প্রেম পিয়াসী পর্ব ৫

0
699

#প্রেম_পিয়াসী ❤️
#লেখিকা_মুহতারিযাহ্_মৌমিতা
#পর্ব_____৫.

রাদ আয়েসি ভঙ্গিতে পায়ের উপর পা তুলে বসলো৷ মূলত এটাই তাই বসার স্টাইল। সোফায় পিঠ ঠেকিয়ে চায়ের কাপটা হাতে তুলে নিলো। তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে চায়ের লালচে রঙটা পরখ করে তবেই চুমুক দিলো। তার ভাব ভঙ্গিমা এমন যেন, তাকে এখানে চায়ের স্বাদ টেস্ট করতে ডাকা হয়েছে। তার সামনে গম্ভীর মুখ করে বসে আছেন খলিলুল্লাহ সাহেব। মানে,ইলহামের মামা। পাশেই মিসেস জোহরা। মনে মনে একরাশ তিক্ত রাগ চেপে দাঁত কামড়ে বসে আছেন। তার মুখের বুলি ভ-য়া-ন-ক। ইলহাম খুব ভালো জানে। তিনি কথা দিয়েই মানুষকে খু//ন করতে পারেন। এমন কাজ জীবনে অনেক বার করেছেন তিনি। আর প্রত্যেকবারই সেটা ইলহামের সাথে ঘটিয়েছেন। কিন্তু রাদের সামনে উল্টোপাল্টা কিছু বলা মানেই নিজের বি/প/দ নিজে ডেকে আনা!

—-“আমার কোনো চাওয়া নেই, রাদ। তোমায় নাম ধরেই বললাম। তুমি সম্পর্কে আমার ছেলের বয়সী হবে। দেখো বাবা, আমি সামান্য ব্যবসায়ী মানুষ। বলতে গেলে দিন আনি দিন খাই। আমার এতো সাহস বা সামর্থ্য নেই যে আমি তোমার সাথে কোনোরূপ পাঙ্গায় জড়াবো। তাই আমি একজন বাবা হয়ে তোমার কাছে অনুরোধ করবো, আমার মেয়েটাকে আমার কাছে ফিরিয়ে দাও। আমি শুধু আমার মেয়েকে চাই। আর কিচ্ছু না।”

রাদ পূণরায় চায়ে চুমুক দিতে নিয়ে ফিক করে হেসে উঠলো। যেন, খলিলুল্লাহ সাহেব তাকে কোনো মজার কথা শুনিয়েছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে না হাসলে অনেক বড় অপরাধও হতে পারে।

রাদকে হেসে পরতে দেখে অপমানে শরীরে কাটা দিয়ে উঠলো খলিলুল্লাহ সাহেবের। হাসছে কেন ছেলেটা? সে নিশ্চয়ই এমন কোনো কথা বলেনি যার দরুন তাকে হাসতে হবে। তবে কি সে তাকে তাচ্ছিল্য করে হাসলো?

কথাটা ভাবতেই কপালে ভাজ পড়লো খলিলুল্লাহ সাহেবের। বিরক্তির কিছু সুক্ষ্ম রেখা।

—-“ও সরি! হেসে ফেললাম বলে কিছু মনে করবেন না। ব্যপারটা কিরকম একটা হয়ে গেলো না? যেন, ভূতের মুখে রাম নাম! (গলা খাঁকারি দিয়ে) দেখুন খলিলুল্লাহ সাহেব, প্রথমত ইলহাম এ বাড়িতে সেইফ নয়। কেননা, আপনার এই বিবি সাহেবা? যখন তখন তার উপর ভ-য়া-ন-ক রকমের ট/র্চা/র করতেও দু’বার ভাবে না। এই তো সেদিন? মিসেস জোহরার প্রিয় মাছের তরকারিতে ভুল করে কিঞ্চিৎ লবনের পরিমান বেশি দেওয়াতে সে ক্ষে/পে গিয়ে ইলহামের হাতে গরম পানি ঢেলে দিয়েছে। ভাবুন একবার? সুযোগ পেলে কি সে ইলহামকে মা//র্ডা//র করবে না?”

খলিলুল্লাহ সাহেব চোখ উল্টান। অবাক কন্ঠে বলেন,

—-“এ কথা কি ইলহাম তোমায় বলেছে? আমি বলবো,তাহলে ও মিথ্যে বলেছে। কারন, জোহরা এমন কাজ করতেই পারেনা। ও ইলহামকে…”

—-“এই তো, এসে গেলেন না আপনার লেভেলে!”

খলিলুল্লাহ সাহেবকে চুপ করিয়ে দিয়ে বলে উঠলো রাদ। খলিলুল্লাহ সাহেব কপাল কুঁচকায়। এই ছেলে তাকে লেভেল দেখাচ্ছে? কত বড় স্পর্ধা তার!

—-“আমি ঠিক এই কথাটাই আপনাকে বোঝাতে চেয়েছিলাম। আর দেখুন আপনি নিজেই কথাটা সহজ করে দিলেন। লিসেন,ফার্স্ট অফ অল ইউ আর নট ইলহাম’স ফাদার। এন্ড দ্যাটস হোয়াই ইউ ডোন্ট ট্রাস্ট ইলহাম। খুব স্বাভাবিক ভাবেই আপনি আপনার ওয়াইফকে বিলিভ করবেন। যেমন আমি মিসেস জোহরাকে নয়,ইলহামকে বিলিভ করি৷ এন্ড অফকোর্স আ’ইম নট ব্লাইন্ড। আই সি দ্য ট্রুথ।”

—-“দেখো বাবা,সমাজে আমাদের একটা সম্মান আছে। একটা নাম ডাক আছে। এখন কি তুমি চাও তোমার কারনে কিছু নিরীহ মানুষ ভুক্তভোগী হোক? তুমি নিশ্চয়ই চাইবেনা!”

—-“ইয়েস অফকোর্স। আই উ্যুড ডেফিনেটলি লাইক ইউ টু সাফার ফর মি। জাস্ট বিকজ অফ ইলহাম। আপনারা ওর সাথে যা করেছেন, তা-তো এ জনমে শোধ হওয়ার নয় খলিলুল্লাহ সাহেব। সো,ইউ মাস্ট গেট দ্য পানিশমেন্ট ইউ ডিজার্ভ।”

—-“আমি তোমার নামে মা-ম-লা করবো!”

সইতে না পেরে বলে উঠলেন খলিলুল্লাহ সাহেব। রাদ ফিক করে হেসে ফেললো। চায়ের কাপ টা নামিয়ে রাখলো টেবিলে। অতঃপর উঠে দাঁড়িয়ে নিজের ব্লেজার ঠিক করতে করতে বলল,

—-“এই শহরের সবচেয়ে বড় অফিসার রোজ আমায় উঠতে বসতে ‘হ্যালো স্যার,আজ্ঞে স্যার, জি জি স্যার’ করে জপ করতে থাকে। আপনার প্রয়োজন হলে আমি তাকে পাঠিয়ে দিবো। খুব ভালো করে জিডি করবেন কিন্তু। খবরদার ভুল-ত্রুটি যেন না হয়।”

রাদের কথায় গলা শুঁকিয়ে এলো খলিলুল্লাহ সাহেবের। শুঁকনো গলায় ঢোক গিলে মাথা নীচু করে নিলেন তিনি। রাদ আর তাদের জবাবের অপেক্ষায় বসলো না। যাওয়ার উদ্দেশ্যে পা বাড়ালো। তবে হঠাৎ কোনো কথা মনে পড়তে পূণরায় দাঁড়িয়ে পড়লো। ভ্রু চুলকোতে চুলকোতে একটা ডেভিল লুক নিয়ে বলল,

—-“ইলহাম যেন নেক্সট টাইম এ বাসায় আসার জন্য আমার কাছে অনুরোধ না করে। মিসেস জোহরা আমায় খুব ভালো করেই জানেন। দেখা যাবে,ইলহামের অনুরোধ ফেলতে না পেরে এ বাড়ি এসে আপনার অর্ধেক মাথা এবং মিসেস জোহরার অর্ধেক বডি তার জন্য নিয়ে গেলাম। ডোন্ট বিলিভ মি, খলিলুল্লাহ সাহেব। আমি খুব সহজে কারোর সামনে এসে দাঁড়াই না। আর যখন দাঁড়াই তখন..! আপনারা খুব লাকি জানেন তো। কেননা,আপনারা ইলহামের মামা-মামি। তাই প্রথম যাত্রায় আপনাদের ম/র/ন ফাঁদ লেখা থাকলেও আখেরে কিন্তু আপনারা বেঁচেই আছেন।”

কথা গুলো শেষ করেই হনহন করে বেরিয়ে গেলো রাদ। তার পেছন পেছন গেলো দুজন গার্ড। খলিলুল্লাহ সাহেব এবং মিসেস জোহরা স্তব্দ হয়ে গেলেন। আতংকে তাদের ঘাম ছুটে গেলো তখনই। বারবার কেবল ঢোক গিলতে লাগলেন। না,আর প্রয়োজন নেই যেচে বিপদকে নিমন্ত্রণ করার। ভাববে, আপদ বিদেয় হয়েছে।

_______

ফোনের স্ক্রিনে টাচ করতেই জ্বলজ্বল করে ভেসে উঠলো “২;৩৫”মিনিট। ইলহাম সময়টা দেখে বের হলো ক্লাসরুম থেকে। রাদকে কি কল করবে? নাকি তাকে না জানিয়েই চলে যাবে নিজের বাসায়! যদি তাকে বলে যেতে চায় তবে রাদ কখনও রাজি হবে না। উল্টে, হবে এক কে’লে’ঙ্কা’রি।

সে এভাবে কিছুতেই থাকতে পারবেনা রাদের বাড়ি। তার একটা আত্মসম্মান আছে। আর যাই হোক, নিজের আত্মসম্মানকে বিসর্জন দিয়ে সে কিছুতেই মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারবেনা। দিনের পর দিন তার এই অস্বস্তিই তাকে গলা চেপে হ//ত্যা করবে। তার চেয়ে বরং মামির ট/’র্চা’/র সহ্য করে থেকে যাবে। তবুও সেটা হবে তার নিজের বাড়ি। তাতে অন্তত নিজের আত্মসম্মানে বারবার আঘাত লাগবেনা। এমনকি নিজের মামার থেকেও শুনতে হবেনা,’তোর থেকে ভালো একজন প/তি/তা! সে অন্তত, সত্যি বলেই টাকা রোজগার করে’। মামার কথাটা মস্তিষ্কে ধাক্কা খেতেই বুকের ভেতরটা কেঁপে উঠল ইলহামের। হঠাৎ মনে পড়লো, এই মামাই তাকে একদিন বলেছিলো, প্রয়োজন হলে নিজের জীবন দিয়ে হলেও তার ভাগ্নির জীবন সে রক্ষা করবে। কিন্তু আজ? সেই মামাই যেন তার গলার কাটা হয়ে আঁটকে আছেন। না পারছে গিলে নিতে আর পারছে ফেলে দিতে।

কথা গুলো ভাবতে ভাবতেই বুক চিঁড়ে তপ্ত দীর্ঘশ্বাসের আনাগোনা মিলল। ইলহাম আর দাঁড়িয়ে থেকে সময় নষ্ট করলো না। সামনে যা ঘটতে চলেছে তার সম্পূর্ণ মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে বেরিয়ে গেলো বাসার উদ্দেশ্য। রিক্সা নিয়ে রওনা হলো বাড়ির পথে। মনে মনে একরাশ ভয়। ভয়ে বারবার কেঁপে উঠছে আত্মা। মনে মনে কেবল দোয়া পড়ে যাচ্ছে, রাদের সাথে যেন কিছুতেই দেখা না হয়।’—

কিন্তু কথায় আছে,“যেখানে বাঘের ভয়, সেখানেই সন্ধ্যে হয়।” কেননা সেটাই ঘটলো,যেটা এক্ষনি ইলহাম জপ করছিলো।

আকস্মিক একটা কালো গাড়ি এসে এমন ভাবে তার রিক্সাটাকে ধাক্কা দিলো যে ভ/য়ানক থেকে ভ/য়ানক ধরনের এ/ক্সি/ডে/ন্টও হয়ে যেতে পারতো। কিন্তু ভাগ্যের ফেরে তেমন কিছুই হয়নি। রিক্সা থেকে পড়ে গিয়ে ইলহামের হাতে সামান্যই জ/খ/ম হয়েছে। আর এদিকে বৃদ্ধ রিক্সাচালক কৌশলে নিজেকে বাঁচিয়ে নিলো। তার অভিজ্ঞতা দেখে বোঝাই যাচ্ছে সে এসব এ/ক্সি/ডে/ন্টে/র মুখোমুখি একবার নয়,বরং অজস্র বার হয়েছে।

ইলহাম হাতে ব্যা/থা পেলেও সেদিকে তার খেয়াল নেই। তার সমস্ত রা/গ এবং ক্ষো/ভ গাড়ি চালকের উপর। চোখের মাথা খেয়ে গাড়ি চালায় নাকি? সে তো নির্ঘাত কে/স ঠুকে দিবে ওমন ফালতু চালকের উপর। মানুষ মা/রা/র বদ মতলব নিয়েই এরা বের হয় বাড়ি থেকে। সে ঠিক বুঝতে পেরেছে।

কিন্তু তার সমস্ত রা/গ, ক্ষো/ভ এবং মহৎ সব চিন্তাধারায় এক বালতি ভর্তি জল ঢেলে দিলো কেউ। রাস্তা থেকে তাকে এক টানে দাঁড় করালো। ইলহাম ভ/য়ে কেঁপে উঠে ঘটনার কেন্দবিন্দুতে পৌঁছোতে পৌঁছোতে বেশ জোরেশোরেই এক চড় পড়লো তার গালে। আকস্মিক চড় খেয়ে ইলহামের বোধবুদ্ধি সব যেন হ্যাং হয়ে গেলো। সে কোথায়,এরা কারা,তাকে কে মা/র/লো,কেন মা/র/লো? এসব আবোলতাবোল সব প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে লাগলো মাথায়। আর ঠিক তখনই কর্ণকুহরে প্রবেশ করে রাদের রো/ষপূর্ণ কন্ঠস্বর,

—-“আমি বারন করা স্বত্বেও তোমার দুঃসাহস দেখে আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি! হ্যাভ ইউ গন ম্যা’ড? বাসা থেকে বের হওয়ার সময় আমি তোমায় কি বলেছিলাম? ক্লাস শেষ হওয়ার আগে গাড়ি চলে যাবে, তুমি গাড়ি করে বাড়ি ফিরে আসবে! আর তুমি কিনা.. ড্যাম!”

প্রচন্ড রাগে গাড়ির দরজার সাথে ঘু/ষি মা/র/লো রাদ। ইলহাম কেঁপে উঠল ভ/য়ে। এখন তার মস্তিষ্ক কাজ করছে। ঠিকই কাজ করছে। এবং এটাও ঢের বুঝতে পারছে আজ তার কপালে চরম শনি নাচছে। ভ/য়ার্ত গলায় ঢোক গিললো সে। তার আপাদমস্তক কাঁপছে ক্রমশ। কিছু বলারও সাহস হচ্ছে না যে।

—-“আমি ভুল করেছিলাম তোমায় ভার্সিটি আসার পারমিশন দিয়ে। মস্ত বড় ভুল করেছি। এবার তোমায় ঘরবন্দীই থাকতে হবে সুইটহার্ট। আর এটাই হবে তোমার জন্য উত্তম শাস্তি!”(দাঁতে দাঁত চেপে)

ইলহাম অসহায় মুখ করে তাকিয়েই রইলো। বার কয়েক ঢোক গিলে নিজের শুঁকিয়ে যাওয়া গলাটায় পানি ঢাললো। কিন্তু তাতেও কাজ হলো না। ভ-য়টা ক্রমশ বেড়েই চলেছে।

রাদ অতর্কিত তার হাত ধরে হেঁচকা টানে নিয়ে গেলো গাড়ির ভেতর। গাড়ির ড্রাইভারকে বের করে দিয়ে তার পাশের সীটে বসিয়ে রাগে ফোঁস ফোঁস শব্দ করে নিজে বসলো ড্রাইভিং সীটে। অতঃপর গাড়ি স্টার্ট দিলো। ইলহাম ভ-য়ের দরুন লেপ্টে বসলো গাড়ির সীটের সাথে। রাদের গাড়ির স্পিড এতটাই ভ-য়া-বহ যে, সামনের সবটা কেবল ধোঁয়াশা লাগছে। সে কিছুই দেখতে পাচ্ছে না স্পষ্ট। তার ভ-য়টা দিগুণ বেড়ে গেলো। অসহায় কন্ঠে এতক্ষণ পরেই কিছু বলার দুঃসাহস করলো,

—-“প..প্লিজ গাড়ির স্পিডটা কমিয়ে নিন! দ..দেখুন? সামনের কিছুই দেখা যাচ্ছে না। এ/ক্সি/ডে/ন্ট হয়ে যাবে রাদ। প..প্লিজ!”

ইতিপূর্বে হয়তো কখনো ইলহাম রাদের সাথে এমন নীচু স্বরে কথা বলেনি। কিন্তু আজ বলছে। আর আজ বলার পেছনে মূখ্য কারনটি হলো, ইলহাম রাদের উপর কৃতজ্ঞ। কেননা, রাদই প্রথম যে তাকে তার স্বপ্নের স্থানে ফিরে আসতে আরেকটা সুযোগ দিয়েছে।

অবাক করা বিষয়, রাদ সত্যি সত্যি গাড়ির স্পিড কমিয়ে দিলো। শুধু তাই নয়, একটা নিরাপদ পার্কিং লট দেখে গাড়িও থামিয়ে দিলো। কিন্তু ইলহাম ঘাবড়াতে লাগলো। হাওয়া এখনও বেশ গরম বুঝতে পেরেই পূণরায় ঢোক গিলল। রাদ কিছু না বলে বেরিয়ে গেলো গাড়ি থেকে। নিজে বেরিয়ে ওপাশে গিয়ে ইলহামকেও বের করে আনলো। ইলহাম চুপচাপ দেখতে লাগলো তার কান্ড। রাদ ইলহামকে নিয়ে চলে এলো গাড়ির পেছনের সীটে। ইলহামকে ভেতরে বসিয়ে দিয়ে নিজেও বসে পড়লো তার পাশে। অতঃপর সামনের সীটের পাশ থেকে উঠিয়ে আনলো ফাস্টএইড বক্সটা। কিছু না বলে ইলহামের হাতটা টেনে নিলো নিজের দিকে। চুপচাপ ড্রেসিং এর সরঞ্জাম বের করে তর হাতে ড্রেসিং করতে লাগলো। ইলহাম মনেমনে না হেসে পারলো না। হঠাৎ ইচ্ছে করলো, মা/ফিয়া সাহেবের গাল টেনে দিতে। কিন্তু পরক্ষণেই আবার মনে পড়লো অতি আবেগ স্বাস্থ্যের জন্য হানিকারনক।

—-“ রহমান? হ্যাঁ, তাড়াতাড়ি আয়। হ্যাঁ নদীর অপজিটে।”

রাদ ফোন করলো কাউকে। তাকে দ্রুত আসতে বলে ফাস্টএইড বক্সটা নীচে ফেলে রাখলো। অতঃপর মুখে কোনোরূপ কথা না বলে গাড়ির সীটের সাথে পিঠ ঠেকিয়ে চোখ বুঁজে রইলো। ইলহামের এবার বেশ মন খারাপ হতে শুরু করলো। রাগ করে হোক, কিছু তো বলবে লোকটা? এমন চুপ করে থাকলে যে আরও বেশি ভ-য় হয়।

তার মনের কথাটা হয়তো পড়ে নিলো রাদ। তাই আচমকাই অসহায় কন্ঠে বলে উঠলো,

—-“কেন এমন করো, প্রিয়দর্শিনী? তুমি কেন বুঝোনা তোমায় আমি এক মুহুর্তও চোখের আড়াল করতে পারিনা। তুমি চোখের আড়াল হলেই আমার দম ফুরিয়ে আসে। একদম ম/রে যাই আমি। আর তুমি কিনা..! কি আছে ঐ বাড়িতে তোমার? কাদের জন্য তুমি ফিরে যেতে চাও? তোমার মামা-মামী? তাদের জন্য? কখনও ভেবে দেখেছো কি চোখে দেখে তারা তোমায়!”

—-“ঐ বাড়িতে আমার মায়ের গন্ধ পাই আমি!”

কাতর কন্ঠে জবাব দিলো ইলহাম। রাদ এক মুহুর্তের জন্য থমকে গেলো। পরমুহূর্তেই আবার দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে লেপ্টে বসলো সীটের সাথে। আর কথা বাড়ালো না মোটে। ইলহামও আর কিছু বলতে গেলো না বাড়িয়ে। রাদের প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে এর চেয়ে ভালো জবাব আর কিছুই হতে পারেনা বলে সে মনে করে।

#চলব________

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here