#বাবার_ভালোবাসা।
পর্ব:২৪
লেখা: #রাইসার_আব্বু।
ডাক্তার কণা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে লেট হয়ে যাচ্ছে। তাড়াহুড়া করে অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে যায়। ভেতরে গিয়ে দেখে নির্মম ভাবে পিটিয়েছে। বিশেষ করে মাথায় ক্ষতটা বড়। অপারেশন করে ডাক্তার কণা বের হতেই দেখে এখনো রাইসা দাড়িয়ে আছে। রাইসাকে কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না রাজের অবস্থা বেশি ভালো না। অনেক ব্লাড গেছে। বাঁচার সম্ভাবনা কম। ছোট্ট মেয়েটাকে বিভাবে বুঝাবে। আর ভাবতে পারছে না কণা, মানুষ মানুষকে এভাবে পেটাতে পারে?
.
রাইসা ডাক্তারকে দেখেই বলল’ম্যাডাম বাবার অবস্থা কেমন? আমার বাবা আমার সাথে কথা বলবে তো?
.
হুম মামনি বলবে, তবে তোমার বাবার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করো। তিনি সব পারেন।
রাইসা ডাক্তারের কথা শুনে বুঝতে পারে তার বাবার অবস্থা বেশি ভালো না। রাইসা ডাক্তারকে বলল ‘ ম্যাডাম আমি বাবাই এর কাছে যেতে পারি?
:মামনী এখন তো অপারেশন হলো, বেডে নিয়ে আসলে যেয়ো!
:আচ্ছা ম্যাডাম।
: আচ্ছা মামনি তোমার বাবার সাথে আর কেই আসেনি?
:না আমিই এসেছি।
:ওহ্ আচ্ছা। তোমার মা নেই?
:হ্যাঁ। আছে তো।
:কোথায় তাহলে?
: আমার মা তো হসপিটালে। যাকে অপারেশন করলেন তিনিই আমার বাবাই তিনিই আমার মা। জানেন আমার বাবাই আমাকে অনেক অনেক ভালোবাসে। বাবাইকে তারা অনেক মেরেছে। আচ্ছা ম্যাডাম আমার বাবাই কথা বলবে তো আমার সাথে?
:ডাক্তার কণা কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না। বাঁচার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীন। আর একটি লেট করে নিয়ে আসলে হয়তো পথেই মারা যেত। আর এ ছোট বাচ্চাকেই কিভাবে বলে এসব। কণার মাথায় কাজ করছে না। এ ছাড়া চিকিৎসাও তো অনেক ব্যয়বহুল। এতো টাকা কে দিবে? হসপিটাল কতৃপক্ষ তো একদম বিনামূল্যে চিকিৎসা করাবে না।
কি হলো ম্যাডাম বলছেন না কেন আমার বাবাই তো বাঁচবে?
:হুম তোমার বাবাই এর কিছু হবে না।
:ধন্যবাদ ম্যাডাম। আপনি একটু বসবেন?
: হুম বসলাম।
: উম্মা এটা তোমার ফিস।
:কণা মুচকি হেসে তার রুমে চলে গেল।
বিকেল বেলা কণা যখন লাঞ্চ করবে এমন সময় রাইসার কথা মনে পড়ল। মেয়েটা কি খেয়েছে? আর খাবেই বা কেমন করে? এসব ভাবতে ভাবতে একজন নার্সকে পাঠালো রাইসার কাছে। নার্স যেন গিয়ে বলে, ম্যাডাম ডাকছে। নার্স গিয়ে দেখে রাইসা বেঞ্চ বসে আছে।
: এই যে বাবু তোমাকে ম্যাডাম ডাকছে।
: আচ্ছা আন্টি আপনি যান। আমি আসছি। নার্স চলে গেলে রাইসা গুটিগুটি পায়ে কনার রুমে গিয়ে সালাম দিল।
কণা সালামের উওর দিয়ে বললো’ তুমি খেয়েছো মামনি?
: না খায়নি।
:খাবে না?
:বাবার সাথে খাবো। আপনি জানেন না আমার বাবা আমাকে ছাড়া খায় না। কাল সন্ধ্যায় বাবা খেয়েছে। তারপর আর খায়নি। আমার বাবাইকে ওরা অনেক মেরেছে। অনেক।
কণা খেয়াল করল, মেয়েটা ঠিকমতো ক্ষুধায় কথা বলতে পারছে না। আর খেতেও চাচ্ছে না। আচ্ছা মামনি তুমি খেয়ে নাও। তোমার তো ক্ষুধা লাগছে ।
– আমার বাবারো ক্ষুধা লাগছে ডাক্তার ম্যাম।
– তুমি যদি না খাও তাহলে তোমার বাবার চিকিৎসা করবো না।
– না না আমি খাবো। কিন্তু আমার বাবাইতো খায়নি।
– তুমি খাও মামনি, তোমার বাবাইকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। খাওয়া লাগবে না তোমার বাবার।
:সত্যি তো?
:হ্যাঁ সত্যি।
: আচ্ছা তাহলে দেন। আমি খাচ্ছি।
রাইসা খাবার খাচ্ছে। কণা অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। একটা ছোট্ট মেয়ে এতটা বাবা প্রিয় হতে পারে তার অজানা ছিল।
: ডাক্তার ম্যাডাম আপনি খাবেন না?
: হ্যাঁ খাবো তো।
: তো খাচ্ছেন না কেন?
: খেতে মন চাচ্ছে না।
:আমি খাইয়ে দেয়?
: হু!
: আচ্ছা হা করেন।
কণা হা করে খাবার খাচ্ছে তারর কাছে মনে হচ্ছে অন্যরকম একটা ভালোবাসা। যে ভালোবাসা স্বগীয়। হয়তো এ ভালোবাসাকেও স্বগীয় বলা হয় যেখানে থাকে না কোন চাহিদা বা নোংরামী। খাওয়ানো শেষ করেই রাইসা আবারো বেঞ্চে গিয়ে বসলো। নার্সেরা রাজকে কেবিনে দিয়ে গেছে। রাইসা কেবিনে তার বাবার পাশে মৃদু মৃদু সুরে বলছে ‘বাবাই আমরা এ শহর ছেড়ে চলে যাবো। যেখানে কেউ থাকবে না তুমি আর আমি থাকবো। কেউ আর তোমাকে মারবে না বকবে না। তুমি সুস্থ হয়ে যাবে বাবাই। আচ্ছা বাবাই সরি তোমাকে রেখে খেয়ে ফেললাম। তুমি রাগ করো না কেমন। আচ্ছা বাবা তুমি থাকো আমি পানি খেয়ে আসছি। রাইসা যখন পানি খেতে যাবে যখন, তখন ডাক্তার কণার রুমে তার বাবাইকে নিয়ে একটা ডাক্তার কি যেন বলছে। রাইসা জানালার পর্দা সরিয়ে শুনতে চাইল কি বলে।
রাইসা স্পষ্ট শুনতে পেল একটা ডাক্তার,কণাকে বলছে’ মিস কণা অযথা চিকিৎসা করা হচ্ছে। লোকটা একে তো বাঁচবে না। যে ক্রিটিক্যাল অবস্থা তার উপর আবার ছোট্ট একটা বাচ্চা মেয়ে সাথে। আর পরিবারের কেউ নেই হসপিটালের বিলটা কে মিটাবে? আমরা চাচ্ছিলাম এম্বুলেন্সে করে আমাদের পাশের হসপিটালে পাঠিয়ে দিতে।
– কিন্তু মি: সিফাত।
: কোন কিন্তু না। হসপিটালের কথাও তো ভাবতে হবে। আর বাঁচার সম্ভাবনা থাকলেও একটা কথা ছিল। একদম সিরিয়াস অবস্থা। চব্বিশ ঘন্টা বাঁচে কি না সন্দেহ।
: তাই বলে আমাদের চেষ্টাটা তো করতে পারি।
:আপনি ও না। বাদ দেন তো এসব। বাসায় কখন যাবেন?
চলেন আপনাকে ড্রপ করে দিচ্ছি।
: ধন্যবাদ। আপনার তাড়া থাকলে আপনি যান। আমি একটু পর বের হচ্ছি।
: তাহলে আমিও একটু পর যায়।
: আমার জন্য আপনি কেন অপেক্ষা করবেন?
: আপনি চাইলে সারাজীবন অপেক্ষা করতে পারি।
: তাই বুঝি? আচ্ছা শুনেন এটা হসপিটাল। পার্ক নয়। আপনি আসেন। আমার একটু কাজ আছে। আর হ্যাঁ ধন্যবাদ আপনাকে।
: ওয়েলকাম দিলাম না। পাওনা রেখে দিলাম। পাওনা রেখে দিলে নাকি মানুষের মনে থাকে।
: তাই বুঝি?
:হ্যাঁ তাই। আচ্ছা আসি এবার। এই বলে ডা:সিফাত চলে যায়।
ডাক্তার সিফাতের কথা শুনে রাইসা চোখের পানি ধরে রাখতে পারে না। তার বাবা নাকি বাঁচবে না। তাদেরক নাকি হসপিটাল থেকে বের করে দিবে। রাইসা কি করবে কিছু বুঝতে পারছে না। তার যে বাবাকে বাঁচাতেই হবে। তাই দৌড়ে গিয়ে ডাক্তার কণার দু’পা ঝাপটে ধরল।
রাইসার এমন কান্ড দেখে কণা অবাক হয়ে যায়। কণা অবাক হয়ে বলে, কি হয়েছে মামনি পা ধরলে কেন? পা ছাড়ো। আর কি হয়েছে বলো তো।
– ম্যাডাম আপনার পা আমি ছাড়বো না। জানেন ম্যাডাম বাবাই ছাড়া আমার পৃথিবীতে আর কেউ নেই। বাবাই এর কিছু হলে আমি বাঁচবো না। বাবাই আমার অক্সিজেন ম্যাডাম। বাবাইকে হসপিটাল থেকে বের করে দিবেন না। আমি আপনাকে সব টাকা দিয়ে দিবো। আমি রাস্তায় রাস্তায় ফুল বিক্রি করে বাবার ওষুধের টাকা দিবো। তবুও বাবাইকে হসপিটার থেকে বের করে দিবেন না।
– কণা একটি রাইসার বুদ্ধি যাইয়ের জন্য বললো’ মামনি পা ছাড়ো। আর হ্যাঁ তুমি কি জানো তোমার বাবার চিকিৎসা করাতে প্রায় তিন লক্ষ টাকা লাগবে। এতো টাকা তুমি ফুল বিক্রি করে দিবে ক্যামনে।
– আচ্ছা শুনেছি কিডনী অনেক দাম। আর আমার তো কিডনী দু’টা একটা বাবার জন্য দিবো। তবুও আমার বাবাইকে চিকিৎসা করান। আমি বাবাইকে ছাড়া বাঁচবো না। আমার নিঃশ্বাস আমার বাবা। জানেন সবাই শুধু আমার বাবাইকে কষ্টই দিছে। আমার মা আমাকে আর আমার অসুস্থ বাবাইকে রেখে এক পঁচা আঙ্কেলের কাছে চলে গেছে। আমার বাবাই এখনো মায়ের ছবি বুকে নিয়ে কাঁদে। আমার বাবাকে আমি সুখী করতে গিয়ে বাবাইকে মেরে ফেলতে নিয়ে গিয়েছিলাম। ওরা অনেক মারছে বাবাইকে। ম্যাডাম আমার বাবাইকে কোথাও পাঠাবেন না। বলেন। কথা দেন।, আমার বাবাইকে সুস্থ করে তুলবেন। টাকা আমি দিবো। দরকার হলে আমার কিডনী নিয়ে নিবেন। কি করবো বাবাই মরে গেলে। আমি তো এমনিতেই মরে যাবো।
– কণা বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে। মুখ দিয়ে কোন কথা আসছে না। পা থেকে রাইসাকে তুলে বুকের সাথে শক্ত করে ঝাপটে ধরে বলে ‘মারে তোর বাবাইকে সুস্থ করার দায়িত্ব নিচ্ছি। আল্লাহ যদি রহম করে। প্লিজ তুই আর কাঁদিস না। ফিস দিবি বলছিলি না? তাহলে আমার দু’গালে পাপ্পি দি এতেই হবে।
:সত্যি বলছো? আমার বাবাই ভালো হবে? আর তোমরা আমার বাবার চিকিৎসা করাবে?
:হুম। আল্লাহ চাইলে তোমার বাবা সুস্থ হয়ে যাবে ।
:এই নাও, উম্মাহ।
:হয়নি এবার হাসো।
:কণার কথা শুনে রাইসা হেসে দেয়। মনে হচ্ছে ছোট্ট মেয়েটা বুকে সমগ্র কষ্ট চাঁপা দিয়ে ভূবন ভুলানো হাসি দিল। হাসিটা ঠিক, মেঘের কুলে রোদের মতো লাগছে। মনে হচ্ছে, চোখের ভেতর থেকে যে হিরার কণাগুলো ঝরে পড়েছে,সে গুলো ঝিলিক দিচ্ছে।
-এদিকে, ডাক্তার কণা রাত্রে আর বাসায় না গিয়ে বারবার রাজের পালর্স ঠিকআছে কিনা। স্যালাইন পুশ হচ্ছে কি না এসব দেখছে। এদিকে প্রায় ১৪ ঘন্টা চলে গেছে রাজের জ্ঞান ফিরছে না। ডাক্তারি সাইন্স বলছে, বাঁচার সম্ভাবনা ১০০/২০। ছোট্ট মেয়েটাকে এ কথা কিভাবে বলবে? চব্বিশ ঘন্টার মাঝে জ্ঞান না ফিরলে আর কোনদিন জ্ঞান ফিরবে না। সময় অতিবাহিত হচ্ছে রাজের বাঁচার আশা ক্ষীণ হয়ে আসছে। দেখতে দেখতে ২৩ ঘন্টা অভার হয়ে যাচ্ছে। অবস্থা একদম খারাপ স্যালাইন ঠিকমতো পুশ হচ্ছে না। আশা ছেড়ে দেওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই। ছোট্ট রাইসা বাবার মায়ের কাছে বসে কাঁদছে। রাইসাকে কি বলবে, ভেবে পাচ্ছে না কণা।
এমন সময় ডাক্তার সিফাত এসে বললো ‘ ডাক্তার কণা আপনাকে না বলছিলাম বৃথা চেষ্টা করছেন। টাকাগুলো অযথা নষ্ট হলো। আমার এ সব বিষয়ে অনেক আগে থেকে এক্সপিয়েরেন্স আছে। আপনি দেইখেন, ফেরার চান্স ০ পারসেন্ট।
– মিঃ সিফাত আপনি যান তো।
:হুম যাচ্ছি। তবে আপনার দরদ রোগীর প্রতি বেশি দেখে ভয় লাগছে। কারণ আপনি তো আমার।
:চুপ করেন তো।
:আচ্ছা মামনি বাবাই কি সত্যি বাঁচবে না?
কণা কোন কথা বলতে পারছে না। কণার চোখের কার্ণিশ বেয়ে যখনি একফোটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ল। তখন রাইসার বুঝতে বাকি রইল না কি হচ্ছে। আচ্ছা ম্যাডাম হসপিটালে কোন খালি রুম আছে?
– হ্যাঁ আছে।
– রাইসা কিছু না বলে, ওর বাবার কপালে একটা চুমু দিয়ে চলে গেল। সুন্দর করে ওযু করে এসে দেখল একটা কমন রুম। সেখানে একটু পরিষ্কার করে। শীতের মাঝেই ঠান্ডা ফ্লরে দাঁড়িয়ে দু’রাকাত নামায পড়ল। ছোটবেলা থেকেই রাজ রাইসাকে নামাযের নিয়ম-কানন শিখিয়েছে। রাইসা দু’রাকাত নফল নামায শেষ করে মোনাজাতে বসার আগে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে রাত তিনটা ছুঁই ছুঁই! রাইসা ছোট্ট দু’খানা হাত উপরের দিকে তুলে বলতে লাগলো’ ইয়া রহমান -ইয়া রাহিমতোমার কাছে ফকিরে যেমন ভিক্ষা চাই তেমন ভাবে দু’খানা হাত তুলেছি। তুমি কি ফিরিয়ে দিতে পারবে? যার কেউ নেই তার তো তুমি আছো। আমার না কেউ নেই। জানো আমার মা নেই। বাবা ছিল তাকে তুমি নিতে চাচ্ছো। ও আল্লাহ আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। তোমার রাসুলকেও অনেক ভালোবাসি। তারপর আমার বাবাকে। ও আল্লাহ বাবাকে ছাড়া আমি বাঁচবো না। আচ্ছা তুমি কি শুনতে পাচ্ছো? দেখ আমি কাঁদছি। তুমি না তোমার বান্দীকে অনেক ভালোবাসো । তুমি না তোমার বান্দাদের কথা শুনার জন্য ঘুমাও না। ও আল্লাহ রহম করো। ছোট্ট মানুষ বলে, কেউ আমার কথা শুনে না তুমিও কি শুনবে না? আল্লাহ তুমি আমার বাবাকে সুস্থ করে দাও। বাবাই বলেছে, বাবাই যতটা আমাকে ভালোবাসে তার চেয়ে লক্ষ কোটিগুণ বেশি তুমি নাকি আমায় ভালোবাসো। ও আল্লাহ আমার বাবাই আমার কান্না দেখে কেঁদে ফেলে। আমাকে বুকে জড়িয়ে নেয়। তুমি তো বাবাই এর চেয়ে বেশি ভালোবাসো। তাহলে আমার বাবাইকে সুস্থ করে দাও। বাবাইকে ছাড়া আমি বাঁচবো না। ও আল্লাহ দেখো এখন অনেকেই ঘুমাচ্ছে। কিন্তু আমি ঘুমায়নি। জানো আল্লাহ আমি দুনিয়ার কারো কাছে ভিক্ষা চায়নি। আমি জানি তুমি দিতে পারবে। আমার বাবার প্রাণভিক্ষা দাও। নয়তো বাবার সাথে আমাকেও নিয়ে নাও। নিবে আমাকে? আমি কি খুব পঁচা? জানো সবাই আমাকে মারে। দেখ গালটা এখনো ফুলে আছে। বাবাই ছাড়া কেউ আমাকে আদর করে না। তুমি বাবাইকে নিয়ো না কেমন? আমি কিন্তু দেখ কাঁদছি। তুমি ভিক্ষা দিবে না? ও আল্লাহ আমার বাবাইকে ভিক্ষা চাই। এসব বলে রাইসা কান্না করতে লাগে। চোখের পানি গাল বেয়ে ফ্লরে টপটপ করে পড়ছে। মোনাজাত শেষ করে রাইসা যখন পিছন দিকে তাকায় তখন দেখতে পায় ডাক্তার কণা, কাঁদছে। কি হলো মামনি কাঁদছো কেন?
– তোমার কান্না শুনে মা। তোমার মতো ফেরেশতার ডাক আল্লাহ কবুল না করে পারে। তোমার বাবার জ্ঞান ফিরেছে। আশা করি খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবে।
-রাইসা। আলহামদুলিল্লাহ্ বলে দৌড়ে চলে যায় রাজের কাছে। রাজকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগে। চোখের পানিতে রাজের বুক ভেসে যায়। রাজের চোখ বেয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে। কণা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বাবা মেয়ের কেমেস্টি দেখছে। এমন সময় মৌ দৌড়ে রুমে এসে বলে ‘ আমার রাজের তো কিছু হয়নি? ও ডাক্তার আমার রাজের কি হয়েছিল।
– রাইসা মৌকে দেখেই বলতে লাগল’ কি চান? আমরা বেঁচে আছি না মরে আছি দেখতে আসছেন? আপনি চলে যান। আপনার মুখটা দেখতে চাই না। আপনি প্রতারক। এই যে ডাক্তার আন্টি উনাকে বের করে দেন। বাবা উনাকে দেখলে আরো অসুস্থ হয়ে যাবে।
চলবে”””’