প্রেম পিয়াসী পর্ব ১

0
1805

১.

টেবিলের ওপর এনগেজমেন্টের আংটি দুটো সাজিয়ে রাখলো তিন্নি। মুখে তার পৈশাচিক আনন্দ। আজ বহুদিন বাদে সে এবং তার মা একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারবে। কেননা আজ তাদের পথের কাটা চিরতরে বিদায় হবে। আর তার ব্যবস্থা খুব নিখুঁত ভাবে করে ফেলেছে তারা।

—-” নাও বাবা! আংটি এসে গেছে এবার শুভকাজ সম্পন্ন করো।”

এই বলে আংটি সাজানো থালা থেকে একটা আংটি উঠিয়ে চেতনের হাতে দিলেন মিসেস জোহরা। তিন্নি ঠোঁট বাঁকিয়ে হেসে মায়ের গা ঘেঁষে দাঁড়ালো। চেতনের মুখেও আত্মতুষ্টির হাসি। ইলহামকে সে ছোট বেলা থেকেই পছন্দ করতো। কখনও দুঃসাহস হয়নি বলার। কিন্তু আজ সেই সুযোগ বানের জলের মতো ভেসে এলো তার নিকট। আর সুযোগের সদ্ব্যবহার কি করে করতে হয় সেটা তার থেকে ভালো আর কেই-বা জানে?

ইলহাম। পুরো নাম অবশ্য রেজওয়ানা ইলহাম। এ-বাড়ির একমাত্র মেয়ে সে। অবশ্য কেবল এ বাড়িরই মেয়ে। আদোতে কারোর সন্তান হয়ে উঠতে পারেনি সে। মিসেস জোহরা সম্পর্কে তার মামি হন। মামা খলিলুল্লাহ। বছরের বেশিরভাগ সময়ই কাজের বাহানায় বিদেশ পড়ে থাকেন। এদিকে তার বোনকে দেওয়া কথা এবং বোনের বিশাল সম্পত্তি কোনোটাই সে ঠিকভাবে আগলে রাখতে পারেনি। বোনের সম্পত্তি করেছে নিজের নামে এবং তার সন্তানকে করেছে বিনা পয়সায় বাঁধা দাসী। পোড়াকপালি ইলহাম সবটাই মুখ বুঁজে সয়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন। কিন্তু যখন সে সমস্ত ধৈর্য্যের বাঁধ পার করে ফেললো তখন সিদ্ধান্ত নিলো, ‘নিজের বাড়িতে দাসী হয়ে থাকার চেয়ে অন্যের ঘর করা ঢের শান্তির।’ তাই এই বিয়েতে তার মত না থাকলেও না করেনি। সে কেবল চায় এই খাঁচা বন্দী জীবন থেকে মুক্তি পেতে। তার আর কিছুই চাইনা।

—-” ইলহাম? মা হাতটা বাড়া? চেতন অপেক্ষা করছে তো!”

ইলহামের ভাবনার সুতো ছিঁড়ে। যার দরুন কিঞ্চিৎ চমকে ওঠে সে। ধ্যান ভাঙতে ভাঙতে তার বোধগম্য হয়, তার মামী তাকে ‘মা’ বলে সম্মোধন করেছে। কি আশ্চর্য তাই না? যে মানুষটা কোনো দিন ভুল করেও তার সঙ্গে দুটো মিষ্টি কথা বলেনি; সে মানুষটা আজ তাকে ‘মা’ বলে সম্মোধন করলো। কেন? করন,সে আজকের পর থেকে আর এই বাড়িতে থাকবেনা। থাকবেনা বললে ভুল হবে! তার এই বাড়ি থেকে চিরবিদায় নেওয়ার একটা উকিল তৈরি হবে। হ্যাঁ; মামী এজন্যই এতো খুশি। যার দরুন সে তাকে ‘মা’ বলে সম্মোধন করতেও দ্বিধাবোধ করলো না।

ইলহামের বুক চিঁড়ে তপ্ত দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো। সারাজীবন এতো অবহেলা সহ্য করে এসে আজ সামান্য মা বলে ডাকাতে সে আবেগী হয়ে পড়লো। মানুষ কত বিচিত্র ধরনের হয় তাই না? তার এবং মামীর মাঝে কতটা তফাৎ! ভাবতেই আবারও দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। এতো এতো ভাবনার মাঝে নিজেকে আর নিমজ্জিত করলোনা। ভুলে গেলো অতীত। ভাবতে লাগলো ভবিষ্যত নিয়ে।

ইলহাম নিজেকে সামলে নিলো। মনের মাঝে চাপা দুঃখ গুলো মনের মাঝেই চেপে রাখলো। অতঃপর শুঁকনো মুখেই হাত বাড়িয়ে দিলো চেতনের দিকে। আজ তার জীবনের এক বিশেষ মুহুর্ত। কিন্তু এই বিশেষ মুহুর্তটাতে বিশেষ কেউই নেই। কেবল তারা চারজনই উপস্থিত। চেতনের বাবা-মা মালয়েশিয়ায় থাকেন। আজ এনগেজমেন্ট এবং পরশু ঘরোয়া ভাবে বিয়ে সম্পন্ন করে চেতনও ইলহামকে নিয়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার প্লান করেছে। ইলহাম না করেনি। এসবে তার কোনো আপত্তি নেই।

চেতন মুখে রাজ্য জয় করা হাসি নিয়ে পূর্ণ প্রস্তুত হলো ইলহামকে আংটি পড়ানোর জন্য। কিন্তু মুহুর্তেই যেন সবটা পাল্টি খেয়ে গেলো। বাতাসের তোড়ে তেড়ে এলো কেউ। আর এসেই প্রথমে তার হাত থেকে আংটিটা ছো মেরে কেঁড়ে নিলো। চেতন ব্যাপারটা মস্তিষ্কে ধারণ করতে করতে মানুষটা একটানে ইলহামকে উঠিয়ে নিয়ে গেলো। ঘটনার আকস্মিকতায় উপস্থিত প্রত্যেকেই হতভম্ব হয়ে গেলো। ইলহাম মাথা নীচু করে বসে থাকায় প্রথমে দর্শন পায়নি মানুষ টা কে? কিন্তু পরে যখন মনে হলো এই কাজ কেবল একজন ব্যাতীত আর কারোর পক্ষে করা সম্ভব না, তখনই রাগে শরীরটা রি রি করে উঠলো।

ড্রয়িংরুম থেকে বরাবর হেঁটে গেলে যে রুমটা পাওয়া যায় মানুষটা তাকে ঠিক সে রুমে নিয়ে বন্দী করলো। ঠাস করে দরজাটা ভেতর থেকে লাগিয়ে দিতেই কেঁপে ওঠেন মিসেস জোহরা এবং তিন্নি। তারা ভয়ে রীতিমতো কাঁপতে শুরু করে। কারন আর কেউ না জানুক,তারা জানে তাকে না জানিয়ে ইলহামের বিয়ে ঠিক করার শাস্তি কতটা ভয়াবহ হতে পারে।

দরজা আটকানোর বিকট শব্দে ইলহাম যে ভয় পায়নি সেটা নয়। সেও ভয় পেয়েছে। এবং আরও ভয় পাচ্ছে মানুষটার রাগ দেখে। সে জানেনা,ঠিক কতোখানি দূর্গতি নাচছে তার কপালে!

—-” ছাড়ুন আমায়! এভাবে সবার সামনে থেকে আমার হাত ধরে টেনে আনার সাহস কি করে হয় আপনার? নিজেক কি ভাবেন আপনি? হিরো? ওহ না! হিরো কি ভাববেন! আপনি তো আবার দ্য গ্রেট মাফিয়া কিং মিহাদ আবরিশাম রাদ! হিরো নন গুন্ডা! মাস্তা…”

শেষোক্ত শব্দটা ইলহাম ঢোকের সাথে গিলে নিলো রাদের ভয়ংকর চাহনি দেখে। রাদ রক্তিম দৃষ্টি নিক্ষেপ করে তাকিয়ে আছে ওর পানে। যেন ওকে সে চোখ দিয়েই ভস্ম করে দিবে।

—-“ক-কি! আ-আমি ভয় পাই নাকি আপনা..”

খানিকটা সাহস সঞ্চয় করে দ্বিতীয় বারের মতো কিছু উল্লেখ করতে গিয়েও থেমে গেলো ইলহাম। পূণরায় ঢোক গিললো সে। রাদ দাঁতে দাঁত চেপে নিজের রাগকে সংবরণ করার চেষ্টা করছে। কিন্তু কিছুতেই তার রাগ পড়ছেনা। বরং তরতর করে বেড়ে চলেছে। রাগের এক পর্যায়ে সে করে বসলো এক কান্ড। ইলহাম ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলো বিছানার উপর। অতঃপর তেড়ে গিয়ে তাকে ঠেসে ধরলো সেখানেই,

—-“খুব সাহস বেড়েছে দেখছি! দু-দিন আমি শহরে ছিলাম না এদিকে দেখি কনে বিয়ের জন্য রেডি! হাউ সুইট!”(দাঁতে দাঁত চেপে)

ইলহাম ভয়ে কেঁপে উঠল। কাঁপা কাঁপা স্বরে বলল,

—-“ভ-ভালো হচ্ছেনা কিন্তু মিস্টার রাদ! আ-আমি কিন্তু পুলিশ কমপ্লেইন্টা এখনো তুলিনি!”

ইলহামের মুখে এহেম কথা শুনে শব্দ করে হেসে উঠলো রাদ। হাসতে হাসতে গভীর চাহনিতে তাকালো ইলহামের ভয়ার্ত অক্ষিপটে। কন্ঠে মাদকতার রেশ মিশিয়ে কোমল স্বরে বলল,

—-“তুমি এতো পাশান নও প্রিয়দর্শিনী! তুমি এতো পাশান নও। ইউ লাভ মি না?”

ইলহাম ভড়কে গেলো। থতমত খেতে লাগলো রাদের এমন আচরণে। সে রাদকে যতই দেখে ততই অবাক হয়। যে মানুষটা দিনে-দুপুরে লা//শের পর লা//শ ফেলে সে মানুষটা নাকি তাকে পাশান হতে বারন করছে। তার কাছে এক মুঠো ভালোবাসা পাওয়ার জন্য ছটফট করছে।

—-“আমি পাশান না মানবিক সে ডিটেইলস আপনাকে দিবো না। আমি আপনাকে ভালোবাসি না। ঘৃনা করি। আ-আপনি আমার থেকে সবটা কেঁড়ে নিয়েছেন। আমার হাসি আমার আনন্দ আমার স্বাধীনতা.. সবটা!”

বলেই নিজের উপর থেকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলো রাদকে। রাদ নিজেকে সামলাবার পূর্বে পরে গেলো পাশে। ইলহাম তাড়াহুড়ো করে উঠতে গেলে তার শাড়ির আঁচল টান পড়তেই থমকে যায় সে। ভড়কানো গলায় বলে ওঠে,

—-“ক-কি করছেন!”

কথাটা শোনা মাত্র রাদ তার সামনে এসে দাঁড়াল। বাঁকা হেসে বলল,

—-“রাদকে তুমি এখনও ঠিক চিনে উঠতে পারোনি সুইটহার্ট। তাকিয়ে দেখো আমি কিন্তু তোমায় টাচ করিনি। বাট ইফ ইউ ওয়ান্ট সো…”

ইলহাম ভালো করে তাকাতেই বুঝলো রাদ তার শাড়ীর আঁচল সত্যি ধরেনি। পেছন মুড়ে তাকাতে দেখলো একটা আলপিনে বেঁধে গেছে শাড়ীর আঁচলটা। যার দরুন সে লজ্জিত। সেই সাথে রাদের শেষোক্ত উক্তিতে আরও ঘাবড়ে গেলো। দ্রুত শাড়ীর আঁচল ছাড়াতে গিয়ে ছিঁড়েই ফেললো। অতঃপর ছিটকে পড়লো কয়েক কদম দূরে। মুখ ঝামটি দিয়ে বলল,

—-“খবরদার! একদম ম-মা//র্ডার করে ফেলবো বলে দিলাম।”

রাদ ভ্রু উঁচিয়ে তাকালো। কিছু একটা ভাবতে ভাবতে প্যান্টের পকেটে হাত দিয়ে কালো রিভলবারটা বের করে আনলো। যা দেখতেই আঁতকে উঠলো ইলহাম। একি করছে মানুষটা? তাকে মে//রে-টেরে ফেলবেনা তো আবার?

—-“এই নাও! আমাকে মা//র্ডার করতে হলে এটা চালিয়ে মা//র্ডার করো। আমার কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু, যদি আমায় ছাড়া অন্য কাউকে নিয়ে ভুল করেও ভেবেছে! ইউ উইল সিওরলি ডাই, সুইটহার্ট।”

—-“দ-দেখুন মিস্টার, আ-আমিও একটা মানুষ! আপনাদের হুকুম পালন করার কোনো দাসী নই।”

—-“তাই তো বলছি! আমায় নিয়ে ভাবো? ফুল ফ্রীডম আছে। বাট…”

—-“আপনারা আমায় কি ভেবেছেন বলুন তো? যখন যার যা খুশি আমাকে দিয়ে তাই করাবেন?”

রাদ বাঁকা হাসলো। নীচের দিকে তাকিয়ে একবার মাথা চুলকালো। অতঃপর মুখ তুলে তাকালো ইলহামের পানে। মুখের হাসিটা বজায় রেখে বলল,

—-“আজ থেকে তুমি আমার বাড়িতে থাকবে!”

ইলহাম আঁতকে উঠল। নিজের হাতে নিজের মুখ চেপে রেখে কয়েক মুহুর্তের জন্য ট্রমায় গিয়ে ব্যাক করলো। অতঃপর রাগান্বিত স্বরে বলল,

—-“আপনি সত্যিই একটা জঘন্য! আপনি আমায় আপনার বাড়িতে নিতে চাচ্ছেন? ক-কেন? কি ম-মতলব আপনার?”

রাদ যেন গায়ে মাখলো না ইলহামের কথাটা। সে এগিয়ে গিয়ে পূর্বের ন্যায় ইলহামের হাত ধরে বেরিয়ে এলো বাইরে। যা দেখে কোমায় চলে যাওয়া মামী এবং চেতন ধড়ফড়িয়ে বেরিয়ে এলো। চেতন খুব ভালো করেই চেনে রাদকে। খুব ভালো করে চর্চা করেছে তার ব্যাপারে। কিন্তু সে এখানে কেন? আর ইলহামের সাথে তার কিসের সম্পর্ক? তারা একঘরে থেকে কি করেছে এতক্ষণ?

—-“ইলহাম! তুমি ঠিকাছো তো? এই লোকটা! এই লোকটা তোমার সাথে বাজে কিছু করেনি তো?”

চেতনের উদগ্রীব কন্ঠটি বেজে উঠলো ইলহামের কানে। ইলহাম কোনো জবাব দেওয়ার পূর্বেই বলে উঠলো রাদ,

—-“একেই বোধহয় বলে মায়ের চেয়ে মাসীর দরদ বেশি! তাই না মিসেস জোহরা?”

মিসেস জোহরা চমকে ওঠেন রাদের কথার সুরে। যেন ভয়ানক কোনো ঝড় আসতে চলেছে এর পৃষ্ঠে। রাদ চুপ থাকার পাত্র নয়।

—-“হ-হ্-হ্যাঁ বাবা! ত-তুমি ঠিক ব-বলেছো!”

জোরপূর্বক হেসে কথাটা বলে মিসেস জোহরা। রাদ এক ভ্রু উঁচিয়ে কপাল চুলকোয়। অর্থাৎ, সে কিছু ভয়ানক করতে চলেছে!

—-“মানে? কি বলতে চান আপনি? আমি ইলহামের হবু হাজবেন্ড। আমাদের এক্ষনি এনগেজমেন্ট হচ্ছিলো! সেই প্রেক্ষিতে আমার হবু বউয়ের জন্য দরদ থাকাটাই স্বাভাবিক! তাই না আন্টি?”

চেতন রাগি রাগি মুখ করে বললো কথাটা। মিসেস জোহরা আঁতকে উঠে নিজের মুখ চেপে ধরলেন। বারবার হবু বউ হবু বউ কথাটা বলার কোনো প্রয়োজন আছে্? ছেলেটা বেশি কথা বলে!

ইলহাম নিরবে চোখ বুঁজে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। ছেলেটা এবার অকারনে শাস্তি পাবে। কথাটা ভাবতেই বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠলো তার। পরক্ষণেই বিকট শব্দে নীচে পড়ে গেলো চেতন। ইলহাম কেঁপে উঠল। ভড়কে গেলো মিসেস জোহরা এবং তিন্নিও। তিন্নি আতংকে জ্ঞান হারালো। মিসেস জোহরার বুকে ব্যাথা শুরু হলো যেন। ইলহাম স্থবির হয়ে দৃষ্টি মেলে তাকালো।

—-“ছেলেটা একটু বেশি কথা বলে, তাই না সুইটহার্ট?”

গু//লিটা চেতনের ডানহাতের বাহুতে গিয়ে লেগেছে। অর্থাৎ এটা সামান্য হুমকি। ভবিষ্যতে তার প্রিয়দর্শিনীর দিকে যেন চোখ মেলে তাকানোর সাহস না করে।

চেতনের ভাঙা স্বরে চেঁচানোর আওয়াজ ক্রমশ মিলিয়ে আসছিলো। ব্যাথার চেয়ে সে ভয়টাই বেশি পেয়েছে। তাই মিনিট গড়াতে সেও বেহুঁশ হয়ে গেলো। রাদ মৃদু হেসে মিসেস জোহরার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। রিভলবারটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে তার দিকে তাক করতেই তার প্রেশার লো হয়ে গেলো। আপাদমস্তক কেবল কাঁপতে লাগলো।

—-“এতদিন আপনার অনেক নাটক আমি সহ্য করেছি! কিন্তু কিচ্ছু বলিনি। কারন কি বলুন তো? কারন আমার প্রিয়দর্শিনী। ও আপনাকে মন থেকে রেসপেক্ট করে আর ভীষণ ভালোওবাসে। যেটার যোগ্য আপনি কোনোদিন ছিলেনই না। কিন্তু, এবার আপনি আপনার লিমিটেশন ভেঙে দিয়েছেন। এর শাস্তি চেতনের চেয়েও ভয়ানক হতে পারতো। কিন্তু আজও আমি আপনাকে কিচ্ছুটি বলবো না। জাস্ট বিকজ অফ, প্রিয়দর্শিনী। চলো সুইটহার্ট!”

—-“ক-কোথায় নিয়ে যাচ্ছো ওকে?”

ভয়ার্ত স্বরে আওড়ালেন মিসেস জোহরা। রাদ মৃদু হেসে কপাল চুলকোলো। অনন্তর, ফের মিসেস জোহরার সামনে এসে দাঁড়ালো। রহস্যময় হেসে বলল,

—-“আমার ছোট্ট রাজমহলে। যেখানে সে রানী হয়ে রাজ করবে।”

—-“মানে! তুমি কি বিয়ের আগেই…”

—-“অবশ্যই! কেন? আপনার কোনো আপত্তি আছে নাকি?”

রাদের কথা শুনে আহত নয়নে তাকালো ইলহাম। ঠিক তখনই মামীর তাচ্ছিল্য মিশ্রিত কটূক্তি এসে বারি খেলো তার কানের পর্দায়,

—-“দেখ মুখপুড়ি কি পুরুষ জুটিয়েছিস কপালে! যে কিনা বিয়ের আগেই তোকে নিয়ে যাচ্ছে তার ঘরে। বুঝতে পারছিস তো, তার উদ্দেশ্য?“

—-“ডোন্ট… ডোন্ট মিসেস জোহরা! একদম ওকে ভড়কানোর চেষ্টা করবেন না। তাহলে আমার নেক্সট টার্গেট কিন্তু আপনি হবেন!”

মিসেস জোহরা চুপসে গেলেন। আর কিছু বলার সাহস পেলেন না। কিন্তু ইলহামের মনে ঠিকই দাগ কাটলো কথাটা। তার কথার আচর ঠিক রয়ে গেলো অন্তরের অন্তস্থলে।

#প্রেম_পিয়াসী 🌼🍁
#লেখিকা_মুহতারিযাহ্_মৌমিতা
#সূচনা_পর্ব

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here