নির্মোচন পর্ব ১০

0
741

#নির্মোচন .
#পর্বসংখ্যা_১০ .
#ফাবিয়াহ্_মমো .

কালরাতের ঘোরটা এখনো কাটাতে পারেনি ফিহা। কী বলল ওকে? এখনো রি রি করে কথাগুলো বাজছে কানে। যতবার মনে হচ্ছে কথাগুলো নিছক অর্থে বলা, ততবারই অবচেতন মনটা অন্যকিছুর আভাস দিচ্ছে। ফিহা ঘুম থেকে উঠেই বিছানা-বালিশ ঠিক করে রুম থেকে বেরিয়ে গেল। ঘড়িতে তখন সাতটা বেজে পনেরো। এখানে আসার পর একদিনও আটটার পর ঘুম থেকে উঠেনি। ব্যাপারটা অদ্ভুত হলেও সত্য। লম্বা বারান্দাটুকু পেরিয়ে যেতেই একপলকের জন্য ডানে তাকিয়ে ফের দৃষ্টি ঘুরাল। দরজাটা এখন বন্ধ। সম্ভবত ওয়ার্কআউটের জন্য বেরিয়ে গেছে। আবারও সেই কথাটা ঝনঝন করে বেজে উঠল, ‘তোর হাসবেন্ডটা প্রোবাবলি স্ট্রিক্ট হবে। প্রিপেয়ার ইউরসেলফ্। ইন ফিউচার, তোর যেন হ্যান্ডেল করতে অসুবিধে না-হয়। ব্যাপারটার জন্য কেয়ারফুল থাকিস ‘। লজ্জায়, শোচনায়, দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে দু’চোখ খিঁচে ফেলল ফিহা। এই লোক কীভাবে জানে ব্যাপারটা? সুক্ষ্ম ইঙ্গিতটা কী ছিল? সিঁড়ি দিয়ে নামতেই ডাইনিং টেবিল থেকে ডেকে উঠল আফসানা,

– চলে আয় তো ফিহা। আমার সাথে নাস্তাটা করে ফ্যাল। আজ তোর জন্য আমি সুজির হালুয়া বানিয়েছি। আয়, রুটি দিয়ে খেয়ে যা।

আফসানার ডাক শুনে সেখানে উপস্থিত হলো ফিহা। একটা চেয়ার টেনে বসে পড়তেই হঠাৎ সাফার কথাটা মনে পড়ল। আবদারের কথাটা খালামনিকে বলা উচিত হবে এখন? হুঁ, কথাটা বলেই ফেলুক। ফিহা শুষ্ক ঠোঁটে জিভ বুলিয়ে কথাগুলো মনে মনে সাজিয়ে নিল। আফসানার দিকে শান্তভাবে বলল,

– খালামনি, একটা কথা ছিল। মানে, একটা ব্যাপারে কথা বলতে চাইছি।

আফসানা রুটি ছিঁড়তে ছিঁড়তেই বললেন,

– কী লাগবে তাড়াতাড়ি বলে ফ্যাল। বাপের মতো পেটে কথা রাখবি না।

ফিহা এবার পুরো কথাটা আফসানাকে বলে দিলো। অন্যদিকে ফিমা ভার্সিটির জন্য রেডি হয়ে টেবিলে এসে বসেছে। সাতসকালে ফিহার মুখটা দেখে থাপ্পড় মারতে ইচ্ছে করছে ওর, কিন্তু প্রবল ইচ্ছাটা চাপা রেখে খাওয়ার দিকে মনোযোগ দিলো।

– খালামনি, আমার কলেজে নবীনবরণের অনুষ্ঠান হবে। আমার বান্ধুবীরা সবাই প্ল্যান করেছে এবারের অনুষ্ঠানে সবাই শাড়ি পড়ে যাবে। অথচ দ্যাখো, আমি শাড়ি-টাড়ি কিছু আনিনি। ওদের ‘না’ পযর্ন্ত করে দিলাম, কিন্তু ওরা আমার কথা শুনছে না খালামনি। এখন আমি কী করব বুঝতে পারছি না। কী করলে প্রবলেমটার জন্য সলিউশন হবে? কী করলে এই মসিবত থেকে রেহাই পাব?

ফিহার কথাটা শোনার পর আফসানা ভীষণ খুশিই হলেন। নাস্তাটা ওভাবেই রেখে তিনি প্রফুল্লকর হাসিতে বললেন,

– কী করবি মানে? তুই অনুষ্ঠানে শাড়ি পড়ে যাবি। আমি তোকে শাড়ি কিনে দিব! আমার মেয়েটা শাড়িটা পড়বে বলে কথা! এক্ষুণি তোর বান্ধুবীদের ফোন কর, ওদের সবাইকে বলে দে, তুইও শাড়ি পড়ে যাচ্ছিস। তোকে কলেজের গেটে সহি-সলামত পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব এখন আমার।

ফিহা খালামনির কথায় চিন্তামুক্ত হয়ে সরল হাসি দিলো। আড়চোখে দেখতে পেল, বড়ো বোন ফিমা ওর দিকে বিষফলা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে এবার বলেই ফেলল সে,

– তোর লজ্জা করে না খালামনির কাছে শাড়ির জন্য বলছিস? একটা শাড়ির জন্য এভাবে ট্রিক্স খাটালি?

খাওয়াটা থমকে যায় ফিহার। আফসানা ভ্রুঁ কুঁচকে ফিমার দিকে তাকালে সঙ্গে সঙ্গে ফিহা ব্যগ্রস্বরে বলল,

– কীসের ট্রিক্স? খালামনিটা আমার না? আমি যেখানে খালামনির সাথে কথা বলছি সেখানে তুমি কথা বলছ কেন?

মুখে মুখে তর্ক করতে দেখে দারুণ ক্রুদ্ধ হলো ফিমা। রুটির টুকরোটা দলা পাকিয়ে ছিন্নভিন্ন করে বলল,

– মুখ সামলে কথা বল! আমার সামনে তুই কেচির মতো জবান চালালে —

আর কথাটা শেষ করতে পারল না ফিমা, তার আগেই আফসানা কঠোর হুংকার দিয়ে থামিয়ে দিলেন ওকে। নিজ দায়িত্বে ব্যাপারটা সামাল দিয়ে শক্ত গলায় বললেন,

– আমি তো ঝগড়ার কারণটা বুঝতে পারছি না ফিমা। কী সমস্যা তোর? তুই ওর বিষয়ে নাক গলাচ্ছিস কেন?

ফিমা একটু পরাস্ত মুখে চোখ নীচু করল। রাগত শ্বাসদুটো পরপর ছেড়ে ক্ষিপ্ত মেজাজে বলল,

– আমার কোনো সমস্যা নেই খালামনি। আমি জাস্ট চাচ্ছি না ও নবীনবরণে যেয়ে কোনোপ্রকার কাহিনি করে আসুক। কলেজের মতো জায়গায় মেয়েরা কী ধরণের নোংরামি করে বেড়ায় তা তো তুমি জানো না। ওকে সাবধান করো।

ফিমা একপ্রস্থ কথাটা বলে সেরে পানির গ্লাসটা হাতে নিল। আফসানা গম্ভীর মুখে কথাটা শুনে কোনো প্রতিক্রিয়া দিলেন না। সুফিয়া চায়ের কাপটা রেখে দিয়ে আবারও রান্নাঘরের দিকে না-শোনার মতো চলে গেলেন। এদিকে আফসানা চায়ের কাপে পরপর দু’দফা চুমুক দিয়ে স্বাভাবিক কণ্ঠে বললেন,

– আমি যদি বলি ইডেনের মতো ক্যাম্পাস তোর জন্য ভালো নয় তাহলে তুই বাদ দিবি? সেখানকার পরিবেশ তোর জন্য মানানসই না, এ ধরণের কথা তুই শুনবি? কোনোটাই শুনবি না! কারণ, তুই জানিস ওই পরিবেশে কেমন করে চলতে হয়, কেমন করে খাপ খাওয়ানো লাগে। সেম একই ঘটনা ফিহার বেলায়ও ঘটেছে। ও সবে ইন্টারে উঠলেও ওকে নিয়ে আমার কোনো চিন্তা নেই। আমি জানি ও পরিস্থিতি সামাল দিয়ে সবকিছুই করতে পারবে। আর নোংরামোর কথা বললে একটাই কথা উচ্চারণ করব, এগুলো যার যার মন-মানসিকতা আর পারিবারিক শিক্ষার উপর নির্ভর করে। তুই বোধহয় শুনিসনি বিজ্ঞানী আইনস্টাইন কী কথা বলে গেছে। ” মনোভাবের দুর্বলতা চরিত্রের দুর্বলতা হয়ে যায় “। নিজে ঠিক থাকলে বাকিসব এমনে এমনেই ঠিক থাকে। সেখানে নোংরামি করবার প্রশ্নেই উঠে না।

আফসানার যুক্তিপূর্ণ কথা শুনে আর কোনো কথা বলে না ফিমা। ফিমা চুপচাপ খাওয়াটা শেষ করে গাড়িতে বসার জন্য চলে যায়। এতোক্ষণ যাবৎ চুপ করে সবটা দেখছিল ফিহা, এবার ও খালামনির দিকে চাইলে আফসানা তখন আশ্বস্ত করে বললেন,

– আমি তোর ব্যবস্থাটা করে দিচ্ছি বুড়ি। তুই এসব ব্যাপার নিয়ে একদম টেনশন করবি না। ফিমা কী বোঝাতে চেয়েছে, না বোঝাতে চেয়েছে সেটা নিয়ে তোর ভাবতে হবে না। কথা বুঝেছিস?

চায়ের শেষ চুমুকটা খেয়ে উঠে গেলেন তিনি। হঠাৎই উনার মনে পড়ল, আজ তো তিনি দারুণ ব্যস্ত! একদমই সময় বের করতে পারবেন না ওর জন্য। অফিসে গুরুত্বপূর্ণ একটা মিটিং আছে, যেটা এখন অ্যাটেন্ড না করলেই না। আফসানা ব্যাপক চিন্তায় আচ্ছন্ন হতেই হঠাৎ বাতাসের মতো বুদ্ধিটা খেলে গেল। তিনি চট করে ফোনটা তুলে কল বসিয়ে দিলেন। অপরপ্রান্তে দুটো কলিং টিউন যেতেই কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তিটা রিসিভ করে বলল,

– হ্যালো,

আফসানা দ্রুত গলায় বললেন,

– তুই কী বাসায় এক ঘন্টার জন্য আসতে পারবি সাঈদ?

রুটির লোকমা চিবোতে গিয়ে থমকে যায় ফিহা। কানে ঠিক শুনেছে? সত্যিই কী তাকে কল দিয়েছে? হায় সর্বনাশ! কী হলো এটা? ফিহা এমন চিন্তায় ঘাবড়ে গেলে রান্নাঘর থেকে সুফিয়া মিটিমিটি করে হেসেই যাচ্ছেন। অন্যদিকে সাঈদ কৌতুহলী হয়ে ভাবনায় পড়ল একটু। মা-কে প্রশ্নাত্মক সুরে বলল,

– আমাকে একটা ঘন্টার জন্য কেন প্রয়োজন?

এবার ভণিতা করলেন না আফসানা। নির্দ্বিধায় কণ্ঠে জানালেন,

– একটু বাইরে যাওয়া দরকার। আজকে অফিসে একটা মিটিং আছে দেখে যেতে পারছি না। তুই কী একটু ছুটি নিয়ে আসতে পারবি? তোর বসকে বলে ছুটি নেওয়া যাবে?

সাঈদ একটু বাঁকা ঠোঁটে হাসল। মায়ের কাছে মাসির গল্প? যে পোস্টে এখন বসে আছে সেটা তো বসের চাইতে কম নয়। কিছুটা নির্লিপ্তভাবে বলল,

– পুরো কাহিনি খুলে বলো। তোমার অর্ধেক কথা শুনে ডিসিশন নিতে পারব না।

ছেলের কথাবার্তা শুনে বার বার উনার মেজর সাহেবের কথা মনে পড়ছে। বাপ-বেটা দু’জনই নাকের ডগায় বারুদ নিয়ে ঘুরে। আফসানা আবারও বলে উঠলেন,

– ফিহাকে একটা শাড়ি কিনে দিবি।

এইটুকু কথা শুনতেই ধ্বক করে বুকটা কেঁপে উঠল! সিট ছেড়ে আস্তে আস্তে সোজা হয়ে বসল সাঈদ। গলার উঁচু হাড্ডিটা ঢোকের তালে নীচে নামতেই শরীরে অদ্ভুত ক্রিয়া টের পেল।

– ফিহার কলেজে নবীনবরণের অনুষ্ঠান হবে। ওর সব বান্ধুবীরা কলেজে শাড়ি পড়ে যাবে। আমি চাচ্ছি তুই ওকে একটু মার্কেটে নিয়ে যা। ওর পছন্দমতো শাড়ি, চুড়ি আর যাবতীয় জিনিসপত্র কিনে দিবি। টাকা কতো লাগবে সেটা আমাকে বলে দিস। আমি না-হয় রফিককে দিয়ে পাঠিয়ে দেব।

সামনের টেবিল-ঘড়িটার দিকে তাকাল সাঈদ। ঘণ্টার কাঁটাটা নয়ের দিকে স্থির, মিনিটের কাঁটাটা পাঁচের দিকে নির্দেশ করছে। সময়টা কখন নিলে ভালো হবে সেটা নিয়ে ভাবতেই ওপাশ থেকে আবারও বলে উঠে,

– তুই ওর সাথে থাকলে আমি একটু নিশ্চিন্ত থাকব সাঈদ। জানি তোর সাথে রাগারাগি হয়েছে, তুই ওকে কথা শুনিয়েছিস, কিন্তু এখন সেটা সাইডে ফেলে নিরাপত্তার কথা ভাবছি। তুই ওকে নিয়ে গেলে আমি টেনশনের ভেতর থাকব না।

ভরসার কথাটা শুনতে পেয়ে ম্লান ঠোঁটে হাসল। তাকে আবার কেউ ভরসা করে? মানুষ বলে কখনো চিন্তা করে? কতখানি যে ভরসা করে তা ভাবলেই হাসি পায়। ভেতরের চাপা দুঃসহ ঘটনাগুলো আবদ্ধ করে চুপই রইল। তার খুব ইচ্ছে করল বলতে, ‘ আমার উপর এতো বিশ্বাস? ‘। কথাটা আর উচ্চারণ করল না সাঈদ। নিজের ঠাঁট বজায় রেখে বলল,

– আমি এগারোটার দিকে আসব। রেডি থাকতে বলো। আমার সামনে টাকার টপিক না তুললেই বেটার। আমার ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাবিলিটি এতো লো না যে, সামান্য কিছু জিনিসের জন্য টাকার কথাটা উঠাতে হবে। রাখছি, পরে কথা বলব।

কলটা কেটে দিলে ‘ টুট টুট ‘ শব্দটা বাজতে থাকে। ছেলের ব্যাপারে তিনি আজও চুপ হয়ে গেলেন। তাঁর ছেলেটা আগের মতোই নেই। দূর সীমানায় আজীবনের জন্য হারিয়ে গেছে। এখনো শৈশবের দিনগুলো মনে পড়লে নিজেকেই দোষী ভাবেন আফসানা। একদল শয়তানের জন্য সবকিছু হারিয়ে ফেলেছেন তিনি। পরিস্থিতির কাছে ঠেলে দিয়েছেন ছেলেকে। ফিহাকে বিদায় জানিয়ে অফিসের জন্য চলে গেলেন তিনি। এদিকে ফিহা আকাশসম টেনশন নিয়ে স্যারের পড়াটা ফাঁকি দেওয়ার ধান্দায় আছে। আফসানার গাড়িটা চৌহদ্দি ছেড়ে বেরিয়ে গেলে রুমের জানালা থেকে সে দৃশ্যটুকু দেখতে থাকে। ইয়াসিন স্যারকে একটা কল করবে কিনা বুঝতে পারছে না। যদি স্যার আজও তাড়াতাড়ি করে এসে পড়ল তখন? না না, অসম্ভব! আজ কোনোমতেই ফিহা স্যারের কাছে পড়বে না। তড়িঘড়ি করে কলটা ডায়াল করল ফিহা। একটু অপেক্ষা করতেই ভারি কণ্ঠে বলে উঠল,

– হ্যাঁ, ফিহা কেমন আছ? কী খবর? হঠাৎ সকালের দিকে কল দিলে যে? কিছু কী বলার আছে?

ফিহা প্রচণ্ড নার্ভাস ফিল করছে। কথাটা বলার জন্য গড়িমসি করতেই বুকভর্তি দম নিয়ে আস্তে করে বলল,

– আসসালামুয়ালাইকুম স্যার। আমি ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন? আসলে স্যার আপনাকে একটা কথা বলার জন্য ফোন দিয়েছি।

একটু অস্থির হলো ইয়াসিন। কী কথা বলবে? কোন কথাটা বলার জন্য ফোন দিয়েছে? কথাটা শোনার জন্য ব্যতিব্যস্ত হতেই জিজ্ঞাসু মুখে বলল,

– কী কথা ফিহা?

ফিহা আবারও ফুস করে দম করে ছাড়ল। ঢোক গিলে বলল,

– আপনার বাসায় আসতে হবে না। আজকে আমি পড়তে পারব না। পারলে এ সপ্তাহে না আসলেই ভালো হয়। আমি খালামনির বাসায় কিছুদিন ছুটি কাটাতে চাচ্ছি। এখনো পরীক্ষার জন্য লম্বা আছে, তাই কিছুদিন রিল্যাক্সে থাকতে চাচ্ছি।

প্রচণ্ড উদগ্রীব হচ্ছে ইয়াসিন। এই লক্ষণগুলো ভালো না! একেবারেই ঠিক হচ্ছে না! ইয়াসিন ব্যগ্রভাবে বলল,

– পড়বে না মানে? এখন কীসের ছুটি? তুমি কেন পড়তে চাইছ না?

স্যারের প্রশ্নগুলো ভালো লাগছে না ফিহার। যতই পরিচিত হোক, ব্যক্তিগত বিষয়ে কর্ণপাত দেখলে চরম অস্বস্তিকর লাগে। ফিহা স্বাভাবিক স্বরে বলল,

– স্যার, আপনি আমার বাবার সাথে কথা বলুন। আমি এ বিষয়ে বেশি কিছু বলতে চাই না। আমার একটা মাইন্ড রিফ্রেশমেন্ট দরকার। যেটা আমি বাবাকেও বুঝিয়ে বলব। আপনি নিশ্চয়ই জানেন আমি বাসার ব্যাপারটা নিয়ে এখনো মাঝে মাঝে অন্যমনষ্ক হয়ে যাই। আমি ঠিক বলতে পারব না আমার মানসিক অবস্থা কেমন হয়ে আছে। সারাদিন হাসিখুশি থাকি বলে কেউ সেটা বুঝতে পারে না।

ইয়াসিন সম্পূর্ণ কথাই মনোযোগ দিয়ে শুনল, কিন্তু ভেতরে ভেতরে যে বিস্ফোরণ ঘটে যাচ্ছে সেটা বাহিরে প্রকাশ হচ্ছে না। ইয়াসিন হতবিহ্বল মুখে কিছু বলতে চাইলে জিভ আড়ষ্ট হয়ে গেল। কী বলবে ওকে? আরো কিছু কথা বলতে চাইলে ফিহা তাড়া দেখিয়ে বলল,

– স্যরি স্যার, আমার ফোনটা রাখতে হবে। আমি একটু বাইরে যাব, সেটার জন্য রেডি হতে হবে। আল্লাহ্ হাফেজ। আসসালামুয়ালাইকুম।

ইয়াসিনকে কিছুই বলার সুযোগ দিলো না। কলটা যেন মুখের উপরই কেটে দেয় ফিহা। হতবুদ্ধিকর মুখে আস্তে আস্তে ফোনটা কান থেকে নামায়। তাকে অবজ্ঞা করল কেন? ওই ব্যক্তিটার সংস্পর্শে এসে কেন অদ্ভুত আচরণ করছে? ইয়াসিন এটা ভালো করেই জানে, সে কখনো ওই ব্যক্তির সাথে টেক্কা দিতে পারবে না। না রূপে, না গুণে, না ক্ষমতায়, না চাতুর্যে। কাজটা ভালো হলো না! ঠিক হলো না!

#

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here