষমতা রাজনৈতিক দিক থেকেও বেশ এগিয়ে। এমন পরিবারের সাথে কে না সম্পর্ক জুড়তে চাইবে। সেই প্রথম থেকে চাঁদের উপর নজর তার। ইনিয়েবিনিয়ে পটাতে চেষ্টা করছে। বাড়ি থেকে বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছিল চাঁদদের বাড়িতে। প্রত্যাখ্যান করেছে। প্রায়ই চাঁদের কলেজের সামনে এসে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করে নেহাল। অথচ চাঁদ! এটুকু মেয়ে আকাশচুম্বী ক/ঠোর ব্যক্তিত্ব তার। সেই সাথে ঝাঁ/ঝালো কথাবার্তা। কাউকে পাশ ঘেঁ/ষতে দেয়না। কতবার বাড়িতে ড্রপ করার অফার করেছে, প্রত্যেকবার নাকচ করেছে মেয়েটি। অথচ আষাঢ়ের সাথে নির্দ্বিধায় গা ঘেঁষে রিকশায় বসে। নেহাল বুঝে উঠতে পারেনা, এই মিডেল ক্লাস আষাঢ়ের ভেতর কি এমন আছে দুই ভাইবোন এত ভালো পায় কেন তাকে?

আষাঢ় ক্রো/ধ ঢালা কন্ঠে কিছু বলবে, তার পূর্বেই মুখ খুলল চাঁদ। ঝাঁ/জালো কন্ঠে বলল,
‘ মাইনে দিতে যাবে কেন? এটা উনার কর্তব্য। প্রত্যেক স্বামী তার স্ত্রী’র পাহারাদার।’
নেহালের বিস্ময় চোখমুখ। হত/ভম্ব স্বরে জিজ্ঞেস করল,
‘ মানে?’
চাঁদের স্বাভাবিক আওয়াজ,
‘ মানে উনি আমার স্বামী। কয়েকদিন আগে বিয়ে হয়েছে আমাদের। কেন আপনি জানতেন না? ভাই আপনাকে বলেনি? এরপর থেকে আমাকে আর ডি/স্টার্ব করবেন না। অন্যের বউ উত্ত্য/ক্তকারী পুরুষকে চরি/ত্রহীন বলে! জানেন নিশ্চয়ই?’
নেহাল হতভম্ব। চাঁদ রিকশা চালককে তাড়া দিয়ে বলল,
‘ মামা, রিকশা ছাড়েন।’
রিকশা চলতে শুরু করল। নেহালকে ছাড়িয়ে খানিক দূর এগিয়ে এলো। আষাঢ় চাঁদের মুখপানে তখনো হতভম্ব চেয়ে। মেয়ে নয়, যেন উ/ত্তপ্ত কোন অ/গ্নিশিখা সে। ভাপসা গরম পড়েছে। চলতি রিকশায় তার এলোমেলো কেশ উড়ছে। চোখেমুখে ভেসে থাকা তে/জ এখনো কিঞ্চিৎ কমেনি। রাগ দমাতে আপ্রাণ চেষ্টা করছে মেয়েটি।
নি/স্তরজ কন্ঠে ডাকল আষাঢ়। বলল,
‘তোমার কিছু বলার প্রয়োজন ছিলনা। ওকে উপযুক্ত জবাব আমি দিতে পারতাম।’
চাঁদের তে/জি কন্ঠের ঝাঁ/ঝালো উত্তর,
‘ আমার সামনে কেউ আপনাকে ছোট করে কিছু বলবে তা কোনদিন সহ্য করবো না। আপনি আমার কাছে ভীষণ সম্মানের।’
খানিকক্ষণ অপলক চেয়ে রইল আষাঢ়। চাঁদের মুখপানে তাকিয়ে গম্ভীর কন্ঠে আওড়াল,
‘ নেহাল রোজ আসে? ডিস্টা/র্ব করে?’
‘ হ্যাঁ’ চাঁদের ভাবনাহীন অকপট আওয়াজ।
‘ এরপর আবার আসলে আমাকে জানাবে।’
‘ কেন?’ বলে পাশ ফিরে তাকাতে থমকে গেল চাঁদ। আষাঢ়ের চোখেমুখে চাপা ক্রো/ধ। র/ক্তিম চাহনি তার।

সময় নদীর স্রোতের মত বহমান। এই স্রোতকে আটকানোর না কারো সাধ্য আছে, না কোন ক্ষমতা। আষাঢ় ভেবেছিল এই পরিবেশে মানিয়ে নিতে পারবে না চাঁদ। বি/রক্ত হয়ে সবকিছু ছেড়ে বাড়িতে চলে যাবে। কিন্তু তাকে ভুল প্রমাণ করে, আরো শক্তপোক্ত ভাবে গেড়ে বসেছে চাঁদ। তার জেদ, সংকল্পতে বরাবরই অটল সে। সমস্যা গুলোর বিকল্প সমাধান খুঁজে নিয়েছে। অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচতে হাত পাখার ব্যবহার করছে। ঝাল তরকারি খেতে শুরু করেছে। ব্লেন্ডারের বিকল্প শীল পাটায় বাটতে শিখেছে। কলেজের পর, বাড়ি ফিরে শাশুড়ীর সাথে রান্নাবান্নার কাজে হাত লাগাচ্ছে। সংসার সামলানো শিখছে। একটু একটু করে আষাঢ়ের শীতল শক্ত হৃদয়টা গলতে শুরু করেছে। সবকিছু মিলিয়ে চাঁদের উপর মুগ্ধ সে। যতবার মেয়েটির দিকে তাকায় একরাশ মুগ্ধতা ছেয়ে যায়। ধনীর দুলারি ভালোবাসার টানে আদৌ কি এভাবে মানিয়ে নিতে পারে! এইটুকু একটা মেয়ের ভালোবাসার এত জোর?

চাঁদের কলেজ জীবন শেষ হয়েছে। এইচএসসি’র পর এখন পুরোটা সময় বাড়িতে থাকছে। রেজাল্টের অপেক্ষা করছে আষাঢ়। রেজাল্ট পেলেই ভালো কোচিং সেন্টারে চাঁদকে ভর্তি করে দিবে।

দুপুর একটা। চারিদিকে গরমের প্রচন্ড উত্তা/প। মাথার উপর সূর্য। রাস্তাঘাট ফে/টে চৌচির। মালা বেগম বাড়ি ফিরেছে। অসুস্থ শরীর তাই আগেভাগে ছুটি নিয়ে চলে এসেছে। আসার পর থেকে বাহিরের পানির কল ছেড়ে বসে। প্রচন্ড মাথা ঘুরছে। গলগল করে বমি করে চলছে। কেমন জানো চোখমুখ উল্টে যাচ্ছে।শাশুড়ীর এমন অবস্থা দেখে ঘা/বড়ে গেল চাঁদ। অতিরিক্ত গরমে ভেতরে গরম আটকে গেল না তো চিন্তায় মাথা ভার। মালা বেগমের পাশে বসে মাথায় পানি ঢেলে দিচ্ছে। শান্ত করার চেষ্টা করছে। এক ফাঁকে আষাঢ়কে ফোন করে বাড়ি ফিরতে বলেছে। অনেকক্ষণ মাথায় পানি ঢালার পর মালা বেগম খানিক স্বস্তিবোধ অনুভব করলে, তাকে ঘরে নিয়ে যায় চাঁদ। মিনিট পাঁচেক পর বাড়িতে ফিরে আষাঢ়। মালা বেগমকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। প্রথমে মালা বেগম নাকচ করলেও। পরে আষাঢ়ের পিড়াপিড়িতে যেতে বা/ধ্য হয়।
এদিকে বেলা গড়িয়ে চারটা বাজছে। রাতের রান্নাবান্নার টুকটাক জোগাড় করে গুছিয়ে রাখছে চাঁদ। এখনো তেমন করে রান্নাবান্নায় পারদর্শী না সে। হালকা সহজ কিছু রান্না জানে। রান্না ঘরের কাজ গুছিয়ে, চালের উপর থেকে আমচুর নামাতে বাহিরে যেতেই থমকে গেল সে। বাড়ির চৌকাঠে তার বড় ভাবি পৃথা দাঁড়িয়ে। এতোদিন পর ভাবিকে দেখে চোখ ভরে এলো তার। ছুটে যেয়ে জাপ্টে ধরল ভাবিকে। কান্নায় ভে/ঙে পড়ল চাঁদ।

চাঁদের ঘরে বিছানায় বসে পৃথা। চোখ ঘুরিয়ে চারিপাশে দেখছে। ইট-সিমেন্টে গাঁথা টিনশেড বাড়ি। আশেপাশের বাড়িঘরের কারণে ঘর জুড়ে অনুজ্জ্বলতা ছেয়ে। আহামরি তেমন কিছু নেই ঘরে। বিছানাটাও নড়বড়ে। মাথার উপর থেমে থেমে ফ্যান ঘুরছে। চাঁদের পরনে সুতি তাঁতের জামা। এসব জামা তাদের বাড়ির কাজের লোকেরাও পরে না। দালান ঘরে এসির বাতাসে থেকে, রাজকন্যার মত বড় হওয়া মেয়েটার কিনা এই বে/হাল দশা! তাদের চাঁদের এমন অভাব-অনটন, নড়বড়ে সংসার হবে, কোনদিন দুঃস্বপ্নেও ভাবেনি সে। চোখজোড়া ভরে এলো জলে। ভা/ঙা কন্ঠে বলল চাঁদকে,
‘ এ কেমন জীবন বেছে নিলি চাঁদ? তোর এমন জীবন হবে দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি। এসব ছেড়ে আমার সাথে চল। বাবাকে, তোর ভাইজানকে, আমি বুঝিয়ে বলবো। ওরা ঠিক মানবে। তুই ক্ষমা চাইলে সব ঠিক হয়ে যাবে।’
গুটিসুটি মেরে চুপচাপ বসে ছিল চাঁদ। ভাবির কথায় দৃষ্টি উঁচিয়ে তাকালো। শিথিল স্বরে বলল,
‘ আমাকে আমার স্বামী সংসার ছাড়তে বলছ ভাবি! তুমি অন্যকারো কথায় তোমার স্বামী, সংসার ছাড়তে পারবে? ‘
পৃথা বিরক্ত হলো। উৎ/কণ্ঠা স্বরে বলল,
‘ কোন স্বামী সংসারের কথা বলছিস চাঁদ? এটা কোন সংসার হলো? এসব তোর যোগ্য! তোর সংসার হবে কোন বিত্তশালী ঘরে। যেখানে অঢেল ঐশ্বর্য থাকবে। চার-পাঁচজন কাজের লোক সবসময় তোর চারপাশে আনাগোনা করবে। এই অভাব দারিদ্রতা ভরা সংসার তোর জন্য না চাঁদ। কি কমতি আছে তোর? রূপ, সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ। যাকে এক পলক দেখার জন্য বাড়ির সামনে বড়বড় ঘরের ছেলেরা আনাগোনা করে। সেই তুই কিনা এমন দারিদ্র পরিবারে! এখন আবেগের বয়স তাই এসব ভালো লাগছে। বিবেক যখন জাগ্রত হবে এসব অ/সহ্য বি/রক্ত লাগবে।’
‘ তুমি একজন বিবেকবান মানুষ হয়ে এসব বলছ ভাবি? আমি এখানে সুখে আছি।’
তাচ্ছিল্য হাসলো পৃথা। বলল,
‘ কোন সুখের কথা বলছিস চাঁদ? আমার জানামতে আষাঢ় তোকে মেনে নেয়নি। উপেক্ষা করে। ভালোবাসেনা! এসব তোর জন্য না বোন। আমার সাথে বাড়ি চল।’
চাঁদ নড়েচড়ে শক্ত হয়ে বসলো এবার। কন্ঠে দৃঢ়তা এঁটে বলল,
‘ তুমি উনার উপেক্ষা দেখলে। কিন্তু এই উপেক্ষার পেছনে তার যত্ন করা, আগলে রাখাটা দেখলে না? সে আমাকে উপেক্ষা করে কারণ, সে নিজেকে আমার অযোগ্য ভাবে। এই কারণেই ভালোবাসতে দ্বিধাবোধ করছে। অনুভূতি এড়িয়ে চলে। একদিন আমি তার সব দ্বিধাবোধ দূর করে দিবো। ততদিন আমার একার ভালোবাসা যথেষ্ট। আমি যাবোনা ভাবি। এখন এটাই আমার বাড়ি।’
পৃথার চোখ থেকে অশ্রু ঝরলো। নিষ্প্রা/ণ কন্ঠে বিড়বিড় করে বলল,
‘ তুই পাগল হয়ে গেছিস চাঁদ। পাগল হয়ে গেছিস।’
ঠোঁট মেলে এক চিলতে হাসল চাঁদ। বলল, ‘ হয়তো!’
পৃথা চাঁদকে জাপ্টে ধরল। কান্নাভেজা স্বরে বলল, ‘ এইটুকু মেয়ে এই টানাপোড়েনের জীবন কি করে বয়ে বেড়াবি বোন।’
চাঁদ ফিসফিস করে বলল,’ তুমি শুধু দোয়া করিও ভাবি, আমি ঠিক পারবো।’
আষাঢ় দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে। এতক্ষণ সবকিছু শুনেছে। মাকে ডাক্তার দেখিয়ে ঘরের দিক আসতে, পৃথার গলার ভাঁজ পেয়ে থমকে গেছিল সে। ভেবেছিল পৃথা বুঝিয়ে শুনিয়ে চাঁদকে সাথে নিয়ে যাবে। চাঁদও নির্ভে/জাল চলে যাবে। আষাঢ়ের ঠোঁটের কোনে হাসির রেখা থাকলেও, অন্তরে নাখোশ ছিল। প্রচন্ডরকম ভয় ভীতি কাজ করছিল। এমন খুশিকে কি বলে? তাচ্ছিল্য? হয়তো।
পৃথা চাঁদ থেকে বিদায় নিয়ে ঘর ছেড়ে বের হতেই আষাঢ়ের মুখোমুখি হলো। কয়েক পলক তাকিয়ে কঠিন কন্ঠে বলল,
‘ চাঁদ অবুঝ। আপনি বুঝদার। চাঁদ শুধু্মাত্র আমার ননদ না, সন্তানের মত। হয়তো আপনার কোন বা/জে অতীত ছিল।কিন্তু সেই জের ধরে ওকে ক/ষ্ট দিলে এড়িয়ে চললে ভালো হবেনা।’
কথা শেষ করে অকপট পা চালিয়ে বেরিয়ে গেল পৃথা।

চলবে…..

( ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। অনেক দিন পর গল্প দিচ্ছি পেজের রিচ কম। গল্প পৌঁছালে রেসপন্স করবেন)

টাইপোগ্রাফি করেছে Tabassum Akter Ahona আপু❤️🌺

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here