—–স্যার ডেডবডির পিরিয়ড হচ্ছে!
—-হোয়াট!তোমার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে,, ডেডবডির পিরিয়ড হয় কিকরে??
—আমি সত্যি বলছি স্যার,সেই কারণেই আপনার কাছে ছুটে আসলাম।
—তুমি কি নিজে থেকে দেখেছো,নাকি??
—আমি নিজের চোখে দেখেছি স্যার।
—ওহ,নো। এটা কিকরে পসিবল।আচ্ছা তুমি চলো আমার সাথে।গিয়ে দেখতে হয় ব্যপারটা।
—ওকে স্যার,চলুন।আপনি নিজেই দেখে নিন।।আমরা কি করবো বুঝতে পারছি না।
—চলো তাড়াতাড়ি,কুইক।
ডঃ আরফান তার নার্সের সাথে ছুটে চললেন।
এই হাসপাতালে বিগত আট বছর ধরে জব করছেন তিনি।সে তার লাইফে কোনোদিন এমন কেইস ফেইস করতে হয় নি।
একটা মানুষ মারা গেলে তার শরীরের সমস্তরকমের কার্যক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়,তার শরীর ধীরে ধীরে পঁচতে আরম্ভ করে।
সেখানে একটা মৃতদেহের মাসিক বা মেনস হওয়ার ব্যপারটা কতোখানি অস্বাভাবিক শুধু একজন ডাক্তার বুঝতে পারে,
এমন কথা কোনো মানুষ শুনলে চমকে উঠবে এটাই স্বাভাবিক।
নার্সের সাথে কেবিনের দিকে ছুটে চলছেন ডঃ আরফান।
এতোপর তারা পৌঁছেও গেলেন।।
অপারেশন থিয়েটারে একটা পঁচিশ বছর বয়সী মেয়ের লাশ পড়ে আছে।যাকে চার ঘন্টা আগে মৃত ঘোষণা করা হয়।
কিছু টেকনিক্যাল প্রবেলেমের কারনে তাকে মর্গে শিফট করা সম্ভব হয় নি।
নার্সরা মর্গ শিফট করতে আসলেই এই অস্বাভাবিক ব্যপারটা লক্ষ্য করে।
হুড়মুড় করে অপারেশন থিয়েটারের ভেতরে ঢুকে পড়লো ডঃ আরফান।
একজন নার্স বাইরে বেরিয়ে আসছিলো, অসাবধানতবশত সে ডাক্তারের সাথে একটা জোর ধাক্কা খায়।
—সরি স্যার, সরি।আই’ম এক্সট্রিমলি সরি।
—ঠিক আছে,আসলে ভুলটা আমারই।এভাবে ছুটে আসা ঠিক হয় নি।
ডক্টর নার্সকে সামলে নিয়ে ডেডবডির দিকে ঘুরে তাকাতে লাগলেন।
মূহুর্তেই হতভম্ব হয়ে গেলেন তিনি,
সত্যি তো!
নার্সের কথায় খানিকটা ডাউট থাকলেও এইবার নিজের চোখে দেখে পুরো বিষয়টা ক্লিয়ার হয়ে গেলো তার কাছে।
—আচ্ছা,নাম কি ওনার?
—ওনার নাম পারমিতা।
—সাথে কারা আছে?
—যারা এসেছিলো তাদের কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না,
—আচ্ছা,উনি মারা গেলেন কিভাবে?ওনার মৃত্যুর কেইস টা কি?
—দেখুন স্যার,উনি ওনার কেসটা একটু জটিল।উনি এমনি মারা গেছেন না কেউ মার্ডার করছে সেটা পোস্টমর্টেম রিপোর্ট আসলেই বোঝা যাবে।।
ওনাকে প্রথমে যখন নিয়ে আসা হয় প্রথমে দেখে বেঁচে আছেন এরকমই মনে হচ্ছিল,পরে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে আসার পরে দেখা যায়, সি ইজ নো মোর।অনেক আগেই মৃত্যু হয়েছে তার।
—বুঝতে পেরেছি,কিন্তু একটা কথা বলো এর মেনস কিভাবে হচ্ছে।আচ্ছা তুমি কোনোদিন শুনেছো মৃত নারীর মাসিক হয়
—নো স্যার,,,আর শোনা তো দূরের কথা,এটা কেউ ভাবতে পারেও বলে জানা ছিলো না।
মেয়েটার মুখের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ডঃ আরফান,
কি অদ্ভুত মায়াবী মুখ।
ঠোঁটের কোনায় কোথাও একটু যেন হাসি লুকিয়ে আছে।দেখলে মনেই হয় না এ একটা ডেডবডি,দিব্যি জ্যান্ত মানুষ।
—-স্যার,দেখুন।এতো আবারো মেনস শুরু হয়েছে!
নার্সের কথা শুনেই ডক্টর আরফান সাহেব তার চোখ দুটো বড়ো করে ডেডবডির শরীরের নিচের অংশে তাকলেন।
#পারমিতা
পর্ব—-০১
কাহিনী ও লেখা : প্রদীপ চন্দ্র তিয়াশ।