নীলিমায় কালো মেঘ
পর্ব_২
– এই শরীর নিয়ে তুমি রান্নাঘরে কি করছো ,মা? আমিই তো করতে পারতাম।
– কপাল আমার ! ছেলের বউ থাকতে আমার ছেলে সারাদিন অফিস করে এসে রান্নাঘর সামলাবে। বাহ!
– মা, এমন কিছুইনা ! ভাবনার অফিস থেকে আসতে আসতে দেরী হয়ে যায়। ওর অফিস আমার থেকে অনেক দূরে। তাছাড়া সারা রাস্তা অনেক জ্যাম থাকে । তাই ও যদি এসে সবকিছু রেডি পায় ওর রান্নাটা তাড়াতাড়ি হবে। এজন্যই আমি কিছুটা কাজ এগিয়ে রাখি।
– তাহলে এমন চাকরী করছে কেনো?
– এসব কী বলছো মা? ওর যোগ্যতা আছে , শিক্ষিতা। তাই চাকরী করছে। মানুষ হাজার চেষ্টা করেও চাকরী পায়না। ও তো নিজ যোগ্যতায় পেয়ে গেছে।
– মেয়েদের আসল কাজ রান্নাঘরে। যে চাকরি করে সংসার সামলানো সম্ভব না সেই চাকরি করার দরকার কী?
– মা, এসব কেমন কথা! বড় আপাও তো চাকরি করছে।
– তোর বড় আপা সংসার সন্তান সামলেই চাকরি করছে। কোনোদিন দেখছিস জামাইকে রান্নাঘরে ঘুটুর ঘাটুর করতে! পুরুষ মানুষ পুরুষের মত থাকতে শেখ । নইলে একসময় বউয়ের কাছে পায়ের জুতার সমান দামও পাবিনা। তুই রান্নাঘরের কাজবাজ করিস তো করিস আবার ছুটির দিনে বউয়ের কাপড় চোপড়ও ধুয়ে দিস! কি অধঃপতন হয়েছে তোর। মানুষ বিয়ে করে শান্তির জন্য , আরামের জন্য। আর আমি ছেলে বিয়ে দিয়েছি বউয়ের গোলামীর জন্য। ছিঃ ছিঃ । এর চেয়ে মেসে থাকতি সেই ভালো ছিলি। কি দরকার ছিলো এই বিয়ে শাদি করার।
– মা, বড় আপা স্কুলে চাকরি করে। গ্রামে থাকে। বাড়ীর কাছেই স্কুল। তাই সংসার সামলাতে কষ্ট হয়না। ভাবনা ব্যাংকে কাজ করে। ভোর বেলা বের হয় আর কত রাতে আসে তা তো তুমি দেখছোই। আগে বল তোমার কান ভরেছে কে? আর আমি ঘরের কাজ করলে অসুবিধা কোথায়? কাজের আবার ছেলেমেয়ে ভেদাভেদ আছে নাকি? আজকাল ছেলে মেয়ে সবাই ঘরেবাইরে সমান তালে কাজ করছে। ভাবনা টাকা কামাচ্ছে আমিও কামাচ্ছি। আমার যেমন কষ্ট হচ্ছে ওরও তেমন হচ্ছে। বাসায় আমি আগে এসে যদি ওর একটু কাজ এগিয়ে রাখি তাতে দোষের তো কিছু দেখছিনা। তুমি অযথাই চিন্তা করছো। ও আমাকে কোনোকিছুই করতে দিতে চায়না। আমিই জোর করে করি ,মা।
– তাহলে ভাবনাকেও বল স্কুলে চাকরি করতে। যে চাকরিতে সংসার সামলানো যায়না সে চাকরি করার দরকার কী? একটা বাচ্চাকাচ্চা হলে তখন কি করবি? নাকি বাচ্চাকাচ্চাও তুই পালবি ঘরে বসে আর বউ চাকরিতে পাঠাবি? নাকি তোর বউ বাচ্চা নিবেইনা?
আবির খুব ক্ষেপে গেলো এবার! চিৎকার করে বলে উঠলো ,
-মা , তখনেরটা তখন দেখা যাবে। তোমাকে এসব কানপড়া দিছে ঐ ভাবি, না? মহিলা সারাক্ষণ ভাবনার পিছে লেগে থাকে। ভাবনা ঠিকই বলেছে এখানে আর থাকা যাবেনা। নতুন বাসা খুঁজতে হবে ভাবছি। আর হ্যা, চাকরি ইচ্ছেমত চাইলেই পাওয়া যায়না। আজকাল চাকরির বাজার কতটা ভয়ানক সেটা নিশ্চয়ই আমাকে একবছর বেকার থাকতে দেখে তোমার ধারণা হয়েছে।
– আবির! আমি যা বলছি তোর ভালোর জন্য বলছি। তোর সংসারের এমন বেহাল দশা দেখে আমার সহ্য হচ্ছেনা।
– আমাকে নিয়ে এত ভেবনা। আমি যথেষ্ঠ ভালো আছি । শুধু দোয়া করো। গতকাল একবার ভাবনার বেতনের টাকা নিয়ে কি হাঙ্গামা করলে । প্লিজ , আর নতুন কোনো কাহিনী করো না।
– এখানে কাহিনীর কি হলো? তার মানে কি ? তুই কি তোর বউয়ের টাকায় ফ্লাট ভাড়া করে থাকতে চাস নাকি!
– থাকলে অসুবিধা কোথায়?
– বউয়ের টাকায় বাসা নিয়ে থাকবি তোর লজ্জা করবেনা? কাপুরুষ!
– মা, বড় আপার বেতনের টাকার তো চেহারা পর্যন্ত বড় আপা দেখতে পায়না। মাস শেষ হবার আগে দুলাভাই চেক সাইন করিয়ে নিয়ে যায়। সেটা কি তবে খুব ভালো কাজ । তুমি তো বড় দুলাভাইয়ের সারাক্ষণই প্রশংসা করতে থাকো।
– আবির, বড় জামাই চেয়ারম্যান মানুষ। আর তাছাড়া শাহানার চাকরিটা সেই দিয়ে দিছে। শাহানার টাকার উপর তার হক আছে।
– তাইলে আমারও ভাবনার ইনকামে হক আছে। নাকি আমি চেয়ারম্যান না তাই বউয়ের টাকা ছোঁয়ার ক্ষমতা নেই।
– আবির! সোজা ব্যাপারটা কেনো বুঝিস না? তুই সামান্য একটা চাকরি করিস। আজ আছে কাল নাও থাকতে পারে। তোর চাকরির কোনো নিরাপত্তা নেই। অথচ তোর বউ একটা ভালো চাকরি করে। ক’দিন বাদে প্রমোশন পেয়ে সিনিয়র অফিসার হয়ে যাবে। আর তোর কি পরিচয়?
– তাতে কি হয়েছে?
– তোর থেকে তোর বউয়ের সম্মান বেশি হবে তখন। তোর কি মনে হয় এই বউ তোকে দু আনারও সম্মান করবে ? কোনোদিনও না। এখনই তোকে দিয়ে সংসারে সব কাজ করায় তখন দেখবি আরো কি খারাপ অবস্থা হয়। আমি মা হয়ে এটা কী করে সহ্য করবো? আমার জায়গা তুই হলেও সহ্য করতে পারতিনা।
– মা, কীসব উল্টাপাল্টা ভাবছো। এমন কিছুই হবেনা। এবার বুঝতে পারছি কেনো তুমি ভাবনার চাকরি করা পছন্দ করোনা। তুমি আসলে আমাকে নিয়ে বেশি চিন্তা করছো। আমি ভালো চাকরির চেষ্টা করছি। ইনশাআল্লাহ, পেয়েও যাবো। ওর যোগ্যতা আছে তাই ভালো চাকরি পেয়ে গেছে এটা কি ওর অন্যায়? আমিও পেয়ে যাবো । দোয়া কর শুধু।
– কি জানি বাপু। তবে আমার কিছুই ভালো ঠেকছেনা। বুঝেশুনে থাকিস। ভাবনা বড় ঘরের মেয়ে। তার উপর এত টাকা ইনকাম করছে দেখিস নিজের মূল্য হারাস না। তোর দাদী সবসময় একটা কথা বলতো, “যে পুরুষ ঘরে বউয়ের সম্মান পায়না, সে বাইরেও কারো কাছে সম্মান পায়না। এমনকি নিজের বাচ্চাদের কাছেও না।“ তাই নিজের সম্মান যাতে বজায় থাকে সেইভাবে চলার চেষ্টা করিস। নিজেকে বউয়ের কাছে এত সস্তা করিস না। যত তাড়াতাড়ি পারিস একটা বাচ্চা নে। এটাই তোর জন্য ভালো হবে। বছর তো প্রায় ঘুরে এলো। এখনো কিসের অপেক্ষা করছিস! তাছাড়া মেয়েদের বয়স কম থাকতে বাচ্চাকাচ্চা নেয়া ভালো । দেখিস না আজকাল মেয়েদের বয়স একটু বেড়ে গেলেই কত সমস্যা দেখা যায়।তাই আগেভাগে সাবধান থাকা ভালো।
– মা, তুমি এত কিছু চিন্তা করোনা, প্লিজ। ডাক্তার তোমাকে নিরিবিলি থাকতে বলেছে। অসুস্থ হয়ে যাবে।
– ছেলের এমন দশা দেখলে নিরিবিলি কি আর থাকা যায়? আরেকটা কথা তো তোকে বলাই হয়নাই।
– কি বল!
– তোর বড় ফুপুর ছেলে কামরুলের বউ নাহার আছেনা!
– হুম, কি হইছে ভাবির?
– নাহার গতমাসে ওর বড় বোনের দেবরের হাত ধরে চলে গেছে। কামরুল বেচারা সেদিন সৌদি থেকে ফোন করছিলো। কি কান্না ছেলেটার! সামনের মাসে দেশে আসছে। একটা বাচ্চা রেখে কীভাবে গেলো মেয়েটা? ছি ছি! আজকালকার মেয়েদের হায়া শরম , দয়া, মায়া কিছুই নেই। কত্ত কি দিছে ওরে কামরুল! সোনা দানা সব নিয়ে ভাগছে। তোর ফুফা থানায় মামলাও করছে নাহারের নামে। কি জানি কি হয়!
– কি বলছো এসব? আহারে! কামরুল ভাই আর তার বাচ্চাটার জন্য খারাপ লাগছে। নাহার ভাবি এটা কি করে করলো? উনাকে তো কত ভালো মনে হতো আমার।
– সেটাই। উপরের চেহারা দেখে কি মানুষের ভেতর বোঝা যায়? মানুষের মন ! পরিবর্তন হতে কতক্ষণ! বাচ্চাটাকে দেখতে গিয়েছিলাম ঢাকা আসার আগের সপ্তাহে। মুখের দিকে তাকানো যায়না। হায়রে মা!
-আহারে শুনে খুব খারাপ লাগলো।
– এজন্যই তো বলছি, বাবা। মানুষের বিপদ বলে কয়ে আসেনা। আগে থেকেই সাবধান হতে হয়। এমন ধরণের বিপদ কি সহ্য করা পুরুষ মানুষের জন্য খুব সহজ? কামরুল একদম ভেঙ্গে পড়েছে। দেশে আসলে তোর ফুফু ফুফা ধরে বেঁধে আবার বিয়ে দিবে। এলাকার মানুষ কিসব আজেবাজে কথা বলছে। তুই একটু বৌমার ব্যাপারটা ভাবিস। আমি তো আজ আছি কাল নেই। কিন্তু আল্লাহ না করুক তোর সাথে এমন কোনো ঘটনা ঘটলে আমি মরে গেলেও শান্তিতে থাকতে পারবোনা, বাবা? তুই নিজের পছন্দে বিয়ে করেছিস আমি মেনে নিয়েছি। কিন্তু এসব দেখে আমার মোটেও ভালো ঠেকছেনা। বউ কত রাত করে বাসায় ফেরে। তোর চাইতে বউয়ের ইনকাম বেশি। খুব অস্বস্তি লাগছে আমার।
– কার সাথে কাকে মিলাচ্ছো? মা, কত বড় বড় ঘর থেকে ভাবনার সম্মন্ধ এসেছে কিন্তু ও সবকিছুকে পায়ে ঠেলে আজ আমার ঘরের বউ। ও যদি এমন মেয়ে হতো তবে কখনই আমাকে বিয়ে করতোনা। তুমি এসব ভেবে বিপি হাই করোনা ,প্লিজ!
– কি জানি বাপু। দুনিয়াদারী তোদের থেকে তো কম দেখিনাই। অনেক ভালো মানুষকেই দেখেছি কি থেকে কি হয়েছে? মানুষের মন সে তো ক্ষণে ক্ষণে বদলায়। আপন আমাদের ফেরার জন্য টিকেট কাটতে গেছে। কালকে সকালে হয়তো চলে যাবো।
– তোমার ডাক্তার দেখানো শেষ ,মা?
– আবার পনেরো দিন পর আসতে হবে।
– পনেরো দিনের জন্য আবার বাড়ীতে যাবে কেনো? এতটা পথ জার্নি করে আসতে যেতে কষ্ট হবে তোমার। একসাথে ডাক্তার দেখানো শেষ হোক তারপরে যাও।
– জার্নির কষ্টের চেয়ে তোর এখানে থাকাটাই বেশি কষ্টকর। তোদের দুজনের থাকায় অসুবিধা হচ্ছে । সারাদিন অফিস করে এসে তুই ফ্লোরে ঘুমাস আমার কাছে খারাপ লাগেরে ,বাবা। তাছাড়া অনেকদিন ধরে থাকছি ।বাড়িঘরের কি অবস্থা আল্লাহ পাক জানেন। আশপাশের মানুষ কেমন তা তো জানিস! বাড়ী না থাকলে বাড়ীর কোনোকিছুই থাকেনা। গাছে ক’টা আম ধরেছে। কাঠাল ধরেছে। যেয়ে দেখবো কিছুই নেই। আপনটাকে পাঠিয়ে দিবো সেই উপায়ও নেই। ও তো রান্নাবান্না কিচ্ছু করতে পারেনা। সমস্যা হবেনা আমার। আপনকে ট্রেনে টিকেট কাটতে বলেছি। খুব বেশি অসুবিধা হবেনা যেতে।
ভাবনা আর আবির নতুন বাসায় উঠেছে দিন সাতেক হলো। টুকটাক গুছিয়ে নিয়েছে। দুজনে মিলে।
ভাবনা আর আবিরের ব্যস্ত সিডিউলে এভাবেই দিন যাচ্ছে। সেদিন অফিস ছুটির শেষে ভাবনা বাসায় ফেরার জন্য রাস্তায় কিছুই পাচ্ছেনা। খুব ঝড়বৃষ্টি হয়েছে সারাদিন। তাই রাস্তায় পরিবহন খুব কম। দু চারটা যাও মিলছে তাতে উপচে পরা ভিড়। ভাবনা কিছুতেই উঠতে পারছেনা।
হঠাৎ পেছন থেকে মাছুম এসে দাঁড়ালো। মাছুম ভাবনার কলিগ। ওর বাসাও মিরপুরে। মাছুম মোটর সাইকেলে আসা যাওয়া করে।
– কিছু পাচ্ছিনা মাসুম ভাই । কি করি বলেন তো! আকাশের অবস্থা দেখে তো মনে হচ্ছে আবার ঝড়বৃষ্টি শুরু হবে। উফ! কি যে করি! পরপর কয়েকটা বাস মিস করলাম। সিএনজি দু একটা যা পাচ্ছি তারা ভাড়া চাচ্ছে আকাশছোঁয়া । ব্যাটারা নাম্বার ওয়ান জোচ্চর! যাত্রীরা বিপদে পড়েছে দেখলে ভাড়া ডবল হয়ে যায়।
– হুম! আরো দেখেছে এত রাতে একটা মেয়ে মানুষ একা দাঁড়িয়ে আছে । অমনি ভাড়া হুহু করে বেড়ে গেলো। অমানুষগুলি। মানুষের বিপদআপদ দেখলে এমনই করে। এক কাজ করেন ! আমার পেছনে উঠে পরুন।
– না , মানে!
– আরে এত না মানের কিচ্ছু নেই। কিছুই পাবেন না এখন। যত দেরি হবে ভাড়াও বাড়তে থাকবে।
ভাবনার অগত্যা রাজী হওয়া ছাড়া আর উপায়ও নেই। এই মুহূর্তে এটাই সবচেয়ে ভালো সল্যুশন। কিন্তু আবির জানতে পারলে কি ভাববে সেটা নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলো। ইদানিং আবির যেন কেমন হয়ে গিয়েছে। সবকিছুই একটু সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখে।
কিন্তু ভাবনার এখন কিছুই করার নেই। এখন এত ভাবাভাবির সময়ও নেই। পরেরটা পরে দেখা যাবে। সে মাছুমের পেছনে উঠে গেলো।
আবির আকাশের অবস্থা দেখে খুব চিন্তায় পড়ে গেছে। কিছুক্ষণ ধরে ফোন করেও পাচ্ছেনা। বারবার বারান্দায় যেয়ে পায়চারি করছে আর আকাশের অবস্থা দেখছে । হঠাৎ মোটর সাইকেলের শব্দ শুনে নিচের দিকে তকিয়ে সে দেখলো ভাবনা নামছে। নামার পরে আবার লোকটার সাথে হাসিমুখে কথা বলছে।
ভাবনা মাসুমকে বিদায় দিয়ে তিনতলায় উঠে বাসায় কলিংবেল বাজানোর আগেই দেখে আবির তার অপেক্ষায় দরজা খুলে দাঁড়িয়ে আছে।
– যাক, এসেছো তবে! কি চিন্তায় ছিলাম।
– কি যে অবস্থা! আর বলোনা ! রাস্তায় কিচ্ছুই মিলছিলোনা।
– কিসে এসেছো তবে?
– হুন্ডাতে!
– পাঠাওতে? এতরাতে হুন্ডায় উঠা ঠিক হয়নি তোমার।
– আরে নাহ! মাসুম ভাইয়ের।
– মাসুম ভাই আবার কে?
– আমার কলিগ। তোমাকে বলেছিলাম না। ঐ যে কয়েকদিন আগেই জয়েন করেছে তোমাকে বলেছিলাম । খুবই হেল্পফুল। অফিসেও কারো কোনো হেল্প লাগলে সে হাসিমুখে এগিয়ে আসে। উনি না থাকলে যে আজ কি অবস্থা হতোনা।
ভাবনার কথা শুনে মুখটা অন্ধকার হয়ে গেল যেন আবিরের। ব্যাপারটা ভাবনার চোখ এড়ালো না। কিছুক্ষণ চুপচাপ থেকে আবির বলল,
– এক কাজ করি!
– কি?
– তোমার অফিসের ঐদিকে বাসা নেই। আমি কালকেই এ বাসা না করে আসবো।
– তোমার অফিস তো দূরে হয়ে যাবে। তাছাড়া ঐ এলাকায় বাসা ভাড়া খুব বেশি ।
– তাতে কি! আমার সমস্যা হবেনা। তুমি কাল থেকে ওই এলাকায় বাসা দেখ! আমার ছুটির দিনে দুজনে মিলে যেয়ে দেখব।
কথাগুলি বলতে বলতে আবির রুমে চলে গেলো।
– কি ব্যাপার! তুমি খাবেনা?
– নাহ! ক্ষুধা নেই। টেবিলে খিচুড়ির প্যাকেট আছে। খেয়ে নিও। আজ কমিশন পেয়েছিলাম তাই এনেছি। আজ আর রান্নাবান্নার ঝামেলায় যেতে হবে না।
– তুমি না খেলে আমিও খাবোনা। ফ্রিজে রেখে দিচ্ছি । কি এমন হলো? খাবেনা কেনো?
– এমনিতেই!
– বুঝতে পেরেছি। মাসুম ভাইয়ের সাথে এসেছি বলে রাগ করেছো?
– না, না ! এটাতে রাগ করবো কেনো রাগ করার আবার কি আছে? তুমি বিপদে ছিলে। তোমাকে হেল্প করেছে। নরমাল ম্যাটার!
– তবে? আচ্ছা ঠিক আছে। আমিও খাবোনা। চল ঘুমিয়ে পড়ি। বলে কপট রাগ দেখিয়ে ভাবনা খাবার ফ্রিজে তুলে রাখতে যাছিলো তখন আবির এগিয়ে এসে বলল, ঠিক আছে । প্লেট আনো।
ভাবনা মুচকি হাসি দিয়ে বলল, আচ্ছা আনছি।
চলবে……