#নির্মোচন ❤
#পর্বসংখ্যা_১২ .
#ফাবিয়াহ্_মমো .
বড্ড অস্থিরভাবে পায়চারি করছেন সুফিয়া। হুট করে কী হলো মেয়েটার? কেন বেদম শব্দ করে দরজা লাগিয়ে দিলো? কেন চোখ-মুখের অবস্থা শোচনীয় করে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরেছে? আফসানার সাথে কথা বলার পর অনেকবার তিনি দরজার বাইরে থেকে ডাকাডাকি করে ফিরে এসেছেন, কোনো লাভ হয়নি। ফিমা দরজা খুলছে না। ভেতর থেকে বোধহয় নব্ ও ছিটকিনি দুটোই লাগিয়ে রেখেছে। কেন যেন সুফিয়ার মনে হচ্ছে ফিমা সাধারণ কিছুর জন্য ওরকম অদ্ভুত আচরণ করছে না, বরং জঘন্য কোনো পরিস্থিতির ভয়ে অমন আতঙ্কগ্রস্তের মতো করছে। দুপুরের তরকারিটা দেখার জন্য রান্নাঘরের দিকে পা চালালে হঠাৎ আকস্মিকভাবে পা থামালেন তিনি। চট করে মুখটা পিছু ঘুরিয়ে প্রশ্ন-বিহ্বল চোখে ডাইনিং-টেবিল থেকে আসা শব্দময় বস্তুটার দিকে এগোলেন দ্রুত। টেবিলে একটা বাজতে থাকা স্মার্টফোন দেখে প্রথম দফায় চিনতে না পারলেও পরক্ষণে সেটা হাতে তুলতেই বুঝতে পারলেন এটা নাবিলার ফোন। মেয়েটা বোধহয় তাড়াহুড়ো করে জুতা পরতে গিয়ে হাতের ফোনটা এখানেই ফেলে গিয়েছে। পড়াশোনা না জানা সুফিয়া বাটন ফোন চালাতে শিখলেও স্মার্টফোন ব্যবহার করতে এখনো বেশ অপারগ। ফলে আঙুলের স্পর্শে রিসিভের জায়গায় টাচ লেগে যেতেই কলের বিপরীত প্রান্ত থেকে পুরুষ কণ্ঠটা ‘ হ্যালো ‘ বলে উঠল। প্রায় ঘাবড়ে যাবার মতো আঁতকে উঠলে তৎক্ষণাৎ কলটা কাটতে গেলেন তিনি, কিন্তু সেটা কাটতে না পেরে বাধ্য হয়ে সেটা কানে চাপতে বাধ্য হলেন। অপরিচিত পুরুষ কণ্ঠটা কেমন অধিকারবোধের মতো বলে যাচ্ছে ফিহাকে,
– কথা বলছ না কেন ফিহা? তোমার ওখানে কী নেটওয়ার্ক ডিস্টার্ব? হ্যালো?
সুফিয়া কণ্ঠটা চিনতে পেরে তৎক্ষণাৎ বিষ্ময়বিমূঢ় দৃষ্টিতে চমকে গেলেন। গড়পড়তা বাদ দিয়ে তিনি শান্তভাবে পরিস্থিতিটা সামাল দিতে ফিহার অনুরূপ কণ্ঠে চালাকিস্বরূপ বললেন,
– হুঁ,
ওপাশের ব্যক্তি বোধহয় কিয়ৎক্ষণের জন্য অবাক হলেও কণ্ঠের অমন বাচনভঙ্গি শুনে তেমন একটা গুরুত্ব দিলো না। বরং নিজের কথাটা জানাবার জন্য তৎপর হয়ে বলল,
– তোমার কণ্ঠ এমন শোনাচ্ছে কেন? ঠান্ডা লেগেছে? আচ্ছা যে কথা বলার জন্য কল দিয়েছি সেটা বলি আগে। আমার মনে হয় ঢাকায় ওভাবে বাসাবাড়ির ভেতর বন্দি না থেকে তোমার উচিত নারায়ণগঞ্জে ফিরে যাওয়া। তুমি তোমার বান্ধবীদের সাথে ওখানকার কোনো প্রাকৃতিক পরিবেশে ছোটোখাটো একটা ট্যুর দিতে পারো। চমৎকার একটা অভিজ্ঞতা হবে, সেই সঙ্গে তোমার মাইন্ডটাও আগের মতো ঝরঝরে হয়ে যাবে। আমি কী তোমার বাবার সাথে এ বিষয় নিয়ে কথা বলব? যদি মনে হয় যে আঙ্কেল তোমার কথা বুঝবেন না বা পারমিশন দিবেন না তাহলে তুমি আমাকে বলতে পারো।
চুপ করে সব কথা শোনার পর কীভাবে ফিহার কণ্ঠে কথা চালাবেন হদিশ পাচ্ছেন না তিনি। শুরু থেকেই ইয়াসিন ছেলেটার প্রতি তাঁর ইন্দ্রিয়শক্তি অদ্ভুত কিছুর আভাস দিয়ে যাচ্ছে, তার উপর কথাবার্তার ছিরি দেখলে মনে হয় ব্যাটা বোধহয় স্যারের চেয়ে বেশি কিছু। মুখ ভরে ভরে গাiলি এলেও এই মূহুর্তে তিনি অসীম জোর খাটিয়ে মুখটা সামলে নিলেন। ঠিক তখনই উনার মাথায় চট করে পাওয়ার বাটনটার কথা মনে পড়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে তিনি ফোনের সাইডে থাকা ছোট্ট বাটনে আঙুল চেপে সুইচড্ অফ করে দিলেন। মনে মনে চিন্তিতভাবে ভাবতে লাগলেন, এই ইয়াসিন ছেলেটা কেন চাইছে ফিহা নারায়ণগঞ্জ ফিরে যাক? কেন ইনিয়ে বিনিয়ে মেয়েটার নানা কর্মকাণ্ডে জোর খেলাপের মতো মতামত ছুঁড়ে যাচ্ছে? এই ছেলে কী আসল সত্যটার ব্যাপারে কোনোভাবে জানতে পেরেছে? সুফিয়া রান্নাঘরের দিকে পা চালালেও তাঁর অভিজ্ঞ মাথাটা অসংখ্য প্রশ্নের ভীড়ে হারিয়ে গেছে। উনার মনে-প্রাণে বিচরণ করছে কালো মেঘ ঘনানো ভয়। কী হবে এখন? কেন চর্তুদিক থেকে ঘুটঘুটে অন্ধকারটা ঘনিয়ে আসছে?
.
গ্রাউন্ড ফ্লোরটা ঘুরে ঘুরে কোনো শাড়ি পছন্দ হয়নি ফিহার। শেষমেশ চতুর্থ তলায় যাবার জন্য লিফটে চড়লে সাঈদও রাগারুণ মুখ নিয়ে চুপচাপ ঢুকে পরে ভেতরে। লিফটের সামনের অংশটুকু মহিলাদের জন্য ছেড়ে দিয়ে ফিহার পেছনে একেবারে শেষের দিকে সিলভার দেয়ালটার কাছে দু’হাত ভাঁজ করে দাঁড়াল সাঈদ। কিছু তরুণী ও প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা হাতে শপিং ব্যাগ নিয়ে ভেতরে ঢুকলে সঙ্গে আরো দু’তিনটে পুরুষ ও ছোকরা প্রবেশ করল লিফটে। ফিহা তখন ব্যাগের ভেতরে হাত ঢুকিয়ে অস্থিরভাবে ফোনের খোঁজ করে যাচ্ছে, কিন্তু পাচ্ছে না। ফোনটা গেল কই? ভুল করে কী বাসায় ফেলে এসেছে? খালামনিকে একটা কল দিয়ে বলা দরকার ও শাড়ি পছন্দ করতে পারছে না। ব্যাগের ভেতরে যখন না পেয়ে সাঈদের ফোনটা চাওয়ার জন্য মাথা ঘুরায় ফিহা, ঠিক তখনই করুণ দৃশ্যটা দেখতে পেয়ে হতবাক মুখে কপাল কুঁচকাল ও! ফিহার দিকে বাiজেভাবে ছোঁয়ার জন্য যে লোকটা নিiর্লiজ্জের মতো হাত বাড়িয়েছিল, সেই হাতটাকে বজ্রমুষ্ঠির মতো মোiচiড়ে ধরেছে সাঈদ। প্রচণ্ড ব্যথায় লোকটার চোখ-মুখের অবস্থা বিকৃত হয়ে যাচ্ছে তবু লোকটা গণধোiলাইয়ের ভয়ে সাঈদের আiত্মঘাতী আচরণটা মুখ চেপে সহ্য করে যাচ্ছিল। টং করে লিফটের দরজা খুলে গেলে ফিহার সামনে থাকা মানুষগুলো যার যার মতো করে বেরিয়ে যায়, কেউ জানলই না তাদের পেছনে কী দুর্ধর্ষ এক কাণ্ড আড়ালে-নীরবে ঘটে গেছে। হাতটা ছেড়ে দিতেই শ্যূট-প্যান্ট পরা নিiর্লজ্জ বiদমাiশ লোকটা তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যায় লিফট থেকে। এদিকে ফিহা যেন ভাষা হারানো বোবার মতো আস্তে আস্তে মুখটা সামনে ঘুরিয়ে স্তব্ধ হয়ে যায়। কাঙ্ক্ষিত ফ্লোরটা চলে এলে বিকারশূন্য ব্যক্তির মতো লিফট থেকে বেরোতেই সাঈদের গমগমে গম্ভীর কণ্ঠটা ফিহার দিকে বলে উঠল,
– সেভেন ফাইভ সিক্স টু।
প্রায় চমকে উঠার মতো ডানদিকে তাকালে ওর দিকে বাড়িয়ে দেওয়া হাতটার ভেতর কালো সেলফোনটা দেখতে পায় ফিহা। কী করে বুঝল ফোনটার জন্যই মূলত তাঁর দিকে ঘুরেছিল? ফোনটা হাতে নিতেই ফিহা বুঝতে পারল সেভেন-ফাইভ-সিক্স-টু নিছক কোনো সংখ্যা নয়, বরং এই মানুষটার ব্যক্তিগত ফোনের পাসকোড ছিল ওটা। তর্জনীর চাপে ঠিকঠাক মতো চারটি ডিজিট বসিয়ে দিতেই বুকটার ভেতর কেমন দুরুদুরু করে কেঁপে উঠল। স্ক্রিন জুড়ে ভেসে উঠল কালো পর্দার ওয়ালপেপার, ইংরেজিতে ছোট্ট কোটের মতো লেখা — ‘ Action speaks louder than words. ‘। ফোনবুকে আফসানার নাম্বারটা খুঁজে পেতেই সেখানেও কেমন সাঙ্কেতিক শব্দ দিয়ে অদ্ভুত নামটা সেভ করা — ‘ WBM’. পরপর এতোসব কিছু দেখার পর কলটা ডায়ালে বসিয়ে কানে চাপতেই পাশে হাঁটতে থাকা মানুষটার দিকে কৌতুহল চোখে একপলক তাকাল। তাঁর চেহারায় একটা জান্তব আকর্ষণ ফুটে আছে সচেতনভাবে। গরমের তীব্র ছোবলে উজ্জ্বল চামড়ার মুখটা লাল হয়ে কানের দু’পাশ দিয়ে টলটল করে ঘাম ঝরছে প্রচুর, পড়ণের কালো শার্টটা পুরোপুরি ভিজে গিয়ে সুঠাম পেশির নির্মেদ আদলটা চাক্ষুষ রূপে স্পষ্ট, তবু মুখের অভিব্যক্তি দেখলে মনে হয় যেন কিছুই হচ্ছে না তাঁর সাথে। খট করে কলটা রিসিভ হতেই আফসানার ব্যস্ত গলাটা ওপাশ থেকে শুধিয়ে উঠে,
– হ্যাঁ, সাঈদ? ফিহাকে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছিস? ও সব ঠিকঠাক মতো কিনেছে তো?
আফসানার ভুলটা ভেঙে দিয়ে ফিহা নিজ কণ্ঠে বলে উঠল,
– আমি বলছি খালামনি, আমি ফিহা। আমার ফোনটা মনেহয় আসার সময় টেবিলের উপর ফেলে এসেছি। খালামনি আমি কোনো শাড়ি পছন্দ করতে পারছি না। কী করি এখন? আমি প্লিজ বাসায় চলে যাই? এভাবে ঘুরঘুর করে সময় নষ্ট করা ছাড়া কিছুই হচ্ছে না।
– গরমের ভেতর খারাপ লাগছে বুড়ি? তাহলে এক কাজ কর বাড়ি চলে যা। আমি দেখি কাজ শেষ করে তোর শাড়িটা আনার জন্য ব্যবস্থা করব। এখন তাহলে বাড়ি ফিরে যা, আর সুফিয়াকে বলে একগ্লাস ঠান্ডা শরবত খেয়ে নিস। কোনো টেনশন নেই বুঝলি? খালামনি আছি তো। সব ব্যবস্থা হয়ে যাবে।
খালামনির আশ্বস্ত করা সুর ও নির্ভার কণ্ঠের নিশ্চয়তা শুনে কলটা কেটে দেয় ফিহা। ফোনটা ফেরত দিয়ে বাসায় যাওয়ার কথাটা সাঈদের কাছে বলতেই আবারও দু’জন গ্রাউন্ড ফ্লোরে নেমে পার্কিং লটে ফিরে যায়। গাড়িতে উঠে গন্তব্যের জন্য রওনা দিতেই হঠাৎ একটা ফার্মেসির সামনে গাড়িটা থামাতে বলে চটপট সেখানে ছুটে যায় ও। হঠাৎ ওভাবে ফার্মেসিতে যাওয়ার কারণটা বুঝতে না পেরে স্টিয়ারিং ধরা অবস্থায় ভ্রুঁ-দুটো কুঁচকে রাখে সাঈদ। এদিকে কাগজের ঠোঙার মতো মুখবন্ধ করা একটা প্যাকেট নিয়ে টাকা চুকিয়ে সিটে ফিরে আসে ফিহা। দরজাটা লাগাতে লাগাতে কোলের উপর ঠোঙাটা রেখে ব্যস্ত সুরে বলে উঠে,
– আপনার ডানহাতটা একটু দিন তো।
কপালের ভাঁজগুলো আরো গাঢ় করে ওর দিকে প্রশ্নবিদ্ধ চোখে তাকিয়ে থাকল সাঈদ। কী করতে চাইছে? ফিহাকে হাত দিলো না, নড়লও না। ফিহা ঠোঙার মুখটা ছিঁড়তে গিয়ে অমন স্থির তীক্ষ্মচাহনি দেখে নিজেই স্টিয়ারিংয়ের উপর থেকে হাতটা টেনে নিয়ে নিজের ছোট্ট কোলে এনে রাখল। ঠোঙার ভেতর থেকে স্যাভলনের ছোটো চ্যাপ্টা বোতল, তুলার রোল, ব্যান্ডেজের সাদা কাপড় ও ঔষুধের দুটো ক্যাপসুল বের করে গাড়িটার সামনে সাজিয়ে রাখল। ময়লা হয়ে যাওয়া ব্যান্ডেজটা খুলে ফেলে আরো একবার হাতটাকে যত্ন করে ধরল ফিহা। যেন এই হাতটা ওরই হাত, ওরই শুধু হাতটাকে নিগূঢ়ভাবে ধরার অধিকার আছে। তুলা দিয়ে জায়গাটা আস্তে আস্তে মুছে দিয়ে বলে উঠল ফিহা,
– আপনাকে বার বার বলেছি আপনি একজন ডানহাতি মানুষ। আপনি সমস্ত কাজ ডানহাতে করে থাকেন। অথচ, এই হাত দিয়েই আরেকজনের কবজি মোচড়াতে যান, এই হাত দিয়েই আপনি গাড়ি চালাতে থাকেন। খামোখা নিজের প্রতি অযত্ন করে কীসের জন্য ক্ষতিটা ডাকছেন? গুরুতরভাবে ইনফেকশন হয়ে গেলে জায়গাটা যে ভালোমতোই পচবে সেটা বুঝেন না? ব্যান্ডেজটা করতে না জানলে দয়াকরে অফিস থেকে ফিরে আমার কাছে চলে আসবেন। আর নাহয় খালাকে বলে দিবেন, উনি এসে আমাকে ডেকে দিবে। আমি এসে ঠিকঠাক মতো ব্যান্ডেজটা করে দিব। তাছাড়া আর মনে হয় না তৃতীয়বার ব্যান্ডেজটা করতে হবে। রাতে এসে এটা খুলে ফেলে খোলা বাতাসের জন্য রেখে দিবেন।
মাথাটা কিন্ঞ্চিত নীচু করে হাতটা ড্রেসিং করছিল ফিহা। গিঁটটা বেঁধে মাথা তুলতেই চোখের সম্মুখে দুটো কৃষ্ণাভ চোখের নীরব চাহনিটুকু চুপটি করে তাকিয়ে দেখে। ওই না-বলা চাহনি যেন ঠোঁট নাড়ানো বাক্যের চাইতে বড্ড বেশি ব্যক্ত। একটু আগের রুক্ষতাগুলো চোখের ছাঁচে কোথায় যেন হারিয়ে গেছে, শুধু বিকিরণ করছে ভেতরে লুকোনো বহু অপ্রকাশিত কথা। পেছন থেকে সজোরে একটা হর্ণের আওয়াজ হলে সংবিৎ পেয়ে চোখ সরাল সাঈদ। নরম কোলটা থেকে হাত সরিয়ে আবারও দায়িত্বভারে স্থির হয়ে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে ফেলল। পথিমধ্যে একটা কথাও দু’পাশ থেকে উচ্চারণ হলো না আর, কেন জানি মেঘের কোলে সূর্যে লুকোনোর মতো হারিয়ে গেছে সবটুকু সাজানো-গোছানো কথা। ফিহার মধ্যে যেন লজ্জা মেশানো অনুভূতিরা ধাপ-ধাপ করে কড়া নাড়ছে, চোখদুটো বন্ধ করলে মনে হয় পৃথিবীর বুকে যেন বসন্তের মতো সাজ লেগেছে। আঙুলে লেগে থাকা স্যাভলনের গন্ধ, গাড়িতে থাকা ঠান্ডা আবহাওয়ার শীতলতা, গায়ের রোমে রোমে ছড়িয়ে পরা শিরশিরে কাতর অনুভূতি, মনে-প্রাণে দুলে উঠা সরস প্রাণের চন্ঞ্চলতা। হঠাৎ গাড়িটা ব্রেক কষে ফেললে দু’চোখের পাতা খুলে সামনে তাকায় ফিহা। বাড়ি এসে গেছে। কোলের ব্যাগটা নিয়ে বেরিয়ে গেলে আবারও গাড়িটার সামনে দিয়ে আধা-পাক হেঁটে গেটটার দিকে অগ্রসর হলো। পেছন থেকে ভারী গলাটা যেন নির্ভারচিত্তে ডেকে উঠল,
– নাবিলা,
দুম করে পা থামানোর মতো আরো একবার থমকে যায় ফিহা। হাতদুটো ওড়নায় খামচে সম্পূর্ণরূপে স্থির থাকলে এবার আর পিছু তাকানোর চেষ্টা করল না। একটু থেমে দৃঢ়তাপূর্ণ পেশাদার কণ্ঠটা মার্জিত স্বরে উচ্চারণ করে উঠল,
– ডিউটির সাড়ে তিন ঘণ্টা খরচ করেছি। কোনো ফান্ডামেন্টাল ইস্যু ছাড়া কখনোই আমি অন-ডিউটি থেকে ছুটি নেই না। যদি এটা আমি করে থাকি, দ্যান ইয়্যু মাস্ট পে ইট ব্যাক উইদ অনার অ্যান্ড অ্যামোর।
দু’চোখ বড়ো বড়ো করে দাঁত খিঁচিয়ে চমকে উঠল ফিহা! মুখ ঘুরিয়ে আস্তে আস্তে ডান কাঁধ দিয়ে পেছনে তাকাতে নিবে, তখনই কালো গাড়িটা হুঁস করে রাস্তায় ধূলো উড়িয়ে ছুটে গেল।
#FABIYAH_MOMO .
#নোটবার্তা — অতঃপর ধীরে ধীরে সন্ধিক্ষণ আসছে। আপনাদের মন্তব্যগুলো পড়ার জন্য ভীষণ ব্যাকুল। জলদি করুন। ❤