#বকুল
#লেখনীতে_আফসানা_মিমি
|| অন্তিম পর্ব ||
সাত বছর পর ,
হৃদয়পুর কলেজের মাঠে আজ শত শত মানুষের গুনজন শোনা যাচ্ছে । বিশাল বড় কলেজ যা বছর ছয়েকের মধ্যেই বেশ নামকরা হয়ে উঠেছে । আজ কলেজের প্রধান শিক্ষিকাকে সম্মান প্রদান করা হবে যে কিনা খুবই অল্প বয়সে অনেক সফলতা অর্জন করেছে ।
স্টেজে আজ বাহারি রংয়ের ফুলের সমোরহ । ফুলের সুগন্ধিতে পুরো কলেজ মো মো করছে । ছোট বাচ্চারা নতুন পোশাক পড়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে প্রধান শিক্ষিকাকে স্বাগতম জানানোর জন্য ।
মঞ্চে উপস্থাপনায় নিয়োজিত একজোড়া তরুণ-তরুণী । কোর্ট পরিহিত তরুণটি আর তরুণীটি শুভ্র রংয়ের সুতি শাড়ি , মাথায় খোঁপা করা তার মধ্যে পাঁচটি সাদা-হলুদ গোলাপ । উপস্থাপক তরুণ- তরুণীর বলা প্রত্যেকটা কথায় আলাদা মাধুর্য বিদ্যমান উপস্থিত দর্শকদের হৃদয়ের গভীরে প্রবেশ করছে এক একটি কথা ।
‘ রহিয়া রহিয়া বিপুল মাঠের ‘পরে
নব তৃণদলে বাদলের ছায়া পড়ে।
এসেছে এসেছে এই কথা বলে প্রাণ,
এসেছে এসেছে উঠিতেছে এই গান,
নয়নে এসেছে, হৃদয়ে এসেছে ধেয়ে।
আবার আষাঢ় এসেছে আকাশ ছেয়ে।
আস্সালামু আলাইকুম সম্মানিত উপস্থিতিগণ । আষাঢ়ের শেষ দিবসে হাজারো বকুলফুলের শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের অনুষ্ঠান শুরু করছি আমি রাই ।
তরুণীটির এতটুকু বলার পর তরুন বলা শুরু করে ,
‘ আমি ফারদিন। হৃদয়পুরে অলিতে গলিতে গড়ে উঠুক হাজারো প্রতিভা , যেন কোন মেয়েদের বরখাস্ত হতে না হয় কোথাও । সুধীগন , আজকের এই সম্মাননা প্রদানের অনুষ্ঠানে আপনাদের স্বাগতম । আজ বাংলা ২৯ এ শ্রাবণ ১৪২৮ বঙ্গাব্দ । হৃদয়পুর কলেজের বিশেষ দিন । উপস্থিত সকল অভিভাবক , শিক্ষার্থী এবং প্রাণপ্রিয় শিক্ষকদের জানেই অঢেল ভালোবাসা । আর কিছুক্ষণের মধ্যে আমাদের প্রধান শিক্ষিকা উপস্থিত হবেন । ‘ এতটুকু বলে তরুনটি থেমে যায় ।
একপাশে লাল পাড়ের সাদা শাড়ি পরিহিত মেয়েরা সারিবেঁধে দাঁড়িয়ে আছে তো অপর পাশে লাল পাঞ্জাবি পরিহিত ছেলারা । সকলের হাতে রজনীগন্ধা ও গোলাপের স্টিক । সারির প্রথমে যে আছে তার হাতে গোলাপের বড় এক বুকি । অপেক্ষা করছে প্রধান শিক্ষিকার ।
অবশেষে কাঙ্ক্ষিত সময় চলে আসল । প্রধান শিক্ষিকার আগমনে চারদিকে আলোড়ন সৃষ্টি হলো । মাইকে উপস্থাপকদের কথা শোনা যাচ্ছে ,
‘ প্রিয় সুধীগন , এইমাত্র আমাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছেন আমাদের প্রিয় প্রধান শিক্ষিকা মিসেস বকুল আহমেদ । সকলে করতালির মাধ্যমে স্বাগত জানাবো প্রধান শিক্ষিকাকে ।’
হৃদয়পুরের কলেজের মাঠে উপস্থিত হবার সাথে সাথেই ফুলের সাথে স্বাগত জানানো হচ্ছে আমাকে । আজ আমি খুব খুশি । জীবনের সার্থকতা পূরণ হয়েছে আজ । আর এসবকিছু সম্ভব হয়েছে আমার শ্বশুর শ্বাশুড়ির অক্লান্ত পরিশ্রম আর স্বামীর ভরসার কারনে । হৃদয়পুরে আসাতে কেউ দ্বিমত পোষণ করেনি আমার স্বপ্ন ছিল হৃদয়পুরে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেয়া যা আজ সার্থক হয়েছে । শাড়ি পাঞ্জাবি পরিহিত ছেলে মেয়েদের পেরিয়ে এবার ছোট ছোট বাচ্চারা হাতে হাত ধরে ” স্বাগতম প্রধান শিক্ষিকাকে স্বাগতম” বলে কলধ্বনি উচ্চস্বরে আমাকে স্টেজ পর্যন্ত পৌঁছাতে সাহায্য করলো।
কলেজের সভাপতি , চেয়ারম্যান আরো সম্মানিত অতিথিদের বক্তব্যের পর আমাকে আহ্বান জানালেন।
আসসালামু আলাইকুম। আমি বকুল আহমেদ। অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষিকা। আজ আমি খুবই আনন্দিত এই অবস্থানে এসে। শিক্ষকতা করা আমার স্বপ্ন ছিল। নিজের অক্লান্ত পরিশ্রম আর পরিবারের সাপোর্টে আজ আমি এখানে। আপনাদের ভালবাসা আর দোয়ায় হয়ে উঠেছি হৃদয়পুরের কলেজের প্রধান শিক্ষিকা। ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি হৃদয়পুরের চেয়ারম্যান , কাউন্সিলর , অত্র কলেজের সভাপতি এবং শিক্ষকদের । এই হৃদয়পুর থেকেই আমার জীবনের সূচনা তাইতো শত বাধা বিপত্তি পেরিয়ে এই হৃদয়পুরেই আমার ঠিকানা হয়ে গেছে ।
একটা সময় ছিল যখন এই হৃদয়পুর থেকে আমাকে মিথ্যা অপবাদ দেয়া হয়েছিল লোক লজ্জার ভয়ে সেদিন বিদায় নিতে হয়েছিল হৃদয়পুর থেকে । অসংখ্য ধন্যবাদ তাদের যাদের জন্য আমি আমার জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান মানুষটাকে পেয়েছি । আমার স্বামী মিস্টার সানিম ইয়াসার । সর্বদা পাশে পেয়েছি আর পাবোও ।
ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যেকিছু বলতে চাই , বিদ্যা খুবই মূল্যবান সম্পদ । কিন্তু চরিত্র বিদ্যার চেয়েও মূল্যবান । মহাবিদ্বান অথচ চরিত্রহীন ব্যক্তিকে কেউ শ্রদ্ধা করে না । হৃদয়পুরে আসার আগে আমার চরিত্র সম্পর্কে ধারণা পরিবর্তন করেছি আর তার জন্য অনেক বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হয়েছি । তাই আজ আমি বলবো সবসময় সৎ পথে চলবে দেখবে কেউ তোমাদের নীচু করতে পারবেনা । আজকের দেয়া এই সম্মাননা আমি সাদরে গ্রহণ করলাম।
—————————-
সমস্ত আনুষ্ঠানিকতা সমাপ্ত করতে করতে রাত হয়ে গেল । হৃদয়পুরে রিসোর্টের পাশেই বাসা আমাদের । কলেজে সানিম গিয়েছিল কিন্তু পরে চলে আসছে । সদর দরজা নায়ক চাচা খুলে দিয়ে কপালে হাত রেখে স্যালুট জানালেন । মুচকি হেসে ইশারায় জিজ্ঞেস করলাম বাড়ির সবার কথা জিজ্ঞেস করাতে উওর দিলেন সবাই উপরে আছেন যার যার ঘরে । শ্বশুর শ্বাশুড়ি গ্রামে আছেন কোন এক কাজে ।
মাথার হিজারপিন খুলতে খুলতে উপরে চলে গেলাম।
‘ আম্মুনি ‘ বলে ছোট ছোট পা ফেলে দৌড়ে আসছে আমার ছেলে আরহাম । দুহাঁটু ফেলে বসে পরম আদরে বুকে টেনে নিলাম বাবাটাকে । আরহামের বয়স এখন তিন বছর । ওর আদো আদো আম্মুনি আর বাবা ডাক শুনে কলিজা ঠান্ডা হয়ে যায় । সামনে তাকিয়ে দেখি কেক হাতে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছেন আমার সুদর্শন পুরুষটি । কাছে এসে গভীরভাবে দুজনকেই জড়িয়ে ধরলেন মিনিট পাঁচেক । কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বললেন ,
‘ অভিনন্দন আমার পেত্নি বউ । জীবনে আরো সাফল্যের চরম শিখরে পৌছুতে পারো এই দোয়া করি । ‘ বলেই কপালে ঠোঁট ছুঁয়ালেন । আরহামের খিল খিল করে হাসির আওয়াজে তাকিয়ে দেখি আমার জন্য আনা কেক এখন তার দুহাতের মুঠোয় । আরহামের এমন দুষ্টু মিষ্টি কান্ড দেখে ফিক করে হেসে উঠলাম আমরা । সানিমের হাতের কেক নীচে রেখে আরহামের দুহাত থেকে উভয়ে কেক খেয়ে নিলাম । আমাদের কান্ড দেখে দুষ্টু আরহাম খিলখিল করে হেসে উঠলো ।
রাত বারোটা বাজে । আরহামকে ঘুম পাড়িয়ে বারান্দায় এসে দাঁড়ালাম । আজ আমি পরিপূর্ণ । সানিমের মত একজন কেয়ারিং স্বামী পেয়েছি । মা-বাবার মত শ্বশুর শ্বাশুড়ির পেয়েছি । মনিমা মানে আমার মা পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন আজ পাঁচ বছর । মরনঘাতক ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে আমাকে এতিম করে চলে গেছেন । চোখ বন্ধ করে সাত বছর আগের কথা চিন্তা করছি ।
সাত বছর আগে আমার বাচা মরা নিয়ে সংশয়ে ছিল সবাই । অজ্ঞান হবার পর সানিমের বুকে ঢলে পড়ি । হাজারবার ডাকার পরও রেসপন্স না পাওয়াতে ইমারজেন্সিতে হাসপাতালে ভর্তি করান । দীর্ঘ দুইদিন পর যখন আমার জ্ঞান আসে তখে সানিমকে জীর্ণশীর্ণ অবস্থায় দেখতে পাই । চোখের নীচে কালো দাগ , মাথার চুল উসকোখুসকো অবস্থায় । সেই একই পাঞ্জাবি পড়ে আছে এখনও । হাতের ইশারায় কাছে ডাকতেই ঝটপট কাছে এসে আমার আগেই বলতে শুরু করলেন ,
‘ দেখো বকুল , আমাকে বলেও লাভ নেই আমি তোমাকে ছেড়ে এক পাও নড়বোনা । তুমি জানো , কতটা ভয় পেয়েছি আমি ? আমি তোমার জীবনে আসার পর থেকেই একটা না একটা বিপদ আসছেই তাইতো তোমার থেকে আর দূরে যাবোনা আমি যাই হোক না কেন । অনেক ভালোবাসি বকুল অনেক ভালোবাসি ।’
এতক্ষণ আমাকে জাপটে ধরে কথাগুলো বলছিলেন উনি । চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে আমার । এতটা ভালোবাসার যোগ্য তো আমি ! আস্তে করে সানিমের কানে কানে বললাম ,
‘ এই মুহূর্তে না খেলে আর ফ্রেস না হলে কাছে আসতে দিবোনা কিন্তু । আপনার শরীর থেকে গোরব পঁচা গন্ধ বের হচ্ছে । প্লিজ সানিম ফ্রেস হয়ে নিন নয়তো আমি বমি করে দিবো ওয়াক ।’
আমার কথা শুনে ভ্রু কুঁচকে সানিম কতক্ষণ তাকিয়ে থেকে নিজের শরীরের গন্ধ নিলেন । চেহারার প্রতিক্রিয়া দেখে হাসি আটকাতে পারলাম না হা হা করে হেসে দিলাম । আমার হাসির শব্দে পরিবারের সকলে হাজির হলেন । উদয় ভাইয়া সানিমের দিকে একটা শপিং ব্যাগ এগিয়ে দিতে দিতে বললেন ,
‘ কি হয়েছে বকুল , মাথায় আঘাত পেয়ে কি পাগল হয়ে গিয়েছ এভাবে হাসছো যে ? ‘
আমি কিছু বলবো তার আগেই সানিম বলে উঠলো ,
‘ বুঝলি উদয় , দশদিন গোসল না করলেও এই সানিম ইয়াসারের শরীর থেকে মাশকে আম্বারের সুগন্ধি বের হবে কিন্তু কিছু মেয়েলোক আছে যারা মাশকে আম্বারই চিনে না আর উল্টা পাল্টা বকে ।’ কথাটা বলেই বাঁকা হেসে ফ্রেস হতে চলে গেলেন । আর আমি বোকার মত হা করে তাকিয়ে রইলাম তাঁর যাওয়ার পানে ।
একে একে সকলের সাথে কথা বলছি । একটু আগে ডাক্তার এসে দেখে গেছেন । কাল বাড়ি যেতে পারবো । ক্ষতটা বেশি গভীর না তাই এক সপ্তাহ বেড রেস্ট থাকলেই হবে । মা আমার কাছে বসে বিলাপের সুরে বলতে শুরু করলেন ,
‘ বকুল , মা আমার এতদিন পর তোকে পেয়ে যা বাঁচার আশা রেখেছিলাম কাল তোকে না পেয়ে সেই আশাও মরে গিয়েছিল । কিভাবে বাঁচতাম বল তোকে ছাড়া ? আল্লাহ্ তায়ালার কাছে হাজার হাজার শুকরিয়া যে তুই সহি সালামতে আছিস । ‘
‘ হয়েছে হাসি তোর বিলাপ পরে কর দেখি তো আমার মেয়েটার সাথে কথা বলতে দে । ‘
মাকে সরিয়ে শ্বশুর আব্বু পাশে বসে বলতে শুরু করলেন ,
‘ মারে তোকে ছাড়া আমরা নিঃস্ব । সামনে থেকে সাবধানে চলাফেরা করবি । ‘
বাবার কথা শুনে মাথাটাকে কাত করে সম্মতি জানালাম ।
দুইদিন পর হাসপাতাল থেকে বাসায় চলে আসি । আর আসার সাথে সাথেই আবারও ঘরোয়া ভাবে আমাদের বিয়ে সম্পন্ন হয় । ডাক্তার বেড রেস্টে থাকতে বলেছে বিধায় যে একেবারে বেড থেকে উঠা যাবেনা তা নয় কিন্তু আমি আজ দুদিন যাবত বিছানায় শুয়ে আছি । খাওয়া দাওয়া , ঘুম ,বিশ্রাম সব এখানেই । হাছারবার বলেও সানিম দা ঘার ত্যাড়া মাস্টারের কথাকে এদিকসেদিক কেও নিতে পারেনি ।
রাত বারোটায় মুখ ফুলিয়ে বসে আছি বিছানায় । এমন জীবনযাপন সহ্য করার মতো না । এই নিয়ে বিশ বারের মত সানিম আমাকে ফললো ঘুমাতে কিন্তু আমি এককথায় অটল ঘুমাব না । আচমকা কোলে তুলে নেয়াতে ভয়ে উনার গলায় জরিয়ে ধরি ।
‘ কি ম্যাডাম, ভয় পেয়েছেন বুঝি ? ঘুম যেহেতু আসছেনা তাই চলেন একসাথে চন্দ্রবিলাস করি । ‘
আমিও মুখ বাঁকিয়ে উনার গলা আরো শক্ত করে ধরলাম । ছাদে দোলনায় নামিয়ে দিয়ে আমার কুলে মাথা রেখে শুয়ে পড়লেন উনি। আমিও পরম আদরে উনার চুলে বিলি কেঁটে দিচ্ছি ।
‘ সানিম ‘
‘ হু ‘
‘ভালোবাসি আপনাকে ।’
এই কথাই যথেষ্ট ছিল উনাকে চমকে দেয়ার । লাফ দিয়ে উঠে বসে পড়লেন আর বললেন ,
‘ বকুলফুল , কি বললে মাত্র । আবার বলতো !’
লজ্জায় মাথা নত করে ফেললাম কারন এখন তার চোখে চোখ রাখতে পারবোনা । গভীরভাবে জড়িয়ে ধরলেনামায় আর বললেন ,
‘ আমিও খুব ভালোবাসি বকুলফুল ।’
অতীতের কথা চিন্তা করতে করতে কতটুকু সময় পেরিয়ে গিয়েছে জানা নেই । পেটে কারোর হাতের ছোঁয়া পেয়ে বাস্তবে ফিরে এলাম ।
‘ কি করছো বকুলফুল ?’
ঘারে নাক ঘসতে ঘসতে প্রশ্ন করলেন সানিম
‘ কিছুনা আগের কথা চিন্তা করছি ।’
আমাকে সামনের দিকে ফিরিয়ে দুইবাহু ধরে আবার বলতে শুরু করলেন,
‘তোমাকে না হাজারবার বারন করেছি , অতীত মানেই অতীত সেটাকে আকরে ধরে রাখলে বাঁচতে পারবেনা । বর্তমান দেখো অতীত থেকেই শিক্ষা নাও ।’
‘ তোমার ফ্লাইট কখন ?’
একথা শোনার পর বিরক্ত হলেন আর সাথে সাথে আমার গালে কুটুস করে কামড় বসিয়ে দিলেন ।
সানিম এখন বাবার অফিসের দেখাশোনার পাশাপাশি নিজের একটা ফ্যাশন আর্টের উপর বিজনেস দাড় করিয়েছেন বিদেশে । মাসে পনেরদিন আমাদের সাথে থাকে আর পনেরদিন বাহিরে । প্রতিবারই যাওয়ার সময় হলে মুখটাকে পেঁচার মত করে রাখে । রাফি ভাইয়া আর মিরা আপুর বিয়ে হয়েছে দুই বছর তারা এখন সুখেই আছেন । বিনা আপু মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করেন । আর উদয় ভাইয়া আপাতত হৃদয়পুরেই আছেন কোন এক প্রেয়সীর পেছনে ছুটছেন ।
আমাদের বাড়ি থেকে হৃদয়পুরের সেই পাহাড়টা দেখা যায় । এখানে অসার পর সর্বপ্রথম আমরা ঐ পাহাড়ে গিয়েছি অনেক স্মৃতি আছে আমাদের সেখানের ।
একসাথে লেপ্টে বসে আছি সানিমের পাশে । একটু পর পর উনি একবার আমার হাতে তো একবার কপালে ঠোঁট ছুঁয়াচ্ছেন । ঘরে দুষ্টু আরহাম আরামে ঘুমাচ্ছে । আমার জীবনের সব কিছুই এই দুজনকে ঘিরে । আজীবন আমার এই সুদর্শন পুরুষটির পাশে এভাবেই থাকতে চাই ভালোবাসার বন্ধনে ।
সমাপ্ত