পঞ্চভুজ তারা পর্ব-৪

0
441

#পঞ্চভূজ_তারা
#সাদিয়া_জাহান_উম্মি
#পার্টঃ০৪
সাদু আফরান আর নিবির এর দিকে অগ্নিশর্মা হয়ে তাকিয়ে আছে।পারলে এক্ষুনি টুপ করে গিলে ফেলে।আফরান আর নিবির এক ঢোক গিললো।নিবির বেক্কল মার্কা একটা হাসি দিয়ে বলে,
–” আরে পিকু তোর কি হয়েছে?এইভাবে তাকিয়ে আছিস কেন?”
সাদুর কোন হেলদোল নেই সে একইভাবে তাকিয়ে আছে।আফরান একটু সাহস জুগিয়ে গম্ভীরভাব এনে বলে উঠলো,
–“, দেখ পিকু এইটা ভার্সিটি আর ভার্সিটিতে আমরা তোর সিনিয়ার।তোর ভাই না এখন আমরা সো আমাদের সাথে ভদ্রভাবে কথা বল।”
পাশ থেকে মনির ও নূরকে উদ্দেশ্য করে বলে,
–” শুনেছিস চুন্নি আফরান কি বলেছে সো রেস্পেক্ট আস ওকে!”
নূর মুখ ভেংচি দিয়ে বলে,
–” আফরান কে যে তার কথা আমাকে শুনতে হবে।বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট।না তো তাহলে কেন শুনবো তার কথা।এইটা ভার্সিটি এখানে সবার সমান অধিকার।”
আফরান নূর এর দিকে একপলক তাকালো বললো,
–” তবুও সিনিয়রদের সম্মান আছে একটা।”
আরিফ সহমত হয়ে বলে,
–“হ্যা হ্যা আমরা সিনিয়ার আমাদের সম্মান আছে।”
আলিফা ভ্রু-কুচকে বলে,
–“ওহ আচ্ছা তাই!আপনারা সিনিয়ার তো আপনারা তো আমাদের রেগিং করতে এসেছিলেন তো রেগিং করুন না।”
আলিফার কথা শুনে আরিফ থতমত খেয়ে গেলো।বলে কি এই মেয়ে সেধে সেধে নিজ ইচ্ছায় রেগিং হতে চাচ্ছে।আরিফ বললো,
–” তোমার মাথা ঠিক আছে কি উল্টা পাল্টা বকছো!”
–“আমার মাথা ঠিক আছে আপনার মাথাই ঠিক নাই।পাতলা হাগুর কারনে আপনার মাথার তার গুলাও দূর্বল হয়ে গেছে।বাড়ি গিয়ে স্যালাইন খান।হাহ আসছে আমাদের রেগিং করতে!”
নিবির এর আবার গা গুলিয়ে আসছিলো।কিন্তু পরে মুহূর্তে নিজেকে স্বাভাবিক করে নিলো।নাহলে আবার আলিশার ওইসব কথা শুনা লাগবে তাই নিজেকে স্বাভাবিক করে নিয়ে আড়চোখে তাকালো আলিশার দিকে।আলিশা হাসছে ওদের কথা শুনে পিংক কালার ড্রেস পড়া,চুল ছাড়া মুখে কোন মেক-আপ নেই।তবুও যেন নিবির এর কাছে আলিশাকে অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে।নিবির হা করে তাকিয়ে আছে আলিশার দিকে।আলিশা হাসতে হাসতেই হঠাৎ খেয়াল করে নিবির তার দিকে তাকিয়ে আছে।সে নিবির এর দিকে এগিয়ে গেলো।ওর সামনে চুটকি বাজিলো।শব্দ শুনে নিবির এর ধ্যান ফিরে আসলে সামনে তাকিয়ে দেখে আলিশা দাড়িয়ে আছে।নিবির হকচকিয়ে এদিক সেদিক তাকাতে লাগলো।তা দেখে আলিশা হেসে জিজ্ঞেস করে,
–“কি হয়েছে?আর ইউ ওকে?না-কি পেটে বাবুরা ফুটবল খেলছে!”
নিবির চোখ বড় বড় করে তাকালো।আলিশা মুখ চেপে হাসছে।নিবির তেড়ে গিয়ে বললো,
–“লিসেন! তুমি এইসব ফালতু কথা বলা ওফ করো নাহলে খুব খারাপ হয়ে যাবে।”
আলিশা বললো,
–“আমার কথা আপনার ফালতু লাগে।”
নিবির ভ্যাবলেশহীনভাবে বললো,
–“ইয়েস!তুমি আর তোমার কথা দুটোই ফালতু।”
আলিশা রেগে মেগে শেষ,
–“শয়তান পোলা,শাকচুন্না,শাওরা গাছের পেত্নির চার নাম্বার জামাই,বট গাছের বুড়া ল্যাংরা জ্বিন,উগান্ডার উল্লুক কোথাকার,গোলাপী মহিষ,সাদা হাতি,কালা ইন্দুর,পিচাশীনির এক্স,কালা কাউয়া,বেইমান এর বেইমান,লাল বান্দর কোথাকার।আপনার কপালে বউ জুটবে না।জুটলেও চুরেল বউ জুটবে।যে দিন রাত আপনাকে নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরাবে…..”
আলিশাকে আর বলতে না দিয়ে নিবির চিল্লিয়ে উঠলো,
–“স্টোওওওওওওওওপপপপপ!!!”
নিবির মেরাজ এর গায়ে ঢলে পড়লো।মেরাজ তাড়াতাড়ি ওকে ধরলো।বললো,
–“কিরে কি হয়েছে ঠিক আছিস তুই?”
নিবির নিভু নিভু চোখে বলে,
–“দোস্ত এই মেয়ে মানুষ না।দোস্ত মানুষ না।”
মেরাজ ভ্রু-কুচকে বলে,
–” এ মেয়ে আস্তো পাগল।নিজে তো পাগল সাথে আমাকে এইসব উদ্ভব কথাগুলো শুনিয়ে আরো পাগল করে দিবে। আল্লাহহহহহহহহহ গো এইগুলা কি ছিলো??।”
আলিশা ভাব নিয়ে বলে,
–“এইগুলা মাই স্পেশাল গালি। ”
নিবির ব্যাগ থেকে পানির বোতাল বের করে ঢক ঢক করে সব পানি এক নিশ্বাসে খেয়ে বললো,
–“এইগুলা কেমন গালি আল্লাহ আমি আমার জীবনে এইসব শুনি নাই।তুমি আসলেই এলিয়েন।”
মেরাজ পাশ থেকে বললো,
–“শুধু আলিশা না,ওরা সব কয়টা এলিয়েন স্পেশালি এই মিম মানে ডিম।”
মিম মেরাজ এর কথা শুনে রেগে ধুপ-ধাপ পা ফেলে এসে দিলো মেরাজ এর পায়ে একটা পারা দিয়ে।
–“,আহহহহহহহ!মা গোওওওও।”মেরাজ পা ধরে লাফাতে লাগলো।
মিম নিজের চুলগুলো পিছনের দিক ঠেলে দিয়ে বললো,
–“ঠিক হয়েছে একদম। আর আমাকে ডিম বলবেন।আমার একটা সুন্দর নাম আছে মিম।তা না ডেকে আমাকে ডিম ডিম বলেন তাই এইটা তার সাজা।”
সাদু বলে উঠলো,,
–“গাইস চল আমাদের ক্লাসে যেতে হবে।[আফরান আর নিবিরকে উদ্দেশ্য করে]তোদের দুটোকে আমি পরে দেখে নিবো। শুধু বাড়ি ফিরিস।”
নূর ও মনিরকে থ্রেড দিলো,
–“রেডি থেকো ভাই।বাড়ি একবার যাই এটার মজা হারে হারে বুজাবো।”
বলেই সাদুরা চলে গেলো।আর মনির রা একে অপরের দিক তাকিয়ে ঢোক গিললো।
আফরান মনিরকে পিছন থেকে একটা লাত্থি দিলো।মনির “” ও মাগো” করে চিৎকার করে উঠলো।
–” সালা মারিস কেন?ব্যাথা পাইছি না।”
আফরান দাতেদাত চেপে বললো,
–“হারামী ব্যাথা পাওয়ার জন্যেই তো দিয়েছি।ইসস চল আমরা ভার্সিটির সিনিয়ার রেগিং করি[ব্যঙ্গ করে]সালা এখন আমাদের ফাসায় দিলি আজকে বাড়িতে গেলে কিযে হবে।”
মনির আরিফ এর দিকে তাকালো।তারপর বলে,
–“আমায় বলছিস কেন?এই আরিফ্ফা আগে ভাব নিছে ওইটা বলিস নাই কেন?ভাব নিয়া তো একেবারে উল্টায় দিছিলো।তাহলে এখন নিমা বিড়াল হইছে কেন?ওরে কিছু বলিস না।”
নিবির রাগে বলে উঠলো,
–“এই সালার জন্য আমাকে ওই পাগল মেয়ে আমাকে কতোগুলা অপমান করে গেলো। আজকে আমি তোরে খাইছি আরিফ।”
নিবির এর কথা শুনে আরিফ দে দৌড় ওকে আর পায় কে।এক দৌড়ে পগাড়পার এদিকে ওদের দৌড়াতে দেখে মনির,আফরান,মেরাজ ও ওদের পিছু পিছু ছুটলো।এদিকে সব মেয়েরা হা করে তাকিয়ে আছে ওদের দিকে।ভার্সিটির পাচজন ক্রাশবয় এইভাবে ছুটাছুটি করছে হা করে তাকিয়ে তো থাকবেই।এদিকে সাদু,নূর,আলিশা,আলিফা,আর মিম সব মেয়েদের এইভাবে হা করে তাকিয়ে থাকতে দেখে সেদিকে তাকায় দেখে ওর মনির’রা ছুটাছুটি করছে।সাদু ভ্রু-কুচকে বলে,
–“,এই মেয়েরা ওদের এইভাবে দেখছে কেন আমার ভাই আর তার উল্লুক বন্ধুদের দিকে।”
নূর চোখ উল্টিয়ে বলে,
–” মনির ভাইয়া,মেরাজ ভাইয়া আর আরিফ ভাইয়া ভার্সিটির সবার ক্রাশ আর এখন তো তোর উল্লুক ভাই আর নিবির ভাইয়াও আছে মানে আরো ২ টা ক্রাশ। তাই এইভাবে হা করে তাকিয়ে আছে।”
সাদু বমি করার মতো করে বলে,
–“ওয়াক!! এই পোলাগো উপর ক্রাশ না খেয়ে আমি পচা ডিমের উপর ক্রাশ খাবো তাও ভালো।”
পাশ থেকে মিম ধুম করে সাদুকে একটা কিল দিয়ে দিলো।সাদু পিঠে হাত ডলতে ডলতে বলে,
–“,কিচ্ছে মারলি কেন আমারে?”
–“শয়তান মাইয়া তুই পচা ডিম কারে বললি?”
আলিশা হেসে দিয়ে বললো,
–“আরে গাধি তোরে বলে নাই।তুই আজীবন গাধিই থাকবিই সাদু বলেছে একটা আর বুজেছিস একটা।ও বলেছে যে মনির ভাইয়াদের উপর ক্রাশ না খেয়ে পচা ডিমের উপর ক্রাশ খাওয়া ভালো।আর তুই যেহেতু নিজেকে পচা ডিম ভাবিস না তাহলে তুই চ্যাতলি কেন?”
মিম সবটা বুজতে পেরে ভয়ে ভয়ে সাদু’র দিকে তাকালো দেখে সাদু দাতে দাত চেপে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।মিম আমতা আমতা করে বলে,
–” সাদু বেবি জানু কলিজা হাড্ডি গোস্ত আমার।”
–“তুই দারা মিম এর বাচ্চা ডিম তুই শুধু শুধু আমাকে কিল দিলি কেন?তুই আজকে শেষ।”সাদু তেরে আসতেই মিম আলিশাকে ধাক্কা দিয়ে দিলো দৌড়। সাদুও ওকে ধরতে দৌড় দিলো।এদিকে আলিশা ধাক্কা খেয়ে পড়লো আলিফার গায়ে। আলিফা ভর সামলাতে না পেরে আলিশাকে নিয়েই নূর এর উপর পড়লো।
–“আল্লাহ গোওওও। খাসি পড়ছে আমার উপর। আমার কোমড় শেষ।উঠ আলুউউউউউ।”
আলিফা করুন স্বরে বলে,
–“এই আলিশা মুটি না উঠলে আমি উঠবো কিভাবে?”
আলিফার কথা শুনে আলিশা তাড়াতাড়ি উঠে দাড়ালো।এদিকে আলিশা উঠতেই আলিফা উঠে, নূরকেও উঠিয়ে দিলো।
আলিশা রাগে ফোসফোস করতে করতে বলে,
–” আমি মুটি তাই না আমি মুটি।আজকে তোকে বুজাবো মুটি কে?”
আলিফা এদিক ওদিক তাকালো মনে মনে বললো,
–” আলু আলুরে!ধ্যাৎ আমি নিজের নামকে নিজেই ব্যঙ্গ করছি বলদি কোথাকার।এখন আমাকেও মিম এর মতো পালাতে হবে।’ ভাগ মিলকা ভাগ’ ফিল্মের মিলকা সিংয়ের মতো দৌড় দেরে আলিফা।”
আলিফাও পালালো ওকে ধরতে আলিশাও ওর পিছে পিছে চলে গেলো।এদিকে নূর বেক্কল হয়ে তাকিয়ে আছে বললো,
–” যাহ বাবা! সবাই দেখি ম্যারাথন রেস খেলছে তাহলে আমি বাদ যাবো কেন আমি খেলবো।”
বলে নূর ও দৌড়।
মিম এর পিছে সাদু,সাদুর পিছে আলিফা,আলিফা পিছে আলিশা,আলিশার পিছে নূর পুরো ভার্সিটির মাঠ দিয়ে গোল গোল দৌড়াচ্ছে।ওদের এইভাবে দৌড়াতে দেখে মনির,আফরান,নিবির,আরিফ আর মেরাজ নিজেদের দৌড় থামিয়ে দিয়ে আহাম্মক হয়ে তাকিয়ে আছে।ভাবছে আজকে কি ম্যারাথন রেস ডে।মানে সবাই মিলকা সিংয়ের মতো খালি দৌড়াচ্ছে!কি জানি হতেও পারে।”

চলবে,,,,,,,

ভূল ত্রুটি ক্ষমা করবেন।আসলে মাথাটা ফাকা ফাকা লাগছে কি লিখবো ভেবে পাচ্ছি না।উল্টা পুল্টা লিখি দিয়েছি।জানি পার্টটা ভালো হয় নাই।আমার অনেক মন খারাপ?।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here