প্রস্থান — ৩৯তম পর্ব।
রিফাত হোসেন।
৫৪.
বেলা ১০টার দিকে হোটেলে পৌঁছাল সুব্রত আর রুশা। গাড়ি থেকে নামল দু’জনে; সাথে ব্যাগপত্র নামাল।
রুশা হোটেলটার বিলাসবহুলতা দেখে চোখ বড় বড় করে বলল, “আমরা এখানে থাকব?”
সুব্রত জবাবে বলল, “হ্যাঁ।”
“এত দামি হোটেল! আমি কীভাবে সামলাবো?” রুশা সংকুচিত হয়ে তাকালো সুব্রতর দিকে।
সুব্রত আশ্চর্য হয়ে বলল, “তোমাকে সামলাতে বলেছে কে? তোমাকে তো আমিই এখানে নিয়ে এসেছি।”
“অর্থাৎ আমাকে ঋণী হয়ে থাকতে হবে আপনার কাছে? কেন থাকবো?”
“তোমাকে আমার কাছে ঋণী হয়ে থাকতে হবে না। বরং এটা আমার জন্য অনুশোচনায় দগ্ধ হওয়ার থেকে নিস্তার পাওয়ার উপায়। তোমার প্রতি করা অন্যায়ের জন্য সামান্য খেসারত!”
“তাহলে স্বীকার করছেন আপনি অন্যায় করেছেন আমার সাথে?”
মাথা নামাল সুব্রত। মৃদুস্বরে বলল, “যেমনটা ভেবে তুমি শান্তি উপভোগ করো। তোমার সুখটাই বড় আমার কাছে।”
রুশা সঙ্গে সঙ্গে দুই হাত তুলে আকুতির সুরে বলল, “বরং দয়া করুন আমাকে। আমার জন্য বেশি কিছু করতে হবে না আপনাকে। শুধু আমি যেখানে যেতে চাই, আমাকে সেখানে পৌঁছে দিন।”
কথাটা শুনে সুব্রতর চোখে-মুখে কালো মেঘ ভর করল! সে নির্লিপ্ত নয়নে তাকিয়ে রইল রুশার দিকে। রুশা লক্ষ্য করল, সুব্রত অদ্ভুত নজরে তাকে দেখছে। কিন্তু সে কোনোরকম ভ্রুক্ষেপ দেখাল না।
কী অদ্ভুত! কারোর হৃদয় জুড়ায়, তো কারোর হৃদয় পোড়ায়; এ কেমন দূরত্ব হায়!
হোটেলের রিসিপশনে ফর্মালিটি সম্পূর্ণ করছিল সুব্রত, রুশা সামান্য দূরে দাঁড়িয়ে আছে, ব্যাগ হাতে; হঠাৎ ডান দিকে তাঁর চোখ পড়তেই দেখল, স্যুট-টাই পরিহিত এক যুবক এগিয়ে আসছে। মুখটা দেখে তাঁর কপালে ভাজ পড়ল ক’টা। অস্পষ্ট; অথচ পরিচিত মনে হলো তাকে! স্থির দাঁড়িয়ে, সোৎসুক ভঙ্গিতে লোকটার দিকে তাকিয়ে রইল।
যুবক লোকটি হেঁটে এসে ঠিক সুব্রতর সামনে দাঁড়াল। সে-ও ভুরু কুঁচকে তাকিয়ে রইল খানিকক্ষণ। এরপর বলল, “তুমি সুব্রত না? হ্যাঁ হ্যাঁ, সুব্রতই তো।” ছেলেটার চোখ-মুখ মুহূর্তেই উচ্ছ্বাসে চকচক করে উঠল!
ছেলেটাকে এবার চিনতে পারল সুব্রত। তাঁর মুখেও স্মিথ হাসি ফুটল সাথে সাথে। আরও কাছাকাছি এসে, আলিঙ্গন করে বলল, “কেমন আছো, রক্তিম?”
রক্তিম হাস্যজ্বল মুখে বলল, “বেশ ভালো আছি। এতদিন পর তোমাকে দেখে জাস্ট চমকে গেছি। বেশ আনন্দ লাগছে। আজকের এখানে দাঁড়িয়ে, যৌবন কালের পরিচিত একজনকে অন্তত সামনাসামনি দেখতে পেলাম।”
সুব্রত হাসল ক্ষীণ আওয়াজে। সকৌতুকে বলল, “বেশ বুড়ো হয়েছ মনে হচ্ছে?”
“হইনি বুঝি?” রক্তিম অট্টহাসিতে মাতল। আরও বলল, “আমাদের অন্যান্য ক্লাসমেটদের একেক জনের ছেলে-মেয়ে হয়ে গেছে। সেদিন অনলাইনে শিমুর সাথে কথা হলো। শিমুকে মনে আছে তো?”
সুব্রত আড়চোখে রুশাকে দেখল একবার। ও এদিকেই তাকিয়ে ছিল; চোখাচোখি হতেই অন্যদিকে ঘুরল। সে আবার রক্তিমের দিকে তাকিয়ে ‘না’ সূচক মাথা নাড়ল।
রক্তিম হাস্যজ্বল মুখে বলল, “সেই, তুমি চিনবে কীভাবে? তুমি তো সারাক্ষণ বইয়ে মুখ ঢুকিয়ে রাখতে। মাঠে, গাছের ছায়ায় একাকী বসে থাকত। তোমার তো নারীতে অ্যালার্জি আছে। যাই হোক, সেদিন শিমুর কাছে শুনলাম, ওর মেয়ে এবার কলেজে উঠবে। শুনে তো আমার চোখ কপালে! পরে গিয়ে মনে পড়ল, ওর তো কলেজ থাকতেই বিয়ে হয়ে গেছিল। এরপর ভার্সিটিতে উঠার আগেই মেয়েটা হলো। তবুও মেয়েটা এত বড় হয়ে গেছে, তা বিশ্বাস হচ্ছিল না। পরে ছবি দেখাল আমাকে। বুঝলে, তখন বিশ্বাস হলো।”
সুব্রত আরও একবার রুশাকে দেখল। ওর মুখ দেখে মনে হলো, বেশ ক্লান্ত। তাই সঙ্গে সঙ্গে প্রসঙ্গ পাল্টাল সে; বলল, “তা তুমি এখানে কীভাবে?”
রক্তিম বলল, “আমি তো এখানকার ম্যানেজার। কিন্তু তুমি এখানে কীভাবে? আর উনি কে? বারবার তাকাচ্ছ।” রুশার দিকে তাকাল রক্তিম।
সুব্রত অস্বস্তিতে পড়ল। রুশা অদূরে। আস্তে করে বললেও শুনতে পাবে। তাই আর এই মুহূর্তে রুশাকে নিজের স্ত্রী করে দাবি করার দুঃসাহস দেখাতে পারল না সে। শুধু আপাদমস্তক হাসল!
“ভাবি নাকি?” সুব্রতকে হাসতে দেখে হঠাৎই উচ্চস্বরে বলে উঠল রক্তিম। সাগ্রহে রুশার দিকে এগিয়ে গিয়ে বলল, “আসসালামু আলাইকুম, ভাবি।”
রুশা ইতস্তত হয়ে একবার তাকালো সুব্রতর দিকে। কয়েক সেকেন্ড তাকিয়ে থাকার পর মুখে জোর হাসি ফুটিয়ে নিচু স্বরে বলল, “ওয়ালাইকুমুস সালাম।”
“কেমন আছেন, ভাবি? আমার নাম রক্তিম। সুব্রত আর আমি একসাথে ইউনিভার্সিটিতে পড়তাম। একই ডিপার্টমেন্ট এ। বন্ধুত্ব তেমন গভীর ছিল না বটে, কিন্তু চেনাজানা ছিল। টুকটাক কথাবার্তা হতো মাঝেমধ্যে। আসলে আপনার স্বামী শুধুমাত্র মানুষটাই আলাদা না, ওর চলাফেরা, আচার-আচরণ, সবকিছুই ছিল ভিন্ন। তাই ঠিক জমতো না আমাদের। তবুও আজ চিনে ফেলেছি।”
জবাবে রুশা সংক্ষিপ্ত হাসল।
সুব্রত এগিয়ে এলো আবার। রক্তিমের উদ্দেশ্যে বলল, “বেশ ক্লান্ত লাগছে, রক্তিম। একটু বিশ্রামের প্রয়োজন।”
কথাটা শুনে রক্তিম সুব্রতর দিকে তাকাল। চঞ্চল গলায় বলল, “অবশ্যই! দেখো কেমন লোক আমি! তোমাদের এখানে দাঁড় করিয়ে রেখেছি।” এরপর রক্তিম রিসিপশনের লোকদের দিকে তাকাল। ভুরু নাচিয়ে জানতে চাইল, “সব ফর্মালিটি হয়েছে?”
একজন বলল, “একটু বাকি আছে, স্যার।”
“বাকিটা আমি দেখে নিবো। তুমি চাবি দাও।”
লোকটা চাবি এগিয়ে দিলে রক্তিম নিজেই সুব্রত আর রুশাকে রুমে পৌঁছে দিতে অগ্রসর হলো।
একটা খাট। একটা ছোট টেবিল-সাথে দুটো টুল। ড্রেসিং টেবিলটা জানালার পাশে। ঘরে একটাই জানালা, তাও সেটা ব্যালকনির সাথে। এসিওয়ালা রুম। টিভি আছে। একটা লাগোয়া বাথরুমও আছে।
রুশা বসেছে বিছানায়। সুব্রত একটা টুলে। রক্তিম তাঁদের বিশ্রাম নিতে বলে চলে গেছে। এরপর থেকেই একটা জড়তা কাবু করে রেখেছে দুজনকেই। তাই শক্ত হয়ে স্বস্থানে বসে আছে।
দীর্ঘক্ষণ কেটে যাওয়ার পর সুব্রত সহসা দাঁড়াল। রুশার দিকে মুখ করে বলল, “তুমি বিশ্রাম নাও। আমি ব্যালকনিতে গিয়ে বসি।”
রুশা তাকাল সুব্রতর দিকে। অবাক হয়ে বলল, “কতক্ষণ আপনি ব্যালকনিতে থাকবেন?”
“যতক্ষণ না তুমি ডাকো।”
“যদি কখনোই না ডাকি?”
সাথে সাথে সুব্রত তাচ্ছিল্যের সঙ্গে হাসল রুশার কথা শুনে। মনেমনে বলল, “যখন আবার ফিরলে আমার জীবনে, ভেবেছিলাম কারণে-অকারণে তোমার হাত ধরতে না পারি, তোমার ঠোঁট ছুঁতে না পারি, অন্তত তোমায় দেখে বেহিসেবী সময় পার করে দিতে পারব। কিন্তু এখন বোধ হচ্ছে, আমি এতটাই জঘন্য যে, আমার অনুপস্থিতিতেই তোমার সকল স্বস্তি।”
ভাবতে ভাবতে ব্যালকনিতে এসে দাঁড়াল সুব্রত। এখানে একটা চেয়ার পাতা। সে চেয়ারে বসে বিষণ্ণ দৃষ্টিতে বাইরেটা দেখতে লাগল। যতদূর চোখ যায় শুধুই হাহাকার! যেন কান্নারা ঘুরে বেড়াচ্ছে চারিদিকে। তাকেই খুঁজছে সবাই।
সুব্রত খেয়াল করল, তাঁর চোখের কোণা বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে!
লাঞ্চের সময় যখন দরজায় শব্দ হলো, তখন ব্যালকনি থেকে ঘরে এলো সুব্রত। এসে দেখল, রুশা আধশোয়া হয়ে বসে আছে। চোখে পাতা লেপ্টে আছে। তাঁর বুকের ভেতর চিনচিন করে উঠল। রুশা কাঁদছে! ওর চোখের নিচের অংশ বেশ ফোলা।
কলিংবেলের শব্দ তীব্র হতেই সুব্রত রুশার দিক থেকে চোখ সরিয়ে নিলো। এরপর দরজা খুলে দেখল, রক্তিম দাঁড়িয়ে আছে।
সুব্রতকে দেখেই রক্তিম একগাল হেসে বলল, “ঘুম হলো?”
সুব্রত মৃদুস্বরে বলল, “আমার হয়েছে। কিন্তু ও এখনও শুয়ে আছে। এসো, ভেতরে এসো।”
“না না। ভাবি বিশ্রাম নিক। আমি বরং খাবারটা কিছুক্ষণ পরই পাঠাতে বলছি।”
কৃতজ্ঞতা ভঙ্গিতে হেসে রক্তিমকে বিদায় জানাল সুব্রত। আবার ভিতরে এসে, দরজা আটকিয়ে বিছানার কাছে এলো। রুশার দিকে তাকিয়ে রইল এক দৃষ্টিতে। কতক্ষণ এভাবে কাটল জানা নেই, হঠাৎই রুশা চোখ মেলে তাকালো, এবং সুব্রতকে সরাসরি তাকিয়ে দেখে থতমত খেয়ে গেল!
রুশা উৎকণ্ঠায় জানতে, “কী হলো?”
“না না, মানে কিছু না।” আমতাআমতা করে জবাব দিলো সুব্রত।
রুশা সঙ্গে সঙ্গে কঠিন গলায় বলল, “কারোর অনুমতি না নিয়ে এভাবে তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকা অন্যায়, তা আপনি জানেন না?”
সুব্রত জবাব না দিয়ে আবার ব্যালকনিতে চলে এলো। অকস্মাৎ তাঁর ঠোঁটের কোণে মুচকি হাসি ফুটল। এবং সাথে সাথে নিঃশব্দে বলল, “এইরকম অন্যায় আমি সারাজীবন করতে চাই, রুশা। তুমি শুধু আমার থেকে যাও; আমার একান্ত আপনজন হয়ে!”
সে রাতে করিডোরে বসল সুব্রত আর রক্তিম। রক্তিম বলল, “তোমরা হানিমুনের জন্য এইরকম একটা জায়গা কেন বেছে নিলে আমি বুঝতে পারছি না। এখানে হোটেল থেকে বেরোলে তুমি সেটাই দেখতে পাবে, যা তুমি ঢাকায় প্রতিদিন দেখো।”
রক্তিমের কথার জবাবে সুব্রত হেসে বলল, “কী করব বলো? ভাবার মতো সময় হাতে ছিল না।”
রক্তিম হাস্যজ্বল মুখে বলল, “হানিমুনের জন্য এত তাড়া! বাহ্ বাহ্! তা বিয়ের ক’দিন হলো?”
“এই তো, অল্প ক’দিন।”
“অল্প ক’দিন, ক’দিন?”
সুব্রত মাথা চুলকালো। মুখ টিপে বলল, “দুদিন মাত্র।”
“বলো কী!” কথাটা শুনে রক্তিমের চোখ কপালে উঠে গেল। সে অবিশ্বাসের সুরে বলল, “সত্যিই দু’দিন হলো মাত্র?”
সুব্রত ‘হ্যা’ সূচক মাথা ঝাঁকাল।
রক্তিম ঠাট্টার সঙ্গে বলল, “ভাবি খুব তাড়া দিচ্ছিল বোধহয়?”
সুব্রত এবারও বিষণ্ণ মুখে সামান্য হাসি ফোটাল।
রক্তিম কিছুক্ষণ নীরব থাকল। সুব্রতও কিছু বলল না এর মধ্যে। এরপর রক্তিম নিজেই আবার বলল, “হানিমুনে যেতে হয় খুব সুন্দর জায়গায়। এটা হানিমুনের জন্য সঠিক জায়গা না। তোমাদের এমন কোথাও যেতে হবে, যেখানে গেলে তোমাদের বারবার হানিমুনে যেতে ইচ্ছে করবে।”
সুব্রতর চোখে বিস্ময়! সে বলল, “যেমন?”
রক্তিম আকাশে জ্বলজ্বল করতে থাকা নক্ষত্রের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে, অনেকটা কাব্যিক ভঙ্গিতে বলল, “যেমন ধরো, যেখানে থাকলে প্রকৃতির খুশবু আসবে। ঘরময় সুবাসিত হয়ে থাকবে। মেঘলা দিনে হাত বাড়ালেই বৃষ্টি ছোঁয়া যাবে। চালে বৃষ্টির টুপটাপ শব্দ হবে, কিংবা কাঁচের গায়ে বৃষ্টির দেয়াল। মেঘ ডাকার শব্দে বুক দুরুদুরু করবে। চারিদিক শুধুই শীতলতা থাকবে। তবেই না একটু উষ্ণতার আকাঙ্খা জন্মাবে! সত্যি বলছি, এমন হানিমুন একবার করলে বারবার করতে মন চাইবে।”
রক্তিমের কথা শুনে সুব্রত হতভম্ব হয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল! এরপর সহসা নিজেকে সামলে নিয়ে বলল, “এমন জায়গা কোথায় পাওয়া যাবে?”
“আছে তো।” রক্তিম নড়েচড়ে বসল। আবার বলল, “আমি গতকাল ছুটিতে যাচ্ছি। তোমরা আমার সাথে চলো। আমার বাড়ি রাঙামাটি। গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, তোমরা সারাজীবন মনে রাখবে।”
রক্তিমের মধ্যে গৌরবের আনন্দ। সুব্রত জবাবে মলিন হয়েই বলল, “রুশা অতদূর যাবে না।”
“যাবে না মানে? যেতেই হবে। জায়গাটা এত সুন্দর যে, ভাবি লোভ সামলাতে পারবে না। তাছাড়া তুমি তো আছোই উনাকে রাজি করানোর জন্য। বউ হয় তোমার। পারবে না?”
সুব্রত কিছু বলতে পারল না। মাথা নুইয়ে বসে রইল।
রক্তিম কিছুক্ষণ পর আবার বলল, “এখন তাহলে যাই। কাজ আছে। কাল সকালে কথা হবে নাহয়। ততক্ষণে ভাবিকে তুমি রাজি করাও।”
এবারও জবাবে নির্বিকার, সুব্রত। কীভাবে বলবে, তাকে জোরাজোরি করার কোনো অধিকারই সে রাখে না। রক্তিম চলে গেলে সে-ও ঘরের দিকে যেতে লাগল। দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকে দেখল, রুশা উপুড় হয়ে, বালিশে মুখ গুজে শুয়ে আছে। কাছে যেতেই কান্নার আওয়াজ শুনতে পেলো সে। তাঁর চোখ ঝাপসা হয়ে এলো। সত্যিই মেয়েটার সাথে খুব অন্যায় হয়েছে। ভালোবাসার মানুষকে হারানোর যন্ত্রণা সে ক্ষণে ক্ষণে টের পাচ্ছে। রুশারও ততটাই কষ্ট হচ্ছে, যতটা কষ্ট সে পাচ্ছে।
সুব্রত নিঃশব্দে ব্যালকনিতে দিয়ে দাঁড়াল। মাথার উপর রাতের আকাশ। চাঁদ-তারা জ্বলজ্বল করছে সবখানে। সে ছলছল চোখে আকাশের দিকে তাকিয়ে খোদার কাছে বার্তা পাঠাল, “এ কেমন পরিক্ষায় ফেললে আমাকে? আমি তো কোনো পথই খুঁজে পাচ্ছি না। চারিদিকে শুধুই অন্ধকার। এত আলো তোমার আকাশে। তুমি কি একটু আলোর সংস্পর্শ দিতে পারো না আমাকে?”
৩৯তম পর্ব এখানেই সমাপ্ত। পরবর্তী পর্ব শীঘ্রই আসছে।
গত পর্বের লিংক – https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=853892762222092&id=100028041274793